হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব ৩

হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব ৩
লেখনীতেঃভূমি

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই নিজের চোখের সামনে রক্তিমের ঘুমন্ত মুখটা ভেসে উঠতেই চমকে গেল অদ্রিজা।কয়েক সেকেন্ডে চোখ মেলে রক্তিমের ঘুমন্ত চেহারার দিকে তাকিয়েই মনে পড়ল, গতকাল রাতে ঘুমোনোর সময় সে দরজা লাগায়নি।ইচ্ছে করেই লাগায় নি।কারণ এর আগের দিনও এই রুমে রক্তিমের প্রবেশ অনেক রাত করেই ঘটেছিল।নেশাক্ত রক্তিম।সেইদিন রাতের কথা মনে করেই অদ্রিজা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

সামনের লোকটার প্রতি ভেতর থেকে উগড়ে আসল সব ঘৃণা!সবে মাত্র নিদ্রা ত্যাগ করা চোখজোড়া লাল রক্তিম হয়ে ক্ষ্রিপ্ত চাহনি ফেলল ঘুমন্ত মানুষটির উপর। লোকটার ঘুমন্ত নিষ্পাপ চেহারাটা দেখেই মুহুর্তে সেই চোখজোড়া যেন বলে উঠল,” লোকটা খারাপ।পৃথিবীর সবথেকে খারাপ মানুষ এই লোকটি।” অদ্রিজা চোখজোড়া মুহুর্তেই বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস ফেলল।

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

বন্ধ চোখ জোড়া এই মুহুর্তে দেখা চমৎকার যুবকটির মুখটা তার মনে আঁকল নাহ।বরং একের পর এক চিত্র মনে করিয়ে দিল সেইদিন রাতের। মস্তিষ্ক আর সইতে পারল না বোধ হয় সেই স্মৃতি গুলো।তাই তো অদ্রিজা দ্রুত উঠেই সরে আসল।দু পা এগিয়ে এলোমেলো চুল গুলো খোঁপা করে নিতে নিতেই রুমের বাইরে পা ফেলল সে।রক্তিমের বাবার সাথে কথা বলতে হবে ভার্সিটি যাওয়ার বিষয় নিয়ে।তাই এদিক ওদিক তাকিয়েই ঘড়িতে নজর ফেলল সে।সাড়ে আটটা।এতক্ষনে নিশ্চয় ভদ্রলোক ঘুম থেকে উঠে পড়েছেন।স্বস্তির নিঃশ্বাস নিয়েই রিয়াদ সাহেবের রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়াল অদ্রিজা।পর্দার একপাশে রুমের ভেতরে রিয়াদ সাহেবকে পত্রিকা পড়তে দেখেই মৃদু স্বরে বলে উঠল,

‘ স্যার?আসব?’
রিয়াদ সাহেব পত্রিকা থেকে মুখ তুলে চাইলেন।নিজের ছেলের বউকে দরজার সামনে দেখেই তার মুখের উপর ভেসে উঠল খুশির ছাপ।পত্রিকা গুঁছিয়ে একপাশে রাখতে রাখতেই বলে উঠলেন তিনি,
‘ আসো, আসো।’
অদ্রিজা ভীত চাহনিতে পা এগিয়ে রিয়াদ সাহেবের সামনে গিয়ে দাঁড়াল।মৃদু হেসেই বলল,
‘ আমার কিছু কথা ছিল স্যার।’

রিয়াদ সাহেব কপাল চাপড়ালেন।চোখজোড়া বন্ধ করে অদ্রিজার দিকে তাকিয়েই গম্ভীর গলায় বলল,
‘ অদ্ভুত ভাগ্য আমার বুঝলে!ছেলে মেয়ে বলতে একটা ছেলেই।সেই ছেলেই আমায় বাবা ডাকে না। মিস্টার মাহমুদ ডাকে।আর ছেলের বউ?সেও বাবা ডাকল নাহ।স্যার সম্বোধন করল।জীবনে বোধ হয় বাবা ডাকটা শোনা হবে নাহ আমার।’

অদ্রিজা ভ্রু কুঁচকে তাকাল।রিয়াদ সাহেবের কথার উত্তরে কি বলা উচিত তা খুঁজে পেল না সে।সেভাবেই আহাম্মকের মতো তাকিয়ে থাকতেই রিয়াদ সাহেব আবারও বললেন,
‘ আমার ছেলেকে আমি কোনদিন বাবা বলে ডাকতে বলিনি।বলার মতো পরিস্থিতি কিংবা যোগ্যতা বোধ হয় আমার নেই।তোমায় বলব বাবা ডাকতে?উচিত হবে অদ্রিজা?’

