রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৪৪
সিমরান মিমি
“এইইই স্পর্শী!দরজা খোল।আরে আট’টা বেজে গেল।তুই কি দরজা খুলবি?”
কানের মধ্যে এই চিৎকার গুলো প্রবল গতিতে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।চোখ-মুখ যন্ত্রণায় কুঁচকে ফেললো।শরীরকে সর্বোচ্চ বল প্রয়োগ করে শোয়া থেকে ওঠালো।মাথাটা অসহ্যকর যন্ত্রণায় ফেটে যাওয়ার উপক্রম।ঠোঁট দুটো শুষ্ক মরুভূমির ন্যায় হয়ে গেছে।এ যেন খরার প্রকৃতি ফুটে উঠেছে তার ঠোঁটে। দরজার সিটিকিনি টা তিনবার টানলেও সফল হলো না।হাত থেকে শুরু করে পুরো শরীর কাঁপছে।শেষ বারের মতো সকল শক্তি প্রয়োগ করে টান মারলো।শরীর টা যেন নড়ে উঠলো। তাল সামলানো কঠিন হয়ে পড়লো।দ্রুত দুহাত দিয়ে মাকে ধরে সোজা হয়ে দাঁড়ালো স্পর্শী।
পিপাসা চমকে উঠলো।মেয়ের হাত দুটো ধরে কপাল ছুঁতেই আঁতকে উঠলো।ব্যতিব্যস্ত হয়ে খাটে বসালো।সাথে সাথেই আবারো শুয়ে পড়লো স্পর্শী।
“একি রে!জ্বর এলো কখন?তোর গা তো পুড়ে যাচ্ছে।কাল রাত থেকে ডাকছি।অথচ খামখেয়ালি করে না খেয়েই শুয়ে পড়লি।ভাতটা খেয়ে একটা প্যারাসিটামল খেলে কি আর এতোটা বাড়তে পারতো জ্বর?”
গুঙিয়ে উঠলো স্পর্শী।নিঃশ্বাস নিতে গেলেও কেমন গরম শ্বাস বের হয় মুখ থেকে।বিদঘুটে অবস্থা। জড়ানো কন্ঠে বললো,
“আমাকে একটা কম্বল দিবা?শীত করছে।”
সাথে সাথেই উঠে বসলো পিপাসা।আলমারি থেকে পাতলা কম্বল টা গায়ে দিয়ে দিলো মেয়ের।এরপর ছুটে গেলো রান্নাঘরে।আজকের রান্না টা সে করে ফেলেছে সকালে উঠে। প্লেটে খাবার বেড়ে ওষুধ নিলো সাথে।
“এইই,মুখ ধুয়েছিলি?”
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
চোখ বন্ধ করা অবস্থায়’ই না স্বরুপ ইঙ্গিত করলো স্পর্শী।পিপাসা এপর্যায়ে বাথরুমে ছুটলেন।বালতিতে করে পানি, মগ নিয়ে এলো।মাথা তুলে ধরে হাতে ব্রাশ ধরিয়ে দিলো।আলগোছে চোখ বন্ধ অবস্থাতেই ব্রাশ করলো স্পর্শী।এরপর মগের পানি দিয়ে মুখ হাত ধুইয়ে দিলো পিপাসা।তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছিয়ে দুটো বালিশের উপর মাথাটা হালকা উঁচু করে শোয়ালো।তারপর ভাত মেখে খাওয়াতে লাগলো মেয়েকে।তিন নলা খেতেই অধৈর্য্য হয়ে উঠলো স্পর্শী।হার মানলেন পিপাসা।ওষুধ ভেঙে খাইয়ে দিয়ে শুইয়ে দিলেন আবার আগের মতো।গায়ের উপর আরেকটা কম্বল দিয়ে নিজের ফোন টাকে পাশে দিলেন।
“বেশি খারাপ লাগলে আমাকে একটা কল দিস।আজকে তিনটা ব্রাইডাল সাজানোর কথা আছে।তারা অগ্রীম পেমেন্ট ও করে দিয়েছে।আমি তাড়াতাড়ি’ই চলে আসবো।গেট তালা মেরে গেলাম।”
মাথা নাড়িয়ে সায় জানালো স্পর্শী।এরপর বাটন ফোনটা হাতে নিয়ে এগিয়ে গেল বাইরের দিকে।তখনকার ওষুধ খাওয়ার পর টানা একঘন্টা বেহুশের মতো ঘুমিয়ে রইলো স্পর্শী।উঠলো ঘেমে নেয়ে একাকার হয়ে।গায়ের উপর থেকে বড্ড কষ্ট করে কম্বল দুটো সরিয়ে দিলো। উফফফ!জ্বর টা ছাড়লেও মাথাটা আগের থেকেও ভার হয়ে আছে।যেন টা একটা আস্ত পঞ্চাশ মণের পাথর।যেটাকে মাথার উপর রাখা আছে স্পর্শীর।কাঁপা শরীর টাকে টেনে নিয়ে গেল বাথরুমের দিকে।হুট করেই ফোনের রিংটোনের আওয়াজ কানে ভেসে আসলো।তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে রিসিভড করলো।
“হ্যালো!”
