পারমিতা পর্ব ১১
Nabila Ahmed
–আমি কাল ই গিয়ে মিতাকে এখানে নিয়ে আসবো। তোমরা সবাই আমার মেয়েকে পাগল করে দিতে চাচ্ছো।
–মায়া কি সব বলছো তুমি!
–কি সব বলছি বুঝতে পারছো না? মিতাকে দেখোনি আজ? ওর চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছিলো না ওয়াহিদ..ও.. ও
কথাটা বলেই কান্না করা শুরু করে দেয় মায়া চৌধুরী।
–মায়া শান্ত হও, প্লিজ।
মায়া চৌধুরীকে ধরে বিছানায় বসাতে বসাতে বলে ওয়াহিদ চৌধুরী।
–ও… ও.. অর চোখে অরিয়নের জন্য..ওয়াহিদ, এটা ও কি করে বসলো, ওয়াহিদ। আমার মেয়েটার জীবন কি শুধু কষ্টেই কাটবে?
ওয়াহিদ চৌধুরীর বুকে মাথা রেখে কান্না করতে করতে বলতে লাগলেন ওয়াহিদ চৌধুরী।
–স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটাই এরকম মায়া,যেখানে ভালোবাসা আপনা আপনি চলে আসে। আর অরিয়ন কিন্তু খারাপ না..
–আমি জানি অরিয়ন খারাপ না,ওয়াহিদ। সিচুয়েশন এরকম না হলে আমি ভাবতাম আমার মিতার কপাল অনেক ভালো তাই অরিয়নের মতো ছেলে পেয়েছে কিন্তু…
–আমি জানি মায়া। এমন হতে পারে এটা মিতার শুধুই ভালোলাগা আবার এমন ও হতে পারে অরিয়ন আবার আগের মতো হবে।
–আমি আর বেশি সময় দিতে পারবো না, ওয়াহিদ। আমার মিতাকে যদি তার প্রাপ্য সম্মান আর জায়গা দেওয়া না হয় তাহলে আমি মিতাকে নিয়ে আসবো। তোমাদের কারো কথা আর শুনবো না আমি।
–আমাদের কথাটাও একবার ভাবো মায়া। আমরা কি কারণে এই পদক্ষেপ নিয়েছিলাম একটু ভাবো।
মায়া চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে বলে ওয়াহিদ চৌধুরী।
–আমি ভেবেছিলাম বলেই বিয়েতে রাজি হয়েছিলাম। আর এখন মনে হচ্ছে এটাই আমার বড় ভুল হয়েছে।
–মা..
ওয়াহিদ চৌধুরী কিছু বলার আগেই কান্না করতে থাকা মায়া চৌধুরী ওয়াশরুমে চলে যায়।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
–তুমি কবে বুঝবে আফরিন পালিয়েছে, অরিয়ন?
রাগে দাঁত কিরমির করতে থাকা হাবিব চৌধুরী চেচিয়ে বলে অরিয়নকে উদ্দেশ্য করে।
–আমি জানি সেটা বাবা, আমাকে বার বার মনে করিয়ে দিতে হবে না।
অরিয়ন ও চেচিয়ে বলে।
–আমার মনে হচ্ছে না তুমি জানো, জানলে এভাবে মিতাকে সবার সামনে অপমান করতে না।
–এসবে পরীকে আনবে না।
গম্ভীর হয়ে বলে অরিয়ন।
–এসব কিছুতে মিতা থাকবেই, ও তোমার স্ত্রী।
–আর ইউ সিরিয়াস বাবা? লাইক সিরিয়াসলি?