অদ্রিজা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।ধবধবে ফর্সা চেহারায় মৃদৃ হাসি টেনেই বলে উঠল,
‘ স্যরি।আর হবে নাহ।এবার থেকে বাবাই বলব।’
রিয়াদ সাহেব খুশি হলেন।তার চোখের ভাজে স্পষ্ট ফুটে উঠল সেই খুশিটা।মুখের হাসিটা যেন মুখের আধপাঁকা দাঁড়িতেও ফুটে উঠল।তৃপ্তি নিয়ে কয়েক সেকেন্ড হেসে নিয়েই বলে উঠলেন তিনি,

‘ বলো, কি বলবে।’
‘ ভার্সিটি যাওয়া নিয়েই বলতে এসেছিলাম আমি।আজ থেকে যেতে পারি ভার্সিটিতে?’
‘ কেন নয়।আজ থেকেই যেতে পারো।নিচে গাড়ি আছে। পৌঁছে দেবে তোমাকে। কোনটাইমে ফিরবে বলে দিও। গিয়ে নিয়ে আসবে।ঠিকাছে?’
অদ্রিজা হালকা নিঃশ্বাস ছেড়েই বলে উঠল,
‘ আমি একা একা যেতো পারব।আশা করি এটুকু স্বাধীনতা আপনি দিবেন স্যার।’
কথাটা বলেই জিভ কাঁটল অদ্রিজা। পরমুহুর্তেই বলে উঠল,
‘ স্যরি, বাবা।’

রিযাদ সাহেব হাসলেন।অদ্রিজাও মৃদু হেসে পরখ করে দেখল রিয়াদ সাহেবের হাসিটা।হাসিটা একেবারে রক্তিমের মতোই।রিয়াদ সাহেবের চেহারাটাও একদম রক্তিমের মতোই।লম্বা, চওড়ায় সবটায় রিয়াদ সাহেবের মতোই হয়েছে রক্তিম।কেবল গায়ের রংটা ব্যাতীত।রক্তিমের গায়ের রংটা ধবধবে সাদা আর রিয়াদ সাহেবের গায়ের রং শ্যামলা।অদ্রিজা হাসল।তারপর পা বাড়িয়েই বেরিয়ে আসল সেইখান থেকে।নিজের রুমে এসে রক্তিমকে না দেখেই এদিক ওদিক তাকাল সে।বেলকনি, ওয়াশরুম সবটা দেখেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল সে।নিশ্চয় নিজের সে ভুতুড়ে রুমে পৌঁছে গিয়েছে সে।

অদ্রিজা শাওয়ার নিয়ে ভেজা চুলগুলো টাওয়াল দিয়ে মুঁছে নিচ্ছিল। হাতে একটা লাল টকটকে শাড়ি। ওয়াশরুমে শাড়ি পরতে অসুবিধে হবে তাই শাড়িটা ওয়াশরুমে না পরে রুমে নিয়ে এসেছিল সে।পরনে পেটিকোট আর ব্লাউজ।ভেজা চুলগুলো থেকে টাওয়াল ছাড়িয়ে শাড়ীটা পরতে যাচ্ছিল ঠিক তখনই দরজা মেলে রুমে প্রবেশ করল রক্তিম।

