একটি নির্জন প্রহর চাই সিজন ২ পর্ব ১২

একটি নির্জন প্রহর চাই সিজন ২ পর্ব ১২
Mousumi Akter

একটা হলুদ রঙের খাম সারাহ তার আলমারির ড্রয়ার থেকে বের করল। মন মানসিকতা খুব একটা ভাল নয় বলে সেদিন আর খুলে দেখেনি। আজ বন্ধুরা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য বাড়িতে এসে খামটা খুলল। খামটা খুলতেই চোখ উঠল কপালে। সে ভাল করে খামে থাকা জিনিসটা দেখল। উলটে পাল্টে দেখল। না সে ভুল দেখে নি। খামের ভেতর একটা চেকের পাতা। তার কাবিলে দেওয়া সম্পূর্ণ পাঁচলক্ষ টাকার সোনালি ব্যাংকের একটি চেক। সেই চেকের সাথে একটি ছোট্ট রঙিন কাগজে চিরকুট লেখা আছে। সেই চিরকুটে লেখা আছে,

‘ প্রিয়,
তোমাকে প্রিয় বলেই সম্মোধন করলাম আমি। কারণ এই পৃথিবীতে যত যত প্রিয়র তালিকা আছে তার মধ্য বউই প্রিয়র চেয়ে প্রিয়। আজ আমার সেই প্রিয় মানুষটার সাথে সৃষ্টিকর্তা আমার জীবন জুড়ে দিয়েছেন৷ তাকে আমি দু’সেকেন্ড আগেও চিনতাম না, জানতাম না। তবে রবের হুকুম যখন হয়েছে নিশ্চয়ই তাতে মঙ্গল আছে। জন্ম,মৃত্যু, বিয়ে, রিযিক এসব আমাদের হাতে নেই। আছে একমাত্র ওপরওয়ালার হাতে৷ ওপরওয়ালার সিদ্ধান্ত সব সময় উত্তম হয়, মঙ্গলজনক হয়। তাই আমি তার এই সিদ্ধান্তকে সম্মানের সাথে খুশি মনে গ্রহন করে তোমাকে আমার বউ বলে কবুল করে নিলাম। কাবিননামা একজন স্ত্রীর হক। আর বিয়ের প্রথম রাতেই আমি আমার স্ত্রীর হক মে’রে দিতে পারিনা। আমি এতদিন বিয়ে করিনি শুধুমাত্র স্ত্রীর কাবিননামার টাকা পরিশোধ হাতে হাতে পূর্ণ করতে পারব না বলে। একজন পুরুষ হিসাবে আমি সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত হয়েই বিয়ের মত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি জানিনা আমাদের মন -মানসিকতা কতটুকু মিলবে। তবে আমি তোমাকে কখনোই আমার পছন্দমত চলার জন্য জোর করবনা। তোমার ব্যক্তিস্বাধীনতায় আমি হস্তক্ষেপ করব না। আমি শুনেছি তুমি আমার চেয়ে বয়সে অনেকটা ছোট। বয়সে ছোট না হলেও মেয়েরা এমনিও ফুলের মত হয়, অবুঝ হয়। পুরুষ মানুষের মানিয়ে নেওয়া উচিৎ। তুমি সামান্য একটু মানিয়ে নিতে পারলেই আমি পুরোটা তোমাকে মানিয়ে নিবো ইনশাআল্লাহ। তুমি আমার ঘরে এসো, স্বাগতম তোমাকে। তোমার জীবন, সুখের,শান্তির আরামদায়ক করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব আমি। দায়িত্ব যখন নিয়েছি তা পালন করব। অগোছালো লেখাগুলোও একটু মানিয়ে নিও। আমি আগে কখনো চিঠি লিখিনি। এটাই জীবনের প্রথম চিঠি।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

