রেড রোজ ২ পর্ব ৪৪

রেড রোজ ২ পর্ব ৪৪
ফারহানা নিঝুম

স্নিগ্ধ সকাল মৃদু মন্দ হাওয়া বইছে।আকাশ পাড়া আজ উজ্জল হয়ে আছে। নীল আকাশে মাঝে মধ্যেই মেঘের ভেলা ভেসে যাচ্ছে।তার উপর পাখিরা মন খুলে যেন গান ধরেছে।
বাইরে গায়ে হলুদের জন্য স্টেজ সম্পূর্ণ। লোকজন ভিড় জমিয়েছে,দুই কন্যা একই সঙ্গে হলুদ রঙের আটপৌরে শাড়িতে সেজেছে।
ফুলের তৈরি গয়না এবং অল্প বিস্তর সাজে সেজে উঠেছে দুজনেই। আফসানা কে রিতিমত রুমে বন্দি করে রেখেছে ঐশ্বর্য।আজ যে তাঁদের সাথে সাথে আরো একটি প্রেমিক যুগলের বিবাহ। হ্যা নিকি আর জিসান, শহীদের চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে।মা হয়ে যার থাকার কথা ছিল অথচ সে আজ ঘরবন্দি।তার নিজের দোষেই সব কিছু হচ্ছে! মনের কোণে অভিমান জন্মেছে আফসানার প্রতি নিকির।প্রতিটি মেয়ের পরম আশ্রয় হলো তার মা,অথচ আজ তার মা-ই তাকে এমন একটা পরিস্থিতিতে নিয়ে এসেছে যা কখনো মানতে পারবে না নিকি।

গায়ে হলুদের পর্ব শুরু হয়েছে, দূরে দাঁড়িয়ে দেখছে ঐশ্বর্য।ওর পাশে দাঁড়িয়ে আছে রুদ্র আর জিসান, ঐশ্বর্য কিছুটা চমকে উঠে।তার রোজ এতটা সুন্দর? না কি ঐশ্বর্যের চোখেই দিন দিন সুন্দর মনে হচ্ছে?
নিজের ভাবনায় ফিচলে হাসে ঐশ্বর্য, সারা অঙ্গে হলুদের ছড়াছড়ি। ভালোবেসে একটুখানি হলুদ ছোঁয়া দিলেন শহীদ দুই মেয়ের গায়ে। উৎসা ওনার মেয়ের থেকে কম নয়,আজ তার আনন্দের দিন। নিকির বড় ভাই তার নিজ দায়িত্বে বোনের বিয়ে দিচ্ছে।এ ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত শহীদ,যে ঐশ্বর্য কখনোই তার ভাই বোনের খারাপ চাইবে না।
“ব্রো আই লাভ ইউ ইয়ার।”

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

আকস্মিক জিসান ঐশ্বর্য কে ম্যানলি হাগ করে, ঐশ্বর্য ছিটকে দূরে সরে গেল। মজার ছ’লে বলে উঠে।
“ইয়াক ইয়ার আমি তোর মত নই,সো স্টে ওয়ে ফ্রম মি।”
জিসান নাক মুখ কুঁচকে নিল,সে তো ভীষণ আনন্দিত হয়েই জড়িয়ে ধরেছিল ঐশ্বর্য কে। কিন্তু এই ছেলে?
“ব্রো তুই কি বললি? আমি তো….
“আই নো তুই আমাকে ভালো বাসতেই পারিস কজ অ্যাম ভেরী হ্যান্ডসাম।বাট ট্রাস্ট মি অ্যাম নট ইউর টাইপ।”
“হোয়াট ডু ইউ মিন বাই দ্যাট?”
“তুই আমাকে ভালোবাসলি কী করে?”
ঐশ্বর্যের প্রশ্নে ঠোঁট কিঞ্চিৎ ফাঁক হয়ে গেল জিসানের, রুদ্র হু হু করে হেসে উঠলো।সে বেশ বুঝতে পারছে জিসান কে নিয়ে মজা নিচ্ছে ঐশ্বর্য।
জিসান বিরক্তের রেশ টেনে বলে উঠে।
“ব্রো তুই আমাকে নিয়ে এটা ভাবিস শেইম অন ইউ!ইয়ার আমি জাস্ট তোকে থ্যাংকস বলতে চেয়েছিলাম,বাট তুই কী না আমাকে এসব বলছিস?ইয়াক ইয়াক।”

