সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৮

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৮
neelarahman

রাত্রি প্রহর দুইটা ।সময় হুহু করে কেটে যাচ্ছে নুরের জ্বর কোন ভাবে থামছে না ।শরীর কাঁপুনি দিয়ে বারবার জ্বর আসছে ।পরপর দুইটি কম্বল দিয়ে নূরকে ঢেকে দিল তারপরও কাঁপুনি থামছে না।
বাড়ির কাউকে জানাবে কি জানাবে না সেই চিন্তায় সাদাফ ভাবল এ মুহূর্তে যদি বাড়ির কেউ জানে তাহলে বড় কেলে*ঙ্কারি হয়ে যাবে এর চেয়ে ভালো নিজে থেকে কমানোর চেষ্টা করুক । নীলা রহমান
এই মুহূর্তে তো আর তেমন কিছু করারও নেই যা যা রেমিডি নেওয়া প্রয়োজন তা সবই গ্রহণ করেছে সাদাফ।
সাদাফের নিজের করা কাজের উপর নিজেরই বিরক্তি হল ।একটু খানি শাস্তি দিতে চেয়েছিল মেয়েটাকে কিন্তু এমন কিছু হয়ে যাবে বুঝতে পারেনি ।অনুশোচনায় ভুগছে খুব ।

নূরের কপালে হাত দিয়ে দেখল প্রচন্ড জ্বর নুর কাঁপছে ঠোঁটগুলো তীর-তির করে কাঁপছে।
কিছুক্ষণ আগে নুরকে জোর করে একবাটি স্যুপ এবং একটি নাপা খাইয়ে দিয়েছিল সাদাফ।এখনো জ্বর কমছে না ভাবল একটু পরে কমে যাবে ওষুধের প্রভাব শুরু হতে একটু সময় লাগবে ।
সাদাফ নূরের কাঁপুনি দেখে বিছানায় উঠে বসল ।বসে নূরকে খুব ধীরে ধীরে নিজের কোলে নিয়ে কোনমতে বুকের সাথে চে*পে ধরে নিজের শরীরের উষ্ণতা দিতে লাগলো ।মানুষের শরীরে তাপমাত্রা দুটি কম্বলের চাইতেও অনেক বেশি হবে সেই চিন্তা করেই নিজের গায়ের সাথে নূরকে জড়িয়ে ধরে রাখল।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সাদাফের শরীর যেন মনে হচ্ছে কেউ আ*গুন জ্বা*লিয়ে দিয়েছে পু*ড়ে যাচ্ছে সারা শরীর।
নূরের গরম উষ্ণ নিঃশ্বাস সাদাফের বুকটা যেন ঝ*লসে দিচ্ছে।তারপরও পরম স্নেহের সাথে নূরকে বুকে জড়িয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে মাঝেমধ্যে কপালে চু*মু এঁকে দিচ্ছে সাদাফ।
নুর বিড়বিড় করে কিছু একটা বলছে।সাদাফ নুরের মুখের কাছে কান নিয়ে গেলো শুনতে।
নূরের বিড়বিড় করে বলা কথা সাদা শুনতে না পারায় আরেকটু ঝুকলো ।ঠিক নূরের ঠোঁটের কাছে কান নিয়ে যেতে নুরের উষ্ণ গরম ঠোঁটের স্পর্শ পেল সাদাফ।সাথে সাথে শি*হরিত হলো সাদাফ।গায়ে প্রত্যেকটা লো*মকূপ যেন দাঁ*ড়িয়ে গেল।

হঠাৎ নুর সাদাফ কে এতো কাছে পেয়ে জড়িয়ে ধরল ।জড়িয়ে ধরে পা*গলের মত সাদাফের গালে গলায় বুকে চু*মু খেতে লাগলো। নীলা রহমান
বলতে লাগলো আপনি শুধু আমার আপনি অন্য কারো না আপনি বিয়ে করলে কিন্তু আমি বউকে মে*রে ফেলবো।
আপনার কেন বিয়ে করতে হবে সাদাফ ভাই আমি আছি না ?এই যে আপনার ছোট্ট নূর আপনাকে কত ভালোবাসে ?আপনার কেন বিয়ে করতে হবে?”
বলে আবারো সাদাফ কে চু*মু খেতে লাগল নুর।একদিকে সাদাফের উপরে চলছে নূরের ভালোবাসার উষ্ণ পরশ তার উপরে এই বোকা মেয়ের বোকা কথা সাদাফ হাসবে নাকি শি*হরিত হবে নিজেই ভুলে গেল।
কিছুক্ষণ বাদে নূরের হাত শিথিল হল ।ধীরে ধীরে সাদাফ কে ছেড়ে আবার সাদাফের বুকে মাথা মুখ গুজে দিয়ে জোরে জোরে হাঁপাতে লাগলো।

