সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩২
neelarahman
রিমা কফি নিয়ে ঢুকলো নুরের রুমে দেখল,” সাদাফ আলমারি খুলে কিছু একটা করছে নূর জড়োসরো হয়ে বিছানায় বসে আছে।”
রিমা এগিয়ে গিয়ে সাদাফের পিছনে দাঁড়িয়ে বলল ,”ভাইয়া কিছু খুঁজছো ?কিছু লাগবে ?আমাকে বল আমি খুঁজে বের করে দিচ্ছি।”
সাদা একটা কুর্তি পাজামা একটা স্কার্ফ বের করে রিমার হাতে দিয়ে বলল ও কেউ ওয়াশরুমে নিয়ে ফ্রেশ করিয়ে এই ড্রেসটা পরে বের হতে বল আমি রুমে যাচ্ছি রুমে হয়ে ফ্রেশ হয়ে বের হব আজকে একটু বিকেলে আমরা সবাই ঘুরতে যাব।
জ্বর শরীরে বাইরে বের হলে একটু ভালো লাগবে ফ্রেশ লাগবে।
রিমা কথাটি শোনামাত্রই সাথে সাথে খুশি হয়ে গেল তারপর বলল ভাইয়া আমরা কুড়িল যাব কেমন?
সাদাফ রিমার মাথায় হাত রেখে বলল ,”ঠিক আছে এখন যা মহা রানীকে রেডি করিয়ে দে তাড়াতাড়ি আমি ফ্রেশ হয়ে বের হচ্ছি।”
নূর বিছানায় বসেই তাকিয়ে রইল সাদাফের দিকে ।এতক্ষণ কি ছিঃ মার্কা কথাগুলো বলছিল আর এখন কি সুন্দর ঘুরতে যাবে বেড়াতে যাবে বলছে ।অবশ্য ভালই হবে অনেকদিন ধরে কোথাও বেড়াতে যায় না নুর।
সাথে সাথে রুমে ঢুকলো সাইমন ঢুকে শুনল বেড়াতে যাওয়ার কথা।সায়মন বললো ,”আমাকে রেখে কোথায় যাওয়ার প্লান হচ্ছে ?আমি কিন্তু এমনি এমনি যাব না বললেও যাব।”
তারপর হেঁটে বিছানার কাছে এসে নূরের পাশে বসে নুরের কাঁধে হাত রেখে বলল,” কিরে বনু? জ্বর কিভাবে বাধালি? সবাই কে কি দুশ্চিন্তায় না ফেলেছিলি?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বলে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো রিমার দিকে রিমা ওর দিকে রক্তচক্ষু করে তাকিয়ে আছে সাথে সাথে বলল আমার কফি কই কফি দিয়ে যায় এখানে।
বড় ভাইদের কোন সম্মান তো করিস না কফি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস বেয়াদবের মত এখন কি আমি হেঁটে হেঁটে আসবো কফি নিতে?
রিমা রাগে ক্ষোভে দুপ ধাপ পা ফেলে এসে কফি সায়মনের হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল ,”এই নাও কফি ।”
সায়মন মুচকি মুচকি হাসলো ।জানে কিছু বলতে পারবে না তাই ইচ্ছে করেই ওর সাথে এরকম ব্যবহার করছে সায়মন।
সাদাফ বের হয়ে যাবে এমন সময় সাইমনের দিকে তাকিয়ে বলল ,”বের হ ওরা এখন রেডি হবে ।তুই গিয়ে রুমে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে আয়।”
সাইমন বিছানা থেকে উঠে বলল ,”ঠিক আছে যাচ্ছি তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বের হোস আমাদের যেনো আবার ওয়েট করতে না হয় ।” বলেই সাথে সাথে রুম থেকে বের হয়ে গেল সাদাফ ও সাইমন।
নূর রেডি হচ্ছে আর ওয়াশরুমে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আয়নার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে সাদাফের বলা কথাগুলো ।ইশ রাতের বেলা কি আসলে এরকম কিছু করেছে নূর ?তাহলে তো লজ্জায় ও শেষ হয়ে যাবে ।কিভাবে দাঁড়াবে সাদাফ ভাইয়ের সামনে ?আসলে কিছু হয়েছে এমন? যেখানে যেখানে দেখালো সাদাফ ভাই এভাবে আসলেই গলায় বুকে চুমু খেয়ে ছিল নুর?ছিঃ নুর এতো টা খারাপ কিভাবে হতে পারলো ?অবচেতন মনে ওর ভিতর কি আসলেই এগুলো ছিলো?”
