৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২২

৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২২
সারা চৌধুরী

আ..আ… আপনি…?
হুম কেন…?
আপনি কখন ঘুম থেকে উঠছেন..!
শুভ্র মুচকি হেসে সারার দিকে এগিয়ে আসলো.. সারা পিছাতে লাগলো এক সময় দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে গেলো.শুভ্র ও সারার দিকে আগাতে রুমের মধ্যে ঢুকে গেলো..শুভ্র রুমে ঢুকেই দরজা লক করে দিলো।।সারা কেপে উঠলো শুভ্র সারার দিকে তাকিয়ে আগাতে থাকলো শুভ্র.. সারা পিঠ দেয়ালে ঠেকতে সারা চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে নিলো।।শুভ্র সারার খুব কাছে এসে দাড়ালো নিজের শক্ত পোক্ত হাত সারার পেটে ছোয়াতেই সারা কেপে উঠে..শুভ্র সারার মুখের দিকে ঝুকে সারার মুখের উপর পড়ে থাকা ছোট চুল গুলো ফু দিয়ে সরিয়ে দেই..সারা চোখ খিচে বন্ধ করে আছে তাকিয়ে থাকার শক্তি নেই।। রীতিমত কাপছে সারা।।

শুভ্র সারার কাপাকাপি দেখে মুচকি হাসলো..দূরে সরে গেলো।। তারপর নেশা লাগা কন্ঠে বলে উঠলো…
-“পিচ্চি পাখি ঘুরতে যাবে এখানে নদী আছে।।মাঠ ও আছে…?
শুভ্রর কথায় সারা পিট পিট করে চোখ খুললো তাকিয়ে দেখলো শুভ্র এক দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে…বেমালুম সপ্নের কথা ভুলে গেলো..সারা চোখ নামিয়ে নিলো।।। তাকানোর শক্তি নেই তার আর লজ্জায় গিলে ফেল্লো তাকে ইশ কিভাবে ঠোঁট কামড়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে..!
-“পিচ্চি পাখি যাবে…শুভ্র শান্ত মায়া ভরা কন্ঠে বলে উঠে…!
-“চ.চলেন সারা তোতলায় বলে উঠে..!
-“পিচ্চি পাখি চুল ঠিক করে চাঁদর নাও বাইতে ঠান্ডা রোদ উঠবেনা আজ..!
-“আচ্ছা..সারা মৃদু স্বরে উত্তর দিলো..!

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

দশটা বিশ মিনিটে সবার চোখ ফাকি দিয়ে শুভ্র আর সারা বেরিয়ে গেলো গ্রাম ঘুরতে..শুভ্রর এক্টাই চাওয়া সারার হাসি।।। যা দেখলে শুভ্রর হৃদয় জুড়িয়ে যায়.গ্রামে শিশিরের ভেজা মেঠো পথ ধরে খালি পায়ে হেটে চলেছে শুভ্র আর সারা।।দূর থেকে সরিষা ক্ষেত দেখা যাচ্ছে..তবে সারার এই ফুলে এলার্জি হওয়ার গেলো না সোজা চলে এলো নদীর ধারে…নদীর তীরে বসে পানিতে পা ডুবিয়ে বসলো শুভ্র আর সারা।।এবার সারা বায়না ধরলো।।এতোদিন শ্রাবন ভাই গান শুনিয়েছে আজ আওনি শুনাবেন..শুভ্র মানা করলো সে গাইবেনা.. কিন্তু সারা নাছোড় বান্দা সে শুনেই ছাড়বে।।

-“আমি গান পারি না পিচ্চি পাখি আর এই সকালে কে গান শুনে..?
-“আমি শুনবো আপনার সমস্যা তালুকদার সাহেব..?
-“না গান বিকালে অথবা সন্ধাই শুনতে হয়..!
-আপ্নি গাইবেন কিনা বলেন..(সারা রাগী কন্ঠে বললো)-
-“নাহ কি করবা..!
-“এই আপনি আমার স্বামি.. আপনার দশটা না পাচটা না একটা মাত্র বউ আমি আমার কথা রাখবেন না আপনি(ঠোঁট উলটে কাদো কাদো হয়ে বলে সারা)
-“ইমোশোনাল ব্লাকমেইল করছো জান..(স্মিত হেসে শুভ্র বলে)
-“আর শুনানো লাগবে না..আমি কত শখ করে বললাম।।একটা গান শুনান..আমি আরো ভাবলাম এই কোয়াশার মাঝে নদীর গরম পানিতে পা ডুবিয়ে আপনার গান শুনবো..!

-“রাগ করো কেন।।রোমান্টিক ভাইব চলে আসলে কিন্তু আজ রাত..শুভ্র আর না বলে নিজের ঠোঁট কামড়ে ধরলো..!
সারা এবার বেশ রেগে গেলো।। উঠে দাড়াতে গেলেই শুভ্র হাত টেনে বসিয়ে কাছে টেনে নিয়ে সারার ঘাড় থেকে চাঁদর সরিয়ে সারার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে লম্বা একটা শ্বাস নেই..তারপর সারার ঘাড়ে থেকে হাল্কা মুখ উচু করে সারার চাঁদরে নিজেকেও আবৃত করে।। সারা আবেশে চোখ বুজে নেই।।শুভ্রের স্পর্শ পেলে সারা রাগ করতে পারে না।।সারার মারহা শুভ্র নিজের ঘাড়ে রাখে তারপর সারার হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোই নিয়ে নদীর বাষ্প ওঠা নীল জলে তাকিয়ে খালি গলাই গেয়ে উঠে…..

