শেষ থেকে শুরু পর্ব ২৩
Sabihatul sabha
জবা ফিসফিস করে শায়েলা সিদ্দিকীর কানে বললো,” আপনার খেলা শেষ! ”
শায়েলা সিদ্দিকী চমকে উঠলেন! ইনোসেন্ট মুখে জবার দিকে তাকিয়ে বললেন,’ কি বলছো বউমা.? তোমার শাশুড়ী ফিরে এসে উনাকে শরবত দাও তা না কি সব বলছো!.?’
জবা শায়েলা সিদ্দিকীর কথা শুনে হেঁসে উঠলো। শায়েলা সিদ্দিকী ঘাবড়ে গেলেন।
জবা বাঁকা চোখে আশেপাশে তাকিয়ে বললো,’ লতিকা কোথায়.?’
শায়েলা সিদ্দিকী আমতা আমতা করে কুলসুম বেগমের দিকে তাকালো।
কুলসুম বেগম পায়ের উপর পা তুলে সোফায় বসেছেন।
বেলী গিয়ে কুলসুম বেগমের পেছনে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করছে, ‘ কোনো সমস্যা হয়নি ত বড় আম্মু.?’
শায়েলা সিদ্দিকী জবার চোখে চোখ রেখে বলে উঠলো, ‘ এখন তুমি আমার উপর জবাবদিহি করবে.? এইদিন ও আমার দেখতে হলো.?’
ন্যাকা কান্না করে শায়েলা সিদ্দিকী কুলসুম বেগমের দিকে তাকিয়ে বললো,’ বড় ভাবি সব সময় ঠিক বলতেন এইসব ছোটলোকদের বসতে দিলে শুতে চায় ‘
কুলসুম বেগম কে কিছু বলতে না দেখে শায়লা সিদ্দিকী আরও একটু সাহস পেলো।
কুলসুম বেগমের পাশে বসে বলতে শুরু করলো , ‘ লতিকার গ্রামে একটা কাজ পরেছে তাই চলে গেছে ভাবি, আমি অনেক বুঝিয়ে ছিলাম লাভ হয়নি। এখন তোমার ছেলের বউ আমার কাছে এসে জবাবদিহি করছে! তুমি এর শাস্তি দিবে না.? ‘
কুলসুম বেগম শায়েলা সিদ্দিকীর চোখের পানির দিকে তাকিয়ে রইলেন।
বেলী বিরবির করে বলে উঠলো, ‘ এটা ত দেখি ওইটার চেয়েও বেশি ডেঞ্জারাস! ভালোই জমবে দজ্জাল শাশুড়ী! নিজে তারিয়ে দিয়ে মিথ্যা নাটক করছে ‘
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
কুলসুম বেগমের কিছুই বলতে হয়নি এর আগেই কিছু লোক সাথে পুলিশ আবারও প্রবেশ করলো চৌধুরী বাড়িতে।
শায়েলা সিদ্দিকী ভেতর ভেতর ভীষণ ঘাবড়ে গেলেন।
উপর থেকে আসিফ, অভ্র নেমে আসলো।
জবা হাতের ইশারায় শায়েলা সিদ্দিকীকে দেখিয়ে বললো,’ উনার ড্রামা শেষ হলে নিয়ে চলুন!’
শায়েলা সিদ্দিকী ভীতু মুখে উঠে দাঁড়িয়ে বলে উঠলো, ‘ ভাবি আপনার বউ এইসব কি বলছে.? এতোদিন দুধ কলা খাইয়ে আমি কালসাপ পেলেছি.? আমাকে বিনা কারনে পুলিশে ধরিয়ে দিচ্ছে!’
জবা দুইহাত বুকে গুঁজে বাঁকা হেঁসে বলে উঠলো, ‘ এটা ত একটু পর বুঝা যাবে কে কাকে দুধ কলা খাইয়ে পেলেছে!’
আয়ান জবার উপর রেগে গেলো। আয়ান কে উপর মহল থেকে কল দিয়ে বলা হয়েছে চৌধুরী বাড়িতে নিজের টিম নিয়ে আসতে এখানে সিআইডি অফিসার নিরুপমা নিরু আছে।
আয়ান বেশ অবাক হয়ে ছিল। কুলসুম বেগম কে ত পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে তাহলে আবার কি.? আর এখানে এসে নিরুপমা নিরু বা উনার কোনো টিম ম্যাম্বার কে দেখা যাচ্ছে না, আবার কুলসুম বেগম ছাড়া পেল কখন.? আর কিভাবে.? জবা কেন ওর আম্মুর সাথে এমন বেয়াদবি করছে.?