ভাবনার মধ্যেই রিমা ওয়াশরুমে দরজা ওপার থেকে জোরে জোরে বলছে নূর হলো তোর ?তাড়াতাড়ি বের হ সাদাফ ভাইয়ারা নিচে অপেক্ষা করছে ।নূর বলল ,”এই তো আসছি আর এক মিনিট।”
নিচে বসে চা খাচ্ছিল হুমায়ূন রহমান ও ফজলুর রহমান ।সাদাফ আর সাইমনকে নামতে দেখেই হুমায়ূন রহমান বলল ,”এসেছ রাজপুত্র দুজন ?বস তাহলে চা খাওয়া যাক।”
সাদাফ এজ ইউজুয়াল ভদ্র ছেলে কোন রা শব্দ করল না ।সাইমন চাবির রিং হাতে নিয়ে ঝাকাতে ঝাকাতে বলল ,”এখন আমরা খাব না আমরা উপরে কফি খেয়েছি আর আমরা এখন একটু ঘুরতে বেরোবো ।আমি রিমা নূর আর সাদাফ ভাইয়া ।সাথে সাথে তাকালো ফজলুর রহমান সাদাফের দিকে।”
ফজলুর রহমানের মাথায় রাত থেকে ঘুরছিল বারবার সাদাফের কথা ।আজকে সাদাফের দিকে তাকালো অবশ্যই এই দৃষ্টি শুধু ভাইয়ের ছেলের মত নয় অন্য দৃষ্টি তে তাকিয়ে দেখল সাদাফের দিকে ।
মনে মনে অনেক কিছুই চলছে ফজলুর রহমানের কিন্তু মুখে আর কিছু প্রকাশ করল না ।
চোখ ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখলো নূর এবং রিমা রেডি হয়ে ওদের পিছু পিছু আসছে।
নওরিন আফরোজ বলল ,”কখন তোরা প্লান করলি ঘুরতে যাবি রে ?আমাদের তো কিছু বললি ও না ?ভাই বোন উপরে বসে কখন যে কি প্ল্যান করে ফেলিস কিছুই বলা যায় না।
বেড়াতে যাবি যা একজন কিন্তু জর বাঁধিয়ে বসে আছে বাকিরা ও কিন্তু বাধাস না ।তাড়াতাড়ি ফিরে আসিস রাতে কিন্তু বাসায় খেতে হবে মনে রাখিস।”
সবার সাথে কথা শেষ করে বের হয়ে গেল চারজন ।হুমায়ূনর রহমান তাকিয়ে রইলেন ছেলের যাওয়ার পানে সাথে ফজলুর রহমান ও ।কিন্তু কেউ কারো দিকে তাকিয়ে আর কোন কথাই বলছেন না যেন একজন আরেকজনের থেকে চোখ এড়ানোর চেষ্টা।
পরের দিন সকাল রিমা কারো সাথে কোন কথা না বলে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হয়ে গেছে ।সায়মন আজও রিমাকে খুঁজে পেল না নাস্তার টেবিলে ।
নূরের শরীরটা মোটামুটি ভালো নাস্তা খেতে আজ টেবিলে বসেছে তবে সাদাফ নেই খুব ভোরে বের হয়ে গেছে অনেক জরুরী একটা মিটিং তাই।
নূরের কেন যেন আজকে মন ঠিক ছিল না নাস্তার টেবিলে হালকা কিছু খেয়ে উপরে উঠে গেল ।গতকাল বিকালে বেরিয়ে আসার পর থেকেই সাদাফ নুর কে একটু এড়িয়ে চলছে বুঝতে পারছে না কেন।
সাইমন কলেজ কম্পাউন্ড এর বাইরে দাঁড়িয়ে আছে রিমার জন্য ।হঠাৎ দুর থেকে দেখলো রিমা কয়েকটি ছেলের সাথে কথা বলছে।
মেজাজ সপ্তম আকাশে চড়লো সাইমনের ।ওর সাথে তো ঠিকমত কথাও বলে না ।ফোন দিলে হ্যাঁ হু বলে ফোন রেখে দেয় ।অথচ ছেলেগুলির সাথে কত হেসে হেসে কথা বলছে।
রাগের মাথায় সায়মন পকেট থেকে ফোন বের করে ফোন দিল রিমার নাম্বারে ।রিমা ফোন ধরে বলল ,”হ্যালো !”
সায়মন বলল ,”কোথায় তুই ?”
রিমা বলল ,”ক্লাসে ক্লাস করছি।”
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৩১
সায়মন: কোন ক্লাসে ফোন ধরে কথা বলতে দেয়? আমাকে কি মগা পাইছোস শালী?আজকে বাসায় আয় তোর বাপের নাম যদি না ভুলাইছি আমার নাম ও সায়মন না।
রিমা: তাহলে তোর নাম মগা ই রাখ কারণ আমার বাপ তোর বড় বাপ হয়।
লে সায়মন 😂😂😂😂😂
“তুই আজকে আয় বাসায় তোর সানডে মানডে ক্লোজ করতেছি।” সায়মন।
