তোমার জন্য সব পর্ব ২৩
রেহানা পুতুল
দরজায় টোকা পড়লে কলি উঠে গিয়ে দরজা খুলে দিলো। একজন অপরিচিত বয়স্কা নারী। কলি সালাম দিয়ে তাকে ভিতরে যেতে বলল। তিনি ভিতরে গিয়েই সোজা বারান্দায় চলে গেলেন।
কিয়ৎক্ষণ পর ফিরে এসে কলির দিকে চাইলেন। নিরস ভঙ্গিতে বললেন,
“গেলাম দেখতে একটা, পাইলাম আরেকটা। কাহিনী কিগো? ”
“আপনি বসুন না। কে আপনি? চিনতে পারিনি?”
অত্যন্ত বিনয়ী গলায় বলল কলি। গ্রামে একটা প্রতীকী কথা প্রচলিত। স্বশুর বাড়ির কুত্তাকেও সালাম দিয়ে ইজ্জত করে কথা বলতে হয়। এটা কলি তার মায়ের কাছে শুনেছে। তাই সে প্রথম দেখা নারীটিকে না চিনলেও শ্রদ্ধার জায়গায় ঘাটতি রাখেনি।
তিনি বিছানার এককোণে বসলেন। কিঞ্চিৎ রাগত স্বরে বললেন,
“গেলাম তোমার ভেজা কাপড় দেখতে। তার বদলে পাইলাম একগাদা পোড়া বিড়ির ছাইঁ। সারারাইত মাহমুদ এতগুলা বিড়ি খাইয়া শরীরের যে বারোটা বাজাইলো,এটা পোষানোর উপায় আছে?”
কলি হতভম্ব হয়ে গেলো শুনে। লজ্জিত চোখে বসে রইলো। তখন মাহমুদ বের হলো ওয়াশরুম থেকে ব্রাশ করে। আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। আয়নায় চোখ রেখেই উচ্ছ্বাসভরা কন্ঠে বলল,
” কি নানু? নাতবউ পছন্দ হলো?”
“রাখ তোর পছন্দ। তোরে কোলে পিঠে কইরা মানুষ করছি এই মাইয়ার লাইগা বিড়ি টাইনা কলিজা জ্বালাইতে?”
“কলিজা নয়,হৃৎপিণ্ড জ্বলে গেলো নানু।”
কলির দিকে চেয়ে মাহমুদ বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“এই কলি, আমার নানু আমার কোনপ্রকার অসুবিধা নিতে পারে না। তাই গরম হয়ে গেলো।”
কলি হাসলো নানুর দিকে চেয়ে। নানু মাহমুদের দিকে দেয়ে বলল,
“মাহফুজা যখন আমারে কইলো, পাত্রী তোর ছাত্রী। আমি ধইরা নিলাম তোগো দুইজনের ইটিসপিটিস ছিলো। এখন বারান্দার সুরুত দেইখা মনে হইলো এরে জোর কইরা বিয়া করছত। ”
মাহমুদ চেয়ার টেনে বসলো। কলিকে জিজ্ঞেস করলো,
“কলি আপনাকে জোর করে বিয়ে করেছি আমি?”
“না স্যার।”
নানুর বিষম খাওয়ার যোগাড়।
“কিরে? কেউ বউরে আপনি কয়,কেউ স্বামীরে স্যার কয়, এসব কি? এইটা অফিস?”
মাহমুদ হোহোহো করে হেসে ফেলল। বলল,
“সমস্যা নেই। চলুক আপাতত। তুমিতে এখন অভ্যাস হয়ে গেলে ক্লাসে সমস্যা। মুখ দিয়ে তুমি বেরিয়ে আসবে।”
“কত নমুনা তোগো। এই দুনিয়া মনে হয় আর মাষ্টার ছাত্রীর বিয়া হয়নাই। তোরাই একজোড়া। তোরাই একখান চিজ।”
পরক্ষণেই নানু কলির দিকে চেয়ে বললেন,
“মুসলমানের ঈদ যেমন তিনদিন ধইরা পালন করন যায়। তেমনি বাসর ঘরও তিনদিন ধইরা পালন করা যায়। বাকি দুই রাইতে যেনো বারান্দায় আর একটা বিড়ির খোসাও না পাই। নাস্তা খাইতে আয় দুইজনে।”
নানু চলে গেলো। মাহমুদ বারান্দায় গিয়ে নিজেই সিগারেটের পোড়া অংশগুলো একটি কাগজে মুড়িয়ে তুলে নিলো। রুমের বাইরে গিয়ে বিনে রেখে দিলো। ফিরে এসে কলিকে কানের কাছে মুখ নিয়ে হিসহিসিয়ে বলল,
“নানু কি বলছে? সময় দুই রাত। মনে থাকবে?”
