হৃদয় মাঝে হঠাৎ তুমি পর্ব ১৪
সানা শেখ
এত রাতে আলভী কে নিজের রুমে দেখে জড়সড় হয়ে এক পাশে দাঁড়ায় মায়া। আলভী এক কদম দু কদম করে এগিয়ে যায় মায়ার দিকে। মায়া আঙ্গুল তুলে ঝাঁঝালো গলায় বলে,
“আবার কেন এসেছেন? কাছে আসবেন না আপনি।”
আলভী দাঁড়িয়ে যায়।
“কিছু করব না, শুধু কিছু কথা বলবো।”
“আপনার কোন কথা শুনতে চাই না আমি।”
“কেন শুনতে চাও না?”
“শুনতে চাই না মানে শুনতে চাই না।”
“শুনতে না চাওয়ার তো কোনো কারণ নিশ্চই আছে। কারণ টা কি ?”
“আপনাকে সহ্য হয় না আমার।”
“কেন হয় না?”
“জানেন না আপনি?”
“না বললে জানবো কিভাবে? তুমি তো বলোনি কিছু আমাকে।”
“জানতে হবে না, আপনি জান এখান থেকে।”
“না জেনে যাব না আমি।”
আলভী মায়ার দিকে এগিয়ে যায় আবার। মায়া আঙ্গুল তুলে রাগী স্বরে আগাতে নিষেধ করে বার বার। কিন্তু শোনে না আলভী। মায়া আলভী কে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে আলভী মায়া কে আটকায়। জোর করে দাড় করায় নিজের সামনে। আলভীর হাত ঝাড়ি দিয়ে সরিয়ে দেয় মায়া।
“ছোঁবেন না আপনি আমাকে।”
“আমি না ছুলে কে ছোঁবে তোমাকে?”
মায়া বলে না কিছু। আলভী পুনরায় বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“তোমাকে ছোঁয়ার অধিকার আমার আছে, ছিল আর থাকবে।”
“অধিকার খাটাতে এসেছেন?”
“না।”
“কেন এসেছেন?”
“বোঝাতে।”
“আমি বুঝতে চাই না কিছু।”
“কিন্তু আমি তো বোঝাতে চাই।”
“কেন চান?”
“ভালোবাসি যে।”
“এই ভালোবাসা আগে কোথায় ছিল? তখন কেন আসেননি?”
“আগেও ছিল তবে আমি বুঝতে পারিনি। তাই তখন আসিনি।”
“ভুল বললেন, আগে ভালোবাসা ছিল না। যা ছিল তা শুধুই ঘৃনা।”
আলভী চুপ হয়ে থাকে কিছু সময়।
মায়া আলভীর চোখে চোখ রেখে বলে,
“কথা বলছেন না কেন এখন?”
“তুমি তো শুনতেই চাইছো না।”
“শুনছি বলুন আপনি। বলে দ্রুত বিদায় হোন আমার চোখের সামনে থেকে।”
আলভী মায়ার হাত ধরে টেনে বেডে এনে বসায়। নিজে বসে মায়ার সামনে হাটু মুড়ে। মায়ার দুই হাত মুঠো করে ধরে। মায়া সরিয়ে নেয় নিজের হাত। আলভী আবার মুঠো করে ধরে শক্ত করে।
“হাত ছাড়ুন আর এমন নাটক না করে সোজাসুজি বলুন কি বলবেন।”
“I’m sorry. I’m sorry for everything.”
“সরি বলার জন্য এত রাতে এসেছেন?”
“আমি জানি তুমি আমার উপর রেগে আছো। রেগে থাকার জন্য অনেক বড় কারণও আছে। আমি ভুল করেছিলাম তোমাকে সেদিন মেনে না নিয়ে ছেড়ে চলে গিয়ে।”
“ভুল করেছিলেন?”
