রেড রোজ ২ পর্ব ৩৭

রেড রোজ ২ পর্ব ৩৭
ফারহানা নিঝুম

“উফ্ এতটা হট’নেস?”
ঐশ্বর্যের কথার অর্থ বুঝলো না উৎসা।
“মানে?কী বলতে চাইছেন?”
ঐশ্বর্য এতক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে উৎসার করা সব কান্ড দেখছিল, উৎসা ঠিক কি ভাবে আফসানা কে উচিত শি’ক্ষা দিয়েছে তাই। ঐশ্বর্য পুরোই অবাক, মেয়েটা একদম সাদা সিধা।তার সামনে নরম তুলতুলে তোলার মতো,তার সংস্পর্শে এসে বরফের ন্যায় গলে যায় অথচ এখন পুরোই আ’গু’ন ছিল।
“বেইবি ইউ নো তোমাকে দেখে ফি’দা হয়ে গেছি।”
উৎসা কিঞ্চিৎ কপাল কুঁচকে নিল।বুকে দু হাত গুজে বলে উঠে।
“এখনো সময় আছে ক্যারেক্টার ঠিক করে নিন।”
ঐশ্বর্য নাকের নিচ ঘষে পিঙ্কি ফিঙ্গার কা’ম’ড়ে ধরে, কিছুটা ফিসফিসিয়ে বলে উঠে।
“ইন্টিমেট হও গড প্রমিজ ভালো হয়ে যাবো।”

উৎসা ঐশ্বর্যের বুকে ধাক্কা দিল, ঐশ্বর্য শব্দ করে হেসে উঠলো। উৎসা হিসহিসিয়ে বলে উঠে।
“কল্পনায় যত ইচ্ছে যা ইচ্ছে করে নিন, কিন্তু বাস্তবে..
“উপ্স সুইটহার্ট কল্পনায় না বাস্তবে ফিল করতে চাই, আমি যেখানে যেখানে টাচ করব সেখানে…..”
উৎসা ঐশ্বর্যের মুখ চেপে ধরে,চোখ পা’কিয়ে বলে উঠে।
“অস’ভ্য রিক চৌধুরী ভালো হন,মুখে লাগাম টানোন।”
ঐশ্বর্য ক্রূর হাসলো।
“উপ্স বেইবি মেইন পয়েন্ট মি’স করে গেলে।”
উৎসা বিরক্ত নিয়ে সামনের দিকে এগুলো, ভেতর কেমন কাঁপছে হাত পা কাঁপছে। ঐশ্বর্যের সামনাসামনি থাকলে অদ্ভুত অনুভূতি হয় কিন্তু যত যাই হোক উৎসা কঠোর আচরণ করবেই। যাতে ঐশ্বর্য অ’পমা’ন বোধ করে, এরপর নিজ থেকেই যেনো চলে যায়।
উৎসা সামনের দিকে এগুতে ওর ওড়নায় টান পড়ল, খুব সূক্ষ্ম ভাবে উৎসা কে টেনে দুহাত পিছমোড়া করে চেপে ধরে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“এতটা ডেস্পারেট?”
উৎসা মোচড় দিয়ে উঠে।
“আপনি কী করছেন হ্যা? লজ্জা বলতে কী আদেও কিছু নেই?”
ঐশ্বর্য বাঁকা হাসলো,অধর বাঁকিয়ে বলে উঠে।
“ট্রাস্ট মি শেইম বলতে কিছু নেই, জিসান বলে না শেইম লেস ম্যান।”
উৎসা রি রি করে উঠে, ঐশ্বর্য মুখের ভাবান্তর বদলে নেয়। গম্ভীর স্বরে বলে উঠে।
“কন্ট্রোলে আছি কন্ট্রোলে থাকতে দাও, আমি যদি কন্ট্রোললেস হই তাহলে ইউ আর ফিনিশ রোজ।”
উৎসা আড় চোখে তাকায় ঐশ্বর্যের দিকে।
“আপনি অস’ভ্য।”
“উফ্,আই নো দ্যাট।ইউ নো আমি যদি জোর করতে শুরু করি তাহলে আর থামবো না।সে তুমি যতই কাঁদো না কেন!তখন ডিরেক্ট..
ঐশ্বর্য কথার মাঝখানে নিচের ঠোঁট কা’ম’ড়ে ধরে,উৎসা হাঁ’সফাঁ’স করছে।অসাড় হয়ে আসছে সর্বাঙ্গ।
“ছাড়ুন আমাকে! আপনি যখন তখন আমাকে ছুঁবেন না।”
“টাচ টাচ টাচ।”
ঐশ্বর্য বারংবার স্পর্শ করে উৎসা কে,উৎসা অতিষ্ঠ হয়ে উঠলো। রিতিমত দৌড়ে পালিয়ে গেল।
ঐশ্বর্য হো হো করে হেসে উঠলো।

