প্রণয়ের বাঁধন পর্ব ৩০
মুসতারিন মুসাররাত
কুহেলিকার চাদরে মুড়ানো নিস্তব্ধ নিশীথ। হাড়কাঁপানো শীতে জনজীবন স্থবির। শীতের দরুণে রাত বাড়ার সাথে সাথে জনজীবন ঢলে পরে নিদ্রাপুরিতে। রাত্রি গভীর। ঘুমে বি’ঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে দিব্যর। একে তো ডিভানে শুয়ে আরাম মতো ঘুমানো দায়। পা দু’টো টানটান করা যাচ্ছে না। জড়সড় হয়ে গুটিয়ে শোবার অভ্যাস না থাকায় বেচারা বেজায় বেকায়দায় পড়েছে। তারউপরে বেশি সমস্যা হচ্ছে সিঙেল কম্বলে শীত যাচ্ছে না। শুয়ে-শুয়ে একবার এপাশ তো ওপাশ করছে। রাত্রির দীর্ঘ প্রহর এভাবে কাটিয়ে অবশেষে হার মেনে উঠে বসে দিব্য। অবচেতন মন আওড়ায়,
-” নাহ! এভাবে শান্তি মতো ঘুমানো দায়। বেড ছাড়া সাধের ঘুমটা মাটি হবে কনফার্ম।”
ভাবতে ভাবতে উঠে বেডের দিকে পা বাড়ায়। ওদিকে কমফোর্ট গায়ে জড়িয়ে প্রশান্তির সহিত ঘুমুচ্ছে নিতি। ঘুমন্ত নিষ্পাপ ফেসটা দেখে দিব্যর কঠোর মনে একটু দয়ার সঞ্চার হলো বোধহয়! তাই তো নিতিকে ডেকে ওপাশে সরতে বলবে ভেবেও কথাটা গিলে নেয় দিব্য। নিজেই বেডের ওপাশে শুয়ে পরে। এপাশটা জানালার সাথে লাগোয়া। মাত্র ঘুম নেমেছে দিব্যর চোখে, তন্মধ্যে গায়ের উপর ভারী-ভারী কিছু অনুভব হতেই ঘুম হালকা হয়। চোখদুটো মেলে চায়। দিব্যর গায়ের উপর হাত তুলে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে নিতি। দিব্যর অস্বস্তি প্লাস রাগ হলো। তবে ঘুমের মধ্যে ভেবে রাগটা একটু মিইয়ে পড়ল। বি’র’ক্তি’ক’র মুখাবয়ব করে নিজের থেকে নিতিকে সরিয়ে দিয়ে আরেকটু দূরত্ব বজায় রেখে ওপাশটা ঘেঁষে শোয়। ঘুমের ঘোরে নিতি ফের দিব্যর গা ঘেঁষে শোয়। ঘুমের অতল গহ্বরে তলিয়ে থাকা দিব্যর ঘুম পাতলা হয় শেষ রাত্রিতে। পাশ ঘুরতে নিয়ে যেন চিপায় পরে। চোখ খুলে মস্তিষ্ক সচল হতেই একপাশে নিতিকে গা ঘেঁষে অপরপাশে দেওয়াল দেখে দপ করে মেজাজটা চ’ট’ল। রা’গে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে ঝট করে উঠে বসে আকাশ পাতাল কাঁপিয়ে চেঁচিয়ে উঠল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-” নিতি? হোয়াট’স দ্য প্রবলেম?”
দিব্যর কর্কশ বজ্রকণ্ঠে ঘুমের মধ্যে ধড়ফড়িয়ে উঠে বসে নিতি। হাতের উল্টো পাশ দিয়ে চোখ ডলতে ডলতে চাইল। দিব্য দাঁত কটমট করে কড়া চাউনিতে চেয়ে হাত নাড়িয়ে দেখিয়ে বলল,
-” ওপাশে দু’জন মানুষের শোবার জায়গা রেখে আমাকে তো বেডের একপাশে চিপায় ফেলেছিস। মনে হচ্ছে একদম পুরান ঢাকার গলির চিপায় পড়েছি।”
নিতি ঘুমুঘুমু চোখে নির্বোধের মতোন খানিকক্ষণ ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইল। মস্তিষ্ক সজাগ হতেই দিব্যকে বেডে দেখে এলিয়েন দেখার মতো চমকায়। চোখদুটো রসগোল্লার আকার করে বিস্মিত কণ্ঠে বলল,
-” ত-তুমি এখানে? আমার পাশে! কী করছো শুনি?”
