পারমিতা পর্ব ১৮
Nabila Ahmed
রাত ৩ টা।
বিছানায় ঘুমিয়ে আছে মিতা। অরিয়নের সাথে আর ঝগড়া করতে মন চাচ্ছিলো না, তাই লাইট অফ করে শুয়ে পরে মিতা। ডীম লাইটের আলোতে সব কিছু পরিষ্কার দেখা না গেলেও, আবছা আবছা সব কিছুই দেখা যাচ্ছে।
সোফায় বসে আছে অরিয়ন। দু চোখে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে ঘুমন্ত মিতার দিকে।
“লাইক এ টক্সিক ম্যান”
“আমাকে পরী ডাকবে না”
“লাইক এ টক্সিক ম্যান”
“আমাকে পরী ডাকবে না”
“লাইক এ টক্সিক ম্যান”
মিতার কথাগুলো বার বার চোখের সামনে ভাসছে অরিয়নের। মিতাকে এতোটা অভিমান করতে দেখেনি কখনো অরিয়ন। মিতার এই অভিমান দেখে অরিয়নের কষ্ট পাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু মনের এক কোণে পৈঁচাশিক এক আনন্দ অনুভব করছে অরিয়ন। এই আনন্দ কেনো তা অরিয়ন জানেনা, শুধু জানে এই পৃথিবীর কারো শক্তি নেই অরিয়নকে পরী ডাকা থেকে নিষেধ করার। পরীর নিজেরও না।
সোফা থেকে উঠে মিতার দিকে এগিয়ে যায় অরিয়ন। এক মুহূর্তের জন্যও যেন মিতা থেকে চোখ সরছে না অরিয়নের। মিতার কাছাকাছি গিয়ে বসে অরিয়ন। সন্ধায় মিতার গলায় কামড় বসিয়ে দিয়েছিলো অরিয়ন, তা মনে পড়তেই নিজের হাত দিয়ে কামড়ের জায়গা স্পর্শ করে অরিয়ন। ঘুমন্ত মিতা গলায় কিছু অনুভব করতেই নড়েচড়ে ঘুমায়।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
এমন নয় আজ প্রথম ই ঘুমন্ত মিতাকে দেখছে অরিয়ন, ছোটবেলায় অরিয়নের কোলে কতবার ঘুমিয়েছে মিতা তার ঠিক নেই। অরিয়নের বাড়িতে বেড়াতে আসলেও আফরিন আর মিতাকে ঘুমিয়ে থাকতে দেখেছে অরিয়ন। কিন্তু আজ, আজ এক অজানা অনুভূতি কাজ করছে মিতাকে দেখে। কেনো নিজের থেকে ১১ বছরের ছোট মিতাকে এতো সুন্দর লাগছে, কেনো মিতাকে একজন নারী হিসেবে কাছে পেতে ইচ্ছা করছে তা মাথায় ঢুকছে না অরিয়নের।
“তোমার বিচ্ছেদ কী আমাকে মানসিক ভাবে পাগল করে দিলো,আফরিন?” মনে মনে ভাবে অরিয়ন।
গলার থেকে হাত সরিয়ে মিতার গাল স্পর্শ করে অরিয়ন। গালে কিছু অনুভব করতেই মিতা তাতে যেন আরও নিজের মুখ গুজে দিলো। অরিয়ন অবাক আর মুগ্ধতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল ঘুমন্ত মিতার দিকে।
“আমার পরী” বিরবির করে বলে উঠে অরিয়ন।
মিতার যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখনও সোফায় বসে আছে অরিয়ন। নিউজপেপার পড়তে ব্যস্ত অরিয়নের সামনে ব্রেকফাস্ট রাখা। মিতা বিছানা থেকে উঠে অরিয়নকে এক প্রকার ইগনোর করেই ফ্রেশ হতে চলে যায়। অরিয়নের ফোনে কল আসতেই রিসিভ করে কথা বলতে থাকে অরিয়ন।
–এইতো একটু পরেই ঘুরতে বের হবো বাবা।
মিতা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে শুনতে পায় অরিয়ন এখনো মোবাইলে কথা বলছে।
–মা, আমি ঠিক আছি। খুব তাড়াতাড়ি চলে আসবো আমরা।
বলে অরিয়ন।
–না বাবা, আমি তোমার মিতাকে শাসন করছি না, উলটা ও আমাকে…
অরিয়নের কথা শেষ হওয়ার আগেই মোবাইল হাত থেকে টান দিয়ে নিয়ে যায় মিতা।
–হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম চাচ্চু।
–জ্বি আমি ভালো আছি, তোমরা কেমন আছো?
