প্রণয়ের সুর পর্ব ৩০

প্রণয়ের সুর পর্ব ৩০
মহুয়া আমরিন বিন্দু

মিহির তুই কি আমার কথা কানে তুলবি না?আর কতোদিন এরিয়ে চলবি আমাকে?আমি আমার ভুল মেনেছি বললাম তো বৃষ্টির সাথেই তোর বিয়ের কথা বলবো শাহআলম ভাইয়ের সাথে তোর বাবা আর আমি যাবো!তুই এবার জে’দ কমা বাপ।
মিহিরের বাবা সফিক সাহেব চুপচাপ দাঁড়িয়ে বউ ছেলের এই কাহিনি তিনি গত কয়েকদিন ধরে দেখছেন।তাকে তো কেউ পাত্তাই দেয় না বাড়িতে।এদিকে বউ যেমন হয়েছে ছেলেটাও তেমন ঘাড়ত্যাড়া, তিনি হতাশা মিশ্রিত শ্বাস ছাড়লেন।
মিহির মুখ ঘুরিয়ে বললো–,,যতদিন বিয়ে না দিচ্ছো ততোদিন তোমাকে বিশ্বাস করবো না আমি।বিয়ে করেই এই অনশন থামাবো আমি!
শেফালী বেগম রেগে এসে মিহিরের হাত চেপে ধরলো

–,,চল আজই তোর বিয়ে দিয়ে থামবো আমি।দেখি তোর জে’দ বেশি নাকি আমার!
সফিক সাহেবের মুখ হা হয়ে গেলো,এতোদিন তো ছেলেটা বিয়ে বিয়ে করে মাথা খাচ্ছি’লো এখন তার গিন্নি টাও বেকেছে, আজ যে কি হবে!
মিহিরের মুখে রাজ্য জয়ের হাসি তবে তা চেপে রেখেছে।শেফালী বেগম রেগেছে মানে তার বিয়ে হবেই!অসহায় সফিক সাহেব ছুটলেন ছেলে আর স্ত্রীর পেছনে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সকাল সকাল হন্তদন্ত হয়ে শেফালী বেগম মিহিরের হাত ধরে ঢুকতে দেখে পর পর সবাই সদর দরজায় তাকায় পেছনে সফিক রহমান।ভদ্রলোক কাজের মানুষ কাজ ছাড়া কিছুই যেনো বুঝে না,সময় হয়েই উঠে না প্রতিবেশিদের সাথে কথা বলার এই মাঝেমধ্যে দেখা সাক্ষাৎ হয়!আজ তাকেও আসতে দেখে সবাই অবাক হয়।
অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি সবাই সোফায় বসে শাহআলম চৌধুরী, মাহফুজ চৌধুরী, শহিদুল চৌধুরী।
টেবিলে খাবার খাওয়ায় মনোযোগী বৃষ্টি, রৌফ,সেতারা বেগম,নেহা,সাব্বির!
নিখিল নামছিলো সিঁড়ি বেয়ে।ভাজির বাটি এনে টেবিলে রাখলো তাহমিদা।মিহিরের মা ভিতরে ঢুকেই বললো
–,,ভাই সকাল সকাল না এসে আর উপায় ছিলো না!

শেফালী বেগমের কথা শেষ হওয়ার আগেই সফিক রহমান এসে সোফায় বসে পড়লো। মাথায় হাত দিয়ে বললো–,,শহিদুল ভাই আমাকে তোদের বাসায় রেখে দে,এই মা ছেলের যন্ত্র”ণায় বাসায় থাকতে পারছি না আমি!
শাহআলম চৌধুরী বললো–,,কি হয়েছে সফিক খুলে বলো!
সবাই খাওয়া বাদ দিয়ে এদিকে তাকিয়ে, রান্না ঘর থেকে বের হলেন হামিদা বেগম,পেছনে সাহারা।
সবার কৌতূহল নিয়ে তাকিয়ে।শেফালী বেগম রেগে বলেন–,,আমার দোষ টা কোথায়?তোমার ছেলে যে নির্লজ্জের মতো বিয়ে করবো বিয়ে করবো করছে তার বেলা?সব দোষ নন্দ ঘোষ!

মাহফুজ চৌধুরী বলে উঠলো–,,বিয়ের বয়স হয়েছে ছেলের একটা বিয়ে করিয়ে দেন ভাবী!
–,,তার জন্যই এসেছি ভাই!আমার সুপুত্রের পছন্দের মেয়ে তো আপনাদের বাড়িতেই আছে।যাকে বিয়ে করবে বলে আমার ছেলে খাওয়া নাওয়া বাদ দিয়ে আমার বিরু”দ্ধে বিক্ষো’ভ জারি করেছে!
ভ্রু কুঁচকে তাকালো তিন ভাই।নিখিল এসে সোফায় বসতে বসতে বললো–,,অবশেষে তুই বিয়ে করতে আসতে পারলি!

