আষাঢ় রাতের সন্ধ্যা পর্ব ৪
Raiha Zubair Ripti
আষাঢ় মাসের আজ ১৫ তারিখ,, দিনটি বুধবার। ভার্সিটিতে খুবই গুরত্বপূর্ণ ক্লাস থাকায় সকাল সকালই বাসা থেকে বের হয় খালার বাসার উদ্দেশ্যে সন্ধ্যা। আজ আর আগামীকাল থেকে পরশু চলে আসবে। আসার পথে অবশ্য সিঁড়ি তে রাতের সাথে দেখা হয়। রাত ভার্সিটির জন্য বাসা থেকে বের হয়েছিল। রাত সন্ধ্যা কে পরিপাটি হয়ে বের হতে দেখে কৌতূহল দমাতে না পেরে জিজ্ঞেস করেই বসলো-
-“ কোথাও যাচ্ছেন মিস সন্ধ্যাতারা?
সন্ধ্যা ভ্রু কুঁচকালো তার নামের সাথে তারা শব্দ টা শুনে।
-“ জ্বি।
সন্ধ্যা পা বাড়ানোর জন্য উদ্যত হলে রাত ফের জিজ্ঞেস করে-
-“ কোথায় যাচ্ছেন?
সন্ধ্যা যেতে যেতে বলল-
-“ রাজশাহী।
রাত সন্ধ্যার পেছন পেছন যেতে যেতে বলল-
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-“ রাজশাহী কেনো? আবার চলে যাচ্ছেন? আর ফিরবেন না?
সন্ধ্যা দাঁড়িয়ে গেলো। দু হাত বুকে গুজে বলল-
-“ আমার হাতে ল্যাগেজ আছে?
রাত নিচে আশেপাশে তাকিয়ে বলল-
-“ না নেই।
-“ তারমানে আমি ফিরছি।
-“ তাহলে যাচ্ছেন কেনো?
-“ কারন আমার পড়াশোনা ভার্সিটি ক্লাস সব রাজশাহী।
-“ তো ঢাকার কোনো ভার্সিটিতে শিফট হয়ে যান।
-“ ও হ্যালো পাবলিকিয়ান আমি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে কেনো আমি ঢাকায় এসে পড়বো?
রাত অবাক হয়ে চোখ ছোট ছোট করে বলল-
-“ আপনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট?
-“ হুমম।
-“ কোন বর্ষের?
-“ অনার্স তৃতীয় বর্ষের।
-“ বাহ্ আমি মাস্টার্স করছি বিইউপি তে।
-“ গুড। আসছি সময় চলে যাচ্ছে।
-“ ফিরছেন কবে সেটা তো বলে যান।
-“ হয়তো পরশু।
-“ সাবধানে যাবেন।
সন্ধ্যা স্মিত হেঁসে চলে গেলো। এই প্রথম রাত সন্ধ্যা কে হাসতে দেখলো। একরাশ ভালোলাগায় হৃদয় টা পুলকিত হলো।
সন্ধ্যা রিকশা পেতেই তাতে উঠে বসলো। স্ট্যান্ড অব্দি রিকশা দিয়েই যেতে হবে। স্ট্যান্ডে এসে টিকিট কে’টে গাড়ির অপেক্ষায় বসে রইলো। মিনিট পঁচিশ অপেক্ষা করার পর গাড়ি আসলো। সন্ধ্যা উঠে পড়লো। প্রায় কয়েক ঘন্টার জার্নি শেষ করে সন্ধ্যা পৌঁছালো তার গন্তব্যে। খালার বাসায় না গিয়ে সোজা হলে গিয়ে উঠলো। হলটাই আসার পথে কাছে ছিলো। হলে আসতেই দেখতে পেলো তার রুমমেট কনা রান্না করছে। কনা সন্ধ্যা কে দেখে রান্না রেখেই জড়িয়ে ধরলো। সন্ধ্যা কনার থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে বিরক্তি নিয়ে বিছানায় বসে বলল-
-“ বাহির থেকে এসেছি। এভাবে কেউ জড়িয়ে ধরে?