রেগে গিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে অরিয়ন।
–ইয়েস আই এম অরিয়ন। এখন সময় হয়েছে অতীত ভুলে বর্তমান মেনে নেওয়ার। মেনে নেওয়া যে মিতাই তোমার বর্তমান আর ভবিষ্যৎ।
–পরীকে আমি ভালো রাখতে পারবো না বাবা।
নিজের রাগটা একটু কমানোর চেষ্টা করে বলে অরিয়ন।
–ও যদি কারো সাথে ভালো থাকে তাহলে সেটা একমাত্র তুই অরিয়ন।
হাবিব চৌধুরীর কথা শুনে অবাক হয় অরিয়ন।
হাবিব চৌধুরী অরিয়নের সাথে তুই করে কথা বলে একমাত্র যখন তিনি ইমোশনাল হয়ে পড়ে তখনি।
–মিতা তোকে খুব ভালোবাসে।
বলে ফেলে হাবিব চৌধুরী।
–আমি ও পরীকে খুব ভালোবাসি বাবা, এতোটাই যে ওর সাথে অন্যায় হবে ভাবতেই আমার শরীরে কাটা দিয়ে উঠে..কিন্তু বাবা..
কথাটা বলে নিজের বাবার দিকে এগিয়ে যায় অরিয়ন।
–কিন্তু বাবা এই ভালোবাসা আর স্বামী স্ত্রীর ভালোবাসা এক নয়। আর আমার পক্ষে পরীকে অভাবে ভালোবাসা সম্ভব নয়। শুধু মিতা কেনো, আমি অন্য কাউকেই পারবো না।
–আফরিন তোকে ধোঁকা দিয়েছে তা জানার পরও?
–হ্যাঁ, সব জানার পরও। কারণ অভিনয় আফরিন করেছিলো, আমি না বাবা।
কথাটা বলেই আর কোনো কথা না বলে হাবিব চৌধুরীর রুম থেকে বেরিয়ে আসে অরিয়ন।
আয়নার সামনে বসে জুয়েলারিগুলো খুলছে মিতা। চোখ আর মুখ লাল হয়ে আছে কান্নার কারণে। পরক্ষণেই কিছু মনে পড়তে ঠোঁটের কোণে চিলতে এক হাসি ফুটে উঠে। পরক্ষণেই আবারও চোখ থেকে পানি পড়তে শুরু করে।
“আচ্ছা ভালোবাসলে কী এরকম অনুভব হয়? অরিয়ন ভাইয়াকে নিয়ে এরকম অনুভূতি কেনো আসলো?” মনে মনে ভাবে মিতা।
ছোটবেলা থেকে কাজিনদের মধ্যে অরিয়নকে কেনো মিতা সবার থেকে বেশি পছন্দ করতো তা মিতা জানেনা। শুধু জানে যখন আফরিনের সাথে সম্পর্ক হলো তখন মিতা অনেক খুশি হয়েছিলো এই ভেবে এখন প্রতিদিন অরিয়ন ভাইয়ার সাথে দেখা হবে। আফরিনের সাথে সম্পর্কের সেই ৬ বছরে এমন কোনো দিন যায় নি যেদিন অরিয়ন আফরিনের জন্য ফুল বা চকলেট এনেছে কিন্তু মিতার জন্য আনেনি।
অনিয়ন বলাতে রাগ হয়ে যাওয়ার অভিনয় করা অরিয়নের জন্য এক অজানা অনুভূতি অনুভব করলো যেদিন আফরিন চলে যাওয়াতে অরিয়নের মুখটা অসহায়ের মতো হয়ে গেলো। হাসিখুশি থাকা অরিয়নের মুখটা যেদিন থেকে গম্ভীর হয়ে গেলো সেদিন বুঝতে পারলো মিতার জীবন থেকে কি চলে গিয়েছে, কেনো সেই চেহারা চোখের সামনে ভাসতেই অজান্তেই চোখ দিয়ে পানি পড়তো মিতার।
ড্রেসিং টেবিলের সামনে থেকে উঠে গিয়ে বিছানার পাশে থাকা টেবিলের উপর থেকে ছবিটা হাতে তুলে নেয় মিতা। আফরিনের ছবির দিকে এক নজরে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ।
–এই মানুষটাকে কষ্ট দিতে পারলি তুই আপু?
–তোর আফনান তো একদম ভালো নেই আপু, কোথায় তুই? সত্যি কি তুই পালিয়েছিস??