——-ইতি কিছুক্ষণ আগে বিয়ে হয়েছিলো যে কালো ছেলেটির সাথে, সেই ছেলেটি।
সারাহ চিঠিটা পড়ে মুগ্ধ চোখ কতক্ষণ তাকিয়ে রইলো চিঠির দিকে। ঠোঁটে, মুখে মুগ্ধতার হাসি। আরিয়ানকে হারিয়ে পা-গ-ল প্রায় মেয়েটা কি জানত যার সাথে বিয়ে হতে চলেছে সে আরোও বেশী চমৎকার একজন মানুষ। তার প্রতিটা পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের চেয়ে আলাদা।

হঠাৎ দমকা হাওয়া ছাড়ল। লন্ডভন্ড করা বাতাস। সারাহ জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। জানালার পাল্লা একটার সাথে আরেকটা বাড়ি খাচ্ছে। এলোমেলো বাতাসে ধুলা বালি আর খড় কুটোয় ভরে যাচ্ছে ঘর। সাথে সারাহ’র সিল্ক চুল গুলো উড়ছে। মুহুর্তের মাঝে রাতের আকাশ আরো ঘন কালো আধারে ছেয়ে গেলো। মেঘের ভয়ংকর হুংকার শোনা যাচ্ছে চারদিকে। সেকেন্ডে সেকেন্ডে বিদুৎ চমকাচ্ছে। সারাহর মেঘের গর্জন খুব ভয় করে। আকাশে মেঘ করলেই সে জানালা দরজা লাগিয়ে পাতলা কম্বল বা কাঁথা গায়ে দিয়ে সুয়ে পড়ে। কিন্তু আজ সে তন্ময় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জানালা ধরে। দুপুরে রোশান স্যার বলেছিলো আজ বৃষ্টি হবে৷ সত্যি আজ বৃষ্টি হলো। সে বুঝল কীভাবে বৃষ্টি হবে। সে কি তাহলে সব বোঝে। তারপর ই সারাহর মনে পড়ল সে ভয়ঙ্কর কথাটা৷ সে কথার কথা বলেছিলো বৃষ্টি হলে সে রোশান’কে চুমু খাবে। সত্যি তো বৃষ্টি হচ্ছে। মুশলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সে কি সত্যি আসবে এইবার চুমু খেতে। এমন ভয়ংকর কাজ আমি কিছুতেই করতে পারব না। কোনোভাবেই পারব না। তখন সারাহ’র হাতে থাকা ফোনটিতে একটি মেসেজ এলো। মেসেজের শব্দে সারাহ ফোনের দিকে তাকাল।

আননোন সেই নাম্বার থেকে মেসেজ এসছে,
“আজ তোমাকে অন্যরকম লাগছিলো। এত সুন্দর করে সাজগোজ না করলেও তো পারতে।”
মেসেজটা পড়েই সারাহ আবারও গভীর চিন্তায় মগ্ন হলো। তার জীবনে যেন চিন্তার কোনো শেষ নেই। একটা যায় আর একটা আসে। কে এই আগন্তক? কে সারাহ’কে এভাবে মেসেজ করছে। আজ তো তাকে তন্ময়, মৃন্ময়,দ্বীপ আর রোশান সিদ্দিকী ছাড়া পরিচিত কেউ দেখে নি। এই চারজন ছাড়া তার নাম্বার ও কেউ জানেনা। তাহলে কে এই মেসেজ দিচ্ছে। সারাহ চিন্তিত ভীষণভাবে চিন্তিত। রোশান সিদ্দিকী কোনদিন তাকে এই ধরণের মেসেজ দিবেনা। তাহলে কি বন্ধুদের মাঝে কেউ? নাহ! ওদের মাঝে এমন কেউ নেই। তাহলে কি আরিয়ান? আরিয়ান কোনভাবে তার নাম্বার পেয়েছে? সারাহ চিন্তায় একদম পা’গ’ল হয়ে যাচ্ছে। এমন সময় সারাহ’র আম্মু তার রুমে প্রবেশ করে বলল,
‘ ঘর বাড়ি ধূলোয় ভরে যাচ্ছে,আর তুমি জানালা না লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছো? যেভাবে জানালা বাড়ি খাচ্ছে, এখনি ভেঙে যাবে। ‘

