হাতটা রেখো বাড়িয়ে পর্ব ৩৩

হাতটা রেখো বাড়িয়ে পর্ব ৩৩
Writer: ইশরাত জাহান সুপ্তি

আরেকটু খোঁজাখুঁজির পর শুদ্ধ শঙ্কিত মনে বাসায় ফিরে এলো। তার মাথা ভীষণ ঘামছে৷ কি করবে বুঝতে পারছে না। দরজা খোলাই ছিল। অবিশ্রান্ত শরীর নিয়ে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকতেই দেখলো সোফায় বসে টিভিতে একটা কমেডি শো দেখে হেসে কুটিকুটি হচ্ছে ধারা। শুদ্ধ’র শিরদাঁড়া বেঁয়ে একটা স্বস্তির অনুভুতি বয়ে গেলো। পরক্ষনেই তার প্রচন্ড রাগ হলো৷ সে শক্ত মুখ করে ধারার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে বলল,
‘ধারা, ভেতরে আসো।’
শুদ্ধ’র আওয়াজ পেয়ে পাশে ঘুরে ধারা কিছু বলার আগেই শুদ্ধ গটগট করে নিজের রুমে চলে গেলো। পেছন পেছন গেলো ধারাও। ধারা রুমে ঢুকতেই শুদ্ধ দরজা ভিজিয়ে দিয়ে থম ধরা গলায় ধারাকে প্রশ্ন করলো,
‘তুমি বাসায় আসছো কখন?’
ধারা স্মিত হেসে বলল, ‘সন্ধ্যার একটু পরেই। অনেকক্ষণ হয়েছে।’
শুদ্ধ গলার আওয়াজ বাড়িয়ে বলল,

‘তোমাকে যে আমি বলছিলাম আমি তোমাকে নিতে আসবো সেটা কি তোমার মনে ছিল না?’
ধারা নরম গলায় বলল, ‘তোমার আসতে দেরি হচ্ছিল। তাই আমি ভাবলাম তুমি আর আসবে না। এদিকে সন্ধ্যা হয়ে আসছিল আর কতগুলো মেয়েও আমাদের এখানের ছিল। তাই তাদের সাথে আমিও চলে এসেছি।’
‘মাত্র ত্রিশ মিনিটের মতো কি দেরি হলো আর তুমি নিজে নিজে ভেবে নিলে আমি আসবো না! তুমি জানো তোমার কলেজে গিয়ে আজ দুই ঘন্টা যাবৎ আমি কিভাবে খুঁজেছি! আমার কতো টেনশন হচ্ছিল!’
‘শুদ্ধ, আমি ইচ্ছে করে তো আর কিছু করিনি। পরিস্থিতিতে এমন হয়ে গেছে। আর…..
ধারার কথায় শুদ্ধ বাঁধা দিয়ে বলল,
‘কথার মাঝে কথা বলবে না। আগে আমার কথা শেষ করতে দাও।’
‘কথা না বললে আমি নিজেরটা এক্সপ্লেইন করবো কিভাবে?’
শুদ্ধ খুব চেচাঁমেচি করতে লাগলো। ধারা বিরক্ত হয়ে বলল, ‘শুদ্ধ আস্তে কথা বলো৷ মা শুনবে।’
শুদ্ধ নিজের মতো করেই বলে যেতে লাগলো,
‘তুমি আমার জন্য দাঁড়ালে না কেন?’

