রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ১৫
সিমরান মিমি
বিপদের মুহুর্ত গুলো সবসময় ভয়ঙ্কর হয়।তখন প্রতিটা সেকেন্ড হয় মিনিটের সমান।এক পা চলতে মনে হয় এক সাগর পাড়ি দেওয়ার সমান।শরীর,মন তখন পাথরের ন্যায় ওজন হয়ে যায়।স্পর্শী বিরক্ত হয়ে বার বার সময় দেখতে লাগলো।মিনিটের কাঁটা চল্লিশ পেরিয়ে গেলেও বাস আসার কোনো নাম নেই।এ যাবৎ কাউন্টারের টিকিট বিক্রেতা কে বেশ কয়েক বার তাড়া দেখিয়েছে।কিন্তু ফলাফল শূণ্য।বাস আসছে আসছে বলেও এখনো পৌছায় নি।পুনরায় বিরক্তিকর নিঃশ্বাস ফেলতেই ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো।নাম্বার টা অচেনা।দ্রুত চিত্তে রিসিভড করলো।মুহুর্তেই ওপাশ থেকে পুরুষালি কন্ঠে ভেসে আসলো,
“আমি পাভেল শিকদার বলছি।আপনাদের রেডিও কলোনী’র ওভার ব্রিজের উপরেই আছি।একটু তাড়াতাড়ি কি আসবেন।আমার দ্রুত পিরোজপুরে ফিরতে হবে।”
হুট করেই কেমন সারা শরীর কাঁপতে শুরু করলো স্পর্শীর।আজ কতগুলো দিন পরে আর্শিকে পাবে।আদোও কি এটা সত্যি;নাকি সে স্বপ্ন দেখছে।নিজেকে প্রাণপণ চেষ্টা করলো স্বাভাবিক রাখার।শান্ত কন্ঠে বললো,
“দশ মিনিটে আসছি।”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
বলেই কেটে দিলো ফোন।দ্রুত নামলো কাউন্টার থেকে।এরইমধ্যে রিকশা পেল।এখান থেকে হেটেই যাওয়া যাবে ব্রিজের কাছে।জোর হলে ছয়/সাত মিনিট লাগবে।কিন্তু স্পর্শীর পা চলছে না।মনে হচ্ছে কেউ শক্ত করে টেনে ধরে রেখেছে।আড়াই মিনিটের মধ্যেই ব্রিজের নিচে থামলো রিকশা। ব্যাগ থেকে টাকা দিয়ে ছুটে উঠতে লাগলো সিঁড়ি বেয়ে।ওইতো দেখা যাচ্ছে আর্শিকে।ওদিকে তাকিয়ে কথা বলছে ছেলেটার সাথে।স্পর্শী এগিয়ে গেল। আলতো করে হাত ছুঁতেই চমকে পেছনে তাকালো আর্শি।মুহুর্তেই বিড়াল ছানার মতো ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আলগোছে আর্শির পেছনে গেল।বোনের ডান হাত টাকে শক্ত খুটির ন্যায় জড়িয়ে ধরে কাধে থুতনি ঠেকিয়ে পাভেলের দিকে চেয়ে রইলো।স্পর্শী নির্জীব।পাভেলের দিকে তাকাতেই মাথা চুলকে অন্য দিকে তাকালো।আমতা-আমতা করে বললো,
“আপনার বোনকে সহীহ সালামতে আপনার হাতে পৌছে দিলাম।যা হয়েছে সব এই পর্যন্তই। এবারে আপনি আপনার রাস্তায়,আমরা আমাদের রাস্তায়।ভবিষ্যতে আর কখনো দেখা না হোক,এটাই চাওয়া।আসছি। ”
বলেই ধুপ ধাপ পা ফেলে ব্রিজের ওপাশ দিয়ে নেমে গেল।এতক্ষণে যেন হার্ট তার খুলে বাইরে বেরিয়ে যাচ্ছে।আশেপাশে অজস্র মানুষ। পাভেল ভয়ে ছিলো,না জানি কখন ঠাস করে মেরে দেয় গালের উপর।তখন কি করতো সে?মেয়েদের সাথে মারামারি করতো নাকি সে?আল্লাহর কাছে কোটি শুকরিয়া যে সবটা ভালোয় ভালোয় মিটে গেছে।এবার কোনোভাবে এই সাভার থেকে বের হতে পারলে হয়।
