রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৪১
সিমরান মিমি
বাসের সিটে মাথা হেলানো।চোখ দুটো তার বন্ধ।ওই চোখের পাপড়ি গুলো ভিঁজে একাকার করে নিঃশব্দে গড়িয়ে পড়ছে অশ্রু।গাল বেয়ে থুতনিতে গিয়ে সমাপ্তি নিচ্ছে তারা।এরপর ফোঁটায় ফোঁটায় শিশিরের মতো টুপটাপ করে গলায়,জামায়,বুকে গিয়ে পড়ছে।একহাত দিয়ে চেয়ারের হাতল খাঁমছে ধরা।হয়তো কান্নার বেগ,শরীরের ঝাকুনি টাকে ক্রমশই সামাল দিতে চাওয়ার ব্যর্থ প্রয়াস করছে।পিপাসা ক্ষণে ক্ষণে মেয়ের দিকে তাকাচ্ছে।একহাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে আনলো।আদুরে গলায় সান্ত্বনা দিয়ে বললো,”আমার মেয়ে তো কাঁদে না?অন্য আরেকজনের কথায় আমার মেয়ে তো দূর্বল হয় না।তাহলে আজ কেন কাঁদছিস?”
স্পর্শী টলমলে চোখে মায়ের দিকে তাকালো।বুক চিঁড়ে দীর্ঘশ্বাস বের হলো।জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বললো,”আম্মু,উনি কি আমার’ই বাবা?কিভাবে পারলো এমন মুখ বুজে থাকতে।অন্তত এটুকু তো বলতে পারতো,”আমার মেয়ে আমি বুঝে নেব।তোর এতো চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নাই।”কিন্ত নাহ!উনি কিচ্ছু বললো না।মুখ বুজে সব চুপচাপ সয়ে নিলো। আর শুধু উনিই না।ওই বাড়ির প্রত্যেক’টা মানুষ কাঠের পুতুলের মতো সব দাঁড়িয়ে রইলো।কি অদ্ভুত!তাই না বলো?”
মাথায় হাত দিয়ে ক্রমশ সান্ত্বনা দিতে লাগলো পিপাসা।ব্যস্ত কন্ঠে বললো,”ভুলে যা।সব ভুলে যা।মনে কর ক’টা দিন বেড়াতে গেছিলি।”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
চুপ করে রইলো স্পর্শী।সিটের উপর উঠে মাথা নুইয়ে মায়ের কাঁধে দিলো।মিনিট খানেক পরেই ফোন বেজে উঠলো। স্পর্শী সোজা হয়ে বসলো।ফোন হাতে নিতেই চোয়াল শক্ত হয়ে গেল।রাগে পুরো শরীর গিজগিজ করে উঠলো।রিসিভড করে কানে নিতেই চেঁচিয়ে উঠলো।মনের সমস্ত রাগ, ক্ষোভ, অভিমান ঢেলে দিলো ফোনের অপর প্রান্তের মানুষ টার উপর।
“আপনি ফোন দিয়েছেন কেন আমাকে?আবার কোন ঝামেলা বাঁধানোর জন্য ফোন দিছেন।যা করছেন তাতে শান্তি পাচ্ছেন না তাইতো?এখন আমার জান টা নেওয়া বাকি শুধু।আপনি আমার জন্য অপয়া।আপনার সাথে দেখা হওয়ার পর যা যা ঘটছে সব কিছুর জন্য আপনি দায়ী।লোকে আমার চরিত্র নিয়ে আঙুল তুলছে।লজ্জা করে না এতোকিছুর পরেও আবার ফোন দিতে?কি চাইছেন টা কি আপনি?প্রথমে আপনার ভাই আমার লাইফ টা হেল করে দিলো।এরপর আসলেন আপনি।আমাকে মিথ্যে কেসে ফাঁসিয়ে জেলে পাঠালেন।পুরো সোসাইটিতে আমার নামে ছিহঃ ছিহঃ করতে লাগলো মানুষ।এরপর আমার ছোট্ট বোনটাকে তুলে নিয়ে গেলেন।আঁটকে রাখলেন পুরো তিন তিনটা দিন।দিলেন ওর গায়ে কলঙ্ক লাগিয়ে।বাসা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে আশেপাশের সবাই।আফসোস!আপনি এরপরেও থামলেন না।ছোট ভাইটাকে লেলিয়ে দিলেন আমার বোনটার পেছনে।ঘর ছাড়া করলেন।লোকে ছিহঃ ছিঃ করতে লাগলো আমাদের নিয়ে।এতেও সন্তুষ্ট হলেন না।ইচ্ছে করে কক্সবাজারে গিয়ে আমার জুতো হাতে নিয়েছেন।আমার চরিত্রে অন্তিমকালের মতো কলঙ্ক লেপে দিলেন।সবাইকে এমনটা বুঝানোর চেষ্টা করলেন যেন আমি আপনার সাথে একসাথে হোটেলে রাত কাঁটিয়েছি।আর কত?আর কি করার বাকি আছে?”
