মেহেরজান পর্ব ২৯
লেখনীতে- সোহা
মেহরান আর নুজাইশ চলে যেতেই বৃষ্টি হাফ ছেড়ে বাঁচলো।ঘরের ভেতর উঁকি দিলো একবার। দেখে আসার জন্য পা বাড়াতেই মেহরান আর নুজাইশ আসলো আবারও। বৃষ্টি এদের দেখে হতবম্ভ হয়ে গেলো। মেহরান বৃষ্টির কোনো কথা না শুনেই ঘরে ঢুকতে যাবে তার আগেই বৃষ্টি পথ আটকে দাঁড়ালো।মেহরান কপাল কুঁচকালো।
“আপনার সাহস কি করে হয়? না বলে কয়ে আমার বাড়িতে ঢোকার।”
মেহরান বিরক্তি ঢেলে উত্তর করলো,
“আ’ম শিওর।ভেতরে আমার রাউশি আছে।”
বৃষ্টি আবারও অনড় রইলো।দাতে দাত চেপে বলল,
“কোনো রাউশি টাউশি নেই।”
“তাহলে পথ আটকাচ্ছেন কেন? আমাদের ভেতরে চেক করতে দিন।”
“আমার বাড়ি, আমি অনুমতি দেই নি।”
নুজাইশ এগিয়ে এলো।বৃষ্টির সামনে এসে বলল,
“দেখুন রাউশি যদি আপনাদের বাড়িতে থেকে থাকে তাহলে প্লিজ মিথ্যা বলবেন না। আমরা ওকে আমাদের সাথে নিয়ে চলে যাব।”
“কে রে? কি হইছে রে মা?এরা কেরা?”
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বলতে বলতে মতিন মোড়ল এগিয়ে আসলেন মেয়ের দিকে।এদিকে বাইরে থেকে চেঁচামেচির আওয়াজে রাউশির ঘুম ভাঙলো। গা জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে তার। কোনোরকম উঠে বসলো মাথায় হাত দিয়ে। চোখমুখ লাল হয়ে রয়েছে।হুট করেই জ্বর উঠেছে।হাত পা পুরো শরীরই ভীষণ ব্যাথা। হঠাৎ ধ্যান ফিরলো পরিচিত মানুষের আওয়াজ শুনে।রাউশি এই আওয়াজ চেনে। খুব ভালোভাবেই চেনে।মেহরান এসেছে এটা মাথায় আসতেই রাউশি এই অসুস্থ শরীর নিয়েই বিছানা ছেড়ে তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে পড়ে গেলো।তবে আবারও উঠে দাঁড়ালো। পায়ে চোট পেয়েছে।তবে সেসব ভুলে বেরিয়ে আসলো বাইরে।
চোখ গেলো বিরক্তি ভঙ্গিতে কথা বলা প্রিয় সেই পুরুষের দিকে।মানুষটাকে দেখতে অন্যরকম লাগছে।কেমন উসকোখুসকো চুল, চোখমুখ শুকনো।আগের গম্ভীর, সুপুরষ মেহরানকে আজ যেন অন্যরকম লাগছে রাউশির।নুজাইশের দিকেও চোখ পড়লো।মানুষটারও অবস্থা মেহরানের মতোই।কাঁপা কাঁপা গলায় দুজনকেই ডেকে উঠলো রাউশি,
“মেহরান ভাই, নুজাইশ স্যার।”
রাউশির কণ্ঠ শুনে মেহরানের চোখ গেলো বৃষ্টির পেছনে।মরুভূমির বুকে যেন এক পশলা বৃষ্টি মুহুর্তেই নামলো।চোখের তৃষ্ণা যেন ক্ষনিকের জন্য মিটলো।রাউশির চোখ টলমল করছে।নুজাইশও দেখলো রাউশিকে। রাউশির এমন অবস্থা দেখে সে নিজেও ব্যথিত হলো।
