সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ২
বুশরা আহমেদ
“রাহি তার নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ল,, বিরবির করে বললো “তুই আর কীভাবে আমার হৃদয় হরণ করবি বল তো ” ।।বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তোর সব সৌন্দর্য হাজার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দেখ তোর কাছে গিয়ে কীভাবে নিজেকে হারিয়ে ফেললাম। সামান্য বিউটি স্পট দেখে আমি কেমন নিজেকে হারিয়ে ফেললাম,, তোর মুখটার দিকে তাকালে আমি যে নিজেকে আর সামলাতে পারবো না। একা একা বিরবির করছিল রাহি।ঠিক তখনি তার ফোনটা বেজে উঠলো “অপর পাশ থেকে তৌফিক বললো কাজ হয়ে গেছে” তাদেরকে হসপিটাল এ এডমিন করা হয়েছে।
রাহি ফোনটা কেটে দিয়ে অস্ফুটো হাসলো আর বললো “আমার প্রায়সিকে দেখতে আসছিলি তাই না তোকে জান্ত পুঁতে দেওয়ার ইচ্ছে ছিল কিন্তু না তা করলাম না” যেখানে আমি এতো গুলো বছর বুশরা কে দেখি নি সেখানে তোর সাহস কি করে হয় ।। রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে রাহির ।তাই আর দেরী না করে ঘুমিয়ে পড়লো রাহি।
পরের দিন সকালে রেজা আহমেদ জানতে পারে যে “মাহিম দের এক্সিডেন্ট হয়েছে ।আর এই বিয়ে টা মাহিম করতে পারবে না।এইটাও জানায়। হঠাৎ বিয়ে কেন করতে পারবে না সেইটা খুব ভাবাচ্ছে রেজা আহমেদ। মাহিম তো বুশরাকে অনেক পছন্দ করতো তাহলে?
সবাইকে বিষয় টা জানালে ,, হাফিজুর আহমেদ বলে এইসব নিয়ে এখন না ভাবতে। বুশরার জন্য আরো ভালো ছেলে আসবে।যাকে আল্লাহ তার জন্য বানাইছে। ভাইয়ের কথাতে কিছুটা স্বস্তি পেল রেজা আহমেদ।ডাইনিং টেবিলে বসে আসে আহমেদ মেনসন এর দুই কর্তা হাফিজুর আহমেদ ও রেজা আহমেদ। তারা মুখোমুখি বসে । ডাইনিং টেবিলটা অনেকটাই বড় ১০ জন সদস্য বসে এক সঙ্গে খেতে পারবে । এই আহমেদ মেনসন এর নিয়ম যে খাওয়ার সময় যেন সবাই এক সঙ্গে খেতে বসে ।তাই ছেলে মেয়ে উভয় এক সঙ্গে খেতে বসে।একপাশে বসেছে রেবেকা আহমেদ ও রোকসানা আহমেদ, আফরিন ও রিফাত। রেবেকা আহমেদ আফরিন কে বললো যাও রাহি আর বুশরাকে ডেকে নিয়ে আসো ।। আয়ান রাহি এর রুমে আছে। আফরিন বললো ঐ তো ভাইয়া আসছে । রাহি সিঁড়ি বেয়ে নিচে আসলো পরনে কালো টি শার্ট আর ধূসর রঙের টাওজার । চুল গুলো পরে আছে এলোমেলো হয়ে । ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা , উজ্জ্বল ফর্সা শরীর টার সঙ্গে বেশ মানিয়েছে। রাহির চোখের পাপড়ি গুলো বড় যা আরো সুন্দরর্য বারিয়ে দিয়েছে।গালে কাটা দাগটা জ্বল জ্বল করছে।রাহি আয়ান কে বসিয়ে নিজে বসে পরলো ।রাহি দেখলো বুশরা এখনো নিচে নামিনি ।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
রাহি: ছোট আম্মু বুশরা এখনো উঠে নি।
ছোট আম্মু: ও সকালে খাইতে চাইনা বলে মোটা হয়ে যাচ্ছে তাই খাইতে চাইনা।
