একটি নির্জন প্রহর চাই সিজন ২ পর্ব ৮

একটি নির্জন প্রহর চাই সিজন ২ পর্ব ৮
Mousumi Akter

সাত -সকালে সারাহ পড়ল মহা চিন্তায়। রোশান কি এখন সত্যি আসবে? নাকি শুধুই ভ’য় দেখালো।একদিকে ঘুমে টলমল করছে দু’চোখ অপরদিকে যদি রোশান আসে চিন্তা।দু’চোখ ভর্তি ঘুম নিয়ে সারাহ দুঃখী দুঃখী মন নিয়ে বিড়বিড় করছে, বাবা যে কেন এমন সিরিয়াস মানুষের সাথে বিয়েটা দিয়ে দিল।একেতো কথা-বার্তায় রস -কষ নেই,গম্ভীর,অন্যদিকে সব বিষয়ে সিরিয়াস।কথা বললেই ভুল ধরে।অন্যদের মত যে উল্টা পাল্টা কিছু বলব তাতে সে সম্পর্কে হয় টিচার।এসব ভাবতে ভাবতে সারাহ আবার সুয়ে পড়ল।গায়ে পাতলা কাঁথা জড়িয়ে মুড়ি ঝুড়ি দিয়ে গভীর ঘুমের তলদেশে প্রবেশ করল।

আরো ঘন্টাখানিক অতিবাহিত হল।ঘড়িতে সকাল ছয়টা বাজে।সারাহ’র কর্ণকুহরে কোনো একটা আওয়াজ প্রবেশ করে মস্তিষ্কে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে।প্রথম অবস্থায় সারাহ’র কাছে তা নেহাৎ স্বপ্ন মনে হলেও পাঁচ মিনিটের মাঝে সে আবিষ্কার করল এটা স্বপ্ন নেই।মস্তিষ্ক নাড়া দিয়ে উঠল।সারাহ অনুধাবন করল তাকে কেউ ডাকছে বিরতিহীন ভাবে।সারাহ চোখ খুলল। এবার টের পেল বাইরে থেকে তার আম্মু ডাকছে।সারাহ’র আম্মুর ডাকাডাকিতে দ্বিতীয়বারের মত ঘুম ভাঙল সারাহ’র।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

একই সকালে যদি দু’বার ঘুম ভাঙে এর চেয়ে অসহ্যজনক, বিরক্তকর আর কিছু হতে পারে।ঘুম কাতুরে মেয়েটা ঘুম থেকে উঠে বিছানা ছাড়ল।চোখ ডলতে ডলতে দরজা খুলে বিরক্তির সাথে মোটা কন্ঠে বলল,
“কি ব্যাপার আম্মু। এত সকালে ডাকাডাকি করছো কেন?ঘুমোতে দাও আমাকে। সারারাত জেগে বই পড়েছি।”
সারাহ’র আম্মু মেয়ের কথায় ডাগর চোখে মেয়ের দিকে তাকাল।একটা মানুষ কতটা অবাক হলে ডাগর চোখে হা করে তাকিয়ে থাকতে পারে।মায়ের এমন চাহনিতে সারাহ বুঝতে পারল তার বলা ডাহা মিথ্যা তার আম্মু একবিন্দু বিশ্বাস করেনি।সারাহ কপাল কুচকে বলল,

“ওভাবে তাকিয়ে আছো কেন? যেন আমি মিথ্যা বলছি।”
সারাহ’র আম্মু গম্ভীর মুখে বলল,
“চন্দ্র, সূর্য আজকাল কোন দিক দিয়ে উঠছে খেয়াল করে দেখতে হবে।” মাতৃভাষার অপমানটা সারাহ’র গায়ে লাগল।সারাহ এইবার গলার খাঁদ উপরে তুলে বলল,
“কি আশ্চর্য আম্মু।সাত -সকালে কি আমাকে অপমান করার উদ্দেশ্য ঘুম থেকে উঠেছো। ঘুমটাও ভাঙিয়ে দিকে।একেতো আমার ঘাড়ে ঝুলিয়ে দিয়েছো মুখ পোড়া এক বুইড়া।সেও ঘুমের বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে।”
সারাহ’র আম্মু চট করে সারাহ’র হাত চেপে ধরে বলল,
“আস্তে কথা বলো।রোশান এসছে। “বলেই সারাহ’র আম্মু সরে দাঁড়াল। সাথে সাথে সাইড থেকে রোশান বেরিয়ে এল।