নিতির কথা শুনে আকাশ থেকে পড়ার মতো অবাক হয় দিব্য। আচমকা মুখ ফস্কে বেরোয়,
-” কিছুই করিনি। বরং শুরু থেকেই তুই জ্বা’লি’য়ে যাচ্ছিস।”
প্রত্যুত্তরে জড়তা নিয়ে প্রশ্ন ছুঁ’ড়ে নিতি,
-” ক-কীভাবে?”
দিব্য দাঁত কিড়মিড়িয়ে বলল,
-” একটু আগেই তো বললাম। ওপাশে ভূ’ত-প্রেতের জন্য জায়গা রেখে আমাকে পুরান ঢাকার গলির চিপায় ফেলেছিস। না পারছিলাম সরতে-নড়তে, না তো পাশ ফিরতে।”
নিতি বড় করে হামি দেয়। গা ছাড়া ভাবে ভেংচি কে’টে বলল,
-” ইয়া আল্লাহ! রাত-বিরাতে এইজন্য এতো চিল্লাচিল্লি করছো। বাড়িতে চো’র-ডাকাত পড়লেও তো মানুষ এত রাতে এমন চিল্লাচিল্লি করে না। যত্তসব! ঘুমটা দিলে তো ভেঙে। সবে একটা স্বপ্ন দেখছিলাম।”
থেমে দেওয়াল ঘড়ির দিকে তাকায়। ডিম লাইটের আলোয় সময়টা পরখ করে। তীব্র আফসোসের সুরে বলে,
-” শুনেছি ভোর রাতের স্বপ্ন সত্যি হয়। ধ্যাত! ভাল্লাগে না। মিষ্টি একটা রোমান্টিক স্বপ্ন দেখছিলাম। সহ্য হলো না তো তোমার। অমনি ভিলেনগিরি করে ছাড়লে। স্বপ্নটা ভেঙে দিলে, কিসিং সীনটা পূর্ণতা পেলো না।”
নিতি মুখটা ভারী করে ঠোঁট উল্টে রইল। দিব্য আহাম্মক বনে চাইল। পরপর সম্বিৎ ফিরে রা’গে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে বলল,
-” উফ্! তোকে কী সাধে আমি এলার্জি বলি! পুরো ইরিটেট গার্ল। একটা কথা বললে, পিছনে হাজারটা আ’জা’ই’রা বকবকানি ধরিস। ও মাই গড! এই এলার্জিকে সারাজীবন সহ্য করবো কী করে?”
নিতি মুখটা শক্ত করে কপাল কুঁচকে চাইল। হাত দু’টো বুকে ভাঁজ করে ভাব নিয়ে বলল,
-” তোমার কোনো একটা ভালো কাজের ফল আমি। জীবনে একটা হলেও ভালো কাজ করেছিলে মে বি। সেইজন্য আমার মতো মিষ্টি দেখতে, ভালো মনের, সর্ব গুণ সম্পুর্ন একটা মেয়ে জুটেছে। তাছাড়া তোমার যে ব’দমেজাজ একটা কচুপাতাও জুটতো না, হুঁ। কোনো এক পুণ্যের জন্য আমাকে বেটার হাফ হিসেবে পেয়েছো। এইজন্য তো তোমার উচিত আমাকে পেয়ে ধন্য-ধন্য করা। জীবন সার্থক বলা।”
নিতির একনাগাড়ে বলা কথাগুলো শুনে দিব্যর বদনখানিতে থাকা বিরক্তিকর ছাঁট নিমিষেই মাত্রা ছাড়ায়। সাথে দিব্যর চাহনি অতিষ্ঠ হয়। কড়া চাহনিতে চেয়ে বালিশটা দু’হাতে তুলে নিতির পাশে ছুঁ’ড়ে ফেলে দিব্য। চোখ পাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-” হয়েছে..হয়েছে? হয়েছে তোর নিজের গুণগান করা? শেষ হলে শুয়ে পড়। নিজে না ঘুমালেও আমাকে অন্তত ঘুমুতে দে এবার। ওই যে বালিশ দিয়ে সীমারেখা টেনে দিলাম। বালিশের এপাশটা তোর। ওপাশটা আমার। আর আল্লাহর ওয়াস্তে মুখটা একটু বন্ধ রাখ।”