এদিকে নুজাইশ থ মেরে দাঁড়িয়ে আছে। নিজের চোখকে যেন বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে।যদি সামর্থ্য আর কোনো বাঁধা না থাকতো তবে নুজাইশ দৌঁড়ে গিয়ে রাউশিকে জাপটে জড়িয়ে ধরতো।চোখের কোণায় জল জমলো নুজাইশের।মাথা নামিয়ে তা লুকানোর চেষ্টা করলো।
বৃষ্টি এবার কিছুটা নরম হলো নাম শুনে। পেছনে ফিরে রাউশিকে দেখলো।রাউশি ঢুলুঢুলু অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।মেহরান বৃষ্টিকে পাশ কাটিয়ে রাউশির দিকে ধীরপায়ে এগিয়ে গেলো।মনে হচ্ছে যেন কতবছর পর মেয়েটাকে দেখছে।হাজার বছর পেরিয়ে গেছে নাকি সন্দেহ! রাউশিও এগিয়ে আসলো মেহরানের দিকে।মেহরান কাছে এগিয়ে হুট করেই সবার সামনেই জাপটে জড়িয়ে ধরলো।মেহরানের তখনও বুক ধ্বক ধ্বক করছে।হার্টবিট বাড়ছে ক্রমাগত। রাউশি সেটা ঠাওর করতে পারছে।লোকলজ্জা ভুলে সবার সামনেই রাউশির চোখে মুখে গালে কপালে অসংখ্য চুমু খাওয়া শুরু করলো মেহরান।এদিকে মতিন মোড়ল অন্যদিকে চলে গেলেন।বৃষ্টি পিঠ দিয়ে দাঁড়াতেই নুজাইশ খুশির চোটে রসিকতা করে ঠেস দিয়ে বলল,
“শরম কর শালা।এখানে অপরিচিত মানুষজন আছে।আমি নাহয় তোর মতোই বেশরম।কিন্তু উনারা তো আর না।চুমু বাসর রাতে খেয়ে নিস।এখন থাম ব্যাটা।”
নুজাইশের কথা শুনে বৃষ্টি লজ্জা পেলো। মুখ অস্ফুট স্বরে আওড়ালো ‘অসভ্য’। নুজাইশ স্পষ্ট শুনতে পেলো অসভ্য বলাটা। বৃষ্টিকে গম্ভীর স্বরে বলল,
“আপনি কি আমাকেই বলেছেন?”
বৃষ্টি পাশে ফিরে তাকালো,
“হ্যা আপনাকেই।”
ক্ষেপে গেলো নুজাইশ।কিন্তু কিছু বলতে পারলো না রাউশিকে পাওয়া খুশিতে। ভাবলো মেয়েটাকে আজকের মতো ছেড়ে দেবে।এদিকে মেহরানের এমন কাজে ভেতর থেকে সৃষ্টিও হা করে তাকিয়ে আছে। নুজাইশের কথা শুনে রাউশিও লজ্জা পেলো। কিন্তু মেহরানের হেলদোল নেই। রাউশি লজ্জামিশ্রিত আওয়াজে বলল,
“কি করছেন? মানুষ আছে এখানে।”
“থাকুক।”
মেহরান গম্ভীর আওয়াজে বললো কথাটা। এই মানুষটার কি লাজ শরম সব লোপ পেয়েছে নাকি ভাবলো রাউশি। মেহরান রাউশিকে ছেড়ে দিলো। মাথায় হাত রেখে বলল,
“আমায় ক্ষমা করে দিস রাউ।”
রাউশি কিছু বললো না।নুজাইশ আবারও বলে উঠলো,
“চলে যাব আজ? নাকি_”
রাউশি এবার বিরোধিতা করে বলে উঠলো,
“আমি যাব না।আমি এখান থেকেই ঢাকা চলে যেতে চাই।”
মেহরান রাউশির হাত ধরে আছে।পেছনে মেহরানের দিকে একবার তাকালো। চোখ দিয়ে কিছু একটা ইশারা করতেই নুজাইশ হেসে ফেললো।বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে গম্ভীর স্বরে বলল,
“আপনার বাবা কোথায়?”