–তোর আফনানকে যে আমি ভালোবেসে ফেলেছি। ও যে এখন আমার কাছে রিয়ন হয়ে গেছে।
কথাটা বলতেই এক ফোঁটা পানি গিয়ে আফরিনের ছবির উপর পরে।
–আমি যদি তোর আফনানকে…তোর আফনানকে ভালো রাখার দায়িত্ব নেই তাহলে কি তুই রাগ করবি?
নিজের হাত দিয়ে অরিয়নের ছবিটা স্পর্শ করতে করতে বলে মিতা।
–তুমি কি আমাকে তোমার মনের এক কোণে জায়গা দিতে পারবে রিয়ন? তোমাকে ভালোবাসতে দিবে আমাকে? তোমার সব কষ্ট ভুলিয়ে দিতে দিবে? স্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে পারবে তুমি?
এক দৃষ্টিতে ছবিটার দিকে তাকিয়ে বলে মিতা।
আজ মিতা সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই গোসল করে বেবি পিংক কালারের একসেট জামা পড়ে, চুল আচরিয়ে রান্নাঘরে চলে এসেছে। ইচ্ছা আছে অরিয়নের জন্য নাস্তা তৈরি করার।
–শায়লা আপু, অরিয়ন ভাইয়ার নাস্তা বানানো শেষ?
–না, কেনো??
–আমি বানাই?
হাসি দিয়ে বলে মিতা।
–শুধু অম্লেট করা বাকি আর সব করা হয়ে গেছে।
জিভে কামড় দিয়ে বলে শায়লা।
–আচ্ছা। অম্লেট ই করি দেও।
বলেই ডিম অম্লেট করতে শায়লার পাশে দাঁড়ায় মিতা।
অম্লেট বানিয়ে গ্রিন টি এর সব কিছু গুছিয়ে রেখে খাবার টেবিলে বসে অপেক্ষা করছে মিতা। হঠাৎ করে এসব উদ্ভট কাজ করতে মন চাচ্ছে তা কারণ মায়া চৌধুরী থেকে একবার শুনেছিলো ছেলেদের খুশি করতে হয় তাদের টেস্টি খাবার খায়িয়ে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই হাবিব চৌধুরী অফিসের জন্য রেডি হয়ে নাস্তার টেবিলের এসে বসে নাস্তা খেতে।
–গুড মর্নিং চাচ্চু।
হেসে বলে মিতা।
–গুড মর্নিং মিতা। আজ এতো সকালে, আজও কি পরীক্ষা আছে?
বলে হাবিব চৌধুরী।
–হ্যাঁ চাচ্চু।
জবাব দেয় মিতা।
অরিয়নকে আসতে দেখেই নড়েচড়ে ঠিক করে বসে মিতা। হঠাৎ করে মিতার এতো নার্ভাসনেস যেন হাবিব চৌধুরীর চোখ দেখে এড়ানো গেলো না। কেনো এতো নার্ভাস হয়ে পড়েছে তা দেখতে পেছনে তাকাতেই অরিয়নকে দেখতে পায় হাবিব চৌধুরী। অরিয়নকে দেখেই আলতো এক হাসি ফুটে উঠে হাবিব চৌধুরীর ঠোঁটে।
–গুড মর্নিং বাবা।
চেয়ারে বসতে বসতে বলে অরিয়ন।
সামনে বসে থাকা মিতার দিকে একবার তাকিয়ে দৃষ্টি ফিরিয়ে নেয় অরিয়ন।
–গুড মর্নিং অরিয়ন ভাইয়া।
অরিয়নের দিকে তাকিয়ে বলে মিতা।
–গুড মর্নিং।
অরিয়ন উত্তর দিতেই বিশাল এক হাসি ফুটে উঠে মিতার মুখে।
শায়লা অরিয়নের প্লেটে নাস্তা দিতে এগিয়ে আসতেই মিতা উঠে গিয়ে অরিয়নের প্লেটে খাবার দিতে থাকে। হুট করে মিতার এরকম করা দেখে কিছুটা অবাক হয়ে মিতার দিকে তাকায় অরিয়ন।
–মিতাকে আজ কলেজ নামিয়ে দিয়ে আসিস, আজ ওর এক্সাম আছে।
হাবিব চৌধুরী নাস্তা খেতে খেতে বলে।
–ওকে।
আজ আর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো না অরিয়ন। গাড়ির মধ্যে বসে ছিলো যখন মিতা ব্যাগ নিয়ে নেমে আসলো।
–চলুন কাকা।
অরিয়নের পাশে এমন না আজ প্রথম বসেছে মিতা। এর আগেও অনেকবার বসেছে তাও আজ যেন একটু বেশি নার্ভাস লাগছে মিতার।
–কি হয়েছে তোর? শরীর খারাপ লাগছে নাকি??
