শিমুল ফুল পর্ব ১০

শিমুল ফুল পর্ব ১০
জাকিয়া সুলতানা ঝুমুর

সেদিন রাতে পুষ্পর গা কাঁপিয়ে জ্বর আসে।এটা কিসের জ্বর প্রেমের জ্বর নাকি?যদি তাই না হয় তাহলে যেদিন রাতে প্রেমের প্রস্তাব পেলো,শিমুলের উষ্ণ ছোঁয়া পেলো সেদিন রাতেই কেন এমন গা কাঁপানো জ্বর আসতে হবে?এতো পরিমানে জ্বর যে শোয়া থেকে উঠা মুশকিল।

কলেজ যাওয়া বন্ধ।সেদিন রাতের দৃশ্য বারবার চোখে ভেসে উঠছে।প্রচন্ড জ্বরেও শিমুলের হাতের স্পর্শ,দুষ্টু দুষ্টু কথা মনে পড়ে পুষ্প লজ্জায় কুকড়ে যাচ্ছে।পুষ্পর মনে হচ্ছে শিমুলকে একটু দেখতে পারলেই জ্বর সেরে যাবে।শিমুলের গায়ের মিষ্টি ঘ্রান পেলেই সব অসুখ পালাবে।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আচ্ছা শিমুলের বুকে মাথা রাখলে কেমন লাগবে?কোকড়া চুলে হাত দিলে কি গা শিরশির করবে না?পুষ্প শিমুলকে ক্লিন সেভে কখনো দেখেনি সবসময় গালে খোচাখোচা দাড়ি থাকেই,হঠাৎ করেই শিমুলের গালের ছোট দাড়িতে হাত দিতে ইচ্ছে করছে।পুষ্প হাসে জ্বর হয়ে কি সব উল্টাপাল্টা চিন্তা মাথায় আসছে।তবে দেখা করতে পারলে ভালো হতো,একটু মিষ্টি শাসন আদুরে বকা-টকা খাওয়া যেতো।কি

ন্তু কিভাবে দেখা হবে? পুষ্পর মা যে সারাক্ষণ কাছে থাকে।দুইদিন হয়ে গেছে পুষ্প কলেজে যাচ্ছে না।শিলা কয়েকবার এসে দেখে গেছে।কাজের চাপে শিমুল পুষ্পর সাথে দেখা করতে পারেনি।জ্বর হয়েছে শুনেই মনটা আনচান করে উঠেছে কিন্তু উপায় নেই হাতে প্রচুর কাজ,তার উপরেই তার আব্বা গুরুদায়িত্ব দিয়ে রেখেছে।
সন্ধ্যায় শিলা ফুচকা নিয়ে এলো।রোকসানাকে বললো,

“চাচী পুষ্পর জন্য ফুচকা এনেছি।জ্বর মুখে জ্বাল খেলে ভালো লাগবে।”
রোকসানা এতো কিছু মনে করলো না।দুই বান্ধুবি মিলে ফুসকা খাচ্ছে।শিলা ফিসফিস করে বললো,
“আপনার হিরো কিনে দিয়েছে।”
পুষ্প চমকে বললো,
“কি? ”

“হ্যাঁ।তোর সাথে কথা বলবে।এই জন্যই তো আমাকে এখানে পাঠালো।”
পুষ্প মনে মনে খুশী হলো।সেদিন শিমুলের দেওয়া মোবাইলটা আনা উচিত ছিলো,কথা তো বলতে পারতো।পুষ্প মুখে কিছু বললো না।
শিলা তার মোবাইলটা পুষ্পর হাতে দিয়ে বললো,

“ধর কথা বল আমি চাচীকে ফুসকা দিয়ে আসি।”
শিলা চলে গেলে পুষ্প শিমুলকে ফোন দেয়।সাথে সাথেই ফোন রিসিভ হয়।ওপাশের মানুষটা যেন ফোনের অপেক্ষায়ই বসে ছিলো।
পুষ্প ঘন শ্বাস ফেলে চুপ করে থাকে।শিমুল মুচকি হাসে।একটু আহ্লাদ করে বললো,
“মহারানীর জ্বর হয়েছে?”