ওপাশ থেকে থমকে গেল ব্যক্তিটি।স্পর্শী আবারো হ্যালো বললো।এপর্যায়ে ঢোক গিললো আর্শি।মায়ের ফোন তাহলে আপুর কাছে।যদি রাগ করে।কথা বলাটা কি আদৌ উচিত হবে?ভেবে পেল না।কিন্তু এতোদিন পর আপুর সাথে কথা বলার লোভটাও সামলাতে পারলো না।অস্ফুটস্বরে বললো,
“আপু।”
স্তব্ধ হয়ে গেল স্পর্শী।স্পষ্ট আর্শির গলার আওয়াজ এটা।সে চিনতে মোটেও ভুল করে নি।আলগোছে কোনোরুপ উত্তর না দিয়ে কেটে দিলো ফোন।গুঙিয়ে কেঁদে দিলো আর্শি।নাম্বার টার দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে রইলো।আচ্ছা,সবাই কি তাকে ভুলে গেছে?আজ এতোগুলো দিন পর ফোন দিলো অথচ কেটে দিলো।তাদের রাগ কি এতটাই প্রবল?এই ছোট্ট ভুল টাকে কি ক্ষমা করা যায় না।ঠোঁট ভেঙে নিঃশব্দে করে কেঁদে দিলো।বড্ড ইচ্ছে করছে মাকে দেখতে,আব্বুর বুকে মাথা রাখতে,আপুকে জ্বালাতে।কিন্তু তা কি আর কোনোদিন ও সম্ভব?কেউ কি মেনে নেবে তাকে।তার যে কিছুই করার ছিলো না।
থম মেরে বসে রইলো স্পর্শী।নাহ!তার ফোন ভেঙে পড়ে আছে ওপাশে।টাচস্ক্রীন, ডিসপ্লে কিচ্ছু বেঁচে নেই।সব শেষ। এটা মায়ের ফোন।কই?তার ফোনে তো আর্শি কল দেয় নি কখনো।মার ফোনে দিয়েছে।তাহলে কি এর আগেও ও মার সাথে কথা বলেছে।ভেবে পেল না।দ্রুত হাতে কন্টাক্ট লিস্ট বের করে হিস্টোরি চেক করলো।নাহ!এই নম্বর থেকে আর কখনো ফোন আসে নি আজকেই নতুন।তার মানে গত দিনগুলোতে কোনো রকম যোগাযোগ করে নি আর্শি।না মায়ের সাথে আর না তো তার সাথে।তাহলে আজ কি এমন হলো যে হঠাৎ ফোন দিলো?আচ্ছা,ও ঠিক আছে তো?কোনো বিপদে পড়েছে কি?নাকি ওই পাভেল শিকদার ওকে ফেলে চলে গেছে।যেতেই পারে।এটা অসম্ভবের কিচ্ছু না।পরশ,পিয়াশ,পাভেল একই রক্ত বইছে তো।সব কটা বেইমান, বিশ্বাসঘাতক,অকৃতজ্ঞ।
দ্রুত ফোন লাগালো আর্শির নাম্বারে।ভীষণ অসস্তি হচ্ছে।লজ্জাও হচ্ছে।কিন্তু কিচ্ছু করার নেই।যদি ও বিপদে পড়ে থাকে।তাহলে কি হবে?রিসিভড হলো ফোন।ধমকের সুরে স্পর্শী বললো,
“ফোন দিয়েছিস কেন? ”
ঢোক গিললো আর্শি।আমতা-আমতা করে বললো,
“আপু,তোমরা নাকি বাড়ি থেকে রাগ করে ঢাকায় চলে গেছো?কেন?কি হয়েছিলো?