রোশান কে দেখেই সারাহ’র চোখ কপালে উঠে গেল।মানে এই অসহ্য লোকটা সত্যি সত্যি এসেছে।সারারাত জ্বালিয়ে শান্তি হয়নি ঘুম থেকে উঠে জ্বালাতে চলে এসছে।নির্লজ্জ, বেহায়া টাইপ লোক।বিয়ে করেছে বলে রাত নেই, দিন নেই যখন তখন এসে ঠেলে উঠছে।রোশানের পরণে এ্যাশ কালারের একটা শার্ট।শার্টের স্লিভ গোটানো।পরণে কালো একটা প্যান্ট।হাতে কালো ফিতার একটা বড় ঘড়ি।চোখে খয়েরী ফ্রেমের চশমা।দেখতে মাশাআল্লাহ লাগছে।শ্যামবরণ শরীরে কেউ এতটা সুন্দর হতে পারে তা রোশান কে না দেখলে অনুমান করা যেতনা। রোশানের জন্যই হয়ত শ্যামবর্ণ এত প্রশংসনীয়। এই শ্যামবর্ণের এটিটিউডে ভরা মুখের দিকে তাকিয়ে এক পলকে মন হারিয়েছে কতজন তার ঠিক নেই।সারাহ’র আম্মু রোশান কে বলল,

” বাবা ভেতরে যাও। আমি চা নিয়ে আসছি। সকালে খেয়ে এখান থেকে যাবে।”
রোশানের ঠোঁটের কোণায় কিঞ্চিৎ ভদ্রতার হাসি।সে ভদ্রতার সহিত উত্তর দিল,
“শুধু এককাপ চা দিন আম্মা।সকালে আমি ভাত বা অন্য কিছু খাইনা।”
“সে কি কথা শুধু এককাপ চা খাবে।তোমার শ্বশুর এটা মেনে নিবেনা।”
“আপনার হাতের রান্না খাওয়ার জন্য সারাজীবন আছি।এত প্রেশার নিবেন না।”

এইদিকে সারাহ বড় বড় চোখে একবার রোশান আরেকবার নিজের দিকে তাকাল।সারাহ’র পরণে সাদা গেঞ্জি আর লাল প্লাজু।গায়ে ওড়না নেই।এইভাবে রোশানের সামনে পড়বে সে ভাবেনি।এতক্ষণ দরজার পর্দা দিয়ে নিজের লজ্জা নিবারণ করেছে।পর্দা ছেড়ে দিয়ে দ্রুত রুমে প্রবেশ করে এদিক-সেদিক তাকাল।এই মুহুর্তে তার চোখের সামনে ওড়না পড়ছে না।কোথাও ওড়না খুজে পেলনা।আলনা থেকে অন্য একটা ওড়না দ্রুত টেনে গায়ে ভাল ভাবে পেঁচিয়ে নিল।এখনি রোশান ঘরের ভেতর প্রবেশ করনে।

গেঞ্জি আর প্লাজু পরিহিত অবস্থায় সে রোশানের সামনে দাঁড়াতে পারবে না সে।ওড়না গায়ে দিয়ে না হয় কিছুটা বেইজ্জতির হাত থেকে রক্ষা পেল।কিন্তু এভাবে রোশানের সামনে তো দাঁড়ানো যাবেনা।ছিঃ কি লজ্জার ব্যাপার।এখনি জামা পরার ও সুযোগ নেই এসব ভাবতে ভাবতেই রোশান রুমের ভেতরে প্রবেশ করল।চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখল আলনার এক কর্ণারে সারাহ দাঁড়িয়ে।রোশান থমথমে চেহারায় কপালে কয়েক টা ভাজ ফেলে সারাহ’র দিকে তাকাল।যার মানে হল, ‘আশ্চর্যজনক ব্যাপার! তুমি ওখানে কেন? ‘ রোশানকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সাতাহ তোতলানো কন্ঠে বলল,

“একটা মেয়ের ঘরে আসবেন তা বলে আসবেন না।অসভ্য বুড়ো লোক একটা।”
অসভ্য কথাটা শুনে রোশানের মুখ আরো থমথমে হয়ে এল। এগ বেশী অবাক হল ডানে বামে তাকাল।দুই ভ্রু কুচকে সারাহ’র দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করল,
“আমি অসভ্য?”
সারাহ একটা কামিজ আলনা থেকে নিতে নিতে বলল,
“তাই ছাড়া কি আপনি। না বলে প্রবেশ করলেন কেন?মেয়েদের এভাবে দেখার খুব শখ তাইনা?”
রোশান খুব কৌতুহলী হয়ে আবার ও প্রশ্ন ছুঁড়ল,
“কোনভাবে?”