সাব্বির তো খাবার টেবিলে বৃষ্টির দিক তাকিয়ে বললো–,,আজকে মনে হয় দুপুরে জমপেশ খাবার দাবারের আয়োজন হবে!তোর বিয়েটাও হচ্ছে,আহ্ জীবন আমি একাই সিঙ্গেল রয়ে গেলাম।
বৃষ্টি চোখ ছোট ছোট করে তাকালো।
নিখিলের দিকে তাকিয়ে আছে তার বাবা চাচারা।
শাহআলম চৌধুরী বলে উঠলো–,,তুই জানতি নাকি?আমাদের বাড়িতে কোন মেয়ে আছে যাকে মিহিরের পছন্দ!
নিখিল গা ছাড়া ভাব নিয়ে বললো–,,তোমার মেয়ে!
হামিদা বেগম,তাহমিদা,সাহারা টেবিলের কোনে দাড়িয়ে শুধু দেখছেন।তিন জায়ের মুখে হাসি।এবার কর্তাদের ভাবভঙ্গি দেখার পালা!

—,,আমার মেয়ে মানে তো বৃষ্টি!জেরিনের তো চার দিন আগেই বিয়ে ঠিক হলো।
মিহির পকেটে হাত গুঁজে দাঁড়িয়ে আছে।আজ তার কিছু বলার নেই শুধু কবুল ছাড়া!
শাহআলম চৌধুরী সহ বাকি দুই ভাই কি বলবেন বুঝতে পারলো না।
সেতারা বেগম এসে বসলেন সোফায়।তিনি বলে উঠলেন–,,আমার নাতনিরে তোর কাছে কেন বিয়া দিমুরে ছোকরা?কি আছে তোর আমার নাতিরে দেওয়ার মতো?
–,,এক বুক পরিমাণ ভালোবাসা দাদী!

বৃষ্টি বেচারি খুক খুক করে কেশে উঠলো।নেহা পানি এগিয়ে দিলো তাকে।জেরিনের ফোন বেজে উঠলো এর মধ্যে।যা দেখে বিরক্তি নিয়ে তাকালো নেহা, বৃষ্টি। সাব্বির বরাবরের মতোই স্বাভাবিক। জেরিন খাবার টেবিল ছেড়ে উঠে পড়লো এটা যেনো এখন রোজকার রুটিন হয়ে গেছে তার।
শেফালী বেগম রেগে মিহিরের কান টেনে ধরে বললো–,,নির্লজ্জ দেখেছি তোর মতো দেখিনি।
–,,যাই বলো মা।আজ বিয়ে না করে যাবো না আমি!
শাহআলম চৌধুরী মুখ কঠিন করে বললো–,,বললেই বিয়ে হয়ে যায় নাকি?আমার মেয়ের মতামত জানতে হবে না আমার?

–,,আপনার মেয়ে আমাকে ভালোবাসে শ্বশুর আব্বা।বিশ্বাস না হলে এখানেই তো আছে জিজ্ঞেস করুন।
–,,তাই নাকি?যদি মিথ্যা হয় তো এখনই বের হবে বাড়ি থেকে!
–,,যদি রাজি হয় তো এখনই বিয়ে দিতে হবে!
কপালে ভাজ পড়লো শাহআলম চৌধুরীর তিনি নিজেও জানেন মিহির বৃষ্টির মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে তাই বলে কি হুট করে বিয়ে হয়?বড় মেয়েটার বিয়ে ঠিক হলো এর মধ্যে কি ভাবে ছোট মেয়ের বিয়ে দিবেন তিনি?আত্মীয় স্বজনদের বলার ও তো একটা ব্যপার আছে!
শহিদুল চৌধুরী হাসলেন মনে মনে। তারা বাপ ছেলে মিলে ওনাকেও এই পরিস্থিতিতে ফেলেছিলো এবার বুঝুক কেমন লাগে। এবার তো তিনি আ”গুনে ঘি ঢালবেনই !শহিদুল বলে উঠলো–,,সমস্যা কি?তা বৃষ্টি মা তুই মিহির কে পছন্দ করিস?বিয়ে করবি এখন?