বিস্মিত হলো স্পর্শি।” তুই কি করে জানলি?”
“পাভেল ভাই বলেছে।”
“তোর পাভেল ভাইকে কে বললো?”
কিছুটা অসস্তি হলো আর্শির। কি বলবে সে?বলবে যে আমার ভাসুর বলেছিলো।নাকি বলবে পাভেল ভাইয়ের বড় ভাই বলেছিলো।না না,এটা কেমন সম্বোধন হয়।আমতা-আমতা করে বললো,”পরশ ভাইয়া বলছিলো ওনার সাথে।”
“বাহ!তাদের সাথে যোগাযোগ আছে ঠিক’ই।কথাও হচ্ছে নিয়মিত।তাই তো?”
মিনমিনে কন্ঠে আর্শি বললো,”হুম।আজকে উনি ফোন দিয়ে আমাদেরকে যেতে বললো সন্ধ্যার মধ্যে।কালকে ওনার বিয়ে তো তাই।”
পুরোনো ক্ষতটা আবারো সতেজ হয়ে উঠলো স্পর্শীর।এ যেন দগদগে ঘায়ের উপর দগ্ধ লোহা চেপে ধরার মতো অনুভুতি। চিৎকার করে বললো,
“আমি শুনতে চেয়েছি তোর কাছে?কেন ফোন দিয়েছিস আমায়?অনুমতি নিতে যে তুই তোর শশুর বাড়িতে যাবি কি না।লজ্জা করে না আমাকে ফোন দিতে?বেইমান,অকৃতজ্ঞ,অসভ্য মেয়ে।বংশের মুখে চুনকালি মেখে,বাপ-মায়ের মুখে জুতো ছুড়ে যখন তোর ওই প্রেমিকের হাত ধরেছিলি তখন আমাদের কথা মনে ছিলো না?কোন সাহসে ফোন দিয়েছিস?তোর কোনো বাপ-মা,বোন কিচ্ছু নেই।তোকে ভুলে গেছি আমরা।দ্বিতীয়বার আর কখনো ফোন দিবি না এই নাম্বারে।মনে থাকে যেন।যার হাত ধরে পালাইছিস তার কাছেই থাকিস।কখনো ফিরে আসবি না।মনে রাখিস, তোর জায়গা আর আমাদের কাছে হবে না।তুই মরলেও সেই খবরটা জানাবি না আমাদের।”
কেটে দিলো ফোন।ঘন ঘন শ্বাস নিচ্ছে স্পর্শী।ফোনটাকে বন্ধ করে দিলো।একহাত দিয়ে বুক টাকে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে উপুড় হয়ে পড়ে রইলো।শরীর টাকে শক্ত করে জমে রইলো।
রৌদ্র প্রজ্জ্বলিত সুন্দর সকাল।আশপাশ টা সূর্যের স্নিগ্ধ আলোয় চমকাচ্ছে প্রতিনিয়ত।চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে রইলো পরশ।এই মুহুর্তে তার অবস্থান বারান্দায়।অনেক কিছু ভাবছে।ভাবনাগুলো ক্রমশ পরিবর্তনে নিমজ্জিত।নানা রুপ ধরে সেগুলো দৃশ্যমান হচ্ছে মস্তিষ্কের মাধ্যমে।সেদিনের কথাগুলো,আবার হুট করে কালকের রিয়াকশন খুবই ভাবাচ্ছে তাকে।উফফ!আবারো কেন মনটা এলোমেলো হলো।কেন মনে হচ্ছে স্পর্শীয়া তার প্রতি দুর্বল।সে বিয়েতে মোটেই খুশি নেই।তার প্রতিটা কথায় প্রকাশ পেয়েছে অভিমান।কেন?কেন করছে এমন?কেন সব কিছু ঝুলিয়ে রাখছে।এতো ইগো কিসের?
