উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ৩০
আফিয়া আফরোজ আহি
মেঘলা আকাশে মেঘেদের আনাগোনা। বৃষ্টি নামবে মনে হচ্ছে। বৃষ্টির অপেক্ষায় চাতক পাখির ন্যায় তাকিয়ে আছি আকাশের পানে। তবে আমায় হতাশ করে বৃষ্টি তো এলোই না। উল্টো রোদ উঠে গেল। আকাশ সূর্যের তাপে জ্বল জ্বল করছে। মাস খানেক সময় চোখের পলকে কিভাবে যে কেটে গেছে আমি নিজেও জানি না। এইতো সেদিন আমি মেডিকেলে চান্স পাওয়ার জন্য কতোটা মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম। আর আজ আমি মেডিকেলের স্টুডেন্ট। আমি আমার স্বপ্নের দিকে আরো একধাপ এগিয়ে যেতে পেরেছি। কঠিন ধাপ গুলোই পেরোনো শেষ। যদিও এখনো অনেক কঠিন সময় সামনে আসবে। বিশেষ করে মেডিকেলের পড়া। এখন ভালোয় ভালোয় স্বপ্ন পূরণ করতে পারলেই হলো। আমার স্বপ্নের পথ পারি দেওয়ায় সঙ্গী হিসেবে আদ্র ভাই না থাকলে হয়তো আমি এতদূর আসতে পারতাম না। মানুষটা আমার পাশে ছিলো বলেই আমি এতদূর আসতে পেরেছি।
বাড়িতে বিয়ের ধুম পড়েছে। ঈশিতা আপুর বিয়ে। তাও তার ভালোবাসার মানুষটার সাথে। খুশির আমেজ মেতে উঠেছে আমাদের পুরো বাড়ি। ঈশিতা আপু অনেক আগে থেকেই শিহাব ভাইয়াকে পছন্দ করতো। কিন্তু সিনিয়র হওয়ায় কখনো বলতে পারেনি। সেদিন হুট্ করেই শিহাব ভাই তার পুরো পরিবার নিয়ে হাজির হয়। আমরা সবাই চমকে গিয়েছিলাম। ওনারা কিছু না জানিয়েই এসেছিলেন। ঈশিতা আপু তখন ভার্সিটিতে ছিলো। আম্মু, বড় আম্মু মিলে তাদের আপ্পায়ন করেছিল। ভাবি কল দিয়ে আব্বু, বড় আব্বুকে আসতে বলল। কিছুক্ষণের মাঝে তারা চলেও এলো। ড্রয়িং রুমে বসে সবাই কথা বলছে। তার ফাঁকে আমি চলে গেলাম ঈশিতা আপুকে কল দিতে।
আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন
হঠাৎ খেয়াল হলো ঈশিতা আপুর কয়েকদিন যাবত মন খারাপ। মন মরা আছে সব সময়। কিছুদিন যাবত বেচারির মন খারাপ। আমাদের সাথে আড্ডা দিতেও আসেনা। ঘরের কোণে পড়ে থাকে সব সময়। আচ্ছা শিহাব ভাই রিলেটেড কিছু হয়নি তো! তাহলে তো আপুকে জানানো যাবে না। এসে চমকে যাবে। আপুর চমকে যাওয়া মুখশ্রী দেখার অপেক্ষায় আছি।
ঘন্টা খানেকের মাঝে ঈশিতা আপু চলে এলো। এসে কোনো দিকে না তাকিয়ে সোজা ওপরে চলে গেল। শিহাব ভাই এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো আপুর যাওয়ার পানে। বড় আম্মু আমায় পাঠালেন ঈশিতা আপুকে নিয়ে আসতে। ঈশিতা আপুর রুমে যেয়ে দেখি বেচারি মন খারাপ করে বিছানায় সাথে হেলান দিয়ে বসে আছে। এর আবার কি হলো? ছুটে গেলাম আপুর কাছে। হন্ত দন্ত হয়ে শুধালাম,
“কি হয়েছে আপু? কেউ কিছু বলেছে?”
ঈশিতা আপু দীর্ঘশ্বাস ফেলল। অতঃপর বলল,
“কিছু হয়নি সোনা। ভার্সিটি থেকে এসে ক্লান্ত লাগছে তাই আরকি। তুই হঠাৎ আমার রুমে?”