বৃষ্টি লজ্জায় আশেপাশে তাকালো।হামিদা বেগম এসে পাশে দাঁড়ালো কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো–,,লজ্জা পাচ্ছিস কেনো?ভালোবাসা বা পছন্দ করাটা তো দোষের কিছু নেই।যা বলার সত্যি সত্যি বলে দে!
নেহা এক হাত ধরলো তার।
শাহআলম চৌধুরী ভাইয়ের দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকালেন।শহিদুল চৌধুরী ভাইয়ের চাহনি উপেক্ষা করে বললো–,,ভাইজান তোমার কি মিহির কে পছন্দ নয়?পাত্র হিসেবে কোন দিক দিয়ে খারাপ বলো?মেয়ে তো একদিন বিয়ে দিবেই আজ হোক বা কাল।তবে এখন হলে সমস্যা কোথায়?
শাহআলম চৌধুরী বলে উঠলো–,,তাই বলে এখন?মিহির আর বৃষ্টি দুজন দুজনকে পছন্দ করে এটা আমিও জানি।বিয়েতে কোনো অমত নেই আমার!

সফিক রহমান বলে উঠলো–,,তাহলে আর না করবেন না ভাই। এদের জ্বালা”য় বাড়িতে টিকতে পারছি না আমি।আমি শান্তি প্রিয় মানুষ।
শাহআলম বললেন–,,জেরিনের বিয়েটা আগে হোক পরে না হয়!
কথা কেঁড়ে নিয়ে শহিদুল চৌধুরী বলে উঠলো–,, কি বলছেন ভাইজান?নেহা আর নিখিলের বিয়েটা ও তো জানানো হয়নি কাউকে।নিখিল,আর মিহিরের বিয়ে পরে একসাথে দিয়ে দিবো, একবারে রিসিপশন টা ও হয়ে যাবে। জেরিনের বিয়েতে ও সমস্যা হবে না।
নিখিল ঠোঁট কামড়ে হাসলো তার শ্বশুর ঠিক সুযোগ মতো ভাইকে প্যাঁচে ফেলে দিলো।

শাহআলম চৌধুরী কে তখনই রাজি করানো হলো।সব যেনো মাথার উপর দিয়ে গেলো সবার!
বৃষ্টি কে শাড়ি পড়াতে নিয়ে গেলো বৃষ্টি সাহারা বেগম সাথে জেরিন।মিহির পারলে এক কাপড়েই বিয়ে সারতো!
জেরিনের ফোন আবার বেজে উঠায় নেহা বিরক্তি নিয়ে বললো–,,উফ জেরিন আপু নিরব ভাইয়ার কি কোনো কাজ নেই?সারাদিন এতো কি কথা বলো বুঝি না তোমার বোনের বিয়ে বলে দিলেই পারো!
জেরিন বলে উঠলো–,,তুই বুঝবি না।কথা বলে আসি আমি।
বৃষ্টি বলে উঠলো–,,আপু তখনও তুমি ছিলে না এখনও থাকবে না?বিয়ে করছো দেখে কি ভাই বোন সবাইকে ভুলে যাবে?

জেরিন যেনো শুনেও শুনলো না।মেয়েটা চারদিনেই কেমন বদলে গেছে, সারাদিন শুধু নিরব আর নিরব করে!
কাজি সাহেব কে ডাকা হলো।পরিবারের সবাই বসার ঘরে উপস্থিত। বৃষ্টি কে নিয়ে আসলো নেহা এনে মিহিরের পাশে বসালো বৃষ্টি লজ্জায় চোখ তুলেও তাকাচ্ছে না।
বিয়ে পড়ানো শুরু করলো কাজি সাহেব।তিন কবুল বলে পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হলো বৃষ্টি, মিহির!
নাটকীয় ভঙ্গিমায় শেষ হলো এক অদ্ভুত বিয়ে!

খুশিতে চোখ ভিজে উঠলো হামিদা বেগমের।অবশেষে মেয়েটা সুখি হবে, মিহির যে বৃষ্টি কে ভালো রাখবে তা সবারই জানা।জেরিন টা ভালো থাকলেই তিনি যেনো দায় মুক্ত হবেন!সন্তানদের সুখই যেনো সব বাবা মায়ের একমাত্র আশা।
আজ আর কাজে যাওয়া হলো না কারো।দুপুরে খাবার টেবিলে বসে আছে সবাই।হাসি আড্ডায় কেটে যাচ্ছে যেনো সময়, যদি সময় টা এখানেই থমকে যেতো, তবে কতোই না ভালো হতো।

মিহির বৃষ্টি দাড়িয়ে আছে পাশাপাশি, বৃষ্টির রুমের বারান্দায়, আজ হঠাৎ ঝুম বৃষ্টি নামলো ধরনীর বুকে।
শীতলতায় সিক্ত হলো পরিবেশ।পূর্ণতা পেলো ভালোবাসা, এক নতুন শুরুয় যেনো প্রশান্তিতে পূর্ণ হলো দুটি মন দুটি স্বত্তা!
বারান্দার গ্রিল বেধ করে ফোঁটা ফোঁটা মুক্তোর দানার মতো জল এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে বারান্দায় অবস্থানরত এক নব দম্পতিকে।
রাতের আকাশে আজ তিমিরে ডাকা মেঘ।মিহির, বৃষ্টি দুজনই নিশ্চুপ যেনো আজ তাদের কথারা কোথাও ছুটে পালিয়েছে!
মিহির হঠাৎ এসে বৃষ্টির হাত টেনে ধরলো বৃষ্টি এখনো যেনো লজ্জায় চোখ মেলে তাকাতে পারছে না!মিহির কে দেখে আজ এতো লজ্জা কেনো লাগছে তার?

