সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭২+৭৩

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭২+৭৩
neelarahman

“কখন বড় হবি তুই নূর ?জানিস কত ইমারজেন্সি কারণে আমাকে ফোন দিয়েছিল ?আজ যদি একটা কিছু হয়ে যেত তাহলে আমি কি জবাব দিতাম আমার বন্ধুকে ?বলতো কেন এরকম ছেলে মানুষী করলি তুই ?উত্তর দে আমাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকবি না ।আর কথায় কথায় কান্না করবি না ভালো লাগে না আমার এসব।” রাগে কথা গুলো বললো সাদাফ।
নূরের কান্না গতি যেন আরো বেড়ে গেল ।সাবার জন্য নুরকে এভাবে বকেছে তাহলে সাবা আপুকে সত্যি সত্যি ভালোবাসে সাদাফ ভাই ।নূরের অভিমান যেন আরো সপ্তম আকাশে উঠলো ।হিঁচকি উঠে যাচ্ছে কান্না করতে করতে ।

এদিকে সাদাফ নূরের কান্না দেখে নিজের উপর বিরক্ত হচ্ছে ।কেন এভাবে মেজাজ হারালো ?কিন্তু কিছু বলবেই বা না কেন ?কেন এরকম ছেলে মানুষী করল মেয়েটা ?বারবার বলেছে ওকে ইমার্জেন্সি প্রয়োজন কেন নুর ওকে একটু জানালো না?
ভাবতে ভাবতে আবার নুরের কান্নার শব্দে ধ্যান ভঙ্গ হলো সাদাফের ।সাদাফ চেয়ার থেকে উঠে নূরের কাছে যাবে অমনি নূর দরজার সামনে থেকে দৌড়ে চলে গেল আর একবারও পিছনে ফিরে তাই চাইলো না।
সাদাফ বুঝতে পেরেছে কি বড় ভুল করে ফেলেছে মেজাজ হারিয়ে নূরকে বকা দিয়ে কিন্তু সাদাফের ও যে কিছু করা ছিল না ।সাবার মা ভীষণ অসুস্থ হসপিটালে ভর্তি করেছে র*ক্তের প্রয়োজন ছিল।
সাবার মায়ের র*ক্ত ও পজেটিভ সাদাফের র*ক্ত ও পজেটিভ ।আগেই বলে রেখেছিল অপারেশন হলে ব্লা*ড লাগতে পারে তখন যেন সাদাফ ব্লা*ড দেয় কিন্তু এরকম একটা ঘটনা ঘটবে ফোন বন্ধ করে রাখবে নূরা সাদাফ ল*জ্জিত হয়ে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছে
নূরের সাথে সাথে পিছনে ছুটলো সাদাফ কিন্তু নূর দৌড়ে যেয়ে নিজের রুমে দরজা লাগিয়ে দিল ।সাদাফ বারবার দরজা নক করছে কিন্তু নূর দরজা খুলছে না।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সাদাফ বলল ,”নূর দরজা খোল বলছি ।না হলে ভীষণ খারাপ হয়ে যাবে ।”
নুর বলল ,”চলে যান এখান থেকে আর আমার দরজার কাছে আসবেন না ।আপনার জন্য আর আমি দরজা খুলবো না।”
“কি আমার জন্য দরজা খুলবি না ?আমার জন্য দরজা খুলবি না তো কার জন্য খুলবি দরজা ?খুল বলছি ।নূর প্লিজ নাহলে সত্যি খুব খারাপ হয়ে যাবে ।”বললো সাদাফ।
নুর বলল ,”চলে যান এখান থেকে বলেছি ।আমার দরজায় না আপনি সাবা আপুর দরজা জান। সাবা আপুর জন্য আপনি আমাকে বকা দিয়েছেন ।চলে যান এখান থেকে আর কখনো আসবেন না আমার কাছে ।আপনার চেহারাও দেখতে চাই না আমি।”