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

‘বললাম না, আমি ভেবেছিলাম তুমি আসবে না। আজকাল তো আবার তুমি খুব বেশি ব্যস্ত থাকো। তোমার কোন সময়ই হয় না।’
‘হ্যাঁ থাকি ব্যস্ত। কাজের জন্যই থাকি। অকাজে তো আর থাকি না। তাই বলে কি কখনো এমন হয়েছে তোমার কাছে আসার কথা বলেছি কিন্তু আসিনি? শুধু শুধু তো একটা পিন্চ মারা কথা বলে দিলে। আমি যে আজকে দু ঘন্টা যাবৎ কিরকম অবস্থায় পড়েছিলাম সেটা তো আর তুমি বুঝবে না।’
‘তুমি কিন্তু এখন ওভাররিয়্যাক্ট করছো!’
‘আমি ওভাররিয়্যাক্ট করছি! আর তুমি কি করেছো? বাসায় যখন একা একাই আসছিলে আমাকে ফোন করে তা জানালে না কেন?’
ধারা মুখ ভার করে বলল,
‘আমি ফোন নিয়ে যাইনি।’
‘বাহ! ফোন নিয়ে যাওনি! তাহলে ফোনটা সাথে রাখো কেন? যখন দরকারে পাওয়াই যাবে না। আমি কতবার কল করছি জানো? ফোন নাও তো নাওনি আবার বন্ধ করেও রেখে গেছো।’
‘চালু করে রাখলেও আর কি হতো? চুমকি গেছে বেড়াতে। মা স্মার্ট ফোন রিসিভ করতে পারে না। বাজলে শুধু শুধু অস্থির হতো। তাই বন্ধ করে রেখেছিলাম।’

‘তাহলে বাসায় আসার পর ফোন অন করে জানালে না কেন?
‘তোমাকে কল করিনি? একশোবার কল করে ফেলেছি। তোমার নিজের ফোনই তো বন্ধ।’
শুদ্ধ জোর গলায় বলল, ‘অসম্ভব। আমার ফোন আমি সবসময় অন রাখি। তোমার মতো অফ করে রেখে মানুষকে টেনশনে ফেলি না। এখনও অন ই আছে।’
এই বলে ধারাকে দেখানোর জন্য শুদ্ধ পকেট থেকে ফোন বের করে দেখলো ফোন সত্যিই বন্ধ। চার্জ শেষ হয়ে কখন যেন বন্ধ হয়ে গেছে। শুদ্ধ টেনশনের মধ্যে আর খেয়াল করেনি। ধারার কথাই সত্যি দেখে শুদ্ধ খানিক মিইয়ে গেলো। ধারা সেদিকে তাকিয়ে হাসার মতো ভঙ্গি করে বলল, ‘খুব তো চেঁচাচ্ছিলে! এখন দোষটা কার। শুধু কি আমারই? এবার বুঝলে দোষটা কার!’
শুদ্ধ খানিক ইতস্তত করে দূর্বল না হয়ে বলল, ‘এখন এতটুকুতেই আমার দোষ হয়ে গেলো? দোষটা তোমার।’
ধারাও পুরো ক্ষেপে গিয়ে বলতে লাগলো,

‘তোমার দোষ।’
‘না তোমার দোষ।’
‘তোমার দোষ।’
শুদ্ধ বলল, ‘এখন তো স্বীকার করবেই না। আমার আজকে কি অবস্থা হয়েছিল তা আমিই জানি। আমার জায়গায় তুমি থাকলে না সেখানেই অজ্ঞান হয়ে থাকতে।’
‘আমার অজ্ঞান হওয়া নিয়ে আর কিছু বলবে না।’
‘আমি তো বলবোই।’
ধারা আরো কাছে এগিয়ে বলল, ‘ভালো হবে না বলে দিচ্ছি! আর একবার বললে কিন্তু আমি তোমাকে…..
শুদ্ধ এক পা এক পা করে এগিয়ে এগিয়ে ধারাকে পেছনে নিতে নিতে বলল, ‘কি করবে? বলো কি করবো?’
ধারা বলার মতো কিছু খুঁজে পেলো না। আমতা আমতা করতে লাগলো। শুদ্ধ’র মুখে বিজয়ের হাসি ফুটতে শুরু করলো। ধারা হাত মুষ্টিবদ্ধ করে জোরে শ্বাস টেনে বলল,
‘তোমার সাথে কথা বলার কোন মানে হয় না।’
‘ওকে, আমার সাথে আর কথা বলবা না?’
‘আচ্ছা, মনে থাকে যেন।’
এই বলে ধারা পেছনে মুখ ঘুরে দাঁড়ালো। শুদ্ধও নিজের মুখ ঘুরিয়ে নিলো।