বৃষ্টি মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে তার বাবাকে ডাকলো।এই মেয়ের এমন ব্যবহার দেখে নুজাইশ আশ্চর্য না হয়ে পারলো না।মতিন মোড়ল আসলেন সেখানে।নুজাইশ বললেন,
“আমার সাথে আসুন তো চাচা।”
মতিন মোড়লকে নিয়ে নুজাইশ কোথায় যেন চলে গেলো।
রাত নেমেছে।ঠান্ডার মাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ছে।নুজাইশ আর মতিন মোড়ল ফিরলেন একজন কাজীকে নিয়ে। মেহরান নুজাইশকে বলে রেখেছে রাউশিকে খুঁজে পেলেই সঙ্গে সঙ্গেই বিয়ে করবে।তাইতো এই ব্যবস্থা।নুজাইশ সাথে কয়েক কেজি মিষ্টিসহ বড় বাজার থেকেই কয়েক পদ খাবার কিনে নিয়ে এসেছে।সাথে মতিন মোড়লসহ এই বাড়ির সবার জন্যই কিছু না কিছু কিনে দিয়েছে।নুজাইশ ভীষণ খুশি মেহরান আর রাউশির বিয়ে নিয়ে।অবশেষে দুজনের বিয়েটা হয়েই যাচ্ছে ভেবে মনে মনে আলহামদুলিল্লাহ বললো বার কয়েক। রাউশি আর মেহরানের জন্য কোনো পোশাক আশাক আনে নি নুজাইশ।মেহরান জিজ্ঞাসা করলে নুজাইশ সোজাসুজি জবাব দেয়,
“যেভাবে আছিস সেভাবেই করে ফেল। কারণ সেজেগুজে লাভ কি? যদি বাসরই না করতে পারিস?”
মেহরান নুজাইশের মাথায় বড়সড় করে একটা গাট্টা মারে। রাউশি এদের কর্মকাণ্ড দেখে যাচ্ছে শুধু।পরিবার হীন এই বিয়েতে কেমন লাগলেও নাকোচ করলো না। বৃষ্টি হাসিমুখে সবকিছুর আয়োজন করছে সাথে হাসনা বেগম।সৃষ্টি ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
নুজাইশ আর মতিন মোড়ল বরপক্ষের লোক হিসেবে এবং বৃষ্টি,হাসনা বেগম কনে পক্ষ হিসেবে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েচগে।কাজী সাহেব রাউশির দিকে তাকিয়ে হাসিহাসি মুখ করে বললেন,
“বলো মা কবুল।”
রাউশির কণ্ঠনালী কেঁপে উঠলো।মেহরান তার পাশেই বসে ছিলো।রাউশির হাত ধরলো। রাউশি নিজের জীবনের অতীত ভাবতে লাগলো আর মেহরানের আগমনের কথা ভাবতে লাগলো।চোখ বুজে নিঃসংকোচেই যেন মাথা নিচু করে তিনবার কবুল বললো রাউশি এবার।এবার কাজী সাহেব মেহরানের উদ্দেশ্যে বললেন,
“মাহমুদ খানের কন্যা মৌরিন খান রাউশিকে পাঁচ লক্ষ মোহরানায় আপনার কাছে বিবাহ দিলাম।আপনি বলুন কবুল।”
মেহরানও খুব স্বাভাবিকভাবেই কবুল বললে উপস্থিত সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে ওঠে। নুজাইশ তো একপ্রকার চেঁচিয়ে উঠলো মনে হলো সকলের।বৃষ্টি মুখ ভেংচে বলল,
“গলা তো না যেন ফাঁটাবাশ।”
নুজাইশের রাগ লাগল।কিছু বলতে যেয়েও বললো না।এদিকে রাউশি চুপচাপ বসে আছে। মেহরান রাউশির দিকে একপলক তাকালো।এই মেয়ে এখন শুধুমাত্রই তার। একান্তই তার। ভাবতেই যেন শীতল হাওয়া গা ছুয়ে গেলো।মেহরান খানিক হাসলো। রাউশি মাথা নামিয়ে বসে আছে। হুট করেই জীবনের সবচেয়ে সুন্দর একটি ক্ষণ শেষ হয়ে গেলো রাউশির।মেহরান এখন তার স্বামী।কি থেকে কি হয়ে গেলো একবার ভাবলো।এই তো গতকাল রাতেই রাউশি মনে মনে ভাবছিলো মেহরানের সাথে তার বুঝি আর দেখাই হবে না।