কনা চুলার আচ কমিয়ে দিয়ে সন্ধ্যার পাশে বসে বলল-
-“ আসবি বলিস নি তো।
-“ কাল এসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে। তারপর প্রেজেন্টেশন আছে ভুলে গেছিস?
কনার মনে পড়তেই চিৎকার দিয়ে বলল-
-“ ওহ্ নো সন্ধ্যা আমি এসাইনমেন্ট করি নি। এখন আমার কি হবে? লাস্ট ডেট তো কালকেই। বোইন কি করবো এবার?
-“ একটু ও করিস নি?
-“ না। আমি টোটালি ভুলে গেছি।
-“ নাইস।
-“ দোস্ত হেল্প কর।
-“ ক্ষমা কর বোন। আমার ও লেখা বাকি আছে। তারপর প্রেজেন্টেশন ও রেডি করতে হবে।
-“ প্লিজ দোস্ত এমন করিস না। এবারের জন্য হেল্প করে দে তরে ট্রিট দিব আজ পাক্কা প্রমিস। জাস্ট একটু লিখে দে।
-“ পাক্কা ট্রিট দিবি?
-“ হু পাক্কা।
-“ সন্ধ্যায় দিতে হবে। তারপর লিখবো।
-“ ওকে সমস্যা নেই। আজকের ট্রিট টা আমার তরফ থেকে। তুই শুধু লিখে দে ব্যাস।
-“ ওকে আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি। খাওয়ার জন্য কিছু থাকলে বের কর বোন ক্ষুধা লাগছে খুব।
-“ নুডলস রান্না করছি দিব?
-“ বের কর আসছি।
সন্ধ্যা হলে থাকা জামা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায় গোসল করতে। কনা নুডলস বেরে সন্ধ্যার অপেক্ষা করে। সন্ধ্যা গোসল সেরে ভেজা চুল মুছতে মুছতে এগিয়ে আসে। বিছানায় থাকা নুডলসের বাটি নিয়ে নুডলস খেতে থাকে। খাওয়া শেষ হলে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়ে বের হয় দু’জনে একটু বাহিরে। মূলত টুকটাক কিছু কেনাকাটা আছে তাদের। কেনাকাটা শেষ করে দ্যান তার বাহিরে খাবার খেয়ে চলে আসবে। প্রথমে তারা শপিং মলে ঢুকলো। কালকের প্রেজেন্টেশনের জন্য দুজনে সেম কালারের দুটো শাড়ি কিনলো। সাথে ম্যাচিং করে হিজাব। টুকটাক কসমেটিক কিনে বের হলো মল থেকে। মল থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার ঠিক পাশেই ফুড ভিলেজ আছে। তারা দুজনে সেখানে ঢুকে পড়লো। কনা জিজ্ঞেস করলো-
-“ কি অর্ডার দিব?
