রাগে অনুরাগে তুই আমার পর্ব ১৫

রাগে অনুরাগে তুই আমার পর্ব ১৫
আশু

সন্ধ্যার দিকে ইয়াসির সহ আরো দুজনের হাত ভর্তি শপিং দেখে সবাই ইয়াসিরের দিকে তাকিয়ে। ইশা বসে বসে ডোরেমনে ব্যাস্ত, হুট করে ইয়াসিরের দিকে নজর পড়তেই। ইশা ‘জামাই’ বলে একদৌড়ে ইয়াসিরকে ঝাপটে ধরে বলতে থাকে,,”থ্যাঙ্ক ইউ জামাই,লাভ ইউ জামাই।’
ইয়াসিরও বলে,,”হ হ লাভ ইউ টু বউ”
সবাই এক এক করে কেটে পরে। বাড়ির ছেলে মেয়ে সবার সাথে এতো ফ্রি হওয়ায়,রোমান্স ও লিভিং রুমে শুরু করবে কে জানতো।

সোহানা বেগম হাঁক ছেড়ে বলেন,,,,”হইছে থাম, তগো এতো রঙ লাগছে ক্যা?”
ইশা ঘুরে বলে,,”আরে বুড়ি তোমার নাতী শপিং করে দিলো যে একটু তোহ্ আহ্লাদ করতেই হয়”
ইয়াসির কিরমির করে বলে,,”যা বউ জুটাইয়া দিলা দাদীজান, আমার টাকা সব শেষ করার ধান্দায় থাকে সে সারাক্ষণ ”
ইশা চোখ রাঙিয়ে বলে,,,,”কিহহহ্??”
ইয়াসির এক ঢোক বলে,,,,'”না না আমার বউ তোহ্ আমার রাণী, তাকে রাণীর মতো তোহ্ রাখতেই হবে”।
ইশা মুচকি হেসে ইয়াসিরের গা ঘেষে দাঁড়িয়ে বলে,,”জামাই একটা পার্সোনাল কথা আছে চলো চলো। ”
ইয়াসির ভ্রুকুচকে তাকায় ইশার দিকে। ইশা আর পাত্তা না দিয়ে উপরে ছুটে। সোহান বেগম ইয়াসিরকে ইশারায় বলে,,যা যা। ইয়াসিরও শপিং নিয়ে ইশার পিছু ছুটে।
রেস্টুরেন্টে বাইরে দাঁড়িয়ে রুমি, বাহিরে বৃষ্টি ছাতা নেই।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

অনেকদিনপর বাইরে খেতে আসা যদিও ইশার সাথে আসা হতো এখন একাই বলা চলে,,তবে অসময়ে বৃষ্টি দেখে বিরক্ত হচ্ছে রুমি। এই ভারী বৃষ্টিতে রিকশা পাওয়া তোহ্ মুশকিল তার উপর দৌড় দেওয়ার ও চান্স নেই।
রুমি হেলেদুলে তাকানোর মাঝেই গম্ভীর স্বর ভেসে আসে। “এই মেয়ে এখানে কি করছো?”
রুমি ঘুরতেই আয়ানকে দেখে স্তব্দ হয়ে দাঁড়ায়। বৃষ্টিতে ভিজে গায়ে সাদা শার্ট লেপ্টে আছে। চুলগুলো থেকে কপাল বেয়ে বৃষ্টি পানিগুলো গালে মুখে পড়ছে। কি নিদারুণ লাগছে।
রুমিকে এমন আহাম্মকের মতে তাকিয়ে থাকতে দেখে। আয়ান বিরক্ত হয়ে আবারও চেঁচিয়ে বলে,,”কানে শুনো না নাকি?”

রুমি থতমত খেয়ে বলে,,,,”না মানে এই তো খেতে এসেছি ভাইয়া। ভালো আছেন ভাইয়া?”
আয়ান বলে,,,,”হুম ভালো”। রাত হচ্ছে বাসায় কি যাবে না?”
রুমি আনমনে বলে,,,,”বৃষ্টি কমলে তেহাহ্ যাবো আর না হয় থাকবো”
রুমির কথার মাঝেই আয়ান রুমিকে টেনে নিজের দিকে এনে ফেলে। কিছু বেঝার আগেই সামনের একটা মেয়ে আয়ানকে বলে,,”আয়ান ভাইয়া এটা কে?'”
আয়ান থমথম ভাবে বলে,,”গার্লফ্রেন্ড!!”
আয়ানের কথা শুনে রুমির হেঁচকি উঠে যায়।আয়ান তাড়াতাড়ি সামনে থেকে পানি এনে রুমিকে অনেক কেয়ার করতে শুরু করে। আর বলে,,”আস্তে খাও,, কি হয়েছে, খারাপ লাগছে তোমার?”
আয়ানের কথায় রুমির কাশি আরো বেড়ে যায়। একটুপর রুমি ঠিক হলে।
সামনের মেয়েটি বলে,,”বেস্ট চয়েস”