নূরের তপ্ত শ্বাস সাদাফের বুক যেন এফোর ওফোর করে দিচ্ছে ।তারপরও সাদাফ দাঁত দিয়ে ঠোঁট চে*পে রেখে নিজেকে নি*য়ন্ত্রণ করে নুরকে সারারাত নিজের বুকের সাথে চে*পে রাখলো ।ভোর পাঁচটা ধীরে ধীরে সাদাফ দেখল নূরের শরীর থেকে ঘাম ছুটছে।তার মানে জ্বর ছাড়ছে।
এদিকে সাদাফ ঘেমে যুবথুবু অবস্থা ।নূরের শরীরের উষ্ণতার জন্য ।নূরকে কোনমতে সাদাফ আস্তে করে বিছানায় শুয়ে দিল ।তারপর টি-শার্টটি খুলে ফ্রেশ হয়ে আবার আসলো নূরের কাছে।
একটি শুকনো টাওয়েল এনে নূরের সারা শরীর সুন্দর করে মুছিয়ে দিল ।কম্বলটা নূরের গায়ে থেকে সরিয়ে দিল।
ভোর পাঁচটা ।সাদাফ নুরকে কোলে তুলে নিল।
নূরের মুখটির দিকে তাকিয়ে একটু মুচকি হাসলো সাদাফ।নূরের পরনে সাদাফের একটি টি-শার্ট এবং একটি ট্রাউজার।

যা ছোট্ট নূরের শরীরে তুলনায় অনেক বড় এবং ঢিলা ঢালা নুরকে দেখে কেমন হাসি পাচ্ছে সাদাফের ।পরোক্ষণে ভাবল তাড়াতাড়ি নূরকে রুমে রেখে আসতে হবে নাহলে সবাই টের পেয়ে যাবে।
তাই দরজা খুলে ধীরে ধীরে নূরের রুমের দিকে এগোতে লাগলো সাদাফ।নুরের রুমে ঢুকে নূরকে বিছানায় যেই শোয়াবে ওমনি ঘরের লাইট জ্বলে উঠলো ।
সাদাফের গলা শুকিয়ে গেল ।তাকিয়ে দেখলো হুমায়ুন রহমান লাইট জ্বালিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।সাদাফ সস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো।

সাদাফ বাবাকে দেখে মাথা নিচু করে একটু মুচকি হাসলো ।তারপর বললো এভাবে না বলে আসে কেও?”
হুমায়ূন রহমান বলল ,”বে*য়াদব একটা ।দিনদিন তুই অনেক অ*সভ্য হয়ে যাচ্ছিস ।আর নুর তোর কোলে কি করছে? আর ওর গায়েরে কাপড়চোপড়ের কি অবস্থা তোর কাপড়-চোপড় পড়ে আছে কেন?”
“তুমি বাবা হয়ে কিছু করতে না পারলে এখন আমার অ*সভ্য হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই ।আর দেখতে যখন পাচ্ছ আমার কাপড়-চোপড় পড়া বাবা হয়ে আবার ছেলেকে জিজ্ঞেস করছ কেন? ল*জ্জা তো তোমার ও বেশি নেই।”বললো সাদাফ।
“লে হুমায়ূন রহমান ……..😂😂😂😂😂সবাই তোকে ভদ্র মনে করে আমি জানি তুই কি!!!
বাবার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় শিখলি না না ?সেই ছোটবেলা থেকে এরকম ।সবাই মনে করে তোর মত ভদ্র ছেলে তা আশেপাশে দশ গ্রামে খুজলে একটা পাওয়া যাবে না ।আমি বাবা আমি জানি কি ছেলে পয়দা করেছি আমি ।

সে ছোটবেলা থেকে তুই আমাকে ব্ল্যা*কমেইল করে আসছিস।”বললো হুমায়ূন রহমান।
“ব্ল্যাকমেল এর কি আছে ?বাবা হও তুমি ?ছেলের ভালোর জন্য তুমি কিছু করবে সেটাকে ভালোবাসা বলে ব্ল্যা*কমেইল বলে না ।বুঝি না মা তোমাকে সহ্য করে কিভাবে?আর আমি খা*রাপ কি করেছি ?দুনিয়ায় কেউ বলতে পারবে তোমার ছেলে খা*রাপ ?তুমি বাবা তুমি আমার প্রকৃত রূপ চিনেছো তোমাকে আমি চিনিয়েছি ।তোমার সাথে কি চাও আমি অভিনয় করি?