“বড় আম্মু পাঠিয়েছে। নিচে পাত্র পক্ষ এসেছে তোমায় দেখতে। বড় আম্মু তোমায় রেডি হয়ে নিচে যেতে বলেছে”
ঈশিতা আপুর মুখটা শুকিয়ে গেল। উল্টো কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করলো না। উঠে দাঁড়িয়ে শুকনো মুখে বলল,
“তুই বস আমি রেডি হয়ে আসছি”
আপুর মুখ খানা শুকিয়ে গেছে। আচ্ছা শিহাব ভাইয়ার সাথে কিছু হয়েছে কি? কে জানে? চোখ গুলোও কেমন ফোলা ফোলা। দেখে মনে হচ্ছে কান্না করেছে বা ঘুমায় নি। আমার হাসি খুশি আপুটার কি হলো? হঠাৎ এমন চুপচাপ হয়ে গেল যে! কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো আপু কিছু না বলেই এক কথায় রেডি হতে চলে গেল কারণ কি? আমার ভাবানার মাঝে ঈশিতা আপু রেডি হয়ে বের হয়ে এসেছে। মিষ্টি কালার শাড়ি পড়েছে। শাড়িতে আপুকে মিষ্টি রমণী লাগছে। অল্প প্রশাধনির ছোঁয়া, ঠোঁটে হাল্কা লিপস্টিক, চোখে কাজল। মুখ ফসকে বেরিয়ে এলো,
“মাশাল্লাহ আপু তোমাকে ভীষণ সুন্দর লাগছে। শিহাব ভাই নিঃঘাত তোমাকে দেখে ক্রাশ খাবে”
ঈশিতা আপু চমকে পিছনে তাকালো। কপালে ভাজ ফেলে জিজ্ঞেস করলো,
“কার নাম বললি?”
জিভে কামড় দিলাম। কি করলাম আমি? ইচ্ছে করছে নিজের মাথায় নিজেই চাপর দেই। রোদ তুইও না! যাচ্ছে তাই একটা! কোনো মতে সামাল দিতে বললাম,
“নিচে যেই ভাইয়াটা তোমার জন্য বসে আছে তার কথা বললাম”
“ও আচ্ছা”
ঈশিতা আপু ফের সাজায় মন দিলো। আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম। কিন্তু আপু এতো চুপচাপ কেন? এর মাঝে নিচ থেকে ডাক এলো। আমি ঈশিতা আপুকে নিয়ে সবার মাঝে বসিয়ে দিয়ে আপুর পাশে দাঁড়িয়ে রইলাম। ঈশিতা আপু মাথা নিচু করে বসে আছে। একবারের জন্যও মুখ তুলে সামনের দিকে তাকাচ্ছে না। অপর দিকে ভাইয়া চাতক পাখির ন্যায় চেয়ে আছে আপুর দিকে। শিহাব ভাইয়ার মা আপুকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করলো। আপু ভদ্র মেয়ের মতো সব গুলোর উত্তর করলো। শিহাব ভাইয়ার পাশে বসা মেয়েটা বলে উঠলো,
“ভাবি একবার অন্তত ভাইয়ার দিকে তাকান। নাকি আমার ভাইকে পছন্দ হয়নি?”
