রাজবধূ পর্ব ২৫
রেহানা পুতুল
চৌকিদার পান খাওয়া ঠোঁটে বলল,
“আমরা দুইটা উত্তম ও গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব নিয়া আসছি তোমার কাছে। রাখা না রাখা তোমার বিষয়। জোরের কিছুই নাই। রাখলে তোমার জন্য ভালো। গ্রামে তোমার ইজ্জত বাইড়া যাইবো।”
নূরীর কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না। সে বিস্ময়ভরা চোখে তাদের দুজনের দিকে চেয়ে রইলো। সন্দেহাতীত কন্ঠে বলল,
“খুইলা কন যা কইবেন?”
মেম্বার ফজল মিয়া চুপচাপ ভদ্রবেশে বসে আছে। চৌকিদার তার দরাজ কন্ঠকে যথাসম্ভব নরম করে নিলো। বলল,
” সামনেতো ইলেকশন আইতাছে। মকবুলরে গ্রামে সকলেই ভালো জানতো। তোমারেও সবাই ভালো জানে। সেই যৌবন বয়সের সাধ আহ্লাদ বির্সজন দিয়া দুইটা ছোট ছোট মাইয়া নিয়া স্বামীর ভিটায় পইড়া ছিলা। অনেক অভাব করছ। সংগ্রাম করছো। কিন্তু কেউ তোমার চরিত্রের কোন ত্রুটি বাইর করতে পারেনাই। বরং একা হাতে লড়াই কইরা টিকা আছিলা স্বামীর ভিটায়। এইটা প্রশংসার কথা। মেম্বার সাব চান তুমি ইলেকশনে মেম্বার পার্থী হইয়া খাড়াও। ক্যামনে কি কইরতে হইবো,তা মেম্বার সাব তোমারে দিক নির্দেশনা দিয়া দিবো।”
নূরী বলল
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
” প্রস্তাব মন্দ নয়। আমার মেয়েরা বড় এখন। বিবাহিত। আমি তাদের সঙ্গে ও আমার দুই জামাইয়ের লগে আলাপ কইরা জানামু। বাকি প্রস্তাব? ”
“তোমার ত কোন ছেলেপুলে নাই। মাইয়ারা চইলা গ্যাছে পরের ঘরে। তুমি এখন সিংগেল। বয়সওতো তোমার বেশি না। অকালে সঙ্গী হারাইলা। তাই আমরা চাই তোমার একজন ভরসার সঙ্গী হোক। মানে তুমি চাইলে একটা বিয়া করতে পারো।”
নূরী ভ্রুকুটি করে চাইলো চৌকিদারের দিকে। হই হই করে উঠল না। জিজ্ঞেস করলো ধীর গলায়,
“আমারে এই মাঝ বয়সে কে বিয়া করতে আইবো?”
“এইযে আমগো বিপত্নীক মেম্বার সাব তোমারে পছন্দ করছে বিবি হিসেবে। তুমি মেম্বারের পদে খাড়াইলে সে খাড়াইব না। তোমারে মেম্বার বানাইয়া দিব। আর এমনিতেও তোমার ইজ্জত আগের থেইকা বাইড়া গ্যাছে। কারণ তুমি উজানপুর গ্রামের তালুকদার পরিবারের বেয়াইন।”
নূরী কিছু একটা চিন্তা করে নেয় গোপনে। মেম্বারের দিকে চায় না। অন্যদিকে দৃষ্টি রেখে জবাব দেয় সরল কন্ঠে,
” আপনাগো দুই প্রস্তাব আমি মন দিয়া হুনছি। সময় সুযোগ কইরা আমার মেয়ে ও জামাইগো লগে আলাপ কইরা জানামু। ধরেন তারাতো বর্তমানে আমার গার্ডিয়ান। আমি একলা ত আর আমার জীবনের সিদ্ধান্ত নিতে পারি না এখন। তাইনা।”
ফজল মেম্বার প্রসন্ন চোখে নূরীর দিকে চায়। বলে,
“নূরী, তোমার ঘরে কিছু সদাই-পাতি লাগবো?”