–চাচ্চু, অরিয়ন ভাইয়া মিথ্যে বলছে, সারাদিন আমার সাথে ঝগড়া করে আর আমাকে..আমাকে রুমের মধ্যে একা রেখে কোথায় জানি চ..
মিতার কথা শেষ হওয়ার আগেই মোবাইল কেড়ে নিয়ে কল কেটে দেয় অরিয়ন।
মিতার দিকে কড়া দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে অরিয়ন।
–তুই কি মনে করিস, তোর চাচ্চুকে আমি ভয় পাই?
মিতার দিকে এগিয়ে গিয়ে বলে অরিয়ন।
–হ্যাঁ পাও।
জবাব দেয় মিতা।
অরিয়নের চোখের দিকে তাকিয়ে মিতার উত্তর দেওয়া যেন এড়িয়ে যেতে পারলো না অরিয়ন। মিতার দিকে তাকিয়ে রইল। এখন যখন এতো কাছ থেকে মিতাকে দেখছে তখন খেয়াল করলো, মুখ ধুয়ে আসাতে চোখের পাপড়িতে এখনো ফোটা ফোটা পানি জমে আছে। ঠোঁটের কোণে পানি একফোঁটা জমে আছে। নিজের অজান্তেই অরিয়নের হাত চলে গেলো মিতার ঠোঁটে। বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ঠোঁট থেকে পানি মুছে ফেললেও অরিয়ন চোখ মিনিটের জন্যও মিতার ঠোঁট থেকে সরছে না।
অরিয়নের মোবাইলে আবারও কল বাজতেই ঘোর কাটে দুজনের। অরিয়ন তাড়াহুড়ো করে কল রিসিভ করে আর মিতা ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে নিজের চুল আচরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
–হ্যালো, হ্যাঁ বলো..
কথা বলতে বলতে রুম থেকে বের হয়ে যায় অরিয়ন।
আইফেল টাওয়ারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে অরিয়ন আর মিতা। দু জনে চুপচাপ বসে সকালের নাস্তা খেয়েই চলে এসেছে।
–টিকিটের এতো বড় লাইন। কম হলেও ২/১ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে।
মন খারাপ করে বলে মিতা।
–হবে না, ঐদিক টায় চল। ঐদিক দিয়ে লিফটে উঠতে হবে।
লিফট দেখিয়ে বলে অরিয়ন।
–কেনো অপেক্ষা করতে হবে না?
প্রশ্ন করে মিতা।
–কারণ টিকিট অনলাইনে আগেই কেটে রেখেছিলাম।
জবাব দেয় অরিয়ন।
এতো মানুষের ভীরে আইফেল টাওয়ারের এতো এতো উপরে উঠে পুরো প্যারিস শহরটা যেন একটা দৃশ্য মনে হচ্ছে। উপর থেকে দেখতে এতো সুন্দর হবে তা ভাবতেই পারেনি মিতা। অরিয়নকে দিয়ে কত ছবি তুলে নিয়েছে তার হিসাব নেই। নামার সময় আইফেল টাওয়ারের ২য় তলায় বসে কফি পান করে নিয়েছে অরিয়ন আর মিতা।
–এখন কোথায় যাবো?