হুট করে জিজ্ঞেস করে অরিয়ন।
–কই না তো।
আমতা আমতা করে জবাব দেয় অরিয়ন।
–তাহলে এসির মধ্যেও এভাবে ঘামছিস কেনো??
প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–অহ, হ্যাঁ। তাই তো। আসলে আজ এক্সামের জন্য ভয় লাগছে তাই।
–ওহ।
–ধন্যবাদ তোমাকে।
হুট করে বলে উঠে মিতা।
–কি জন্য??
বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করে অরিয়ন।
–ঐদিন ম্যাথ নোট করে দিয়েছিলে তাই।
নিচের দিকে তাকিয়ে বলে মিতা।
–কিসের ম্যাথ? আমি কোনো ম্যাথ করিনি।
জানালার দিকে তাকিয়ে বলে ফেলে অরিয়ন।
–আমি তোমার হাতের লেখা চিনি অরিয়ন..
ধীরে বলে উঠে মিতা।
নিজের নাম মিতার মুখে শুনতেই ফিরে মিতার দিকে অবাক হয়ে তাকায় অরিয়ন।
–ভাইয়া।
ভয়ে ভয়ে কথাটা কমপ্লিট করে মিতা।
অরিয়ন আর কোনো কথা না বলেই নিজের মোবাইল নিয়ে কানের কাছে নিয়ে কথা বলতে শুরু করে। কিছুটা হতাশ হয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে থাকে মিতা।
আজ আবারও অরিয়নের দরজার সামনে বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মিতা। এমন নয় ম্যাথটা বুঝতে পারছে না। “তোমাকে আর একা একা থাকতে দিচ্ছি না” মনে মনে ঠিক করে মিতা। এটা সেটার বাহানা করে কিভাবে অরিয়নের কাছাকাছি থাকবে সেই বাহানা খুজতে থাকে মিতা।
–কাম ইন।
প্রথম বার নক করতেই পারমিশন দেয় অরিয়ন।
কিছুটা ভয়ে ভয়ে ভিতরে ঢুকে মিতা। অরিয়ন আজ আর টেবিলে বসা নেই। ফাইল আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাগজ নিয়ে মাটিতে বসে আছে।
সাদা টি শার্ট আর ট্রাউজার পড়া অরিয়নের সমস্ত ধ্যান ফাইলের উপর। মাটিতে বসে থাকা অরিয়নকে দেখতে মনে হচ্ছে শিল্পীর এক নিখুঁত আঁকা জীবন্ত একটা ছবি যার থেকে ক্ষণিকের জন্যও নজর সরাতে পারছে না মিতা।
দরজা খোলার শব্দ শুনেছিলো অরিয়ন। কিন্তু তাও কোনো শব্দ না পেয়ে দরজার দিকে তাকায় অরিয়ন। সামনেই দাঁড়িয়ে মিতা। পড়নে সকালের সেই পিংক কালারের জামাটা। চুলগুলো সুন্দর করে বেনি করা। মনে হচ্ছে রুমে আসার আগেই হয়তো করে এসেছে, ঠোঁট ভিজে আছে পিংক কালারের গ্লজ দিয়ে। অরিয়ন দৃষ্টি মিতার মুখ থেকে হাতে থাকা বইয়ের দিকে যায় পরক্ষণেই।
–আই নিড হেল্প।
অরিয়নের দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে মিতা।
–তোর স্যার কি দেখতে খুব সুন্দর?
মিতার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে অরিয়ন।
–এহ?