কলি নিরুত্তর! লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। মনে মনে আওড়ে নিলো। যেমন নাতি,তেমন নানি। মুখে আটকায় না কিছুই।
“নাস্তা খেতে আসো।”
“আপনি যান। আমি পরে আসতেছি।”
“একসঙ্গে গেলে কি প্রবলেম?”
“আমি কুন্ঠিতবোধ করছি।”
মাহমুদ কলির সামনে গিয়ে ট্রাউজারের দুই পকেটে হাত গুঁজে সটান হয়ে দাঁড়ালো। পুরু কন্ঠে বলল,
“আমাকে সুযোগ দিলে এক রাতেই আপনার সমস্ত কুন্ঠাবোধ,লজ্জাবোধ, সংকোচবোধ লুট করে নিতে পারি। জাস্ট ওয়ান নাইট।”
কলি মনে মনে বলছে,
ইয়া আল্লাহ! মাটি ফেটে যাক। আমি গায়েব হয়ে যাই সেই ফাঁক দিয়ে। তাও এমন ঠোঁটকাটার হাত থেকে বাঁচি।
“ভাইয়া কিরে? বাসি নাস্তা খাবি তোরা দুজন?”
আনুশকার গলা ভেসে এলো। মাহমুদ চলে গেলো ত্রস্ত পায়ে। নাস্তা খাওয়া শুরু করলো। কলি তার পিছন দিয়ে নম্র পায়ে হেঁটে গিয়ে একটি চেয়ার টেনে বসলো।
“গুড় মর্নিং ভাবি!”
“মর্নিং আপু।”
স্মিত হেসে বলল কলি।
নানু চোখের পাতা উল্টিয়ে বলল,
“তুমি জামাইয়ের লগের চেয়ারে বইলা না?”
আনুশকা বলল,
” থাকুক না রঙিলা নানু।”
মাহমুদ রুটি, মাংস মুখে পুরে দিতে দিতে গোপনে বলল,
কয়মাস পর জামাইয়ের কোলে উঠে বসবে। তেমনই ইজি করে দিবো আস্তে আস্তে। নাস্তা খাওয়া শেষে মাহমুদ নিজের বেড রুমে চলে গেলো। ভার্সিটি থেকে রবি,সোম এই দুইদিনের ছুটি নিয়েছে। শুক্র,শনি এমনিতেই বন্ধ। তাই কর্মস্থলেও কোনো সমস্যা নেই। আজ শনিবার। আরো দুদিন বাসায় থাকতে পারবে। ভেবেই এক পশলা বৃষ্টির মতো আনন্দ অনুভব করলো সে।
নাস্তা খাওয়া শেষে মাহফুজা কলিকে বলল,
“পরিচয় হয়ে নাও কলি। আমার মাকেতো দেখলেই। ও আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী। এ হলো আমার ছোট বোন। এটা আমার দুষ্ট ভাগিনা ও ভাগনি। আর বিকেলে তোমাদের বাসা থেকে মেহমান আসবে। সুন্দর একটা শাড়ি পরে রেডি হয়ে থেকো। মেয়েকে স্বশুর বাড়িতে ভালো দেখলেই বাবা, মা আনন্দ পায়।”
কলি সবাইকে সালাম দিলো। আনুশকাসহ সবাই মিলে কিছুক্ষণ গল্পকথায় মেতে উঠলো। মাহমুদ বিছানায় শুয়ে শুয়ে কলির জন্য অপেক্ষা করছে। বেশ বেলা হয়ে গেলো। তবুও কলির রুমে আসার নাম নেই। সে মোবাইলে তার একটি প্রিয় গান ছেড়ে দিলো। লুফে দিয়ে দিলো বারবার শুনবে বলে।
“তাকিয়া আসমানের দিকে/সে কি বলো আছে সুখে/
ভাবিয়া কান্দিয়া মরি সে যে পাশে নাই।
ভাবতে ভাবতে তারে আমি, চোখ বুজিয়া জড়াই ধরি।
চোখ মেলিয়া দেখি আমি, সে যে বুকে নাই।”