লিফট থেকে নামতে নামতে বলে মিতা।
–এখন বোর্টে উঠবো। সেইন নদীটা ঘুরে দেখবি।
–ওকে।
খুশি হয়ে জবাব দেয় মিতা।
বোর্টের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে মিতা। অন্য কোণে দাঁড়িয়ে আছে অরিয়ন। চলমান বোর্ট থেকে আইফেল টাওয়ার ভিডিও করতে ব্যস্ত মিতার মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। যেন গতকালের সব কষ্ট নিমিষেই ভুলে গেছে। অন্য পাশে দাঁড়িয়ে থাকা অরিয়ন মিতার দিকে তাকিয়ে মিতা কি করছে তা দেখতে ব্যস্ত। হালকা বাতাসে মিতার চুলগুলো উড়ছে, দু একটা চুল মাঝে মধ্যে গিয়ে বিলীন হয়ে যাচ্ছে মিতার ঠোঁটের মধ্যে। তাতে বিরক্ত হয়ে উঠছে মিতা। থু,থু করে চুল বের করতেই হেসে দেয় অরিয়ন। “আমার পরী” মনে মনে বলতেই ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠে অরিয়নের।
বোর্টে ঘুরা শেষ হলে দুপুরের লাঞ্চ করে নেয় অরিয়ন আর মিতা। খাওয়া দাওয়া শেষ করে চলে যায় সো দে মারস ও লুভর মিউজিয়াম ঘুরতে। সব কিছু ঘুরে বের হতে হতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায় দুজনের। ঘুরাঘুরি শেষ করে চলে যায় শপিং করতে।
নিজের ফ্রেন্ড থেকে শুরু করে পরিবারের সবার জন্য শপিং শেষ করে রাতের খাবার খেয়ে নেয় অরিয়ন আর মিতা।
কারে করে হোটেল ফিরছে মিতা আর অরিয়ন। সারাদিন ঘুরাঘুরি আর শপিং এর কারণে ক্লান্ত মিতা গাড়িতে চোখ বন্ধ করে রেখে। অরিয়ন ও সিটের সাথে হেলান দিয়ে রয়েছে। এতোগুলো শপিং ব্যাগ সব কিছু একা একা বয়ে বেড়াতে হয়েছে অরিয়নের। মেয়েরা যে কি পরিমানে শপিং করতে পারে তার একটা ধারণা হয়েছে অরিয়নের।
–La voiture derrière semble nous suivre. ( পিছনের গাড়িটা আমাদের ফলো করছে মনে হচ্ছে)
ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে বলে অরিয়ন।
–Je le pense aussi.(আমারও তাই মনে হচ্ছে)
জবাব দেয় ড্রাইভার।
–Conduis lentement, mon oncle.( গাড়ি স্লো করে চালান তো, চাচা)
ড্রাইভারের উদ্দেশ্যে বলে অরিয়ন।
–তোমরা কি কথা বলছো?
অরিয়ন আর ড্রাইভারের কথা বুঝতে না পেরে জিজ্ঞেস করে মিতা।
–তেমন কিছু না।
–অহ।
–Ils roulent également lentement.(ওরাও গাড়ি স্লো করে চালাচ্ছে)
রিয়ার ভিউ মিরর দিয়ে অরিয়নের দিকে তাকিয়ে বলে ড্রাইভার।
–Augmentez la vitesse. (স্পীড বাড়িয়ে দিন।)
অরিয়ন কথাটা বলতেই ড্রাইভার গাড়ির গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। হঠাৎ করে গাড়ির স্পীড বেড়ে যাওয়াতে চোখ খুলে তাকায় মিতা। অরিয়নের চেহারা দেখে মনে হচ্ছে অনেক বেশি টেনশন করছে কিছু একটা নিয়ে। বার বার পেছনের দিকে তাকাচ্ছে অরিয়ন।
–কি হয়েছে? এরকম লাগছে কেনো তোমাকে?
প্রশ্ন করে মিতা।
–পেছনের গাড়িটা আমাদের অনেকক্ষন ধরে ফলো করছে।
জবাব দেয় অরিয়ন।
–ফলো করছে মানে? কেনো? কি করেছি আমরা?
