তোমার জন্য সব পর্ব ২২
রেহানা পুতুল
“আপনি গল্প করতে চেয়েছেন স্যার। ”
“সময়ের কাজ অসময়ে করতে নেই। এটা আপনার কথা। গল্প করার মতো মানসিক এনার্জি এখন আমার মাঝে অবশিষ্ট নেই। চলে যান বলছি।”
আদেশের ঢংয়ে বলল মাহমুদ।
কলি ম্লান মুখে বিছানায় এসে ফের শুয়ে পড়লো। খারাপ লাগছে তার। অনুতাপ হচ্ছে বেশ। যেই মানুষটা তার প্রতি এত কেয়ারিং। তাকে ওভাবে মুখের উপর মানা করে দেওয়াটা নেহাৎ অন্যায় হয়েছে। বেড শেয়ার করে ঘুমানো যেতো। কিন্তু ভয় ও আড়ষ্টতার জন্যই ত সে মানা করেছে। যদি স্বামীর অধিকার ফলানো শুরু করতো মাহমুদ? সে কি করতে পারতো? সেতো মেন্টালি প্রিপেয়ার্ড নয় এই সময়ের জন্য।
কলি উঠে গিয়ে আবার বারান্দায় যায়। দেখে মাহমুদের চোখ বন্ধ। কলি বিগলিত স্বরে ডাক দিলো,
“স্যার….স্যার… শুনছেন?”
মাহমুদ ক্লান্তিপূর্ণ চোখ দুটো মেলে তাকালো কলির মুখের দিকে। কিছু বলছে না। কলি ফের বলল অনুরোধ করে,
“স্যার প্লিইজ। বেডে আসুন না। প্লিইজ।”
“নাহ কলি। আমি বেডে গেলে আপনার সমস্যা হবে। আপনি মেঝেতে শোবেন বা সোফায় কাত হয়ে থাকবেন।”
“নাহ। বেডেই থাকবো।”
“প্রমিজ?”
“হুম। প্রমিজ।”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মাহমুদ তৎক্ষনাৎ উঠে গেলো রুমে। বেডে তার বালিশে শুয়ে পড়লো উপুড় হয়ে হাত পা ছড়িয়ে। কলিও তারপর এলো। মাহমুদের পায়ের উপর দিয়ে বিছানায় উঠে গেলো। দেয়াল ঠেস দিয়ে বসে রইলো। ডিম লাইটের আলো বেশ উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। মাহমুদ কলিকে দেখল। এবং তিরিক্ষি মেজাজে বলল,
” সবসময় দেয়াল ঘেঁষে থাকা কি আপনার বেশি পছন্দ? আপনার বিয়ে মনুষ্য জাতির সঙ্গে না হয়ে দেয়ালের সঙ্গে হলেই বেশ হতো।”
কলি ওভাবেই ভাবলেশহীনভাবে বসে বসে নখ খুঁটতে লাগলো।
“নখ খুঁটছেন কেন ছোট বাচ্চার মতো? শুয়ে পড়ুন।”
র*গচটা কন্ঠে মৃদু ধমকে বলল মাহমুদ।
“আমার এখন ঘুম আসছে না। শুইতেও ইচ্ছে করছে না। ”
“ওহ! তাহলে কাজ করুন বসে বসে। উঠে যেতে হবে না। এখানে বসেই করতে পারবেন। সওয়াবও পাবেন দিগুণ।”
“কি কাজ?”
” হঠাৎ রাত জেগে থাকাতে ও অনেকগুলো নিকোটিন টানাতে প্রচণ্ড মাথাব্যথা করছে। হাত পা কামড়াচ্ছে। অসুস্থবোধ করছি। আর এই অবস্থার জন্য আপনিই দায়ী। তাই এখন আমার ঘুমের আরামদায়ক ব্যবস্থা আপনাকেই করতে হবে।”
কলি অবাক হলো। ক্ষীণ গলায় বলল,
“কি করতে হবে আমাকে?”