গান শুনতে শুনতে মাহমুদের চোখ বুঁজে এলো। কলি প্রায় দুপুরের দিকে রুমে আসলো। দেখল মাহমুদ কোলবালিশ জড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। কলি লাগেজ থেকে আরেকটা শাড়ি নিলো তার। বাকি প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোও হাতে নিলো। তার মোবাইলটা চেক করা দরকার। বাসা থেকে ফোন এলো নাকি। বালিশের নিচে পড়ে আছে মোবাইল।
কলি মাহমুদের মুখের উপর দিয়ে ঝুঁকে মোবাইলটা নিলো। তক্ষুনি মাহমুদ নিজের মুখের উপর কলির শাড়ির ছোঁয়া পেতেই জেগে গেলো। কলি মোবাইল হাতে নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতেই তার শাড়ির আঁচলে টান পড়লো। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলো মাহমুদের মুঠোবন্দী তার আঁচলখানি। সে বুকের অংশের শাড়ির উপরে হাত দিয়ে ধরে রেখেছে। যেন বুক থেকে না খসে যায়।
মাহমুদ বলল,
“বুক থেকে হাত সরান বলছি।”
“কেন? কি করবেন? ছাড়েন বলছি স্যার। প্লিইজ।”
ভীরু লজ্জিত গলায় বলল কলি।
“কিছুই করব না। দেখেন কলি,এখন পর্যন্ত একটা চুমুও খাইনি আপনার গালে,ঠোঁটে। হাত,মুখ,ঠোঁট সবকিছুর ব্যবহার বন্ধ রেখেছি। কতটা সংযমী আমি। বুঝুন। কেবল দৃষ্টির ব্যবহার চলছে। প্লিজ সাপোর্ট মি কলি! নয়তো অন্যগুলো চলবে আপনার নিটোল অঙ্গে!
নেশালো কন্ঠে বলল মাহমুদ।
কলি সরে যেতে চেষ্টা করছে। পারছে না। হাতও সরিয়ে নিচ্ছে না। মাহমুদ একই মুহূর্তে দুটো কাজ করে ফেললো। একহাত দিয়ে কলির হাত সরিয়ে নিলো। মুঠোয় ধরা শাড়ির আঁচলখানিতে হালকা টান দিলো। অমনি কলির বুক ও ফর্সা মসৃণ পেট উম্মুক্ত হয়ে গেলো। কলির সুডৌল বুকের ধড়ফড়ানির দিকে মাহমুদ কামাতুর চোখে চেয়ে রইলো। তার দৃষ্টি চলে গেলো পাতলা ব্লাউজ ভেদ করে আরও ভিতরে। আরো গভীরে।
কলি দাঁড়ানো থেকে বসে গেলো চট করেই। মাহমুদের উপর বিতৃষ্ণায় তার অন্তর ফেটে চৌচির হয়ে গেলো। কান্না করে দিলো নিমিষেই। মাহমুদ ভ্যাবাচেকা হয়ে গেলো। শাড়ির আঁচল ছেড়ে দিলো। শশব্যস্ত হয়ে উঠে দরজা বন্ধ করে দিলো। কলির কান্নার গতি বেগবান হলো। সে মনে করেছে মাহমুদ তাকে আরো ডিপলি টাচ করবে। কিন্তু মাহমুদ সেসবের কিছুই করল না। কলির মুখোমুখি বসলো হাঁটু মুড়িয়ে। কলির মেহেদী ভরা রাঙা কোমল হাতখানার তালুকে নিজের একগালে ঠেকিয়ে ধরলো। আকুতি মাখা কন্ঠে বলল,
“সরি সরিই। প্রমিজ রাতের আগে আর কোন ফাজলামো করব না। কি করবো বলেন। বিয়ে করা নতুন বর আমি। উপোসে উপোসে হৃদয়টা তামা তামা হয়ে যাচ্ছে।”
কলি বিরক্তি নিয়ে জিজ্ঞেস করলো ,
“আমি শাওয়ার নিবো কোন বাথরুমে?”