পেছনের গাড়ির দিকে তাকিয়ে ভয়ে ভয়ে প্রশ্ন করে মিতা।
–কিছুই জানিনা। তুই ভয় পাস না, আমি থাকতে তোর কিছু হবে না।
মিতার হাত ধরে বলে অরিয়ন।
মিতা কিছু বলতে যাবে এর আগেই পেছনের গাড়ি এসে স্বজোরে ধাক্কা দেয় মিতাদের গাড়িতে।
–ফা*কং বা*স্টার্ড।
মিতাকে জড়িয়ে ধরে চেচিয়ে উঠে অরিয়ন।
–ভয় পাস না, আমি আছি। আমি কিছু হতে দিবো না তোর।
মিতাকে জড়িয়ে ধরে বলে অরিয়ন।
মিতা ভয়ে কাঁপছে অনবরত। অচেনা জায়গা তার উপর এতো রাতে রাস্তা প্রায় ফাঁকা। কিছু একটা হয়ে গেলেও সাহায্য করার জন্য কে এগিয়ে আসবে?
–Conduis vite, mon oncle. (দ্রুত চালান,চাচা)
বলে অরিয়ন।
–I am trying.
বলে ড্রাইভার।
পেছনের গাড়ি আবারও এসে ধাক্কা লাগায় গাড়িতে।
–আয়ায়ায়ায়ায়ায়া।
ভয়ে চেচিয়ে উঠে মিতা।
–হিসসসসস,হিসসসস লাভ, কিছু হবে না। আমি আছি তো লাভ। ভয় পায় না। আমি আছি।
অরিয়ন অনবরত মিতার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে কথাগুলো বলছে মিতাকে শান্ত করার জন্য।
–Mon oncle, va-t’en. je conduis.
অরিয়ন কথাটা বলেই মিতাকে ছেড়ে ড্রাইভার সিটের দিকে এগিয়ে যায়। ড্রাইভার ও তাড়াতাড়ি করে নিজের সীট থেকে সরে জায়গা করে দেয় অরিয়নের জন্য। অরিয়ন ড্রাইভিং সীটে বসতেই রিয়ার ভিউ মিররের দিকে তাকিয়ে চেচিয়ে বলে উঠে-
–পরী..আমার দিকে তাকা।
সীটের এক কোণায় ভয়ে গুটিমেরে বসে থাকা মিতা অরিয়নের কণ্ঠ শুনে আয়নার দিকে তাকায়। অরিয়নের সাথে চোখে চোখ পড়ে।
–আমি বেঁচে থাকতে কেউ তোর চুলও বাঁকা করতে পারবে না।
গম্ভীর কণ্ঠে বলে অরিয়ন।
মিতা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলতেই গাড়ির স্পীড বাড়িয়ে দেয় অরিয়ন।
পেছনের কালো রঙের গাড়ি সামনা-সামনি আসলে অরিয়ন বামে, বামে আসলে গাড়ি ডানে নিয়ে গিয়ে এক্সিডেন্ট থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে থাকে। প্রতিনিয়ত গাড়ির দিক পরিবর্তন করার কারণে প্রতিবারই গাড়ির জানালার সাথে গিয়ে ধাক্কা খেতে থাকে মিতা। রিয়ার ভিউ মিররে সবই দেখতে পারছে অরিয়ন। প্রতিবার মিতার অবস্থা দেখে রাগে গাড়ির স্টিয়ারিং শক্ত করে চেপে ধরেছে অরিয়ন।
–তোদের আমি নিজের হাতে খুন করবো ফা**র।
পেছনের গাড়ির দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বলতে থাকে অরিয়ন।
গাড়ি এসে দাঁড়িয়েছে হোটেলের সামনে। এটার্ক করা গাড়িটি যখন দেখলো অরিয়ন নিজদের গাড়ি থেকে অনেকটা দূরত্ব তৈরি করতে পেরেছে তখন হুট করেই অন্যদিকে টার্ন নিয়ে চলে যায়। গাড়ি থেকে নেমেই অরিয়ন ড্রাইভারকে বিশাল এমাউন্টের টাকা দেয় যেন গাড়ির যে ক্ষতি হয়েছে তা মিটিয়ে নিতে পারে। ধন্যবাদ জানিয়ে পেছনের সীটের দিকে গিয়ে দরজা খুলতেই মিতাকে গুটি মেরে বসে থাকতে দেখে। নিজের মুখ দু হাটুর মধ্যে গুজে রেখেছে মিতা, ভয়ে শরীর অনবরত কাঁপছে মিতার।
–পরী?