–,,তাকাও আমার দিকে দেখো তোমার স্বামী রূপী মিহির কে, আজ তোমার প্রেমিক নয় প্রেয়সী তোমার স্বামী তোমার সামনে দাঁড়িয়ে!
বৃষ্টির হার্টবিট যেনো ক্রমশ বাড়ছে।এলোমেলো অজানা অনুভূতিতে নেচে উঠছে মন!
মিহির বৃষ্টির কপালে দীর্ঘ চুমু খেয়ে জড়িয়ে ধরলো, কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো–,,অবশেষে তুমি আমার মেঘবালিকা!পুরোটাই আমার শুধুই মিহিরের, আজ আমি কতোটা খুশি তোমাকে বলে বুঝাতে পারবো না!
কথা বলবে না আমার সাথে?

–,,ভালোবাসি মিহির, তোমাকে ভীষণ বেশি ভালোবাসি!
–,,হবে কি আমার সম্পূর্ণ ভাবে?পুরোপুরি আমার হবে বৃষ্টি?হবে মিহিরের অর্ধাঙ্গিনি!
বৃষ্টি যেনো লজ্জায় আরো আড়ষ্ট হলো মিহিরকে জড়িয়ে ধরেই বুকে মাথাটা আরো কিছুটা জড়িয়ে নিলো!
মিহির বলে উঠলো–,,বাবাহ্ কি লজ্জা আমার জানপাখিটার!পেয়ে কি গেছি আমি আমার অনুমতি?
বৃষ্টি মুখ উঠিয়ে এবার বললো–,,উফ!মিহির তুমি কি শুরু করেছো আজ?পর পর শুধু লজ্জায় ফেলছো আমায়!
মিহির দুকদম এগিয়ে এসে বললো–,,তাই আমি লজ্জায় ফেলছি?তবে চলো এখনই সব লজ্জা যত্ন সহকারে আদরে আদরে ভুলিয়ে দেই!দেখবে সব লজ্জা পালিয়ে যাবে আমার ভালোবাসার ছোঁয়ায়।
বৃষ্টি অন্য দিক মুখ ফিরিয়ে দাঁড়াতেই মিহির বৃষ্টি কে কোলে তুলে নিলো।বৃষ্টি লজ্জায় মুখ লুকালো মিহিরের বুকে!
–,,আকাশের বৃষ্টিতে মন ভিজছে না জান। আমার যে আমার ব্যক্তিগত মেঘ কে লাগবে জান! যার প্রেম বারিধারায় ভিজবে আমার মন মরুভূমি।
মিহিরের বুকে আলতো চাপড় দিয়ে বৃষ্টি বললো–,,ধুর মিহির চুপ করো!
মিহির কন্ঠে আদর মিশিয়ে বললো–,,লাভ ইউ জান!

ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাড়িয়ে আছে বৃষ্টি,নেহা,সাব্বির এখন পড়ন্ত বিকেল।
হঠাৎ বিয়ে হওয়ায় মিহির অফিসে বৃষ্টি বৃষ্টিদের বাড়িতে, এতে অবশ্য মিহিরের কোনো সমস্যা নেই,তার বিয়ে হয়েছে এতটুকুতেই সে মহা খুশি।বউ এবার শ্বশুর বাড়িতে রেখে দিলেও সে বিরো”ধীতা করবে না!
নেহা মুখ ছোট করে বলে উঠলো–,,তোমরা কি কিছু বলবে না?জেরিন আপুর তো আমাদের জন্য সময়ই হচ্ছে না।বুঝি না ভাই বিয়ে তো আমিও করেছি কই সবাই কে তো ভুলে যাইনি!বৃষ্টি ও তো এতোদিন মিহির ভাইয়ের সাথে কথা বলতো কই বৃষ্টি তো আমাদের ভুলে যায়নি!আর সাব্বির ভাইয়া তুমি কিভাবে এতো শান্ত হয়ে গেলে বলোতো?
আমরা কতোদিন আড্ডা দেই না।আপু ভার্সিটি তে যায় আসার পর এক মিনিট ও আমাদের কাছে আসে না, মনে হচ্ছে নিরব ভাইয়া চায়ই না আমাদের সাথে জেরিন আপু মিশুক কথা বলুক,বিয়ে ঠিক হতে না হতেই কেমন পর করে দিলো আমাদের বিয়ের পর তো চিনবেই না!