“কি এত বড় কথা ?দেড় ফুট শরীরে ৬ ফুট সাহস কোথায় পেলি? সাহস তো তোর অনেক হয়েছে ।নুর এখন খোল বলছি দরজা না হলে কিন্তু সত্যি সত্যি তোর কপালে শনি লেগে যাবে আজকে ।এখন দরজা খোল ।”বললো সাদাফ।
নূর বলল ,”বলেছি তো খুলবো না যা ইচ্ছা করার করে নিন ।আপনি আপনার প্রেমিকার কাছে যান ।এখানে এসেছেন কেন ?”
সাদাফ মুচকি হাসলো।
বলল ,”গা*ধী তাড়াতাড়ি দরজা খোল ।আমার কোন প্রেমিকা নেই তবে হ্যাঁ বউ আছে তুই চাইলে বউয়ের কাছে যেতে পারি।”

এদিকে রিমা নিজের রুমে শুয়ে শুয়ে ভাবছে গতকাল রাতের কথা ।হুমরি খেয়ে যখন পড়েছিল সাইমনের বুকে এলো পাথালি কি*ল ঘু*ষি মা*রছিল হঠাৎ সায়মন দুই হাত চে*পে ধরে রিমাকে বিছানায় ফেলে রিমার উপরে চড়ে বললো খুব বার বেড়েছে রিমা। এমন করছিস কেন? আর কিসের অধিকারে তুই আমার উপরে বারবার এরকম চড়াও হোস আমি যার সাথে ইচ্ছা তার সাথে কথা বলবো ।তাতে তোর কি ।কা*জ করবি না করবি না সমস্যাটা কি তোর?”
“অনেক সমস্যা আছে ।”বলল রিমা ।

সায়মন বলল ,”হ্যাঁ কি সমস্যা ?সেটাই শুনতে চাই ।আমি বিয়ে করলে তোর সমস্যা আমি কারো সাথে কথা বললে তোর সমস্যা তোর সমস্যাটা আসলে কোথায় তুই আজকে বলে দে।” বললো সাদাফ।
রিমা বলল,” হ্যাঁ এটাই আমার সমস্যা তোমার সাথে কেউ কথা বলতে পারবে না তুমি শুধু আমার।”
সায়মন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল ।বলল ,”তোর মানে ?শুধু তোর মানে কি বলতে চাস?”
রিমা বললো ,”কি বলতে চাই বোঝো না ?এত নেকা তুমি ?কচি খোকা ?বোঝো না যে আমি তোমাকে ভালোবাসি ?এরপরও তুমি কেন বারবার আমার সামনে অন্য মেয়ের কথা বল?”
সায়মন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল রিমার দিকে ।তারপর মুচকি মুচকি হেসে বলল ,”তাই ?ভালবাসিস ?আমাকে তাহলে আগে বলিস নি কেন?”

রিমা বলল ,”বলে কি হবে ?তুমি তো আর বাসো না ।”
সাইমন বলল ,”তাই এত শিওর ?তোকে ভালোবাসি না আমি ?ভালবাসি না তাহলে এগুলো কি করি আমি ?এই যে আমার রুমে তোকে ছাড়া আমি কাউকে ঢোকার অনুমতি দেই না আমার প্রত্যেকটা জিনিস তুই ছাড়া কেউ টাচ করার অনুমতি পায় না এইযে রাতবিরেতে তোর রুমে এসে হানা দেই। এই যে তোকে এলোপাথাড়ি আমাকে মা*রার অধিকার দেই ,যখন তখন আমাকে ছুঁয়ে দেওয়ার অনুমতি দেই যখন তখন আমি তোকে ছুঁয়ে দেই এগুলো কি তাহলে ?ভালোবাসা বুঝিস এগুলি বুঝিস না?

