দোলনচাঁপার সুবাস পর্ব ৪৮
তাসফিয়া হাসান তুরফা
পরদিন সকালে দোলার ঘুম ভাঙলো ৮টার দিকে৷ উঠার পরপরই কিছু ওর মনে পড়লোনা। খানিকক্ষণ বোকার মতো আশেপাশে দেখে মনে পড়লো, ও এখন নিজের রুমে নেই। থাকার কথাও নয়। বরং, সে এখন এই সুন্দর রুমের সুদর্শন মালিকের সুদৃঢ় বাহুডোরে আবদ্ধ আছে। বিষয়টা ভাবতেই দোলার গা শিউরে উঠছে! পাশ ফিরে তাকাতেই ঘুমন্ত নিশীথের দিকে চোখ পড়ে ওর। যে কিনা ওকে জড়িয়ে ধরে গম্ভীর মুখে ঘুমাচ্ছে। অথচ জেগে থাকলে কত কথাই না সে বলে!
দোলা মনে মনে হাসে! ভাবে কাল রাতের কথা। নিশীথ কি তবে রাগ করলো ওর উপর? অবশ্য করারই কথা। যে বিয়ের জন্য নিশীথের এত এত অপেক্ষা, তার অন্তিম মুহুর্তে এসে বাসররাতে ওর ঘুমিয়ে পড়াটা নিতান্তই নিশীথের অসন্তোষের কারণ হতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছুই নয়। তবে দোলা যে ইচ্ছে করে ঘুমিয়েছে এমনটা না, নিশীথের জন্য অপেক্ষা করতে করতে কখন যে সারাদিনের ক্লান্তি উড়ে এসে দু’চোখে ভর করেছে ও টেরই পায়নি! দোলা মনে মনে লজ্জিত হয়। না জানি নিশীথ রুমে ফিরে ওকে ঘুমোতে দেখে কি না কি ভেবেছে?
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
নিশীথ উঠার আগেই দোলা চটজলদি উঠে লাগেজ থেকে শাড়ি বের করে চলে যায় বাথরুমে। সময় লাগিয়ে গোসল করে বের হয়ে সুন্দরমতোন রেডি হয়ে ঘুমন্ত নিশীথকে একপলক দেখে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। রুম থেকে বেরিয়ে ডাইনিং এর দিক যেতেই শাশুড়ির সাথে দেখা হয়।
—ঘুম হয়েছে ঠিকমতো? কোনো অসুবিধে হচ্ছেনা তো তোমার?
আসমা বেগম জিজ্ঞেস করেন। দোলা নম্র স্বরে বলে,
—না, মা। আমি ঠিক আছি।
—তাহলে বেশ! চলো ড্রয়িংরুমে বসি। ওখানে তোমার দাদাশ্বশুর আর নিশীথের বন্ধু, কাজিনরা বসে আছে!
এভাবে কথাবার্তা হওয়ার মাঝেই তিনি ড্রয়িংরুমে নিয়ে যান দোলাকে। সেখানে দাদুর সাথে নিশীথের কাজিনরা বসে ছিলো। দোলাকে দেখতেই নিশীথের কাজিনরা একত্রে রসিকতার সুরে গুড মর্নিং বলে উঠে। দোলা লজ্জা পেয়ে হাসে। সবার সাথে টুকটাক কথা বলে। এরই মাঝে দাদু বললেন,
—আমার নাতি কি উঠেছে? নাকি এখনো পড়ে পড়ে ঘুমোচ্ছে?
—এখনো উঠেননি, দাদু।
দোলা জবাব দেয়। ইউনুস সাহেব হেসে বললেন,
—এটা কিন্তু আমাদের জন্য নরমাল বিষয়। বুঝলে, দোলনচাঁপা? ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১টার আগে মহারাজের ঘুম ভাংগেনা।
—উনি এত দেরিতে উঠেন?
দোলা অবাক গলায় শুধায়।
—হ্যাঁ, সবে তো ১০টা বাজে। এটা নিশীথের কাছে ভোরবেলা মাত্র!
