যাতনা আমার পর্ব ৩৪
সানজিদা ইসলাম সূচনা
সোহানা মির্জা নাভান কে সকাল সকাল তার রুমে ডেকেছেন। সারারাত ইনায়া আর জায়ানের কথা ভেবে। ভোর রাতের দিকে শুয়েছিল নাভান। মায়ের ডাকে ঘুমঘুম চোখ মুখ নিয়েই সোহানা মির্জার রুমে আসলো। সেখানে আয়েশা মির্জাও ছিলো। সোহানা আদুরে ভঙ্গিতে ছেলেকে কাছে ডাকলেন। নাভানও চুপটি করে মায়ের পাশে বসে। সোহানা গতকালকের কোনো কথাই তুললো না। ইশানের থেকে সবটা শুনেছেন তারা সবাই। আর মনেমনে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া করেছেন, তার ছেলেকে অন্ধকার জগত থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য। নাভান শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। সোহানা গলা খাকড়ি দিয়ে তার দিকে মনোনিবেশ করলেন।
-” ইনায়ার কি খবর? সেখানে কে আছে? ”
নাভান দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। মলিন মুখেই বলে ওঠলো,
-” আমার জানা নেই। ”
-” জানা নেই? এভাবে কতোদিন যাবে? তোমরা কিছু তো একটা সিদ্ধান্ত নাও। ”
-” আমি হয়তো তোমাকে সব জানিয়ে ছিলাম। ”
-” আর একটা বার ভেবে দেখো তোমরা? আমি ইনায়ার সাথে কথা বলবো। ”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নাভান আচমকাই হাসলো। তাচ্ছিল্যের হাসি সেটা। তারপর ম্লান মুখে মায়ের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায় জবাব দেয়,
-” তাকে আর কি বলবে মা? তার মন কি আমাতে আছে? না। আমার কথা কি ভাববে? না। কারণ, সে তো আর আমার নেই। অনেক দেরি করে ফেলেছি আমি। বড্ড দেরি। ”
সোহানা মির্জা অবাক হলেন। মায়ের মন যেন আগের সবকিছু ভুলে যেতে চাইছে। মন বলছে এখন সব ঠিক হলে ক্ষতি কি? আয়েশা মির্জা নাভানের এমন হতাশ মন দেখে নিজেও নুইয়ে পরলেন। কি জানি? তার নাতি নাতনির উপর গহন লেগেছে হয়তো। তবে, ইনায়া কে নাভান আবার ফিরে পেতে চাইছে, সেটা যেন তার কাছে অবাক ঠেকলো। কানাডায় থাকা কালিন নাভান আগ্রহ করেও ইনায়ার কথা জানতে চায় নি তার কাছে। আছে নাকি গেছে সেটাও না। আর এখন? আয়েশার মনের একটা ছোট প্রশ্ন তিনি নাভান কে করেই বসলেন,
– ” তা ইনায়া কি নতুন করে কারো সাথে ঘর করবে নাকি? আমার তো এই করিম বাড়ির ছোট ছেলেটা কে সন্দেহ হচ্ছে। ”
নাভান জ্বলজ্বল চোখে মা আর দাদুর দিকে তাকালো। আর কিছু না বলে হন হন করে সেখান থেকে বেড়িয়ে গেলো। সোহানা আর আয়েশা মির্জা বুঝলেন। নাভানের সবটাই জানা হয়েছে। সোহানা মির্জা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন। তার ছেলেকে শেষ সুযোগ দেওয়া দরকার।