ভালোবাসি বুঝতে সময় লেগে গিয়েছে কিন্তু ভালো সে অনেক আগে থেকে বেসে ফেলেছি ।হয়তো ছোটবেলা থেকেই না হলে নিজের অজান্তেই এই সমস্ত অধিকার আমি তোকে কেন দিব? এই সমস্ত অধিকার একটা ছেলে হয় বিয়ের আগে তার মাকে দেয় না হলে তার স্ত্রীকে দেয় অথচ আমার অবচেতন মন এই অধিকার তোকে সে কবে থেকে দিয়ে রেখেছে।

আর তুই বোকা শুধু মুখে কথার জন্য অপেক্ষা করিস আমার মন কেন পড়তে পারিস না আমার চোখের ভাষা কেন বুঝিস না ?আমি তোকে কিভাবে দেখি সেটা কেন বুঝিস না? আমার সাথে এখনো পর্যন্ত যা যা হয়েছে এগুলো কি ভালোবাসা না প্রেম না?”
রিমা মুখ সরিয়ে বলল ,”তুমি তো মুখে বলোনি ?আজকে হ্যাঁ বলছ কালকে তো অস্বীকার করে ফেলতে ।”সায়মন বলল ,”গা*ধি আমি এই বাড়িতেই থাকি আর তোর বাপ চাচা যেরকম অস্বীকার করে পালানোর কোন উপায় আছে আমার ?কলিজা এত বড় হয়েছে এখনও পর্যন্ত?
অস্বীকার করে কোথায় যাবো শুনি ?তোকে ছাড়া তো আমার দিন শুরু হয় না রাতও শুরু হয় না অস্বীকার করেই বা কি করব?”

“তোকে এই লাস্ট বার বলছি নূর দরজা খোল না হলে কিন্তু সত্যি সত্যি আমি চলে যাব সাবার কাছে ।তুই কি সেটাই চাচ্ছিস ?এখন দরজা খুল।নাহলে গেলাম।”বললো সাদাফ। নীলা রহমান লেখিকা
“বলেছি তো খুলবো না ।যেখানে যাওয়ার সেখানে চলে যান আপনি ।”বললো নুর।
সাদাফ বললো,”ঠিক আছে তাহলে যাচ্ছি ।”
বলেই সাদাফ আর নক করল না ।চুপচাপ এমন একটা অভিনয় করল যেন ও চলে যাচ্ছে সত্যি।নূর চিন্তা করলো সত্যি সত্যি কি সাবার কাছে চলে গেল ? দরজা হালকা খুলে উঁকি মেরে একটু দেখবে কি নুর ?সেই চিন্তা করে দরজার দিকে এগিয়ে এলো ।দরজা হালকা করে খুলে যেই উঁকি মারল অমনি সাদাফ এক হাত ঢুকিয়ে দিল দরজার ভিতরে ।তারপর নিজেও ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল।

নুর বোকা বনে গেল কিভাবে সাদাব ভাই নূরকে বোকা বানালো ।নুর নিজের কানে শুনলো সাদাফ ভাই চলে যাচ্ছে ।জুতার আওয়াজ পেয়েছিল তাহলে রুমের ভিতর ঢুকলো কি করে ?
এদিকে সাদাফ তাকিয়ে দেখছে নুরের চোখ মুখ ফুলে গিয়েছে কান্না করতে করতে।
সাদাফ বলল ,”একটু বকা দিলে বুঝি এত কান্না করতে হয় ?এত চোখে পানি তোর কোত্থেকে আসে শুনি?”
নুর অনেক অভিমান করেছে কথা বলবে না এই লোকের সাথে ।তাই উল্টো পায়ে চলে যেতে চাইলে সাদাফ হ্যাঁচকা টানে নূরকে নিজের বুকের সাথে চেপে ধরল ।খুব জোরে নিজের বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরল নূরকে।
যেন সাদাফ নুরের মাঝে এক চুল পরিমাণ জায়গা অবশিষ্ট নেই ।সাদাফ আড়াআড়ি করে দুই হাত দিয়ে নূরের পিঠে চাপ দিয়ে নিজের বুকের সাথে চে*পে ধরে আছে ।নূর যেন ঠিকঠাক মত নিঃশ্বাসটাও নিতে পারছে না।
নুর কোন মতে আমতা আমতা করে বলল ,”আমাকে ছেড়ে দিন আমার কষ্ট হচ্ছে ব্যথা পাচ্ছি ।”
সাদাফ বলল ,”এভাবে ধরলে কেউ ব্যথা পায় না অভ্যাস করে নে সব সময় তোকে আমি এভাবেই ধরবো।”
কিন্ত আমি…….. আর বলে শেষ করতে পারল না নূর ।সাথে সাথে সাদাফ বলল ,”হুঁশ আর একটি কথাও না ।”
বলে নূরের কাঁধে ছোট ছোট করে চু*মু খেতে লাগলো সাদাফ।