কথা শেষ করে সেকেন্ড সময় ব্যয় করে না দিব্য; এক নিমিষেই নিতিকে ডিঙিয়ে কর্ণারে চলে আসে। নিতি বিড়বিড় করে দিব্যর চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে থাকে। দিব্য কমফোর্ট টেনে মাথাটা ঢেকে নেয়। নিতি মুখ বাঁকিয়ে উল্টোদিক হয়ে শুয়ে পরে।
পুব আকাশে উঁকি দিচ্ছে সূর্য্যিমামা। রাতের অন্ধকার শেষে সূচনা হয়েছে নতুন দিনের। শিশিরভেজা সবুজ ঘাসের উপর সূর্যের আলো চিকচিক করছে। জানালার সফেদ পর্দার ফাঁকফোকর দিয়ে সকালের এক টুকরো নরম-কোমল রোদ ঘরময় লুটোপুটি খাচ্ছে। কমফোর্টের নরম উষ্ণতা সাথে প্রিয় মানুষটির গায়ের ওম মিলেমিশে একাকার। এ যেন এক অনন্য দারুণ আবহ। উষ্ণতায় আবেশে আবেশিত হয়ে দীর্ঘ হয় তনুজার ঘুম। ঘুম ভাঙতেই ইভানের উন্মুক্ত বুকে নিজেকে আবিষ্কার করে তনুজা। লজ্জায় গাঁট হয় ওর গোটা সত্তা। ধীরে ধীরে বুক থেকে মাথাটা তুলে ইভানের দিকে চায়। বালিশে কনুই ঠেকিয়ে হাতের উপর মাথাটা রেখে ইভানের দিকে ঝুঁকে নির্নিমেষ অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে চেয়ে দেখে। ঘুমের মধ্যে মানুষটাকে ইন্নোসেন্ট লাগছে। বেশ আকর্ষণীয় আর স্নিগ্ধ লাগছে। তনুজার একটা হাত আপনাআপনি ইভানের চুলের ভাঁজ গলিয়ে যায়। আলতো করে হাত বুলায়। ইভানের ঘুম যেনো গাঢ় হলো। নিঃশ্বাসের শব্দ প্রগাঢ় শোনাল। আচমকা তনুজা অধরজোড়া ইভানের ললাটে ছোঁয়ায়। ছোট্ট করে চুম্বন আঁকে ঘুমন্ত ইভানের কপালে। অতঃপর আনমনে আলতো লাজুক হাসি মুখে নিয়ে এলোমেলো শাড়ির আঁচলটা ঠিক করে উঠে বসে। অবিন্যস্ত খোলা চুলগুলো হাত খোঁপা করে নেয় চটজলদি। বিছানা ছেড়ে নামতেই কানে আসে গম্ভীর দৃঢ় স্বর,
-” গিজার অন করে নিও।”
তনুজার গোটা শরীর লজ্জায় এই শীতল আবহাওয়ার মতোই জমে কুলফি হয়ে যায়। ইভান জেগে আছে? এটা ভাবতেই আড়ষ্ট হয় মেয়েটা। তনুজা পিছু ফিরে চায় না। উল্টোদিক পিঠ করে শাড়ির আঁচল মুঠে পুরে জড়তা নিয়ে বলল,
-” সমস্যা নেই। লাগবে না। এমনিতেই বেশ দেরি হয়েছে। ওসব করতে বেশি সময় যাবে। তারচেয়ে চট করে এ_”
তনুজার কথায় লম্বা দাড়ি বসায় ইভান। কথাটা সম্পূর্ণ না শোনেই গাঢ় স্বরে আদেশ বাণী নামলো,