ঐশ্বর্য ভ্রু উঁচিয়ে বলে।
“আচ্ছা!”
“ভালো হয়েছে তোর বোন শুনতে পায়নি, না হলে আমাকে কী ভাবতো?”
রুদ্র মাঝখান থেকে বলে উঠলো।
“তাহলে ভাবতো তুমি ইয়ে!”
জিসান চোখ পা’কিয়ে বলল।
“রুদ্র তুমিও? সিরিয়াসলি?”
ঐশ্বর্য আর রুদ্র শব্দ করে হেসে উঠলো। জিসান কে প’চিয়ে দিল দু’জনে মিলে!

সন্ধ্যা নেমে এসেছে পুরো বাড়ি আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে। ধীরে ধীরে অতিথিদের আনাগোনা শুরু হলো বলে,বিয়ের স্টেজে দুটো জোড়া বড় সোফা সেট রাখা হয়েছে বর বউ বসার জন্য।
কাজীও চলে এসেছে, কিছুক্ষণ পরেই বিয়ে শুরু হবে।
লাল রঙের লেহেঙ্গা পড়েছে উৎসা আর নিকি পড়েছে খয়েরী রঙের লেহেঙ্গা। পার্লার থেকে লোকজন এসেছে সেই কখন! সাজগোজের পর্ব চলছে।
হাত ভর্তি লাল রঙের চুড়ি গা ভর্তি গয়না। নতুন বউ বেসে সেজেছে উৎসা, নিজেকে আয়নায় দেখে লজ্জা পেলো বোধহয়।এই প্রথম ঐশ্বর্যের জন্য সেজেছে সে, মানুষটা কে একটা সময় খারাপ বলতো। উঁহু এখনো খারাপ তবে শুধু তার কাছেই, ওই যে সেদিন কতটা সহজ স্বীকারোক্তি করেছিল!

একটুখানি সুখের খুঁজে মানুষ কতটা হাহাকার করে তা একমাত্র সেই মানুষটি ছাড়া কেউ ব্যাখ্যা দিতে পারবে না।আজ সেই সুখ পায়ের কাছে এনে ফেলেছে ঐশ্বর্য। তীব্র এই সুখে চোখের কোনে অশ্রু কণা জমা হলো।
বাদামী রঙের সিল্কি শাড়ি গায়ে দিয়েছে কেয়া, মেয়েটা প্রথম থেকেই মায়াবী।আজ প্রথম শাড়ি পড়েছে তাঁতে তার রূপ যেনো বেড়ে গিয়েছে। চারিদিক ঝলমল করছে তার সৌন্দর্যের কারণে।কেয়া কে দেখে হৃদয়ে দোলা লেগেছে আবারো রুদ্রর, শ্বাস প্রশ্বাস দ্রুত গতিতে চলছে তার। ঠোঁটের কোণে লেপ্টে আছে মুচকি হাসি। কাছাকাছি এগিয়ে আসতেই মিষ্টি ঘ্রাণ নাসারন্ধ্র স্পর্শ করে রুদ্রর। আবেশে চোখ বুজে আসে তার,এবারে দৃষ্টি মেলে ফেলে কেয়া কে পরখ করে নিল।
“কী হলো এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?”
কেয়ার কথায় ফের হাসলো রুদ্র।
“বিউটিফুল লেডি!ইউ আর লুকিং সো প্রীটি,লুক লাইক অ্যা কুইন।”
কেয়া জোরপূর্বক হাসলো,তার কেমন মনে হচ্ছে এই বুঝি শাড়িটা খুলে যাবে!