দাদুর কথা শুনে দোলা কিছু বলবে এর আগেই তূর্য বলে উঠে,
—আগে তো ভাই দেরিতেই উঠতো! তবে এখন থেকে ভাইকে ভোরবেলায় উঠতে দেখলেও আমরা অবাক হবোনা! বুঝলে, দাদু?
—তা বলেছিস, তূর্য। আমাদের ভাবি বললে দেখা যাচ্ছে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে নিশীথ ভাইও সকাল সকাল উদয় হয়ে যাবে!
আকাশের কথায় হাসির রোল পড়ে যায় সবার মাঝে। বন্ধুদের পাশাপাশি নিশীথের কাজিনরাও বেশ হাসছে। দোলা এমনিতেই লজ্জা পাচ্ছিলো, পাশে তাকাতে দেখলো দাদুও মুচকি মুচকি হাসছেন আকাশের কথায়। সব মিলিয়ে বেচারি লজ্জায় নাজেহাল হয়ে আছে! এমন সময় নিশীথের কাজিন তরু দোলার উদ্দেশ্যে বলে,
—ভাবি, তুমি আজকেই আমাদের প্র্যাকটিকাল করে দেখাও না গো? এক্ষুনি যেয়ে নিশীথ ভাইকে ডেকে তুলো তো। আমরাও চোখের সামনে লাইভ উদাহরণ দেখি!
তরুর কথায় আবার হাসে সকলে। দোলা এতক্ষণ চুপ করে থাকলেও এবার আর চুপ রয়না। মুখ খুলে বলে,
—মা রান্নাঘরে একা আছেন। আমি যাই তার কাছে। হয়তো কোনো হেল্প লাগতে পারে!
আর কারও কথার অপেক্ষা না করে দোলা উঠে পালালো ড্রয়িংরুম থেকে। ও উঠে যেতেই দাদু সবার উদ্দেশ্যে বললেন,
—বেচারি মাত্র এসেছে এ বাসায়। ওকে সকাল সকালই এভাবে লজ্জা দিতে হলো তোদের? পারলে এসব নিশীথের সামনে বলে দেখাস! দেখবোনি কেমন পারিস।
—আরে দাদু, এভাবে বলছো কেন! এটাই তো নতুন নতুন বিয়ের মজা। এটুকু মজা তো নিতেই পারি। তাছাড়াও, আমরা কি তোমার নাতিকে ভয় পাই নাকি? ভাইয়ের সামনেও বলতে পারবো!
আকাশ ভাব মেরে বলে। তূর্য, কবির ওর কথায় সাড়া দেয়। এরই মাঝে আওয়াজ আসে,
—কি বলবি তোরা আমার সামনে?
হঠাৎ করে বসারঘরে নিশীথের আগমনে সকলে চমকে উঠে। ইউনুস সাহেব নাতিকে দেখে হাসলেও নিশীথের বন্ধুদের মুখটা দেখার মতো হয়। একবার নিশীথকে তো একবার একে-অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করে কতক্ষণ তিনজনে! এরই মাঝে নিশীথ আবার বলে,
—কি হলো? হঠাৎ থেমে গেলি কেন? বল কি বলতে চাইছিলি আমায়!
—ভাই, আকাশ ভাবিকে বলছিলো, তুমি নাকি আজকেও ঘুম থেকে ১টায় উঠবে।
তূর্য মিনমিনিয়ে বলে। আকাশ চোখ বড় বড় করে তাকায় পাশে বসা তূর্যর দিকে। বন্ধু যে এভাবে সব দোষ একাই তার ঘাড়ে ঢেলে দিবে তা সে কস্মিনকালেও ভাবেনি। ও হিসহিসিয়ে বলে,
—তাই না রে? আমি একাই যেন বলছিলাম! শুরু তো তুই করেছিলি। দাদু সাক্ষী আছে, তাইনা দাদু?