আর ভুলে যেও না ফ্যাক্টরি মেশিন যে রকম হবে প্রোডাক্ট সেরকমই বের হবে ।তাই আমাকে কিছু বলার আগে নিজের দিকে যে চারটা আঙ্গুল উঠেছে সে আঙ্গুল গুলো দেখে নিও।”
হুমায়ূন রহমান হা হয়ে গেলেন ছেলের কথা শুনে ।বাবার সাথে নাকি এই কথা ! অথচ আশেপাশে মানুষের সামনে চোখ তুলে তাকায় না পর্যন্ত মাথাটা নিচু করে রাখে ।সেই ছেলে আর বাবাকে বলছে মেশিন খা*রাপ চিন্তা করা যায়?”

তারপর ছেলের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।বলল ,”তুমি এখন এই রুম থেকে যাও নুরকে আমি ঠিক মত শোয়াবো।যাও আর কি হয়েছিল নুরের?
ওকে দেখে তো স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না অসুস্থ মনে হচ্ছে দেখে ।বলেই নূরের গায়ে হাত দিয়ে দেখল এই মুহূর্তে ঠান্ডা তবে কেমন ভেজা ভেজা ভাব বুঝলো জ্বর টর হয়েছিল ।বললো ,”নূরের কি জ্বর এসেছিল ?কিভাবে হল আর ও তোমার রুমে কিভাবে গেল? সত্যি করে বল কি করেছিস?”
সাদাফ বলল ,”আমি কি করেছি মানে? তোমার আদরের ভাতিজি বরং আমাকে………থাক ওসব কথা।তোমরা তো ওকে সব সময় ছোট মনে করো ।তোমার নুর জ্বরের অবস্থা হেঁটে হেঁটে আমার রুমে চলে গেছে ।আমি তো ভদ্র ছেলে ওকে রুমে দিয়ে যেতে এসেছি।

আর বুঝলাম নূর তোমার ক*লিজা তাই বলে তুমি সব সময় নূরের রুম এরকম ঘাপটি মেরে বসে থাকো কেন ?যখনই আমি আসি তখনই তোমার সাথে দেখা হয়ে যায়।”
এই জন্যই।বাবা হই যে তোর ।ওই যে আমার ফ্যাক্টরির প্রোডাক্ট তুই তাই ।সেজন্য জানি এখানে আসলে তোকে খুজে পাওয়া যাবে।আর খবরদার নুর কে নিয়ে একটা বাজে কথা বলবি না।”
এদিকে রিমা নিজের রুমে বিছানায় ছটফট করছে সারা রাত ঘুমাতে পারছে না ।কি হয়ে গেল কি কান্ড ঘটিয়ে ফেলল সাইমন ! সকালবেলা মুখ দেখাবে কি করে ?রা*গের মাথায় চ*ড় থা*প্পর দিয়ে তো রুম থেকে বের করে দিয়েছে কিন্তু সকাল হলে সবার সামনে কিভাবে মুখ দেখাবে ?ল‘‘জ্জায় সারা শরীর কাঁ‘‘পতে লাগলো রিমার।
এদিকে সায়মনেরও সেম অবস্থা ।ঝোকের মাথায় একটি কান্ড তো ঘটিয়ে ফেলেছে কেন করলো এই কা‘‘জ এখনো জানেনা ।সব সময় তো বন্ধুর মত বোনের মতই মিশেছে হঠাৎ কি এমন হয়ে গেল ঠা‘স ঠুস করে চু‘‘মু খেয়ে বসলো ।

সায়মনের ল*জ্জা লাগছে কপাল ঘেমে চুইয়ে চুইয়ে ঘাম বের হচ্ছে ।টেবিল চেয়ারে বসে আছে বিছানায় যেতেই পারছেন না ছটফট করছে সাইমন।
মনে মনে ভাবছে সকাল হলে না জানিয়ে ডা*কিনি টা কি করে ।আ*ল্লাই জানে ।মনের ভিতরে কেমন দুর দুর করছে ।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৭

রিমার দিকে তাকাবেই বা কি করে ?সম্পর্কটা যে এখন একটু অন্যরকম হয়ে গেল ।এতেদিন তো চাচাতো বোন ছিল বন্ধুর মতো ছিল কালকে থেকে কেমন হবে সম্পর্ক কিভাবে মোকাবেলা করবে রিমার বুঝতে পারছে না সাইমন।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ২৯

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here