হামিংবার্ড পর্ব ২১

হামিংবার্ড পর্ব ২১
তাসমিয়া তাসনিন প্রিয়া

ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিল এতক্ষণ । সকালটা আজ শুরু হয়েছিল বৃষ্টি দিয়ে। রাস্তায় জমে থাকা জল, ফুটপাথ দিয়ে ছোট ছোট ছাপ রেখে চলে যাচ্ছিল। শহরের কোলাহল তখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি, কিন্তু বাতাসে মিষ্টি আর্দ্রতা মেশানো ছিল। বৃষ্টির ছোট ফোঁটাগুলি শহরের রাস্তায় অদ্ভুত স্নিগ্ধতা তৈরি করেছিল । কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই বৃষ্টি কমে গিয়ে রোদের দেখা মিলেছে। মিষ্টি রোদ ছুঁয়ে যাচ্ছে গোটা শহরটাকে।
ঘুমঘুম চোখে আশেপাশে তাকাচ্ছে অরা৷ কীসের আওয়াজে ঘুম ঘুমের বারোটা বেজে গেলো সেটাই বুঝতে চেষ্টা করছে সে। আরিশ এখনো জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কপালে কুঁচকে তাকিয়ে আছে জানালার পর্দার দিকে। অরা ধীরে ধীরে শোয়া থেকে উঠে বসল। আরিশ এখনও খেয়াল করেনি অরাকে, তবে অরা আরিশের মনোভাব বোঝার চেষ্টায় আছে। লোকটা সকাল সকাল ওখানে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কেন? তারমধ্য ঘরটাও কেমন অন্ধকার লাগছে! জানালাগুলো বন্ধ কেন ভাবতে ভাবতে বিছানা ছাড়ল অরা।

” গুড মর্নিং, হামিংবার্ড। ”
মুচকি হেসে বলল আরিশ। অরা খোলা চুলগুলো হাতের সাহায্যে খোঁপা করতে করতে সামনে এগোচ্ছে। পরনে তার সাদা রঙের কামিজ, সাথে মাল্টিকালারের প্লাজু।
” গুড মর্নিং। এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো? আর জানালাগুলোই বা বন্ধ কেনো? ”
আরিশ অরার দিকে তাকিয়ে রইলো কয়েক সেকেন্ড। অরার কথা বলা, চুল খোঁপা করার মুহুর্ত সবকিছু কেমন স্লো মোশনে দেখছে সে৷ মনে হচ্ছে অরা অনন্তকাল ধরে কথা বলতে থাকুক, আর আরিশ ভালো শ্রোতার মতো সবকিছু মনোযোগ দিয়ে শুনুক শুধু। আরিশের নজর গেলো এবার অরার, কপালে লেপ্টে থাকা চুলগুলোর দিকে। ছোটো ছোটো চুলগুলো কত সুন্দর লাগছে! অরার ঠোঁটের ওপরে যে একটা তিলও আছে সেটা তো আরিশ খেয়ালই করেনি এতদিন। আজ সবকিছু এতো গভীর মনোযোগ দিয়ে কেনো দেখছে সে? আরিশের গলা শুকিয়ে আসছে। মনে হচ্ছে অরাকে আজই প্রথম দেখছে সে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

” আরিশ? শুনছেন? ”
” ইয়েস, লিটল বার্ড। অবশ্যই শুনছি৷ কেনো শুনবো না বলো? তোমার হাসবেন্ড তো কানে কম শোনে না। ”
কিছুটা এলোমেলোভাবে কথা বলছে আরিশ। অরা তাতেই বেশ অবাক হচ্ছে। ভদ্রলোকের সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে কখনো এমন হাবভাব করতে দেখেনি সে।
” তাহলে উত্তর দিন। ”
আরিশ অরাকে চমকানোর সুযোগটুকু না দিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলো। অরা কিছু বলতে পারল না। আরিশের হৃৎস্পন্দন শুনছে সে। ঢিপঢিপ! ঢিপঢিপ!
” আমি জানালা বন্ধ করেছি। আজকে থেকে প্রতিদিন সকালে আমিই তোমাকে প্রথম স্পর্শ করবো, রোদ মামা না। ”
অরা যে কী বলবে সেটাই খুঁজে পাচ্ছে না। একটা মানুষ এতটা হিংসুটে হয় কীভাবে! ভদ্রলোক নিশ্চিত, বেস্ট হিংসুটে এওয়ার্ড পাওয়ার যোগ্য পাত্র।
” কী হলো? চুপ করে আছ কেন?”
আরিশের প্রশ্নে হকচকিয়ে গেল অরা। কে জানে চুপ করে থাকার জন্য, না আবার রেগে যায় আরিশ!

