উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৬
আফিয়া আফরোজ আহি
নিকষ কালো আঁধারের মাঝে এক মুঠো আলো নিয়ে আগমন ঘটেছে চন্দ্রের। চন্দ্র তার নিজস্ব আলোয় আলোকিত করে তুলেছে চারপাশ। রাতের আঁধার ছাপিয়ে বিরাজ করছে চন্দ্রের আলোক রশ্মি। শক্তিশালী আঁধারও হার মানতে বাধ্য হয়েছে চন্দ্রের দীপ্তির কাছে। ছাদের দোলনায় বসে এক মনে দোল খাচ্ছি। আদ্র ভাইদের ছাদে আগে কোনো দোলনা ছিল না। আমি আসার পর আদ্র ভাই এটা আনিয়েছে। উনি এখনো বাসায় আসেনি। আজ নাকি একটা মিটিং আছে। মিটিং শেষ করে আসতে আসতে রাত হবে। বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু আমার চোখে ঘুম নেই। ঘুম তো দূর ঘুমের বিন্দু মাত্র লেশ অবধি নেই। ঘুম যেন বিদায় নিয়েছে চোখের পাতা হতে। মাথায় জেঁকে আছে আমি গাদা প্রশ্ন। যতক্ষণ না এগুলোর উত্তর পাচ্ছি আমার শান্তি নেই। শান্তিতে একটু ঘুমও দিতে পারবো না। কি এক মহা জ্বালায় পড়েছি। যার থেকে উত্তর নিবো সেও লাপাত্তা। এমনই দিন দশটা আগেই চলে আসে আর আজ বারোটার মতো বাজে এখনো এসেছে না।
আদ্র ভাই এতো গুলো বছর নিজের অনুভূতি লুকিয়ে রাখলো কিভাবে? কিভাবে পারলেন এটা উনি? আমি হলে তো পারতামই না। তাও আবার এতো গুলো বছর। আদ্র ভাইয়ের ডায়েরির এক কোণে ছোটো করে তারিখ লেখা ছিলো। তারিখ দেখে চমকে উঠেছি আমি। গুনে গুনে দশটা বছর ধরে মানুষটা আমায় ভালোবাসে আর আমি কিনা এমন গর্ধব যে কখনো বুঝতেই পারিনি। মানুষটা সব সময় আমার খেয়াল রাখতো, আমার পছন্দ অপছন্দ তার নখ দর্পনে ছিল, আমার কিসে ভালো লাগবে? কিসে খারাপ লাগবে সব উনার জানা। আমি কি চাই? সব দিকে খেয়াল রেখেছে উনি। কোনো দিকে কোনো কমতি রাখেন নি। সব সময় আমায় আগলে রেখেছেন একদম গোলাপের পাঁপড়ির ন্যায়। আর আমি কিনা মানুষটার অনুভূতিও বুঝতে পারলাম না। এতটা ব্যার্থ আমি!
