সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ৬
বুশরা আহমেদ
বুশরা আয়নাতে তাকাতেই রাহিকে দেখে চমকে উঠলো,, তার কথা বলার ভাষা হারিয়ে গেছে । সে আমতা আমতা করে বলে উঠলো,,
রাহি ভাইয়া, তুমি এখানে??
রাহি: হুম,অন্য কাউকে আশা করছিলি বুঝি?
পিছন থেকে তৌফিক এসে বললো,,
তোর কী কোন ধারণা আছে ,তোকে কত বার ফোন দিয়েছি??
বুশরা : sorry,vaiya .. আসলে আমি বুঝতে পারি নি। ফোন সাইলেন্ট করা ছিল।
তৌফিক: তুই এই বাসায় আসছিস ভালো কথা ,,তুর কী বাইরে তাকিয়ে দেখছিস সন্ধ্যা পার হয়ে রাত হতে চললো ।এইটাও কি দেখিস নি।একা একা দুইটা মেয়ে রাতে বাসায় ফিরবি । বাবা ,বড় আব্বু জানলে কি হবে?
বুশরা বাহিরে তাকিয়ে দেখলো সত্যিই তো অন্ধকার হয়ে গেছে।
বুশরা : ভাইয়া সরি !! বুঝতে পারি নি।
তৌফিক: তোর না হলে খেয়াল নাই । তোর বান্ধবী তারো কী খেয়াল নাই ??
সে তো থাকে একা একটা বাসায়। এখন যে এতো রাত হয়ে গেছে সেইটা কী তারো খেয়াল নাই ।
হিয়া : আসলে আমিও বুঝতে পারি নি।
তৌফিক: তা বুঝবে কেমন করে । তোমার মাথায় তো সেই সিক্স সেন্স নাই।
হিয়ার রাগ হতে লাগলো বললো ,,
একদম আমাকে অপমান করবেন না।
তৌফিক: অপমান কোথায় করলাম…!
রাহি: তৌফিক। তুই হিয়াকে ওর বাসায় দিয়ে আয় ।
তৌফিক: কিন্তু ভাইয়া।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
রাহি: আমি কোন কিন্তু শুনতে চাই না।
তৌফিক আর হিয়া একে অপরকে দিক তাকালো ,, তৌফিক এর চোখ স্বাভাবিক।
রাহি: কী হলো তোমরা এখনো দাঁড়িয়ে আছো কেন? আমার নুর এর সঙ্গে কথা আছে তোমারা আসতে পারো ।
তৌফিক: ওকে ভাইয়া।
তৌফিক আর হিয়া চলে গেল। রাহি বুশরার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। বুশরা রাহির দিকে তাকিয়ে কিছুটা ভয় পেল , তার ফর্সা মুখটা লাল হয়ে গেছে রাগে , চোখ দুটো রক্তিম হয়ে আছে। বুশরা একটা শুকনো ঢোক গিললো ।রাহি এক পা এক পা করে বুশরার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। বুশরা ভয়ে পিছতে যাবে রাহি বুশরার হাত ধরে কাছে টেনে। তাকে ঘুরিয়ে দিয়ে আয়নার সামনে দাড় করিয়ে তার পিছনে দাঁড়িয়ে পরলো ।
বুশরা সরতে যাবে রাহি বুশরার কাঁধ শক্ত করে চেপে ধরলো। বুশরা ব্যাথায় আহ্ করে উঠলো।
রাহি: কিসের জন্য এতো সময় ধরে এই খানে আসিছ নুর? আর তুই আসবি ভালো কথা এতো রাত করলি কেন?
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন করলো রাহি। কিন্তু সে তার সব রাগ বুশরার কাঁধ শক্ত করে চেপে মিটিয়ে দিচ্ছে।
বুশরা : আমার লাগছে রাহি ভাইয়া।
রাহি: লাগার জন্যই তো ধরেছি ।
বুশরা: তোমার কোন অধিকার নেই আমাকে এই ভাবে ছোঁয়ার ।
রাহি: আমার অধিকার এখনো তোর উপর খাটায় নি। যখন আমার সব অধিকার তোর উপর প্রয়োগ করবো তখন সামলে নিতে পারবি তো,,, নুর?