নিজের থেকে কয়েক হাত দূরে হূরের মতো রূপকন্যার মোহিত রূপ চোখের নজর কাড়তেই বুক ধুকফুক করল তার।অবাধ্য চোখজোড়া সেভাবেই কয়েক সেকেন্ড তাকাতে চোখজোড়াকে মাতাল করে তুলল উম্মুক্ত ফর্সা ধবধবে পেটের ত্বকে থাকা কালো তিলটা।মোমের মতো ধবধবে ফর্সা নরম তুলতুলে ত্বকে ফোঁটা ফোঁটা পানি।ঠিক তার মাঝেই কালো কুচকুচে তিলটা যেন আকৃষ্ট করারই মন্ত্র জপছে।রক্তিম সেভাবেই তাঁকিয়ে রইল।এক্ষুনি তিলটা ছুঁয়ে দিয়ে মসৃন ত্বকে ফোঁটা ফোঁটা পানি গুলো মুঁছে দিলে কি ক্ষতি হয়ে যাবে?অদ্রিজা কি কিছু মনে করবে তাতে?নিজের ভাবনায় নিজেই অবাক হলো রক্তিম।যার থেকে দূরে থাকার এত চেষ্টা তারই কাছে যাওয়ার জন্য মন বলছে?অদ্ভুত!বিছানার উপর নিজের রুমালটা আর ঘড়িটা নিতে নিতেই বলে উঠল,

‘ উফফস! মিস্টার মাহমুদ আমার জন্য কিছু না করতে পারলেও রূপবতী বউ বেঁছে দিতে ঠিকই পেরেছেন কিন্তু।’
অদ্রিজা চমকে তাকাল।এই রুমে কেউ নেই এই ভাবনাতেই সে শাড়ি পরতে ব্যস্ত ছিল।রুমে কখন রক্তিম এল তা তার খেয়ালেই আসেনি।হুট করে রক্তিমের কন্ঠ পেয়ে কুঁচি না করেই শাড়িটা এলোমেলো ভাবে কোনভাবে জড়িয়ে নিল শরীরে।রক্তিমের দিকে তাকিয়েই দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

‘ আপনি সবদিক থেকেই জ্ঞানশূণ্য মানব রক্তিম।একটা মেয়ের রুমে প্রবেশ করার আগে তার অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন বোধটা অন্তত থাকা উচিত আপনার রক্তিম।’
রক্তিম হেসে উঠল হু হা করে।ট্যারাবাঁকা দাঁত গুলোও হাসির ছন্দে হেসে উঠল।অদ্রিজা সুন্দর হাসিটার দিকে মোহিত নয়নে তাকিয়ে রইল।রক্তিম সেই তাকানোকে বিন্দুমাত্র পরোয়া না করেই একদম অদ্রিজার সামনে এসে দাঁড়াল। বাঁকা হেসেই ফিসফিসিয়ে বলে উঠল,

‘ কেন?মেয়েদের রুমে লুকায়িত কিছু থাকে নাকি অদ্রিজা?’
অদ্রিজা বিরক্ত হলো।কপালে ভাজ পেলে তাকাতেই রক্তিম চোখ টিপল।অদ্রিজার দিকে আরো এগিয়ে মাঝখানে কয়েক ইঞ্চি দূরত্ব রাখল কেবল।ফিসফিসিয়েই কানের কাছে বলে উঠল,
‘ ফর্সা মসৃন ত্বকে জলবিন্দুর মাঝখানে কালো কুচকুচে তিল।ভাবতে পারছেন কি সাংঘাতিক? এতটাই সাংঘাতিক যে বুক চিনচিন করে উঠল।’

কথাটা বলেই রক্তিম বুকের বা পাশে হাত রাখল।সরু চোখে অদ্রিজার দিকে তাকিয়েই বাঁকা হাসল সে। অদ্রিজা কিছু না বুঝেই ভ্রু কুঁচকে তাকাল।বিরক্ত নিয়ে বলে উঠল,
‘ সরুন সামনে থেকে।’
রক্তিম হাসল।অদ্রিজার সামনে থেকে সরে এসেই হাতে ঘড়ি পরতে পরতেই বাঁকা চোখে অদ্রিজার দিকে তাকাল।অদ্রিজা দ্রুত ওয়াশরুমের দিকে হাঁটা দিল।রক্তিম মুচকি হাসল।টেবিলের উপর থেকে একটা ফাইল নিয়ে দেখতে দেখতেই চেঁচিয়ে বলে উঠল,