“আমার সারামাথার চুলগুলো টেনে দিবেন। কপাল ম্যাসাজ করে দিবেন। দুই হাত টিপবেন বাহু পর্যন্ত। দুই পা টিপবেন হাঁটু পর্যন্ত। আমার ঘুম না আসা পর্যন্ত ননস্টপ সেবা দিবেন। বাসর রাতের এসাইনমেন্ট এটা আপনার জন্য। কুইক। ঘুমাতে হবে আমার।”
গম্ভীর স্বরে কলিকে আদেশ দিয়ে মাহমুদ ওপাশ হয়ে গেলো। দুচোখ বন্ধ করে ফেলল। মনে মনে বলল,
এটাই তোমার প্রাপ্য শাস্তি। বাসর রাতে জামাইকে আনন্দ দান করতে পারনি। এবার সেবা দান করো।
কলি জমে গেলো বরফখণ্ডের ন্যায়। এগুলো করতে হবে এখন আমাকে? উহু! শিট! এর চেয়ে রাতে পাশে ঘুমাতে দিতাম সেই ছিলো ভালো। নয়তো আমি এখন ঘুমের ভান করে শুয়ে থাকতাম। তাও ঢের ভালো ছিলো। কেন যে বললাম শুইতে মন চাচ্ছে না। নিজের কথার জন্য নিজেই কি বাঁশটা এখন খেলাম। ভাবতেই কলির মাথা ঝিমঝিম করতে লাগলো।
“কি হলো কলি? আরাম পাচ্ছি না কেনো?”
উপুড় হয়ে থেকেই বলল মাহমুদ।
কলি মলিনমুখে মাহমুদের মাথার কাছে গেলো। কাঁপা কাঁপা হাতে মাহমুদের চুলগুলো মুঠিধরে টানলো কিছুক্ষণ। কপালে ম্যাসাজ করে দিলো। দুইহাত টিপে দিলো। পায়ের পাতা থেকে ট্রাউজারের উপর দিয়ে হাঁটু পর্যন্ত টিপে দিলো। আবেশে মাহমুদের চোখে রাজ্যের ঘুম নেমে এলো। কলি যখন নিশ্চিত হলো মাহমুদ গভীর ঘুমে বিভোর। তখন কলি হাত সরিয়ে নিলো। তার দু’হাত ব্যথা হয়ে গেলো। দু’চোখ দিয়ে টপটপ করে জল পড়তে লাগলো। দলাই মলাই হয়ে নিজের বালিশে কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।
সকালে মাহমুদের আগেই কলির ঘুম ভেঙ্গে গেলো। সে শব্দহীনভাবে উঠে গেলো শাড়ির কুচি ধরে। বারান্দায় গিয়ে মাহমুদের তাওয়াল, মশার স্প্রে,গ্যাসলাইট এনে রাখলো রুমে। আবার গিয়ে গ্রিলে থাকা পুরোনো কাপড়টি হাতে নিলো। সেটা দিয়ে সিগারেটের খোসাগুলোকে জড়ো করে রাখলো একস্থানে। ওয়াশরুমে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে নিলো। ড্রেসিংটেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুল আঁচড়ে নিলো। এই ড্রেসিংটেবিলটা আগে ছিল না। নতুন বউ আসবে বাসায়। সেজন্য কেনা হয়েছে। কলি যতটুকু পারলো লাগেজ থেকে তার প্রসাধনীগুলো বের করে নিলো। পরিপাটি করে সব সাজিয়ে রাখলো ড্রেসিংটেবিলের সব সেল্ফে। বডি লোশন,আমন্ড ওয়েল, ময়েশ্চারাইজার, পারফিউম,ত্বকের একটা জেল, থেকে শুরু করে সব। মেকাপ বক্স রাখলো অন্য সেল্ফে। চিরুনি হোল্ডারটাও গুছিয়ে নিলো। এটাও যে নতুন দেখলেই বোঝা যায়। ভাবছে কি করবে এবার সে।
তারপর গিয়ে দুই সিটের বেতের সোফাটায় বসলো। মুঠোফোনটা হাতে নিলো। মাহমুদের নাম লিখে সার্চ দিলো ফেসবুকে। আইড়ি পেয়েও গেলো। মাহমুদ বিয়ে করেছে এমন কিছুই নেই। বিষয়টা কি হাইড রেখেছে তার জন্যই? যেনো ভার্সিটির কেউই না জানে। নয়তো স্যারদেরকেও ইনভাইট করতে হতো। এটা পরে জেনে নিবে জিজ্ঞেস করে। হয়তো। সে নিজেওতো পোস্ট দেয়নি। দিবেও না। কলি পিটপিট চোখে মাহমুদের আপাদমস্তক দেখে নিলো। হুম। সুন্দর হ্যান্ডসাম যুবক।
কলি আস্তে করে দরজা খুলে নিলো। বেরিয়ে গেলো ছন্দগতিতে। কাউকেই দেখছেনা। সে কিচেনের দরজায় গিয়ে উঁকি মারলো। বাতাসী তব্দা খেলো কলিকে দেখে।
“ওমাগো! ডরাইছি।”
“ডরানোর কি? আমি ভূত নাকি? সবাই ঘুমায় বাতাসী?”