রাহির এই কথার মাঝে একটা ঘোর ছিল।বুশরার গায়ে এই কথাটা কাঁটার মতো বিঁধলো ।
রাহি: কী হলো নুর?? চুপ হয়ে গেলি কেন? কোন অধিকার তুই আমার কাছে চাস বল?
বুশরা: কোন অধিকার চাই না আমি।আর আমাকে ছোঁয়ার অধিকার কে দিয়েছে আপনাকে। আপনি জান অণিকা আপুর কাছে।
রাহির রাগ উঠে গেলে,, আমি অণিকাকে আমার বনের নজরে ছাড়া অন্য কোন নজরে দেখি না নুর।এইটা তুই ভালো করেই জানিস। By any chance তুই কি jealous??
বুশরা রাহির কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,
আমি কেন জেলাস হবো!!
রাহি: বাহ্ রে আমার মতো একটা সুদর্শন পুরুষ তোর সামনে আছে ,, অথচ অন্য কেউ এসে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে তুই জেলাস হবি না।
বুশরা: সুদর্শন না আপনি সাইকো। আর আমি জেলাস হতে যাবো কেন আপনি অণিকা আপু নাকি অন্য কোন কাউকে বিয়ে করবেন আপনার মেটার।
রাহি আবার বুশরার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে বললো ও আচ্ছা। আমি সাইকো তাই না,যদি সত্যি সত্যি সাইকো হয়ে যাই তাহলে আমাকে দেখে রাখতে পারবি তো ?
বুশরার হার্টবিট বেড়ে গেছে,রাহি বুশরার কোমর এক হাতে জরিয়ে তাকে আর একটু কাছে টেনে নিল,, এতে বুশরার প্রাণ যায় যায় অবস্থা, রাহির বলিষ্ঠ বুক বুশরার পিঠে ছুঁয়ে আছে ।
বুশরা রাহিকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না।রাহি এক হাত দিয়ে বুশরার কোমর ধরে আছে তাও বুশরা পারছে না।
রাহি : তুই বৃথা চেষ্টা করছিস । তুই শুধু দেখতেই হেলদি কিন্তু তোর কোন শক্তি নাই ।
বুশরা : কে বলেছে আমার শক্তি নাই!
রাহি : তাহলে আমাকে ছাড়িয়ে দেখা।
বুশরা শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ।
রাহি এই বার দুই হাত দিয়ে বুশরার কোমর জড়িয়ে ধরে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে বললো,
দেখলি তো পারলি না। তুই সবার সঙ্গে পারলেও আমার শক্তির সঙ্গে পারবি না নুর এইটা মেনে নিতে শিখ।
তুই আমাকে শত রাগ ,জেদ,অভিমান দেখালেও আমার কাছে আসলে তুই দুর্বল হয়ে যাস , এইটা মেনে নিতে না চাইলেও তোকে মানতে হবে নুর।তুই সবার কাছে রাগী জেদী হলেও আমার কাছে তুই দুর্বল নুর। আর” তোর এই দুর্বলতাই যে আমার শক্তি বেবিগার্ল ”
রাহির বলা বেবিগার্ল কথাটা কর্ণপাত হতেই বুশরা কেঁপে উঠলো। বুশরার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছে না।
রাহি এইবার আর কিছু না বলেই , বুশরার কাঁধে থাকা তিলটাতে আলতো করে চুমু খেয়ে।বুশরা কে ছেড়ে দিল।
রাহির অধর এর ছোঁয়াতে বুশরা হাত পা শীতল হয়ে গেলো ,সে যেন কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে।
রাহির বুশরার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো, বললো
এইটুকুতেই এই অবস্থা তাহলে যখন আরো বেশি কিছু করবো তখন কী হবে নুর?