“না,আমার ছোট মেয়ের জামাই বাজার কইরা দিয়া গ্যাছে।”
“তুমি ভাইবা জানাইও। টাকা পয়সা বড় কথা নয় নূরী। মেম্বার হইয়া একটা মর্যাদার জীবন পাইলে তোমার দিনগুলো আরো আনন্দে কাটবো।”
নূরী নিরুত্তর। তারা দুজন চলে যায়। নূরী খালিঘরে আওয়াজ করে বলে,
চ্যাতলে হয়না সবসময়। মেম্বারের লগে ভাঁজে চইলতে হইবো আমার সেই কাম শ্যাষ করণ পর্যন্ত। আমার মাইয়ার ম্যাট্রিক পরিক্ষাও শ্যাষ হইয়া যাইবো এই ভিতরে। ভোটাভুটিতো তার পরেই। বহুত সময় আছে। বিয়ার সাধ থাকলে সেই অল্প বয়সেই বইতে পারতাম। সঙ্গী ছাড়া যৌবনকাল কাটাইতে পারলে বর্তমান কালও পারমু। আমার সুখ দুঃখের সঙ্গী আমার দুই মাইয়াই। তারাই মায়েরে চিরদিন দেখাশুনা করবো। আমার সেই আত্মবিশ্বাস আছে তাদের উপরে। সেইভাবে শিক্ষা দীক্ষা দিয়াই দুই মাইয়ারে বড় করছি।
রাজ দুইদিন থেকে শহরে চলে গিয়েছে। আদুরীর বিয়ের সময় বেশিদিন থাকবে। তখন শিখাকেও দেখতে পাবে দিবানিশি। তাদের ঘরের পরিবেশ বিষন্ন। সুফিয়ার মন খারাপ। ভাই খু * ন হলো, বড় ছেলে খু* ন হলো, ছোট ছেলে তার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করল না,এসব ভেবে।
রানিরও মন খারাপ। বিধবা হলো। খালেদকে নিজের করে পাবে কিনা,তালুকদার বংশের সন্তান সে গর্ভে ধারণ করতে পারবে কিনা, এসব ভেবে।
আদুরীও ভালো নেই। শোয়েবকে পাবে না। অন্য পুরুষের ঘর কিভাবে করবে সে এসব ভেবে।
আমেনার মন খারাপ। একটা কন্যা সন্তানের অভাব তার ঘুচল না। স্বামী থেকেও নাইয়ের মতো। একমাত্র ছেলেকে বিয়ে করাতে পারছে না।
ছোট তালুকদারের মন খারাপ। দুজন মানুষকে হ* ত্যা করতে পারছে না বলে।
বাদশার মন খারাপ নিজের জন্ম পরিচয় নেই বলে।
শিখা তার ইংরেজি নোটখাতাটা নিয়ে একটা প্যারাগ্রাফ লিখতে বসল। তক্ষুনি তার নজরে পড়লো দু’ভাগ করে কিছু লিখা। দেখলো রাজের হাতের লিখা। শিখা বিষম খেলো। আবিষ্ট হয়ে নিবিষ্ট চিত্তে বারবার পড়লো তার মন ভরা অবধি।
“তোমার সৌন্দর্যে লজ্জা পেয়ে মেঘের আড়ালে চাঁদ লুকায়। তুমি স্রস্টার নিখাদ সৃষ্টি। ”
“তুমি আমার সোনালী ভোর! তুমি আমার বেঁচে থাকার প্রতিটি নিঃস্বাস! তুমি আমার আজন্ম সাধ!”