অথচ আজই কিছু মুহুর্ত আগেই মেহরান আর সে পবিত্র এক বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে গেলো।রাউশিও একবার মাথা তুলে মেহরানের দিকে তাকালো। মেহরান নুজাইশের সাথে কথা বলছিলো। ঘাড় হেলিয়ে তাকিয়ে রইলো মেহরানের দিকে।এই মানুষটা শুধুমাত্রই তার ভেবে মন যেন উৎফুল্ল হয়ে উঠলো রাউশির। তবে পরিবারের সবাইকেই খুব মিস করছে রাউশি। তবে নুজাইশ বিয়ের আগেই বলেছে তাকে পরিবারের সবারই নাকি পূর্ণ সম্মতি আছে বিয়েতে।মেহরান না জানালেও নুজাইশ মেহরানের অগোচরে ঠিকই জানিয়ে দিয়েছে।
ক্ষণিকের মাঝেই বৃষ্টির পরিবারের সাথে মেহরান নুজাইশের সম্পর্ক ভীষণ ভালো হয়ে গেলো।আজ রাতটা এই বাড়িতেই থাকবে মেহরান আর রাউশি।নুজাইশ বললো সে বড় বাজারের দিকে ছোট্ট হোটেলে একটি রুম ঠিক করে এসেছে।সে সেখানেই থাকবে।নুজাইশ কিছুক্ষণ আগেই চলে গেলো।সকালে দেখা হবে বলে মেহরানের সাথে কোলাকুলি করেই চলে গেলো ছেলেটা।বৃষ্টিরা মেহরান আর রাউশির জন্য একটি ঘর গুছিয়ে দিলো। মেহরানরা শত বাঁধা দিলেও মানলো না কেউ। ছোট্ট সেই রুমটিতে থাকার ব্যবস্থা করা হলো দুজনের।এদিকে ওপাশের বড় রুমে দুটো ছোট ছোট চৌকি ছিলো সেখানে বৃষ্টিরাসহ তার বাবা মা আজ রাতটা কোনোভাবে পার করবে।ঘরটা যখন গুছিয়ে দিচ্ছিলো বৃষ্টি রাউশি বসে ছিলো বিছানায়। বৃষ্টি রাউশির মুখটা লাল দেখে বলল,
“বাসরের জন্য এতোটা গোছাতে পারলাম না রাউশি।”
রাউশি লজ্জা পেলেও উত্তর করলো,
“কি যা তা বলছো বৃষ্টি।এসবের কিছুরই দরকার নেই।”
“বিয়ের রাত। উপভোগ করো।”
বলেই হাসলো বৃষ্টি।হেসে চলে গেলো বাইরে। মেহরান ঘরে ঢুকলো।বাকিরা ঘুমানোর জন্য সবাই নিজেদের ঘরে গেলো।মেহরানকে দেখেই রাউশির কেন যেন আজ লজ্জা লাগলো ভীষণ।মেহরান দরজা লাগিয়ে রাউশির পাশে আসলো।রাউশি উঠে দাঁড়ালো।মেহরান কাছে এগিয়ে এসে রাউশির দুহাতে ধরে কপালে দীর্ঘ চুম্বন এঁকে দিলো।রাউশি চোখ বুজে তা অনুভব করলো। মেহরান রাউশিকে বলল,
“আমি গতকাল খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম রাউশি।তোকে হারানোর ভয়ে যেন আমি পাগল হয়ে যাচ্ছিলাম।আজ তোকে পাওয়ার পর আর কিছু ভাবতে পারি নি।বিয়ে করার সিদ্ধান্তই বেস্ট মনে করলাম।যেহেতু পরিবারেরও কোনো অমত নেই।যদিও বা ভুল কিছু হয় তো আমায় ভুল বুঝিস না কখনো।”
রাউশি মেহরানের হাত ধরলো,
“এসব কি বলছেন? ”
মেহরান খানিক হাসলো।কপালে পড়ে থাকা চুলগুলো ডান হাতে অন্যপাশে ঠেলে দিলো। মেহরানকে চুপ থাকতে দেখে রাউশি মেহরানের দিকে তাকালো।দেখলো মেহরান তারই দিকে তাকিয়ে আছে ঘোর লাগানো চোখে।রাউশি চোখ নামিয়ে নিলো। মেহরানও হাসলো রাউশির এমন আচরণে। রাউশির দিকে ঝুকে কানের কাছে মুখ নিয়ে একটা ফু দিতেই রাউশি কেঁপে উঠলো। অনুভুতিগুলো যেন বেসামাল হয়ে পড়লো। মেহরান বুঝলো রাউশির অনুভুতি।কানে ফিসফিস করে বলল,
“কাছে আসবো নাকি আমার সাথে বাইরে যাবি?”