ইনায়ার কাটা জায়গা গুলো আজকে টানছে প্রচুর। ঔষধ খাওয়ার পর ব্যথাটা কম। সেলাইন চলছে সকাল থেকে। জায়ান এক মুহূর্তেও ইনায়া কে একা ছাড়ছে না। ডাক্তার অবশ্য ইনায়াকে বিকেলের দিকে ডিসচার্জ করতে বলেছে। বাড়িতে খেয়াল রাখলে ধীরে ধীরে সুস্থ হবে ইনায়া। জায়ান বাড়িতে ফোন দিয়ে বলেছে ইনায়া কে নিয়ে বাড়ি আসছে বিকেলে। এই নিয়েও ইনায়া অমত পোষণ করছে। তার কথা হলো, তাকে হোস্টেলেই ছেড়ে আসতে। জায়ান কিছু না বলে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে গিয়েছিলো। আর ইনায়ার দুইপাশে রেখে গিয়েছিলো দুইজন নার্স। ঘন্টা সময়ের মধ্যেই জায়ান ফিরে আসে। হাতে ছিলো অনেক গুলো শপিং ব্যাগ। সাথে কিছু খাবার। জায়ান হাত মুখ ধুয়ে এসে ইনায়াকে নিজ হাতে খাইয়ে দেয়। ইনায়া ও কোনো দ্বিমত পোষণ করে না। খাবার শেষে জায়ান ইনায়াকে শান্ত গলায় বলে ওঠে,
-” এখন ঘুমাও। একটু পরেই বের হবো আমরা। ”
-” আমি করিম ভিলায় যেতে চাইছি না। আমাকে হোস্টেলে দিয়ে আসুন প্লিজ। ”
-” কেনো? সমস্যা কি?
-” আমার প্রচুর কাজ। যেতেই হবে। ”
জায়ান ভ্রু কুঁচকালো। ইনায়ার ম্লান মুখটার দিকে তাকিয়ে হেসে বলে উঠে,
-” মায়ের জন্য যেতে চাইছো না। তাই তো? ব্যাপার না আমি সামলে নিবো। ”
-” সেটাও আছে। আসলে,..। ”
ইনায়া জায়ানের দিকে তাকালো। জায়ানও প্রশ্নবিদ্ধ মুখে তার দিকে তাকিয়ে আছে। ইনায়া দীর্ঘশ্বাস ফেললো তারপর হাসি মুখে আবার বলে উঠলো,
-” এটা মাসের শেষ দিক। আমার এক ফ্রেন্ডের সাহায্যে একটা কোচিং-এ জব নিয়েছি। ওর নাম সানিয়া। সেলারি ভালোই। সানিয়া আর ওর একটা রুমমেট মিলে ভার্সিটির পাশেই তিন রুমের একটা ফ্লাট ভাড়া করেছে। আমিও সামনের মাসে ওদের সাথে জয়েন করবো। আমাকে ওদিকে থাকা দরকার আপাতত। ”
জায়ান শুনলো পুরো কথা। তারপর অত্যন্ত গম্ভীর মুখে বলে ওঠে,
-“এসবের কি দরকার? তুমি তিথির সাথেই থাকো। মাসে মাসে টাকা বাবা তো দিচ্ছেই। ”
-” আমি নিজে কিছু করতে চাইছি। ”
জায়ান আর কিছু বললো না। ঘড়ির কাটায় সময় দেখে শপিং ব্যাগ থেকে কালো রঙের সালোয়ার স্যুট বের করে ইনায়া কে দিলো। ইনায়া জিজ্ঞেস মুখে জায়ানের পানে তাকালে জায়ান তড়িঘড়ি করে বলে ওঠে,
-” যতদিন না সুস্থ হচ্ছো আমাদের সাথেই থাকবে। আর এখন বাড়ি যাবার আগে তোমাকে একটা জায়গায় নিয়ে যাবো। তাড়াতাড়ি করো। ”
এই বলে ফাহাদের ফোনে কল দিয়ে বের হয় জায়ান। ইনায়াও ফ্রেশ হতে চলে যায়। আধঘন্টা হতেই ইনায়া বের হয়ে আসে। জায়ান আগে থেকেই রুমে বসা ছিলো। ইনায়া কে দেখে হাসলো। বসা থেকে উঠে ইনায়া নাক টান দিয়ে মিষ্টি করে বলে ওঠে,
-” মাই ব্লাক কুইন! চলো বিশাল বড়ো সারপ্রাইজ আছে। ”
ইনায়া চমকালো। কি জানি সারপ্রাইজ দেবে, কে জানে?