-” তোমার সমস্যা না থাকলেও আমার আছে। আমার বেবির জন্য। এখন তুমি একা নও। তোমার ঠান্ডা বাঁধলে বেবির জন্য প্রবলেম হবে। যেকোন ক্ষেত্রে ছাড় দিলেও, আমার বেবির ক্ষেত্রে নো এসকিউজ, নো কম্প্রোমাইজ, এন্ড নো মার্সি। সো যা বলছি তাই করো।”
তনুজা দীর্ঘশ্বাস ফেলে। মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক উত্তর দেয়। ইভান শব্দহীন স্বল্প হেসে চোখদুটো বুঁজে নেয়।
মির্জা বাড়িতে যেন ঈদ লেগেছে। আনন্দ উচ্ছ্বাসে উদ্ভাসিত পুরো বাড়ি। বাড়ি ভর্তি মিষ্টির সমারোহে। যেন মিষ্টি-মিঠাইয়ের দোকান তুলে আনা হয়েছে। অনেক বছর পর বাড়িতে বাচ্চা-কাচ্চা আসতে যাচ্ছে। তারউপর এ বাড়ির বড় ছেলের ঘর আলো করে সন্তান জন্ম নিবে। আনন্দ উচ্ছ্বাস যেন একটু বেশিই। খুশির আমেজ মূহুর্তেই ছড়িয়ে পরে। ইভান সর্ব প্রথমে সুখবরটা দিদুনকে দিয়েছে। ইভানের মা-বাবা হীন জীবনে দিদুনের আদর-যত্ন, ভালোবাসার অবদান অনস্বীকার্য। দিদুন যেন চোখে হারায় বড় নাতিকে। ওদিকে ইভানও যথেষ্ট শ্রদ্ধা, সমীহ করে দিদুনকে। একটু আগের কথা…
হঠাৎ ড্রাইভারের হাত ভর্তি মিষ্টির প্যাকেট দেখে নুরজাহান অবাক চাউনিতে চেয়ে শুধায়,
-” হঠাৎ এত মিষ্টি-টিষ্টি! ব্যাপার-স্যাপার কী? কোন কুটুম এলো? এত উপঢোকনাদি নিয়ে!”
সকালের নাস্তা পর্ব শেষ হয়েছে সবেমাত্র। বাড়ির সদস্যরা সবাই নিচেই প্রায়। তনুজা আর শিরিন টেবিল গুছাচ্ছে। নিতি-নৃত্য দুইবোন সোফায় বসে। ইভান কয়েক কদম হেঁটে দিদুনের কাঁধ জড়িয়ে ধরল। মোলায়েম স্বরে বলল,
-” চলো। আগে মিষ্টি মুখ করো। তারপর বলছি কোন
মেহমান আসতে চলেছে।”
বৃদ্ধা বুঝলো না। কপালে কিঞ্চিৎ ভাঁজ ফেলে প্রশ্নাত্মক চোখে চাইল। ইভান স্মিত হেসে তনুজাকে ডাকল,
-” তনুজা একটা মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে এসো।”
এদিকে তনুজা ইভানের অভিপ্রায় বুঝে নেয়। বেচারি লজ্জায় মিইয়ে আছে। লজ্জাবতী গাছের পাতার ন্যায় নিজেকে জুবুথুবু করে রেখেছে। তনুজা আড়ষ্টতায় গাঁট হয়ে দৃষ্টি জমিনে নিবন্ধ করে প্যাকেট হাতে এগোয়। ইভান নিজ হাতে একটা মিষ্টি তুলে নেয়। নুরজাহানের দিকে বাড়িয়ে বলে,
-” মিষ্টি মুখে মিষ্টি খবর। তোমার দাদুভাই পাপা হতে চলেছে। মির্জা বাড়িতে নতুন মেহমান আসছে।”
বৃদ্ধা কেবল মুখে পুড়েছিলেন মিষ্টির এক টুকরো। খুশিতে আত্মহারা হয়ে চিবুতে ভুলে যান। শিরিন অবাক হয়ে চাইলেন। নিতি -নৃত্য বিস্ময়ে একসাথে চেঁচিয়ে উঠল,
-” কিহ! নতুন মেহমান। তারমানে..”