পুষ্প কান পেতে শিমুলের আহ্লাদী গলার কথা শুনে।কে বলবে এমন গম্ভীর রাগী ছেলে পুষ্পর সাথে এভাবে কথা বলে?এভাবে আশকারা দিয়ে মাথায় তুলতে চায়।পুষ্প ছোট করে বললো” হুম।”
শিমুল শব্দ করে হেসে বললো,
“তাহলে বুঝা যাচ্ছে শিমুল ফুলের প্রেমের উত্তাপ সহ্য হয়নি একেবারে জ্বর টর বাধিয়ে ফেলেছে।”
পুষ্প খেয়াল করে দেখে মোবাইলে কথা বললে লজ্জা কম লাগে,সামনাসামনি কথা বললেই বরং লজ্জা বেশী লাগে।সে ছোট করে জবাব দিলো,

“হুম”
“ফুসকা মজা ছিলো? ”
“হুম।”
“হুম ছাড়া কি আপনার ডিকশনারিতে আর কোন শব্দ নেই?”
“আছে। ”
“আর কি আছে শুনি।”
“অনেক কথা।”

শিমুল ক্লাবের বারান্দায় দাঁড়িয়ে পায়ের জুতো দিয়ে সিমেন্টের মেজ ঘষে বললো,
“আমি কি শুনতে পারি।”
“হুম।”
“আচ্ছা।তাহলে মহারানী বলুন ”
শিমুলের আশকারা পেয়ে পুষ্প আহ্লাদী গলায় ফিসফিস করে বললো”

“দেখবো।”
“কি দেখবি?”
“আপনাকে।”
“এখন? ”
“হ্যাঁ।”
“ক্লাবে আছি।নির্বাচন নিয়ে মিটিং হবে।”
“তো?”

“পরে দেখা করে নিবো।”
পুষ্প ত্যাড়া গলায় বললো,
“আমি এখনি দেখবো।”
শিমুল চুপ করে থাকে।তারপর বললো,

“এখন দেখা করা কোনভাবেই সম্ভব না।সবাই এসে গেছে।কিছুক্ষণের মাঝেই মিটিং শুরু হবে।”
পুষ্পর জ্বরটা আসলেই বেশি।সে শিমুলকে দেখতে চাইলো আর শিমুল আসবে না?প্রেম শুরু হবার পরে পুষ্প এই প্রথম কোন আবদার করেছে।শিমুল না করাতে অল্প বুঝদার পুষ্প রাগ করে।রাগ করা গলায় বললো,”আচ্ছা।”
শিমুল রাগের উত্তাপ টের পায়।বালিকা কে সাময়িক ঠান্ডা করতে বললো,

“আচ্ছা আমি হাতের কাজ শেষ করে আসবো।”
পুষ্প চুপ করে থাকে তখনি শিমুলের আব্বা শওকত শিকদার তাকে ডাকে।শিমুল আস্তে করে বলে,
“আমি আসবো।আমার ব্যাপারটা বুঝতে হবে,এই যে আব্বা ডাকছে।রাখি।”
পুষ্প ব্যস্ত মানুষটার ব্যস্ততা বুঝলো।মন খারাপ করলেও শিমুলের ভালো ভালো কথাগুলো মনে করে মনটা ভালো হয়ে যায়।তার কিছুক্ষণ পরে শিলাও চলে যায়।

মিজান শেখ হোটেল থেকে ফিরে এসে অসুস্থ মেয়েকে দেখতে আসে।রোকসানা হাতে করে খাবার নিয়ে আসে উদেশ্য মেয়েকে নিজ হাতে খাইয়ে দিবে।মিজান শেখ এসে পুষ্পর বিছানায় বসে।বাবাকে দেখে পুষ্প উঠে বসে।তার জীবনের প্রথম পুরুষ তার বাবা।বাবাই তার সব আহ্লাদ পুরুন করে।গা কাঁপানো জ্বরে পুষ্প তার আব্বাকে কাছে পেয়ে হাসে।
মিজান শেখ পুষ্পর মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,