শিখা আনন্দে আত্মহারা! লেখাগুলোর পৃষ্ঠাকে বুকের মাঝে চেপে ধরলো। ঠোঁট উল্টিয়ে আহ্লাদী স্বরে বলল,
হুহ্! আইছে আমার কবি। আমার নায়ক গো। এক্কেবারে সিনেমার নায়কদের মতো। যেমন মুখের ভাষা,তেমন তার কলমের ভাষা। দেখতেও কি বাবু সাহেবের মতো লাগে। বুঝি না, শহরের বাবু শহরের মর্ডান মেয়েগোরে বিয়া না কইরা গ্রামের আমারে ক্যান বিয়া করলো? তাইলে ত এত নিয়ম মানতে হইতো না। তারকাছেই তারে রাখতে পারতো। যার বুকে এত উথাল-পাতাল প্রেম, তার দরকার বউরে পকেটে রাখনের। এরপরে যখন ফ্রি হমু উনার সাথে,এই কথাটা জিগামুই। দেখি কি জবাব দেয় আমায় নায়ক বাবু।
একদিন ভর দুপুরে বাদশা ফুলবানুর সঙ্গে দেখা করে জংলার ধারে। আজ সে ফুল বলে সম্বোধন করলো তাকে। বলল,
“তোমার বানু শব্দ কাইটা ফালাইলাম। আইজ থেইকা তুমি শুধু ফুল। বাদশার, প্রেমিকা, বউ কোন বানু টানু না। শুধুই ফুল।”
ফুল লাজরাঙা বদনে খিলখিল করে হেসে উঠে। বাগিচার মাঝে শীতের অলস দুপুরের নির্জনতায় সে হাসি অশরীরী আত্মার মতো আওয়াজ তোলে। বাদশা ফুলের মুখের দিকে অপলক চেয়ে থাকে। ফুল বাদশার চুল ধরে নেড়েচেড়ে বলে,
“অমন কইরা কি দ্যাহেন? আমার কি রূপ টপটপাইয়া পড়ে বৃষ্টির মতো?”
“হ পড়ে। উপচাইয়া পড়ে। কবে যে তোরে আমার বউ বানামু। কবে যে আমার ঘরে তুলমু। তখন ত এদের কাম ছাইড়া দিমু। দরকার হইলে তোরে নিয়া দেশান্তরী হমু। তবুও এই বাড়ির দাসীগিরি করতে দিমুনা তোরে আর।”
“ঘর আছে নি আপনের? এদের কাম ছাড়লে দুইজনে খামু কি? চলবো ক্যামনে বাদশা ভাই?”
বাদশা ফুলের মাথাকে নিজের কাঁধে এনে রাখে। পিঠের উপরে ভালোবাসার পরশ বুলাতে বুলাতে বলে,
“কামের সব লাইন ঘাট করতাছি। আমি তোরে আর মায়েরে নিয়া শহরে চইলা যামু। নদীর ওপাড়ে কেরানীগঞ্জ, খোলামুড়ায় অল্প দামে টিনের ঘর ভাড়া পাওয়া যায়। সেইদিকে বাসা নিমু। বুড়িগঙ্গা নদী নৌকায় কইরা পার হমু রোজ। কামের জন্য এপার থেইকা ওপারে ঢাকায় যাওয়া লাগবো। শহরে কামাই ভালো। তোরে বুকে জড়ায়া নিয়া অন্ধকার সিটে বইসা রঙিন সিনেমা দেখার আমার খুব ইচ্ছা।”
ফুল উদাস হয়ে যায় বাদশার কথা শুনে। গোপনে রঙিন সুতার স্বপ্ন বোনে। বাদশা ফের বলে উঠে,
“তুমি আমারে আর বাদশা ভাই বলবা না। কেবল আপনি বইলা কথা বলবা। তাগো সামনে এক আধবার বইলো ভাই। নইলে তারা ধইরা ফালাইবো। তাদের পুরা ঘরটাই ছোট খাট একটা রাস্ট্র! একজনের পিছনে আরেকজন রাজনীতির চাল চালে।”
“আইচ্ছা বাদশা ভাই। কমু না। মনে থাকবো।”
“ওই দেখো। এখনওতো কইলা বাদশা ভাই।”
“থুক্কু। ঠিক কইরা ফালামু।”
“পরশু থেইকা শীতের মেলা শুরু। তিনদিন চলবো মেলা। তোমারে দ্বিতীয়দিন নিয়া যামু রিকশায় কইরা।”
“ক্যামনে যামু বাদশা ভাই? যাওন যাইবো?”