রাহি: ওহ। কিন্তু এই ভাবে ওর শরীর দুর্বল হয়ে যাবে।।
ছোট আম্মু: কী করবো মেয়ে টাকে বলি একটু করে নিয়ম মেনে খাইতে শোনে না।
রাহি কিছু বলতে যাবে আফরিন বললো আপু চলে আসছে আর কিছু বলতে হবে রাহি তাকালো সিঁড়ি দিকে বুশরা এক পা এক পা করে নিচে নামছে তার পরনে সাদা কালারের ফুল হাতা টপস্ আর ট্রাউজার। চুল গুলো এক সাইড দিয়ে বেনুনি করা । ছোট চুল গুলো কপালে এসে পরেছে, ফর্সা মুখটাই ঘুম ঘুম ভাব দূর হয়নি এখনো,ব্রাউন রঙের চোখের মনি দুইটা জ্বল জ্বল করছে ,চোখ দুটো অনেকটা মায়াবি পাপড়ি গুলো বড় বড়,বুশরা আর রাহি দুই জনেরই জোড়া ভ্রু, বুশরার ভ্রু টা চিকন হলকা হলেও রাহির ঘন ভ্রু জোড়া। গলার লকেট টা যেন আরো বেশি সুন্দর লাগছে,, গোলাপী অধর জোড়া যেন কিছু বলতে চায়,,তা দেখে মুচকি হাসলো রাহি কিন্তু কারো চোখে পরলো না। দেখলো বুশরা এসে রাহির পাশে দাঁড়িয়ে আছে রাহি বুঝলো ব্যাপারটা তাই বললো,, চুপ করে দাঁড়িয়ে না থেকে বসে পর ,
বুশরা আয়ান কে সরতে বললে আয়ান শোনে না, আয়ান এমন ভাবে পা তুলে বসছে যে দুইটা চেয়ার নিয়ে আছে ,,
হাফিজুর রহমান বললো ,, মামনি রাহির পাশের চেয়ারে বসে পর দিখতেছো তো আয়ান কথা শুনছে না।বুশরা মাথা নাড়িয়ে বসে পড়লো কেন জানি তার বুকে চিন চিন ব্যাথা অনুভব করতে লাগলো। বুশরা বুজতে পারে না কেন এমন হয় রাহির কাছাকাছি থাকলে । বুশরা আড় চোখে রাহিকে দেখলো সে আপন মনে খেয়ে যাচ্ছে । বুশরার চোখ রাহির চোখের পাপড়িতে , কালো মনি বিশিষ্ট দুটো চোখ তার দিকে তাকিয়ে আছে ,বুশরার সে খেয়াল নেই সে তো চোখ দুটো দেখতে,,বুশরা মনে মনে বললো, মাশাআল্লাহ, ছেলেদের চোখ এতো সুন্দর হতে নেই।
রাহি দেখলো বুশরা তার দিকেই তাকিয়ে আছে রাহি ভ্রু জোড়া নাচা তেই বুশরা বিষম খেলো , রেবেকা আহমেদ বললো কি করছিস আস্তে খা ।
বুশরা বিরবির করে বললো ইস্ ঐ রাহির বাচ্চা দেখে ফেললো ।
রেজা আহমেদ বললেন “বুশরা তোমাকে আমার কিছু বলার আছে!”
বুশরা: হুম । আব্বু বলো ।
রেজা আহমেদ: কালকে আমাদের বাসা থেকে যাওয়ার পথে মাহিম দের এক্সিডেন্ট হয়েছে।আর তারা জানিয়েছেন যে এখন বিয়ে দিতে পারবে না। মাহিমকে কানাডাতে ফিরতে হবে।কানাডা থেকে অফার আসছে । বিয়ে করলে ডাক্তারি লাইসেন্স টা পাবে না তাই এখন বিয়ে করতে চায় না।
আসলে প্লানটা রাহির ছিল রাহি তৌফিককে বলে তাদের গাড়ির ব্রেক ফেল করে দিয়েছিল। ফলে তার হাত ভেঙে গেছে আর পায়েও ব্যথা পাইছে।আর তার বাবা মা এর বেশি কিছু হয় নি । আর কানাডা এর অফার টাও রাহির প্লান করা।
বুশরার এখন বিয়ে করা লাগবে না শুনে ভালো লাগলেও মনটা খারাপ হলো এই ভাবে বিয়ে টা বাদ পরে গেল।বুশরা খাওয়া ছেড়ে উঠে রুমে চলে গেল।
বুশরা চলে যাওয়ায় রাহির প্রচন্ড রাগ হলো ,মনে মনে বললো এতো সখ তুর বিয়ে করার !!!