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
কখনো সময় নিয়ে তাকানো হয়নি মানুষটার চোখে, উনার চোখে তাকালে মানুষটার ভালোবাসা অনুভব করতে পারতাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য! কখনো ভাবিনি এই মানুষটা আমায় এতটা পা*গলের মতো ভালোবাসতে পারে। সব সময় ভেবে এসেছি আদ্র ভাই কাজিন হিসেবে আমার খেয়াল রাখেন। কিন্তু কখনো মনে এই প্রশ্ন জাগে নি উনি কেন সব সময় আমাকেই আগলে রাখেন? আমার বিষয়েই কেন তার হস্তক্ষেপ? আমার যেটা পছন্দ সব সময় মনে করে সেটা আমার জন্য নিয়ে আসতেন। কখনো অন্য কারোর জন্য এমনটা করেননি। তবুও আমি বুঝতে পারিনি। কতোটা গাধী আমি।
উল্টো কি করেছি? আদ্র ভাইয়ের সামনে ইভান ভাইকে নিয়ে কতো কিছু বলেছি। তার নামে লজ্জা পেয়েছি, তাকে নিয়ে পা*গলামো করেছি। আরো কতো কি? নিজের ভালোবাসার মানুষটার মুখে অন্য কারো নাম শোনা যে কতোটা অসহনীয় যন্ত্রণার সেটা আমি জানি। নিজের ভালোবাসার মানুষটার পাশে অন্য কাউকে সহ্য করা মরণ যন্ত্রনা সমান। সেখানে আদ্র ভাই নিজ চোখে আমার পাশে ইভান ভাইকে দেখেছে, আমার সাথে তার বিয়ে ঠিক হওয়া দেখেছে। ইভান ভাইয়ের নামের হলুদ আমার গাঁয়ে লাগতে দেখছে, ইভান ভাইয়ের নামও আমার হাতে লিখতে সে দেখেছে। তাও কাউকে কিছু বলেন নি। নীরবে সয়ে গেছেন যন্ত্রনা গুলো। যন্ত্রনা গুলো চেপে রেখেছেন নিজের মাঝে। হাসি মুখটা আমাদের দেখিয়েছে।
কেন করলো উনি এমন? একটা বার আমায় বলতে তো পারতেন,“রোদ আমি তোকে ভালোবাসি”। কিন্তু উনি বলল না। নিজের অনুভূতি গুলো নিজের মাঝেই চেপে রাখলেন। কষ্ট পেলেন একা একা। দশটা বছর কাউকে না জানিয়ে ভালোবাসা কি এতোই সহজ? উহু মোটেও সহজ না। দশটা বছর মানুষটা আমায় নীরবে ভালোবেসে গেলেন। আমি হলে তো এক বছরের কেঁদে কেটে একুল ওকুল দুকূলই ভাষাতাম। অতঃপর পা*গল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতাম।
উনি আগেই যদি আমায় বলতেন তাহলে ইভান ভাইকে ভালোবেসে আমায় এতো কষ্ট পেতে হতো না। আর না ওনাকে সহ্য করতে হতো নরক যন্ত্রনা। এই মানুষটা এমন কেন? অন্যের দুঃখে ঝাঁপিয়ে পড়বে আর নিজের দুঃখের কথা কাউকে বলবে না। এমন কি টু শব্দ অবধি করবে না। হঠাৎ মেজাজ খারাপ হলো। এ আবার কেমন স্বভাব? খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অন্যের মনের কথা জানবে তাকে সান্তনা দিবে আর নিজের বেলায় সব সিন্দুকে তালা বদ্ধ করে রাখবে। আজকে আসুক বাড়ি। তারপর দেখাবো মজা। এতদিন লুকিয়ে লুকিয়ে আমায় ভালোবাসা! তাই না! আজকে কড়ায় গন্ডায় সব হিসেব তুলবো। বদ লোক! আজকে আসো তুমি বাড়ি!
বসে বসে চন্দ্র বিলাস করছি। এমন সময় কারো পায়ের শব্দ কানে এসে বাড়ি খেলো। এতো রাতে ছাদে কে এলো? ফুপ্পি বা আরু কেউই এতো রাতে ছাদে পা দিবে না। তাহলে কে এলো? ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি। অন্ধকারের মাঝ থেকে একটু একটু করে এগিয়ে আসছে এক মানব। একদম সামনে এসে দাঁড়ালো। দেখেই বোঝা যাচ্ছে হাপিয়ে গেছে মানুষটা। এক পাশে সরে উনাকে বসতে দিলাম। আদ্র ভাই ঘেমে নেয়ে এক হয়ে এসেছে। পরনের ইন করা শার্ট এলোমেলো, কুঁচকে গেছে। কোর্ট বোধ হয় খুলে রেখে এসেছে। চুল গুলোও উস্ক খুস্ক। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। আচমকা জড়িয়ে ধরে বলল,
“তুই এখানে? আর আমি তোকে পুরো বাড়ি খুঁজে এসেছি”
আদ্র ভাইয়ের হৃদস্পন্দন অস্বাভাবিক। ধড়াস ধড়াস করে হার্ট বিট করছে।
“তুমি কখন এলে? বেল বাজানোর শব্দ পেলাম না তো?”