বলে কলি ভিতরে গিয়ে দাঁড়ালো কিচেনের জানালা ঘেঁষে।
“না। খালাম্মা আছিলোতো।”
দুজনের কথার মাঝেই মাহফুজা রান্নাঘরে এলো। কলি তড়িতেই মাথায় শাড়ির আঁচল টেনে শাশুড়ীর দুই পা ছুঁয়ে সালাম দিলো।
” হইছে। সালাম দিতে হবে না। কাল এসেই ত সালাম দিলে। ”
“খালাম্মা ভালো কাজে বাধা দিতে নাই। সালাম যত দেওন যায় ততই সওয়াব।”
রুটির গোলা তৈরি করতে করতে বলল বাতাসী।
“রেডিও স্টপ কর বাতাসী।”
বাতাসী চুপ হয়ে গেলো।
“উঠে এলে কেনো মা? মাহমুদ ঘুমায়? ”
“জি মা। উনি ঘুমায়। আমার ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছে। ড্রেসিংটেবিলটা গুছিয়ে নিলাম লাগেজের কসমেটিকগুলো বের করে।”
“খুব ভালো করেছে। বাকি কাপড়চোপড়গুলো তোমাদের ওয়ারড্রবে রেখে দিও। একি তোমার নাক খালি কেন? কাল নাকফুল পরোনি?”
“নাহ মা। টিকলির সঙ্গে এটাচ যেটা ছিলো, সেটাই ত পরিয়ে দিলো পার্লারে। এখনো শুকায়নি। গায়ে হলুদের দিন ফুটো করলাম যে।”
“গলা,হাত,কান সবই ত খালি। মাহমুদ বের করে দেয়নি রাফ ইউজেরগুলো ?”
” নাহ।”
“লাগেজেই ত আছে। দেখতে ভালো লাগছে না মা। বিবাহিত মেয়ের নাক, কান,গলা, হাত খালি থাকা অশোভনীয়। বাসায় গেস্ট আছে। এখন গিয়েই পরে নিবে। গহনা বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে বিবাহিত মেয়েদের।
“আচ্ছা মা। রুমেই গিয়েই পরে নিবে।”
কলি আরো কিছুসময় গল্প করলো শাশুড়ীর সঙ্গে। মাহফুজা জিজ্ঞেস করলো,
“সকালে কি নাস্তা করতে তোমাদের বাসায়?”
“রুটি,পরোটা, সবজি, বানায় আম্মু। এইতো।”
“বাতাসী এখন রুটি বানাচ্ছে। গরুর মাংস আছে। সবজিও আছে। সবাই উঠুক। তখন নাস্তা করতে ডাক দিবে। এবার যাও রুমে।”
কলি নিজেদের রুমে চলে গেলো। মাহমুদের ঘুম হালকা হয়ে এলো। দরজা খোলার আওয়াজ কানে আসতেই হাই দিতে দিতে তাকালো। কলিকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“আপনি রাতে আমার মাথা টিপেন নি? কোন রুমে ছিলেন?”