আয়ান মুচকি হেসে বলে,,”ধন্যবাদ সিস্টার”
মেয়েটি যাওয়া মাত্রই আয়ান রুমিকে ছেড়ে বলে,,,”সরি”
রুমি রেগে আয়ানের দিকে এগিয়ে যায় তারপর মুখের উপর আয়ান সেদিন রুমিকে যেভাবে বলেছিল রুমিও বলে,,”নেক্সট টাইম এসবের জন্য লোক রাখবেন যাকে তাকে এসবে জড়াবেন না।” এই বলে নিজের চুল উল্টিয়ে যেতে নেয়। আর রুমির চুলের বারি খেয়ে আয়ান বিরক্তিতে রুমির পাণে তাকিয়ে বলে,,,”স্টুপিড গার্ল”
ইয়াসির রুমে আাসামাত্রই ইশা বলে,,”ভাইয়া শোনো”

“কিসের ভাইয়া ভাইয়া করছিস??”
“আচ্ছা জামাই শোনো”
“বলো বউ”
“বলছিলাম যে,,,,”
“কি বলছিলে??”
“বলছিলাম আয়ান ভাই সহ হানিমুনে যাবো!!”
“কিহহহহ্? তোর মাথা খারাপ হানিমুন মানে জামাই বউ, বউয়ের ভাই আসলো কোথা থেকে? ”
“আরে কুল জামাই, আমি বলতে চাইছি,আমি তুমি আয়ান ভাইয়া আর রুমি”
ইয়াসির ভ্রুকুচকে বলে,,,”পাগল ওরা কেন যাবে?”
ইশা বলে,,,”কট মেরে দেও না জামাই,তুমিই পারবে”
“না না তোর ভাই সুবিধার লোক না”
“আরেহ্ আমি আছি তোহ্”
“তার মানে আজকে হানিমুন ক্যান্সেল!! ”

ইশা মাথা নাড়ায়। ইয়াসির রেগে বেলকনির দিকে ছুটে। ইশা উঁকি ঝুঁকি মেরে দেখার চেষ্টা করে কি করছে ইয়াসির।হঠাৎ ইশা দেখতে পায় ইয়াসির সিগারেট জ্বালিয়েছে ধৌঁয়া উড়ছে। ইশা চটজলদি ইয়াসিরের সামনে দাঁড়িয়ে বলে,, “এসব কি?কতবার বলেছি না ছাইপাশ খাবে না,,ফেলো বলছি!!”
“ইশা যা ভালো লাগছে না ,আগের মতো কিছু ,,,,”
আরেক কিছু বলার আগেই ইশা বেরিয়ে যায়। ইয়াসির ইশার যাওয়ার পাণে তাকিয়ে ফের সিগারেটে টান মেরে ধোঁয়া ছাড়তে থাকে। তখনি ইশা একটা ছোট্ট টুল জাতীয় নিয়ে আসে। আর ইয়াসিরের বরাবর রেখে। ইয়াসিরের সমান দাঁড়ায়। তারপর কোমড়ে গুজে রাখা পারফিউম ইয়াসিরের দিকে ছড়িয়ে দিয়ে বলে ‘পারফেক্ট।’ ইয়াসির বিরক্ত হয়ে ইশাকে দেখছে।
ইশা এরপর কিছু না ভেবে ইয়াসিরের কলার টেনে নিজের দিকে এনে বলে,,”জামাই তোমাকে যদি একটা কিস করি, কিছু হবে?”

ইয়াসির আর কিছু বলার আগেই ইশা ইয়াসিরে ঠোঁটেআলতো চুমু দিয়ে নিচে নেমে বলে,,”আমার না হৃৎপিণ্ড বের হবে জামাই, আমি আর পারবো না।”এই বলে ইশা যেতে নিলে ইয়াসির ইশার হাত ধরে বলে,,”তা তোহ্ হচ্ছে না বউ। নিজের স্বার্থ হাসিলে আমাকে পাগল বানালে এবার পাগল সামলাও”
ইশা ঢোক গিলে বলে,,,,”মানে??”

ইয়াসির একটানে ইশাকে নিজের কাছে এনে ঠোঁট ডুবায় ইশার ঠোঁটে। ইশা হাত দিয়ে ইয়াসিরকে ঠেলতে লাগে খানিকবাদে ইশাও থেমে যায়। ইয়াসির ইশাকে ছেড়ে বলে,,” ইশা বউ আমার আজকে আপন করে নেই একটু। বেশি না স্রেফ একটু প্লিজ ইশা বউ,আজকে আমার হবি?”
ইশা নিচের দিকে তাকিয়ে হাসফাস করছে কি বলবে, বাঁধা দিবে, তা কি করে করবে যেখানে সে নিজেই অনেক আগে থেকে ভালোবাসে সামনের মানুষটাকে।তারপরও কেমন নিজেকে ঘুটিয়ে নিতে মন চাইছে। মনে হচ্ছে আর কিছুটাদিন যাক। কিন্তু কি করবে এখন, না করার অপশন যে নেই।

রাগে অনুরাগে তুই আমার পর্ব ১৪

ইশার ভাবনার মাঝেই ইয়াসির ইশাকে ছেড়ে সামনে যেতে যেতে বলে,,,,”ঘুমা বইন রোমান্সের উপযুক্ত হোস নাই বুঝছি। আমিও ঘুমামো। একটু জড়াইয়া ধরবার দিস তাই হবো আপাতত। বউ তোহ্ একদিন না একদিন পুরাটাই আমারই হবি। আর বলে রাখি,,,,
“Be ready isha bowjan — I’m leaving now, no turning back later.”

রাগে অনুরাগে তুই আমার পর্ব ১৬