আকাশ ইউনুস সাহেবের দিকে তাকায়। নিশীথ ভ্রু কুচকে ওদের দিক চেয়ে রয়। এদিকে ইউনুস সাহেব ছেলেদের কাণ্ডকারখানা দেখে হু হা করে হেসে ফেলেন। নাতির দিক চেয়ে বলেন,
—ওদের কথা বাদ দে, নিশীথ। এমনিই মজা নিচ্ছিলো তোর সাথে। কিন্তু তুই এত সকালে উঠলি যে? ব্যাপার কি, দাদুভাই? বিয়ে না হতেই রাতারাতি এত পরিবর্তন? এটা তো আমরা আশা করিনি!
দাদুর ঠেশমারা কথায় বাকিরা হেসে উঠলেও নিশীথ মুখটা আগের মতোই করে রাখে। ওর মুখ এখনো ফুলোফুলো। চোখ দুটো ইষত লাল। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে কপালের দুপাশে পড়ে আছে। ও থমথমে কণ্ঠে বলে,
—সিম কার্ড কোম্পানির ফোন এসেছিলো, ঘুমটা ভেঙে গেছে। তাই ভাবলাম চলে আসি এদিকে। দেখি তোমরা সবাই কি করছো।
—আমরা তো প্রতিদিনই এখানে থাকি। তবু কখনো দেখতে এলিনা। আজ হঠাৎ এত সুবুদ্ধি উদয় হলো কি করে? শুধু আমাদেরই দেখতে এসেছিস নাকি অন্য কাউকে?
দাদুর কথায় নিশীথ হাসে। ও মাত্রই এদিক-ওদিক তাকিয়ে দোলাকে খুজছিলো। দাদুর কথা শুনে বলে,
—ভালো হয়ে যাও, বুড়ো! এ বয়সেও আমার সাথে এগুলো ফাইজলামি করতে হবে?
দাদু জবাব না দিয়ে হাসি হাসি মুখ করে তাকাতেই নিশীথ ফ্রেশ হতে চলে গেলো রুমে। ও যেতেই আকাশ তূর্যকে চা’টি মেরে বললো,
—হারা’মি, শুধু শুধু ভাইয়ের সামনে আমায় কালার করলি কেন? তুই তো শত্রুর চেয়েও খারাপ!
—অনেকদিন তোকে মাইর খেতে দেখিনা ভাইয়ের হাতে। তাই আজ হঠাৎ মন চাইলো!
তূর্য ভেটকি হেসে বললো। ওমনি দুজনের মধ্যে হা’তাহাতি শুরু হয়ে গেলো। কবির ব্যস্ত হয়ে দুজনকে থামাতে লাগলো। ইউনুস সাহেব ছেলেদের দুরন্তপনা দেখে মাথা নেড়ে উঠে গেলেন!
শাশুড়ির সাথে রান্নাঘরে টুকটাক গল্প করার মাঝে দোলা সবার জন্য পায়েস রান্না করলো। সকালের নাস্তার সাথে এটা পরিবেশন করা হবে। খাবার টেবিলে সবাই বসলেও নিশীথ তখনো ফ্রেশ হয়ে বেরোয়নি। দোলা জানেওনা নিশীথ উঠে গেছে। তাই নিজমনে সবাইকে খাবার সার্ভ করছিলো। এতক্ষণ কাউকে সার্ভ করতে কোনোরুপ জড়তা কাজ না করলেও এবার ওর মনে ভর করলো খানিকটা অস্বস্তি, একিসাথে ভয়। কারণ, এখানে বসে আছেন স্বয়ং ওর শ্বশুড়মশাই! আয়মান সাহেব গম্ভীরমুখে বসে আছেন প্লেটের দিকে তাকিয়ে। দোলা দুটো পরোটা তুলে দেওয়ার পর আরেকটা দিতে ধরতেই উনি হাতের ইশারায় থামিয়ে দিলেন। তা দেখে দোলা থেমে গেলো। মনে সাহস জুগিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
—পায়েস দিবো, বাবা? আমি রান্না করেছি।
—আমি মিষ্টিজাতীয় আইটেম পছন্দ করিনা।
আয়মান সাহেব রাশভারি গলায় জবাব দিলেন। এতক্ষণ সাহস দেখালেও এবার দোলা মনে মনে চুপসে গেলো। তা ওর মুখ দেখেই স্পষ্ট বুঝা গেলো। আয়মান সাহেব না তাকালেও ইউনুস সাহেব ওর মুখের দিক তাকিয়ে সেটা বুঝলেন। দোলার উদ্দেশ্যে বললেন,
—একদিন মিষ্টি কিছু খেলে কিছু হয়না, আয়মান। নতুন বউ প্রথমদিন রান্না করেছে মানা করতে হয়না।
দাদুর কথায় দোলার মনে আশা জাগলো। ও শ্বশুড়ের দিকে তাকিয়ে থাকলেও আয়মান সাহেব তাতে এক বালতি জল ঢেলে বললেন,
—যেটা ভালো লাগেনা সেটা লাগেনা, বাবা। সবকিছুতে তো আর তোমরা জোর করতে পারোনা।
আয়মান সাহেব এর কথায় আসমা বেগম দোলার দিকে তাকিয়ে বললেন,
—তুমি বাকিদের সার্ভ করো, মা। তোমার শ্বশুর খাবার নিয়ে একটু খুতখুতে তো? আমিই উনাকে বেড়ে দিচ্ছি!