“অন্যায় করেছি। অনেক বড় অন্যায় করেছি আমি তোমার সাথে। প্লীজ মাফ করে দাও আমাকে। আমি আর কোন কষ্ট দেব না তোমাকে। আমি নিজের সর্বস্ব দিয়ে ভালোবাসবো, ভালো রাখবো তোমায়।”
“ভালোবাসা-ভালো থাকার সখ মিটে গেছে অনেক আগেই। আর ভালো থাকতে চাইনা, আর না কারো ভালোবাসা চাই। এখন শুধু চাই মুক্তি।”
আলভীর হাতের মুঠো শক্ত হয়।
“আমি তো মুক্তি দিতে চাই না তোমাকে। সারা জীবন বন্দী করে রাখবো এই হৃদয় মাঝে।”
“হঠাৎ এই ভোল বদল , মত পাল্টানোর কারণ কি? এসেছিলেন তো তা লাক দিয়ে মুক্ত হতে। হঠাৎ আমার মধ্যে কি দেখে সংসার করার ইচ্ছে জাগলো?”
আলভী কিছু বলার জন্য মুখ খোলার আগেই মায়া আবার বলে,
“আমি হয়তো কিছুটা বুঝতে পেরেছি। আমি তো আর আগের সেই মায়া নেই। দেখতেও আগের মত নই। যে কারো নজর কাড়ার জন্য আল্লাহ তায়ালা আমাকে যথেষ্ট রূপ সৌন্দর্য দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি যদি ভুল না হই আপনি আমার এই রূপ সৌন্দর্য দেখেই মুগ্ধ হয়েছেন, প্রেমে পড়েছেন। যখন দেখলেন মায়া তো সেই আগের মায়া নেই, আকাশ পাতাল ফারাক দুজনের মধ্যে। অনেক পরিবর্তন হয়ে গেছে তখন আপনার মনে হলো আমি মায়ার সাথেই সংসার করবো। আমি যদি আগের মতোই থাকতাম তাহলে নিশ্চিত আপনি প্রথম দিনই তা লাক দিয়ে দিতেন। কথা টা তিতা হলেও এটাই সত্যি আপনি সুন্দরের পূজারী। আপনি আমার প্রেমে পড়েননি, পড়েছেন সৌন্দর্যের প্রেমে।”
আলভী কিছু বলার আগেই মায়া আবার বলে,
“আপনি কি বলবেন বুঝে গেছি আমি। আমি আর কিছুই শুনতে চাই না। আমার এটাই শেষ কথা আমি থাকতে চাই না আপনার সাথে।”
“আমার কথা শেষ হয়নি মায়া। আমার পুরো কথা তো শোনো।”
“শুনতে চাই না আমি। আপনি তা লাক দেওয়ার জন্য না এসে এমনি ঘুরতে আসতেন নিজের বাবা মা কে দেখার জন্য, বা অন্য কোনো কারণে আসতেন। তখন আপনি আমার সৌন্দর্য দেখে প্রেমে পড়লেও আমি আপনাকে বিনা বাক্যে মেনে নিতাম। কিন্তু আপনি এসেছিলেন তা লাক দেওয়ার জন্য। আমার রূপ সৌন্দর্য না থাকলে তো তা লাক দিয়েই দিতেন। এখন কেন আমি আপনাকে মেনে নেব? এখন আমার রূপ সৌন্দর্য আছে তাই আপনার কাছে ভালো লাগছে। কয়েক বছর পর যখন রূপ সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে তখন আর ভালো লাগবে না আমাকে। তখন আপনার চোখ আর মন অন্য দিকে দৌড় দেবে।”
“তুমি ভুল বুঝছো আমাকে, এটা তোমার ভুল ধারণা। এমন কিছু কখনোই হবে না।”
“একদম ঠিক ভেবেছি আমি, কোন ভুল ধারণা নেই। ফিউচারে এমন টাই হবে। আপনি এখন আসতে পারেন, অনেক রাত হয়ে গেছে ঘুমাব আমি।”
জোর করে বসা থেকে উঠে দাঁড়ায় মায়া। রাগ দেখিয়ে আলভীর হাতের মুঠোয় থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নেয়। ডোরের দিকে আঙ্গুল তাক করে বলে,
“নিজের রুমে জান।”
“এমন করছো কেন? আমার কথা তো শুনবে নাকি? নিজের মত করে বলেই যাচ্ছো।”