“আম্মাজান শরীর বেশি খারাপ লাগে?”
পুষ্প বাবার কোলে শুয়ে পড়ে।মুচকি হেসে বলে,
“না আব্বা।”
মিজান মেয়ের চুলে হাত দিয়ে বললো,
“কিছু খাবি আম্মা?”
“না।”

রোকসানা পাশ থেকে বলে,
“খাবিনা কেন?সারাদিন খায় নাই।তোমার মেয়েকে উঠাও।”
মিজান মেয়ের গালে হাত দিয়ে বললো,
“আম্মা জ্বর হলে খেয়ে দেয়ে শরীরে শক্তি রাখতে হয়,শরীর দুর্বল পেলে জ্বর আরো ঘাটি মেরে বসে।”
“আমার খেতে ইচ্ছা করেনা আব্বা।সব তিতা লাগে।”
মিজান শেখ বলেন,

“আল্লাহ আমার মেয়ের জ্বরটা আমাকে দিয়ে আমার আম্মাকে সুস্থ করে দাও।”
পুষ্প তার আব্বার দিকে তাকিয়ে থাকে।
“কি বলো আব্বা?”

“তোর তো ভাই নাই পুষ্প।অসুস্থ হয়ে থাকলে তো চলবেনা লেখাপড়া করে শিক্ষিত হয়ে ভালো চাকরি করতে হবে।বুড়ো বয়সে আমাদের দেখেশুনে রাখতে হবে না?মনে কর আমি মরে গেলাম তুই যদি কিছু না করিস তাহলে তোর আম্মাকে দেখবে কে?ওই বাড়ির আব্দুলের মায়ের মতো বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করে খেতে হবে।”

পুষ্পর চোখে পানি টলটল করে।তার যে ভাই নাই এটা সে ভুলে গিয়েছিলো।আব্বা আম্মা তাকে অনেক পড়তে বলেছে।কতো ভালো ভালো বিয়ের সমন্ধ আসে।মিজান শেখ না করে দেয় উনার এক কথা মেয়ে পড়বে,যতোটুকু পড়তে চায় পড়বে।চোখের কোণ বেয়ে পানি পরে।

“আব্বা তুমি মরার কথা বলবেনা তো।আমি আছি না এতো চিন্তা কিসের?একদিন আমি বড় অফিসার হবো।দেখো।”
মিজান শেখ আর রোকসানা হাসে।প্রাণখোলা হাসি।পুষ্প সেদিকে তাকিয়ে থাকে।রোকসানা নিজ হাতে মেয়েকে খাইয়ে দেয়।দুজনে এটা সেটা বলে হাসে।

পুষ্প দুজনের হাসি দেখে মন খারাপ হয় পুষ্প তাদের কতো বড় ঠকানো ঠকাচ্ছে।রাত বিরাতে শিমুলের সাথে দেখা করছে।বাবা মায়ের অজান্তেই মন দিয়ে বসে আছে।আচ্ছা এসব জানলে কি আব্বা আম্মা কষ্ট পাবে না?পুষ্প আর ভাবতে পারে না।চোখ ভরে পানি আসে।দুজনে চলে গেলে পুষ্প গভীর রাত পর্যন্ত ভাবে,ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেয় যে সে আর শিমুলের সাথে দেখা করবে না।শিমুলকে বলে দেবে পুষ্প আর প্রেম করতে চায় না।সে আব্বা আম্মার স্বপ্ন পুরূন করবে।

পাগলা প্রেমিক ঠিক এগারোটায় আসলো।পুষ্পর জ্বর।একটু চোখের দেখাও হচ্ছে না।সারাদিন কাজের ফাকে ফট করেই পুষ্পর হাসি হাসি মুখটা মনে পড়ে বুকটা বড্ড পুড়াচ্ছে।পুষ্পদের বাড়ির সামনে কয়েকটা চক্কর দিয়ে বুদ্ধি বের করলো কিভাবে পুষ্পকে বুঝানো যায় সে এসেছে।যদি পুষ্পর মা সাথে থাকে?কিন্তু আজকে দেখা করতেই হবে,যেকোনো মূল্যে।শিমুল হালকা করে পুষ্পর জানালায় টোকা দেয়।পুষ্প জেগে ছিলো,কিভাবে শিমুলকে বুঝাবে এটাই ভাবছিলো আর কাঁদছিলো।শিমুলকে ছেড়ে দিয়ে থাকতে পারবে তো?খুব কষ্ট হবে।