চলে এলো রুমে ঢকঢক করে পানি খেয়ে নিলো।থম মেরে বসে রইলো কিছুক্ষণ।নাহ!এসব বিষয়ে ভাবা তার উচিত না।লাইফটাকে গোছাতে যাচ্ছে সে।অলরেডি গুছিয়েও ফেলেছে।ভুল হয়েছে কাল রাতে ঐ মেয়েকে ফোন দেওয়া। না হলে আবারো এলোমেলো হতো না সে।
ফোনের রিংটোন শুনতেই হাতে নিলো।স্ক্রিনে “তারিণ ” নামটি জ্বলজ্বল করে দৃশ্যমান হচ্ছে।রিসিভড করতেই মিষ্টি সুরে ভেসে আসলো।
“আসসালামু আলাইকুম।”
চোখ বন্ধ করে নিলো পরশ।সকল দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেললো মাথা থেকে।
“ওয়ালাইকুম আসসালাম।কি করছো?”
“এইতো বসে আছি।ব্রেকফাস্ট করেছেন?
পরশ চমকালো।নাহ সকাল থেকে এখন পর্যন্ত নিচে নামা হয় নি।না চাইতেও সকল দুশ্চিন্তা, স্মৃতি গুলো ঘুরপাক খাচ্ছে।
” নাহ,খাওয়া হয় নি।তুমি খেয়েছো?”
ব্যাতিব্যস্ত হয়ে উঠলো তারিণ।চিন্তিত কন্ঠে বললো,
“সেকি!বেলা কতটা হয়েছে খেয়াল আছে আপনার?এখনো ব্রেকফাস্ট টাও করেননি।এরকমই অনিয়মে থাকছেন নাকি।দেখুন এসব অনিয়ম আমার একটুও পছন্দ না।”
বিরক্ত লাগলো পরশের।সে তো এরকম কোনো আদুরে,আহ্লাদী, ন্যাকামো কথা শুনতে ইচ্ছুক না।তার প্রত্যাশা কিছু।এই যে এর জায়গায় স্পর্শী হলে বলতো,”ভালো করেছেন।আরো ঘন্টা চারেক পর খান।আপনি বরং একসাথে লাঞ্চ করে নিবেন।আর না খেয়ে থাকতে পারলে তো আরো ভালো।হুট করে একদিন পটল তুলবেন। আর আমি গোটাখানেক বিয়ে করার সুযোগ পাবো।”
ভাবতেই হেসে দিলো পরশ।মুহুর্তেই খারাপ লাগাটা ঘেরাও করলো প্রবল ভাবে।এই সব ন্যাকামো কথার সাথে মোটেও পরিচিত নয় সে।সে চায় স্পর্শী রুপি কাউকে।যে কিনা স্পর্শীর চাহিদা টা মেটাবে।সারাক্ষণ ঝগড়া করবে,ধমক মারবে,অভিমান করবে,রেগে ভাঙচুর করবে এসব।কিন্তু এটা হচ্ছে না।কি করে মানিয়ে নেবে সে। কি করে?
ফোন লাগালো স্পর্শীর নাম্বারে।সে জিজ্ঞেস করবে খোলাখুলি। কেন সে কালকে ওমন রিয়াক্ট করলো?কি চায় সে?”