সবাই খাওয়া শেষ করে যে যার কাজে চলে গেলো । বুশরাদের “আহমেদ ইন্ড্রাস্ট্রি ” এই নিজস্ব কম্পানিটা তার আব্বু ও বড় আব্বু চালায় ।রাহিকে আর তৌফিক কে অনেকবার দেশে এসে এই কম্পানিটা সামলানোর কথা বলেছে সে শুনে নি।
তৌফিক জোবায়েদ শুধু রাহির পার্সোনাল অ্যাসিস্টেন্ট না এই বাসার সবাই তাকে ছেলের মতো ভাবে ।বুশরা হওয়ার সময় তৌফিক এর বয়স ছিল মাত্র ছয় বছর।রাহির এক বছরের ছোট তৌফিক। তখন থেকে তৌফিক বুশরাকে বোনের মতো আর বুশরা তৌফিককে বড় ভাই এর মতো দেখতো,,আর বুশরার বড় আব্বুর বন্ধুর ছেলে হওয়ায় আর আর তৌফিক এর বাবা আহমেদ ইন্ড্রাস্ট্রি এর ম্যানেজার হওয়ার তাদের সম্পর্কো অনেক ভালো। তৌফিক বুশরাকে বনু বলেই ডাকে । বুশরার রাহির সঙ্গে কথা না হলেও তৌফিক এর সঙ্গে কথা হতো আর তৌফিক এর মাধ্যমে রাহি বুশরার খবর পেতো। বুশরা তৌফিক কে সব কিছু সেয়ার করতো। তৌফিক যখন জানতে পারে বুশরার রিলেশন এর কথা তখন রাহি কে জানায় ।আর তৌফিক বুশরাকে বলে ” রিলেশন থেকে বের হয়ে আসতে আর বুশরাও তাই করে””
তৌফিক আর রাহি আমেরিকাতে নিজের কম্পানি তৈরি করছে আর .এ কম্পানি যার একমাত্র মালিক রায়হান আহমেদ রাহি।রাহির পর যদিকেউ এই কম্পানিটার মালিক হয় সেটা হবে বুশরা আর তৌফিক।
বুশরার আম্মু একজন শিক্ষিকা তাই সে আয়ান কে তার স্কুলে দিয়ে নিজের স্কুলে যায় ।। আয়ান এর ৬ বছর চলতেছে সে এখন প্লে তে পরে ।
এদিকে রিফাত তার কোচিং প্রাইভেট নিয়ে ব্যস্ত কারণ সামনে তার SSC পরিক্ষা। আফরিন এখন অষ্টম শ্রেণীতে পরে । রিফাত আর আফরিন একসঙ্গেই যায় আবার এক সঙ্গে আসে ।একদম বিকেলে। বাসায় থেকে গেলো শুধু রোকসানা আহমেদ,বুশরা আর রাহি ।রাহি আর রোকসানা আহমেদ অনেক্ষণ ধরে গল্প করছে । রোকসানা বেগম বললো “বুশরা না খেয়ে রুমে গিয়ে দরজা দিয়েছে কী যে করছে” তুই একটু দেখ তো রাহি ।বিয়ে টা না হওয়ায় মেয়েটার অনেক কষ্ট হয়েছে মনে হয়।
রাহি বললো ” তুমি রুমে যাও আম্মু আমি দেখছি । চিন্তা করো না।
এখন দুপুর ১২ টা ,, রাহি বুশরার দরজায় নক করলো কিন্তু বুশরা খুললো না। আবার ডাকলো ” নুর দরজাটা খুল ,,আমি কিন্তু রেগে যাচ্ছি আর আমি রেগে গেলে অনেক কিছু করে ফেলতে পারি ।
বুশরা অনেকটাই অবাক হলো কারণ আজ রাহি তাকে নিজ নাম ধরে ডেকেছে কিন্তু নুর বলে যা কেউ ডাকে না। কেন এই ডাকটা এতো চেনা মনে হচ্ছে কেন মনে হচ্ছে আগেও শুনেছে সে।
বুশরা ভবনায় ছেদ পড়ল রাহি ডাকে সে দরজায় টোকা দিয়ে বললো ” নুর দরজাটা খুল নাকি …” আর কিছু বলতে না দিয়ে বুশরা দরজাটা খুলে দেয় ।রাহি রুমে ঢুকে দেখলো বুশরা জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে চুল গুলো এলোমেলো।রাহি বুশরার হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দাড় করিয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো চোখ গুলো লাল, মুখটা লাল হয়ে আছে।রাহি বুঝতে পারলো বুশরা কান্না করেছে। মূহুর্তেই রাহির চোখ মুখ রক্তিম হয়ে উঠলো ।রাহি বুশরার দিকে তাকিয়ে দেখলো বুশরা নিচের দিকে তাকিয়ে আছে । বুশরার মুখটা দু আঙুল দিয়ে জোরে শক্তি দিয়ে ধরলো ।বুশরা ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলো।
রাহি দাঁতে দাঁত পিষে বললো ” খুব সখ তাই না তোর বিয়ে করার,, নাকি তুই মাহিম কে দেখে মোহিত হয়ে গেছিস যে মৌহ থেকে বের হতে পারছিস না।।বুশরাকে উত্তর দিতে না দিয়ে রাহি বুশরাকে কাছে টেনে তার গলার মাঝ বরাবর থাকা বিউটিস্পট টাতে জোরে কামড় দিলো ,,
বুশরা ব্যথায় “আহ্” শব্দ করলো ।রাহি ছেড়ে দিতেই বুশরা রেগে গিয়ে রাহির জিম করা পেশিবহুল বাহুতে কামড় দিলো
মি.সাইকো আপনার সাহস কি করে হয় আমাকে এই ভাবে কামড় দেওয়ার,,আমি আপনাকে ভয় পাই না।আপনি যা করবেন আমি আপনাকে তাই তাই ফেরত দিব মাইন্ড ইট।
রাহি বললো ” সাইকো ,, হুম কতটা সেইটা তোকে বোঝাবো।আমার সাহসের এখোনো কিছুই দেখাইনি ,, আমি যা যা করবো তাই তাই ফেরত পাবো” ???