“অনেক শুনেছি আর শুনতে চাই না। আপনি আসুন এখন।”
আলভীর কোন কথা শোনে না মায়া। রাগে ফেটে পড়ছে যেন। পুরো চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে রাগে। ডোর খুলে আলভী কে জোর করে বের করে দেয়। আলভী নিজেও আর জোর করে বোঝানোর চেষ্টা করে না।
মায়ার মাথা এখন গরম হয়ে আছে, যাই বলুক কিছুই বুঝতে চাইবে না। রাগে জেদে টুইটুম্বর হয়ে আছে এখন। মাথা ঠাণ্ডা হোক কয়েক দিন পর বোঝাবে। কয়েক দিন পাড় হলে রাগ এমনিতেই কমে আসবে।
মায়া ঠাস করে দরজা লক করে বেডে এসে বসে। নিজের হাতের দিকে তাকায়। হাত দুটো লাল টকটকে হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে পাথরের নিচে চাপা দিয়েছিল হাত দুটো। এত শক্ত করে কেউ ধরে? দয়া মায়া হীন বদ লোক একটা।
আলভী নিজের রুমে চলে আসে। ঠাস করে শুয়ে পড়ে বেডে তারপর হেসে ওঠে।
বাপ ভাইয়ের সাথে মসজিদ থেকে জুমার নামাজ আদায় করে আসে আলভী।
পরনে সাদা পাঞ্জাবি, মিষ্টি আতরের ঘ্রাণ।
সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে শুরু করে। উপর থেকে নিচে নেমে আসছে মায়া। আলভী কে আসতে দেখে সেখানেই এক পাশে দাঁড়িয়ে যায়। আলভী মায়ার কাছাকাছি এসে একটু সময় দাঁড়ায় তারপর আবার এগিয়ে যায়। মায়া নিচে নামতে নামতে ঘাড় ঘুরিয়ে উপরের দিকে তাকায় একবার। ভেবেছিল আলভী হয়তো কিছু বলার জন্য দাঁড়িয়েছে কিন্তু কিছু না বলেই চলে গেল।
দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই সোফায় বসে আছে। এমন সময় কলিং বেল বেজে ওঠে। মেড মায়া গিয়ে ডোর খুলে দেয়। ডোরের বাইরে আলভীর নানীর বাড়ির সবাই দাঁড়িয়ে আছে।
মায়া সাইট হয়ে দাঁড়ায়, সবাই ভেতরে প্রবেশ করে। ঐশী রহমান বাপের বাড়ির সবাই কে দেখেই সোফা ছেড়ে উঠে সকলের কাছে এগিয়ে আসেন। খুশি হয়ে বলেন,
” অবশেষে তোমাদের সকলের আসার সময় হলো তাহলে? আমি তো ভেবেছি তোমরা কেউ আসবেই না।”
“আমরা তো সেদিনই আসতে চেয়েছিলাম কিন্তু তোর এই ভাতিজীর জন্য আসা হয়নি। ও আসতে না পারলে কাউকে আসতে দেবে না। ওর পরীক্ষা শেষ হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম এই কদিন ধরে। এত দূরে তো চাইলেই আসা যাওয়া করা সম্ভব না।”
“কেমন আছো তোমরা সবাই?”
” আলহামদুলিল্লাহ আমরা সবাই ভালো আছি। তুই কেমন আছিস? বাড়ির সবাই কেমন আছেন আপনারা?”
সবাই এক সাথে “আলহামদুলিল্লাহ” বলে।
সোফা ছেড়ে সবাই উঠে এসেছে কিন্তু মায়া ওঠেনি। আলভীর নানীর বাড়ির কয়েক জন কে মায়া এখন সহ্য করতে পারে না। এদের মধ্যে কয়েক জন সুযোগে ওকে অনেক কথা শুনিয়েছি ওকে।
আলভী ওর নানা কে জড়িয়ে ধরে বলে,
“কেমন আছো নানা ভাই?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুমি কেমন আছো?”
“আলহামদুলিল্লাহ ভালো।”
“এত গুলো বছর পর রাগ কমেছে?”