এই যে সম্পর্ক শেষ করে দিবে এটা ভেবেই বুকের বা পাশে চিনচিন করে ব্যাথা করছে।দম আটকে আসছে।জানালায় টোকা শুনে শান্ত মন মুহূর্তেই অশান্ত হয়ে যায়।দেখা করার জন্য ছটফট করে উঠে।সাড়া দেবেনা দেবেনা করেও উঠে বসে।শিমুলকে খুব ভালোবেসে ফেলেছে।আর বাবা মাকে ঠকাতে ইচ্ছে করছে না।পুষ্প গা কাঁপানো জ্বর নিয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে কেঁদে দেয়।চুপচাপ জানালা খুলে দেয়।শিমুল হেসে কাছে আসে।জানালার গ্রীল ধরে নরম গলায় বললো,

“আমার ফুলটা কি একটু বাহিরে আসবে?”
পুষ্পর কান্না গলায় আটকে আসে।কোনরকম বললো,
“শিমুল ভাই।একটা কথা বলবো?”
“সব কাজ শেষ করে এসেছি হাতে অনেক সময়।বাহিরে আয়।”
পুষ্প মাথা নেড়ে বললো,

“না ”
“না কেন?”
“আমি আর আপনার সাথে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাই না।”
পুষ্পর এমন কথা শুনে শিমুল স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।কি বলে এই মেয়ে?আর কাঁদছেই বা কেনো?শিমুল বললো,
“যা বলার সামনে এসে বল।”

পুষ্প মাথা নাড়ে।সে বাহিরে যাবে না।শিমুল এবার বললো,
“সারাদিন দাঁড়িয়ে ছিলাম।এখানে সেখানে ছোটাছুটি করেছি,এখন দাঁড়িয়ে থাকতে ভিষন কষ্ট হচ্ছে। প্লিজ বাহিরে আয়।মাত্র দুই মিনিট।”

পুষ্প আর কিছু বলে না।শিমুলের কষ্ট হচ্ছে সে চুপচাপ বাহিরে আসে।জ্বরের তোড়ে মাথাটা ভনভন ঘুরছে।শিমুলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালে শিমুল এক কদম এগিয়ে কাছে দাঁড়ায়।ডান হাত দিয়ে কপালে হাত রেখে বলে,
“অনেক জ্বর তো ওষুধ খাস নি?”
“খেয়েছি।”

শিমুল আরেকটু কাছে আসতে চাইলে পুষ্প পিছিয়ে বললো,
“বলেছিনা সব শেষ।”
শিমুল ভাবলো দেখা করতে আসেনি বলে এসব বলছে তাই বললো,
“দেখা করতে দেরি করেছি বলে এসব বলছিস?”

“না।”
“তাহলে কি?”
“আপনি আর আমাকে কখনো ডাকবেন না।আজকে থেকে আর কখনো দেখা করবো না।”
শিমুলের বুকটা খামচে উঠে।সারাদিনের পেরেশানি আর এখন পুষ্পর এমন উল্টাপাল্টা কথা মোটেই ভালো লাগছে না।পুষ্পর শুকনো মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,

“কেন কারনটা বল।”
“পারবো না।বাড়ি যান।”
এটা বলে পুষ্প চলে যেতে নিলে শিমুল হাত ধরে কাছে টানে।
পুষ্পের চোখে তখন পানির জোয়ার।
শিমুল রাগী গলায় বললো,

“খেলনা পাইছিস?আমাকে বলে যেতে হবে কি কারনে ব্রেকাপ করবি।”
পুষ্প বললো তার আব্বা আম্মার কথা,তাদের ঠকানোর কথা।
শিমুল চুপ করে শুনে গেলো।পুষ্পর কথা শেষ হলে বললো,
“তুই পড়বি,চাকরি করবি,তোর আব্বা আম্মাকে দেখে রাখবি।তাতে আমার কোন সমস্যা নেই।আর এসবের জন্য আমাকে ভুলে যেতে হবে? ”

