সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি পর্ব ২

সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি পর্ব ২
Jannatul Firdaus Mithila

অরিনের রুম থেকে ফিরে এসে রৌদ্র নিজের ঘরের দরজা আটকে বসে আছে। মনটা তার বড্ড অস্থির। কেমন যেনো সব এলোমেলো লাগছে নিজের কাছে। এই অনুভূতি যে বড্ড খারাপ,, নিষিদ্ধ ওর জন্য। রোদ তো সবটা জানে,, না না এই নিষিদ্ধ অনুভুতি কে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।নিজের মনেই এসব আওরাতে লাগলো রৌদ্র। একটা সময় দুহাত দিয়ে নিজের চুল খামচে ধরে মাথা চেপে বসে রইলো বিছানায়।
সেদিন সারাটাদিন রৌদ্র রুম থেকে বের হয়নি। খাবারের জন্য ডাকলে কখনো বলেছে ক্ষুধা নেই কিংবা কখনো বলেছে খেতে ইচ্ছে করছে না। জুবাইদা বেগম নিজেও কয়েকবার ডেকে গেছে ছেলেকে কিন্তু রোদ তো গো ধরে বসেই আছে। অবশেষে তিনি ব্যার্থ হয়ে চলে গেলেন।

কিছু পাওয়া, কিছু না পাওয়া, কিছু নতুন অনুভূতির সাথে পরিচিত হওয়া ইত্যাদির মধ্যেই কেটে গেলো বেশকিছু দিন। দেখতে দেখতে রৌদ্রর ও বিদেশে চলে যাবার সময় ঘনিয়ে এসেছে । এই তো কালকেই সন্ধ্যার পর ফ্লাইট তার। রৌদ্রর মামাও চলে এসেছে দুদিন আগে। তিনিই নিয়ে যাবেন ভাগ্নে কে।জুবাইদা বেগম তো গত তিনদিন আগ থেকেই কান্না জুড়ে বসেছেন,, হুটহাট কাজের মাঝেই কান্না করে উঠছেন। বাকি তার জা-য়েরা মিলে তাকে স্বান্তনা দিয়েই যাচ্ছেন কিন্তু মায়ের মন কি আর ওতো শতো বোঝে? রৌদ্র কে সামনে দেখলেই তাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে ইচ্ছে করে তার।কবির সাহেবেরও বুকটা কেমন ভার হয়ে আছে। শতো হলেও বড় ছেলে তার,,হয়তো তিনি রোদের মায়ের মতো ওতো কান্না করতে জানেন না বা জানলেও পারেন না,, বাবা কি না.!

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বাবারা তো এমনি হয়, বাহিরটা নারকেলের খোলসের মতো শক্ত কিন্তু ভেতরটা ঠিক শাঁসের মতোই নরম।
এদিকে বাড়ির সকলের মনেই দুঃখ বিরাজ করছে। রৌদ্র যে সকলের আদরের। কিন্তু এতশতো ভাবনার ভিড়েও রৌদ্রর অভিব্যাক্তি বোঝা বড় দায়,,এ ছেলের কি কষ্ট হচ্ছে নাকি না কিছুই তার চেহারা দেখে বোঝার উপায় নেই। তার চেহারার ভাবভঙ্গি সেই চিরচেনা গম্ভীর হয়েই আছে। রুহিতো দুদিন ধরে ভাইয়ের সাথেই ঘুমাচ্ছে,, ভাইয়ের হাতেই খাচ্ছে,, ভাইয়ের হাত ধরেই রাখছে সারাক্ষণ। মায়ের মুখ থেকে শুনেছে তার ভাই নাকি অনেক দূরে যাচ্ছে পড়তে। ভাইকে এখন নাকি আর সারাদিন দেখতে পারবে না সে।এ কথা শোনা মাত্রই বুক ভাসিয়ে কেঁদেছে মেয়েটি। অনিকও ভাইয়ের সাথে সাথে থাকছে,, ভাইকে সে যেমন মান্য করে তেমনি ভালোবাসে।

কিন্তু উল্টো দিকে বাড়ির একটি মাত্র সদস্য আছে যিনি কিনা এসবের আগেও নেই পিছেও নেই, তিনি যে আর কেউ নন অরিন।রৌদ্রর চলে যাওয়ার ব্যাপারটা যে ওতো ভালো করে বোধগম্য হয়নি ৭ বছরের পিচ্চিটার, হলে হয়তো এতক্ষণে রুহির মতো বুক না ভাসালেও ঘর কাপিয়ে কান্না করতো ঠিকই । রৌদ্রর চলে যাওয়া নিয়ে রুহির কান্না দেখে কিছু না বুঝেই সে কি ঘর কাপানো কান্না তার।অরিনের কান্না শুনেই সকলে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে ওকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন এত কান্না করছে কেনো,,সে হাতের তালু দিয়ে চোখ ডলতে ডলতে বলতে লাগলো,, “রুহিপু কাঁদছে দেখে আমারও কান্না পেয়ে গেছে “।