“এই ছাড়ি!”
“শাড়ি।”
“হুঁ শাড়ি মনে হচ্ছে খুলে যাবে!ও মাই গড!”
রুদ্র বেশ বুঝতে পারছে কেয়ার অস্বস্তি টা!আর শাড়িটা খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, কারণ তার সেফটিপিন লাগানো হয়নি।
“উফ্ দেখুন এই আঁচল? উফ্ আই কান্ট…
রুদ্র কেয়ার হাত স্পর্শ করলো,কেয়া চমকে মুখ তুলে তাকায় রুদ্রর পানে। রুদ্র স্ফীত হেসে বলল।
“চলো।”
কেয়া কচ্ছপ গতিতে এগিয়ে যেতে লাগলো,খুব জোরে হাঁটলে যদি শাড়ি..
বাকিটা ভাবতে পারলো না কেয়া, অবশেষে রুদ্রর হাত ধরে উপরের রুমে এলো। প্রায় সব রুমেই মেহমানদের আনাগোনা চলছেই,এই একটা রুম-ই আপাতত খালি আছে। রুদ্র ভেতরে এসে দরজা বন্ধ করে দিল,কেয়া তাকিয়ে আছে নির্নিমেষ।

“হোয়াট হ্যাপেন্ড মিস্টার হ্যান্ডসাম?”
রুদ্র এগিয়ে গেল ড্রেসিং টেবিলের দিকে,ওখান থেকে সেফটিপিন বের করে নিয়ে এলো।
“আমি ঠিক করে দি?”
কেয়ার উত্তরের অপেক্ষা করলো না রুদ্র, আলগোছে তার শাড়ি স্পর্শ করে।কেয়া আঁতকে উঠে, লজ্জায় জর্জরিত হয়ে উঠে সর্বাঙ্গ।এক অদ্ভুত শিহরণ খেলে গেল অন্তঃপুরে।
“আপনি কি করতে চাইছেন?”

রুদ্র ঠোঁট এলিয়ে হাসলো। আলতো করে কেয়ার ঘাড়ে অধর ছোঁয়ায়,মেয়ে জাতি প্রিয় পুরুষের সান্নিধ্য পেলে নুইয়ে পড়ে। কেয়ার ক্ষেত্রেও তাই হলো! আকস্মিক রুদ্রর স্পর্শে যেনো তার সমস্ত দেহে কম্পন শুরু হয়েছে।ভার ছেড়ে দিতেই রুদ্র আঁ’ক’ড়ে ধরে তাকে, রুদ্র আলগোছে ছুয়ে যাচ্ছে তাকে। কপালে চুমু খেতেই কেয়া তার পাঞ্জাবি আঁ’ক’ড়ে ধরে।
“আপনি আমি এক হবো কবে মিস্টার হ্যান্ডসাম? আমিও বিয়ে করে ফেলি আপনার সঙ্গে আজকেই।”
হেসে ফেললো রুদ্র।
“করব তো বিয়ে কেয়া,খুব শীঘ্রই।আগে ওদের বিয়েটা হোক?”
কেয়া হয়তো মন খারাপ করলো,তার মুখশ্রী জুড়ে আঁধার নেমে এসেছে! রুদ্র দু হাতের আঁজলায় তুলে নিল কেয়ার মুখমণ্ডল।
“জান আই লাভ ইউ।”
কেয়া চুপচাপ, রুদ্র অধরে অধর স্পর্শ করাতে ক্ষীণ কেঁপে উঠলো কেয়া। স্পর্শ গুলো তার কাছে নতুন,এর আগে কখনও এমন স্পর্শ পায়নি সে। রুদ্রর বাহুতে আসলেই শান্তি লাগে কেয়ার। দীর্ঘক্ষণ ধরে অধর চুম্বন শেষে চোখে চোখ রাখে দুজনেই।
“আই লাভ ইউ টু মিস্টার হ্যান্ডসাম।”
কেয়া ঝাপটে জড়িয়ে ধরে রুদ্র কে। রুদ্র চুলে হাত রাখলো কেয়ার,এই সব কিছু মিটে গেলে সে কেয়া কে আপন করে নিবে। সবসময়ের জন্য নিজের বাহু বন্দি করবে এই দুষ্টু মেয়ে কে।