পাভেল যেতেই আর্শিকে গা ছাড়িয়ে সামনে টেনে আনলো।ইশশ!মুখটা কেমন শুকিয়ে গেছে তার বিড়াল ছানাটার।দুহাত দিয়ে আলগোছে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরলো।আর্শিও লেপটে রইলো অনেকক্ষণ।দুজন’ই নির্বিকার।যেন কিছু বলার ভাষা নেই। আলগোছে হাতের কব্জি ধরে আর্শিকে নিয়ে রাস্তায় নামলো স্পর্শী।রিকশা ডাক দিয়ে চললো বাসার উদ্দেশ্যে। পাঁচ মিনিটের মাথায়’ ই পৌছে গেল তারা।কলিং বেল বাজাতেই গেট খুললো পিপাসা।আর্শিকে দেখতেই হাউমাউ করে কান্না করে জড়িয়ে ধরলো।কিছু বলার প্রয়াস করতেই স্পর্শী ইশারায় বারন করলো।থেমে গেলেন তিনি।তারপর হুট করে জিজ্ঞেস করলেন,
“তোর না পিরোজপুরে যাওয়ার কথা ছিলো?”
মাথা নাড়ালো স্পর্শী।বললো,
“ওরাই পৌছে দিয়ে গেছে।”
দ্রুত রান্নাঘরে ছুটলেন পিপাসা। বললেন,
“আমি ভাবলাম তোদের আসতে আরো দেরী হবে।তাইতো রান্না করিনি।তোরা বোস।আমি নুডুলস রান্না করে দিচ্ছি।”
মাথা নাড়িয়ে আর্শিকে নিয়ে রুমে চলে গেল স্পর্শী।তার গায়ে নতুন ড্রেস।সেদিকে তাকিয়ে শান্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
“তোর জামা কই?আর এটা কার?”
কিছুটা ভীতসন্ত্রস্ত হলো আর্শি।বললো,
এটা পাভেল ভাই কিনে দিয়েছে।আর আমার টা ওই ঘরেই রেখে এসেছি ভুলে।”
স্পর্শী অন্যদিকে তাকালো।মাথার ভেতর অজস্র প্রশ্নেরা খোঁচাচ্ছে উত্তর জানার জন্য।কিন্তু এই সময়ে আর্শিকে প্রেশার দেওয়া কোনোভাবেই উচিত হবে না।নিজের সমস্ত প্রশ্ন কে গিলে ফেলে উঠে রুমের বাইরে গেল।মায়ের রান্না হয়ে গেছে।গ্লাস এবং জগ সাথে কিছু কাটা চামিচ নিয়ে চলে এলো রুমে।মা ও নুডুলস হাতে পিছু পিছু এসেছেন।বিছানার উপর বেড়ে মেয়েদের সাথে নিজেও বসলেন।স্পর্শী কাউকে পাত্তা না দিয়েও খেতে আরম্ভ করলো।ভীষণ খিদে পেয়েছে।পিপাসা ছোট মেয়ের হাতে বাটি তুলে দিয়ে বললেন,
“আম্মু খাও।”
সামান্য ঢোক গিললো আর্শি।সবার সাথে নিজেও এক চামচ মুখে নিলো।তারপর রেখে দিতেই ভ্রুঁ কুঁচকে ফেললো স্পর্শী।থমথমে কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
“খাচ্ছিস না কেন?”
নড়েচড়ে বসলো আর্শি।আমতা-আমতা করে বললো,
“আমার পেট ভরা।ঢাকায় ঢুকেই পাভেল ভাইয়ের সাথে খেয়েছি।”
আঁতকে উঠলো পিপাসা।স্পর্শীর উদ্দেশ্যে বললো,
“পাভেল ভাই আবার কে?”
স্পর্শী শান্ত কন্ঠে বলল,”যে ছেলেটা ওকে নিয়ে এসেছে।”
এরপর আর্শির উদ্দেশ্যে বললো,
“তা কি খেয়েছিস?”