অভ্র বলে উঠলো, ‘ জবা তুমি নিজের রুমে যাও, আম্মুর সামনে মেঝো আম্মুর সাথে তুমি বেয়াদবি করছ।’
জবা ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি ঝুলিয়ে পেছন ফিরে অভ্রর দিকে তাকিয়ে বললো,’ আচ্ছা তাই নাকি.?’
জবা ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে ইনোসেন্ট মুখ করে কুলসুম বেগমের দিকে তাকিয়ে বললো,’ আমি বুঝি বেয়াদবি করছি.?’
কুলসুম বেগম এই প্রথম মুখে হাসি ফুটিয়ে জবার দিকে তাকিয়ে বললো,’ মোটেই না সুইটহার্ট ‘
এক একজনের চোখ বেরিয়ে আসার মতো অবস্থা! ‘
শার্লিন বেগম অধৈর্য হয়ে মাথায় হাত দিয়ে চেয়ারে বসে বলে উঠলো, ‘ এইসব নাটক বন্ধ করো সবাই আর আসলে এখানে হচ্ছেটা কি.?’
ইতিমধ্যে এখানে এসে উপস্থিত হয়েছে শফিক সাহেব ও। শফিক সাহেব ভ্রু কুঁচকে সবার দিকে তাকিয়ে বললো,’ এখানে কি হচ্ছে.? আর ভাবি কখন ছাড়া পেলেন.? আমি জানতাম আপনি কখনো এমন কিছু করতেই পারেন না! সেই ছোট থেকে আপনাকে দেখে এসেছি। তবে মনে হয়ে ছিল বিষয়টা খুব বেশি জটিল এতো চেষ্টা করেও দেখাটুকু আপনার সাথে করতে দেয়নি বলে আড়চোখে আয়ানের দিকে তাকালো। আয়ান কম বেয়াদবি কাল করেনি। এতো কিসের রাগ আয়ানের কুলসুম বেগমের উপর.?
শফিক সাহেব কোর্ট খুলে সোফায় বসতেই কুলসুম বেগম বলে উঠলো, ‘ কেন আমাকে দেখে খুশি হওনি.?’
‘ কি বলছেন ভাবি সারারাত আমি আর অভ্র একটুও ঘুমাইনি, অনেক ঘুরেছি কিন্তু আপনার দেখা পাওয়া সম্ভব হয়নি, আজ ভেবে ছিলাম এখন অভ্র কে নিয়ে আবার যাব।’
জবা আয়ানের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,,’ আপনাকে আরও আধাঘন্টা আগে বলা হয়েছে শায়েলা সিদ্দিকী কে নিয়ে যেতে।’
আয়ান দাঁতে দাঁত চেপে জবাকে বলে উঠলো, ‘ নিজের হুঁশে আছো.? কি বলছো তুমি.? তোমার কথায় আমি আম্মুকে কেন ধরে নিয়ে যাব.? আম্মুর অপরাধ কি.?’
জবা আয়ানের রাগ দেখে গম্ভীর মুখে বলে উঠলো, ‘ কারণ আমি সিআইডি অফিসার নিরুপমা নিরু ‘
জবার এই একটা কথা বজ্রপাতের মতো লাগলো সবার কানে।
আয়ানের কান মনে হয় ভুল শুনেছে সে আবার বলে উঠলো, ‘ কি!.?’
‘ হ্যা যা শুনেছেন তাই, আমিই নিরুপমা নিরু যার নকল নাম জবা ‘
আয়ান কোমরে হাত দিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে শান্ত করে বলে উঠলো, ‘ ঠিক আছে নিরুপমা নিরু কিন্তু কোনো অপরাধ ছাড়া আমি আম্মুকে কেন ধরে নিয়ে যাব!.?’