সন্ধ্যা ভেবে বলল-
-“ পিৎজা, বার্গার,কাচ্চি,কালা ভুনা, চটপটি, দই,আচার।
কনা গালে হাত দিয়ে বলল-
-“ এই কয়েকটা জিনিস খেলে তোর পেট ভরবে? আর নাম বল। দরকার হলে পুরো দোকানের সব খাবারি আমি অর্ডার দিব।
-“ সত্যি? দাঁত বের করে হেঁসে বলল সন্ধ্যা।
-“ হ্যাঁ,, আমি তো বিল গেটস এর আত্মীয়। আমি কোটি শো পতি।
-“ আচ্ছা আচ্ছা বুঝে গেছি তুমি গরিবস। জাস্ট বার্গার আর কাচ্চি খাওয়া।
কনা বার্গার আর কাচ্চি অর্ডার দিলো। খাওয়া দাওয়া শেষ করে বের হয়ে দেখলো অলরেডি ছয়টা বেজে গেছে। সন্ধ্যা কনার হাতে ধরে জোরে হাঁটা ধরলো। হলে গিয়ে লিখতে বসতে হবে। চারিদিকে রাস্তার কৃত্রিম আলো জ্বলে উঠছে। রাজশাহী মানেই আলাদা রকম শান্তি। আর সন্ধ্যা বা রাতে রাজশাহী শহরের সৌন্দর্য দ্বিগুণ। হাঁটার তালে সন্ধ্যা কনার হাত ছেড়েই জোরে জোরে হেঁটে চলছে। তার এখন সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে থাকলে এসাইনমেন্ট আর লেখতে হবে না। এদিকে কনাটাও সন্ধ্যার সাথে হেঁটে পায়ে পা মেলাতে পারছে না। অগ্যত ধীর পায়েই চলতে লাগলো। এদিকে ঝড়ের বেগে সামনে না তাকিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আকস্মিক কিছুর সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যেতে যেতেও নিজেকে সামলে নিলো। বিরক্তি রাগের চরম পর্যায়ে সন্ধ্যা। মাথা উঁচু করে কিছু বলার জন্য মুখ খুলতে নিলে দেখে একটা লোক পড়নে সাদা এপ্রন গলায় স্টেথোস্কোপ ফোনে কথা বলতে বলতে সন্ধ্যার পাশ দিয়ে চলে যেতে নিলে সন্ধ্যা বলে উঠল-
-“ দেখে হাঁটতে পারেন না নাকি? চোখ কি এপ্রনের পকেটে ঢুকিয়ে হাঁটেন? আশ্চর্য!
লোকটা কথাটা শুনেই দাঁড়িয়ে গেলো। কিয়ৎ ক্ষন চুপ করে থেকে ঘাড় বেঁকিয়ে তাকালো। দেখলো সবুজ রঙের সেলোয়ার-কামিজ পরিহিত মেয়ে। লম্বা কেশ ছাড়া। হাঁটুতে এসে গড়াগড়ি খাচ্ছে। লোকটা কেশের দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ এক্সকিউজ মি ইট’স নট মাই ফল্ট।
কথাটা বলেই চলে গেলো লোকটা। সন্ধ্যা উল্টোদিকে ঘুরে ছিলো বিধায় লোকটার মুখ দেখতে পেলো না। কথাটা শুনেই পেছন ফিরে দেখে লোকটা চলে যাচ্ছে। কি এক জ্বালা ধাক্কা কি শুধু ডক্টর লোকদের সাথেই খেতে হবে নাকি আশ্চর্য!
কনা সন্ধ্যা কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এগিয়ে এসে বলল-
-“ দাঁড়ায় আছিস কেনো?
-“ তোর জন্য দাঁড়ায় আছি চল এখন।
রাতের ভার্সিটি থেকে ফিরতে ফিরতে রাত আট টা বেজে যায়। বাসায় এসেই জানতে পারলো তার ভাই আজকে নাইটে ঢাকা ফিরছে। রাত কথাটা শুনেই চটজলদি বড় ভাইয়ের রুম টা গুছিয়ে রাখে। কারন এ কদিন ভাইয়ের রুমেই ঘুমিয়েছে সে। তার ভাই তার রুমে কাউকে এলাউ করে না। আর রাতের ভীষণ পছন্দ তার ভাইয়ের রুম। নিজের রুম টাও ভাইয়ের রুমের মতো সাজাতে চেয়েছে কিন্তু ভাইয়ের রুমের মতো ভাইব টা আসে না। দরজার সামনে এসে আরেকবার দেখে নিলো। না সব ঠিকঠাকই আছে। দরজাটা চাপিয়ে নিজের রুমে চলে আসলো। আমেনা বেগম খাবার খাওয়ার জন্য ডাকলে রাত জানায় বাহিরে খেয়ে এসেছে।
এদিকে সন্ধ্যা হলে ফিরেই সারারাত ধরে এসাইনমেন্ট লিখে ভোরের দিকে আর চোখ মেলে রাখতে না পারলে ওভাবেই ঘুমিয়ে পড়ে।
রাতের ঘুম ভাঙে সকাল আটটার দিকে। হাই তুলতে তুলতে রুম থেকে বেরিয়ে বসার ঘরে আসতেই দেখে তার ভাই সোফায় বসে ফোন স্ক্রোল করছে। রাত স্মিত হেঁসে ভাইয়ের পাশে বসে বলল-
-“ ভাইয়া কখন আসছো?