পুষ্প তো ভুলতে চায় না।জড়ানো গলায় বললো,
“আব্বা আম্মা শুনলে কষ্ট পাবে।”
শিমুল পুষ্পর হাত ধরে বললো,

“আমি সবাইকে ম্যানেজ করে নিবো।তুই শুধু ছেড়ে যাওয়ার কথা বলবি না।”
শিমুল অনেক বুঝায় কোনমতেই পুষ্পকে পিছু হটতে দিবে না।
নরম মনের পুষ্প যে শিমুলের পাগল।শিমুলের গভীর চোখের দিকে তাকিয়ে বললো,
“ভয় করছে।”

শিমুল পুষ্পর গালে হাত রেখে বললো,
“ভয় কিসের?আমি আছিনা।সবাইকে রাজি করিয়ে বউ করে নিবো আমার ফুলকে।”
পুষ্প শান্ত হয়।শিমুল তাকে ছাড়ছেনা এটা খুবই স্পষ্ট।শিমুল পুষ্পর গালে কপালে হাত রেখে বললো,
“আর কাঁদেনা।এবার একটু হেসে দে।মন খারাপ করে রাখলে ভালো লাগেনা।”

পুষ্প হাসে।শিমুল কাছে টেনে বললো,
“এই বোকা মেয়েটাকে এতো ভালোবাসি।”
পুষ্প মাথা নাড়ে।শিমুল পুষ্পর চুল গুছিয়ে দিতে দিতে বললো,
“আর কখনো ছেড়ে যাওয়ার কথা বলবিনা।”
“আচ্ছা।”

শিমুল বুকে হাত রেখে বললো,
“এখানে ব্যাথা করছিলো।তুই আমার শান্তির কারন পুষ্প,তোকে ছাড়া থাকা অসম্ভব।”
পুষ্প চোখ মেলে শিমুলের দিকে তাকিয়ে থাকে।শিমুল পুষ্পকে প্রশ্ন করে,
“আচ্ছা তুই আমাকে ছেড়ে থাকতে পারবি? ”

পুষ্প উত্তরের দেয়ার বদলে শিমুলের টিশার্ট খামচে ধরে।শিমুল সুপ্ত উত্তর বুঝে নেয় মুচকি হেসে দু’হাত দিয়ে পুষ্পকে জড়িয়ে নেয়।মাথাটা নিচু করে পুষ্পর কপালের সাথে কপাল লাগিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে।কিছুক্ষণ পরে ফিসফিস করে বললো,

“এই মেয়ে তোর জ্বর কমিয়ে দেই?”
পুষ্প বললো,
“কিভাবে?”
শিমুল পুষ্পর কপালে তার পুরু ঠোঁটে একটা চুমু খেলো।তারপর আবার ঠোঁট লাগিয়ে রেখে বললো, “এভাবে।”
পুষ্প চোখ বন্ধ করে পরশটা অনুভব করলো।খানিক লজ্জাও পেলো সরে যেতে চাইলে শিমুল বললো,

“পুষ্প আমরা দুজন দুজনকে বুঝবো।দুজনের সুবিধা অসুবিধা খেয়াল রাখবো।সমস্যা হলে আলোচনা করে সমাধান করে নিবো।তাই বলে ছেড়ে চলে যাওয়া কোন সমাধান না।তোকে খুব ভালোবাসি আর এটাও জানি তুইও আমাকে ভালোবাসিস।আর কখনো ছেড়ে যাওয়ার সিধান্ত নিবি না।মনে থাকবে?”

শিমুল ফুল পর্ব ৯

“থাকবে।”
দুজন দুজনে’র চোখের গভীরে তাকিয়ে হাসে।শিমুলের সুপ্ত কথা গিয়ে পুষ্পর অন্তরে কড়া নাড়ে।পুষ্প লাজুক হেসে শিমুলের হাতে চিমটি কাটে।

শিমুল ফুল পর্ব ১১