এবার আপু মুখ তুলে তাকালো। তাকিয়ে বেচারি রিয়েকশন দিতেই যেন ভুলে গেছে। ‘থ’ হয়ে গেল। আচমকা বলে উঠলো,
“বড় আব্বু আমি এই বিয়ে করতে পারবো না। তুমি ওনাদের চলে যেতে বলো”
কথা গুলো বলে গট গট পায়ে সিঁড়ি বেয়ে ওপর চলে গেল। আমরা সবাই হতবাক আপুর কাণ্ডে। কি হলো কিছুই বুঝলাম না। সব যেন আমাদের মাথার ওপর দিয়ে গেল। বড় আব্বু ব্যাপারটা সামাল দিতে বলল,
“একটু আগে ভার্সিটি থেকে এসেছে তো! তাই হয়তো উল্টোপাল্টা বলেছে। আপনারা কিছু মনে করবেন না প্লিজ”
শিহাব ভাইয়ার আম্মু বলল,
“না ভাইজান আমরা কিছু মনে করিনি”
শিহাব ভাইয়া উসখুস করছে। কিছু হয়তো বলতে চাইছেন। কিন্তু সবার সামনে বলতে পারছেন না। অবশেষে সাহস জুগিয়ে বলেই ফেলল,
“আঙ্কেল আপনি অনুমতি দিলে আমি ঈশিতার সাথে কথা বলতে চাই। বেশি না জাস্ট কয়েক মিনিট”
বড় আব্বু আর আব্বু দুজন চোখে চোখে কথা বলল। অতঃপর আমায় বলল,
“রোদ মা শিহাব বাবাকে ঈশিতার রুমে নিয়ে যাও”
বড় আব্বুর কথায় সায় জানিয়ে শিহাব ভাইয়াকে ঈশিতা আপুর রুমের সামনে নিয়ে এলাম। রুমে উঁকি দিয়ে দেখি ঈশিতা আপু রাগে ফোঁস ফোঁস করছে। ভাইয়াকে বললাম,
“আপনার সে ভিতরেই আছে। বেস্ট অফ লাক”
শিহাব ভাইয়া টেনশনের মাঝেও হেসে দিলো। মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,
“দোয়া করো যেন বেঁচে ফিরতে পারি। তোমার বোনের যে রাগ আমায় ভস্ম না করলেই হলো”
দুজন একসাথে হেসে দিলাম। শিহাব ভাই ভিতরে ঢুকলো। চলে আসতে নিবো এমন সময় কোথা থেকে টপকালো ইভা রানী। এসেই উঁকি ঝুঁকি দিতে লাগলো আপুর রুমে।
“কিরে তুই এখানে কি করছিস? রুমে উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছিস কেন?”
“আরে দেখতে থাক কি হয়। আমার মনে হচ্ছে ঈশিতা আপু আর ভাইয়ার মাঝে কিছু একটা হয়েছে। নাহলে আপু এভাবেই রিয়েক্ট করতো না। তুই চুপচাপ কাহিনী দেখতে থাক”
দরজার ফাঁকা দিয়ে উঁকি দিলাম দুজন। ঈশিতা আপু বসে আছে নিচের দিকে তাকিয়ে। কাউকে নিজের সামনে দেখে চোখ তুলে তাকালো। শিহাব ভাইয়াকে দেখে মেজাজ আরো খারাপ হলো। এক ঝটকায় বসা থেকে দাড়িয়ে গেল। চিল্লিয়ে বলে উঠলো,
“আপনি এখানে কি করছেন? এখনো যান নি কেন? আমার রুমে কেন আসছেন? চলে যান আমার সামনে থেকে”
শিহাব ভাইয়া শান্ত কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
“আমার অপরাধ?”
“আমি জানি না”
“আমার অপরাধ না জানা অবধি আমি যাচ্ছি না”
“তাহলে আমিই চলে যাচ্ছি”
ঈশিতা আপু ব্যালকনিতে যেতে নিলে শিহাব ভাইয়া হাত ধরে আটকে দিলো।
“কি সমস্যা? ইগনোর করছো কেন? আমি কি করেছি? কিছু তো বলবে নাকি? না বললে বুঝবো কি করে ইয়ার?”
“আপনি সত্যিই জানেন না কি করেছেন?”
“জানলে কি তোমায় জিজ্ঞেস করতাম?”
“আপনার জানা লাগবে না। ঐদিন যাকে জড়িয়ে ধরেছিলেন, যাকে নিয়ে ঘুরছিলেন তার কাছেই যান। আমার কাছে কি?”
ঈশিতা আপুর অভিমান মিশ্রিত কণ্ঠ। শিহাব ভাইয়া সময় নিয়ে কিছু ভাবলো। হঠাৎ করে উচ্চ শব্দে হেসে দিলো। ভাইয়াকে হাসতে দেখে অবাক হলাম। ঈশিতা আপু কোমরে হাত গুঁজে বলল,
“পা*গল হলেন নাকি মিস্টার?”
“পা*গল আমি না তুমি পা*গলী হয়েছো?”
“মানে?”
শিহাব ভাইয়া ঈশিতা আপুর মাথায় টোকা দিয়ে বলল,
“বোকা মেয়ে ওটা আমার ছোটো বোন ছিলো”
“কি?”