দু’জন চট করে পাশে আসে। তনুজা লজ্জায় আর অস্বস্তিতে মূর্ছা যাওয়ার ন্যায় হয়েছে। নখ দিয়ে ফ্লোর খুঁটছে। আনন্দে বাকহারা নুরজাহানের চোখে জলেরা ভিড় করে। আনন্দের আতিশয্যে সজল নয়নে আবেগপ্রবণ হয়ে চাইলেন। একবার তনুজার মাথায় আদর-মমতার হাত বুলালেন, অতঃপর ইভানের মাথায় হাতটা থামিয়ে বললেন,
-” আমার দাদুভাই বাবা হবে! আমি খুব করে চাইতাম; আমি যেন আমার দাদুভাইয়ের সন্তান নিজ চোখে দেখে যেতে পারি। এখন দেখতে না পারলেও আমার আর কোন আফসোস থাকবে না। শুনে যেতে তো অন্তত পেরেছি।”
ইভান ইমোশনাল হয়ে পরে। দিদুনকে জড়িয়ে বলে,
-” ও দিদুন। এভাবে বলো না প্লিজ। তুমি সবটা দেখে যাবে ইন শা আল্লাহ। তুমি আমাদের সাথেই রবে। তোমাকে ছাড়া তো আমার চলবেই না। তোমার কড়া শাসন। আড়ালে তুলতুলে আদর আমার অলওয়েজ চাই।”
নুরজাহান আলতো হেসে ইভানকে আদেশ করলেন তনুজার পাশে দাঁড়াতে। তনুজা-ইভানের দিকে ছলছল নয়নে চেয়ে মনেমনে সৃষ্টিকর্তার কাছে ওদের জন্য প্রার্থনা করলেন। একগাল হেসে বললেন,
-” এভাবেই জীবনের অপূর্ণতার খাতা পূর্ণতায় ভরে উঠুক। সারাজীবন হেসে-খেলে পার করো। তোমাদের ভবিষ্যত সুন্দর সুখকর হোক এই দোয়াই করি। নতুন অতিথির আগমনে তোমাদের বন্ধন আরো দৃঢ় মজবুত হোক। নির্ঝঞ্ঝাট জীবন পার করো। ভালো থেকো।”
শিরিন সুলতানাও এগিয়ে এসে মন থেকে দোয়া করলেন। নিতি- নৃত্য এখনই বেবির নামধাম রাখা নিয়ে গবেষণা শুরু করে দেয়। ছেলে বেবি হলে, এর নামের সাথে। মেয়ে বেবি হলে…দুইবোন জল্পনা কল্পনা করতে থাকে। এরমধ্যে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামছিলো দিব্য। নুরজাহান বেগম হাঁক ছেড়ে ডাকলেন,
-” ছোট দাদুভাই?”
দিব্য এগিয়ে আসতেই নুরজাহান বললেন,
-” একজনের সুখবর তো শুনে যেতে পারছি। তা ছোট কর্তার সুখবর শুনবো কবে?”
নিতি জোরসে ঝটকা খায়। মনে মনে আওড়ায়,
-” ব্যাটা যে তৃণভোজী প্রাণী। সুখবর কেনো! কোনো খবরই ইহজন্মেও সম্ভব নয়।”
দিব্য নির্বোধের মতোন নুরজাহানের দিকে চাইল। নুরজাহান হাস্যজ্জ্বল মুখে বললেন,
-” বাড়িতে নতুন অতিথি আসছে। কাকা হতে যাচ্ছো তুমি। নাও মিষ্টি খাও।”
কথাটা শেষ করেই দিব্যর মুখে একটা কালোজাম পুরে দেয় নুরজাহান। দিব্য গলাধঃকরণ করে নেয়। অতঃপর জোর করে মুখে হাসি হাসি ভাব ফুটিয়ে তোলে। পরপর ইভানের দিকে হাত বাড়িয়ে বলে,
প্রণয়ের বাঁধন পর্ব ২৯
-” কনগ্রাচুলেশন!”
ইভান হাত মিলিয়ে বলে,
-” থ্যাংকস।”