বিয়ে বাড়ি হঠাৎ করেই যেনো নিরব হয়ে গেল,এই তো কিছুক্ষণ আগেই জমজমাট বিয়ে বাড়ি ছিল।
আফসানা কে রুম থেকে বাইরে নিয়ে এসেছিল শহীদ,যত যাই হোক এক মাত্র মেয়ের বিয়ে। জিসান আর নিকির পারিবারিক ভাবে বিয়ে হলো, দুজনেই কাবিন নামায় স্বাক্ষর করে দিল। ঘনিয়ে এলো ঐশ্বর্য আর উৎসার বিশেষ মূহুর্ত। ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক ওদেরও বিয়ে হলো, বিয়ে শেষে সবাই একত্রে আলহামদুলিল্লাহ বলে উঠে।
শাড়ি ছেড়ে ব্ল্যাক গাউন পড়েছে উৎসা আর নিকি।নিচে গার্ডেনে পার্টি থ্রু করা হয়েছে,থিম অনুযায়ী প্রায় সবাই ব্ল্যাক পড়েছে।ছোট ছোট ড্রিম লাইটের আলোয় আলোকিত অল্প আলোকিত হয়ে উঠছে চারি পাশে।
“ইউ আর লুকিং সো প্রীটি সুইটহার্ট, ট্রাস্ট মি আই কান্ট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ! কন্ট্রোললেস হচ্ছি।”
উৎসার হাত চেপে ধরে ঐশ্বর্য।গা শিরশির করে উঠলো উৎসার,শীতল চাহনি ফেলে ঐশ্বর্যের পানে।এই লোকটার ধৈর্য্য নেই!এটা বরাবরই খেয়াল করেছে সে। উৎসাও ঐশ্বর্যের মতো ফিসফিসিয়ে বলে উঠলো।
“অস’ভ্য রিক চৌধুরী এবারে তো ভালো হয়ে যান!”

ঐশ্বর্য ঠোঁট কা’ম’ড়ে হাসলো।
“দিস ইজ নট ফেয়ার সুইটহার্ট। এখন ভালো হলে প্রবলেম আছে, এখন তো আরো খারাপ হতে সবে।কজ থ্রার্ড টাইম বিয়ে করলাম!”
উৎসা চোখ পা’কিয়ে তাকায় ঐশ্বর্যের পানে, ঐশ্বর্য চোখ টিপে।সফট মিউজিক টুন বেজে চলেছে, মিউজিকের সাথে পা মিলিয়ে কাপল ড্যান্স করছে জিসান আর নিকি।এক পাশে দাঁড়িয়ে ক্ল্যাপ করছে মিহি,সে অনেকটাই সুস্থ এখন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে, সুন্দর এই রাতটা এ’নজ’য় করছে সবাই। সবার সাথে হাসি মুখে কথা বললেও ভেতর জ্বলে যাচ্ছে আফসানার ।সব কিছুর মূলে এই উৎসা,ও যদি জার্মানি না যেতো তাহলে ঐশ্বর্য আসতো না।আর না তার মেয়ের এভাবে বিয়ে হতো,তাও আবার ঐশ্বর্য তাকে রুমে বন্দি করে রেখেছিল?
“লেটস্ ড্যান্স সুইটহার্ট, কাম।”
ঐশ্বর্য উৎসার হাত ধরতেই উৎসা মিনমিনে গলায় বলল।
“প্লিজ আজকে থাকুক।”
ঐশ্বর্য কী শুনবে? উঁহু কখনো না।

“টু ডে ইজ ভেরী স্পেশাল বেইবি।কাম।”
ঐশ্বর্য জোরপূর্বক উৎসা কে নিয়ে এগিয়ে গেল, আলগোছে চেপে ধরে তার কোমড়।উৎসা ঐশ্বর্যের কাঁধ হাত রাখলো, পায়ে পা মিলিয়ে দুজনেই কাপল ড্যান্স করে।এই সুন্দর মোমেন্ট ক্যাপচার করলো রুদ্র,আজ সবাই এক সাথে আছে!
সময় পেরিয়ে চলেছে আপন গতিতে, খাওয়া দাওয়া শুরু হয়েছে। উৎসা একটু ভেতরে যেতে চাইলো এখানে কেমন অস্বস্তি লাগছে তার।
“শুনুন!”
“ইয়েস সুইটহার্ট।”
উৎসা ফিসফিসিয়ে বলল।
“আমি একটু ভেতর যে আসছি।”
“হোয়াই?”
“এখুনি চলে আসবো।”
“এনিথিং রং রেড রোজ?”
ঐশ্বর্য উৎসার গালে হাত স্পর্শ করে শুধোয়। উৎসা মৃদু হেসে বলে উঠে।
“নাথিং। এখুনি চলে আসবো।”
“ওকে।”