“কি না জি। ও এতদিন মামার বাড়িতে ছিলো। হুট্ করে ভার্সিটিতে এসেছে আমায় সারপ্রাইজ দিতে। হঠাৎ বোনকে দেখে খুশিতে জড়িয়ে ধরেছিলাম। ও ক্যাম্পাস দেখতে চেয়েছিল তাই ওকে ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলাম”
ঈশিতা আপু ভেংচি কেটে বলল,
“আমি বিশ্বাস করি না”
“বিশ্বাস না করলে নিচে চলো। তোমায় হাতে নাতে প্রমাণ দিচ্ছি”
ঈশিতা আপু একটু থমকালো। ঢোক গিলে বলল,
“তো আমি কি করবো? আপনি এখান থেকে যান তো!”
শিহাব ভাইয়া আচমকা ঝুঁকে গেল। ফিসফিসিয়ে বলল,
“কিভাবে যাই বলো? এই বোকা মেয়েটা যে আমায় তার বন্ধুত্বের বাঁধনে বেঁধে ফেলেছে চির জীবনের জন্য। এখন তো তাকে ছেড়ে যেতেও পারবো না”
“না গেলে থেকে যান”
অকস্নাৎ শিহাব ভাইয়া হাঁটু গেড়ে বসে পড়লো। হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
“আমার সারাজীবনের সঙ্গী হবে? বন্ধু হয়ে পাশে রবে চিরকাল? কথা দিচ্ছি তোমায় আগলে রাখবো”
ঈশিতা আপু লাজুক ভঙ্গিতে ভাইয়ার হাতে হাতে রেখে “হ্যাঁ”বলল। শিহাব ভাইয়া উঠে দাঁড়ালো। আপুকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“ভালোবাসি”
আপুও লাজুক ভঙ্গিতে বলল,
“আমিও”
ওদের দুজনের কাহিনী দেখে শিহরিত হচ্ছি আমি আর ইভা। ভালোবাসা দেখতেও সুন্দর লাগে। অবশেষে ওদের মিল দেখে শান্তি লাগছে। ঈশিতা আপুর মিষ্টি একটা মেয়ে। আপুকে মন খারাপে মানায় না। মাঝে ইভা আফসোসের সুরে বলে উঠলো,
“সবারই প্রেম হচ্ছে, বিয়ে হচ্ছে? আমার খালি পরীক্ষা হচ্ছে? আর কতো পরীক্ষা দিবো আমি? আমার কি বিয়ে হবে না?”
ভাবুক কণ্ঠে বললাম,
“আমার মনে হয় তোর কপালে বিয়ে নাই বনু”
“এমন কথা বলিস না ইয়ার। জামাই ছাড়া আমার কি হবে?”
ইভাকে খেপাতে ভালোই লাগে। একটু পড়েই ডাক পড়লো নিচে। শিহাব ভাইয়ারা চলে যাচ্ছেন।
এরপরের ঘটনা গুলো এতো তাড়াতাড়ি ঘটলো যা বলার বাহিরে। দুদিনের মাথায় ঈশিতা আপুর বিয়েটা ডেট ফিক্স হলো। আগামী শুক্রবার ঈশিতা আপু আর শিহাব ভাইয়ার বিয়ে। ইদানিং ঈশিতা আপুকে খুঁজেই পাওয়া যায় না সারাদিন ফোনে ব্যাস্ত তিনি। আমাদের যেন তার চোখেই পড়ে না!
ইভা, রোশনি আর আমি মিলে আমার রুমে গল্প করছি। এমন সময় পাশে রাখা ফোন বেজে উঠলো। আদ্র সাহেবের কল। ওনার নামটা দেখেই ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি ফুটে উঠলো। ইভা দীর্ঘশ্বাস ফেল বলল,
“রোশনি চল চলে যাই। এক বোন বিয়ে ঠিক হতেই আমাদের ভুল গেছে। আরেকজন বরের ফোন পেয়ে আমাদের পাত্তাই দিচ্ছে না। তোর, আমার আর কি? দুজনই সিঙ্গেল। চল গলাগলি বেঁধে কাঁদতে বসি”
দুজন বক বক করতে করতে চলে গেল। ফোন রিসিভ করে পা বাড়ালাম ব্যালকনিতে। আদ্র ভাইয়ের প্রথম কথা,
“মিস করছিলাম তোকে”
রসিকতা করে বলে উঠলাম,
“কি ব্যাপার মিস্টার? ইদানিং বড্ড প্রেম প্রেম গন্ধ আসছে? কাহিনী কি?”