বুশরার এইবার লজ্জায় মাটিতে ঢুকে যেতে ইচ্ছে করলো ।
রাহি: তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে নে।
বলেই রাহি চলে গেল।রাহি চলে যেতেই বুশরা দপ করে মাটিতে বসে পরলো ।
মনে মনে বিরবির করে বললো ” shameless,সাইকো একটা, যখন তখন কাছে এসে হুট হাট ছুয়ে দেয় ।এরপর একদিন আমার প্রাণ টাই না নিয়ে নেয় ।
অন্য দিকে তৌফিক হিয়া কে তার বাড়ির সামনে নেমে দিলো ,,
হিয়া: বাসায় আসেন.।
তৌফিক: অন্য এক দিন যাব ।
হিয়া: সেই দিনো ঠিক একি কথা বলেছিলেন।
তৌফিক: হুম,হয়তো। কিন্তু আজকে যাওয়াটা ঠিক হবে না।
হিয়া: আচ্ছা ঠিক আছে।
তৌফিক: কালকে বিকেলে রেডি হয়ে থাকিও ।
হিয়া: কেন?
তৌফিক: কালকে আমরা সবাই ঘুরতে যাবো । তুমিও যাবে আমাদের সঙ্গে।
হিয়া: কিন্তু আমি…
তৌফিক কিছু বলতে দিল না হিয়াকে তার আগেই বললো ,,
দুই দিন পর বনু চলে যাবে আমাদের সঙ্গে। আবার কবে দেখা হবে কেউ বলতে পারে না।তাই এই দুই দিন বনুর সঙ্গে তুমি টাইম স্পেন্ড করলে ওর ভালো লাগবে ।
হিয়া: তাহলে তো আপনিও… কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে গেল।
তৌফিক: কিছু বললে?
হিয়া : না। সাবধানে যাইয়েন । আল্লাহ হাফেজ।
তৌফিক: আল্লাহ হাফেজ।
হিয়া চলে যাচ্ছিল তৌফিক পিছন থেকে বলে উঠলো,,
হিয়া শোন!!
হিয়া: বলেন।
তৌফিক: সরি ।আসলে তখন তোমাকে ঐ ভাবে বলা ঠিক হয় নি।
হিয়া: ইটস্ ওকে। কিন্তু আপনি সরি ও বলতে পারেন।না মানে আপনি বুশরার ভাইয়া তো বুশরা তো কখনো সরি বলে না ।তাই আর কি ।
তৌফিক: মজা ভালোই করতেছো ।
এই বলে তৌফিক আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে গেল।
হিয়াও তার ভাড়া বাসায় ঢুকে পরলো।
বুশরা ফ্রেস হয়ে এসে বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে আছে ।তার পরনে ঢিলেঢালা গেঞ্জি আর প্যান্ট। এই গুলো তো সব কিছুই রাহি বুশরার জন্য কিনেছে। কিন্তু এতো কিছু কেন তার জন্য রাহি কী সত্যিই বুশরাকে ভালোবাসে। এই প্রশ্নটা বার বার মনে হয় বুশরার । বুশরা মনে মনে বললো এর উত্তর আমি আপনার কাছ থেকেই নিব মি তাজোয়ার আহমেদ রাহি।বুশরার চুল গুলো ছেড়ে দেওয়া । ঠান্ডা বাতাস এসে দোলা দিচ্ছে তার শরীরে ।
বুশরার ভালোলাগা গুলো কাজ করছে ।বুশরার খুব ইচ্ছে হলো একটা গান শোনার ।সে রাহির রুমের দিকে পা বাড়ালো ।রাহির রুমের দরজা খোলা।বুশরা ঢুকে পরলো ।রাহির এই বাসার রুমটাও সেই আহমেদ মেনসন এর মতোই একদম সারা রুম খুজে রাহি কে পেল না।
বুশরা বের হয়ে আসতে যাবে কি যেন মনে করে লাইট অন করলো । রাহির রুমটা অসম্ভব সুন্দর লাগছে ।কালো রঙের কম্বিনেশন অন্ধকারে যতটা ভয়ংকর লাগে।লাইট এর আলোতে ঠিক ততটাই সুন্দর লাগে। বুশরা খেয়াল করলো সামনের দেয়ালে কালো রঙের পর্দা দিয়ে রাখা। বুশরা পর্দাটা সরাতে যাবে ঠিক তখনি পিছন থেকে তৌফিক ডেকে উঠল,,
” বনু এখানে কি করছিস?”