অভিমানে টইটম্বুর হলো নেহার মন।বৃষ্টির মন ও খারাপ বিয়ের সময় ও তার বড় বোন তাকে ছেড়ে নিরব নামক মানুষটার সাথে কথা বলতে ব্যস্ত ছিলো!কি অদ্ভুত না তাদের সম্পর্কের সমীকরণ একটা নতুন মানুষের আগমণে এভাবে বদলে গেলো?আসলে জেরিনই চায় না তাদের সাথে মিশতে, নয়তো অন্য কেউ কখনো কাউকে এতোটা বদলে দিতে পারে না।
নেহা আবার বললো–,,তোমার তো বেশি কষ্ট পাওয়ার কথা সাব্বির ভাইয়া!
সাব্বির এবার মুখ খুললো–,,কেনো কষ্ট পেতে যাবো?
–,,তুমি আর আপু ছোট বেলা থেকে এক সাথে বড় হয়েছে।তোমরা একে অপরের সবচেয়ে ভালো বন্ধু, তোমার সাথেই তো আপুর বন্ডিং সবচেয়ে ভালো ছিলো।হঠাৎ করে যদি ওই মানুষ টা তোমাকে এরিয়ে চলে তবে কি তোমার কষ্ট পাওয়াটা স্বাভাবিক না?

সাব্বির হেসে বললো–,,তোরা দুজন ছোট তো তাই মেনে নিতে পারছিস না।আরে বোকা বিয়ে হলে কি মেয়েরা বাড়িতে থাকবে নাকি?বিয়ের পর মেয়েদের স্বামীই তার সব কিছু হয়।শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে তো নিরবের সাথেই থাকবে,ওর সাথে সম্পর্ক যত ভালো হবে ততো ভালো!আর আমার খারাপ লাগবে কেনো?বন্ধুরা কি চিরকাল পাশে থাকে নাকি?বিয়ে হলে অন্যের বাড়িতে যাবে,সংসার সামলাবে এটাই তো নিয়ম, নতুন পরিবার সব কিছু মিলিয়ে সময় হয়ে উঠে কোথায় বল।

নেহা মুখ বাঁকিয়ে বললো–,,এসব লজিক দিবে না তুমি আমাকে ভাইয়া।বিয়ে তো আমিও করেছি কই নিখিল তো আমাতে তোমাদের থেকে দূরে সরায়নি। আর মা,মেজো মা,বড় মা কি তাদের পরিবার কে ভুলে গেছে রোজ বিকেলে দেখো না কতো কথা বলে ঘন্টার পর ঘন্টা!
এর মধ্যেই মিহিরের আগমন ঘটলো নেহা বলে উঠলো–,,মিহির ভাইয়া তুমি বলো তুমি কি বৃষ্টি কে আমাদের সাথে আর মিশতে দিবে না?আলাদা করে দিবে?এমন কোনো আইন জারি করবে যেখানে লিখা থাকবে বৃষ্টি তুমি শুধু আমার সাথে কথা বলবে,বাকি সবাই তোমার পর!

মিহির চিন্তিত ভঙ্গিতে তাকালো–,,শালিকা চে’তে আছো কেনো?কি হয়েছে?
বৃষ্টি বললো আমি বলছি দাঁড়াও—,,,ওইদিন আমরা বাসা থেকে বের হয়েছিলাম প্রতিদিন তো সাব্বির ভাইয়া আর আপু এক সাথেই ভার্সিটি যায় হয় গাড়িতে নয়তো রিকশায়।
ওইদিন নিরব ভাইয়া আসে আপুকে নিতে, এতেও আমাদের কারোর সমস্যা ছিলো না।কিন্তু কি করলো আপু একবার বললো ও না আমাদের কেমন মুখের উপর অপমান করে চলে গেলো।এবার সারাদিন ফোন কথা বলে তাতেও সমস্যা নেই তাই বলে কি পরিবার ভুলে যাবে নাকি?আমাদের বিয়ের দিন ও আপু নিরব কে নিয়ে ব্যস্ত ছিলো।বড় বোন হিসেবে কি উচিত ছিলো না আমার পাশে থাকার?
তার উপর নিরব ভাইয়ার কথায় সাব্বির ভাইয়া কে ইগনোর করছে আপু,বুঝলাম বিয়ে করবে তাই বলে কি এতোদিনের ফ্রেন্ডশিপ নষ্ট করে দিবে কোনো মানুষের এক কথায়!
বিশ্বাস ভালো অন্ধ বিশ্বাস মোটেও ভালো না!