নিরুপমা বুঝলো আয়ান নিরুপমার কথা মজা হিসেবে নিচ্ছে সিরিয়াস হচ্ছে না।
নিরুপমা নিজের আসল রুপে ফিরে গেলো। রাগী কন্ঠে বলে উঠলো, ‘ আয়ান চৌধুরী ভুলে যাবেন না আপনি এখন ডিউটিতে আছেন! এখানে কেউ আপনার বোন, মা, ভাই নয়, অপরাধী কে অপরাধীর চোখে দেখবেন।’
আয়ান কিছু বলার আগেই ওর মোবাইলে কল আসলো।
‘ জ্বি স্যার…’
…….
‘ ইয়েস স্যার..’
আয়ান ফোন রেখে ছলছল চোখে মায়ের হাতের দিকে তাকালো। লজ্জায় চোখের দিকে তাকাতে পারলো না। নিজের উপর লজ্জা হচ্ছে, লজ্জা হচ্ছে নিজের এই পোশাকের উপর, লজ্জা হচ্ছে দ্বায়িত্বের উপর , নিজের মায়ের হাতে হাতকড়া পড়ানো কতোটা কষ্টের তা আজ জেনো আয়ান অনুভব করতে পারছে। আজকের পর সে আর এই চাকরি করবে না যা ওর মার সম্মানে আঘাত করেছে।
শায়েলা সিদ্দিকীর চোখে মুখে জেনো এখন এক ফোঁটা ভয়ের রেশ নেই। রাগী দৃষ্টিতে একবার তাকালো জবার দিকে।
জবা কিছুটা হেঁসে বললো,’ যাওয়ার আগে জেনে যাবেন না কিভাবে কুলসুম চৌধুরী ছাড়া পেয়েছেন.?’
শায়েলা সিদ্দিকীর চোখে মুখে কোনো কৌতুহল কিংবা আগ্রহ দেখা গেলো না। তাও জবা বলতে শুরু করলো
, ‘ আজ থেকে ছয় মাস আগে এক এক্সিডেন্টে মা-রা যায় আসিফ চৌধুরী, আমরা ত সবাই জানতাম আসিফ চৌধুরী মারা গেছে তাই না.? অথচ সবটাই ছিল সাজানো প্লান! আর এটা কার প্লান ছিল জানেন.? সবাই এইবার বেশ আগ্রহ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো জবার দিকে।
জবা আঙ্গুল তুললো শায়েলা সিদ্দিকীর দিকে।
শায়েলা সিদ্দিকী বুক টানটান করে রাগী দৃষ্টিতে এখনো তাকিয়ে আছে জবার দিকে।
জবা আবার বলতে শুরু করলো।
আসিফ কে গাড়িতে মাথায় আঘাত করে অজ্ঞান করা হয় তারপর জঙ্গলের গভীরে একটা ভাঙা বাড়িতে হাত পা বেঁধে রেখে প্রতিদিন বলা হতো ‘ তুই নিজের পছন্দে বিয়ে না করলে আজ তোর মা এমনটা করতো না। মায়ের কথা শুনলে আজ এই জঙ্গলে পশুর শিকার হয়ে পরে থাকতে হতো না। মোট কথা এটাই বুঝানো হতো মায়ের বিপরীতে গিয়ে বিয়ে করার জন্য আজ কুলসুম বেগম তাকে এই শাস্তি দিয়েছে সাথে সপ্তাহে দুইদিন শুধু ভাত দেওয়া হতো বাকিদিন শক্ত রুটি। আর সবচেয়ে অমানুষের কাজ যেটা প্রতি সপ্তাহে একটু একটু করে দেওয়া হয়েছে পশুর ভেকসিন জেনো আসিফের আচরণ পশুতে পরিণত হয়। এখান থেকে ছাড়া পাওয়ার পর নিজের জন্মদাত্রী মা কে খু’ন করে। ‘
অভ্র জবার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো,’ কিন্তু আসিফের সাথেই কেন.?’
‘ কারণ তখন আপনি দেশের বাহিরে ছিলেন। আসিফ কুলসুম বেগম কে খুন করলে ওর জেল,ফাঁসি হয়ে যেত তারপর আপনাকে সরানো তেমন কোনো বিষয় ছিল না।’
” সবকিছু মিথ্যা বলছে এই মেয়ে, আমাকে ফাঁসাতে চাচ্ছে!”