আসন দিয়ে বসে বললো,
“চাউমিন।”
ভ্রুঁ কুঁচকে হেয়ালির সাথে স্পর্শী বললো,
“বাব্বাহ,নতুন জামা,চাউমিন; বেশ ভালোই তো শান্তিতে ছিলি। তাই না?”
বাটি রেখে আর্শিকে টেনে কাছে নিলো পিপাসা।স্পর্শীকে ধমক দিয়ে “তুই থাম” বলে মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,
“ও মা,তোর সাথে ওরা খারাপ কিছু করে নি তো?এখান থেকে কিভাবে নিয়েছিলো তোকে?”
আর্শি মায়ের কোলে শুলো।পা দুটো তুলে জানালার গ্রিলে রেখে বললো,
“আমি তো তোমাকে আপুর কথা বলার জন্য পার্লারে যাচ্ছিলাম।এরমধ্যে রাস্তায় এক মোটাতাজা লোক এসে বললো তুমি ওনাকে পাঠিয়েছো ফোন নেওয়ার জন্য।আমি বললাম এখন পারবো না।আম্মুর কাছে যাবো।তারপর উনি বললেন,” তাহলে আমার সাথে চলো।তারপর তো আমি উঠে গেলাম।এরপর’ই কি একটা নাকের কাছে স্প্রে করলো আর আমি অজ্ঞান হয়ে গেলাম।
তেঁতে উঠলো স্পর্শী।বললো,
“কেন?তুমি কি একটা বাচ্চা?যে গাড়িতে উঠতে বলবে আর হনহনিয়ে উঠে যাবি।আজকাল বাচ্চারাও তো তোর থেকে চালাক।তুই খাঁমচি মারতে পারলি না।হাতে নখ রাখিস কেন?খাঁমচি মেরে চোখের ঢ্যালাঢোলা বের করে দিবি।এরপর যা হবে হোক।আগে তো নিজের সেফটি।তা নয়।তা করবি কেন?সারাক্ষণ পেট গাঁদিয়ে খাবি আর ভেটকি মাছের মতো বিছানায় পড়ে ওল্টাবি।তো র এই একটা কাজের জন্য কতটা দৌড়াতে হয়েছে তা কি তুই জানিস।তোর খাওয়া বন্ধ। সামান্য একটু বুদ্ধি নেই মাথায়।ঢেড়স কোথাকার।”
আর্শি মাথা নিচু করে ছলছল চোখে সবটা শুনলো।পিপাসা আবারো জড়িয়ে নিলো নিজের সাথে।এরপর স্পর্শীর উদ্দেশ্যে বললো,
“ও কি তোর মতো সব বোঝে।এইটুকু মেয়ে আমার।ও কি করে প্যাঁচগোচ বুজবে এসবের।ওর সাথে তোর তুলনা দিচ্ছিস।আগে ও তোর মতো হোক, তারপর বলিস।”
এরপর আর্শির উদ্দেশ্যে বললো,
“ওমা,এতোদিন কি খেয়েছিস তুই?তোকে কি খেতে দিয়েছে ওরা?”
মায়ের বুকের মধ্যে মাথা গুজলো আর্শি।বললো,
“এখান থেকে যাওয়ার পর সারাদিন, রাত আমি তো অজ্ঞান’ই ছিলাম।মাঝখানে একটু বিকেলের দিকে উঠলাম।ওমা,ওই ঢ্যামড়া ব্যাটা আবার আমাকে স্প্রে করে দিলো।এরপর তো পরের দিন সকাল বেলা পাভেল ভাই আসলো।তারপর থেকে সকাল, বিকাল,রাতে ওই খাবার দিয়ে যেতো।দুপুরে বিরিয়ানি,সকালে পরটা ভাজি,রাতে গ্রিল আনতো।আমরা খেতাম।”
বলতে বলতেই উৎফুল্ল আর্শি বসে পড়লো বোনের সামনে।বললো,
“জানো আপু, আমাকে একদিন রাতে ফুচকা এনেও খাইয়েছে পাভেল ভাই।”
স্পর্শী চোখ দুটো ছোট ছোট করে তাকালো।বললো,
“তুই কি কিডন্যাপ হয়েছিলি ;নাকি শশুর বাড়ি গিয়েছিলি।বাহ,দারুণ আপ্যায়ন তো করেছে আপনাকে।আমার ই তো এখন যেতে ইচ্ছে করছে।”