বলতে বলতে একপর্যায়ে শ্বাস আটকে এলো স্পর্শীর।ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিয়ে সামলাতে লাগলো নিজেকে।স্তব্ধ হয়ে গেল পরশ।কিছুই মাথায় ঢুকছে না তার।শান্ত কন্ঠে বললো,
“সব কি ঠিক আছে, স্পর্শীয়া?কি হয়েছে?আমাকে বলো।কেউ কি কিছু বলেছে তোমায়?শান্ত হও প্লিজ!আমাকে খুলে বলো।”
স্বভাবতই কারোর উপর ব্যক্তিগত রাগ ঝাড়ার পর উক্ত ব্যক্তি যদি রাগ না হয়ে উলটো শান্ত থাকে,হাসে, সেক্ষেত্রে রাগটা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে।তাকে অপমান করছে,বকছে তাও কেন সে রাগ করবে না।কেন সে ফোন কাঁটবে না?উত্তর খুঁজে না পেয়ে উলটো আরো উত্তেজিত হয়ে পড়লো স্পর্শী।বললো,
“কিচ্ছু ঠিক নেই।যতদিন আপনি আছেন ততদিন কিচ্ছু ঠিক থাকবেও না।ফোন দিবেন না আমাকে।”
বলে কেঁটে দিলো।নাম্বার টা ব্লকলিস্টে এড করে ক্ষান্ত হয়ে বসলো।চোখ দুটো পুনরায় বন্ধ করে নিঃশ্বাস নিলো।পিপাসা মেয়ের দিকে চেয়ে রইলেন।শান্ত কন্ঠে বললেন,”ছেলেটা কি পরশ শিকদার ছিলো?”
“হু।”
আতকে উঠলো পিপাসা।ভয়কাতুরে কন্ঠে বলল,
“ছেলেটার সাথে ওমন ব্যাবহার করিস না।যতই হোক,আমার মেয়েটা ওদের বাড়ির’ই বউ।যদি তোর কথার ঝাল আর্শির উপর মেটায়।”
স্পর্শী চোখ খুলে শান্ত দৃষ্টিতে মায়ের দিকে তাকালো।”উনি এমনটা কখনোই করবে না।তুমি নিশ্চিন্তে থাকো।”
পরশ চিন্তিত হয়ে ফোনের দিকে তাকিয়ে রইলো।এ যাবৎ দু দু বার ফোন দেওয়ার পর যখন ওপাশ থেকে সুরেলা কন্ঠে ভেসে আসলো,”আপনার কাঙ্ক্ষিত নম্বরটি এই মুহুর্তে ব্যস্ত আছে।দয়া করে কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন।ধন্যবাদ।”তখন শিউর হলো যে স্পর্শী তাকে ব্লক করেছে।নিশ্চয়ই কোনো গন্ডগোল হয়েছে।কাল রাতেও তো সব ঠিক ছিলো।হুট করে কি এমন হলো?ভাবতেই দ্রুত নতুন সিম ভরলো।ডায়ালপ্যাডে নাম্বার উঠিয়ে কল করতে গিয়েও কেটে দিলো।এই মুহুর্তে স্পর্শী খুব রেগে আছে।এখন এই নাম্বার টা দিয়ে কল করলেও সে ব্লক করতে পারে।তারচেয়ে মাথা ঠান্ডা হওয়ার পর নাহয় কথা বলা যাবে।
ঘড়ির কাঁটায় তখন সাড়ে ছয়টা।দুহাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে বিছানা থেকে উঠলো স্পর্শী।পেট খিদেয় মোচড়াচ্ছে।বিকেল তিনটার দিকেই তার এসে পৌছেছে।এরপর কোনোরকম গোসল সেরে রুম আটকে,ফোন বন্ধ করে ঘুম দিয়েছে।মাইন্ড টাকে ফ্রেশ করা প্রয়োজন।আর সেটার জন্য ঘুমের কোনো বিকল্প নেই।হাই তুলে দরজা খুলে সোজা রান্নাঘরে এলো।নুডুলস বানানক্র উদ্দেশ্যে আসলেও রান্নাকরা খাবার দেখে চমকে উঠলো।ত্রস্ত পায়ে হেটে গেল মায়ের রুমের দিকে।বললো,
“আম্মু,তুমি রান্না করলে কখন?”