নিধি মন খারাপ করে বেলকেনিতে বসে আছে। এখানে তার দিন কাটছেই না। ফাঁদ পেতে আছে কি করে এখান থেকে বের হতে পারে। করিম ভিলাতে অনেক সিকিউরিটি আছে। এসব ডিঙিয়ে যাওয়া নিধির জন্য আপাতত কষ্টকর। আর যে করেই হোক তাকে মেইন ডোরের চাবি কালেক্ট করতে হবে আগে। তারপর ওই মেয়েরের আস্তানা থেকে পালাবে সে। তখনই কারো আসার শব্দে নিধির ভাবনারা গত হয়। পিছন ফিরে ফাহাদ কে দেখে মুখটা আরো অন্ধকার হয়ে যায় নিধির।
-” পালানোর জন্য কি কি প্ল্যান কষলে? বলো আমায়। প্রমিজ, কাউকে বলবো না। ”
নিধি ফাহাদের এমন কথায় রায়বাঘিনীর মতো তার দিকে তাকালো। ফাহাদ দাঁত বের করে তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। নিধির প্রচুর রাগ হলো। সে হিসহিসিয়ে বলে ওঠে,
-” ট্রাস্ট মি! একবার এই বাড়ি থেকে বের হলে। আপনি আমাকে এই পৃথিবীর কোনো জায়গাতে খুঁজে পাবেন না। ”
ফাহাদ হাসি থামিয়ে মুখ গম্ভীর করলো। অতঃপর নিধির সামনে দাড়িয়ে শান্ত গলায় জিজ্ঞেস করলো,
-” অতিতটা ভুলে কেনো যাচ্ছো না তুমি? সামনে তাকিয়ে দেখো কতো সুন্দর জীবন তোমার। তোমার আমার সুন্দর একটা পৃথিবী। ”
-” আমি কিচ্ছু পারবো না ভুলে যেতে। না ভুলতে পারবো অতিত না আপনাকে মানতে পারবো। না আপনার কাছে করুনার পাত্রী হিসেবে থাকতে পারবো। আমার নিজের প্রতিই আমার ঘৃণা লাগে। আমার পুরো শরীর কলুষিত কলঙ্কিত। আমাকে আমার মতো ছেড়ে দিন। ”
ফাহাদ নিধির ঘনিষ্ঠ হলো অতপর ফিসফিস স্বরে বলে উঠলো,
-” হেই আমি তো তোমাকে ভালোবাসি। সেই প্রথম থেকে। করুনা কেনো বলছো? আমাকে মেনে নাও। আমি তোমার কলুষিত কলঙ্কিত সব সয়ে নিবো। ”
নিধি ধাক্কা দিয়ে ফাহাদ কে সড়িয়ে দেয়। কোনো পুরুষের ছায়া সহ্য হয় না তার। নিজেকে গুটিয়ে নিলো ফাহাদ থেকে অনেকটা দূরে। ফাহাদ কিছুক্ষণ অবাকের দৃষ্টিতে তাকিয়ে তারপর যেতে-যেতে বলে ওঠে,
-” রেডি হয়ে নাও নিধি। ইনায়ার কাছে যাবো। ”
হাইওয়ে রাস্তা ধরে ফাহাদের গাড়ি এগিয়ে চলছে। ডাইভিং সীটে ফাহাদ আর প্যাসেঞ্জার সিটে নিধি বসে আছে। দুজনেই চুপচাপ হয়ে আছে। প্রায় চল্লিশ মিনিটের মতো গাড়ি চলছে। নিরব পরিস্থিতি তে মুখ খুলছেনা কেউ। নিধি একপর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে বলে উঠে,
-” হসপিটালে যেতে এতোক্ষণ লাগে? সত্যি করে বলেন তো, আমায় শুনশান কোথাও নিয়ে মেরে ফেলবেন নাতো? ”