বুশরা: ভাইয়া তুমি কখন এলে? আমি তো রাহি ভাইয়াকে ডাকতে এসেছিলাম কিন্তু ভাইয়া রুমে নেই ।
তৌফিক: ভাইয়া মনে হয় ছাদে , ওখানে গিয়ে দেখ ।
বুশরা: ভাইয়া এই পর্দাটার পিছনে কী আছে ?
তৌফিক: সেটা তোকে জানতে হবে না। ভাইয়ার রুমে এসে এই ভাবে কোন জিনিস দেখা ঠিক না বনু। তুই যা ছাদে ভাইয়া আছে ।
বুশরা : কিন্তু ভাইয়া..
তৌফিক: কোন কিন্তু নয় সময় হলে তুই সব জানতে পারবি। এখন যা।
বুশরা চলে গেল। তৌফিক বুশরার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বললো,
এতো সব কিছু তো তোর জন্যই বনু। শুধু একটু ধৈর্য ধর।
বুশরা ছাদের দরজায় এসে দেখলো রাহি একটা চেয়ার এ বসে গিটার এ টুংটাং শব্দ করছে ।
রাহি পিছন থেকে বলো উঠলো,,
নুর এখানে কেন তুই??
বুশরা চমকে উঠলো রাহি তো তার উল্টো দিকে ফিরে আছে তাহলে বুঝলো কি করে!!
বুশরা : আপনি বুঝলেন কী করে?
রাহি: সিক্সসেন্স। মনে মনে বললো
” যেখানে হাজার হাজার মাইল দূরে থেকেও তোর অস্তিত্ব আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাইতো , সেখানে এতো কাছে থাকেও কী তোর অস্তিত্ব আমি বুঝতে পারবো না সেটা কী করে সম্ভব।”
বুশরা গিয়ে দোলনায় বসলো ।আজকে আকাশ টা মেঘলা । হিমেল হাওয়া বইছে চারিদিকে। বুশরা গা এলিয়ে দিয়ে দোলনায় দোল খাচ্ছে। বাতাসে বুশরার চুল গুলো উড়ে এসে মুখে পড়ছে ।
রাহি উল্টো দিকে ফিরেই বুশরাকে বললো ” নুর!!”
বুশরা: হুমম্
রাহি বুশরার দিকে এক পলক তাকিয়ে আবার উল্টো দিকে ফিরে বললো ,,
” কী ঠিক করলি যাবি নাকী যাবি না আমিরিকাতে ?
বুশরা:যাবো । এখানে থেকে কী করবো এখানে তো কেউ আমাকে কখনো বুঝার চেষ্টা করে নি। আর আমি তো সব সময় চাইছি দেশের বাইরে যাইতে।তাই যেতে তো হবেই।আর ভাইয়াও বলে দিয়েছে আমাকে নিয়ে যাবে।তাই না করার কোন কারণ নেই।
রাহি: তুই যাইতে না চাইলেও যেতে হতো।
বুশরা কিছু বললো না বুশরা নিশ্চুপ।
কিছু ক্ষণ পর বুশরা বললো,,
রাহি ভাইয়া!!
