সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৪২
neelarahman
সাদাফ অনেকক্ষণ পর নূরকে ছেড়ে দিয়ে নূরের কপালের সাথে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো ।নুর চোখ বন্ধ করে রেখেছে ।হাঁপাতে হাপাতে জোরে জোরে নিঃশ্বাস ছাড়লো যেন প্রাণ ফিরে পেল।
এখনো জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে আর ছাড়ছে মনে হচ্ছিল একটু আগে যেন মা*রাই যাবে নুর।এখনো দুই হাত দিয়ে খা*মচে ধরে আছে সাদাফের শার্টের কলার ।সাদাফের গলা ভীষণ জ্ব*লছে।
নুরের নখের আঁচড়ে বেশ কিছু জায়গায় ক্ষ*ত হয়েছে
সাদাফ নূরের কপালে গালে নাক ঘষতে ঘষতে বলল ,”কক্ষনো কোন ছেলের সাথে হেসে হেসে কথা বলবি না নুর আমি সহ্য করতে পারি না ভীষণ জ্বালা হয়ে আমার বুকের ভিতর কখনো যেন না দেখি আমি ছাড়া অন্য কোন পুরুষের সাথে তুই হেসে তো দূর একটু সামনে গিয়ে কথা বলেছিস।
তুই সুন্দর এটা দেখার এবং বলার অধিকার শুধু আমার অন্য কারো না। তুই নিজেও আয়নায় তোকে দেখে সুন্দর বলতে পারবি না।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এগুলো বলেই সাদাফ নূরের কপাল থেকে কপাল সরিয়ে চোখ দুটো স্থির করলো নূরের ঠোঁটে ।ঠোঁটের এক কোণে বেশ ক্ষ*ত হয়েছে বোঝা যাচ্ছে একটু কে*টে গিয়েছে হয়তো ।ঠোঁট ফুলে আছে লাল হয়ে আছে দেখলে যে কেউ বুঝতে পারবে ঠোঁটের উপরে বিশাল অ*ত্যাচার হয়েছে কিছুক্ষণ আগে।
সাদাফ নিজের বৃদ্ধাঙ্গুলি দ্বারা নুরের ঠোঁটটি সুন্দর করে মুছতে মুছতে বলল ,”ব্যথা করছে জ্বা*লা করছে ?আমি দুঃখিত নিজের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি।
লিপস্টিক সাথে আছে ?থাকলে বের কর ।একটু লিপস্টিক দিয়ে দিচ্ছি ।তাহলে কেউ কিছু বুঝতে পারবে না।”
নূর মাথা ঝাঁকিয়ে সায় জানালো ।সাদাফ নুরের হাত থেকে ব্যাগটা নিয়ে হলে একটি হালকা পিংক কালারের লিপস্টিক বের করল ।করে নিজের হাত দিয়ে নুরের ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে দিতে লাগলো ।এখনো থর থর করে কাঁপছে নুর।
সব অনুভূতিগুলোই নূরের কাছে নতুন ।সাদাফ নিজ হাতে পরম যত্নে নুরের ঠোঁটে লিপস্টিক লাগিয়ে দিচ্ছে যেন একটু জোরে দিলেই নূরের ভীষণ ব্যথা হবে ঠিক ততটাই যত্নে।
এদিকে সাইমন ঘুরে ফিরে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে ।রিমা জিজ্ঞেস করলো,”কি হয়েছে এদিক ওদিকে দেখছো কেনো?”