সকলে অরিনের কথা শুনে হাসবে না কাদবে কিছুই বুঝলো না।অবশেষে তাকে অনেক ভুলভাল বুঝিয়ে শান্ত করতে লাগলো সকলে।অগত্যা ওর জন্য রুহিও নিজের কান্না থামিয়ে ছোট্ট অরিনের দু গালে চুমু খায়।ব্যস ওমনি কান্না শেষ অরিনের। রুহিকে ঝাপটে ধরে নিজের ছোট আদুরে হাতগুলো দিয়ে।
এতক্ষণ দরজার সামনে দুহাত বুকে ভাজ দিয়ে দাড়িয়ে দাড়িয়ে এসবই দেখছিলো রৌদ্র। পিচ্চি অরিনের এই বাচ্চামো দেখে নিজের অজান্তেই ঠোঁটে ফুটে ওঠলো এক চিলতে হাসি।পরক্ষণেই তা মিলিয়ে গেলো আড়ালে কারো দৃষ্টিগোচর হবার আগেই।
সেদিন পুরোটা সময় রৌদ্র তার পরিবারের সকলের সাথে কাটিয়েছে এবং রাতে বাবা মায়ের সাথেই ঘুমিয়েছে সে।বিছানার একপাশে সে, তার পাশে তার বাবা,, তারপর তার মা, এবং তার পাশে রুহি।

পরদিন সকালে সকলেই ব্যাস্ত বিভিন্ন কাজে।আজকেই রৌদ্রর সন্ধ্যার পর ফ্লাইট। জুবাইদা বেগম ছেলের পছন্দের এটা ওটা বানাতে ব্যাস্ত,,রাফিয়া বেগম রোদের জন্য গাজরের সন্দেশ,, নারকেলের নাড়ু,,পাটিসাপটা পিঠা,,দুধ পাকন পিঠা,,ইত্যাদি বানাচ্ছেন এগুলো নাকি তিনি দিয়ে দিবেন ছেলেটার সাথে। মাইমুনা বেগম আর রাইসা বেগম মিলে ঘরের সকলের জন্য রাঁধছেন।
এদিকে রৌদ্র বসে আছে তার বাবা চাচাদের সাথে। তারা সবাই তাকে বোঝাচ্ছে ঠিকমত চলবে,ঠিক মতো খাবে,পড়বে এসবই। রৌদ্র প্রায় অনেকদিন আগেই তার বাবাকে বলে দিয়েছিলো সে নাকি একজন হার্ট সার্জন হতে চায়।এতে অবশ্য কবির সাহেব বেশ খুশিই হয়েছেন। ছেলে ডাক্তার হতে চায়,,মানুষের সেবা করতে চায় এর চেয়ে ভালো আর কিইবা হতে পারে।তিনিই পরিবারের সকলকে জানিয়েছিলেন ছেলের ডাক্তার হবার ইচ্ছের কথা। পরো পরিবারই ভিষণ খুশি।

পুরো ড্রয়িং জুড়ে বিশাল বড় বড় লাগেজ রাখা হয়েছে। এগুলো দেখেই পিচ্চি অরিন কৌতুহলের সাথে জুবাইদা বেগম কে জিজ্ঞেস করলো,,” ও বড়মা,, এত ব্যাগ কিসের? আমরা কি কোথাও বেড়াতে যাচ্ছি? ”
জুবাইদা বেগম এ কথা শুনে এগিয়ে আসেন অরিনের কাছে এবং তার গালে হাত রাখেন,,
” না মা,, আমরা কোথাও যাচ্ছি না,,তোমার রোদ ভাই যাচ্ছে,, এখন থেকে ও সেখানেই থাকবে রে মা।,” বলেই একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলেন।
ছোট্ট অরিন কি বুঝলো কে জানে একছুটে বড়মার কাছ থেকে দৌড়ে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে রোদের ঘরে চলে যায়,,গিয়েই রোদের সামনে হাঁটুতে দু-হাত ভর দিয়ে বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলে হাঁপাতে থাকে।রৌদ্র ওর এমন আগমনে ভ্রু কুচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছে যেনো বুঝতে চাইছে ওর হলো টা কি.?