ঘুম থেকে উঠে কফির জন্য ড্রয়িংরুমে এলো কেয়া, ভীষণ বিরক্ত লাগছে আজ তার। এমনিতেও ঘাড়ের দিকটায় আজ ব্যথাও করছে ঘুম।
কেয়া আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই,হতাশ হলো কেয়া। এখন তাকে কফি কে দেবে? এখানে তো কফি ম্যাকার নেই, না হলে সেই বানিয়ে নিতো।
কেয়া গ্লাস নাড়াচাড়া করছে,সেই মূহূর্তে উপস্থিত হলো রুদ্র। কেয়া কে দেখে দুষ্টু হাসলো, অতঃপর এগিয়ে আসে।
“আমি হেল্প করে দি?”
কেয়া চমকে উঠে, রুদ্র কে আশা করেনি।কেয়া একটু লজ্জায় পড়ে গেল, ইতস্তত বোধ করছে।
“ওই আসলে আমি…
“আমি করে দিচ্ছি।”

কেয়া তাকিয়ে সবটা দেখলো, রুদ্র খুব দ্রুত কফি বানিয়ে কেয়ার দিকে এগিয়ে দিল। প্রথম দিকে একটু অস্বস্তি বোধ করলো, কিন্তু যে লেভেলের মাথা ব্যথা করছে তাতে কফিটা প্রয়োজন। শেষমেশ কেয়া কফি নিয়েই নিল, কিন্তু চুমুক দিতে গিয়ে পড়ল বিপ’ত্তি। মাথা নিচু করতে গিয়ে ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করলো, মৃদু আ’র্তনা’দ করে উঠে কেয়া। রুদ্র অস্থির হয়ে এগিয়ে গেল।
“কী হয়েছে?”
“ঘাড়ে ব্যথা করছে!”
রুদ্র বেশ চিন্তিত হলো, কিছুটা একটা ভেবে বলে উঠে।
“কফি শেষ করে রেডি হও ডক্টরের কাছে যাব।”
কেয়া অবাকের সুরে বলে উঠে।
“এখন? কিন্তু..
“কোনো কিন্তু না,রেডি হও আমি বলছি।”

কেয়া আর কথা বাড়ালো না চুপচাপ গিয়ে রেডি হয়ে নিচে এলো। রুদ্র বসেই ছিল,কেয়া কে দেখে উঠে দাঁড়ায়।কেয়া কে নিয়ে ডক্টরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।
ডক্টর দেখিয়ে দুপুরের দিকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় দুজনেই। কিন্তু মাঝ রাস্তায় কেয়া বায়না ধরে আশেপাশে ঘুরে দেখবে। রুদ্রও কেয়ার সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কা’টাতে চাইছে। দুজনে মিলেই কিছুটা দূরে কা’চ্চি ডা’ইন রেস্টুরেন্টে গেল। এখানেই লাঞ্চ করবে বলে ভাবছে।
“আচ্ছা আপনি একটা কথা বলুন আমরা এখানে কেন?”
কেয়ার প্রশ্নে রুদ্রর মাথায় দুষ্টুমি খেলে গেল।
“সেদিনের মতো কিস করতে।”
কেয়ার মুখ হা হয়ে গেল, রুদ্র চরম নির্ল’জ্জ হয়ে যাচ্ছে।
“এহ শখ কত আপনার!”
রুদ্র হেসে ফেলল,ওয়েটার কে ডেকে খাবার অর্ডার দিল।
“তুমি থাকো আমি এখুনি আসছি।”