মিহির মনোযোগ সহকারে সব শুনলো।সাব্বির বলে উঠলো –,,মিহির ভাইয়া তুমি এদের কথায় কান দিয়ো না তো।জেরিন এখন একটু ব্যস্ত নতুন নতুন সম্পর্ক এখন একটু প্রেম করবে না তো কবে করবে বলো।আর এতোদিন আমাদের সাথে ছিলো হঠাৎ করে পরিবর্তন এই দুই গা”ধী মেনে নিতে পারছে না!
মিহির শ্বাস ছেড়ে বললো–,, বুঝলাম! এখন শোন তোরা ও তো জেরিনের সাথে গিয়ে কথা বলছিস না।তোরা গিয়ে ওকে চেপে ধর তাহলেই তো হয়।বিয়ের আগেই কিন্তু পাবি এখনই কথা বলে নে পরের বাড়ি ছেড়ে চলে গেলে পরে কিন্তু আফসোস করতে হবে!

ঠিক আছে আজ রাতেই আমরা আপু কে চেপে ধরছি, নিরব ভাইয়াকে ও একটা শা’স্তি দিতে হবে!
সাব্বির বলে উঠলো–,,তোদের কি আমাকে চোখে পড়ে না আড্ডা দেওয়ার জন্য, ওই ঘসেটিবেগম কে খুঁজিস কেন ওটা কে চশমাওয়ালা কে দান করে দিয়েছি আমরা!
ওর সময় হলে আসবে না হয় আমরাই আড্ডা দিবো, আর তোরা এখন পড়া বাদ দিয়ে ঘুরছিস কেনো?আমি ভাইয়ার কাছে বিচার লাগাবো তোদের নামে!
নেহা বলে উঠলো–,,তুমি তো মিরজাফর গীরি করছো তার বেলা।হুহ্! কেউ পছন্দ করো না আমাদের থাকো তোমরা চলে যাচ্ছি আমি।
সাব্বির বললো–,,রাগ করিস না নেহা বইন তোকে আটানা দামের লজেন্স দিবো!

জেরিনের রুমে রাতে খাবার খাওয়ার পরই হাম’লা চালিয়েছে নেহা,বৃষ্টি, সাব্বির আর রৌফ।
বৃষ্টি গিয়ে পাশে বসে বললো–,,এই যে মহারানী আপনার রাজ্য চালানো শেষ হলে আমাদের সাথে কি একটু কথা বলার সময় হবে?নাকি শুধু হবু দুলাভাই কে নিয়েই থাকবেন?
জেরিন বললো–,,তা কখন বললাম?
–,,কাজ তো তেমনই করছো তুমি।এই তো আবার ফোনটা বেজে উঠলো বলে!
কথা টা বলা শেষ হতে না হতেই নিরবের নামটা স্ক্রিনে ভেসে উঠলো।
সাব্বির বলে উঠলো–,,তুই কি রসকষহীন রে জেরিন বইন, নিক নেইমটা ও ঠিক ঠাক দিতে পারলি না।কানা দিতি সেই হইতো!
জেরিন চোখ পাকিয়ে তাকালো –,,কানা হতে যাবে কেনো?মাথা ব্যাথা তাই চশমা পড়ে।

–,,ওরে আল্লাহ মাথায় ও সমস্যা? তাই তো বলি শিক্ষক কেমনে হইলো!পাবনার টিকিট তো এখন দুইটা কাটতে হবে তোদের বাচ্চা হলে তখন তো আরো বাড়বে!
জেরিন ফোনটা ধরার আগেই খপ করে তা নিয়ে নিলো নেহা।
বৃষ্টি বলে উঠলো–,,তুমি একা কেনো কথা বলবে আমরা তো শালিকা আমাদের ও একটু কথা বলার সুযোগ দাও!
ফোন রিসিভ করে লাউডস্পিকারে দিলো নেহা।সাব্বির, বৃষ্টি, রৌফ কান পাতলো।
জেরিন বলছে ফোন দে আমার কাছে উল্টো পাল্টা কিছু বলবি না!
সাব্বির সুর তুললো–,,ওরে কি প্রেম কি প্রেম!দুইদিনের বৈরাগী ভাতে রে কয় অন্ন!চুপ থাক ছেম’রি আগে আমরা দেখি দুলাভাই দশে কতো পেলো, সে পর্যন্ত তুই কোনায় গিয়ে বস!
নেহা বললো–,,তা দুলাভাই কি সব কাজ ছেড়ে আমার বোনের পিছনে পড়েছেন নাকি?পরে দেখা যাবে চাকরি হাওয়া হয়ে যাবে পরে আমার বোনকে চালাবেন কি করে?