বেশ কিছুক্ষন পর অরি টলমল চোখে রোদের দিকে তাকায়। ওর টলমল চোখ দেখেই রৌদ্রর বুকটা ধ্বক করে উঠে। তবুও সে নিজেকে স্বাভাবিক রাখে আর শুনতে চাই অভিমানীনির অভিমানী কথাগুলো।
অরিন কিছুক্ষণ রোদের দিকে তাকিয়ে বলে উঠে,, “রোদ ভাই তুমি নাকি চলে যাচ্ছো একেবারে,, এখন থেকে নাকি নতুন জায়গায় থাকবে,, এ বাড়িতে থাকবে না”
“হুম চলে যাচ্ছি “- ছোট করে উওর দিলো রৌদ্র।
“যেও না রোদ ভাই,, তুমি চলে গেলে আমায় চকলেট কে দিবে.? ঘুরতে কে নিয়ে যাবে.? ” কাদো কাদো হয়ে বললো অরি।
ছোট্ট অরিনের কথা শুনে রোদ কিছুপল চেয়ে রইলো। অতঃপর বলতে লাগলো, “আমি চলে গেলে কি হয়েছে অরি,,অনিক আছে না, ও কিনে দিবে চকলেট,, ও-ই তোকে ঘুরতে নিয়ে যাবে”
“না না ভাইয়ু আমার চকলেট খেয়ে ফেলে,,আর ঘুরতে নিয়ে কিভাবে যাবে ও তো বিকেলে ক্রিকেট খেলতে চলে যায় ”

“না এখন থেকে ও এসব কিছুই করবে না আমি ওকে বলে যাবো তোর চকলেট না খেতে,, তোকে ঘুরতে নিয়ে যেতে,, এখন তুই এখান থেকে যা আমি কাজ করবো”
“না, না আমার তোমাকেই লাগবে রোদ ভাই,, ” জেদ ধরে বলতে লাগলো অরিন।
“আহ অরি জ্বালাস না,,যা এখন”
হুট করে অরি এক প্রশ্ন করে বসে,,” আচ্ছা রোদ ভাই,, তুমি চলে গেলে কি আমায় ভুলে যাবে? আবার কবে আসবে? ”
ব্যস এই একটিমাত্র প্রশ্ন আর ওমনি রোদের হাত থেমে গেছে। আচ্ছা পিচ্চি টা তো সামান্য একটা প্রশ্ন করলো এতে রোদের কি হলো.? ওর এমন দিশেহারা লাগছে কেন। কথাটা কেমন জানি তীরের মতো গিয়ে বিঁধল বুকে। এমনটা হচ্ছে কেনো।আসলেই কি ও বিদেশে গেলে এই পিচ্চি টা কে ভুলে যাবে? আদৌ কি এটা এতো সহজ.? উফফ বুকটা কেমন যেনো করছে রোদের। নাহ এ মুহূর্তে একটু একা থাকা চাই তার।চাই, চাই,,
“তোকে যেতে বলছি না”- মেকি রাগ দেখিয়ে হালকা ধমকের সুরে বললো রোদ।
অরিন এমন ধমকে বেশ অভিমান করলো,,মুক ফুলিয়ে ছুটে পালালো রুম থেকে,, আর রোদ সে তাকিয়ে রইলো তার চঞ্চল পিচ্চি টার দিকে আপাতত যে বেশ অভিমান করেছে রোদের ওপর তা ও ভালোই বুঝতে পারছে।

দুপুরের সময় গড়ালো।আজকে এহসান বাড়ির সকল সদস্য একসাথে বসেছে লাঞ্চ করতে। রৌদ্র কে কেউ তার নিজ হাতে খেতে দিচ্ছে না বরঞ্চ রোদের দরকার ও পড়ছে না।বাবা-চাচাদের থেকে শুরু করে মা-চাচীরা সকলেই এক এক করে লোকমা দিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে তাকে।রুহিও ভাইকে নিজের ছোট্ট হাতগুলো দিয়ে যতটুকু সম্ভব দিচ্ছে। অগত্যা সকলের এভাবে রৌদ্র কে খাওয়ানো দেখে অরিনও বায়না ধরেছে সেও তার রোদ ভাই কে খাওয়াবে।অবশেষে যখন খাওয়াতে গেলো তখন রৌদ্রর মুখে লোকমা তুলে খাবার দেওয়ার আগেই সবটা তার হাত থেকে পড়ে গেলো। এই দেখে পিচ্চির কি অভিমান,, অবশেষে প্রচুর কসরত শেষে তিনি খাওয়াতে সক্ষম হলেন তবে.! এভাবেই কেটে গেলো তাদের খাওয়ার মূহুর্তটা।