বলেই সারাহ’র আম্মু জানালা লাগিয়ে দিলো। যাওয়ার সময় সারাহ’র দিকে তাকিয়ে বলল,
‘ দু’দিন পর শ্বশুরবাড়িতে যাবে, এসব অকাজ করলে কথা তো আমাকেই শুনতে হবে। মানুষ বলবে আমি তোমাকে কিচ্ছু শিখাই নি।’
সারাহ মায়ের সেসব কথায় খুব একটা কান দিলোনা। সে তার মত ভেবেই যাচ্ছে। এমন মুহূর্তে রোশানের নাম্বার থেকে ফোন এলো। রোশানের নাম্বার থেকে ফোন দেখেই সারাহ চমকে উঠল। এখন কি রোশান সেই কথাটা বলবে। সারাহ ফোন রিসিভ করেই বলে উঠল,
‘ কি বলার জন্য ফোন দিয়েছেন? শুনুন, যা ভাবছেন তা জীবনেও সম্ভব না। বৃষ্টি আল্লাহ দিয়েছেন আপনি দেননি তাই আপনাকে চুমু খেতে যাবো। প্রয়োজনে ষাড়ের মুখে চুমু খাবো তাও আপনার মুখে নয়। ‘
রোশান সারাহ’র ননস্টপ বকবক শুনল। তারপর গম্ভীর কন্ঠে বলল,।

‘ বলা শেষ?’
‘ যদি আর বলার প্রয়োজন হয়, তবে অবশ্যই বলব।’
রোশান কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে বলল,
‘ আমাকে চুমু খেতে না পেরে তুমি পানিতে ডুবে ম’র’লে’ও আমি চুমু খেতে চাইতাম না। বাট তোমার কথা শুনে মনে হচ্ছে, তুমি খুব ইন্টারেস্টেড আমাকে চুমু খাওয়ার জন্য।’
সারাহ এইবার ফুঁসে উঠে বলল,
‘ ছিঃ, ছিঃ আপনি কি এম এম কলেজের স্যার নাকি ইমরান হাশমির কিস মুভির স্যার। যেভাবে চুমু নিয়ে নামতা পড়ছেন।’

সারাহ’র এমন উদ্ভব কথাবার্তা শুনে রোশানের মাথায় যেন বজ্রপাত হলো। সে চোয়াল শক্ত করে বলল,
‘ হোয়াট? কি বললে তুমি?’
‘ একদম ঠিক বলেছি, আর ফোন দিবেন না আমাকে।’ বলেই সারাহ ফোনটা কেটে দিলো। কেটে দিয়ে উপুড় করে রাখল। কিছুক্ষণ পর আবার ফোন উলটে দেখল রোশান ফোন দিয়েছে কীনা! কিন্তু না রোশান আর একবার ও ফোন দেয়নি। বুকের মাঝে কিঞ্চিৎ ব্যাথার অনুভব হলো। আরিয়ান হলে এতক্ষণে কতশতবার ফোন দিতো। ফোন রিসিভ না করা অবধি একনাগারে ফোন আসত। সারাহ আবার একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। পাতলা কাঁথা গায়ে দিয়ে বিছানায় সুয়ে পড়ল। বাইরে ঝুম বৃষ্টির শব্দে হালকা ঘুম ধরল।