” এমনি, এমনি চুপ করে আছি। ফ্রেশ হয়ে আসি? ”
” ওকে। বাট…..”
” কী?”
অরা কাঁপা কাঁপা গলায় শুধালো। আরিশের ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা আরেকটু প্রসস্থ হলো। অরার কোমল শরীরটা আরিশের বলিষ্ঠ দেহের মাঝখানে একরত্তি মনে হচ্ছে ওর। সেই শরীরটা কেমন কাঁপছে, অস্থিরতায় ছটফটিয়ে যাচ্ছে প্রতি সেকেন্ড। আরিশ অরার থুতনিতে হাত রেখে তার মুখটা উপরে তুলে বলল,
” গিভ মি আ কিস, হামিংবার্ড। ”
অরা কী বলবে বুঝতে পারছে না। এখনও পর্যন্ত আরিশের প্রতি তার তেমন কোনো অনুভূতি সৃষ্টি হয়নি যাতে নিজের ইচ্ছেতে এমন আবদার পূরণ করতে পারে। কিন্তু আরিশ যদি রেগে যায়? অরা ঘনঘন পলক ফেলে থেমে থেমে বলে,

” আই… নীড টাইম। ”
” কতদিন? ”
” জানি না। ”
” আমার ধৈর্য কম, পাখি। ”
” তাহলে…..”
আরিশ মুচকি হাসল। অরার কথা শেষ হওয়ার আগেই ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁইয়ে দিলো। মৃদু কাঁপল অরার শরীর। তারপর ছেড়ে দিলো তাকে। তবে আরিশ অরাকে ছাড়ার আগে কপালে আরো একবার চুম্বন এঁকে দিতে ভুলল না। অরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে, ওয়াশরুমের দিকে অগ্রসর হলো। বিয়ের পর আজকের মতো শান্তিময় সকাল তার জীবনে আর আসেনি। যদি আজীবন মানুষটা এমন থাকত! দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল অরা।

” এই যে, তামান্না ভাটিয়া! এদিকেও কিছু ফলমূল দাও। ”
তালহার কথায় ভেংচি কেটে ফলের ঝুড়ি এগিয়ে দিলো তামান্না।
” আমি ভাটা, ডাটা না ভাইয়া। আমি শুধু তামান্না। ”
তালহাও ভেংচি কাটল এবার। ওদের দুষ্টমি দেখে অরার বেশ ভালোই লাগছে। খান বাড়ির ডাইনিং রুমে সকালের নাস্তা করছে সবাই। তালহা আজ আরিশের সাথে অফিসে যাবে। পরনে তার হালকা নীল শার্ট, সাদা প্যান্ট, আর চুলে ন্যাচারাল স্টাইল। তালহার অফিসে যাওয়া নিয়ে তাসলিমা খাতুন বেজায় খুশি। সাবিহার অবশ্য মন ভালো না। কোথায় ভেবেছিল অরাকে মারধর করবে, আরিশের সাথে বড়সড় একটা ঝামেলা হবে। কিন্তু তা হলো কোথায়? উল্টো আজকে দুজনকে বেশ খুশি খুশিই লাগছে। আর সেটাই সহ্য হচ্ছে না সাবিহার। এতটুকু একটা মেয়ে, পড়ালেখা, রূপ সবদিক থেকে সাবিহার চেয়ে কম তার। তবুও সে আরিশকে এভাবে নিজের দখলে রাখছে বিষয়টা সাবিহার কাছে ভীষণ অপমানজনক।

” তালহা তো তোর ভাই, ওকে সবকিছু শিখিয়ে নিস আরিশ। ”
খেতে খেতে বললেন তাসলিমা। আরিশ পকেট থেকে ফোন বের করে, বসা থেকে উঠে দাঁড়াল।পরনে তার কালো ফুলস্লিভ শার্ট আর স্লিমফিট ব্ল্যাক ট্রাউজার। হাতে কালো ঘড়ি, আর হালকা জেল দেওয়া চুলে গম্ভীর লুক। তার চিরচেনা কালো রঙ যেন তাকে আরো রহস্যময় আর দুর্দান্ত আকর্ষণীয় করে তুলেছে। আরিশ বলল,
” শেখার ইচ্ছে থাকলে আস্তে আস্তে সবকিছু শিখে ফেলবে। ”
আরিশের কথায় চুপসে গেলেন তাসলিমা। একটুও রসকষ নেই তার কথায়। তালহা মুচকি হেসে বলে,
” তোমার কী মনে হয় মা? ভাইয়া থাকতে আমার কেনো অসুবিধা হবে ? আমার ভাই হলো বেস্ট। ”
আরিশও মুচকি হেসে অরার দিকে দৃষ্টিপাত করলো। চুপচাপ মাথা নিচু করে খাচ্ছে অরা। ভাবছে একবার বাবার বাড়ি যাবে। কিন্তু সেটা আরিশকে কীভাবে, কখন বলবে সেটা বুঝতে পারছে না। আরিশ যতই ভালো আচরণ করুক, অরা এতদিনের আচরণগুলো ভুলতে পারেনি, পারবেও না। এরমধ্যে আরিশের একটা জরুরি কল এলো।