সারাহ এক দন্ড অপেক্ষা না করে উত্তর দিল,
“এইযে গায়ে ওড়না থাকবে না,ছোট কাপড় থাকবে।”
রোশান ড্যাম কেয়ার ভাবে উত্তর দিল,
“কেউ যদি দেখাতে চায় দেখতে অসুবিধা কি? যদিও কেউ দেখাতে চাইলেও আমার ইন্টারেস্ট নেই। এমন কি কেউ ন্যাকেড বসে থাকলেও আমার আগ্রহ জন্মাবে না তাকিয়ে দেখার জন্য।আমার চোখ দু’টো শুদ্ধ,পবিত্র।”
সারাহ মুখ বাঁকিয়ে চেতে উঠে বলল,

“কি বললেন আমি দেখাতে চাই? আমি দেখাতে চাই? আমার চরিত্র সম্পর্কে কোনো ধারণা আছে আমার।আজ পর্যন্ত কোনো ছেলের সাথে পশমের স্পর্শ হয়নি আমার।আর আপনি বলছেন কীনা আমি দেখাতে চাই।”
রোশান হাত উল্টে ঘড়িটা দেখে নিয়ে বলল,
“তোমাকে আরো এক ঘন্টা আগে জানিয়েছি আমি আসছি। গায়ে ওড়না না থাকায়, এসব ড্রেসে এত সমস্যা মনে করলে এক ঘন্টা আগেই এসব ড্রেস চেঞ্জ করে নিতে।”
সারাহ এইবার থতমত খেয়ে বলল,
“আমি কি জানতাম নাকি আপনি এই সাত সকালে চলে আসবেন।এত সকালে কি চাই আপনার।”
“আমি ফান করিনা কখনো।যা বলি সেটাই সঠিক।বলেছি আসব,এসেছি।”
“কাল রাতে একবার এসছেন। ঘুমোতে গেছি আপনার মুখ দেখে, ঘুম ভাঙল আপনার মুখে দেখে।”
“সেইম টু ইউ।আই উইশ বাকি জীবন এভাবেই কাটবে।”
“কিন্তু এসেছেন কেন এখন?”

রোশান আলনার দিকে এগিয়ে গেল।একদম কর্ণারে আলনা।রোশানকে এগিয়ে এসতে দেখে সারাহ আবার ও তোতলানো কন্ঠে বলল,
“এদিকে কোথায় আসছেন আপনি।”
বলতে বলতে রোশান সারাহ’র খুব কাছাকাছি চলে গেল।সারাহ’র সাথে রোশানের দূরত্ব কিঞ্চিৎ ও পরিমান।সারাহ বুঝতে পারছে না রোশানের মতিগতি।রোশান এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সারাহ’র দিকে।রোশান কে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে সারাহ জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে নিয়ে ঘন ঘন চোখের পাঁপড়ি ফেলে বলল,
“কি দেখছেন?”

রোশান মোলায়েম কন্ঠে জবাব দিল,
“তোমাকে?”
কথাটা শুনে সারাহ চমকালো।সে পুনঃরায় আবার ও সেইম প্রশ্নটি করল,
“আমাকে?”
“হ্যাঁ, কীভাবে নকল লুকিয়ে রাখো সেটাই দেখতে এসছি।”
সারাহ বুঝতে পারল না রোশান আসলে কি করতে চাইছে।সে আবার ও বলল,
“মানে?”

“তুমি না বললে কোথায় নকল রাখবা টের পাবোনা আমি।”
“সে কি এখন নাকি। এখন কি পরীক্ষা হচ্ছে নাকি যে এখন নকল করব।”
“মনে করো টেস্ট এক্সাম হচ্ছে।নকলের টেস্ট এক্সাম।দেখি নকলে কেমন এক্সপার্ট।নকল করে লুকাও দেখি ধরা পড়ো কীনা!”