দোলা চুপচাপ মাথা নেড়ে বাকিদের খাবার বেড়ে দিতে লেগে যায়। এরই মাঝে গোসল করে রেডি হয়ে ফিটফাট নিশীথ প্রবেশ করে ড্রয়িংরুমে।
সবাইকে টেবিলে বসা দেখে ও হাত ধুয়ে এসে নিজেও বসে পড়ে। নিশীথকে বসতে দেখে দোলা ওকে খাবার বেড়ে দেয়। নিশীথ একপলক দোলার দিকে চাইতেই অবাক হয়ে যায়। মুখ নিচু করে রেখেছে মেয়েটা। মাথায় দেওয়া শাড়ির আঁচলের নিচে যেন নিজের অনুভূতিগুলো আড়াল করে রেখেছে সে! দোলা দুটোর জায়গায় তিনটে পরোটা দিলেও নিশীথ কিছু বলেনা। বরং একধ্যানে ওর দিকে তাকিয়ে ওর মুখ দেখার চেষ্টা করে, কি হয়েছে বুঝার চেষ্টা করে! সবাইকে সার্ভ করা শেষ হলে আসমা বেগম দোলাকে বসতে বলে নিজেও বসে যান টেবিলে।
যথারীতি টুকিটাকি কথাবার্তার মাঝে দিয়ে সকলের খাওয়াদাওয়া শেষ হয়। দোলা তেমন কিছু খেলোনা, একটা পরোটা পায়েস দিয়ে নেড়েচেড়ে খেয়ে উঠতে নিলেই নিশীথ ওর বামহাত চেপে ধরে টেবিলের নিচ দিয়ে। দোলা আড়চোখে পাশ ফিরে তাকায়। নিশীথের চোখের দিক তাকিয়ে চোখের ইশারায় মিনতি করে হাত ছেড়ে দেবার জন্য। নিশীথ তা বুঝে অনিচ্ছা সত্ত্বেও হাত ছেড়ে দেয়। দোলা উঠে চলে গেলে কিছুক্ষণ বাদে নিশীথ উঠতে ধরে এমন সময় আয়মান সাহেব সবার উদ্দেশ্যে বললেন,
—আজ সন্ধ্যায় রিসেপশনের প্রোগ্রাম। সবাই যেন টাইমের আগে আগে রেডি হয়ে যায়। অনেক ইম্পর্ট্যান্ট গেস্ট আসবে আজকে। কারও যাতে লেইট না হয়!
কথাটা তিনি সবার সামনে বল্লেও পারতপক্ষে যে সেটা নিশীথকেই শুনিয়েছেন এ ব্যাপারে বুঝতে ওর বিলম্ব হয়না। নিশীথ কিছু না বলে বাবার দিকে তাকায়েই দেখে আয়মান সাহেব ইতিমধ্যে ওর দিকে তাকিয়ে আছেন। নিশীথের নজর পড়তেই উনি চোখ সরিয়ে নিলেন। তা দেখে নিশীথ দীর্ঘশ্বাস ফেলে চুপচাপ উঠে নিজের রুমে চলে এলো!