‘ অদ্রিজা?প্লিজ একটু তাড়াতাড়ি আসবেন। আমার কিছু কথা ছিল আপনার সাথে।’
রক্তিম কথাটা বললেও ভেতর থেকে কোন সাড়া আসল নাহ।রক্তিম এক মিনিট, দুই মিনট করেই প্রায় দশ কি পনেরোবার ওয়াশরুমের দরজায় তাকিয়েছে।অদ্রিজার বের হওয়ার কথা নেই।অবশেষে যখন বের হলো তখনই অদ্রিজার মোবাইল বেঁজে উঠল। বিছানার উপর থাকা মোবাইলটার স্ক্রিনের উপর স্পষ্ট ভাসছে ” দিহান”

নামটা।রক্তিম একবার তাকিয়েই মুচকি হাসল।মোবাইলটা অদ্রিজার দিকে এগিয়ে দিয়েই বলে উঠল,
‘ প্রেমিকের সাথে কথা বলে আসুন। আমি অপেক্ষা করছি।’
অদ্রিজা হতবিহ্বল চোখে তাকিয়ে থাকল।স্ক্রিনে দিহানের নামটা দেখে সরু শ্বাস ফেলল।রক্তিমের সহজ ব্যবহারটা কেমন জানি বোধ হলো।ব্যবহারটা কি জটিল হওয়া উচিত ছিল?বোধ হলো না অদ্রিজার।কলটা কেঁটেই রক্তিমের দিকে তাকিয়ে বলে উঠল,

‘ ও আমার প্রেমিক নাহ।’
রক্তিম হাসল।অদ্রিজাকে লাল টকটকে শাড়িতে একনজর দেখে নিয়েই বলে উঠল,
‘ প্রেমিক নয় বলছেন?’
অদ্রিজা কঠিন কন্ঠেই বলল,
‘ নাহ।’

‘ আপনার কি মনে হচ্ছে আমি টিপিক্যাল স্বামীদের মতো বউয়ের প্রেমিক আছে শুনে রেগে যাব?কিংবা অভিমান করে কান্নাকাটি করব?উফফস!একদমই তা ভাববেন নাহ অদ্রিজা।আপনি সুন্দরী মেয়ে।রূপের কমতি নেই।আপনার একটা নয়, দশটা প্রেমিক থাকলেও অপরাধ হবে নাহ।আর আমি এই বিষয়ে আপনাকে সাপোর্ট করব। ‘

অদ্রিজা তেজি চাহনিতে তাকাল। রক্তিমের দিকে তীক্ষ্ণ চাহনি ফেলেই বলে উঠল,
‘ আমাকে কি আপনার মতোই হীন চরিত্রের মানুষ বোধ হয়? আপনি হাজারটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখতেই পারেন, হাজারটা মেয়ের সাথে সময় কাঁটাতেই পারেন কিন্তু প্লিজ আপনার চরিত্রটা আমার মধ্যে খুঁজতে যাবেন না রক্তিম।’

রক্তিম দাঁত কেলিয়ে হাসল।অদ্রিজার কাছাকাছি গিয়ে ফু দিয়ে উড়িয়ে দিল অদ্রিজার কপালে আসা চুল গুলো।নিরীহ মুখ করে বলে উঠল,
‘ আপনি কি রেগে যাচ্ছেন অদ্রিজা?টিপিক্যাল বউদের মতো স্বামীর পাশে অন্য মেয়েদের মানতে কষ্ট হচ্ছে?’
‘ একদমই নয়।’

‘ সে যায় হোক।আমি আপনাকে বলছি, আপনি দিহানের সাথে রিলেশনটা ভেঙ্গে দিবেন নাহ প্লিজ।একটা ছেলের মন ভাঙ্গবেন নাহ প্লিজ।আর তাছাড়া যে বিষয়ে কথা বলতে চাইছিলাম, বলি?’
‘ বলুন।’
অদ্রিজা বিরক্তি নিয়েই কথাটা বলেছিল।রক্তিম মৃদু হেসে নিজের হাতের ফাইলটা এগিয়ে দিল অদ্রিজার দিকে।তারপরই বলল,

‘ আপনাদের বাড়িটা? যেটা বিক্রি করে দিয়েছিলেন?সেটা ফেরত পাবেন খুব শীঘ্রই।কিন্তু তার বিনিময়ে আপনাকে একটা কাজ করতে হবে।’
‘ কিসব বলছেন?বাড়িটা বিক্রি করা হয়েছে, তার বিনিময়ে অর্ধেক টাকা শোধ করা হয়েছে।আর আপনি বলছেন ফেরত পাব!’