বুশরা বললো”হ্যাঁ ”
রাহি বুশরার কানে ফিসফিস করে বলল,,
তাহলে কিস করলে কিস ফেরত পাবো,,আদর করলে আদর ফেরত পাবো?? বলেই মুখ টিপে হাসলো রাহি।
বুশরার রাগে মাথা গজগজ করছে,,কান লাল হয়ে গেছে, লজ্জা এসে ঘিরে ধরেছে মুখটাই। কথা হারিয়ে গিয়েছে বুশরার ।
রাহি বুঝতে পারলো ব্যাপারটা তাই আর কথা না বাড়িয়ে রুম থেকে চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো কিন্তু কী জানো ভেবে বুশরার দিকে তাকিয়ে বলল,, নিজের সৌন্দর্য আমার সামনে প্রকাশ করছিস কর কিন্তু অন্য কারো কাছে প্রকাশ করার ট্রাই ও করতে যাস না।আর একটা কথা তোর আর কোথায় কোথায় বিউটি স্পট আসে একটু বলবি ,,?
বুশরার রাগে দুঃখে লজ্জায় কান্না পাচ্ছে বুশরা বললো “shameless””
রাহি বললো” হুম তোর জন্য, তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে নে , বিকেলে রেডি থাকিস একটা জায়গায় যাব । আর হ্যাঁ কথাটা না শুনলে বুঝতেই পারছিস কী করবো ।।আর তোকেও সেইটা দিতে হবে। কারণ তুই তো আবার পাওনাদারের হক মিটায়ে না দিলে ঘুমাতে পারিস না ।।
বুশরার অনেক রাগ উঠছে।সে ঠিক করলো কোথাও যাবে না আবার ভয় হতে লাগলো রাহি ভাইয়া যদি সত্যি সত্যি উল্টা পাল্টা কিছু!!না না থাক ফ্রেস হয়ে নেই ।
রাহি শুয়ে শুয়ে ভাবতে থাকে অতিত এর কথা,,রাহির তখন ৭ বছর রাহির পর কোন সন্তান যে এই বাসায় আসছে ।রাহি সবসময় তার ছোট আব্বু, আম্মু সঙ্গে থাকতো ।এমনকি ডেলিভারির সময় রাহি জেদ ধরেছিল যে সে আগে বুশরাকে কোলে নিবে এমনকি সে ডেলিভারি দেখেছিল । সবাই না করেছিল কিন্তু ওর জেদ এর কাছে হার মানতে হয়েছিল।
তখন ঐ সময়টাতে ছোট আব্বু ছোট আম্মুর পাশে থাকতে পারি নি। এমনকি আয়ান আফরিন হওয়ার সময় ও থাকতে পারি নি।আসলে ঐ সময়টাতে ছোট আব্বুর অনেক কাজের চাপ পড়ে যায় যার কারণে ছোট আব্বু থাকতে পারি নি কখনো ছোট আম্মুর পাশে । রাহি ৭ বছরের বাচ্চা ছেলেটা দেখছিল কতটা কষ্ট সহ্য করেছে তার ছোট আম্মু।বুশরা হওয়ার পর সবার আগে রাহির কোলে দেওয়া হয়েছিল। রাহি কোলে চুপ করে ছিল সেই ছোট্ট ভূমিষ্ট হওয়া শিশু টি।যেন এইটাই তার নিরাপদ আশ্রয় স্থল। তারপর অন্য কেউ কোলে নিলে সে কি কান্না করছিল বুশরা।ক্যামেরা বন্দি করা হয়েছিল ২০০৫ সালের ২০ ডিসেম্বরের সেই ছবি টা আজও তার কাছে আসে ।সেখানে রাহি বুশরাকে কোলে নিয়ে আছে আর বুশরা চুপটি করে শুয়ে আসে রাহির বুকে।বুশরাকে নিয়ে কত খেলা করছে বুশরার যখন কথা বলা শিখলো তখন লাহি ভাইয়া্ করে ডাকটো।