রাউশি থমকালো।এভাবে কি কেউ কখনো নব বিবাহিত স্ত্রীকে বলে ধারণা নেই রাউশির। লজ্জায় গাল লাল হলো। এই লোক কি তাকে লজ্জা দেওয়ার জন্যই এসব বলছে নাকি? থমথমে মুখে জবাব দিলো,
“অবশ্যই দ্বিতীয়টা।”
মেহরান ঠোঁটে ঠোঁট চেপে হাসলো। চুকচুক শব্দ করে নিজের প্রতি আফসোস ঢেলে বলল,
“মেহরানের কপালে যে বাসর রাত থাকবে না এটা জানতাম।যাইই হোক তোর ইচ্ছাই পূরণ করি তাহলে চল।”
রাউশির হাত ধরে ঘরের দরজা খুলে বাইরে নিয়ে এলো মেহরান। রাউশির ঠান্ডা লাগলে ভেতর থেকে আলনায় রাখা একটা শাল এনে গায়ে জড়িয়ে দিলো মেহরান। এবার রাউশির হাত ধরে নিয়ে গেলো সামনে। বাড়ির বাম দিকে একটি সরু রাস্তা আছে। আইলও বলা চলে।পাশে ক্ষেত আর ক্ষেত। মেহরান কিছুটা নিচু হয়ে দাঁড়িয়ে রাউশিকে পেছনে ওঠার জন্য ইশারা করলো। রাউশি মুখে হাসি ফুঁটিয়ে মেহরানের পেছনে গিয়ে গলা জড়িয়ে ধরলে মেহরান হাত পেছনে দিয়ে রাউশির দু উরুতে ধরে হাঁটা শুরু করলো। আকাশে আজ চাঁদ উঠেছে তবে পুরোটা নয়। ঠান্ডা হাওয়ায় রাস্তাটা বেয়ে যেতে লাগলো মেহরান। রাউশির খুব ইচ্ছে করলো সময়টাকে এখানেই থামিয়ে দেওয়ার। তবে এটা যে কখনই সম্ভব না ভেবে কষ্ট পেলেও মেহরানের কাঁধে মাথা থুতনি রাখলো আর কানে ফিসফিস করে বলল,
“মেহরান মশাই, আপনার মেহেরজান আপনাকে খুব বেশি ভালোবাসে।মানে এতো এত্তো এত্তোও।”
মেহরান আরেকটু সামনে এগিয়ে গিয়ে থামলো। চাঁদের আশেপাশে অসংখ্য ভাঙা ভাঙা মেঘ। ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো। চাঁদের আলো পাকা ধানের পাতার ওপর পড়ছে। মনোমুগ্ধকর এক দৃশ্য তৈরি হয়েছে সময়টাতে। মেহরান ঘাড় ঘুরিয়ে রাউশির দিকে তাকালো। রাউশি তারই দিকে তাকিয়ে ছিলো মেহরান এবার সাহস করলো।প্রথমবারের মতো রাউশির ঠোঁটে সে অবস্থাতেই ছোট করে একটা চুমু খেলো।
মেহেরজান পর্ব ২৮
রাউশি চোখ বুজলো। সারা শরীরে শিহরণের মাত্রা ভারী হতে লাগলো। অনুভব করলো মেহরানকে। মেহরান ছেড়ে দিলো। রাউশি চোখ বুজে বারকয়েক দীর্ঘশ্বাস ফেললো মেহরানের ঘাড়ে।মেহরান হালকা হেসে বলল,
“ভালো না বাসলেও যে বাসতে হবে। আফটার অল আমারই তো মেহেরজান।”