কেয়া কিছুই বলতে পারলো না,তার আগেই রুদ্র উঠে গেল।একে একে সব গেস্ট যেতে লাগল, এদিকে রুদ্র এখনো আসেনি। এক সময় পুরো রেস্টুরেন্ট খালি হয়ে গেল,আধ ঘন্টা হতে চললো অথচ রুদ্র এলো না। কিছুক্ষণের মধ্যেই চারিদিক কেমন অন্ধকার হয়ে গেল।কেয়া ভীত নয়নে আশেপাশে দেখলো, আকস্মিক সামনে ডিম লাইট জ্ব’লে উঠে।এক গুচ্ছ গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে আছে রুদ্র। কেয়া অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, রুদ্র!
রুদ্রর ঠোঁট জুড়ে হাসি,সে লম্বা নিঃশ্বাস ফেলে বলে উঠে।

“কেয়া আমি জানি তুমি এখানকার মানুষ না। তুমি অন্য দেশে বড় হয়েছো, তোমার চলাফেরা সব কিছু আলাদা। তুমি একটু নাক উঁচু স্বভাবের, কিন্তু তার পরেও আমি তোমাকে ভালোবাসি। তোমার সাথে থাকতে চাই, তোমাকে বিয়ে করতে চাই।এত ভালোবাসি এত ভালোবাসি কিন্তু তার কারণ নেই। তোমাকে অকারণেই ভালোবাসি, তুমি আমার প্রিয়। তুমি ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারি না, তোমার সঙ্গ ভালো লাগে।কেয়া তুমি কী আমাকে ভালোবাসবে? তোমার প্রিয় মানুষ গুলোর পাশে একটু জায়গা দেবে?”
কেয়া স্তম্ভ হয়ে গেছে, রুদ্র তাকে প্রেম নিবেদন করছে।তাকেও কেউ এত ভালোবাসে?কেয়া নির্বাক, কিছু বলার মতো ভাষা খুঁজে পেলো না। একজন মেয়ে ওয়েটার এগিয়ে এসে কেয়ার হাতে ফুলের তোড়া দিল।
“ম্যাম ভালোবাসবেন না?”

মেয়েটির কথা চোখে চোখ দুটো ভিজে উঠেছে কেয়ার, সে শেষ কবে কেঁদেছে জানা নেই তার। ঠোঁট কা’ম’ড়ে কান্না আটকানোর চেষ্টা করছে! এদিকে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে রুদ্র। কেয়া অবশেষে ছুটে গিয়ে জড়িয়ে ধরে তাকে।
“আই লাভ ইউ মিস্টার হ্যান্ডসাম,আই লাভ ইউ সো মাচ।”
রুদ্র হেসে উঠল। উপস্থিত সবাই ওদের প্রেম নিবেদন দেখছে। রুদ্র ম্যানেজার কে বলে পুরো রেস্টুরেন্ট ঘন্টা খানেকের জন্য বুক করে নিয়েছিল। বাকিদের সহযোগিতায় এত কিছু ব্যবস্থা করেছে,তার প্রিয় মানুষ বলে কথা।
“এত কিছু কখন করলেন?”
“এই মাত্র!”
“আই লাভ ইউ।”
“আই লাভ ইউ টু ফ্লার্টিং বা’জ।”
কেয়া কান্নার মাঝেও হেসে উঠলো।
“চলো কেক কা’টি।”
ম্যানেজার নিজে রেলিং টেবিল সামনে এনে রাখলো,কেক রাখলো সামনে।বড় করে লেখা আছে আই লাভ ইউ কেয়া।”
কেয়া আর রুদ্র এক সঙ্গে কেক কা’টে,একে অপরকে খাইয়ে দিল।এই সুন্দর মোমেন্ট ক্যাপচার করলো একজন।

ডাইনিং টেবিলে খাবার দেওয়া হয়েছে। সবাই খেতে বসেছে, ঐশ্বর্যও আছে আজকে।তার উদ্দেশ্য আফসানা কে একটু জ্বা’লানো, ঐশ্বর্য জানতে পেরেছে আজকের রান্না আফসানা করেছে।তো ঐশ্বর্য হাজির আফসানা কে ট্র’ল করার জন্য।
উৎসা একে একে সবার প্লেটে খাবার বেড়ে দিল,ওর সাথে আছে মিহি। ঐশ্বর্য চামচ তুলে মুখে খাবার তুলেই ইয়াক ইয়াক করে উঠলো।
“ও মাই গড মিসেস মহিলা হোয়াট দ্যা হেল ইজ দিস?”
ঐশ্বর্যের কথায় সবাই অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকালো। ঐশ্বর্য জিসান কে ইশারা করলো, কেয়াও ব্যাপার টা বুঝতে পারছে। শহীদ শুধোয়।
“কী হয়েছে ঐশ্বর্য?”