“এটা কি পরীক্ষার হল নাকি যে, আমি নকল করব।নকলের আবার টেস্ট এক্সাম জীবনে প্রথম শুনলাম।”
“সমস্যা কী? তোমার হাজবেন্ড যখন টিচার, বেড রুমে একটা টেস্ট এক্সাম হলে সমস্যা কি?কুইক নকল টকল যা করবা করে লুকাও।রিহার্সাল করে যাও।যাতে মেইন ক্লাসে গিয়ে ধরা না পড়ো।”
সারাহ মুখ বাঁকিয়ে বলল,
“ধরা আমি জীবনেও পড়বা না।”
রোশান তাচ্ছিল্যের সাথে স্মিথ হেসে জবাব দিল,
“তাই নাকি।”
সারাহ টেনে টেনে বলল,
“হ্যাঁ তাই।”
রোশান ভ্রু নাচিয়ে বলল,

“তা কোথায় লুকাতে নকল যে আমি ধরতেই পারব না।আসো চেক করে দেখি।” বলেই রোশান হাত বাড়াল সারাহ’র দিকে।সারাহ পেছন দিকে খানিক টা ঝুঁকে বলল,
“এ কি আপনি কি আমার গায়ে হাত দিয়ে চেক করবেন নাকি।”
“অফ কোর্স।”
“মেয়েদের গায়ে হাত দেওয়া দন্ডনীয় অপরাধ জানেন না।”
“তুমি তো আমার বউ,গায়ে হাত দেওয়ার রাইট তো আমার আছে।আমি যদি সর্বাঙ্গ চেক করি তাতেও অপরাধ হবে।”
“অবশ্যই হবে।বউ হই আর যায় হই অনুমতি ছাড়া গায়ে হাত দিবেন কেন?”
“না একটু দেখতাম আরকি,নকল টা লুকাও কোথায়?”

“সকাল সকাল অসভ্যতামি করতে এসছেন।নকলের বাহানায় আমাকে ছুঁতে চান তাইতো।ওসব আমি বুঝি।”
“তুমি যে সব দু লাইন বেশী বোঝো তা আমি প্রথম দিনই বুঝছি।ন্যারো মাইন্ডের পুরাই।চেয়ার টেবিলে এসো ফার্স্ট।” বলেই রোশান বেরিয়ে এল।সারাহ চোখ কপালে তুলে বলল,
“কেন?”
“পড়তে বসো।”
“আপনি আমাকে এত ভোরে পড়াতে এসছেন?”
“হ্যাঁ। ”
সারাহ গটমট করতে করতে চেয়ারে এসে বসল।বসে বলল,
“রাতে আসছেন, দিনে আসছেন মানুষ কি বলবে।”
রোশান থমথমে স্বরে প্রশ্ন করল,

“বউ এর কাছে আসলেও মানুষ কিছু বলবে?”
” আপনার সাথে তো দেখছি কথা বলে পারা যায়না।”
“কথা বলে পারতে হবে কেন? ম্যাথ করো।”
“ম্যাথ করব না।”
রোশান আবার ও ভ্রু কুঁচকে প্রশ্ন করল,
“তাহলে? ”
“ম্যাথ আমার কঠিন লাগে। আমি থিওরি লিখে লিখে পাশ করব।ফিফটি পার্সেন্ট থিওরি আসবে।”
“তাহলে পলিটিক্যাল সাইন্স নিলে না কেন? মন ভরে থিওরি লিখতে পারতে।ম্যাথের যার এত ভয় তার ম্যাথ সাব্জেক্ট নেওয়ার কি প্রয়োজন।”

“শুনুন পাশ করলেই হল।কীভাবে পাশ করলাম ওটা বিষয় না।”
“তোমার কলেজ টেস্ট এক্সাম এর রেজাল্ট দেখলাম।যেগুলাতে থিওরি আসেনি তুমি ডাবল জিরো পেয়েছো।না মানে কেউ ডাবল জিরো ও পায়।”
সারাহ ঘাড় কাত করে রোশানের দিকে তাকিয়ে বলল,
“আমার পুরনো ইতিহাস ঘাটাঘাটি করা ও হয়ে গিয়েছে।”
রোশান গম্ভীর মুখে জবাব দিল,
“এত কথা না বলে বই খোলো।”