সাইমন বলল ,”দেখি তোর কোন আশিক আবার ওত পেতে কোথায় বসে আছে ।এখন তো মনে হচ্ছে বাকি জীবন আমার তোর সাথে বডিগার্ড হয়ে ঘুরতে হবে।চার পাশে তো তোর আশিকের অভাব নাই।
দেখলেই আপনা আপনি দাঁত কেলিয়ে হাসে।”
রিমা খুব বিরক্তি নিয়ে তাকালো সায়মনের দিকে ।তারপর বলল ,”আরেকটা বাজে কথা বললে আমি এখান থেকে চলে যাব আর এক মুহূর্ত এখানে দাঁড়াবো না।”
“তুই যেয়ে দেখা তারপর কি হবে সেটা তো জানিস ।তোকে সুন্দর করে কোলে করে নিয়ে বিছানায় টুপ করে ফেলে তোর উপরে বসে তোকে ঠোটে কা*মড় দিব যা তুই আমার সাথে করেছিস তার প্রতিশোধ নিবো ।আর তোর বাপ চাচা ভাইদের ও বলবো তুই আমার সাথে কি কি করেছিস।”বললো সায়মন।
সাদাফ নুর কে জিজ্ঞেস করল কেমন লাগছে এখন ?নুরের গালে হাত দিয়ে স্লাইড করতে করতে নূরের চুলের পিছনে মুঠি করে ধরে নুরের মাথাটা একটু উঁচু করে বলল ,”কখনো কোন ছেলের সাথে কথা বলবি না মনে থাকবে?”
নুর বলল ,”আপনিও তো কত মেয়েদের সাথে কথা বলেন ।সাবা আপু তো আপনার হাত ধরে ঘুরে তখন?”
“আমি যা করি তুই কি তাই করবি ?আমি তো চারটা বিয়ে করতে পারব আমার অধিকার আছে তুই কি চারটা বিয়ে করতে পারবি?”বললো সাদাফ।
নুর বলল ,”তাহলে আপনি চারটা বিয়ে করবেন?”
“করতেই পারি এক বউ দিয়ে যদি না পোষায় চারটাও করতে পারি ।আর যদি এক বউ পুষিয়ে দিতে পারে তাহলে করবো না যা প্রমিস।”নূরের দিকে দুষ্টু চোখে তাকিয়ে কথাটি বলল সাদাফ।
নূর জানতে চাইলো,” কি করলে পোষাবে আপনার?”
সাদাফ বলল ,”দিনরাত আমার সাথে …..,,,তারপর আর কিছু বলল না ।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল নূরের দিকে ।”নূর জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল সাদাফের দিকে।
“এত কথা এখন জানতে হবে না ।যখন সময় হবে তখন কা*জে কর্মে বুঝিয়ে দিব ।চল সবাই অপেক্ষা করছে ।”বলেই নূরের হাত ধরে বন্ধুদের কাছে নিয়ে গেল সাদাফ।
বন্ধুদের কাছাকাছি আসতে সবাই বলে উঠলো ,”কিরে ফিডার খাওয়া হলো ?তা পুরোটা খেতে পেরেছিল ফিডার?”
সাদাফ চোখ রাঙিয়ে তাকালো নয়নের দিকে। তারপর বলল ,”বাজে কথা বলবি না ও ছোট ওর সাথে ওই ভাবে কথা বল ।”
এর মধ্যে নয়ন বলে উঠলো ,”ও ছোট তাই না আমরা বললে ছোট তুমি কোলে নিয়ে ই*য়াহ বেবি বললে সমস্যা নাই আর আমরা একটু ওয়াও বলে সমস্যা?”
নুরের কেনো জানি হঠাৎ অনেক ল*জ্জা লাগছে।গাল গুলো লাল হয়ে যাচ্ছে।সাদাফ নুরের দিকে তাকালো।দেখলো নুরের লাজুক মুখ
সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৪১
নয়নের দিকে তাকিয়ে বললো,” চুপ কর এবার।সাবা কোথায়??”
নুর মুখ তুলে তাকালো সাদাফের দিকে। মনে মনে ভাবলো,”আবার সাবা আপুকে খুঁজছে কেন উনি ?কি কা*জ আছে সাবা আপুর সাথে ?মনে মনে রা*গ করতে লাগল নূর।
সাদাফ জানে নুর রাগ করবে। কিন্ত লজজা থেকে বাঁচাতে সাবার কথা বলে রাগ তুলে দিলো। লজ্জা থেকে রাগ ভালো এই মুহুর্তে।