ঐশ্বর্য নাক মুখ কুঁচকে বলে উঠে।
“আপনার ওয়াইফ মানে মিসেস মহিলা দেখুন কী রান্না করেছে।এত লবণ?ইয়াক।”
শহীদ চামচ মুখে দিয়ে দেখেন খাবার ঠিকই আছে, কিন্তু তাহলে ঐশ্বর্য এমন করছে কেন? সবার অগোচরে নিজের প্লেটে লবণ দিয়ে দিল ঐশ্বর্য। শহীদ মুখ তুলে তাকায় ঐশ্বর্যের পানে।
“কোথায়?সব তো ঠিকই আছে।”
ঐশ্বর্যের দেখাদেখি জিসান বলে উঠে।
“ইয়াক ব্রো সত্যি কী খারাপ খেতে!”
শহীদ টেস্ট করতে চাইলো, ঐশ্বর্য নিজের প্লেট এগিয়ে দেয়। শহীদ এক চামচ খেয়েই থু থু ফেলল।
“ছিহ্ আফসানা এসব কি?”
আফসানা দাঁত ক’টম’ট করে বলে উঠে।
“একদম মিথ্যে কথা,এই ছেলে শুধু শুধু এসব বলছে।”
ঐশ্বর্য বাঁকা হাসলো, কিছুটা নাটকীয় ভঙিমায় বলে উঠে।
“আপনি ইচ্ছে করেই এমন করেছেন তাই না মিসেস মহিলা! আমি খেতে বসেছি এটা আপনার স’হ্য হয়নি। ওকে ফাইন খাচ্ছি না আমি।”

ঐশ্বর্য ত্বরিতে উঠে দাঁড়ালো, বড় বড় পা ফেলে টেবিল ছেড়ে দুতলার দিকে এগিয়ে গেল।
শহীদ আফসানা কে তিরষ্কার করে বলে উঠে।
“ছিহ্ আফসানা তুমি এখন এসব করছো? তোমার রান্না করা খাবার নিজেই খেয়ে নিও।”
একে একে সবাই টেবিল ছেড়ে উঠে গেল, আফসানার মন চাচ্ছে ঐশ্বর্য কে খু’ন করে ফেলতে।সে ইচ্ছে করে এসব করেছে,সবার সামনে খারাপ প্রমাণ করতে চাইছে।
উপরে দুতলায় গিয়ে ঐশ্বর্য হেসে কু’টিকু’,টি অবস্থা। আফসানা কে টাইট দিতে পেরে বেশ মজা পাচ্ছে সে।
“ব্রো এখন আমরা খাব কী?”
কেয়া অসহায় ফেইস নিয়ে বলে উঠে।
“তোদের জন্য আমার খাওয়া হলো না ইয়ার।”
ঐশ্বর্য আরাম করে সোফায় বসলো।

“আসবো?”
তিনজনেই দরজার দিকে তাকালো, খাবারের ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে আছে উৎসা। ঐশ্বর্য ভ্রু উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করে।
“কী?”
উৎসা ভেতরে ঢুকে টেবিলের উপর খাবার গুলো রাখলো।
“আপনাদের খাবার খেয়ে নিন।”
ঐশ্বর্য পিছনের দিকে পা বাড়ায়, ঐশ্বর্য ওড়না টেনে ধরে।
“এত কেয়ার? সামথিং সামথিং।”
উৎসা বুকে হাত গুজে বলে উঠে।

রেড রোজ ২ পর্ব ৩৬

“ভালো হয়ে যান, আপনার জন্য অন্যরা ক্ষুধার্ত কেন থাকবে? আমি কিন্তু সবটা দেখেছি।”
ঐশ্বর্য ঠোঁট কা’ম’ড়ে হাসলো।
“ইটস্ হার্ট বেইবি।”
উৎসা বিরক্ত হয়ে ওড়না টেনে বাইরে চলে গেল।

রেড রোজ ২ পর্ব ৩৮