শায়েলা সিদ্দিকীর কথা শুনে জবা এগিয়ে এসে বললো,’ আচ্ছা তাই নাকি.? এই যে দেখছেন প্যানড্রাইভ এটার মধ্যে সবকিছুর প্রমাণ আছে, সবগুলো সন্ত্রাসীর জবানবন্দি আছে। আপনি কোনটা মিথ্যা করবেন.? আপনার জন্য আরও সারপ্রাইজ অপেক্ষা করছে আমার নিজস্ব আদালতে। ”
আয়ান বলে উঠলো, ‘ আম্মু এমনটা কেন করবে জবা.? এতে আম্মুর লাভ কি.?’
‘ জবা আয়ানের কাছে এসে বললো,’ পুলিশ হয়েছেন তবে চিন্তা ভাবনা এখনো পুলিশের মতো হতে পারেনি৷ এতে অবশ্য আপনার আম্মুর লাভ নেই সব লাভ আপনার! ‘
‘ আমার.?’
‘ হ্যা আপনার সব সম্পত্তির অধিকারী তখন আপনি হবেন। ‘
আসিফ এগিয়ে এসে শায়লা সিদ্দিকীর সামনে বলে উঠলো , ‘ সম্পত্তির লোভ মানুষ কে অমানুষ বানিয়ে দেয় তাই না মেঝো আম্মু.?’
শায়েলা সিদ্দিকীর চোখে মুখে কোনো অনুতপ্ত নেই, নিজের কাজের জন্য ভয়, লজ্জা কিচ্ছুটি নেই।
জবা হেঁসে বললো,’ আমি নিরুপমা এখানে এসেছিলাম নিজের কাজে অথচ ফেঁসে গেলাম আপনাদের ঝামেলায়! তবে কি জানেন কেঁচো খুড়তে এসে আমি সাপ পেয়ে গেছি!’
আমার কেন জানি মনে হচ্ছিল আসিফ বেঁচে আছে। একদিন আমি আর আলিফ জঙ্গলে ঠিক সেই জায়গায় গেলাম যেখানে আসিফের গাড়ি পরে ছিল। জঙ্গলের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে একজন লোককে জঙ্গলের ভেতর জেতে দেখে আমরা তার পিছু নেই তারপর সবকিছু দেখতে পাই। সুযোগ বুঝে নিজেদের টিম নিয়ে গিয়ে আসিফ কে উদ্ধার করি তারপর এক মাস ওর ট্রিটমেন্ট চলে আস্তে আস্তে আসিফ সুস্থ হয়ে উঠে।
কাল এটা আসিফ আর আমার প্লান ছিল। প্লান করে আসিফকে দিয়ে কুলসুম বেগম কে নিয়ে যেতে বলি যেনো শায়েলা সিদ্দিকীর আসল রুপ কিছুটা সবার সামনে আসে।
জবা অভ্রর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেঁসে বলে, ‘ আপনি যখন নিজের রুমে আমাকে আঁটকে গিয়ে ছিলেন, আপনি হয়তো ভুলে গিয়ে ছিলেন আমি নিরুপমা নিরু! সাধারণ কেউ নই প্রতিদিন পাইপ বেয়ে আশা যাওয়া করি দরজা ত আমার জন্য নয়। আপনি বের হয়ে যাওয়ার পর আমি ব্যালকনি দিয়ে নেমে গিয়ে ছিলাম আর সাররাত কুলকুল চৌধুরী আমার হেফাজতে ছিল। সেই জন্য কেউ হাজার বার চেষ্টা করেও উনার দেখা পায়নি।
জবা বলেই একটা লম্বা শ্বাস ফেললো।
আয়ান মা’য়ের এমন কাজে লজ্জায় চোখ মিলালো না কারো সাথে। চুপচাপ হাতে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে গেলো রোবটের মতো।
জবা একবার সবার দিকে তাকিয়ে নিজেও চলে গেলো রুমের দিকে। সিঁড়ির ঘোরায় এসে সবার দিকে ফিরে বলে উঠলো, ‘ আর কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে সন্ধার পর করে ফেলবেন আমি সকালে চলে যাচ্ছি। ‘
বেলী আঁতকে ওঠে বলে উঠলো, ‘ কোথায় যাচ্ছেন.?’