রুমে ফিরে নিশীথ দেখলো দোলা নেই। ও এখনো আসেনি ভেবে বিছানায় বসে বসেই কিছুক্ষণ ফোন টিপে ওর জন্য অপেক্ষা করলো। তবুও দোলা আসছেনা দেখে এক পর্যায়ে বিরক্ত হয়ে ও নিজেই উঠে গেলো। পুরো বাড়ি ঘুরেও যখন দোলাকে পেলোনা তখন অবাক হয়ে পুনরায় রুমে ফিরে এলো। কি মনে করে দ্রুতপায়ে হেটে বারান্দার দরজা ঠেলে প্রবেশ করতেই দেখলো রেলিঙ ধরে দোলা দাঁড়িয়ে আছে। নিশীথ স্বস্তির শ্বাস ফেললো। দোলা এখনো টের পায়নি নিশীথের উপস্থিতি। এর মাঝে হঠাৎ নিশীথ পেছন থেকে জড়িয়ে ধরতেই দোলা চমকে কেপে উঠলো। নিশীথ ওর কাধ থেকে চুল সরিয়ে খোলা কাধে থুতনি ঠেকিয়ে বললো,
—চমকে উঠলে যে? এখন তোমার বিয়ে হয়ে গেছে। এসবের অভ্যাস করে নাও বুঝলে!
—আপনি কখন এলেন? আমি বুঝতে পারিনি।
—তা পাবে কেন? এতক্ষণ হন্যে হয়ে সারা বাড়ি তোমায় খুজে বেড়ালাম আর সবশেষে বারান্দায় ঢুকে দেখি তুমি এখানে!
—ওহ। একটু বাতাস খেতে এসেছিলাম। আমায় কেন খুজছিলেন? কোনো কাজ ছিলো?
—আমার সব কাজ তো এখন তোমায় ঘিরেই, দোলনচাঁপা!
নিশীথ আরেকটু ঘেষে দোলাকে ধরে জবাব দেয়। দোলা মুচকি হাসে। এরই মাঝে নিশীথ সরে দাঁড়ায়। দোলাকে নিজের দিক ফেরাতেই ওর চোখের দিকে নজর যায়। ফোলা ফোলা লালচে হওয়া চোখদুটো দেখে নিশীথের বুকের মাঝে মোচড় দিয়ে উঠে।
নিশীথ প্রশ্ন করে,
—চোখদুটো এমন লাল কেন? তুমি কি কাদছিলে?
দোলা জবাব দেয়না। উপরন্তু, নিশীথের চোখে সরাসরি তাকানোর সাহস পায়না। চোরাচোখে এদিক-ওদিক তাকায়। নিশীথ ওর মুখ ধরে টেনে তুলে নিজের দিকে। দোলা বাধ্য হয় ওর দিক তাকাতে। নিশীথ শান্ত গলায় আবারো শুধায়,
—কিছু জিজ্ঞেস করেছি, দোলনচাঁপা। সুন্দরভাবে জবাব দাও। তুমি কেন কাদছিলে?
—ক,কই? কাঁদিনি তো! চোখে কিছু পড়েছিলো হয়তো..
মিথ্যে বলতে দোলার কণ্ঠ কাঁপে। নিশীথের বুঝতে দেরি হয়না। ও কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে হঠাৎ করে গর্জে উঠে বলে,
দোলনচাঁপার সুবাস পর্ব ৪৭(২)
—উনি কিছু বলেছে তোমায়, তাইনা?
নিশীথের শক্ত চোয়াল ও চোখেমুখে স্পষ্ট ক্রোধের আভাস। ভয়ে দোলার কণ্ঠ শুকিয়ে যায়। কি জবাব দিবে, কি দিবেনা ভাবতে ভাবতে ঢোক গিলে মুখখানি ফিরিয়ে নেয়!