“বেশি রাত হয়েছে দেখে বেল বাজাই নি। ভেবেছি তোরা সবাই ঘুমিয়ে গিয়েছিস। তাই পকেটে চাবি ছিল চাবি দিয়ে খুলে এসেছি”
ভ্রু কুঁচকে শুধালাম,
“আমায় খুঁজছিলে কেন?”
“আমার একটা মাত্র বউ সারাদিন শেষে এসে তার মুখ না দেখলে হবে? তাকে না দেখলে আমার সকল ক্লান্তি যে মিটবে না। তুই বা পাষান রমণী সারাদিনের জামাইয়ের একটা খবর নিস না। আমি কি তোর মতো নিষ্ঠুর? আমি আমার বউকে চোখে হারাই। তাই এসেই তার খোঁজ করছিলাম। রুমে উঁকি দিয়ে দেখি বউ আমার লা পাত্তা। এরপর আম্মুদের রুম, আরুর রুম সব খুঁজে না পেয়ে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। অতঃপর মনে পড়লো আমার বাড়িতে তো এক প্রেত আত্মা আছে যে রাত বিরেতে ছাদে উঠে বসে থাকে। আজও মনে হয় তাই করেছে। সেই ভেবে ছাদে চলে এলাম”
আদ্র ভাই যে ইচ্ছে করে আমায় রাগাতে এসব বলছেন সেটা বুঝতে আমার একটুও সময় লাগলো না। অন্য সময় রিয়েক্ট করলেও আজ কোনো রিয়াকশন দিলাম না। আদ্র ভাই কপাল কুঁচকে সুধালো,
“এতো রাতে এখানে কি করিস? ভুত প্রেতদের সাথে প্রেম করছিস নাকি?”
“আমি তো তাও ভুত প্রেতদের সাথে প্রেম করি কিন্তু তুমি তো সম্পূর্ণ উল্টো। ছুপা রুস্তমের মতো বছরের পর বছর ভালোবাসো। যাকে ভালোবাসো তাকে জানতেও দেও না যে তুমি তাকে কতোটা ভালোবাসো”
আদ্র ভাই চমকে গেছেন। হয়তো ভাবেনি আমি তাকে এমন কিছু বলবো। শুকনো ঢোক গিললো উনি। বেচারা ধরা পরে গেছে। ঘাবড়ে যাওয়ার কণ্ঠ বলল,
“কি সব বাজে বকছিস? মাথা ঠিক আছে তোর? আমি আবার কাকে ভালোবাসতে যাবো?”
কথা গুলো বলতে বলতে হেসে দিলো। উনি যে হেসে কথাগুলো উড়িয়ে দিতে চাইছেন সেটাই আমি হারে হারে টের পাচ্ছি। বজ্জাত লোক একটা। ধরা পরে যাওয়ার পরও কি সুন্দর সেটাকে অস্বীকার করছেন। দুজনের মাঝে নীরবতা বিরাজ করছে। হঠাৎ আদ্র ভাইয়ের চোখে চোখে রেখে শুধালাম,
“ভালোবাসো আমায়?”
আদ্র ভাই নিশ্চল চোখে তাকিয়ে আছে আমার চোখে। উনি এতক্ষনে বুঝে গেছেন আমি তার ডায়েরি পড়ে ফেলেছি। এখন লুকিয়েও লাভ নেই।
“সন্দেহ আছে?”
“ভালবেসে কি হলো? দুঃখ বই সুখ তো পেলে না”
“ভালোবেসেছি সুখে রাখার জন্য, থাকার জন্য না। সুখ দুঃখের হিসেবে করে ভালোবাসিনি। সুখ দুঃখ হিসেবে করলে সেটা ডিল হতো ভালোবসা না। ভালোবাসতে হয় এক আকাশ সমান উদারতা নিয়ে”
“আমায় না পেলে কি করতে?”