–,,কাজ করে কি হবে আর শালিকা তোমার বোন কে পটাতেই তো মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হচ্ছে!
বৃষ্টি বলে উঠলো–,,তাই বুঝি না পটাতেই রাত দিন সকাল বিকাল কথা বলছেন?না জানি পটাতে পারলে কি করেন!সেসব দেখার জন্য আদো বেঁচে থাকবো তো?
সাব্বির বলে উঠলো–,,প্রফেসর তো না হওয়া বউ কে চোখে হারাচ্ছে।আমার ভাই বিয়ে করা বউকেও এতো চোখে হারায় না!ভাগ্য ভালো বোন আমি সিঙ্গেল।
তা দুলাভাই পটানোর লিস্টে কি আমাদের জেরিন একাই নাকি?লিস্ট অনেক লম্বা?
নেহা বললো–,,হ্যাঁ হ্যাঁ এসব চশমা ওলা লোকেরা দেখতে সাধু, কিন্তু আসলে এরা গভীর জলের মাছ।একজন তো না এদের ডজন খানা প্রেমিকা থাকে!

কিরে বৃষ্টি ঠিক বলছি তো নাকি?আমাদের স্কুলের এক টিচার কিন্তু এরকম ছিলো!তা দুলাভাই দেখতে শুনতে তো মাশাআল্লাহ অন্য কোথাও চক্ক”র টক্ক”র আছে নাকি?
আমরা কিন্তু মোটেও সহজ সরল শালিকা না,গোয়েন্দা হতে বেশি সময় নিবো না!
ওপাশ থেকে কোনো কথা আসলো না।উল্টো জেরিন রেগে গেলো,এসেই ফোন টেনে নিয়ে বললো–,,তোরা যেমন ফালতু চিন্তা ভাবনাও ফালতু!কার সাথে কাকে তুলনা দিচ্ছিস?কোথায় নিরব কোথায় তোদের সে টিচার।মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়ে তুই এতো নাক গলাস কেনো নেহা?তোর মতো তো আর সবাই উড়নচণ্ডী স্বভাবের না! আমার ফোন ধরবি না আর। নিরব ঠিকই বলে তোদের থেকে দূরে থাকাই ভালো, তোদের মাথা ভর্তি শুধু ব’দ বুদ্ধি!
অবাক হয়ে তাকালো ওরা চারজন রৌফ তো ভুত দেখার মতো চমকালো জেরিন আপু এরকম ভাবে কথা বলছে কেনো?সাব্বির যেনো চেনা পরিচিত জেরিন কে আজ চিনতে পারলো না এ মেয়েটা বড্ড অচেনা!

নেহা অবাক নেত্রে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ ছোট করে বললো–,,স্যরি আর এমন ভুল হবে না!
বলেই নেহা এক ছুটে বেরিয়ে গেলো।বাহিরেই দাঁড়িয়ে ছিলো নিখিল,নেহা যেনো নিখিল কে দেখলোই না মেয়েটা প্রাণ পণে ছুটতে ব্যস্ত!
বৃষ্টি বলে উঠলো–,,আমরা শুধু একটু মজা করছিলাম আপু,নেহা একা না তুমি ওকে এভাবে বলতে পারলে?
জেরিন করুন চোখে তাকালো –,,আসলে আমি ওভাবে বলতে চাইনি!
সাব্বির বলে উঠলো–,,নিরব স্যার বলেছে আমাদের থেকে দূরে থাকতে?তুই নিজেও কি তাই চাস জেরিন?নিজেকে প্রশ্ন কর ভুলে যাবি না দিন শেষে পরিবারই পাশে থাকে।মরিচীকার পেছনে এতোটাও ছুটিস না যাতে পরে আর ফেরার পথই না থাকে!

আমি অন্তত এর পর থেকে তোর বিষয়ে কোনো কথা বলতে আসবো না।তুই কয়েকদিনেই ভুলে গেছিস নেহা তোকে কতোটা ভালোবাসে, ও আমাদের সবার আদরের নেহা কতো দ্রুত অভিমান করে নিশ্চই তোর অজানা নয়!নিজের মতো থাকতে চাওয়াটা দোষের না আমরা আর তোকে বিরক্ত করবো না!
বৃষ্টি বললো–,,তুমি বললে নিরব ভাইয়ার কাছে মাফ চেয়ে নিবো আমরা।বিরক্ত করার জন্য স্যরি।
বলেই তিন জন বেরিয়ে গেলো।জেরিন ধ’প করে বিছানায় বসে পড়লো।কি করে ফেললো এটা!