থেমে মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো,
“এগুলো গুছিয়ে রেখে আসো তো।এখন ঘুমাবো সবাই।এরপর বিকালে উঠে রান্না করে নেব।”
পিপাসা উঠে গেলেন।মুহুর্তেই আর্শিকে টেনে কাছে আনলো স্পর্শী।নিচু কন্ঠে কঠোর হয়ে বললো,
“একদম ভয় পাবি না,আর না তো লজ্জা পাবি।যা জিজ্ঞেস করছি ঠিক ঠাক ভাবে উত্তর দিবি।ওরা কি তোকে বাজে ভাবে ছুঁয়েছে।কতক্ষণ অজ্ঞান ছিলি তুই।আর তোকে কি ওরা অজ্ঞান করেই রাখতো?ক-জন ছেলে ছিলো?যেখানে রেখেছে সেটা কি কোনো গোডাউন নাকি রুম ছিলো।ঠিক ঠাক ভাবে উত্তর দিবি।”
ঘাবড়ে গেল আর্শি।আপু তাকে ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছে সেটা ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছে সে।নিচু কন্ঠে কাঁপা কাঁপা স্বরে বললো,
“আপু তুমি বিশ্বাস করো,এমন কিচ্ছু হয় নি।আমাকে এখান থেকে অজ্ঞান করে নিয়ে যাওয়ার পর একটা গোডাউনে রেখেছে।লম্বা রুম টা।সব বস্তা ছিলো আশেপাশে। ওখানেই এক পাশে পড়েছিলাম
।ঘুম থেকে উঠে কাউকে দেখি নি।তারপর যখন চিৎকার করলাম।হুট করে কেউ বাইরে থেকে দরজা খুললো।এসেই আবার স্প্রে করে দিলো।এরপর পরের গভীর রাতে ঘুম ভাঙলেও আওয়াজ করি নি কোনো।সকালে পাভেল ভাইকে দেখে কান্না করে দিছিলাম।তারপর উনি ওই লোকটাকে বকেছে।আর আমাকে বলেছে যদি চেঁচাই তাহলে হাত পা বেধে স্প্রে করে অজ্ঞান করে দিবে।তাই আর চেঁচাই নি।বিশ্বাস করো,আমার সাথে কেউ বাজে কিচ্ছু করেনি।আর ওই রুমের মধ্যে পাভেল ভাই ছাড়া আর কেউ আসে নি।শুধু রুমের বাইরে মাঝেমধ্যে ওই লোকটাকে দেখতাম।হয়তো পাহারা দিতো আমায়।আর কিচ্ছু না।”
স্পর্শী চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো,
“ওই এম্পি যেত না?ওই যে সবসময় পাঞ্জাবি পড়া থাকে,আর চুলগুলো পেছনে ঝুটি করা থাকে।ওই লোক যায় নি কখনো?
আর্শি মাথা নাড়িয়ে না সূচক উত্তর দিয়ে জানালো,
এই রকম লোক কখনো আসেনি তার কাছে আর সে চেনেওনা এই এমপি কে।
বলেই কান্না করে দিলো।
মুখ চেপে ধরলো স্পর্শী।বললো,
“হইছে, হইছে।বুঝছি আমি।আর কাঁদতে হবে না।এবার ঘুমো।”
এরইমধ্যে পিপাসা এলো।ক্লান্ত চোখে মেয়েদের পাশে শুয়ে পড়লেন।আজ কতদিন পর একটু শান্তিতে ঘুমাবে তারা।
ধীরে ধীরে মায়ের দিকে ঘুরলো আর্শি।একেবারে লেপ্টে রইলো বুকের মাঝখান টায়।চোখ বুঝতেই মুচকি হেসে জড়িয়ে ধরলো মাকে।গত তিন দিন তার কাছে স্বপ্নের মতো ছিলো।কিডন্যাপ হয়ে যদি ক্রাশের এমন আদর-আপ্যায়ন,দেখা পাওয়া যায়, তাহলে এমন অপহরণ আরো পাঁচ বার হতে রাজি আর্শি।আলতো করে চোখ বন্ধ করে ভাবতে লাগলো গত তিনদিনের কথা।