“দেবদাসের মতো পথে পথে ঘুরতাম। তবে ভাবিস না পার্বতীকে না পেয়ে দেবদাসের মতো চন্দ্রমুখীর কাছে যাবো। আমি এক নারীতে আসক্ত পুরুষ। রৌদ্রময়ীকে না পাওয়ার শোকে পাগল হয়ে আমি পথে পথে ঘুরবো তবু মনের ভুলেও অন্য নারীর কাছে যাবো না”
আমি স্তব্ধ হয়ে মানুষটার পানে তাকিয়ে আছি। এ কি মানুষ নাকি অন্য কিছু? এই মানুষটা প্রতি ক্ষনে প্রতি মুহূর্তে আমায় তাকে ভালোবাসতে বাধ্য করে। তার প্রতি মুগ্ধ করতে বাধ্য করে। মন বলে এই মানুষটা সঠিক। এমন মানুষ দুনিয়ায় দুটো হয়না। মানুষটা তার সর্ব সত্ত্বা জুড়ে ভালোবাসে। নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হচ্ছে। ইভান ভাইকে না পেয়ে নিজেকে যতোটা অভাগী ভেবেছিলাম এখন ততটাই ভাগ্যবতী অনুভব হচ্ছে। ইসস, আদ্র নাম মানুষটা আমায় ভালোবাসে, শুধু মাত্র আমায় ভালোবাসে।
এক মনে আদ্র ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে আছি। আচমকা মাথায় প্রশ্ন এলো। ফট করে প্রশ্ন করে বসলাম,
“এই সত্যি করে বলো তো তুমি আমায় কবে থেকে ভালোবাসো?”
আদ্র ভাই আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল,
“জেনে লাভ কি? যা হওয়ার তা তো হয়েই গেছে”
“জানার অনেক আগ্রহ জন্মেছে। না শোনা অবধি ঘুম আসবে না, শান্তি পাবো না”
আদ্র ভাই খানিক ক্ষণ সময় নিয়ে ভাবলো। অতঃপর বলা শুরু করলো,
“মানুষ প্রেমে পড়ে প্রেয়সীর রূপের ঝলকানিতে আর আমি প্রেমে পড়েছি ছোটো এক মায়াবিনীর কন্দনরত মুখের মায়ার। মায়াবিনী চকলেট পায়নি বলে তার সেকি কান্না! কান্না করতে করতে হেঁচকি তুলে ফেলেছে। নাকের ডগা লাল হয়ে গেছে। সারা মুখ রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে। মায়াবতীর কান্না আমার হৃদয়কে করে তুলেছিল উচাটন। এক অদৃশ্য ছুরি হৃদয়ে আঘাত করছিলো বরং বার। রক্ত ক্ষরণ হচ্ছিলো হৃদয় সায়রে। সমুদের উত্তাল ঢেউয়ের সৃষ্টি করেছে আমার বুকে। অতঃপর ব্যাস্ত হয়ে গেলাম মায়াবিনীর কান্না থামাতে। চকলেট পেয়ে তার সেকি খুশি। তার খিল খিল হাসি আমার হৃদয়ের রক্ত ক্ষরণ থামিয়ে দিয়েছিলো এক নিমিষেই। তার হাসির ঝলকানিতে মনের আঙিনায় প্রশান্তি হাওয়া বয়ে গেছে। এরপর ধীরে ধীরে নিজের অজান্তে ভালোবেসে ফেলি মায়াবিনীকে। না বেসেই বা থাকবো কি করে? মায়াবিনী যে আমায় তার মায়ায় বড্ড বাজে ভাবে বেঁধে ফেলেছিলো। না পারছিলাম বেরিয়ে আসতে আর না পারছিলাম মায়াবিনী কে জানাতে। সে যে বড্ড ছোটো ছিল তখন। প্রথম প্রথম নিজের অনুভূতি বুঝতে পারিনি। অনেক চেষ্টা করেছিলাম মায়াবিনীর থেকে দূরে সরে আসতে।
