৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২৬

৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২৬
সারা চৌধুরী

মানে হলো আমি সারা আর শান্তার বিয়ে দিবো।।বাড়ির সকলে অবাক।।আনিস আস্তে করে বলে উঠলো কি বলছো ভাইয়া।।সারা বিবাহিত।ফারুক তালুকদার বেশ রুষ্ট কন্ঠেই বলে উঠলো।।আমি চাই নাহিদ এর শান্তার বিয়ের পর শুভ্র আর সারার বিয়ে হোক।।এতদিন যেহেতু চুক্তি চুক্তি করেছো সবাই।।সেহেতু আমি চাই চুক্তি জিনিসটাই সারার মামুনির জীবন থেকে সরাতে।।।আমি চাইনা আমার কথার পিঠে কোনো কথা আসুক।।ফারুক তালুকদার এর শেষ কথায় আর কেও কিছু বললো না আসলেই মেয়েটার কপালে চুক্তি লেখা হয়েছিলো এখন যদি সেটা খন্ডন করে নতুন করে শুভ্র বউ হিসাবে পাকাপোক্ত করা যায়।।

মেয়েটা সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ পাবে।।সবার ভাবনার মাঝেই ফারুক তালুকদার বলে উঠে।। কাজি সাহেব বিয়ে পড়ানো শুরু করুন।।কাজি এসে সব লেখা লেখি শুরু করে নাহিদ কবুল বলতে বললে নাহিদ এক দমে তিনবার কবুল বলে দেই।।কিন্তু শান্তার বেলায় কবুল বলতে বললে শান্তা বলে না তখন শ্রাবন একটা ধমক দিতেই শান্তা কেদে উঠে বলে কবুল কবুল কবুল।।তারপর রেজিষ্ট্রেশন কাগজে স্বাক্ষর করে পাচ লক্ষ টাকা দেনমোহর এর বিনিময়ে বিয়ে সমপন্ন হয়।।ফারুক তালুকদার হটাৎ কি ভেবে বলেন আমরা আজকেই সিলেট ব্যাক করবো আর শুভ্র আর সারার বিয়ে সেখানেই দিবো।।ফারুক তালুকদার এর হটাৎ মত পরিবর্তন এর কারন কেও বুঝে না।। তবে তার কথার পিঠে কথা বলার সাহস কারোর হয়নি এখোনো।।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সন্ধ্যা সাত টা।। সবার গোছানো শেষ শান্তা একবারো রুম থেকে বের হয়নি।।লজ্জায় কষ্টে মাথা কাটা যাচ্ছে তার।।মিসেস মনিরা কয়েকদিন থাকবেন এখানে মেয়ের কাছে হটাৎ তো আর রেখে যাওয়া যাই না।।।মিসেস মনিরা আর শান্তা বাদে সবাই বেরিয়ে গেলো তালুকদার বাড়ির উদ্দেশ্য।। যেভাবে এসেছিলো সেভাবেই যাচ্ছে।।তবে আসার সময় যতটা না সারার মুখে শ্রাবন এর জন্য ভালোবাসা ছিলো যাওয়ার সময় সারার চোখে তার দ্বিগুন ঘৃনা স্পষ্ট।। শুভ্রর চোখ সামনে মুখোমন্ডল সাভাবিক।।আনিশা মোবাইল এ গেম নিয়ে ব্যাস্ত।।।শ্রাবন একটা দীর্ঘশাষ ফেলে বাইরে তাকালো।নিজের প্রতি নিজেরি ঘৃনা লাগছে।। -“সে তার নিজের ভুলের জন্যই সারাকে সারাজীবনের জন্য হারিয়ে ফেললো হয়তো।।আর কখোনো হয়তো সারা তাকে ডাকবে না।।সেই মায়া ভরা চোখে তাকাবে না।।কোনো কিছুর আবদার করবে না।।”-

শ্রাবনের শান্তার জন্যও খারাপ লাগছে এটা সত্যি তার বোন শুভ্র কে ভালোবাসতো তবে নাহিদ আর আকাশ এর সাথে যখন খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়লো তখন সে নিজেই বুজলো তার বোন ভালোবাসার যোগ্য না।।তাই সে আর শুভ্রর সাথে বেশি মিশতে দেই নি শান্তা কে।।।যতই খারাপ হোক বোন তো বোন ই।। বিয়ে দিয়ে দিয়েছে।।তার বোনটাও তার থেকে দূরে চলে গেলো।।শ্রাবন বিড়বিড় করলো….
-“আমি হাত দিয়ে যা ছোয়ার চেষ্টা করি।।তা সব সময় তামাক পাতার মতো জ্বলে গিয়ে আমার হৃদয়টাকে ক্ষত-বিক্ষত করে ছাড়ে”-