জ্ঞান ফিরতেই জেগে উঠলো আর্শি।উফফফ!মাথাটা যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে তার।আশপাশ ঘোলা লাগছে ভীষণ। হয়তো প্রায় সন্ধ্যে হয়ে এসেছে।রুমের এপাশে ওপাশে সব মুখ বাঁধা বস্তা।একটা বস্তা ধরে উঠে দাঁড়ালো আর্শি।দরজায় ধাক্কা দিয়ে “কেউ আছেন ডাক দিতেই হুড়মুড় করে কেউ দরজা খুললো।দ্রুত স্প্রে বের করে মুখে দিতেই আর্শি পুনরায় অজ্ঞান।এরপরে জ্ঞান ফিরলো ঠিক সাড়ে তিনটায়।চোখ খুলেই দেখলো অন্ধকার।চারপাশে সাদা বস্তাগুলো একেকটা সাদা কাপড়ে মোড়া মরদেহ ঠেকছে আর্শীর কাছে।দুহাত দিয়ে মুখ চেপে কেঁদে দিলো আর্শি।কিন্তু কেউ সাড়া দিলো না।পরবর্তীতে আবারো পড়ে রইলো সেভাবে ফ্লোরে।চেষ্টা করলো ঘুমানোর।এরপর সকালে কিছু চেঁচামেচির আওয়াজে ঘুম ছুটে গেল। উঠে উঁকি মারতেই দেখলো দরজা খুলছে কেউ।দ্রুত লুকিয়ে পড়লো বস্তার আড়ালো।পাভেল রাগত স্বরে পাহারা দিতে থাকা লোকটার উদ্দেশ্যে বললো,
” সারা রাতে লাইট টাও জালিয়ে দাও নি খাবার তো দুরের কথা। ”
আর্শি উঁকি মারলো।পাভেলকে দেখতেই পিলে চমকে উঠলো তার।কিন্তু সামনে বেরোলো না।পুরো রুমে চোখ বুলিয়েও কাউকে দেখলো না।পুনরায় ছেলেটাকে ধমক মারার প্রয়াস করতেই দেখলো বস্তার ওপাশ দিয়ে জামা দেখাচ্ছে।ধীর পায়ে হেটে পেছনে গেল আর্শির।কিন্তু টের পেল না সে।উলটো পাভেল দেখার জন্য উঁকি মারলো আবারো।কিন্তু পাভেল নেই।পেছনে কারো অস্তিত্ব অনুভব করতেই তাকালো।মুহুর্তে’ই পাভেল কে দেখে চিৎকার করে দু হাত পিছিয়ে গেল।
“চুপ করো,ভয় পেয়ো না।কিচ্ছু করবো না আমি।” পাভেল বললো।
কিন্তু আর্শি শুনলো না।আবারো চিৎকার করতেই ধমক মেরে বললো,
“যদি আরেকবার চেঁচাও তো হাত,পা বেধে স্প্রে করে ঘুম পাড়িয়ে রাখবো।”
আর্শি চুপ করে গেল।মুহুর্তেই আবার ঠোঁট ভেঙে কান্না করে দিলো।ভীষণ খিদে পেয়েছে।কাল থেকে না খেয়ে আছে।কান্নারত কন্ঠে বললো-
‘আমার খিদে পেয়েছে।কাল থেকে কিচ্ছু খাইনি।”
রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ১৪ (২)
দ্রুত উঠে পড়লো পাভেল।বাচ্চা মেয়ে।অথচ এখনো না খেয়ে আছে।উঠে ছেলেটিকে কিছু বলতেই সে চলে গেলো।কিছুক্ষণ পর নিয়ে এলো বিরিয়ানি।কিছুটা অসস্তি লাগলেও খেয়ে নিলো আর্শি।এভাবেই ধীরে ধীরে কিছুটা ভয় কাটলো।দিনের প্রায় তিন/চার বার দেখা করে যেত পাভেল।সাথে আনতো পছন্দের খাবার।পাভেলের উদ্দেশ্য একটাই ছিলো,”যাতে এই মেয়েকে ছাড়ার পরেও কখনো ভাইয়ের নামে বাজে কথা না ছড়াতে পারে।যেন আঙুল তুলতে না পারে।”