ফাহাদ চোরা চোখে একবার নিধি কে দেখে মিনমিন করে বলে ওঠে,
-” তোমাকে তো মারার জন্য আমার ভালোবাসাই যথেষ্ট। শুনশান জায়গা কেন লাগবে? এনিওয়ে, তুমি এমন কোনো প্লেসে গিয়ে ভালোবাসায় মরতে চাও নাকি? ”
-” কি বললেন? ”
নিধি অনেক রেগে ফাহাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিছু বলে না আর। এই লোক দারুণ ঠোঁট কাটা। ফাহাদও আর নিধিকে কিছু বলেনা দীর্ঘসময় পার করে পুরান ঢাকার কিছুটা দুরে একটা শুনশান পরিত্যক্ত বাড়ির সামনে গাড়ি থামায় ফাহাদ। নিধি গাড়ি থেকে নেমে লক্ষ্য করে সামনে জায়ানের গাড়ি। নিধি অবাক হয়। ফাহাদ সিরিয়াসলি কোনো শুনশান জায়গায় নিয়ে এলো।
-” এটাতো হসপিটালের মতো লাগছে না। ”
ফাহাদ নিধির ভয় দেখে হাসলো।
-” ভেতরে চলো। ”
বলেই ফাহাদ হেঁটে সামনের দিকে অগ্রসর হয়। নিধিও তাই করলো। ভেতরে যেতেই ইনায়া আর জায়ান কে দেখে তারা। নিধি ইনায়ার কাছে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে।
-” ঠিক আছো ভাবি? তোমাকে এমন ডাস্ট হসপিটালে ভর্তি কেনো করালো? কি বিশ্রী। ”
ইনায়া এতো টেনশনের মাঝেও হেসে উঠে। জায়ান ফাহাদ কে ইশারা করে ওদের দুজন কে বলে তাদের সাথে আসতে। নিধি আর ইনায়াও তাই করলো। ইনায়া বুঝতে পারছে না। ওরা কেন এখানে এনেছে। একটা রুমের মাঝে গিয়ে জায়ান দরজা খুলে। ফাহাদের ছেলেগুলোও এখানে সবকটার হাতে মোটা রট। ইনায়া খেয়াল করলো গতকালকের ছেলেগুলোকে আধমরা করে ফেলে রাখা হয়েছে। নিধি ছেলে গুলোকে দেখে কাঁপতে থাকে। আচমকা ইনায়াকে জড়িয়ে ধরে সে। ইনায়ার কষ্ট হলেও সহ্য করলো। ফাহদ নিধির কাঁপতে থাকা বাহুতে হাত বুলিয়ে বোঝানোর স্বরে বলে উঠে,
-” লুক নিধি, এদের যা শাস্তি তুমি দিতে চাও দিতে পারো। একবার বলো কি করবো ওদের সাথে। ”
নিধি ফুপিয়ে কেঁদে দেয়। ফাহাদের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে,
-” আপনি কি ওদের দিয়ে আমাকে রেপ করাবেন? ”
-” তা কেন করবো? ”
সবাই অবাক নিধির এমন বাচ্চা কথায়। ফাহাদ হতবাক হলো। নিধি উলটে বলে ওঠে,
-” তাহলে,,আমাকে এখান থেকে নিয়ে যান। দেখছেন না ওরা কেমন লোলুপ দৃষ্টি দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ”
ফাহাদ জায়ান ছেলেগুলোর দিকে তাকায়। মার খেয়ে এদের অবস্থা এমনিতেই খারাপ। এরা সবকটা চোখ খুলে তাকাবে কিনা তা সন্দেহ। জায়ান মুখ বাকিয়ে বলে,
-” তোমাকে যেতে দেবো নিধি। আগে বলো এদের কি ব্যবস্থা করবো? ”
