৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২৩
সারা চৌধুরী
চড়াই দাত গুলো সব ফেলে দিবো অসভ্য মেয়ে সাতার পারো না তা পুকুরে আসছো কেন…কমন সেন্স নাই তোমার।। যে পানিতে পড়লে উঠবো কিভাবে আমি।।আমারে ধাক্কা দিতে আসছিলা তাইনা।।এতক্ষনে আনিশা এবার কেপে উঠে যে প্রশ্নের ভয় করছিলো সেটাই সামনে এসে জিগাচ্ছে।।এই মেয়ে বলো।।শুধু ছোট বলে পার পেয়ে যাচ্ছো নইতো থাবড়িয়ে বেয়াদোবি বের করে দিতাম।।অসভ্য..স্টুপিড গার্ল..বলেই আনিশা কে পাশ কাটিয়ে উঠে গেল শ্রাবন এদিকে শ্রাবন যেতেই আনিশার চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো শীতে কাপতে কাপ্তে সেও উঠে দাড়ালো।পিছন ফিরে দেখলো শ্রাবন একেবারে শেষ সিড়ি তে গায়ের শার্ট ভিজে লেপ্টে আছে ফর্সা পিঠে স্পষ্ট বোজা যাচ্ছে জিম করা পেশি যুগল।।আনিশা চোখ নামিয়ে নেই তারপর বিড়বিড় করে বলে…
দেশে এতো ছেলে থাকতে আপনারে এতো সুন্দর হতে হলো কেন নাকি আমার কাছে লাগে।।ইশ আপনাকে যদি ছুয়ে দিতে পারতাম শ্রাবন ভাইয়া।।আব্বু যখন বলেছিলো মাধ্যমিক পরিক্ষার পর আমি যা চাইবো তাই দিবে তখন থেকেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি এই রাগচটা ভোম্বল শ্রাবন ভাইকেই চাইবো..আপনার বকা শুনতেও আমার ভালো লাগে বলেই চোখ বুজে বুকের বাম পাশে হাত দেই আনিশা।।তার পর চোখ খুলে বাড়ির ভিতরে চলে আসে।।।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
শুভ্ররা বাড়ি আসতে অরুর কান্না শুনে সারা অরুকে নিয়ে বাইরে চলে আসে শুভ্র আস্তে চাইলেও সারা নিষেধ করে খেয়ে নিতে বলে।।সারা বাগানে ঘাসের উপর বসে অরুকে ঘুম পড়াচ্ছে আর গল্প শুনাচ্ছে তখন একটা মেয়ে পিছন থেকে এসে বলে এই মেয়ে বসতে পারি তোমার পাশে।।সারা পিছু ঘুরে দেখলো তার সমবয়সী একটা মেয়ে দেখতে শুনতে ভালোই।।সারার বোরিং লাগছিলো তাই মেয়েটাকে বসতে বললো মেয়েটি ও হাসি মুখে সারার পাশে বসলো তারপর নাম জিজ্ঞাসা করলে সারা নাম বলে মেয়েটিও তার নিজের নাম জানায় ইতু।সারা ইতুর সাথে গল্পে মজে উঠে একাতু আঢটু কথা হটাৎ ইতু জিজ্ঞাসা করে আচ্ছা সারা এই বেবি টা কার।।সারা কোনো দিধা সাড়াই উত্তর দেই মেয়েটি তার।।ইতু বলে তুমি বিবাহিতো।। সারা হুম বললে ইতু আবারো জিজ্ঞাসা করে উঠে।।।
-আচ্ছা এই পিচ্চির আব্বুর নাম কি..?
সারা বলতে যেয়ে থেমে যায়।। কারন ছোট থেকে শুনেছে স্বামির নাম ধরতে নেই।।সারার ভাবনার মাঝেই ইতু বলে উঠে..
-সারা জানো শান্তা আপু আছে না শ্রাবন ভাইয়ার বোন..?
-হুম..!
-আপুর সামনে বিয়ে মনে হয় কিছুদিন পরেই।।
-কিহ..(সারার অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে)
-আরে হ্যা শান্তা আপুই বল্লো..?
-তুমি শান্তা আপুকে কিভাবে জানো ইতু..(সারা সন্দিহান কন্ঠে বলে)
-আরে আমার বাসা ওইজে -(হাত দিয়ে ইশারা করে একটা বাড়ির দিকে)
-ওহ।।(-সারা একটু হাসলো দম ছেড়ে)
-আসলে শান্তা আপুর বিয়ে আগেই হয়ে যেতো কিন্তু মাঝখানে একটা কারনে আর হয়নি…?
-কি কারনে…?-(সারা বেশ উতফুল্ল হয়ে জিজ্ঞাসা করে)-
-আসলে শান্তা আপু আর শুভ্র ভাইয়ার অনেক আগে থেকে প্রেম।। কিন্তু হটাৎ এক্সিডেন্টলি ভাইয়ার সাথে একটা মেয়ের সাথে চুক্তিতে বিয়ে হয়ে যায়।।তাই বিয়ের ডেট পিছাইছে..আজ কালের মধে আংটি পরিয়ে রাখবে তারপর সেই মেয়েকে ডিভোর্স দিয়ে বিয়ে..!