নড়েচড়ে বসলো পিপাসা।মেয়ের দিকে তাকিয়ে আলতো হেসে বললো,”আসার পরেই রান্না বসাইছি।এরপর গোসল করে ঘুমাইছিলাম।”
অবাক হলো স্পর্শী।একই সাথে জার্নি করেছে তারা।অথচ সে এসে রেস্ট নিয়েছে, কিন্তু মা ঠিকই যাবতীয় কাজ করে তারপর রুমে গেছে।সত্যিই মায়েদের রেস্টের প্রয়োজন হয় না।
“আমার খিদে পেয়েছে।আসো খাবো।”
অন্ধকারাচ্ছন্ন কক্ষ।একফোঁটাও আলো নেই কোথাও।দরজা জানলা পুরোপুরি বন্ধ করা।নিঃশব্দে খাটের উপর বসে আছে শামসুল।আজ প্রায় দেড় মাস পর আবার ও পূর্বের উনিশ টা বছরের মতো একাকীত্ব গ্রাস করেছে তাকে।চশমা টা ভিঁজে উঠছে বারবার।ডান হাত দিয়ে সেটা নামিয়ে মুছে নিলো পুনরায়।শান্তি কল করছে।এ যাবৎ পাঁচ/ছয় বার কল করেছে সে। কিন্তু প্রতিনিয়তই শামসুল কেটে দিয়েছে।এ পর্যায়ে বিরক্ত হলো।ফোনটা হাতে নিয়ে বন্ধ করে দিলো।কেমন একটা অপরাধবোধ ভেতর থেকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে।এমনিতেই পরশের সাথে স্পর্শীর ওই ছবিগুলো দেখে রেগে গেছিলেন তিনি।মেয়ের প্রতি একটা খারাপ অনুভূতির জন্ম নিয়েছিলো।তার উপর গত রাতে লাগেজ হাতে পালাতে দেখে ভয় পেয়ে গেছিলো।যেকোনো মূল্যেই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে সম্মান এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে সামলাতে চেয়েছিলেন।কিন্তু হুট করে স্পর্শী এবং শান্তির আচরণে স্তব্ধ হয়ে গেছিলেন।ওই মুহুর্তে যেন কথার খৈ হারিয়ে ফেলেছিলেন।আদরের বোন, অন্যদিকে আদুরে মেয়ে তার উপর মেহমান।পুরো ঘটনাটা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন শামসুল।তবে এখন মনে হচ্ছে তিনি ভুল করেছেন।উচিত ছিলো মেয়ের পক্ষ নিয়ে কিছু বলা।এতে শান্তি রাগ করলেও পরে মানিয়ে নেওয়া যেত।কিন্তু এখন মেয়ের এই অভিমান কি করে ভাঙাবে?
খুট করে দরজার বাইরে আওয়াজ হলো।শামসুল শান্ত কন্ঠে বললেন,”ওখানে কে?”
“আব্বু,দরজা টা খুলবে?”