বুশরার যখন তিন বছর বয়স তখন রাহির দশ বছর এর কাছাকাছি বয়স ।রাহি বুশরাকে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামতে ছিল বুশরা পড়ে যেতে লাগলে রাহি বুশরাকে ধরে আটকে দেয় ,,আর রাহি পড়ে গিয়ে গালে কেটে যায় যার কারণে এখনো তার গালে কাঁটার দাগ ।বুশরা সেইদিন অনেক কান্না করেছিল লাহি ভাইয়া্ লকতো্ কী কান্না ,,বুশরার ।।রাহির যখন দশ বছর বয়স তখন মিসেস রোকসানা আহমেদ এর পেটে আসে রিফাত,,, তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ,, বিদেশে পাঠিয়ে দিবে । তাদের আহমেদ কম্পানি এর ম্যানেজার ফয়জুল ইসলাম ও মোনোয়ারা বেগম এর কাছে আর তাদের এক মাএ ছেলে তৌফিক জোবায়েদ ।তাদের কে আহমেদ কম্পানি এর তরফ থেকে আমিরিকায় পাঠানো হয়েছিল চিকিৎসা এর উদ্দেশ্যে মোনোয়ারা বেগম এর ক্যান্সার এর কারণে । আহমেদ কম্পানির বাংলাদেশর মধ্যে এক নাম্বার কম্পানি হওয়ায় শএু ।
ফয়জুল ইসলাম কে অনেক কম্পানি অনেক টাকা দিতে চেয়েছিলো শুধু আহমেদ কম্পানির ক্ষেতি করতে চেয়েছিল। কিন্তু শোনে নি ফয়জুল ইসলাম। আমিরিকায় রাহি তাদের কাছেই থাকতো রাহিকে তারা ছেলের মতোই ভালোবাসতো ।আর রাহি তৌফিককে ছোট ভাই এর মতো ভালোবাসতো।আর তৌফিক ও তাকে বড় ভাই এর মতো দেখতো।যখন তৌফিক এর ১৪ আর রাহি ১৫ বছর বয়স । তৌফিক আর রাহিকে বাসায় রেখে ফয়জুল ইসলাম ও মোনোয়ারা বেগম ডাক্তার এর কাছে সেই সময় কার এক্সিডেন্ট এ তারা মারা যায়। এক্সিডেন্ট টা করানো হয়েছিল।কে বা কারা করেছিল তা রাহি আর তৌফিক জানে।সেই তখন থেকে রাহি নিজেকে ও তৌফিককে সামলেছে অনেক কষ্ট করেছে একা একা দুই ছেলে।
আজ আমিরিকার “ম্যারিনিয়ি সিটির তে রাজত্ব এই রয়েল গ্যাংস্টার এর ” যার ভয়ে সবাই আতঙ্কে উঠে “কিন্তু সে কখোনো কোন ভালো মানুষের ক্ষতি করে নি। যারা তার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের সে সরিয়ে দিয়েছে।ম্যারিয়িনি সিটার রয়েল গ্যাংস্টার লিডার হিসেবে তাকে সবাই আ.ত.ম তাজোয়ার হিসেবে চিনে। এই তাজোয়ার সব সময় মুখোশ এর আড়ালে থাকে।কিন্তু আর .এ কম্পানি এর মালিক হিসেবে সবাই তাকে চিনে রায়হান আহমেদ রাহি হিসেবে।
এই দিকে বুশরার যখন ছয় বছর বয়স তখন আফরিন এর জন্ম হয় । তখন শএুরা বিভিন্ন ভাবে বুশরার ক্ষতি করার চেষ্টা করতে চেয়েছিল তাই রেবেকা আহমেদ ও রেজা আহমেদ তাকে তার নানি বাসায় দিনাজপুর এ রেখে আসার সিদ্ধান্ত নিলো ।। রোকসানা আহমেদ ও হাফিজুর আহমেদ এতে রাজি ছিল না কিন্তু রিফাত ও ছোট এই দিকে রোকসানা আহমেদ এর শরীরটাও ঠিক নাই তাই তারা বুশরাকে দিনাজপুর এ রেখে আসলো ।।বুশরার শৈশব টা কেটে গেল তার বাবা মা কে ছাড়াই ,,তাকে অনেক কথা শুনতে হতো এমন কি তার মামাতো বোন তাকে অনেক কথা শুনাতো ।।বুশরা সবসময় তাদের সঙ্গে থাকতো বলে।।আজ সে সব অতীত।। বুশরা দিনাজপুর এ থাকার কারণে রাহির সঙ্গেও ঠিক কথা বলে উঠা হতো না।