“কেন কলি? আমাদের রুমেই ত ওয়াশরুম আছে। যান।”
“আপনি বের হোন। ওয়াশরুমে নতুন শাড়ি পরা যাবে না। ভিজে যাবে। রুমে এসে পরতে হবে।”
বিষাদমাখা সুরে বলল কলি।
“স্ত্রী শাড়ি পরার সময় হাজব্যান্ড সামনে থাকতে পারবে না,এটা জানা ছিল না। ওকেহ! আমার মহারানীর যা হুকুম। যাচ্ছি।”
মাহমুদ বেরিয়ে যায়। কলি গোসল করে রুমে এসে শাড়ি পরে নিলো। দরজা খুলে দিলো। মাহমুদ একটু পর রুমে ডুকলো। কলি তাকে খেয়াল করেনি। সে চুলগুলোকে গোছা ধরে সামনে এনে তাওয়েল দিয়ে পানি ঝাড়তে লাগলো। মাহমুদ কলির পিঠে লেপ্টে থাকা ভেজা ব্লাউজের দিকে চেয়ে রইলো। মনে মনে কাব্য করে বলল,
“তোমার এলোকেশে বক্ষ জড়ায়ে গোপনে কত চুমি,
যদি এ সত্য জানিতে অঙ্গনা, কত যে মরিতে চাহিতে তুমি।”
আহা! কবি সাহিত্যিকরা এমনি এমনি নারীর সৌন্দর্যে মরেনি। ঘটনা যে পুরাই সত্যি। ভেবেই মাহমুদ শুকনো কাশি দিলো। কলি হকচকিয়ে গেলো। বলল,
“কখন এলেন আবার?”
“অনেক আগে। যখন আয়নায় সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ির কুচি ভিতরে গুঁজে দিচ্ছিলেন। ”
কলি জিভ কামড়ে নিয়ে বলল,
“মিথ্যা ও কথা। দরজাতো বন্ধই ছিলো।”
“আমি হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে দিবো? পুরো ব্লাউজ ভিজিয়ে ফেললেন যে পিঠের অংশের দিক।”
“না স্যার। লাগবে না।”
“তাহলের ব্লাউজের পানিগুলো শুকিয়ে দিই? ঠান্ডা লেগে যাবে। এতে আমার বিরাট লস।”
কলি বুঝলো কথার ইঙ্গিত। এক পলক মাহমুদের দিকে চাইলো। দেখলো মাহমুদের চোখের কোণে আবারও রোমাঞ্চ খেলা করছে। সে পালাতে চায়। কলি বের হয়ে চলে গেলো আনুশকার রুমে। মাহমুদ তাকে আটকালো না। দরজা বন্ধ করে দিলো। কলির ব্যবহার করা ভেজা তাওয়েলটা উলটে পালটে নাকে চেপে ধরলো। কলির সারা অঙ্গের ঘ্রাণ যেন সে পুরো তাওয়েলজুড়ে রয়েছে। উফফস! পাগল হয়ে যাবো। আজ সময় যায়না কেন? আসেনা কেন রজনী? মাহমুদ ভেজা তাওয়েলটা নিয়ে বারান্দায় রোদে মেলে দিলো। কলির বাকি ভেজা বস্রগুলোর দিকে একবার নজর বুলিয়ে নিলো।
বিকেলে কলির পরিবারের লোকজন এলো। আসতে তারা যাবতীয় সবকিছু নিয়ে আসলো। দুই বেয়াই মোলাকাত করে নিলো একে অপরকে জড়িয়ে ধরে। দুপক্ষ মিলে একসঙ্গে বিয়ের অনুষ্ঠান করে ফেলেছে। তাই আলাদা করে আজ বৌভাতের ঝামেলা নেই। কলি বাবার মুখ দেখে হুহু করে কেঁদে ফেলল। বোনদের জড়িয়ে ধরলো। নিজের রুমে নিয়ে গেলো। সবাই মিলে হাসি তামাসায় রাত অবধি ছিলো। বাহারী স্বাদের নাস্তা ও বহু ব্যঞ্জনে রাতের নৈশভোজ করা হলো। ভরপুর খাবার খেয়ে সবাই চলে গেলো। কলি ও আনুশকা জুলিকে রেখে দিলো। জুলিও স্বইচ্ছায় রয়ে গেলো। জুলির খুব পছন্দ হলো বোনের বাসা।
রাতে আনুশকা, ও তার দুজন কাজিন, জুলি, মিলে লুড়ু খেলতে বসেছে। জুলি গিয়ে মাহমুদকে বলল,
“হ্যালো মাষ্টারমশাই,লুড়ু খেলবেন?”