“আপনার আরামদায়ক ঘুম কিভাবে হলো? আমি কিছুক্ষণ আগেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম।”
লাজুক গলায় বলল কলি।
“ওহ! সরি। একচুয়েলি এত দ্রুত ঘুম চলে এলো। বুঝতেই পারিনি। দরজাটা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিন। বেডে আমার পাশে উঠে আসুন।”
“কেন? আলো ফুটে উঠেছে। দেয়াল ঘড়ির দিকে দেখুন। আটটা বাজে।”
“আলো, সময় আমি দেখছি না? দরজা বন্ধ করার সঙ্গে এসবের কি সামঞ্জ্য? চোরের মন পুলিশ পুলিশ? পুলিশের হাতে ধরা না পড়ে চোর কয়দিন পালিয়ে থাকতে পারে? ”
“না,মানে,এমনিই। এমন কিছুই না।”
কুন্ঠিত গলায় বলল কলি।
“রা*গা*বেন না বলছি আমাকে। মুড যথেষ্ট ভালো আছে আমার। ভালো থাকতে হেল্প করুন। দরজা অফ করে কাছে আসুন বলছি।”
গম্ভীর কন্ঠে বলল মাহমুদ। কলি দরজা বন্ধ করে দিলো। বিছানায় উঠে এলো। দেয়াল ঘেঁষে বসলো। মাহমুদ চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। এক পায়ের পাতা আরেক পায়ের পাতার উপর ক্রসচিহ্ন র মতো করে দিয়ে। পা নেড়ে যাচ্ছে অনবরত। ঘাড় বাঁকিয়ে কলিকে দেখলো।
” আবার দেয়াল ঘেঁষে বসলেন। আমি কালই দেয়াল ভেঙ্গে ফেলব। একটু শোন আমার পাশে।”
“না শুইলে কি করবেন?”
চোখ নামিয়ে বলল বলল কলি।
“কিছুই করব না। শুইতে বলছি।”
কলি বিরক্ত হলো। দুই হাঁটু ভাঁজ করে বসেই রইলো।
মাহমুদ চট করে কলির ভাঁজ করা দুই পা সোজা করে নিলো বিছানার উপরে। কলির কোলে মাথা দিয়ে কোনাকুনি হয়ে শুয়ে পড়লো। কলি শুকনো ঢোক গিলল বার দুয়েক। বলল,
“পানিই..পানি..খাবো..উঠে যান।”
“আমি দিচ্ছি। আপনি নড়বেন না। খবরদার! ”
মাহমুদ উঠে গ্লাসে করে কলিকে পানি দিলো। কলি সামান্য পানি খেলো।
“এই এতটুকু পানির পিপাসা লেগেছে? আর কত বঞ্চিত করবেন আমাকে?”
বলেই মাহমুদ আগের মতো কলির কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়লো।
“স্যার দরজা খুলে দিই। কেউ আসতে পারে।”
কলির কন্ঠে অনুনয়।
“সেটা আমি দেখবো। নব দম্পতির বেড রুমের দরজা চব্বিশ ঘন্টাই বন্ধ থাকতে হয়।”
“মা বলছে, আমার সব সময়ে পরার জিনিসগুলো এখন পরে নিতে।”
কলি নানা বাহানা করেও আলাদা হতে পারছে না। মাহমুদ শিহরিত চোখে কলির মুখপানে চাইলো। বলল,
“আচ্ছা পরিয়ে দিচ্ছি। রাত ফুরিয়ে গেলো। বাসর ত হলো না। একটু খুনসুটি করি আমরা। দরজা বন্ধ মানেই সব নয়। কিছু কিছু।”
কলি চুপ রইলো। প্রত্যুত্তরে কিছু বলল না। মাহমুদ কলির একহাত টেনে নিজের বুকের উপরে চেপে ধরলো। নিবেদিত কন্ঠে বলল,
“কলিকে ভালোবাসি। কলির মুখে তার বরের নাম শুনতে চাই।”
কলির জন্য এটা খুব কঠিন প্রশ্ন। সে বলল,
“আমি জানিনা।”
“এসব বলে পার পাওয়া যাবে না। বলতেই হবে। আমার খুব ইচ্ছে আপনার মুখে আপনার হাজব্যান্ডের নাম শোনা।”
“লিখে দিলে হবে?”