রাতের বেলা খাবার সময় হলে সবাই ডাইনিং টেবিলে বসলো। সবাই বলতে শুদ্ধ, ধারা আর খোদেজা। শুদ্ধ আর ধারা আজ পাশাপাশি বসেনি। বসেছে একে অপরের বিপরীত প্রান্তে। মুখোমুখি। দুজনের কারো মুখেই কোন কথা নেই। দুজনেই রাগে গজ গজ করছে। খোদেজা চুপচাপ খেতে লাগলো। খেয়াল করলো খাবারের সময়ে আজ পরিবেশটা অন্য দিনের তুলনায় একদম শব্দশুন্য। কারো মুখেই কোন কথা নেই। নয়তো অন্য দিন তো দুজনে কতো হাসি মজা করে। আজ পুরো ভিন্ন। খাবারেও দুজনের মন নেই। একটু খাচ্ছে আবার শুধু নাড়াচাড়া করছে আর একটু পর পর শুধু একে অপরের দিকে রাগী চোখে তাকাচ্ছে। মূল ধ্যান মূলত তাদের সেখানেই। খোদেজা বুঝতে পারলো কিছু একটা হয়েছে। তাই সেও আর কোন কথা না বলে চুপচাপ নিজের খাবার খেয়ে প্লেট রান্নাঘরে নিয়ে রাখতে গেলো। খোদেজা যাবার পর শুদ্ধ পানি ঢালার জন্য জগ কাত করতেই বেখেয়াল বশত পানি ছিটকে পড়লো তার কোলে। শুদ্ধ থতমত খেয়ে উঠলো। ধারা নিজের খাবারের দিকে তাকিয়ে ইচ্ছে করে হেসে উঠলো। শুদ্ধ থম মেরে বলল,

‘তুমি হাসলে কেন?’
ধারা শুদ্ধ’র দিকে তাকিয়ে ভাব নিয়ে বলল,
‘আমার মুখ, আমার হাসি, আমার ইচ্ছা।’
এই বলে আরও শব্দ করে হাসতে লাগলো ধারা।
শুদ্ধ দাঁত কিড়মিড় করতে লাগলো। কিছু খাবার প্রায় শেষের দিকে। একটি বাটিতে এক পিছ বেগুন ভাজা অবশিষ্ট ছিল। ধারা নেওয়ার জন্য হাত বাড়ালো। অনভ্যাস বশত শুদ্ধও সেদিকে হাত বাড়িয়ে ফেললো। দুজনের হাত একসাথেই পড়লো বাটিতে। শুদ্ধ বলল,
‘আমি আগে হাত দিয়েছি। তুমি বাড়ালে কেন? বেগুন ভাজা আমি নেবো।’
‘ইশ! বললেই হলো! আমি আগে হাত দিয়েছি। তাই আমি নেবো।’
ধারা নিজের দিকে বাটি টেনে নিলো। শুদ্ধও আবার বাটি নিজের দিকে টেনে নিয়ে বলল,
‘আগে হাত আমার গেছে। বাটি ছিল মাঝখানে। তোমার হাতের চাইতে আমার হাত লম্বা। দুজনে যদি একসাথেও বাড়িয়ে থাকি লজিক্যালি আমার হাতই আগে যাবে। অতএব বেগুন ভাজা আমার।’