গাড়ির মধ্যে ঢুকে ডাক দেয় অরিয়ন।
অরিয়নের ডাক শুনতেই মাথা তুলে তাকায় মিতা। গাড়ি থামতে দেখেই জড়িয়ে ধরে অরিয়নকে।
–অরিয়ন ভাইয়া।
কাঁদতে কাঁদতে বলে মিতা।
–আমরা সেইফ আছি, হোটেলে চলে এসেছি আমরা। আর ভয় নেই তোর।
মিতার মাথায় ও পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বলে অরিয়ন।
–ওরা আমাদের মা*রতে চাইছিলো কেনো? কে ওরা?
প্রশ্ন করে মিতা।
–কিছুই জানিনা, তবে মনে হচ্ছে আমাদের কোনো রাইভাল হবে। গাড়িতে আমি আছি ভেবেই মা*রতে এসেছিলো। বাকিটা পুলিশ ভালো বলতে পারবে।
কথাটা বলেই মিতাকে কোলে তুলে নেয় অরিয়ন। গাড়ি থেকে বের হয়ে নিজেদের রুমের দিকে এগোতে থাকে। মিতা নিজের মুখ গুজে দিয়েছে অরিয়নের ঘাড়ে। নিজের দু হাত দিয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে অরিয়নকে।
–এখানেই থাকো প্লিজ।
মিতাকে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে উঠে যেতে নিতেই অরিয়নের হাত ধরে বলে মিতা।
–এখানেই আছি আমি, কোথাও যাচ্ছি না।
মিতার পাশে বসে মিতার হাত ধরে বলে অরিয়ন।
কতক্ষণ একই জায়গায় একই ভাবে অরিয়ন বসে ছিলো তা জানা নেই অরিয়নের। তবে, মিতার চোখ লেগে যেতেই ধীরে ধীরে হেটে বাইরে আসে অরিয়ন। নিজের মোবাইল বের করে কল দিয়েই মোবাইল নিজের কানের কাছে ধরে।
–ওরা এখানেও চলে এসেছে।
কল রিসিভ হতেই বলে উঠে অরিয়ন।
–ওরা ভুলে যাচ্ছে ওরা কাদের সাথে শত্রুতায় জড়াচ্ছে।
রাগে দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলে অরিয়ন।
–যা করার তুমি করো, আমরা আগামীকালই বাংলাদেশে ফিরে আসছি।
কথাটা বলেই কল কেটে আবারও রুমে প্রবেশ করে অরিয়ন।
ঘুমন্ত মিতার দিকে চোখ যেতেই লক্ষ্য করে জানালার সাথে ধাক্কা খাওয়ার জন্য কপালের একপাশে লাল হয়ে আছে, একটু কেটেও গেছে।
পারমিতা পর্ব ১৭
ক্ষত স্থান লক্ষ্য করতেই তাড়াতাড়ি করে সেভলন আর তুলো নিয়ে আসে অরিয়ন। মিতার পাশে বসে ধীরে ধীরে ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে দেয়। ক্ষতস্থানে সেভলন লাগতেই নড়েচড়ে উঠে মিতা। ব্যাথায় ঘুমের চোখেই শব্দ করে উঠে মিতা। ক্ষণিকেই অরিয়নের চোখ লাল হয়ে উঠে রাগে।
–ওরা ভুলে গেছে তুই এখন আর পারমিতা চৌধুরী না, তুই মিসেস পারমিতা অরিয়ন চৌধুরী। আর ওদের ভুলের মাশুল ওদের জীবন দিয়ে দিতে হবে।
তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ক্ষতস্থানে তাকিয়ে বলে উঠে অরিয়ন।