মুচকি হাসে আলভী।
আলভীর বড় মামার ছোট মেয়ে লিরা আলভী কে দেখে হা করে তাকিয়ে থাকে কিছু সময়। তারপর বির বির করে বলে,
“সো হ্যান্ডসাম বয়। বুঝতে পারি না ফুপ্পী কি দেখে ওই খ্যাত মায়ার সাথে এত হ্যান্ডসাম একটা ছেলের বিয়ে দিয়েছিল?”
আলভী নানীর সাথে কথা বলে। মামা-মামী, খালা-খালু, মামাতো খালাতো ভাই বোন সকলের সাথে কথা বলে।
কুশল বিনিময় শেষে সকল কে সোফায় বসতে দেওয়া হয়।
মেড মায়া সকল কে লেবুর ঠান্ডা ঠান্ডা শরবত বানিয়ে এনে দেয়। আলভীর বড় মামার ছোট মেয়ে টা কিভাবে যেন তাকায় মায়ার দিকে। মায়া দেখেও পাত্তা দেয় না। এসে গেছে শ*য়*তা*ন কূটনী চোগলখোর তিন জন।
এদের কে দেখলেই রাগে মায়ার মস্তিষ্ক টগবগ করে ফুটতে শুরু করে।
আলভীর নানা মামা মামী মায়া কে ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করেন। উত্তর দিয়ে মায়া নিজেও জিজ্ঞেস করে।
আলভীর মামাতো বোন লিরা মায়ার পাশে বসে আস্তে আস্তে বলে,
“তোমার তো দেখি খুব দেমাগ বেড়ে গেছে মায়া। আমাদের সাথে একটা কথাও বললে না।”
মায়া মুচকি হেসে বলে,
“দেমাগ তো আমার আগে থেকেই বেশি আপু। তুমি হয়তো বুঝতে পারোনি আগে।”
লিরা মুখ ঘুরিয়ে আলভীর দিকে তাকায়। আলভী হেসে হেসে নানা, মামার সাথে কথা বলছে।
ঐশী রহমান সকলের দিকে তাকিয়ে বলেন,
“তোমরা সবাই আজকে আসবে কল করে জানিয়ে দেবে না আগে! তাহলে তো রান্না করে রাখতে পারতাম।”
“সারপ্রাইজ দিলাম ফুপি। আগে বলে আসলে হঠাৎ দেখে এভাবে এত খুশি হতে নাকি?”
বড় ভাতিজির কথা শুনে হাসেন ঐশী রহমান।
ঐশী রহমান এর মা সামসুন্নাহার বেগম আলভীর দিকে তাকিয়ে বলেন,
“ওদের সবাই কে চিনতে পেরেছো নানা ভাই?”
আলভী কাজিন দের দিকে তাকায়। তিন জন ছাড়া বাকি কাউকেই চিনতে পারছে না।
“এটা সাজ্জাদ ভাইয়া, ওটা পলি আপু, আর এটা নাঈমুর। বাকি কাউকে চিনতে পারছি না এখন। লাস্ট যখন দেখেছিলাম সবাই তখন ছোট ছোট ছিল, এখন তো সবাই বড় হয়ে গেছে।”
সামসুন্নাহার বেগম সকলের নাম বলে বলে চিনিয়ে দেন। আলভী লিরার দিকে তাকিয়ে বলে,
“এটা লিরা? ছোট বেলায় যেমন মেকআপ টেকআপ করে সেজে গুঁজে থাকতো এখনো সেভাবেই থাকে নাকি? দেখে তো তাই মনে হচ্ছে, আগের চেয়েও মর্ডান হয়ে গেছে।”
আলভীর কথা শুনে লাজুক হাসে লিরা।
মায়া একবার চোখ কোণা করে আলভীর দিকে তাকায়। কিভাবে দাঁত বের করে হাসছে? নির্লজ্জ্ব লোক।
আলভী নিজেও মায়ার দিকে তাকায়। সাথে সাথেই মায়া চোখ নামিয়ে নেয়। আলভী খেয়াল করে ওর খালাতো ভাই নাঈমুর একটু পর পর মায়ার দিকে তাকাচ্ছে। হঠাৎই আলভীর শরীর জ্বলে ওঠে।
“তোমরা সবাই ফ্রেস হয়ে এসে নাস্তা করে নাও। সকলেই নিশ্চই ক্লান্ত হয়ে আছো, অনেক রাস্তা জার্নি করে আসলে তো।”
ঐশী রহমান সবাই কে গেস্ট রুমের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় ফ্রেস হওয়ার জন্য।
সবাই চলে যাওয়ার পর মায়া নিজেও সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। দ্রুত এগিয়ে যায় নিজের রুমের দিকে। মায়ার পেছন পেছন আলভী নিজেও এগিয়ে যায়।
ড্রইং রুম পুরো শান্ত হয়ে যায়।
আলভী মায়ার রুমে আসে।
আলভী কে আবারো নিজের রুমে দেখে আঙ্গুল তুলে বলে,
“আপনি আবার এসেছেন?”