“নোওও। সরাসরি আমার চোখের দিকে চেয়ে বলতে হবে।”
কলির বুক ধড়ফড় করছে। মাহমুদ কলির কোল থেকে মাথা তুলে নিলো। কলির গা ঘেঁষে বসলো। দু-হাত দিয়ে কলির দুগাল চেপে ধরলো। আকুল কন্ঠে বলল,
“ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ইচ্ছেগুলোর পূর্ণতা মানুষকে বিপুল আনন্দ দান করে। আর আনন্দ না পেলে কোন মানুষ ভালো থাকতে পারে না। মানুষ আনন্দের পিছনে ছোটে। আনন্দ পাওয়ার জন্য সে অনেক কিছুই করতে পারে। আর যে যেভাবে আনন্দ নিয়ে ভালো থাকতে চায়,তাকে সেভাবে আনন্দ দিয়ে ভালোরাখা একান্ত উচিত প্রিয়জনদের।
প্লিজ কলি,আপনার লাইফ পার্টনারের নাম বলুন?”
“আপনার জন্য যা ক্ষুদ্র,যা সহজ। বিপরীতজনের জন্য তা কঠিন। এটাও বুঝতে হবে। তবুও বলছি, কলির বরের নাম মাহমুদ খান।”
দাঁত চিবিয়ে বলল কলি।
মাহমুদ মৃদু চিৎকার করে উঠলো উৎফুল্ল হয়ে।
“ম্যানি ম্যানি থ্যাংকস কলি। প্রচণ্ডরকম ভালোবাসি আপনাকে। খুব ডিপলি ফিল করি এভরি মোমেন্ট। ও হ্যাঁ! রাতে নিরিবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে শান্তির ঘুম উপহার দেওয়ার জন্য স্পেশাল থ্যাংকস। এসাইনমেন্ট দশে দশ পেয়েছেন।”
এই বলে মাহমুদ কলির কপালে গাঢ় চুমু খেলো। হাতের পিঠে বেশ কয়েকটি চুমু খেলো ওভাবে বসে থেকে। পরে নেমে গেলো বিছানা থেকে। বিছানার সামনে দাঁড়িয়ে কলিকে বলল,
“একটু খাটের কিনারায় আসুন।”
কলি এলো। মাহমুদ কলিকে জড়িয়ে ধরল না। কলির মুখটাকে আলগোছে নিজের বুকে লেপ্টে লাগিয়ে নিলো। বলল,
“বুকে মাথা রেখে কান পেতে শোনো,হৃদয় কি বলে? আমার হৃদয় সমুদ্রের গর্জন শুনতে পাচ্ছেন? এই গর্জন বন্ধ করার অসীম ক্ষমতা একমাত্র আপনার হাতে।”
কলি বলল,
“কেউ এসে যাবে। ওগুলো বের করে দিন।”
“ওহ সিউর। দিচ্ছি। আপনাকে শাড়িতে লোভনীয় লাগছে। ইচ্ছে করে সারাক্ষন জড়িয়ে রাখি বুখে।”
তোমার জন্য সব পর্ব ২১
মাহমুদ গহনাগুলো বের করে নিলো। কলির পাশে বসলো। নিজের হাতে কলির গলায় সোনার চেইনটা পরিয়ে দিলো। উদাম ঘাড়ে ঠোঁট লাগাতে গিয়েও সরিয়ে নিলো। রাতের জন্য বাকি থাকুক। সে কলির কানে দুল পরিয়ে দিলো। দুই হাতে দুটি চুড়ি পরিয়ে দিলো। নোজ পিন পরাতে কলি ব্যথা পেলো। উঁহু ব্যথা! বলে মাহমুদের টিশার্ট খামচে ধরলো। নাকে একটু লোশন লাগিয়ে দিলো মাহমুদ। তারপর সে ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে গেলো।
দরজায় টোকা পড়লে কলি উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। একজন অপরিচিত বয়স্কা নারী। কলি সালাম দিয়ে তাকে ভিতরে যেতে বলল। তিনি ভিতরে গিয়েই সোজা বারান্দায় চলে গেলেন।
কিয়ৎক্ষণ পর ফিরে এসে কলির দিকে চাইলেন। নিরস ভঙ্গিতে বললেন,