“আপনার কাঙ্ক্ষিত নম্বরটিতে এই মুহুর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।অনুগ্রহ পূর্বক কিছুক্ষণ পর আবার চেষ্টা করুন। ধন্যবাদ।”
স্তব্ধ হয়ে গেল পরশ।উত্তর গুলো তার সামনে।স্পর্শী তার ফোন ধরবে না বলেই হয়তো ফোন বন্ধ রেখেছে।ওকে ফাইন!ডিস্টার্ব করবে না আর পরশ।যাকে সৃষ্টিকর্তা ভাগ্যে রেখেছে তাকেই নিজের মনের মতো তৈরী করবে।যথেষ্ট সুন্দরী তারিণ,শিক্ষিতা,ভদ্র।অন্তত অসভ্য,বেয়াদব নয় ওই মেয়ের মতো।
“আম্মু,প্লিজ আসো।”
চমকে গেল পিপাসা।ফোনের ওপাশ থেকে গড়গড় শব্দ আসছে।দ্রুত বোরকা পড়তে পড়তে বললো,
“স্পর্শী,তুই বমি করছিস মা?আমি আসছি এক্ষুণি।মাত্র দশ মিনিট সোনা।
ফোনটা হাত থেকে পড়ে রইলো ফ্লোরের এক কোণায়।পেট চেপে বসে পড়লো স্পর্শী।জান টা যেন এক্ষুনি বেরিয়ে যাবে।মাথা ব্যাথা,পেটে ব্যাথা,জ্বর,বমি সব একসাথে হানা দিয়েছি।উফফফ!কষ্ট টা কি কম হয়ে গেছিলো যে আবার রোগে হামলা করলো।দেয়ালের সাথে ঘেঁষে শুয়ে পড়লো। নিচ থেকে ওঠার শক্তি নেই আর।মিনিট খানেকের মধ্যেই পিপাসা হাজির হলেন।বোরকা খোলার আর টাইম পেলেন না তিনি।মেয়েকে ধরতেই দেখলেন পুরো জামা ভিজে গেছে।দ্রুত নতুন পোশাক এনে মুখ হাত ধুইয়ে দিলো।জামা চেঞ্জ করে দিয়ে ধরে ওঠালো।মায়ের গায়ে সমস্ত ভর ছেড়ে দিলো স্পর্শী।মেয়েকে নিয়ে গেটের কাছে আসতেই গাড়িতে উঠলো।জ্বর বেড়েছে খুব।সকালেও এতটা ছিলো না।দ্রুত হস্পিটালে ভর্তি করাতে হবে।
দুপুর প্রায় বারোটা।কালো রঙের একটা বিলাসবহুল গাড়ি থামলো। ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো শামসুল সরদার।সোভাম আঙুল উঁচিয়ে স্পর্শীদের গেট দেখিয়ে বললো,
” এটাই।কাল আমাকে দেখলো।এরপর মুখের উপর ধুম করে গেট টা আটঁকে ভেতরে চলে গেল।গেল তো গেল আর এলোই না।শামসুল সরদার এগিয়ে গেলেন গেটের দিকে।
“একিই!গেট তো তালা দেওয়া।”
অবাক হলো সোভাম।”হয়তো বাসায় নেই।কিন্তু গেল কোথায়? ফোন ও তো বন্ধ।”
গেটের সামনে গাড়ি থামানো দেখেই প্রতিবেশীরা কেউ কেউ আড়চোখে তাকালো।এরপর যখন দেখলো গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তখন একজন মহিলা তাদের গেট থেকে বের হলো।সন্দেহী চোখ নিয়ে সোভামের দিকে তাকিয়ে আবারো চলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই বললো,
“এক্সকিউজ মি,আন্টি।এই বাসার লোক কোথায় বলতে পারবেন?”
মহিলাটি তীর্যক দৃষ্টিতে তাকালেন।”কালকেও আপনারে এইখানে দাঁড়াই থাকতে দেখছিলাম অনেকক্ষণ।আবার আইজকাও।কারন কি?”
অসস্তিতে পড়ে হেসে দিলো সোভাম।”আসলে আন্টি, খুবই আর্জেন্ট।স্পর্শীয়া বা পিপাসা আন্টি কোথায় বলতে পারবেন?গেট তো তালা দেওয়া।”
যখন নাম বললো তখন সন্দেহ ঘুঁচলো তার।নিশ্চয়ই পরিচিত হবে।”আরে স্পর্শী তো অসুস্থ।এই কিছুক্ষণ আগেই তো আপারে দেখলাম ওরে হস্পিটালে গেছে।”
চমকে গেলেন শামসুল সরদার।বললেন,
“কেন?কি হয়েছে ওর?আর কোন হস্পিটালে গেছে?”
“তাতো জানি না।দেখলাম মেয়েরে গাড়ি ভইরা রেডিও কলোনির দিকে নিয়া গেল।অনেক অসুস্থ তো স্পর্শী।হাঁটতেই তো পারছিলো না।”
রাজনীতির রংমহল সিজন ২ পর্ব ৪৩ (২)
সোভাম চিন্তিত হয়ে পড়লো।দ্রুতকন্ঠে বললো,
“আচ্ছা,এদিকে একদম কাছের হস্পিটাল কোন জায়গায় বলতে পারেন?”
উত্তর দিলো মহিলা।এক মুহুর্ত ও দেরী না করে দ্রুতহাতে গাড়ি স্টার্ট দিলো সোভাম।