“নাহ্, আমি তো আসিনি।”
“বের হোন।”
“তুমি ওদের কারো সামনে যাবে না।”
“কাদের সামনে?”
“আমার মামাতো খালাতো ভাই গুলোর সামনে।”
“কেন?”
“যাবে না মানে যাবে না।”
“একশো বার যাব, প্রয়োজনে ওদের কোলে উঠে বসে থাকব তাতে আপনার কি?”
“কোলে ওঠার ইচ্ছে করলে আমার কোলে উঠে বসে থাকো। কিন্তু মনের ভুলেও ওদের সামনে যাবে না।”
“আপনার কথা মত নাকি?”
“অবশ্যই।”
“জীবনেও না। আমি এখনই ওদের সামনে যাব।”
বলেই ডোরের দিকে পা বাড়ায়। পথ আগলে দাঁড়ায় আলভী।
“আমার কথার নড়চড় হলে আমি কি করবো তুমি কল্পনাও করতে পারবে না বউ।”
“কি করবেন আপনি? কিছুই করতে পারবেন না।”
খপ করে চেপে ধরে আবার ওষ্ঠ ডুবায় মায়ার ওষ্ঠদয়ে।
বিস্ময়ে বিমূঢ় মায়া। আকস্মিক ঘটনায় নড়া চড়া করতেও ভুলে গেছে যেন। আলভী আবার এমন কিছু করতে পারে খেয়াল ছিল না।
বেশ কিছুক্ষণ পর ওষ্ঠ ছেড়ে মায়ার মুখ আগলে ধরে হাসি মুখে বলে,
“বার বার নিষেধ করার পরেও আপনি ডাকার জন্য প্রথম চুমু টা। আর এবার যেটা দেব সেটা আমার কথা না শোনার জন্য ছোট্ট একটা ডেমো।”
বলে পুনরায় চেপে ধরে মায়ার ওষ্ঠদয়। মায়া ঠ্যালা ঠেলি করেও আলভী কে সরাতে পারে না। চেপে যে ধরেছে আর ছাড়ার নাম নেই।
দীর্ঘ চুম্বনের পর ছেড়ে দেয় মায়া কে।
“আমার কথা শুনবে না বলায় মাত্র এই টুকু, যদি সত্যি সত্যিই না শোনো তাহলে অঘটন ঘটে গেলে আমার দোষ নেই।”
মায়ার রাগী চোখ মুখ দেখে গালে কপালে আরো কয়েক টা চুমু খায়। তারপর ডোরের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে বলে,
“হেব্বি স্বাদ, নেশা ধরে গেল।”
“বদ লোক, অসভ্য, শ য় তা ন।”
“আমার মত ভদ্র, সভ্য, ইনোসেন্ট ছেলে তুমি ইহ জগতে দ্বিতীয় জন খুঁজে পাবে না।”
হৃদয় মাঝে হঠাৎ তুমি পর্ব ১৩
চলে যায় আলভী। মায়া রাগে গজগজ করতে করতে হাত দিয়ে গাল আর ঠোঁট জোড়া মুছতে শুরু করে।
খবিশ লোক একটা, নিজে দাঁত বের করে মেয়ে দেখে হাসবে, কথা বলবে, প্রশংসা করবে তাতে কিছু না। ও একটু সামনে গেলেই দোষ।