“রৌদ্রময়য়ীর প্রেমে তো সেই কবেই পড়েছি। এখন সেই অনলে দগ্ধ হচ্ছি প্রতিনিয়ত। তবুও নিষ্ঠুর রৌদ্রময়ী একটু দয়া দেখাচ্ছে না”
“কি বললে? আমি নিষ্ঠুর? বাড়ি এসো মজা দেখাচ্ছি”
“এভাবে হুমকি না দিয়ে মিষ্টি করেও তো বলতে পারিস যে ওগো শুনছো? তোমার জন্য অপেক্ষা করছি। ছুটে চলে এসো। তাহলে এক নিমিষেই চলে আসতাম”
“আমাকে কি তোমার বাংলা সিনেমার বউ মনে হয়? ওগো, কি গো, হ্যাঁ গো বলবো?”
“তুই তো নিষ্ঠুর রমণী। আমি কল না দিলে একটু মনেও করিস না। মিস তো দূরের কথা”
“মুখে বললেই কি মিস করা হয়? না বলে মিস করা যায় না বুঝি?”
“যায়। তবে বললে বেশি খুশি হতাম”
“মিস্টার আদ্র আমি যদি বলি আমি তোমাকে প্রতি ঘন্টা, প্রতিটা মিনিট, প্রতিটা সেকেন্ডই তোমায় মিস করি তাহলে কি করবে?”
“ইসস কি শুনালি রৌদ্রময়ী? আমি তো খুশিতে পা*গল হয়ে যাবো। এখন তো আমার এক ছুটে তোর কাছে চলে আসতে ইচ্ছে করছে”
“তাহলে চলে এসো”
সেকেন্ড সময় আদ্র ভাই চুপ করে রইলো। অতঃপর বলল,
“পিছনে ঘোর”
ওনার কথায় হুট্ করে ঘুরে গেলাম। ঘোরা মাত্রই চমকে উঠলাম। আমার সামনে স্বয়ং আদ্র ভাই দাঁড়িয়ে আছে। নিজের চোখকে আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছি না। অবিশ্বাশ্য কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম,
“তুমি এখানে?”
“তুই তো আসতে বললি”
“আমি তো ওটা কথার কথা বলেছি”
“তাহলে কি আমি চলে যাবো?”
তড়িৎ গতিতে বলে উঠলাম,
“না! না! আমি সেটা বলিনি। হঠাৎ এলে তাই জিজ্ঞেস করলাম”
“এই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলাম। ভাবলাম নিষ্ঠুর রৌদ্রময়ী তো আমায় আসতে বলবে না। আমিই সেঁধে সেঁধে দেখা দিয়ে আসি”
আদ্র ভাইয়ের কথায় অভিমান হলো। উল্টো দিকে ঘুরে বললাম,
“আমি যেহেতু এতোই নিষ্ঠুর তাহলে আমার কাছে এসেছো কেন? যে ভালো তার কাছে যাও”
আদ্র ভাই মুচকি হাসলো। অতঃপর আমায় আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে মিহি কণ্ঠে বলল,
“কি করবো বল? এক দশক যেই রৌদ্রময়ীর মায়া কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তোর এক কথায় তাকে ছেড়ে যাই কিভাবে? রৌদ্রময়ী এখন আমার অস্তিত্বর সাথে মিশে গেছে। আমি নিজেকে ভুলতে পারি তবুও আমার রৌদ্রময়ীকে না”
কোনো জবাব দিলাম না। চুপ করেই রইলাম। একটু বাদে প্রশ্ন করে বসলাম,
উষ্ণ প্রেমের আলিঙ্গন সিজন ২ পর্ব ২৯
“আচ্ছা আমি কি সত্যিই নিষ্ঠুর?”
আদ্র ভাই ঘাড়ে থুতনি রেখে বলল,
“আমার বোকা রানী আমি মজা করে বলেছি। সিরিয়াসলি নিচ্ছিস কেন?”