“যাইবো। আমি ম্যানেজ করমু। সেইটা নিয়া তোমার ভাবা লাগব না। ভাই বলা স্টপ করো ফুল।”
বাগিচার কাজ শেষ করে বাদশা ও ফুল দুজন আলাদা হয়ে যায়। ভিন্ন পথে ভিন্ন সময়ে দুজন বাড়ির অন্দরে প্রবেশ করে।
বাদশা ফুলকে মেলায় নিয়ে যায়। কারো অগোচরে নয়। সবার সামনে। প্রকাশ্যেই। সুফিয়া বিবি ঘরের সবার উদ্দেশ্যে বলে,
“ফুলবানু মাইয়াটার কেউ নাই। এতিম মাইয়া। শখ আহ্লাদ সবার মনেই থাকে। গত বছরও নাকি আমাগো আন্ধার মানিক ক্ষেতের দরগায় যাইতে চাইছিলো। এবারও কইলো মতির মায়ের কাছে। পরে আমিই বাদশারে ডাইকা কইলাম ফুলবানুরে মেলা থেইকা ঘুরায়া আন। বরকত গেলে তারেও নিয়া যা। সে বাদশারে ভাই কয়। বাদশাও মাইয়াটারে বইনের মতো জানে।”
সুফিয়ার কথার উপরে আর কেউ কোন উচ্চবাচ্য করল না।
বাদশা তার ফুলকে যা যা কিনতে চায় কিনে দেয়। আলতা,লিপিষ্টিক,লালচুড়ি,ফিতা,কানের দুল,কাঠের ছোট্ট একটা পালকি। সেখানে বউ বসে নাইওর যাচ্ছে বাবার বাড়ি। সেই পালকি কিনতে পেরে ফুলের আর খুশী ধরে না। আরেকটি খেলনা কিনলো সে। কাঠের দুজন জামাই বউ। বউ শাড়ি পরা,জামাইয়ের পাঞ্জাবি পাজামা পরা। মাথায় টুপি।
ফুলকে বাদশা নাগরদোলায় চড়ায়। চরকিতে উঠায়। একজন পাগড়িওয়ালা পুরুষ জোকার সেজে নাচ দেখাচ্ছে। মেলায় আসা ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা চারপাশ থেকে তাকে ঘিরে আছে। মাঝে মাঝে তারা উৎসুক চোখে হাততালি দিয়ে উঠছে।
বাদশা ফুলকে,আঙ্গুর ভাজা,গরম গরম জিলাপি খাওয়ায়। নিজেও খায়। ফুল উৎফুল্ল স্বরে বলে উঠে,
“ওইটা কি? খামু আমি।”
“ওইটা মজার খানা। আসো। ”
মেলায় প্রচুর ভীড়। লোকে লোকারণ্য। ডাক ঢোলের শব্দ,নানা রকমের বাঁশীর ফ্যাঁ ফুঁ শব্দে কাছের কথাও শুনতে অসুবিধা। ফুল হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে বাদশার একহাত পেঁচিয়ে শক্ত করে ধরে রাখে। বাদশা তাকে নিয়ে যায় মজার খানা বিক্রেতার কাছে। দুই টাকার মজার খানা কাগজে করে ফুলের হাতের তালুতে নিয়ে দেয়।
ফুল তিন আঙ্গুলের চিমটির সাহায্যে মজার খানা তুলে দিচ্ছে বাদশার মুখে। নিজেও মুখে তুলে খাচ্ছে। মজার খানা ফুলের কাছে ভীষণ স্বাদ লাগলো। সে ভালো করে চেটেপুটে খাওয়ার জন্য বাকিগুলো কাগজ থেকে নিজের হাতের তালুতে ঢেলে নিলো। একদম শেষেরগুলো বাদশার ঠোঁটের কাছে নিয়ে বলল,
“শ্যাষ ত। আমার হাত থেইকা খাইবেন?”