বুশরা যখন ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী তখন সে চলে আসে নিজ বাসায়। রাহি সঙ্গে তখন আর তেমন কথা হতো না ।। কিন্তু রাহি বুশরার খবর রাখতো সবসময় তৌফিক এর মাধ্যমে । এমনকি বুশরা যখন রিলেশন ছিল সেইটাও জানতো রাহি কিন্তু ছেলেটা যে ফ্রট তাই রাহি বেশি ভাবলো না । সেই ছেলেটা বুশরার টিচার ছিল। তাই তৌফিক তাকে ভাবতে নিষেধ করছিল কারণ তৌফিক বুশরাকে বোঝালে বুশরা ঠিক বুঝবে।আজ তার বিয়ে হয়ে গেছে সেসব নিয়ে রাহি ভাবে না। কিন্তু রাহি ভাবে রাকিবুল কে নিয়ে যে এখোনো বুশরার দিকে নজর দিয়ে আছে।যাকে বলে কু দৃষ্টি। রাকিবুল এর কথা ভাবতেই মাথা রাগে গজগজ করতে লাগলো।
ফোনের কল আসতে দেখলো তৌফিক ফোন করেছে ,,
” ভাইয়া আসলে ,আমরা অনেক দিন পর দেশে আসছি তাই রাফি , মাহমুদ এরা দেখা করতে বলছে ”
তৌফিক রাহিকে ভাইয়া বলেই ডাকে শুধু কাজের সময় তাকে বস বলে ।
রাহি বলে ” তুই কি বলছিস” ??
তৌফিক: বলছি আজকে হবে না ।কালকে আড্ডা দিব বিকেলে।
রাহি : ” ওকে ।আর শোন আজকে “নুর ভিলা ” তে থাকবো । তোমার কোন প্রবলেম হবে নাতো ।
তৌফিক বললো না। ভাইয়া তুমি কী বোনুকে নিয়ে আসবা? ।শুনলাম যে আজকে নাকি মিসেস: সবিনা ইসলাম আর তার পরিবার আসবে ।
রাহি : হ্যা ওই জন্যই আমি চাই না বুশরার উপর কোন কুদৃষ্টি পরুক।,আমি ,নুর , রিফাত,আয়ান , আফরিন” নুর ভিলা” তে থাকবো ।আর আমি নুরকে নিয়ে আগে চলে যাবো।তুমি পরে ওদের কে নিয়ে এসো।
তৌফিক:ভাইয়া বুশরা যদি বলে এই বাসা টা কার?
রাহি: নুর কে আমিবোঝাই বলবো, এইটা বুশরার সপ্ন যে ওর একটা বাসা থাকবে। যেখানে ও ওর ভাই বোন বাবা মা কে নিয়ে থাকবে ।
তৌফিক ফোনটা রেখে দিল। তৌফিক মনে মনে বললো আমি চাই তুমি আর বুশরা অনেক সুখী হও ভাইয়া।তুমি আমার জন্য অনেক করেছো,,অনেক।
বিকেলে মিসেস সাবিনা ও তার ছেলে রাকিবুল ইসলামও তার ছেলের বউ আর তার মেয়ে আনিকা ইয়াসমিন এসেছে তাদের সঙ্গে বসে আছে আহমেদ বাড়ি কর্তারা ও বারির ছেলেমেয়েরা । রোকসানা ও রেবেকা আহমেদ নাস্তা বানাচ্ছেন। রাহি আগেই সবাইকে বলে দিয়েছে যে তারা ভাই বোনরা আজকে ” নুর ভিলাতে” থাকবে। হাফিজুর আহমেদ বলেছিল যে,, আজকে না গেলে হয় না।রাহি রেগে বলে উঠলো,,, তুমি কি চাইছো আব্বু আমি এই বাসায় আর না আসি । তুমি ভালো করেই জানো আমরা কেন নুর ভিলা তে থাকবো।হাফিজুর আহমেদ ছেলের কথায় দমে গেলেন।
সবাই জানে যে ওই বাসাটা তাদের ৫ ভাই-বোন ও তৌফিক এর জন্য তৈরি করেছে রাহি ।সবাই ভাবে যে বড় ভাই হিসেবে করছে। কিন্তু রাহি যে বুশরাকে এতো ভালোবাসে আর বাসাটা একান্তই বুশরার তা কেউ জানে না শুধু তৌফিক জানে।
রাহি বুশরার রুমের সামনে আসে নক করল কোন আওয়াজ না পেয়ে রুমে ঢুকে পরলো ।রাহি বুশরাকে ডাকলো “নুর।” তুই কি রেডি?
বুশরা বুঝলো না কি করবে ।।তার ইনার এর হুক টা এমন ভাবে আটকে গেছে খুলছে না।
বুশরা বললো না হইনি ।তুমি একটু আফরিন এ ডেকে দেও ।
রাহি : কেন?