গাড়ি চলছে নিজ গতিতে।।শুভ্র শান্ত শ্রাবন অশান্ত।।সারা ঘুমিয়ে আর আনিসগা ঘুমিয়ে গেছে অনেক আগেই।।হটাৎ শুভ্রর বলা কথায় শ্রাবন এর মুখে জোরালো হাসি ফুটে উঠে।। সে হয়তো এটাই আশা করেছিলো তার ভাইয়ের থেকে।।যতই হোক বেস্ট ফ্রেন্ড তো।।দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে রাত তিন টার দিকে সবাই একটা খাবার হোটেল এর সামনে থামে।।শুভ্র বেরিয়ে সারার হাত ধরে লাবাই।।মেয়েটার জর এসে গেছে।।প্রচন্ড তেগে গেলে মেয়েটার জর আসে।।শুভ্র জানতো তবে আজ বুঝলো।।সারা ক্লান্ত শরীর নিয়ে গাড়ি থেকে লেবে দাড়ালো প্রচন্ড খিদে পেয়েছে তার।।সবাই রেস্টুরেন্টের ভিতরে ঢুকে গেলো।।শীত হওয়াই চারিদিকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা।।সারা মাথা উচু করে দেখলো রেস্টুরেন্টের নাম।।বিশাল বড় বোর্ড৷ এ লেখা সন্ধ্যাবতী রেস্টুরেন্ট।।সারা শুভ্রর দিকে একবার তাকিয়ে হাত ধরে হাটা শুরু করলো।।শুভ্র সারার কপাল চেক করে দেখলো জর অল্প তবে শরীর ক্লান্ত।।। কিছু খাওয়াই ওষুধ খেলে ঠিক হয়ে যাবে।।

শুভ্র সারা আর আনিশা জেটে যাচ্ছে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে বুকে হাত গুজে সেফিকে তাকিয়ে স্মীত হাসলো।।সবাই ভিতরে গিয়ে টেবিল বুক করে খেতে বসলো এই শিতের রাতে গরম গরম রুটি আর গরুর মাংশ অর্ডার করলো ফারুক তালুকদার।। সবাই সম্মতি দিলো।।সবাই সবার মতো খাওয়ার পর মিসেস আনিতা অরুকে ফিডার খাওয়ালেন।।শুভ্র পকেট থেকে টাফনিল বের করে সারাকে দেই।।সারা পানি দিয়ে খেয়ে নেয়।।চোখ মুলহ বসে গেছে মেয়েটার।। সবাই আবার গাড়িতে গিয়ে বসলো।।এখন যেনো আরো বেশি কোয়াশা রাস্তায় সামনের কিছু ভালোভাবে দেখা যাচ্ছে।।শুভ্র খুব সাবধানে ড্রাইভিং করছিলো এতক্ষন এবার শ্রাবন ড্রাইভিং করছে।।চোখ গাড়ির মিররে সারার আর আনিশার দিকে।।মেয়ে দুটো একে অন্য ঘাড়ে আর এক জন মাথায় মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে।।শ্রাবন হাসলো তারপর গাড়ির স্ট্রিয়ারিং ঘুরিয়ে খালি গলাই গেয়ে উঠলো……

-“মেষের উপর আকাশ উড়ে..!!
-“নদীর ওপার পাখির বাসা..!!
-“মনে বন্ধু বড় আসা..!!
-“যাও পাখি যারে উড়ে..!!
-“তারে কইও আমার হয়ে.!!
-“চোখ জলে যায় দেখবো তারে..!!
-“মন চলে যায় অদুর দূরে..!!
শ্রাবন থামে নিশ্বব্দে শাস নেয়।।তখনই গাড়ির সিট থেকে মাথা উচু করে শুভ্র গেয়ে উঠে….

৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২৫

-“বুকের ভিতর নোনা ব্যাথা..!!
-“চোখে আমার ঝরে কথা..!!
-“এপার এপার তোলপাড় একা..!
-“যাও পাখি বলো তারে…!!
-“সে যেনো ভোলে না মোরে..!!
-“সুখে থেকো ভালো থেকো..!!
-“মনে রেখো এ আমারে.!!

৪ বছরের চুক্তির মা পর্ব ২৭

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here