‘তুমি না বেগুন খাও না! বেগুন খেলে তোমার শরীরে চুলকানি হয়।’
সত্যি বলতে শুদ্ধ ভুলেই গিয়েছিল যে তার বেগুন খেলে চুলকায়। ধারার কথায় খেয়াল হলো। কিন্তু এখন এতদূর এসে হেরে যাওয়াও তো যায় না। তাই নিজের গাঁট বজায় রেখে বলল,
‘আমার শরীর নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবে না। আমারটা আমি বুঝবো। এমনিতেও চোখের সামনে কতো চুলকানি সহ্য করি। বেগুনের চুলকানিতে আর কি!’
শুদ্ধ যে কথাটা ধারাকে মিন করে বলেছে তা অনুধাবন করতে পেরে ধারার মুখ হা হয়ে গেলো। সে বিস্ফোরিত মুখে বলল,
‘আমি চুলকানি!’
শুদ্ধ বাঁকা হেসে বলল, ‘যাক! তোমার বোঝার লেভেলটা অন্তত ভালো।’
ধারা রান্নাঘরের দিকে মুখ করে বিচার দেওয়ার ভঙ্গিতে কাঁদো কাঁদো মুখ করে জোরে ডেকে উঠলো,
‘মা!’
শুদ্ধ বলে উঠলো, ‘হ্যাঁ! কিছু হলে তো শুধু এটাই পারো। ম্যাঁ!’
শুদ্ধ ধারার মতো করে মুখ ভেঙিয়ে ডেকে দেখালো। ধারা রাগে গজগজ করতে করতে বলল, ‘এমন করছো না! এখন এই বেগুন আমিই খাবো।’

ধারা বাটি টেনে ধরলো। শুদ্ধও বাটি টেনে ধরে বলল, ‘কোনদিনও না। আমি খাবো।’
দুজনে বাটি ধরে টানাটানি করে চেঁচাতে লাগলো। খোদেজা তখন ওদের মাঝখান থেকে বাটিটা উঠিয়ে নিয়ে বলল,
‘কি শুরু করলি তোরা? কতক্ষণ ধইরা সহ্য করতাছি। একটু প্লেট ধুইতে রান্নাঘরে গিয়া আর টিকতে পারলাম না। তোদের দুজনের কারোরই খাওয়া লাগবো না। এই বেগুন ভাজা আমিই নিয়ে গেলাম।’
খোদেজা বেগুন নিয়ে গেলে দুজনেই হা করে সেদিকে তাকিয়ে রইলো। তারপর আবার একে অপরের দিকে চোখ পড়তেই দুজনের দৃষ্টি তীক্ষ্ণ হয়ে উঠলো।
ধীরে ধীরে ঘড়ির কাটা এগোতে লাগলো। রাত হলো গভীর। নিঝুম। নিস্তব্ধ। সবাই ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলো। ধারা আর শুদ্ধ ঘুমানোর জন্য বিছানায় উঠে দুজনে দুজনকে দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিয়ে চাদর টেনে বিছানার দু প্রান্তে শুয়ে রইলো। কেউ কারো দিকে ফিরেও তাকালো না। তারপর শুরু হলো তাদের চাদর নিয়ে টানাটানি। ধারা এই নিজের দিকে চাদর টেনে নেয়। আবার শুদ্ধও ছাড়ে না। শক্ত করে ধরে রাখে। দুজনে দাঁত খিচে চাদর নিয়ে যুদ্ধ শুরু করলো। কেউ কারো থেকে কম না। একসময় শুদ্ধ জোরে চাদর নিয়ে টান দিতেই ধারার হাত হঠাৎ আলগা হয়ে গেলো। ফলস্বরূপ আচমকা চাদর নিয়ে বিছানা ছেড়ে নিচে পড়ে গেলো শুদ্ধ। ধারা উঠে বসলো। শুদ্ধ নিজেকে ধাতস্থ করে মেঝে থেকে উঠে এলোমেলো চুলগুলো ঠিক করে বলল,