নূরা আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারল না ।ধীরে ধীরে হাত দুটো উঠিয়ে সাদাফ কে নিজ থেকে জড়িয়ে ধরল ।সাদাফ টের পেল সাদাফের পিঠে ধীরে ধীরে লতানো লতার মতো আকড়ে ধরছে দুটি হাত।
সাদাফ যেন ধীরে ধীরে আরো মোহাচ্ছন্ন হয়ে পরল ।নূরের প্রতিটি স্পর্শ যেন ওর ভিতরে পুরুষ সত্তাকে জাগিয়ে দিচ্ছে ।আজ কেন এরকম হচ্ছে ? নুর তো কতই কাছে এসেছে কিন্তু আজকের মত নয় । আগে ও নুরকে চু*মু খেয়েছে কখনো নুরকে এভাবে নিজের শরীরের সাথে লা*গিয়ে জড়িয়ে ধরা হয়নি ।
যেন প্রত্যেকটা রন্ধে রন্ধে অনুভব করছে নুরকে সাদাফ।আজকে যেন সাদাফ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারছে না থেকে থেকে ওর বারবার মনে হচ্ছে নতুন বিবাহিত স্ত্রী।

কিন্তু আরেক মনে বলছে নুর তো জানেনা ও তো বোঝেনা ও তো সাদাফ কে স্বামী হিসেবে কখনো গ্রহণ করেনি ।যদিও সাদাফ সব সময় জানে নুর ওর বিবাহিত স্ত্রী তাই এভাবে সেভাবে ছুঁয়ে দেয় ।
কিন্তু আজ খুব কষ্ট হচ্ছে নিজেকে নূরের কাছ থেকে দূরে রাখতে ।এই চিন্তাভাবনার মধ্যে সাদাফ হঠাৎ নূরের কাঁধে জোরে একটি কা*মড় বসিয়ে দিল।
নুর হালকা আহ বলে চিৎকার করে উঠতেই সাদাফ সাথে সাথে দুই হাত দিয়ে নূরের মুখ চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট মিশিয়ে দিল।
এদিকে রিমা আবারো চিন্তা করতে লাগলো ।গতকাল যখন দুজনে ভালোবাসার কথা জানাজানি হল ……….
রিমা বলেছিল,”তাহলে এখন?”

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭০+৭১

সায়মন :কি এখন?
“আজ থেকে আমাদের অফিসিয়াল ডেট শুরু।”বললো রিমা।
সায়মন : তো??
“গাধা অফিশিয়ালি ডেট শুরু করলে রিলেশনশিপ শুরু হলে চু*মু খেতে হয়।”বললো রিমা।
“তাহলে আগে পরে যা খেয়েছি সেগুলো কি ছিল?চাচাতো ভাই বোন টাইপ চু*মু?”
গাধা তুই সর এখান থেকে ……..আর কথা বলে শেষ করতে পারল না রিমা ।সাথে সাথেই সায়মন রিমার ঠোঁট চে*পে ধরল নিজের ঠোঁট দিয়ে ।দুই হাত চে*পে ধরল বিছানার সাথে।

সুখময় যন্ত্রণা তুমি পর্ব ৭৪+৭৫

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here