বুশরা : ডাকে দিতে বলছি দেও ।
রাহি : কি হয়েছে বলবি তো ।আর এখন আফরিন আসতে পারবে না । ফুফি রা আসছে ওদের সঙ্গে গল্প করছে।
বুশরা জানতো যে তার ফুফিরা আসবে আর ঐ জঘন্য লোক রাকিবুল টাও আসবে তাই সে রাজি হয়েছে রাহি সঙ্গে যাইতে। বুশরা বললো তাহলে আম্মু না হলে বড় আম্মু কে আসতে বলো ।
রাহি : সবাই ব্যাস্ত আমাকে বল .।
বুশরা: তুমি পারবে না।
রাহি : আমি পারবো।বল আগে কী করতে হবে??
বুশরা কি বলবে বুঝতে পারলো না।এই দিকে সে ইনার এর হুক উল্টা পাল্টা করে পরায় খুলতেও পারছে না। উপায় না পেয়ে আসতে বললো ,,আসোলে আমার ইনার এর হুকটা আটকে… বলেই চুপ হয়ে গেল।
রাহি বুঝতে পারলো বুশরা এতোক্ষণ কেন এমন করছিল।
রাহি বললো দরজাটা খোল ।
বুশরা বললো কেন?
রাহি বললো খোল নাহলে বাথরুমেই থাক।
বুশরা উপায় না পেয়ে খুলে দিল আর উল্টো দিক দিয়ে ঘুরে দাড়ালো ।
রাহি দেখলো বুশরার পরনে ইনার আর প্লাজু ছাড়া আর কিছুই নেই তার শরীরে । সামনের অংশ টা টাওয়াল দিয়ে ঢেকে রাখা। বুশরার ঘাড়ে থাকা তিল টা এখনো তাকে টানছে। বুশরার উন্মুক্ত পিঠ আর বাঁকানো কোমর পিঠে পরে থাকা চুল গুলো সরাতেই রাহি দেখতে পেলো তার কোমরে থাকা ছোট লাল তিল টা ।রাহি বুঝতে পারলো আর বেশিক্ষণ অপেক্ষা এই ভাবে থাকলে কোন কিছু হয়ে যেতে পারে ।তাই তাড়াতাড়ি ইনার এর হুক টা লাগিয়ে দিতে লাগলো ।বুশরার পিঠে রাহির শক্ত হাতের ছোঁয়া লাগতেই বুশরা কেঁপে উঠলো,তার হৃদস্পন্দন বেড়ে গেল স্বাভাবিক এর তুলনায় অনেক বেশি, বুকের বা পাশে চিনচিন ব্যাথা করতে লাগলো।এই প্রথম কোন পুরুষের ছোঁয়ায় তার ভিতরে তোলপাড় সুরু করেছে।রাহি তারাতাড়ি করে রুম ত্যাগ করলো । যাওয়ার আগে বলে গেলো তাড়াতাড়ি নিচে আসতে। রাহির হাত এখনো কাঁপছে।রাহি মনে মনে বললো,,তোর শরীরে বিউটি স্পট গুলো আল্লাহ দিয়েছে মনে হয় আমাকে ধ্বংস করতে ।আর কোথায় কোথায় যে আছে ।এই ভাবে তোকে দেখলে যে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারি না।
“” তোর এক গালে টোল পড়া হাসি ,গালে কালো তিল , গোলাপী অধর, মায়াবি চোখ ব্রাউন রঙের মনি , চোখের নিচে থাকা ছোট তিলটা আমাকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট।
তারপরও তোর শরীরে থাকা বিউটি স্পট গুলো তো আমাকে আরো পাগল করে দিবে।
রাহি নিচে নেমে আসতেই দেখলো,, তৌফিক বসে আছে।
তৌফিক রাহিকে বললো ভাইয়া তুমি এখনো যাওনি।
রাহি না বললো । ছোট আম্মু আয়ান কে রেডি করে দেও ।
রেবেকা আহমেদ তাই করলো ।
রাকিবুল বললো কোথাও যাচ্ছো মনে হচ্ছে ।
রাহি বললো হ্যাঁ যাচ্ছি।
মিসেস সাবিনা বললো রাহি আমরা তোর সঙ্গে দেখা করতে আসছি আর তুই চলে যাচ্ছিস।
রাহি বললো: ফুফি আমি তো বলি নি তোমাদের দেখা করতে আসতে ।আর আমি বাংলাদেশে আসছি নিজ কাজে তোমাদের সঙ্গে দেখা করার জন্য না।
হাফিজুর রহমান বললো রাহি কেউ এই ভাবে কথা বলে।
রাহি কিছু বলতে যাবে দেখলো বুশরা নিচে নামতেছে কালো রঙের গর্জিয়াস থ্রি পিচ,ওড়না এক সাইডে দেওয়া হিজাব আর মাস্ক পরা । রুম থেকে আসার সময় রাহি একটা কাগজে লিখে দিয়ে আসছিল যে হিজাব আর মাস্ক পরতে ।বুশরাও তাই করছে। রাহি একটা মুচকি হাসি দিলো কারণ তার প্রিয়সি তার কথা শুনছে।
বুশরা নিচে নামতে লাগলো দেখতে পেলো আনিকা রাহির কাছেই যাচ্ছে।আর বলছে রাহি আমি তোমাকে অনেক মিস করছি । তোমাকে ছবিতে অনেক দেখেছি বলেই জড়িয়ে ধরতে গেলো কিন্তু রাহি সরে যাওয়ায় আনিকা পরে যেতে লাগলো।
রাহি পাত্তা দিলো না।এই দিকে রাকিবুল বললো যে রাহি এইটা তোর ভাবী ইনট্রোডিউস কর ।রাহি সলাম দিল তারপর বললো কেমন আসেন ?