হঠাৎ করে অরিয়নের এমন প্রশ্নে অবাক হয় মিতা।
–এরকম কেনো বললে??
অরিয়ন সামনা সামনি মাটিতে বসতে বসতে বলে মিতা।
–না আমি দেখছিলাম স্যারকে কি মুখ দেখে টাকা দেয় নাকি তোকে কিছু পড়ায়ও।
–অরিয়ন ভাইয়া।
অভিমান করে বলে মিতা।
–দু দিন পর পর আমাকে বিরক্ত করতে চলে আসিস বই একটা নিয়ে। তোর স্যারকে আসতে না করবি কাল থেকে।
ফাইলের দিকে নজর দিয়ে বলে অরিয়ন।
–তাহলে কি ডেইলি তুমি পড়াবে??
কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করে মিতা।
যদি অরিয়ন প্রতিদিন মিতাকে পড়ায় তাহলে দু জন সময় কাটাতে পারবে। অরিয়নকেও আর একা একা মন খারাপ করে সময় কাটাতে হবে না।
–মাথা খারাপ তোর? দেখছিস কি পরিমানে কাজ আছে আমার, আরিয়ানের কাছে যা। এখন হেল্প করতে পারবো না।
–তাহলে কাজ শেষ করার অপেক্ষা করি?
ধীরে ধীরে বলে উঠে মিতা।
–আজ না পরী। আজ একটু ঝামেলায় আছি। কাল ভালো করে বুঝিয়ে দিবো।
হেসে বলে অরিয়ন।
–সত্যি?
অরিয়নের কথা যেন বিশ্বাস করতে পারছে না তাই আবারও জিজ্ঞেস করে মিতা।
–হ্যাঁ তাই।
–থ্যাংক ইউ সো মাচ অনিয়ন ভাইয়া।
বলে মিতা।
মিতার কথা শুনে মুখে আলতো এক হাসি ফুটে উঠে অরিয়নের। মিতাও খুশিতে খুশিতে বেরিয়ে আসে রুম থেকে। সব কিছু এভাবে বলতে থাকলেই এক সময় নিজেদের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর তখনি মিতা নিজের মনের কথা বলে দিবে অরিয়নকে।
১ সপ্তাহ পর।
অরিয়নের রুমে বই নিয়ে অপেক্ষা করছে মিতা। গত এক সপ্তাহে মিতা প্রতিদিন এটা সেটা বুঝি না বলে বলে অরিয়নের সাথে সময় কাটাচ্ছে। অরিয়ন ও এখন অফিস থেকে আসতেই মিতাকে বই নিয়ে নিজের রুমে ডেকে নিয়ে আসে। অরিয়ন এখন আগের থেকে অনেকটাই নর্মাল হয়েছে। মিতার সাথে এটা সেটা নিয়ে হাসাহাসি করে। অরিয়নের হাসি দেখলেই যেন প্রতিবার মিতার চারপাশ থেমে যায়।
মিতা আজ সাথে করে নাস্তাও নিয়ে এসেছে। কথা ছিলো আজ ম্যাথ করা শেষ হলে দু জনে বসে মুভি দেখবে। সেই খুশিতেই যেন মাটিতে পা পড়ছে না মিতার। “আর কতক্ষণ রিয়ন” ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে এটা সেটা দেখতে দেখতে নিজে নিজে বলে মিতা।
দরজা খোলার শব্দ শুনতেই পেছনে ফিরে তাকায় মিতা। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অরিয়ন। স্যুটে সর্বদাই অরিয়নকে গম্ভীর মনে হয় মিতার কিন্তু একমাত্র যারা অরিয়নকে ভালো করে চিনে তারাই জানে অরিয়নের মনটা কতটা নরম।
পারমিতা পর্ব ১০
–আমি কখন থেকে অপেক্ষা করছি। আজ এতো লে…
মিতার কথা শেষ হওয়ার আগেই দু কদমে মিতার সামনাসামনি এসে দাঁড়ায় অরিয়ন। পরক্ষণেই অরিয়নের ঠোঁট স্পর্শ করে মিতার ঠোঁটকে।