বাদশা ফুলের হাতকে নিজের এক হাত দিয়ে তুলে ধরে। জিভ দিয়ে ফুলের হাতের তালু হতে বাকি মজার খানাগুলো চেটে চেটে খেয়ে নেয়। ফুল অন্যরকম আবেশে শিউরে উঠে। জমজমাট মেলার সোরগোলের মাঝে বাদশা ও ফুলের এই রোমাঞ্চ সবার অলক্ষ্যেই ঘটে গেলো। সন্ধ্যায় হুড নামানো রিকশায় বাদশা ফুলকে নিয়ে উঠে বসলো। পিঠের উপর হাত দিয়ে বসল যেন এবড়োখেবড়ো পথে রিকশা ঝাঁকুনি খেলে তার ফুল না পড়ে যায়। দুজন বাড়ি চলে এলো। কোন সমস্যাই হলোনা। ফুল রান্নাঘরে চৌকিতে মেলে মতির মাকে দেখালো সবকিছু। ঘরের সবার জন্য বাদশা জিলাপি কিনে আনলো।
মতির মা মুখ টিপে হাসে। বলে,
“হইছে ফুল। যত্ন কইরা রাইখা দে। এমন বাদশা আর পাইবি না।”
তারপর একদিন দু’পক্ষের পারিবারিক উপস্থিতিতে আদুরীর বিয়ের দিন ধার্য করা হয়। সময়টা যখন পড়েছে তখন শিখার পরিক্ষা শেষ হয়ে যাবে প্র্যাক্টিক্যালসহ। আদুরী কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। লুকিয়ে শোয়েবের সঙ্গে দেখা করে বাগান পেরিয়ে সেই জংলার ভিতরে। যথাসম্ভব দুজন দুজনের ঘনিষ্ঠ হয়। এভাবে দুজনের খানিক মিলন গভীর বিরহের সঞ্চার করে। উপলব্ধি করতে পেরেও দুজন দেখা না করে থাকতে পারে না। সময় সুযোগ মিললেই দেখা করে।
বেলা বয়ে গেলো। সময় গড়ালো সময়ের নিয়মে। রুক্ষ শীত বিদায় নিলো। প্রকৃতিতে পাতাঝরা বসন্ত এলো তার নব উল্লাস নিয়ে। কারণ পাতাঝরার খেলা শেষেই তার শাখায় শাখায় গজে উঠবে নব পত্রপল্লবের রূপ মাধুরী।
শিখার এস.এস.সি পরিক্ষা শুরু হলো। এই ভিতরে সে ও রাজ দুজনেই পত্র বিনিময় হতে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রেখেছে। মেম্বার নিজেই একদিন এলো নূরীর কাছে তার প্রস্তাবের কি হাল হকিকত জানার জন্য। নূরী বলল তার মেয়ের পরিক্ষা শেষ হোক। তারপর জানাবে।
বাদশা নূরীর কাছে আসে। জিজ্ঞেস করে,
“খালাম্মা, আদুরী আপার বিয়ার পরে না আগে আপনার কাজ সারবেন? কন? কারণ আমার একটা হিসাব আছে।”
“আদুরীর বিয়া শেষ হউক। তখন শিখা সেই বাড়িতেই থাকবো। আমার বাইর হইতে অসুবিধা হইব না। তার আগে ঠিক হইব না কাজটা করা।”
“আইচ্ছা। প্রস্তুতি পুরাই নিয়া রাইখেন।”
বলে বাদশা চলে যায়।
রাজবধূ পর্ব ২৪
এদিকে ছোট তালুকদার নূরী ও বাদশাকে মারার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলে। আস্তানাও রেডি। তাকে সহযোগিতা করে তার দুজন ব্যক্তিগত গোপনরক্ষী।
আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি আদুরীর বিয়ের। এমন এক সকালে তার শরীর গোলাতে লাগলো। দৌড়ে গিয়ে উঠানের একপাশে সে হড়বড় করে বমি করে দিলো।
বরকত সবাইকে ড়াক দিলো। ঘরের জানালা দিয়ে সে দৃশ্য দেখে রানী ফিচলে হেসে উঠলো।