-” যা খুশি তাই করেন। আমাকে এখান থেকে বের করেন। ”
ছেলেদের মধ্যে একটা বলে ওঠে,
-” ভাই আমাদের ছেড়ে দেন। আপনার কথা মতো ওই মেয়েকে আমরা রেপ করেছি। আমাদের ছেড়ে দেন। ”
-” ওটা কালকের হিসেব ছিলো। আজকে এর হিসেব হবে। ”
ইনায়া নিধি আতকে উঠলো যেন। ফাহাদ জায়ান নিরুত্তর। ইনায়া বুঝতে পারলো মেয়েটা কে। জায়ান এই রুম থেকে বেড়িয়ে যায়। ইনায়া ও তাই করলো। জায়ানের সাথে উপর রুমে গিয়ে চোখ উলটে ফেললো যেন। অদিতি কে দেখে নিধি আর ইনায়ার চোখ কপালে। সারা শরীরে কামড়ের দাগ। পুরো নাজেহাল অবস্থা। ইনায়া রেগে জায়ানের দিকে তাকালো। নিধির যেন নিজের কথা মনে পরে গেলো অদিতি কে দেখে। সে জায়ানের উদ্দেশ্যে বলে ওঠে,
-” আপনাদের মাঝে ওদের মাঝে পার্থক্য কি রইল? খারাপ হলেও সম্মানহানী তো একটা মেয়ের হয়েছে। তাইতো? ”
জায়ান আচমকা হাসলো। জায়ান বাঁকা হেসে ইনায়ার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে,
-” কেউ আমার বাগিচার এমন হাল করতে চেয়েছিল। আমি খারাপ এতটাও না। যার যার বুদ্ধির স্বাদ কেমন? তা তো বুঝাতে পারি কিছু। ”
তারপর নিধির দিকে তাকিয়েই জায়ান ব’লে,
-” তোমার ওকে দেখে খুশি হওয়া উচিত। তোমার এই হালের জন্য ওই দায়ী। ”
ইনায়া আর দেখতে পারলোনা বেড়িয়ে এলো। ছোট হলরুমে আসতেই ছেলেগুলোর রুম থেকে চিৎকার বেড়িয়ে আসে। ইনায়া ফিরে তাকালো জায়ানের দিকে।
-” ওদের পুলিশের হাতে তুলে দিন। আইন নিজের হাতে তুলছেন কেন? আমার আর সহ্য হচ্ছে না। ”
জায়ান মুচকি হেসে বলে উঠলো,
-” জায়ান নামক জগতের, শাস্তি এমনই হয় হরিনী। তুমি সহ্য করে নাও। কারণ, তুমি এই জগতের ঘরনি হবে খুব শীগ্রই।
ইনায়া কথা বলে না। নিধিও ম্লান মুখে তাকিয়ে থাকে তার কেমন জানি খারাপ লাগছে। ছেলেগুলোর চিৎকার এতোক্ষণে কমে এসেছে। হঠাৎ ফাহাদ দরজা খুলে বেড়িয়ে এলো। রুমাল দিয়ে রক্তাক্ত হাত মুছছে। জায়ান জিজ্ঞেস করলো,
-” কাজ শেষ? ”
যাতনা আমার পর্ব ৩৩ (২)
-” সবকটাকে হিজরা কমিটির সদস্য বানিয়ে দিয়েছি। এখন থেকে নিজেরাই মেয়ে হয়ে ঘুরবে। ”
কথাটা বলে হাসে ফাহাদ। ইনায়া আর নিধি চোখ বেড়িয়ে আসার উপক্রম হয়েছে। এই দু’ভাই সাঙ্ঘাতিক। এরা সন্ত্রাসীদেরও হার মানাবে। নিধি ভয়েভয়ে ফাহাদের দিকে তাকায়। এই লোকের হাসিখুশি মুখের আড়ালে এমন ব্যাক্তি লুকিয়ে আছে? তার জানা ছিলোনা।