সময় গড়িয়ে বিকেলে এসে থামলো।ঘনিয়ে এলো রৌদ্রর বিদায়ের সময়।রৌদ্রর বাবা-চাচারা সকলে মিলে এয়ারপোর্টে যাবেন। এদিকে রৌদ্রর যাওয়ার সময় ছেলেকে বুকে নিয়ে সে কি কান্না জুবাইদা বেগমের। বাকিরা তাকে স্বান্তনা দিতে ব্যস্ত। বাসার বড় ড্রয়িং জুড়ে বসে আছেন বাড়ির সকল সদস্য নেই শুধু একজন কিন্তু রৌদ্রর চোখ এবং মন দুটোই যেনো খুঁজছে সেই একজনকে,,সেই চঞ্চলা পিচ্চি টা কে।কোথাও দেখতে না পেয়ে তার মেজো মাকে জিজ্ঞেস করলো,, ” মেজো মা অরি কই?”
“বাবা ও তো এখন ভাতঘুম দিচ্ছে,, তুই একমিনিট দাড়া আমি ওকে নিয়ে আসছি ” সোফা ছেড়ে উঠতে উঠতে বলতে লাগলেন তিনি।
অগত্যা তাকে থামিয়ে দিয়ে বলে উঠলো রোদ, ” না থাক মেজো মা,ওকে জাগিয়ো না,, ওকে জাগালে এখন শুধু শুধু কান্নাকাটি করবে,, তার চেয়ে বরং আমি গিয়ে একবার দেখে আসি।”
“আচ্ছা বাপ”

বলেই রোদ চলে গেলো তার মেজো মার রুমে। রুমে প্রবেশ করেই গিয়ে দাঁড়ালো বিছানার পাশে যেখানে আপাতত চঞ্চল পিচ্চি টা চুপচাপ ঘুমিয়ে আছে। রোদ কয়েকপল সেই ঘুমন্ত মায়াবী মুখটার দিকে তাকিয়ে থেকে হাঁটু গেড়ে বিছানার পাশে মেঝেতে বসে পড়লো।আস্তে আস্তে অরির মাথায় হাত বুলাতে লাগলো রৌদ্র। হঠাৎ মস্তিষ্কে তড়াক করে বাজতে লাগলো সেই তীক্ষ্ণ কথাটা,,
“রোদ ভাই তুমি কি আমায় ভুলে যাবে.?”
কথাটা মনে হতেই আবারও বুকটা ধ্বক করে উঠে রৌদ্রর।সে ধীমি আওয়াজে বলতে লাগলো,,
“তোর কাছে আসলে আমার এমন লগে কেনো অরি,,কেনো তোর মতো এক পিচ্চি আমার বুকটায় তোলপাড় তুলছে সারাক্ষণ। এ কেমন দহনরে।আমিতো সবটাই বুঝি কিন্তু তুই,, তুই তো এখনো অবুঝ রে। আমি ফিরে আসবো অরি,,ঠিক ততদিন পর যতদিনে তুই বুঝতে শিখবি সব,,বুঝতে শিখবি ভালোবাসা কি। দোয়া করি খুব ভালো থাক তুই। ”

এই বলে উঠে পড়ে সে। রুম ছেড়ে বের হতে উদ্যত হতেই আবার কি যেন একটা মনে করে আবারও পিছনে ফিরলো রোদ। এবার গিয়ে অরির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে বলতে থাকে রোদ,,
“তোকে ভুলে যাওয়ার আগে,,
আমার এ নিঃশ্বাস বন্ধ হোক।
আমাকে ভুলে যাওয়ার ক্ষমতা ও যেনো
তোর কভু না হোক।”
[J.F.M]
“ভালো থাকিস সান শাইন।”

সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি পর্ব ১

এই বলে আর এক মুহূর্তও সেখানে থাকলো না রোদ। চলে গেলো সে। কিন্তু যাওয়ার আগে যে নিজের মনের অব্যাক্ত কিছু কথা বলে চলে গেলো এই ঘুমন্ত পরিটাকে সে কি আর আদৌ শুনতে পেলো? পাবেই বা কি করে সে যে গভীর ঘুমে। রয়ে গেলো কিছু মনের অনুরক্তি এই চার দেয়ালের মাঝে। আদৌ কি কখনো রোদের এই অব্যাক্ত প্রনয় বুঝবে তার প্রেয়সী? সম্ভব কি কখনো এই সম্পর্ক? হয়তো হ্যা,, হয়তো বা না। দেখা যাক সময়ের সাথে সাথে এ প্রনয় কি থাকবে নাকি আবার সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি হিসেবে ধরা দিবে দুজনের মাঝে?

সঙ্গীন হৃদয়ানুভুতি পর্ব ৩

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here