‘এটা কি হলো?’
‘কি হলো?’
‘তুমি ভালো মতো শোও না কেন? শুধু নড়াচড়া করো।’
‘আমি নড়াচড়া করি? নড়াচড়া করার মতো জায়গাটা কোথায়? এমনিতেও তো জায়গা পাই না। এতো বড় খাট তবুও সব জায়গা তো তুমিই দখল করে রাখো। এই যে এই এতটুকু জায়গার মধ্যে আমাকে শুতে হয়।’
‘আচ্ছা! আর ঘুমানোর পর যে তুমি আমার উপর ঠ্যাং তুলে রাখো তার বেলা?’
‘আর তুমি যে শুধু নাক ডাকো তার বেলা?’
শুদ্ধ বিছানায় উঠে তেড়ে এসে বলল,
‘একদম মিথ্যা কথা বলবে না।’
ধারাও পুরো তেজের সাথে বলে,
‘মিথ্যা হলে হোক, আমি তো একশোবার বলবো।’
‘তাহলে আমিও বানিয়ে বলবো তুমি ঘুমের মধ্যে মুখের লালা দিয়ে বিছানা ভাসিয়ে ফেলো। ছি! ছি! মানুষ শুনলে কি বলবে!’
ধারা রাগে দুঃখে জ্বলে উঠে বলল, ‘ভালো হবে না কিন্তু!’

হাতটা রেখো বাড়িয়ে পর্ব ৩২

‘অবশ্যই ভালো হবে।’
ওদের কথা কাটাকাটির মাঝে হঠাৎ খোদেজা রুমের দরজা খুলে চেঁচিয়ে উঠে বলল,
‘আহ! থামবি তোরা! তোদের চেঁচামেচিতে ঘরে থাকা যাইতাছে না। ঘুমাবো কেমনে?’
খোদেজার ধমকে দুজনেই পুরো ভেজা বিড়ালের মতো চুপসে রইলো। চেহারায় নির্দোষ নির্দোষ ভাব ফুটিয়ে রইলো তারা। শুদ্ধ বলল,
‘সরি আম্মা। ধারা এতো জোরে জোরে কথা বলছিল যে যার কারণে তোমার এমন লেগেছে। আর হবে না।’
ধারা মুখ হা করে শুদ্ধ’র দিকে তাকিয়ে আবার খোদেজাকে বলল, ‘হ্যাঁ মা, আর হবে না। শুদ্ধকে আমি বুঝিয়ে দেবো। শুধু শুধু সে চেঁচামেচি করে আপনার ঘুম ভাঙিয়ে দিলো।’
শুদ্ধ বলল, ‘আমি চেঁচামেচি করেছি নাকি তুমি করেছো?’
‘জ্বি না। তুমি করেছো।’
‘না তুমি করেছো।’
খোদেজা আবারও মাথায় দু পাশে হাত উঠিয়ে চেঁচিয়ে উঠে বলল,

‘চুপ! আর একটা কথাও কেউ বলবি না। নয়তো এখন আমার থেকে খারাপ কেউ হইবো না। তোদের দুইজনের আজকে হইছে কি বলতো? তোদের একসাথেই রাখা যাইবো না। তাইলে তোরা নিজেদের ঘুম তো বাদ আর আমারেও ঘুমাতে দিবি না। হ্যাঁ রে মাহতাব, আজকে তোরও কি হইছে বলতো? তুইও কি পোলাপান হইয়া গেলি। আমি বউরে নিয়া যাইতাছি। এখন থিকা বউ আমার কাছেই ঘুমাবো। একসাথে হইলেই তোগো খালি ঝগড়া আর ঝগড়া। এখন আলাদা থাইকা শান্তিতে থাক।’

খোদেজার কথা শুনে ওদের দুজনেরই মুখের হাওয়া বেড়িয়ে গেলো। দুজনে কিছু বুঝে উঠার আগেই খোদেজা ধারার হাত ধরে নিজের সাথে নিয়ে গেলো। ধারাকে নিয়ে গেলে শুদ্ধ একটু উপরে উপরে ভালো থাকার ভাব ধরে বিছানায় চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো। তারপর বারবারই শুধু নড়াচড়া করতে লাগলো সে। উঠে বসলো। পানি খেলো। তারপর আবার শুয়ে পড়লো। একশোবার এপাশ ওপাশ করেও আর ঘুম আসলো না। বারবার শুধু চোখ যেতে লাগলো দরজার বাইরে, খোদেজার রুমের দিকে।

হাতটা রেখো বাড়িয়ে পর্ব ৩৪