রাতের বড় ভাই আড়চোখে একবার রাতের দিকে তাকিয়ে ফের চোখ ফোনের দিকে তাক করে বলল-
-“ তিনটার দিকে।
-“ ওহ্ আচ্ছা। আজ হসপিটালে যাবা?
-“ না।
রাত টি-টেবিলে একটা রিপোর্ট দেখতে পেয়ে বলল-
-“ এটা কিসের রিপোর্ট?
-“ শ্রেয়ার মায়ের রিপোর্ট।
-“ ওহ্ দিয়ে আসবো?
-“ যা।
রাত রিপোর্ট টা নিতে গিয়েও আর নিলো না। সন্ধ্যা তো বাসায় নেই। গিয়ে কি করবে?
-“ থাক ভাইয়া তুমিই দিয়ে আসো।
রাত রুমে চলে গেলো। রাতের ভাই ফোনটা পকেটে ভরে রিপোর্ট টা নিয়ে হাঁটা ধরলো। শ্রেয়া দের ফ্ল্যাটে এসে কলিং বেল বাজালে দরজাটা খুলে দেয় শ্রেয়া। দরজার সামনে রাতের বড় ভাইকে দেখে অবাক হয়ে বলল-
-“ আষাঢ় তুই! কবে ফিরলি?
আষাঢ় রিপোর্ট টা শ্রেয়ার হাতে দিয়ে বলল-
-“ আন্টির রিপোর্ট টা। সেদিন ইমার্জেন্সি থাকায় হুট করে চলে যেতে হয়েছে যার জন্য দিয়ে যেতে পারি নি।
-“ আচ্ছা ভেতরে আয়।
-“ নাহ্ আসছি আমি। কাজ আছে।
আষাঢ় চলে গেলো। নজরুল ইসলাম রুম থেকে বেরিয়ে বললেন-
-“ কে এসেছে?
শ্রেয়া দরজা আটকাতে আটকাতে বলল-
-“ আষাঢ় এসেছিল৷ মায়ের রিপোর্ট টা দিতে।
-“ ওহ্ চলে গেছে ভেতরে না এসেই?
-“ হু ব্যস্ত মানুষ..সে কি আর ভেতরে এসে সময় ওয়েস্ট করবে নাকি।
-“ বেশ পাংচুয়াল ছেলেটা।
-“ হুম.. রাগী বাট মানুষটা ভীষণ ভালো।
-“ আমেনা আপা ছেলে দুটোকে মানুষের মতো মানুষ বানিয়েছেন বলতে হবে।
-“ হ্যাঁ.. একা হাতে স্বামীহারা হয়ে সামজের মধ্যে থেকে সন্তান মানুষ করা খুবই কষ্টকর নারীদের জন্য। কিন্তু আন্টি জব করে, সংসার, সন্তান, জব সব একা হাতে অনেকটা কষ্ট করেই সামলিয়েছে৷
নজরুল ইসলাম দীর্ঘ শ্বাস ফেলে রুমে চলে আসলেন। বড় মেয়ের মুখে আজ এসব কথা কেমন যেনো তিতা লাগলো। সন্ধ্যা কে সে মানুষের মতো মানুষ বানাতে পারলেও সে আদর্শ পিতা হতে পারে নি শুধু মাত্র তার এই বড় মেয়ের জন্য। ইশ মেয়েটার মুখ থেকে কতবছর হয়ে গেলো বাবা ডাকটা শুনে না। একটু খানি বাবা ডাকটা শোনার জন্য বুকটা হাহাকার করে।
সন্ধ্যা দশটার দিকে রেডি হয়ে ডিপার্টমেন্টে চলে আসে। এসাইনমেন্ট জমা দিয়ে চলে যায় প্রেজেন্টেশন প্রেজেন্ট করতে।
সন্ধ্যা আজ হোয়াট কালারের শাড়ি পড়েছে। কথা ছিলো হিজাব বাঁধবে কিন্তু সময়ের অভাবে হিজাব না বেঁধেই চুল গুলো হাত খোপা করে চলে এসেছে। প্রেজেন্টেশন ভালোমতো শেষ করে কনা আর সন্ধ্যা ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে ক্যাম্পাসে আসে। কনা ফোন টা বাড়িয়ে দিয়ে বলল-
-“ দোস্ত ছবি তুলে দে। শাড়ি পড়েছি ছবি না তুললে হয় নাকি?