উঠে বসলো শামসুল।আলতো পায়ে উঠে দরজা খুলে পুনরায় খাটে বসলো।সোভাম চারদিকে তাকিয়ে বললো,
“লাইট নিভিয়ে আছো কেন?অন্ধকার তো।”
শুনলো শামসুল।বললো,”জ্বালিয়ো না।এভাবেই থাক।”
লম্বা করে শ্বাস নিয়ে বাবার পাশে বসলো।গমগমে কন্ঠে বললো,”স্পর্শীকে ফোন দিয়েছিলে?”
“নাহ!”
“আমি দিয়েছিলাম অনেকবার।বন্ধ বলছে।হয়তো রেগে ফোনটা সুইচ অফ করে রেখেছে।”
থেমে পুনরায় বলল, “আন্টির ফোন নাম্বার আছে তোমার কাছে?
চমকে তাকালো শামসুল।নাহ!তৃষ্ণার কোনো নাম্বার নেই তার কাছে।থাকবেও বা কিভাবে?সেতো কথাই বলেনি এখন পর্যন্ত।মুখে বললো,
” নাহ!নেই।”
অবাক হলো না সোভাম।কারন তাদের মধ্যকার তিতকুটে সম্পর্ক টা সে খেয়াল করেছে এর আগেই।
“তুমি কি ওদের আনতে যাবে?তাহলে আমিও সঙ্গে যেতাম।”
বাঁধ সাধলো শামসুল।ক্লান্ত কন্ঠে বললো,
“নাহ!আজ-কাল কের মধ্যে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। রাগ করে গেছে।ক’টা দিন থাকুক।রাগ টা একটু কমুক।তারপর নিয়ে আসবো।আর তাছাড়াও ঢাকায় থাকলে পরশ শিকদারের থেকে দূরে থাকবে।
সায় দিলো সোভাম।বললো,
” ঠিক আছে।আমি কাল গিয়ে একবার দেখে আসবো।এমনিতেও ঢাকায় যেতে হবে।
খাওয়া শেষ হয়েছে আরো কিছুক্ষণ আগে।মা খাবার পর পর’ই শুতে গেছেন।স্পর্শী আলতো পায়ে রুমে গিয়ে জামাকাপড় গুছিয়ে রাখতে লাগলো।এরপর ফোনের কথা মনে পড়তেই হাতে নিলো।অন করে শুয়ে পড়লো খাটে।মিনিট খানেক ফেসবুক স্ক্রল করার মধ্যেই কল চলে এলো।অপরিচিত নাম্বার।কে দিতে পারে কল?ভাবতে ভাবতেই কেটে গেল।এরপর আবারো বেজে উঠলো রিং।স্পর্শী আলতো হাতে রিসিভড করে কানে নিতেই ওপাশ থেকে ধমকের শব্দ ভেসে আসলো।
“এইই মেয়ে?ফোন বন্ধ করে রেখেছিলে কেন?তুমি জানো বিকেল থেকে ঠিক কত বার কল করেছি।একে তো নাম্বার ব্লক করেছো তার উপর এখন আবার ফোন ও বন্ধ করে রেখেছো।”
কপাল কুঁচকে কথাগুলো শুনলো স্পর্শী।শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
“এটাও কি আপনার নাম্বার?”