রক্তিম আয়েশ করে বসল বিছানায়।মাথার সিল্কি চুলগুলো হাত দিয়ে পেঁছনে ঠেলে দিয়েই বলল,
‘ ফেরত কিভাবে পাবেন তা তো আপনাকে ভাবতে বলিনি।শুধু একটা কাজ করবেন।বিনিময়ে আপনি আপনার বাড়ি পেয়ে যাচ্ছেন।সিম্পল।’
অদ্রিজা তেজ নিয়ে বলে উঠল,

‘ আমি কোন কাজ করব নাহ।আর বাড়িটাও পাওয়ার লোভ নেই আমার।’
রক্তিম ক্ষ্রিপ্ত চাহনিতে তাকাল অদ্রিজার দিকে।কপালের মাঝখানে রগটা সঙ্গে সঙ্গেই ফুলে উঠল তার।চোয়াল হয়ে উঠল শক্ত।মুঠো শক্ত করে সামনের চেয়ারটায় লাথি মেরেই উঠে দাঁড়াল সে।দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠল,
‘ একদম তেজি গলায় কথা বলবেন নাহ আমার সাথে অদ্রিজা।একদমই নাহ!শুধুমাত্র টাকার লোভে আপনি একটা দুশ্চরিত্র ছেলেকে বিয়ে করে নিলেন।সে বেলায় ভাবেননি আপনার এই কাজটা করা উচিত নয়?এখন বিয়েটা যখন করেছেন তখন আমার দেওয়া কাজটাও আপনি করতে বাধ্য।বাধ্য আপনি।মাইন্ড ইট!’

কথাটা বলে আর দাঁড়াল না রক্তিম।অদ্রিজা তাকিয়ে রইল রক্তিমের যাওয়ার পথে।টলমলে হয়ে উঠল চোখজোড়া।হয়তো জীবনের শেষ পর্যায়েও তাকে লোভী সম্বোধনটা পেতে হবে।আধো কি সে টাকার লোভে করেছে বিয়েটা?তাহলে কি সেইদিন বিয়েটা না করলেই ভালো হতো!

ভার্সিটিতে এসেই নিজের মাথা ঘুরিয়ে উঠল অদ্রিজার।সবার মুখেই একটা প্রশ্ন, ” দিহানের সাথে সম্পর্ক ছিল যখন, তখন অন্য একজনের সাথে বিয়েতে রাজি হয়ে গেল কেন সে?এভাবে একজনকে ভালোবেসে অন্য একজনকে বিয়ে করে নিল।” আরও কত কি!অদ্রিজা ঝাপসা চাহনিতে ক্লাসরুম থেকে বেরিয়ে আসছিল।ভার্সিটির মাঠের কাছে এসেই থমকে দাঁড়াল সে।গেইটের কাছাকাছিই রক্তিম।এদিকেই আসছে সে।অদ্রিজা মিনমিনে চোখে তাকাতেই দ্রুত এগিয়ে আসল রক্তিম।আশেপাশে তাকিয়েই বলে উঠল সে,

হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব ২

‘ দিহানের এক্সিডেন্ট হয়েছে অদ্রিজা।’
অদ্রিজা চারপাশ ভাসাভাসা হয়ে উঠল। মস্তিষ্ক ফাঁকা লাগছে তার!দিহানের এক্সিডেন্ট? যে ছেলেটার সাথে হাইস্কুল জীবন থেকে এটুকু পথ চলা সে ছেলেটাকে ভালোবেসেছিল কিনা সে জানে নাহ। তবে সে ছেলেটা তার চোখে উত্তম কেউ ছিল।আর তারই এরকম একটা খবর শুনে নিজেকে স্বাভাবিক রাখা আধো সম্ভব?

হৃদয় নিবাসে তুই পর্ব ৪