অপর দিকে আমি যতো তার থেকে দূরে সরে আসতে চাইছিলাম সে আমায় ততটাই তার মায়ায় বেঁধে নিচ্ছিলো। চেয়েও আমি বেরিয়ে আসতে পারিনি। আটকে গেছি মায়াবিনীর মায়া জালে। তাও আবার পুরো জীবনের জন্য। এরপর দিন যেতে লাগলো, মাস পার হলো, বছর ফুরালো মায়াবিনীর প্রতি মায়া, ভালোবাসা আমার প্রতি নিয়ত বাড়তে লাগলো। দিন দিন মানুষের আসক্তি কমে আর আমার চক্র বৃদ্ধি হারে বাড়ছিলো। পড়াশোনা, সময় করে মায়াবিনী কে দেখতে যাওয়া, তার খবর রাখা, তাকে ভেবে ডায়েরিতে কিছু অনুভূতি লিপিবদ্ধ করা, এই সব মিলিয়েই আমার দিন কাটতে লাগলো। মায়াবিনী একটু একটু করে বড় হতে লাগলো। মায়াবিনীর হুট্ হাট আবদার আমার মনকে করে তুলছিলো আনন্দিত। আমি ভেসে যাচ্ছিলাম সুখের সাগরে। তবে আমার সুখ বেশি দিন সইলো না। একদিন হুট্ করে আগমন ঘটলো মায়াবিনীর পছন্দের মানুষের। মায়াবিনী তাকে নিয়ে কল্পনা সাজাতে শুরু করলো।
নিজ চোখে নিজের ভালোবাসার মানুষটাকে অন্য কাউকে নিয়ে কল্পনা সাজাতে দেখে ভেঙ্গে পড়েছিলাম আমি। নিজেকে সামলে নিয়েছিলাম বহু কষ্টে। আমি তো তাকে নিজের করে পাওয়ার লাভে ভালোবাসিনি। আমি তাকে সুখে রাখার জন্য ভালোবেসেছি। সে যদি অন্য কারো সে খুশি থাকে তাহলে এতে আমি বাঁধা দেওয়ার কে? আমি যদি তাকে সুখী না দেখতে পারি তবে কেমন ভালোবাসা? নিজেকে বুঝিয়েও আমি পারিনি। অতঃপর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম মায়াবিনী কে তার মনের মানুষের হাতে তুলে দিয়ে পারি জমাবো দূর দেশে। আমি কষ্টে থাকলেও মায়াবিনী সুখে থাক। সব শেষে মায়াবিনী আমার ভাগ্যে না থাক আমার মনে ঠিকই থেকে যাবে আজীবন, অনন্ত কাল। এখানে আমি থাকতে পারবো না।
মায়াবিনী কে অন্য কারো সাথে দেখার সাহস আমার নেই। সেই মতে প্রস্তুতিও নিলাম। তবে আল্লাহর পরিকল্পনা বোধ হয় অন্য ছিল। এক ঝরে এলোমেলো হয়ে গেল সব। আল্লাহ আমায় মায়াবিনী কে নিজের করে পাওয়ার সুযোগ করে দিলো। মায়াবিনী ভেঙ্গে পড়লো। আমি তার এই করুণ পরিস্থিতি মেনে নিতে পারছিলাম না। অতঃপর সকল ঝড় ঝাপ্টা পার করে মায়াবিনী আমার হলো। এখন আমার মায়াবিনী শুধুই আমার”
উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৫
আদ্র ভাই থামলো। উনার বুক চিরে দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো। আদ্র ভাইয়ের বুকে মাথা গুঁজে বললাম,
“তুমি আমায় আগে বলনি কেন আমায় ভালোবাসো? আগে বললে তো এতো কিছু হতো না”
“আমি ভেবেছিলাম তুই বড় হলে সোজা মামুকে বলে তোকে বউ করে নিয়ে আসবো। হারাম সম্পর্কে জড়াতে চাইনি। তোকে বউ করে এনে কোনো এক পূর্ণিমার আলোয় আলোকিত রজনীতে চন্দ্র বিলাস করতে করতে তোকে মনের সকল অনুভূতি জানাবো। তবে সেটা আর হলো কই?”
লাফিয়ে উঠে বললাম,
“দেখো আজও কিন্তু পূর্ণিমা। তোমার মনের আশা পূরণ হয়েছে”