রাহি: হুমম্
বুশরা : একটা গান শোনাবেন প্লিজ।
রাহি বুশরার দিকে তাকিয়ে বললো ” ওকে , ম্যাম”।
রাহি বুশরার পাশে গিয়ে বসলো বুশরাকে নিজের কাছে টেনে তাকে নিলো । রাহি বলিষ্ঠ বুক বুশরার পিঠ বরাবর ,রাহি বুশরা দুই হাতে তার হাত রাখলো ,এক হাত দিয়ে দিয়ে গিটার টা নিয়ে টুংটাং শব্দ করতে লাগলো। বুশরার হাত রাহির হাতে ।
চারিদিকে বাতাস বইছে, আকাশ কালো হয়ে এসেছে মনে হচ্ছে বৃষ্টি আসবে ।
রাহির এতোটা কাছে আসাতে বুশরার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।তার হার্টবিট বেড়ে দ্রুত চলছে । এই দিকে মেঘ এর গর্জনে বুশরা চমকে উঠলো।রাহি বুশরাকে আরো কাছে টেনে গিটারে হাত দিয়ে টুংটাং শব্দ করতে লাগলো।
বুশরা : রাহি ভাইয়া মনে হচ্ছে বৃষ্টি আসবে,চলেন নিচে যাই ।
রাহি কোন কথা বললো না,,
এই দিকে জোরে বৃষ্টি এসে গেছে ,রাহির কাছ থেকে বুশরা নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করেও পারছে না,
রাহি বুশরার হাতে হাত রেখে গিটারে টুংটাং শব্দ করে গাইতে শুরু করলো,
Hum Tere bin ab rehe nehi Sakte,
Tere bina Kay wajood Mera 🎸🎵
রাহির গানের আওয়াজ কানে আসতে বুশরার সারা শরীর শীতল হয়ে গেলো,
বৃষ্টিতে ভিজে একাকার হয়ে গেছে দুইজনে কিন্তু রাহি এক বুশরাকে সেই এক রকম ভাবেই জড়িয়ে বুশরার হাতে হাত রেখে গিটার বাজিয়ে গান গাইতে লাগলো,
Hum tere bin ab rehe nehi Sakte,,
Tere bina Kay wajood Mera 🎵
Tujhse juda agar ho jayenge
Toh khudse hi ho jayenge juda,,
Kyunki ki tum hi ho ,,
Ab Tum hi ho ,,🎵🎸
Zindagi ab tum hi ho,
Chain bhi mera dard bhi ,,
Meri aashiqui ab tum hi ho
🎸🎸🎵🎵
রাহির গানের আওয়াজ,আর রাহির এতো টা কাছে থাকাই বুশরার শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে বার বার । বুশরা ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও রাহি ছাড়ছে না।
রাহি বুশরার ঘাড়ে তার থুতনি টা রেখে আবার গাইতে শুরু করলো,,
Tera mera rishta hai kaisa ,,
Ek pal door gavara nehi,,
Tere liye har roz hai jeete,,,
Tojko diya mera waqt sabhi ,,
Koi lamha mera na ho tere bina ,
Har saans pe naam tera,,
Kyunki tum hi ho ,,
Ab Tum hi ho,,
Zindagi ab tum hi ho ,
Chain bhi mera dard bhi,
Mere aashiqui ab tum hi ho
🎵🎵🎵🎵
তৌফিক বুশরা আর রাহিকে ছাদে ডাকতে এসে দেখে বুশরা আর রাহি ভিজে একাকার, তৌফিক তাদের ডাকলো না । তাদের এইটা স্পেশাল মুহূর্ত । তৌফিক ও চায় তার বনু যেন ভালো থাকে ।আর রাহির সঙ্গে যেন ভালো থাকে । তৌফিক জানে রাহি মতো করে বুশরাকে কেউ ভালোবেসতে পারবে না। রাহি আজ এতো কিছু করছে শুধু তার বনুর জন্য। তৌফিক চলে গেল।
বুশরা নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করছে ,রাহি এই বার নিজে থেকেই ছেড়ে দিলো।বুশরা গিয়ে ছাদের গ্ৰিল ঘেসে দাড়ালো । বৃষ্টির পানিতে ভিজে একাকার দুজনেই ,
রাহি বুশরার কাছে গিয়ে তার কোমর ধরে নিজের দিকে নিয়ে, আবার গাইতে লাগলো,, রাহির চোখে এক অদ্ভুত নেশা এই নেশা বুশরাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে,বুশরা নিজে চেয়েও যে আর পারছে না রাহিকে দুরে সরাতে ,,