“না জুলি। তোমরা খেলো গিয়ে।”
মাহমুদ বিড়বিড় করে বলল,
আমিও লুড়ু খেলব আজ সারারাত। নিশি থেকে ঊষালগ্ন পর্যন্ত। খেলায় হেরে গেলে চলবে না। জয়ী হতে হবে আমাকে।
রাত বেড়ে যাচ্ছে। সবাই সবাইর মতো অনান্য রুমে আছে। মাহমুদ একাকী রুমে শুয়ে আছে। প্রতিক্ষার প্রহর গুনছে। কলির আসার নাম নেই। মোবাইল নিয়ে যায়নি। নয়তো ফোন দেওয়া যেতো। মাহমুদের ধৈর্যচ্যুতি ঘটলো। ক্রমশ মনের মাঝে বিরক্তি দানা বাঁধছে। চোখদুটো জ্বলজ্বল করছে ভয়ানকভাবে। যেন কলিকে হাতের মুঠোয় ফেলেই গিলে ফেলবে। পিষে ফেলবে। নিশ্চয়ই আনুশকার রুমে লুড়ু খেলছে। নয়তোবা দর্শক হয়ে উপভোগ করছে। মাহমুদ হাত মুঠি করে দেয়ালে ঘুষি মারলো। পরক্ষনে ব্যথা পেয়ে উঁহু করে উঠলো। মাথার চুলগুলো উল্টে নিয়ে খামচে ধরলো। পুরো খাটজুড়ে হাত পা ছড়িয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে রইলো। মাত্রাতিরিক্ত অস্থির লাগছে।
তক্ষুনি দরজা ফাঁক হলো। কলি এলো। কিন্তু কলি দরজা বন্ধ করল না। মাহমুদকে শুনিয়ে বলল,
“স্যার আমি আনুশকার রুমে ঘুমাই? জুলি ত কাল চলে যাবে তাই।”
মাহমুদ রক্তচক্ষু নিয়ে কলির দিকে তাকালো। তৎক্ষণাৎ উঠে গিয়ে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দিলো। কলিকে পাঁজাকোলা করে তুলে বিছানার উপরে ফেলে দিলো। কলি ঘাবড়ে গেলো ভীষণ! কিছু বলার সুযোগ পাচ্ছেই না।
মাহমুদ কলির দুই হাত খাটের দুই খুঁটির সঙ্গে উল্টিয়ে বেঁধে নিলো। কাঠ কাঠ গলায় বলল,
“ছোট বাচ্চা? ন্যাকামো? বিয়ে বুঝো। বাসর বুঝ না? স্বামীর মনের খোরাক বুঝনা? আর লজ্জা? তাও বন্ধ করছি। তোমার দুচোখ বেঁধে ফেলছি। তুমি কিছুই দেখবে না। জাস্ট ফিল করবে।”
মাহমুদ কলির বুক হতে শাড়ির পুরো আঁচল সরিয়ে ফেলল। কলিকে নিজের শরীর দিয়ে আবৃত করে নিলো।
কলির বেঁধে রাখা দুই হাতের আঙ্গুলগুলোয় সে নিজের দুই হাতের আঙ্গুলগুলো শক্ত করে গুঁজে দিলো। নিজের শুষ্ক ঠোঁটজোড়াকে কলির ঠোঁটের গভীরে ডুবিয়ে দিতে যাবে,
তোমার জন্য সব পর্ব ২২
অমনি কলি এমন এক নিষ্ঠুর বাক্য বলে ফেলল মাহমুদের উদ্দেশ্যে। যা শুনে মাহমুদ স্তব্ধ হয়ে যায়। বিয়ের দ্বিতীয় রাতেই কলি তাকে এমন কিছু বলতে পারে, তার কাছে সেটা অবিশ্বাস্য! অচিন্তনীয়!