এতোক্ষণ ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ভাই বোনদের সম্পর্কে ফাটল ধরা খুব উপভোগ করলো একজন
বি’কট হাসি দিয়ে বলে উঠলো–,,চৌধুরী পরিবার কে ঠিক এভাবেই ধ্বং”স করবো আমি।এদের সব হাসি কেঁড়ে নিবো!এমন জায়গায় এনে দাঁড় করাবো যেখানে থাকবে শুধু হাহাকার।
যেভাবে আমার মা, আমার শান্তি,আমার ছোটবেলা আমার সুখ শান্তি কেঁড়ে নিয়েছে ওই শাহআলম চৌধুরী ঠিক সেভাবেই তার মেয়ের শান্তি কেঁড়ে নিবো আমি!
যুবকটির বিপরীতে বসে অন্য একজন মনে মনে বলে উঠলো–,,তুই আমার হাতের গড়ে তোলা এক কাঠ পুঁতল তোকে যেভাবে নাচাবো তুই সেভাবে নাচতেই বাঁধ্য ঘূনাক্ষরেও টের পাবি না তুই নিজের হাতে নিজের পরিবার কে ধ্বং”স করার খেলায় মেতেছিস!

নেহা বিছানায় গিয়েই ধ’প করে শুয়ে পড়লো।কাঁথা মুড়ি দিয়ে মুখ ঢেকে নিলো এর মধ্যেই নিখিল রুমে আসলো।
দ্রুত পায়ে হেঁটে গিয়ে বসলো নেহার মুখের দিকটায় টেনে সরাতে চাইলো কাঁথা কিন্তু কাজ হলো না।নিখিল লাইট অফ করে নেহার পাশে শুয়ে পড়লো বালিশে হেলান দিয়ে কাঁথার ভিতরে মাথা ঢুকিয়ে নেহাকে টেনে বের করলো!
কন্ঠে আদর মিশিয়ে ডাকলো–,,কি হয়েছে পাখি মন খারাপ?আমাকে বলো জান কি হয়েছে?কার কথায় এতো কষ্ট লাগলো!

নেহা নিখিলের বুকে গিয়ে পড়লো,জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিলো এবার।থামার নাম নেই,নেহা ভীষণ কষ্ট পেয়েছে জেরিন বড় বোনের মতো ভালোবাসতো তাকে কোনো দিন একটা টোকা ও দেয়নি আজ এতো রেগে কথা বললো।
নিখিল নেহার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো, চুমু দিয়ে বললো–,,এভাবে কাঁদছিস কেনো?তোকে কাঁদতে দেখলে তো আমার কষ্ট হয় জান।আর কাঁদবি না বলছি আমি।
জেরিন কে আমি বকা দিয়ে দিবো।
নেহা কান্নাভেজা কন্ঠে বললো–,,না!আপু কষ্ট পাবে।
–,,আচ্ছা!তো কি করতে হবে এখন মহারানীর মন ভালো করতে?জান অন্য কিছু আশা করিস না তোর জামাই ভালোবাসা ছাড়া কিন্তু কিছু দিতে পারে না!

নেহা নিখিলের কাছ থেকে দূরে গিয়ে বসলো মুখ ঘুরিয়ে বললো–, আপনি একটা খারা’প লোক!
নিখিল এগিয়ে এসে বললো–,,তা তো জানি মিসেস চৌধুরী!
নেহাকে সুরসুরি দেওয়া শুরু করলো নিখিল।নেহা হো হো করে হেসে উঠলো। হাত পা ছুড়াছুঁড়ি করছে আর বলছে–,, থামুন বলছি। না হয় আমি আপনাকে কাম’রে দিবো!
নিখিল বলে উঠলো–,,তোর দাঁত ভেঙ্গে যাবে, এসব নরম দাঁত দিয়ে কাউকে কাম’রানোর আশা বাদ দে তো!
নেহা নাকের ডগায় রাগ নিয়ে গিয়ে বললো–,,থাকবো না আমি আপনার সাথে, গেলাম!
,,,বউ জান আমাকে রেখে যেও না!
নিখিল নেহা কে টেনে কোমর জড়িয়ে বসালো কোলে।
–,,রেগে টমেটো হয়ে যাস কেনো কথায় কথায়।এবার হাসি দে তো হাসি দে, বউয়ের এমন কার্টুন মার্কা মুখ দেখতে চাই না আমি!
–,,কি আমি কার্টুন?

প্রণয়ের সুর পর্ব ২৯

নেহা নিখিল কে এলোপাতাড়ি মার’তে লাগলো এক পর্যায়ে চিৎপটাং হয়ে পড়ে গেলো বিছানায়।এবার দুজনই একসাথে হেসে উঠলো, চারদেয়ালে জমা হলো তাদের সুখের আরেকটুকরো সময়,সুন্দর স্মৃতির আরো একটা পাতা মুড়িয়ে রচিত হলো ভালোবাসার এক টুকরো মুহুর্ত!

প্রণয়ের সুর পর্ব ৩১