ভাবী : আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি কেমন আছেন?
রাহি : ভালো। বুশরা চল দেরি হয়ে যাচ্ছে। বুশরার রাকিবুল কে দেখে রাগে গা জ্বলছে।আর আনিকা এর উপর তো আরো রাগ উঠছে ।বিরবির করে বললো আমার রাহিকে জড়িয়ে ধরার ইচ্ছা তাই না?তারপর নিজেই বললো এই সব আমি কী ভাবছি । আমি কী কোন ভাবে এই সাইকোর উপর ক্রাশ খেলাম !!না না হতে পারে না ।সাইকো একটা।
রাহি ধমক দিয়ে বলল কি রে চল নাকি এই ভাবে দাড়িয়ে থাকবি।
সাবিনা বললো রাহি যাচ্ছোই যখন তখন,,আনিকা আর রাকিবুল আর তার বউ ও যাক তোমাদের সঙ্গে।
রাহি বললো,,না আমি শুধু আমার নিজের প্রিয় মানুষদের কেই নিয়ে যাচ্ছি কোন বাইরের কাউকে না।
সাবিনা রেগে বললেন আমরা যদি বাইরের হই তাহলে তৌফিক ও তো বাইরের।
বুশরা রেগে গিয়ে বলল ” ফুফি তৌফিক ভাইয়া আমাদের নিজের ভাইয়ের মতো আর ভুলে যেওনা রাহি ভাইয়ার আমিরিকাতে তৌফিক ভাইয়া ছাড়া আর কেউ ছিল না । তৌফিক ভাইয়া আমার বড় ভাই তুমি তাকে কিছু বলার আগে ভেবে বলো।আজ রাহি ভাইয়ার যদি কেউ সবথেকে নিজের হয়ে থাকে তাহলে সেইটা আমার বড় ভাই তৌফিক জোবায়েদ।
তৌফিক বললো : বনু চুপ কর ।
রাহি : কেন চুপ করবে তৌফিক।তুই আমার ভাই আর তোর ব্যাপারে কেউ কথা বলবে আর আমি চুপ করে শুনবো কখনো না।শুনো আর একটা কথাও বলো না তুমি ফুফি তৌফিক কে নিয়ে।না হলে আমি ভুলে যাবো তুমি আমার ফুফি।
সাবিনা বললো ,,দেখছো ভাই তোমার ছেলে কেমন করে কথা বলছে।
রেবেকা: ঠিকই তো বলেছে ।তৌফিককে আমি আমার বড় ছেলে হিসেবে দেখি।এই কথাটা আপনি ভালো করেই জানেন।তাও বারবার এক কথা কেন বলেন আপা।
সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ১
রোকসানা আহমেদ:রেবা আর আমি তৌফিককে সব সময় ছেলের মতো ভাবছি তাই আর এই কথা বলবেন না।
হাফিজুর রহমান: সাবিনা এই কথা গুলো যেন আর না শুনি।
রাহি বললো বুশরা চল। তৌফিক তুই আফরিন, রিফাত আর আয়ান কে নিয়ে তারাতাড়ি আয়।
“”নুর ভিলা”” বাসার সবাই জানলেও সাবিনারা জানে না।রাহি সবাইকে নিষেধ করছে সাবিনাকে আর তার পরিবারের এমনকি বাইরের কেউ জানো না জানে ।
আফরিন আর রিফাত রেডি হয়ে আসতেই তৌফিক বের হয়ে পরলো ” আয়ান, আফরিন ও রিফাত কে নিয়ে।।””
Be happy😍