সারাহ’র এখন পড়াশুনার বিন্দুমাত্র মুড নেই।তাই বিরক্ত হয়ে বই খুলল।রোশান সারাহ’ ঘাড়ের উপর দিয়ে ঝুঁকে কিছু প্রশ্ন মার্ক করে দিচ্ছে আর বলছে এসব একবার হলেও চোখ বুলিয়ে যেও।সারাহ’র পিঠের সাথে রোশানের বুক মিশে আছে।দুজনেই উষ্ণতা অনুভব করছে কিন্তু প্রকাশ করছে না।প্রশ্ন দাগানো শেষ হলে রোশান বলল,
” এগুলা সব পড়ো।”
লেখাপড়ার কথা শুনে সারাহ’র যেন জ্বর আসল।সে বইটা ঠেলে দূরে সরিয়ে দিয়ে বলল,
” পড়াশুনা করতে চাচ্ছিনা আমি।”
রোশান থমথমে কন্ঠে বলল,
“তাহলে কি করতে চাও?”
“বিয়ে হয়ে গিয়েছে সংসার করব।”
“সাংসার করো, কিন্তু বই পড়তে কি সমস্যা?”

“ঘর সংসার আর পড়াশুনা একসাথে জীবনেও হয়না।আমি বাচ্চা নিবো।বাচ্চা নিয়ে সংসারে মন দিতে চাই।”
রোশান ভাবতেও পারেনি সারাহ এই মুহুর্তে বাচ্চা নেওয়ার কথা উচ্চারণ করবে।রোশানের চোখ কপালে উঠল।সে এত অবাক হল খানিক্ষণ থম মেরে থেকে বলল,
“কি বললে? মাথায় সমস্যা আছে তোমার?”
“কি বললাম।বাচ্চা নিতে চাই আমি।”
“ষ্টুপিড। ”
“শুনুন, এইভাবে পড়াশুনার অত্যাচার সহ্য না করে দু’চারটা বাচ্চা পালা বেশী ভাল।দু’দিন বিয়ে হতে পারেনি নতুন বউএর সাথে রোমান্টিক আলাপ-আলোচনা না করে বই পড়াতে এসছেন।বাকি জীবন কীভাবে কাটবে বুঝে গেছি।”
রোশান থমথমে কন্ঠে বলল,
“রোমান্টিক কথা কীভাবে বলে।কি শুনতে চাও? হাগ মি জা’ন। কিস মি জা’ন। ”
সারাহ দ্রুত বলে উঠল,

“ছিঃ থামুন থামুন।আমি বলে আপনার সংসার করছি।অন্য কেউ হলে করত না।”
এই কথাটা শুনে রোশান অদ্ভুত চোখে তাকাল সারাহ’র দিকে।সে অদ্ভুত চোখে তাকিয়ে বলল,
“সিরিয়াসলি। কি বললে তুমি? তুমি বলে সংসার করছো? বিয়ে হয়েছে দু’দিন মাত্র।”
“এ দু’দিনেই আমি যা বোঝার বুঝে গিয়েছি।”
“ওহ শীট!তোমাকে বলার মত কিছুই নেই আমার।”

একটি নির্জন প্রহর চাই সিজন ২ পর্ব ৭

এমন সময় খুব জোরে অদ্ভুত একটি শব্দ হল।যার জন্য সারাহ মোটেও প্রস্তুত ছিলনা।শব্দটি যে কীসের তা রোশানের আর বুঝতে বাকি নেই।সে এক দন্ড না দাঁড়িয়ে বের হয়ে গেল।সারাহ তীব্র লজ্জা আর অপমানে যেন স্তম্ব হয়ে গেল।জীবনের চূড়ান্ত বেইজ্জতি যেটুকু বাকি ছিলো তাও হয়ে গেল। শেষে কীনা প্রকৃতির ডাক না বলে কয়ে এভাবে আসল।তাও রোশান সিদ্দিকীর সামনে।বায়ুদূষণ এর মত নির্লজ্জ ঘটনা রোশানের সামনে ঘটে গেল।

একটি নির্জন প্রহর চাই সিজন ২ পর্ব ৯