ওপাশ থেকে মুহুর্তে হ্যাঁ স্বরুপ উত্তর ভেসে আসলো।সাথে সাথেই ফোন কেটে দিলো স্পর্শী।আলগোছে এই নাম্বার টাকেও ব্লক লিস্টে ছুঁড়ে সস্তির নিঃশ্বাস ফেললো।কিন্তু লাভ হলো না মোটেও।ঠিক মিনিট পাঁচেকের মধ্যে নতুন আরেকটা সিম থেকে কল চলে এলো।সন্দেহ গাঢ় হলো স্পর্শীর।এটাও নিশ্চয়ই পরশের।অনুমান প্রখর হওয়ার পরেও ফোন রিসিভড করলো।
“এইই একদম ফোন কাটবে না।খুন করে দিবো।আমার কথা শোনো।”
“এই আপনার কতগুলো সিম হ্যাঁ? কাইন্ডলি সব সিমের নাম্বার গুলো লিস্ট দিবেন আমাকে।আমি গুণে গুণে সবকটাকে ব্লকলিস্টে ফেলবো।”
হাসলো পরশ।বললো,
“তোমার ব্লকলিস্ট ফুল হয়ে যাবে মেয়ে,তবুও আমার সিম শেষ হবে না।”
“ওকে।তাহলে দেখা যাক।”
বলেই ফোন কেঁটে পুনরায় ব্লক করে দিলো।মুচকি হেসে ফোন টা কে নিয়ে শুয়ে রইলো পরশের পরবর্তী কলের আশায়।কিন্তু তাকে হতাশ করে দশ মিনিটের মাথাতেও কোনো কল এলো না।পনেরো মিনিটের মাথাতেই টুং করে একটা মেসেজ এলো।
“দ্রুত নিচে আসো।আমি তোমাদের বাড়ির পেছনেই আছি।আমগাছ টার নিচে। ‘
মেসেজ পড়তেই স্তব্ধ হয়ে গেল স্পর্শী।দ্রুত গতিতে কল করলো পরশের নাম্বারে।সাথে সাথেই ওপাশ থেকে রিসিভড হলো।
” কি সমস্যা? ফোন করেছো কেন?নিচে আসো দ্রুত।খুব মশা এখানে।”
পরশের কথা শুনে কথার খৈ হারিয়ে ফেললো স্পর্শী।ব্যতিব্যস্ত কন্ঠে বললো,
“আপনি কি পাগল?আপনি বাড়িতে আসছেন কেন? কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে। ঝামেলা বাঁধার আগে এক্ষুনি ওখান থেকে যান। ”
শুনলো না পরশ।খামখেয়ালি কন্ঠে বললো,
“তুমি আসবে কি না তাই বলো।নইলে কিন্তু আমি একদম গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়াবো।”
থেমে,
“আরে মাত্র পাঁচটা মিনিটই তো।আসো।”
উত্তেজিত হয়ে গেলো স্পর্শী।অনুরোধের সুরে বললো,
“আরে আপনি বুঝতে চাইছেন না কেন?আমি বাড়িতে নেই।আমি ঢাকা চলে আসছি সকালে।এখন আপনি ওখানে থাকলে আমার ক্ষতি ছাড়া আর কিচ্ছু হবে না।সবার সন্দেহ টা সত্যিতে পরিণত হবে।আমার চরিত্রে নতুন করে কলঙ্ক লাগানো ছাড়া আপনার আর কোনো কাজ নেই না।প্লিজ!কেউ দেখার আগে ওখান থেকে বের হন।এক্ষুণি।”
স্তব্ধ হয়ে গেল পরশ।অবাকের সুরে বললো,
“তুমি ঢাকায় গেছো মানে?হুট করে ওখানে কেন গেলে?কি হয়েছে স্পর্শীয়া?আমাকে বলো।তুমি সকালে আমার সাথে ওরকম ব্যাবহার কেন করলে?আর বাড়িই বা ছেড়েছো কেন?”
নিশ্চুপ রয়ে শুয়ে রইলো স্পর্শী।ফোনের অপর প্রান্ত হতে একেরপর এক জিজ্ঞেস করেই যাচ্ছে পরশ।বেশ কিছুক্ষণ নিরব থাকার পর বললো,
রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৪০
“ঝামেলা হয়েছে।তাই চলে এসেছি মা কে নিয়ে।”
পরক্ষণেই ভ্রুঁ কুঁচকে ফেললো।ঝাড়ি মেরে বললো,
“আজব তো!আমার ফ্যামিলি তে যাই হয়ে যাক না কেন, সেটা আমি আপনাকে কেন বলবো?কে আপনি?শুনুন,সরদার বাড়ির ত্রিসীমানায় ও আর যাবেন না।এতে ক্ষতি আপনার’ই হবে।আর আমাকে আর কক্ষণো ফোন দিবেন না।একটা কথা মনে রাখবেন,যা হয়েছে সব আপনার জন্য।আপনি আমাকে লোকমুখে সস্তা বানানোর জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলেন।এবার স্বপ্ন তো পূরণ হয়েছে।দয়া করে এবার ছেড়ে দিন।”