” তালহা চল, আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে। ”
” হ্যাঁ, হ্যাঁ। চলো ভাইয়া। ”
কল রিসিভ করে কথা বলতে বলতে অরাকে ইশারায় টাটা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে গেলো আরিশ, সাথে তালহাও।
মকবুল খুন হওয়ার সপ্তাহখানেক কেটে গেছে। প্রশাসন এখনও খুনিকে খুঁজে বের করতে পারেনি। খুনি যে যথেষ্ট বুদ্ধিমান সেটা তার খুনের ধরণেই বোঝা যায়। প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। তদন্ত চলছে, তবুও কোনো ক্লু, কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই। কেবল শহরের দুই জায়গায় দু’টো পারফেক্ট খুন! পুলিশের মতে এটা কোনো স্বাভাবিক খুন নয়, সিরিয়াল কিলিং – এর কেস।
সময়টা দুপুরবেলা। খান ইন্ডাস্ট্রির বিশাল ভবনের নিচতলার রিসেপশনে হঠাৎ করে টহল পুলিশ ঢুকেছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুরো অফিসে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে,
“পুলিশ এসেছে আরিশ স্যারকে ধরার জন্য!”

রুমে তখন মিটিং চলছিল। তেজরিন খান আরিশ , কোম্পানির ডিরেক্টর, পুলিশ আসার খবর শুনে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন মিটিং মাঝপথে রেখেই। মুখে কোনও এক্সপ্রেশন নেই, কিন্তু চোখে চাপা রাগ। তিনি জানতেন না এই অভিযানটা আজকেই হবে। তবে হবেই এটা নিশ্চিত ছিল। পুলিশের বিষয়টা জানতে পেরেই কেবিন থেকে সোজা করিডোরের দিকে অগ্রসর হলো আরিশ। কথা বলে মিটিয়ে ফেলতে হবে বিষয়টা। কিছুতেই কোম্পানির সম্মানে প্রভাব পড়তে দেওয়া যাবে না।
অফিসের করিডোর জুড়ে থমথমে পরিবেশ করছে ।
আকাশের বাবা জনাব তৌসিফ শাহরিয়ার দাঁড়িয়ে আছেন , চোখমুখ আরিশের প্রতি দারুণ ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে। পাবার কথাই। একমাত্র ছেলের এমন অবস্থা করেছে যে, তার প্রতি রাগ-ক্ষোভ থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
সিনিয়র পুলিশ অফিসার বিলাল আহমেদ সামনে এসে বললেন,
“তেজরিন খান, আমরা এসেছি আপনাকে, অ্যাটেম্পট টু মার্ডার অভিযোগে গ্রেফতার করতে। আপনার সহযোগিত কামনা করছি।”

সরাসরি এমন কথায় অফিসের বাকি কর্মকর্তারা আঁতকে উঠলেন। তাদের স্যার কাউকে খুন করতে চেয়েছিলেন? অবশ্য তাদের স্যারের যা রাগ তাতে কাউকে খুন করা কোনো বিষয় না।
” দেখুন অফিসার, আমি আকাশকে খুন করার জন্য গুলি করিনি। মারার ইচ্ছে থাকলে তো বাড়িতে গিয়ে গুলি করতাম না। আকাশ আমার স্ত্রী’কে তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিল, তা-ও আমার অজান্তে। আমার মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল, নিজেকে সামলাতে পারিনি বলেই এমন অঘটন ঘটে গিয়েছে। তাকে মারার কোনো মোটিভ ছিলো না আমার। নিতান্তই এক্সিডেন্ট! ”
” মিস্টার আরিশ, পুলিশ এসব কথায় কাউকে ছাড়ে না৷”

আরিশ মুচকি হাসল। এরমধ্যেই আরিশের পারসোনাল এডভোকেট সঞ্জয় চক্রবর্তী এলেন সেখানে। সঞ্জয় চক্রবর্তী – ছত্রিশ বছরের মাঝারি গড়নের এক ফিট অ্যাডভোকেট। উজ্জ্বল শ্যামলা গায়ের রং, পাতলা রিমলেস চশমা, আর ঠান্ডা অথচ দৃঢ় চোখ। পরনে গাঢ় নীল ব্লেজার, ধূসর শার্ট, কালো স্ল্যাকস ও চকচকে ব্রাউন অক্সফোর্ড জুতো। চুলে হালকা পাক, ভদ্রভাবে আঁচড়ানো। সেদিন ওই ঘটনার পরেই আরিশ সঞ্জয় চক্রবর্তীর সাথে কথা বলে রেখেছিল। উনি সবকিছু আগে থেকে গুছিয়ে রেখেছিলেন। তাই পুলিশ আসার খবর শুনতেই আরিশ এডভোকেট সঞ্জয় চক্রবর্তীকে কল করে জানিয়ে দিয়েছিলেন।
সঞ্জয় চক্রবর্তী চশমার ফ্রেমটা একটু ঠেলে নাকের ওপরে সেট করলেন। তার মুখে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস দেখা যাচ্ছে। কারণ এমন পরিস্থিতিও তার কাছে প্রতিদিনের চা-সন্ধ্যার মতো সোজা। এরকম হাজারো কেস সামলানোই উনার পেশা।