তন্ময়ের পরণে কফি কালারের একটি কলার দেওয়া গেঞ্জি। চেয়ার-টেবিলে বসে বই পড়ছে সে। বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে৷ মৃদু বাতাসে সামনের চুল উড়ছে। কফি কালারের গেঞ্জিতে তন্ময়কে ভীষণ সুন্দর দেখাচ্ছে। তন্ময়কে নায়ক বললে কি খুব ভুল হবে। মনে হয়না ভুল হবে। দারিদ্রতা ছাড়া তন্ময়ের জীবনে সৃষ্টিকর্তা অপূর্ণ কিছুই রাখেনি। যেমন দেখতে সুন্দর তেমন, মেধাবী। শহরের কত সুন্দরী, মেধাবী, বড়লোকের মেয়ে ক্রাশ খেয়েছে তন্ময়কে দেখে তার ঠিক নেই। কত মেয়ের হৃদয় থমকে গিয়েছে একবার তন্ময়ের দিকে তাকিয়ে তার হিসাব নেই। তবে তন্ময়ের মনটা পড়ে আছে তার ক্লাসমেট বেষ্ট ফ্রেন্ড ছোঁয়ার কাছে। তন্ময়ের কাছে অপশনের অভাব নেই। তবুও ছোঁয়ার প্রতি বাজেভাবে দূর্বল তন্ময়। শহরের সব চেয়ে সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে ছোঁয়া। যে এই বয়সেই ব্যক্তিগত প্রাইভেট কারে চলাফেরা করে। বাবার অঢেল সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী। তন্ময় আর ছোঁয়ার মিল হওয়া যেন আকাশ-পাতাল সমান পার্থক্য। তবুও তন্ময়ের মনে ভরসা। সে একদিন বিসিএস ক্যাডার হবে। অনেক বড় চাকরি করবে। ছোঁয়ার বাবার কাছে একদিন প্রস্তাব পাঠাবে। আগামি মাসেই ছোঁয়ার জন্মদিন। তন্ময়ের হাতে টাকা নেই। মৃন্ময় সুয়ে সুয়ে সিগারেট টানছে। তখন ই তন্ময় বলল,

‘মৃন্ময় ১০০০ টাকা লাগবে। ‘
মৃন্ময় সিগারেট এর ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে বলল,
‘ফরম ফিল আপের কথা বলে বাড়ি থেকে যে এতগুলা টাকা এক্সট্রা নিলাম, শালার সিগারেটের পিছে উড়ে গেলো।’
তন্ময় বলল,
‘ এক টাকাও নেই?’
‘ আছে এক হাজার টাকা।’
‘ আমাকে দিস, আগামি মাসে দিয়ে দিবো।’
‘ কিন্তু আমি সিগারেট খাবো কি দিয়ে।’
দ্বীপ বলল,
‘ মৃন্ময় অপশন দিলাম, বউ না সিগারেট। ‘
মৃন্ময়ের চোখের সামনে ভেষে উঠল তরীর মায়াবী ফেস।সে এক বাক্য বলল,

‘মায়াবিনী। ‘
‘মানে?’
‘ওই মেয়েটা।’
দ্বীপ কৌতুহলী হয়ে প্রশ্ন করল,
‘ কোন মেয়ে?’
‘একটা মেয়ে ভাই মনে ছু’ রি মে’ রে দিলো। কি সরল চাহনি।’
‘সারাজীবন যার সানি লিয়ন পছন্দ তার কীনা সরল মেয়ে পছন্দ হলো।’
তন্ময় বলল,
‘জিন্স আর গেঞ্জি পরে।’
‘না থ্রি পিস পরে, চুলে বিনুনি করে।’
দ্বীপ বলল,

‘ভাই শোন, শোন। যার কীনা গাইয়া পছন্দ না, সে থ্রি পিস পরা মেয়ে পছন্দ। ‘
মৃন্ময় মুখের সিগারেট ছুড়ে ফেলে বলল,
‘ভাই মেয়ে সিগারেট খাওয়া পছন্দ করেনা।’
তন্ময় মৃদু হেসে বলল,
‘ আলহামদুলিল্লাহ।’
দ্বীপ জোরে হাতে তালি দিয়ে বলল,
‘ এইবার জমবে খেলা ভাই।’
মৃন্ময় চট করে উঠে দাঁড়ালো। তন্ময়ের ছাতা নিয়ে বের হতে হতে বলল,
‘ নাহ! খুব অশান্তি হচ্ছে মনে। মায়াবিনীর মুখটা দেখে আসি। আর শুনে আসি কী দিয়ে মন্ত্র করল আমায়।’