উৎসা গাউন দু’হাতে ধরে বাড়ির ভেতরের দিকে যেতে লাগলো।
সদর দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই লাইট অফ হয়ে গেল যেনো। উৎসা চমকে উঠে এই অন্ধকার ড্রয়িং রুমে কিছুই দেখতে পাচ্ছে না সে। উৎসা আশপাশে হাতড়ে লাইটের সুইচ বোর্ড খোঁজার চেষ্টা করছিল! কিন্তু কোথাও খুঁজে পাচ্ছে না! আকস্মিক কেউ তার মুখ চেপে ধরে, নিঃশ্বাস যেনো আটকে আসছে উৎসার। সে বেশ বুঝতে পারছে এটা একজন মহিলার হাত,আর সেই মহিলা আর কেউ নয় নিশ্চয়ই আফসানা!
উৎসা নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো। আফসানা তাকে রিতিমত টেনে হেঁচড়ে স্টোর রুমে নিয়ে গেল। হাত পা বেঁধে ফেলে মূহূর্তের মধ্যে।
“মামী কী করছো ছাড়ো আমাকে!”
আফসানা শুনলো না উল্টো তার মুখও বেঁধে ফেলল।
“তুই আমার মেয়ের জীবন নষ্ট করে দিয়েছিস রিতিমত, আমি তোকে ছেড়ে দেব? কখনও না।”
আফসানা সেই বন্ধ স্টোর রুমে উৎসা কে ফেলে চলে গেল।বাইরে থেকে তালা ঝু’লিয়ে দিল, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে উৎসার । অন্ধকার ঘরে একা থাকতে জান বেরিয়ে আসছে!

ধীর গতিতে কে’টে যাচ্ছে সময়,সবাই ক্লান্ত শরীরে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো ভেতরে টেবিলের উপর রাখা জিনিস গুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ফ্লোরে। ঐশ্বর্যের মস্তিষ্ক জ্ব’লে উঠে উৎসা কোথায়? কিছুক্ষণ আগ অব্দি তো তার সাথে ছিল কিন্তু যখন বললো ভেতরে যাবে এরপর তো আর আসেনি! ঐশ্বর্য ব্যস্ত পায়ে উপরে রুমের দিকে গেল, না উৎসা নেই।এবারে ঐশ্বর্য কিঞ্চিৎ ভয় নিয়ে আশেপাশে সব গুলো রুম চেক করে দেখে উৎসা কোথায়?কোথাও পেলো না তাকে।
“রোজ?রোজ কোথায় তুমি?ওয়ার আর ইউ সুইটহার্ট?”
রুদ্র আর জিসান দু’জনেই উপরে গেল, সত্যি পাচ্ছে না উৎসা কে।
ওরাও আশেপাশে দেখতে লাগলো।

আকস্মিক নিচ থেকে আফসানার হাসির শব্দ ভেসে এলো। শহীদ বিরক্ত হয়ে বলে উঠে।
“কী হচ্ছে কী আফসানা? উৎসা কে পাওয়া যাচ্ছে না আর তুমি?”
আফসানা তিরিক্ষি মেজাজে বলে উঠে।
“পাবেও না, যেখানে রেখেছি পাবেও না।”
“মিসেস মহিলা কোথায় রেখেছেন আপনি উৎসা কে?”
আফসানা গম্ভীর মুখে বলে উঠে।
“বলব না,পারলে খুঁজে নাও।”
ঐশ্বর্য দাঁতে দাঁত পিষে হিসহিসিয়ে বলল।
“আমি কিন্তু আপনাকে?”
“কী করবে তুমি? বেশী বাড়াবাড়ি করলে তোমাকেও আমি…

রেড রোজ ২ পর্ব ৪৩

নিকি এগিয়ে এসে বলে উঠে।
“মা ভালোয় ভালোয় বলে দাও উৎসা কোথায়?”
সপাটে চ’ড় বসালো নিকির গালে, উপস্থিত সবাই স্তম্ভ।
“তুই কথাই বলবি না। নিজের ইচ্ছে মতো তো বিয়ে করেছিস এখন আমাকে বলতে এসেছিস?”
ঐশ্বর্য গ’র্জে উঠে।
“আমি আপনাকে দেখে নেব,জাস্ট একবার উৎসা কে পেয়ে নেই এরপর।জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।”

রেড রোজ ২ পর্ব ৪৫