“অফিসার বিলাল, আপনি বলছেন অ্যাটেম্পট টু মার্ডার। গুলিতে আকাশ আহত হয়েছেন,এটা সত্যি। কিন্তু এটাও সত্যি, ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল না। এটা ছিল হঠাৎ রাগের মাথায় ঘটে যাওয়া এক অনিচ্ছাকৃত ঘটনা।”
তিনি হাত বাড়িয়ে আকাশের মেডিকেল রিপোর্ট দিলেন, যেখানে উল্লেখ ছিল-
“The bullet wound is non-fatal, superficial and caused by a glancing shot. No bone or major artery was damaged.”
“একটা ‘অ্যাটেম্পট টু মার্ডার’-এর জন্য যে প্রমাণ দরকার- যেমন হত্যার উদ্দেশ্যে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, প্রাণনাশের স্পষ্ট চেষ্টা সেগুলোর কিছুই নেই।”
অফিসার বিলাল চোখ সরু করলেন,
“তবুও এটা তো গুলি চালানোর ঘটনা।”
সঞ্জয় এবার মৃদু হেসে বললেন,
“ঠিক। এবং গুলি চালানো অবশ্যই অপরাধ। কিন্তু সেটা হয়তো ‘রেকলেস কন্ডাক্ট উইথ আ ডেডলি উইপন’ বা ‘গ্রেভ হার্ম’-এর আওতায় পড়ে, যা জামিনযোগ্য।”

“তাছাড়া..”
তিনি নিচু গলায় বললেন,
“আকাশ তার জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে, আরিশ তার স্ত্রীকে নিজের অনুমতি ছাড়া বাসায় নিয়ে যাওয়ায় উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এটা ব্যক্তিগত পারিবারিক সংঘাতের ফল। এবং আমরা এর শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তির জন্য প্রস্তুত। ”
এতক্ষণ চুপ থাকা বিলাল এবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
“এই মুহূর্তে আপনাকে গ্রেফতার করছি না। তবে তদন্ত চলবে, এবং আপনাদের পূর্ণ সহযোগিতা কাম্য। মি. খান, আপনি যদি আবার কোনো অবিবেচনাপ্রসূত কাজ করেন, তখন আইনের আশ্রয় নেব বলে রাখছি।”
” অবশ্যই। তবে জনাব তৌসিফ, আম সরি। আমার গুলি করা উচিত হয়নি। এটা অন্যায় হয়েছে। সম্ভব হলে আমাকে ক্ষমা করবেন। আমি আকাশকে দেখতে যাবো অবশ্যই। ”

জনাব তৌসিফ চোখ সরিয়ে নিলেন আরিশের দিক থেকে। তার অভিব্যক্তি জটিল- রাগ, কষ্ট, ক্ষোভ। কোনো কথার জবাব না দিয়েই হনহনিয়ে বেরিয়ে গেলেন তিনি। উনার পেছন পেছন প্রশাসনের লোকজনও চলে গিয়েছেন।
আরিশ ম্লান মুখে সঞ্জয়ের দিকে তাকাল, তারপর নিচু গলায় বলল,
“ধন্যবাদ, সঞ্জয় দা।”
সঞ্জয় বললেন,
“এখন নিজের রাগকে ঠিক মতো নিয়ন্ত্রণ করো আরিশ। আইন সবসময় সত্যের পক্ষে থাকে, কিন্তু মানুষের ভেতরের অন্ধকারের পক্ষে নয়। তোমার এই রাগ একদিন কাল হয়ে দাঁড়াবে। এমনিতেই আজকের ঘটনার জন্য অফিসের বদনাম হবে। ”

হামিংবার্ড পর্ব ২০

আরিশ মাথা নিচু করল, নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কিন্তু আরিশের জন্য এটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ। সঞ্জয়ের সাথে আরিশের সম্পর্ক বেশ ভালো। খান ইন্ডাস্ট্রির যাবতীয় আইনী বিষয়গুলো উনিই দেখেন।

হামিংবার্ড পর্ব ২২