ঘন্টা খানিক পরে সারাহ’র কানের কানের কাছে ফিসফিস করে সারাহ’র মা ডাকছে,
‘ সারাহ দ্রুত ওঠো।’
মায়ের ডাকে সারাহ ধড়ফড় করে উঠে বলল,
‘ কি হয়েছে আম্মু?’
‘ দ্রুত গায়ের গেঞ্জি খুলে একটা শাড়ি বা থ্রি পিস পরো।’
সদ্য কাঁচা ঘুম ভাঙল সারাহ’র। মায়ের কথার আগাগোড়া কিছুই বোধগম্য হচ্ছে না তার। সে কপাল কুচকে বলল,
‘ আমি বুঝলাম না আম্মু। এসব কেন চেঞ্জ করব?’

‘ রোশান আর ওর বাবা-মা এসছে। তোমাকে এসব পোশাকে দেখলে কি বলবে। সর্বনাশ হয়ে যাবে।’
সারাহ খেয়াল করল তার মায়ের চোখে মুখে ভয় আর টেনশন। বিষয়টা সারাহ’র একদম ভালো লাগছেনা। তার শ্বশুরবাড়ির মানুষ কি বাঘ না ভাল্লুক যে এইভাবে ভয় পেতে হবে। সারাহ খানিকটা বিরক্ত চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলল,

‘ আশ্চর্য তুমি তাদের এইভাবে ভয় পাচ্ছো কেন আম্মু? ওরা কি বাঘ না ভাল্লুক। আর আমিতো এসব পোশাক ই পরি। ওরা জানলে অসুবিধা টা কোথায় বুঝলাম না।’
সারাহ’র আম্মু চাপা কণ্ঠে বলল,
‘ চুপ একদম চুপ।’
এরই মাঝে রোশানের মা হাস্যজ্বল মুখে সারাহ’র রুমে প্রবেশ করল। সারাহ দ্রুত গায়ের ওড়না টেনে নিয়ে সালাম দিলো। উনি সালামের উত্তর দিয়ে বিছানায় কোনায় বসলেন। কেমন অদ্ভুত চোখে সারাহর দিকে তাকাচ্ছেন। বোঝা যাচ্ছে সারাহ’র পরণের পোশাক তার পছন্দ হচ্ছে না। কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে বললেন,
‘ তুমি না মুসলিম ঘরের সন্তান।’
সারাহ মাথা নিচু করে মিহি কণ্ঠে জবাব দিলো,
‘ জি।’
‘ হাতের নখ বড়ো রেখেছো কেন? চুল এমন কেটেছো কেন? ভ্রু তুলেছো কেন? পরণের পোশাকের এমন অবস্থা কেন? গেঞ্জি পরে ছেলেরা। তুমি মেয়ে হয়ে গেঞ্জি পরে সুয়ে আছো কেন? ‘
সারাহ’র মুখে যে উত্তর গুলা এসছে তা ভদ্রতার খাতিরে বলতে পারল না। মনে মনে ক্ষীপ্ত হলো সে। সারাহ’র আম্মু চট -জলদী উত্তর দিল,

একটি নির্জন প্রহর চাই সিজন ২ পর্ব ১১

‘ বিয়ে হয়েছে এখন সব ঠিক হয়ে যাবে। আপনি ওসব নিয়ে ভাববেন না।’
রোশানের আম্মু বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো। মুখ কালো করে বলল,
‘ আগামি শুক্রবার অনুষ্টান হবে। আমরা সারাহ’কে তুলে নিবো। বিয়ের পর যেন এ ধরণের পোশাক আর না পরে।’
বলেই বেরিয়ে গেলেন। রোশানের আম্মু ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যেতেই সারাহ রাগে কিড়মিড় করতে করতে ওর বিছানার গোলাপি রঙের পুতুলটা ছুড়ে মারল। তখনই রোশান ঘরে প্রবেশ করল আর পুতুলটা গিয়ে রোশানের গায়ে লাগল।

একটি নির্জন প্রহর চাই সিজন ২ পর্ব ১৩