সন্ধ্যা ছবি তুলে দিলো। কনা এবার ফোন টা কেঁড়ে নিয়ে বলল-
-“ তুই দাঁড়া আমি তোর পিক তুলে দেই।
কথাটা বলেই সন্ধ্যার চুল গুলো খুলে দিলো। সন্ধ্যা পুকুর পাড়ে বসলো। এই পুকুর পাড় টা সন্ধ্যার ভীষণ প্রিয়। কত কষ্ট স্মৃতি জড়িয়ে আছে। খুব মন খারাপ হলে এখানটায় এসে বসে। এই পুকুর টাও হয়তো চিনে সন্ধ্যা কে। হুটহাট তিক্ত অনুভূতি মনে পড়লেই এখানটায় এসে কেঁদে হাল্কা করতো নিজেকে। কনা পেছন থেকে সন্ধ্যার ছবি তুলে দিলো। ছবিটা এমন যে সন্ধ্যা পুকুর পাড়ে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে কিছু ভাবছে।
বেশ কয়েকটা ছবি তুলে দিলো। তারপর হলে ফিরে আসলো। আজ সন্ধ্যায় খালার বাসায় যাবে। দুপুরে দু’জনে মিলমিশ করে হাল্কা পাতলা রান্নাবান্না করে খেয়ে নেয়। খাওয়া শেষে সন্ধ্যা ফোন নিয়ে বিছানায় বসে ফোনের ছবি গুলো দেখে। পুকুর পাড়ে বসার ছবিটা ফেসবুকে আপলোড দিলো। ক্যাপশন দিলো— “ ভাবনায় ভাবান্নিত সন্ধ্যা ”
সন্ধ্যা হলেই কনার থেকে বিদায় নিয়ে খালার বাসায় চলে যায়।
আষাঢ় সন্ধ্যা হলে বেলকনিতে বসে কফির মগ নিয়ে। আহ সারাটাদিন রুমেই কাটিয়ে দিয়েছে। এখন বেলকনিতে বসে সন্ধ্যার সৌন্দর্যে ব্যস্ত শহর কে দেখছে। হঠাৎ ফোনে নোটিফিকেশন পেতেই পকেট থেকে ফোন টা বের করে। ফোনের স্কিনে তাকাতেই মূহুর্তে কিছু দেখতে পেয়ে মুচকি হাসে৷ অবাক করার বিষয় হলো আষাঢ় কে কখনও কেউ হাসতে দেখে নি। সব সময় গম্ভীর মুখ টাই দেখে সবাই অভ্যস্ত। রাত সে কবে তার ভাইকে হাসতে দেখেছে মনে করেও বলতে পারবে না। সেই আষাঢ় অবশ্য আনমনে একাকী হেঁসে বেড়ায়। ফোনটা বুকের বা পাশে চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে বলল-
আষাঢ় রাতের সন্ধ্যা পর্ব ৩
-“ এতো কাছে এসেও তোমরা মুখশ্রী টা দেখা হলো না। এই আফসোস নিয়ে খুবই হতাশ আমি। তোমাকে সামনা-সামনি দেখার অসুখ টা ক্রমশ বেড়েই চলছে সন্ধ্যাবতী। তোমাকে দেখার তৃষ্ণায় তৃষ্ণার্ত করে রেখে গেলে আমাকে!