Tere liye hi jiya main,,
Khudko jo yon de diya hai ,,
Teri wafa ne mujko sambhala,,
Saare ghaman ko dil se nikala ,,
Tere shaat mera he naseeb juda,,
Tuje paake adhura na raha,,
গানের সঙ্গে সঙ্গে বুশরাকে নিয়ে slow motion a dance করছে রাহি,,
বুশরাকে ঘুরিয়ে পিছন দিক দিয়ে জরিয়ে ,
Kyunki tum hi ho,
Ab Tum hi ho, 🎵
Zindagi ab tum hi ho ,
Chain bhi mera dard bhi,
Mere aashiqui ab tum hi ho 🎵🎵
রাহি বুশরাকে পিছন দিক দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে আছে ,, দুইজনেই নিশ্চুপ।রাহি বুশরাকে হালকা করে ধরতেই বুশরা নিজেকে এক দৌড়ে নিচে এসে রুমে এসে বাথরুমে এসে সাওয়ার অন করে তার নিচে বসে পরলো।
বুশরার লজ্জায় মুখ লাল হয়ে গেছে,ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছে । মনে মনে বললো ” এই সাইকো টা আমাকে মারা প্লান করছে ,আর একটু হলেই দম বন্ধ হয়ে যেত । আমি আমার উত্তর পেয়ে গেছি মি তাজোয়ার আহমেদ রাহি।আপনি আমাকে ভালোবাসেন। কিন্তু আমি আপনাকে বুঝতে দিব না আমিও আপনাকে ভালোবাসি ” ।
এই দিকে রাহি হাঁচি দিতে দিতে অবস্থা খারাপ করে ফেলেছে ।রাহির ঠান্ডা লেগে গেছে।
রাহি: আমার জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আয় ।
তৌফিক: পারবো না । বৃষ্টিতে ভিজে বনুর সঙ্গে রোমান্স করার সময় মনে ছিল না ঠান্ডা লেগে যাবে ।
রাহি: রোমান্স আর কোথায় করতে পারলাম রে । তোর বনু তো সেইটাও করতে দিলো না। তার আগেই চলে আসলো ।আমি তো ভাবছিলাম বিয়ের আগেই,,,
তৌফিক: ছিহ্ ভাইয়া। আমি তোমার সমন্ধি হই ।আমাকে এই গুলো বলতে লজ্জা করলো না।
রাহি: তুই যখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তোর বনু আর আমাকে দেখছিলিস তোর লজ্জা করলো না।
তৌফিক: আমি চলে এসেছিলাম। আমি চাইলে বাঁধা দিতে পারতাম কিন্তু না আমি চলে এসেছিলাম।
রাহি: এখন এক কাফ কফি নিয়ে আয় ।
তৌফিক: হাকিম চাচ্চূ চলে গেছেন। বৃষ্টির জন্য।ডিনার ও রেডি করে নি । আর আমি তো কফি বানাইতে পারি না। তুমি বনু কে গিয়ে বলো ।
রাহি: তোর বনু আমার সঙ্গে কথা বলবে কি না সেইটাই জানি না। আমি তো নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে ওই ভাবে নুর কে জড়িয়ে ধরেছিলাম।এখন সে যদি অভিমান করে তার অভিমান ভাঙ্গাতে আমার বারোটা বেজে যাবে।
তৌফিক কিছু বলবে তার আগেই বুশরা এসে দরজায় নক করে বললো,,আসবো?
তৌফিক: হ্যাঁ আয়।
তোমাদের জন্য কফি।
তৌফিক আর রাহি একে অপরকে দিক তাকালো একবার।তারপর বুশরার দিকে তাকিয়ে বললো,
রাহি: Thanks..
বুশরা কোন উত্তর দিলো না।
ডিনার রেডি হয়ে গেছে ভাইয়া এসো খেয়ে নেও ।
তৌফিক আর রাহি হ্যাঁ সূচক জবাব দিলো।
রাহি বললো , কী ব্যাপার রে তৌফিক তোর বনু আজকে
রাগ করলো না কেন?
সে আমার হৃদয় হরণী পর্ব ৫
তৌফিক: কেন তুমি কী চাচ্ছো বনু রাগে যাক?
রাহি: না , তোর বনুর যে রাগ ,এই রাগ তার রাগ ভাঙ্গাতেই
আমার জিবন শেষ।
তৌফিক: রয়েল গ্যাংস্টার লিডার এর এ কী অবস্থা। বলেই
মুখ টিপে হাসতে লাগলো তৌফিক।