-“ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে..!
-“আমি হয়ে গেছি তারা..!
-“ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে..!
-“আমি হয়ে গেছি তারা..!
-“এই জীবন ছিল..!
-“নদীর মতো গতিহারা..!
-“এই জীবন ছিলো..!
-“নদীর মতো গতি হারা..!
-“দিশাহারা..!
-“ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে..!
-“আমি হয়ে গেছি তারা..!
-“ওগো তোমার আকাশ দুটি চোখে..!
-“আমি হয়ে গেছি তারা..!

শুভ্র থামলো।। সারা মাথা উচু না করেই বললো থামলেন কেনো..শুভ্র পকেট থেকে ফোন বের করে চেক করে বললো পিচ্চি পাখি এগারোটা বিশ বাজে এক ঘন্টা হয়ে গেছে আমরা বাড়ি থেকে বের হয়েছি তুমি কিছু খাও নি চলো..সারা উঠলো না আহ্লাদী কন্ঠে বললো তাইলে বলেন আমারে প্রতিদিন গান শুনাবেন..শুভ্র হাসলো আগে অহনার সাথে ভার্সিটি কেম্পাসে বসে এমন গানের কলি খেলতো..অহনা ও বায়না ধরতো সব সময় -অসময় গান শুনার জন্য।। শুভ্র ও খুশি মনে সব কাজ ফেলে আগে অহনাকে গুরুত্ব দিতো।।পুরোনো কথা ভেবে লম্বা দোম নেই শুভ্র..শুভ্রকে চুপ থাকতে দেখে সারা বলে উঠে কি হলো শুনাবেন না..শুভ্র সারার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো..আমার পিচ্চি পাখির আবদার আমি গ্রহন করলাম।।সারা খুশিতে দিকবেদিক ভুলে শুভ্রকে কিচ করে বসলো..যখন বুঝতে পারলো সে কি করেছে তখন লজ্জায় সারার তাড়াতাড়ি শুভ্রর পাশ থেকে উঠে সরি সরি করতে কর‍্যে পাড়ে চলে এলো।।এদিকে শুভ্র তার প্রেয়সীর থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত চুম্বন পেয়ে ফ্রিজ হয়ে গেছে..নদীর শীতল হাওয়াই।শুভ্রর হুসে এসে সারাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলো।।সারা রাস্তায় সারা এক বারো শুভ্রর দিকে তাকালো না..শুভ্র মুচকি হাসলো কিন্তু কিছু বললো না..!

শ্রাবিন সকাল থেকে সারা খুজে চলেছে মনে মনে এদিকে তার শান্তাকে নিয়ে সমস্ত প্লানিং শেষ.. সে শান্তাকে বলেছে সারাকে সে সহ্য করতে পারে না আর সে চাই শান্তা শুভ্রর বউ হোক।। কথাটা শুনে শান্তা অনেক খুশি হয়ে যায়।।মেঘ না চাইতে বৃষ্টি পেয়ে গেলে যেমন আনন্দ লাগে..শান্তা সব প্লানিং করে পিঠা খাচ্ছে সোফায় বসে বসে..এদিকে শ্রাবন এর রাগ বাড়ছে তিরতির করে শুভ্র সারা দুজন কেও বাড়ি নেই।।তারমানে তারা দুজন একসাথে..শ্রাবন এর মাথায় আগুন জলছে।তার বাড়ির পিছনে পুকুর পাড়ে গিয়ে বসলো।।

পুকুরে পানিতে ভরপুর সেই মুহুর্তে আনিশা কয়েকটা গ্লাস নিয়ে পুকুর পাড়ে আসে..গ্লাস গুলো শানের উপর রেখে সে নিচে নামে স্পষ্ট শ্রাবন ভাইকে দেখে পানিতে এক পা ভিজিয়ে আর এক শুকনো সানে রেখে একটা লাঠি দিয়ে পানি নাড়াচ্ছে..আনিশার মাথায় কু বুদ্ধি আসলো সে শ্রাবন কে ধাক্কা দিবে বলে পা টিপে টিপে শ্রাবন এর পিছে গিয়ে দাড়ালো..শ্রাবন তার থেকে দুই শান পরেই বসে আছে আনিশা পরের শানে পা দিতে শ্রাবন উঠে দাঁড়ায়।

৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২১

আকর্ষিকতায় আনিশা শ্রাবন এর সাথে ধাক্কা খেয়ে পা পিচলে পুকুরের ঠান্ডা পানিতে পড়ে…আনিশা সাতার না জানার ফলে এক গাদা পানি খেয়ে ফেলে হাবুডুবু খেতে থাকে।।শ্রাবন ও ভড়কে যায়.. কিচু বুজে উঠার আগে গলা সবান পানি তে পড়ে যায়..পুকুর বড় আর গভীর হওয়ায় পানি বেশি..শ্রাবন তাড়াহুড়ো করে আনিশাকে উচু করে ধরে..আনিশা কাশতে থাকে কাশতে কাশতে গা গুলিয়ে আসে..তখন শ্রাবন আনিশাকে শানে এনে বসিয়ে দেই তারপর রাম ধমক দিয়ে বলে উঠে….

৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২৩

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here