-কিহ…?-(সারা যেনো আকাশ থেকে পড়লো)-
-আমিতো এখন দেখে আসলা ভাইয়া শান্তা আপুর রুমে গেছে।আমি শান্তা আপুকে ডাকতে গিয়েছিলাম..!
-তুমি জানো তুমি কি বলছো…?(সারার মুখে কালো মেঘ নেমে আসে।।
-আরে হ্যা তুমি জানো.. (সারার কানের দিকে মুখ এগিয়ে নিয়ে এসে ফিসফিস করে বললো…আরে শুভ্র ভাইয়া আর শান্তা আপুর তো বিয়ের আগেই অনেক কিছু হয়ে গেছে..!
-অনেক কিছু মানে..(সারা শুকনো ঢোক গিললো ভয় তাকে ঘিরে ধরেছে)-
-আরে তুমার বাচ্ছা আছে বুজো না বিয়ের পর হাসবেন্ড ওয়াইফ যে সম্পর্ক করে সেইটা।।।
কথা টা শুনা মাত্র সারার ছোট্ট মস্তিষ্ক চক্কর দিয়ে উঠে নিজেকে সামলিয়ে নেই।।তখন ইতু বলে আচ্ছা থাকো এসব কাওকে বলিও না বললে কি না কি ভাব্বে।। আমাকে আম্মু ডাকে মনে হয়।।বলেই ইতু চলে যায় এদিকে সারার মস্তিষ্ক ফাকা ফাকা লাগছে চোখ দিয়ে পানি টপ টপ করে পড়তে লাগলো।।এই শীত কালো আকাশ ডাকছে হয়তো বৃষ্টি আসবে।। ঠিক আকাশের মতোই সারার মন মেঘে ঢেখে গেছে।। সারা ঘুমন্ত অরুকে নিয়ে বাড়ির মধ্যে ঢুক্তেই বাইরে মুষলধারে বর্ষন শুরু হয়।।
সারা অরুকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকতেই দেখতে পাই শুভ্রর রুমের দরজা চাপানো ডাইনিং ফাকা।। অন্য কর্নারের ঘরে বসে সবাই আড্ডা দিচ্ছে।।শুভ্রর চাচি তার শাশুড়ী আর ছোট শাশুড়ী রান্না ঘরে।। সারারান্না ঘরে গিয়ে মিসেস আনিতাকে ডাক্তেই তিনি আসলেন।।সারা অরুকে মিসেস আনিতার কোলে দিলেন।। তখন মিসেস সুমনা এসে বললো মা দাড়া শুভ্রর জন্য কফি নিয়ে জা ওর নাকি মাথা বেথা করছে শান্তা এসে বলে গেলো।।শান্তার নাম শুনতেই সারার চোখ জলে উঠলো।। হৃদপিন্ড লাফাতে লাগলো জোরে।।মিসেস সুমনা এসে সারার হাতে এক মগ কফি আর দিলেন একটা ট্রেতে।।সারা হাটতে লাগলো শুভ্রর রুমের দিকে মনে আতংক।। দোয়া করছে মনে মনে আল্লাহ সব মিত্থা হোক ইতুর কথা আমি সহ্য করতে পারবো না।।
শুভ্র খেয়ে উঠে রুমের দিকে যেতেই শান্তার সাথে দেখা শুভ্র বেশ কঠিন কন্ঠেই বললো শান্তু এক কাপ কফি এনে দে বোন আমার শান্তা হয়তো এটারই অপেক্ষায় ছিলো।।শান্তা তাড়াহুড়ো করে নিচে চলে গেল কফি আনতে শুভ্র কোনো দিকে না তাকিয়ে রুমে চলে এলো।।বেশ কিছুক্ষন পর শান্তা খালি হাতে মুখ কালো করে কাদতে কাদতে শুভ্রর রুমে ঢুকলো।।। শান্তা সিড়ি দিয়ে দেখলো সারা এদইকে আসছে সে তাড়াতাড়ি শুভ্রর রুমে ঢুকে গেলো।।
৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২২
শুভ্র শান্তাকে কাদতে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে বল্লো কি হয়েছে..সাথে সাথে শান্তা দৌড়ে গিয়ে শুভ্রকে জড়িয়ে ধরলো টাল সামলাতে না পেরে দুজনে উলটে বিছানায় পড়লো..ঠিক সেই মুহুর্তে সারা দরজা ঠেলে রুমে প্রবেশ করে..বিছানার দিকে তাকাতেই হাত থেকে কাপ পড়ে যায়।।ঝনঝন শব্দে টুকরো টুকরো হয়ে যায় কাচের কাপটি।।কিছু ভাঙার শব্দে শুভ্র তাকাতেই দেখতে পাই নিস্তব্ধ সারাকে।।এক মুহুর্ত দেরি না করে শান্তাকে জোরে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে উঠে বসে।।শুভ্র কিছু বলার আগেই সারা শান্ত কন্ঠে বলে উঠে….