জবা হেঁসে বললো,’ বেলী আমি এখনো তোমার কাছে সেই আগের জবা আপনি করে বলো না পরপর লাগে। ‘
বেলী জবার কাছে এসে বলে উঠলো, ‘ তুমি চলে যাবে.?’
জবা বেলীর মাথায় হাত রেখে চুল গুলো এলোমেলো করে দিয়ে বললো,’ আমার এখানে থাকার আসল উদ্দেশ্য ত আমি পেয়ে গেছি শুধু এই সমাজের সামনে তুলে ধরা বাকি, আগামীকাল এটাও শেষ করে ফেলবো পাপ কখনো গোপন থাকে না তা আকাশের উজ্জ্বল তাঁরার মতো জ্বলজ্বল করে বেলী। আমি আমার সকল পাপীদের শাস্তি নিজ হাতে দিয়ে নিজের ঠিকানায় চলে যাব। একদিন ত যেতেই হতো।’
কুলসুম বেগম জবার দিকে তাকিয়ে বললো,’ তোমার আসল পরিচয় কি আমরা কেউ জানতাম না! এখনো তুমি কি সেটা আমাদের কাছে বড় বিষয় না, বড় বিষয় হলো তুমি আসিফের বউ। আর আসিফ ফিরে এসেছে তুমি কোথাও যাচ্ছ না।’
জবা আসিফের দিকে তাকিয়ে বললো,’ কিন্তু আন্টি আসিফের সাথে আমার তেমন কোনো সম্পর্কে নেই সবটাই একটা সাজানো প্লান ছিল এই বাড়িতে থাকার যা আসিফ আমাকে বন্ধু হয়ে হেল্প করেছে।’
দ্বিতীয় বারের মতো আবারও উপস্থিত সবার হৃদয় ভাঙলো। আজ বুঝি একের পর এক হৃদয় ভাঙার দিন.? প্রথম আপন হয়ে শায়েলা সিদ্দিকীর এই ভয়ংকর আড়ালে চলা প্ল্যান সবার হৃদয় ভেঙেছে, জবার সিআইডি অফিসার নিরুপমা নিরু হওয়া সবাই কে অবাকের উপর অবাক করেছে,। সবার মনে প্রশ্ন জাগিয়েছে কেন নিরুপমা জবা সেজে আসিফের হাত ধরে এই বাড়িতে পা রেখেছে.? এতো অত্যাচার কেন সহ্য করে পরে ছিল এখানে.? তার উপর সে আসিফের সম্পর্কে কেউ নয়! মিথ্যা পরিচয় দিয়ে আশ্রয় নেওয়ার কারণ কি.? নিরুপমার আসলে উদ্দেশ্য কি.? সে কেন এসেছে..? এতো এতো প্রশ্ন সবাই কে ভাবিয়ে তুলে ছিল।
এইসব ভাবনার মাঝে একজনের মুখে হাসি ছিল। সে ত প্রথম থেকেই সবকিছু জানতো।
শেষ থেকে শুরু পর্ব ২২
এদিকে নিরুপমা আস্তে ধীরে সবাই কে চিন্তায় ফেলে শান্তির ঘুম দিতে নিজের রুমে চলে গেলো৷ কাল যে ওর অনেক কাজ নাকি। নিজের মা’য়ের পাপীদের নিজ হাতে নিজের আদালতে ঝুলানো বাকি। নিরুপমা যে আইন বলতে নিজের আইন বুঝে, আদালত বলতে নিজের তৈরি আদালত কে বুঝে যেখানে সে নিজেই উকিল, নিজেই জর্জ আবার নিজেই শাস্তিদাতা। নিজের হাতে যত্ন করে সে সবগুলো নরপশুর দেহ থেকে হৃদপিণ্ডটা আলাদা করবে।
আগামীকাল যে ওর অনেক কাজ এখন একটা শান্তির ঘুম প্রয়োজন। ওদের শাস্তি দেওয়ার আগে কি শান্তির ঘুম আসবে.?? জবা চোখ বন্ধ করতেই অনুভব করলো ও ছাড়াও রুমে দ্বিতীয় কেউ আছে। জবা বাকা হেঁসে মনে মনে বলে উঠলো, ‘ বোকাপুরুষ তার পারফিউমের ঘ্রাণ যে জবার খুব চেনা!’