রং পর্ব ৪১

রং পর্ব ৪১
তন্নী তনু

(ইরফাদের বোনের নাম ইভা এন্ড ফ্রেন্ডের নাম সুভা ওকে?? গুলিয়ে ফেলবেন না। ই তে ইরফাদ ই তে ইভা। ওরা ভাই বোন। সুভা ফ্রেন্ড। রিমা ও তিথি সিনথিয়ার বান্ধবী ঢাকার। রিমার বরের নাম শুভ্র যে এখন জেলে। আর তিথির বর হলো শিশির। আর অনিমা হলো গ্রামের ফ্রেন্ড এন্ড রাফির বউ। রাফসান সিনথিয়ার বড় ভাই। মুগ্ধ ছোট ভাই। ) যারা ভুলে গেছেন বা মনে রাখতে পারেন না……তাদের জন‍্য…..

তিনটি ছোট বড় রুম মিলিয়ে সুভার সরকারী কোয়ার্টার।একরুমে সুভা একরুমে তার বাবা-মা আরেক রুমে থাকে তার ছোট ভাই। সুভা ডিউটি থেকে ফিরে শাওয়ার নিয়ে মাত্রই বের হয়েছে। দরজা ঠেলে ভেতরে আসে তার ছোট ভাই সুমন। সুভা মাথায় জড়ানো টাওয়েল খুলতে খুলতে বলে,–কিছু বলবি?
সুমনের সোজাসাপ্টা সংকোচহীন গলা,–টাকা লাগবে ভার্সিটিতে।
–সেদিন যে দিলাম?
–ওটা খরচার টাকা দিয়েছো আপু। সেমিস্টার ফি দিতে হবে না?
–আচ্ছা সকালে নিয়ে যাস।
–এখন দেও…!
–লাগবে তো সকালে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

–তোর যখন তখন ডাক চলে আসে হসপিটাল থেকে। তার চেয়ে এখন দিয়ে রাখ…
–টাকা টা এখন আসলে নেই। ম‍্যানেজ করে সকালে দিবো।
–টাকা নেই তো অমন জায়গায় ভর্তি কেনো করালে আমাকে?
–এখন ন‍্যাশনালে তো অনেক বছর লেগে যায়।তার চেয়ে প্রাইভেটে পড়া ভালো।সারাজীবন কি আমি থাকবো? জব করতে হবে না? বাবা মাকে তো দেখতে হবে।
— তুই তো তোর সেই এসপির জন‍‍্য দেবদাস সেজেছিস। তুই কি বিয়ে করবি আর??
— সুমন!
–রাগ করছিস কেনো? মা বলে তাই বললাম।

নিজের একাউন্টের সম্বলটুকু ট্রান্সফার করে সুভা। তারপর বলে,– বাকিটা সকালেই পাবি। এখন যা প্লিজ….
এরপর আধার ঘরে তলিয়ে যায় সুভা। অন্ধকার হলো নিজেকে লুকানোর একমাত্র অবলম্বন। সুমনের মুখের কথাটা খোলা জানালায় দাঁড়িয়ে তলিয়ে ভাবে সে? এই যে সবার সম্মুখে বুক ফুলিয়ে বলে বেড়ায় যে কথাটা–ইরফাদের জন‍্য বিয়ে করেনি?অমন কাউকে পায়নি তাই বিয়ে করবে নাহ!এটা কতোটুকু যুক্তিপূর্ণ!সে তো আগে থেকেই জানতো ইরফাদ তাকে কখনোই ভালোবাসবে না। তাহলে কিসের পাগলামি করতো সে? আচ্ছা! এই পাগলামিতে যদি ইরফাদ সাঁই দিতো। সেদিন কি জবাব দিতো সুভা?”
জীবন তো তার আগেই বেঁধে গিয়েছিলো দায়িত্ব নামক অদৃশ‍্য শেকলে। এরপর…..এরপর…..এরপর……অতঃপর সকলকে দমাতে শুধু একটা একটা কথাই কাজ দিলো। “ইরফাদ এর মতো কেউ হবে না। তাই বিয়ে করবোনা।” পরিবার ইরফাদকে দিতে পারলো না। ইরফাদও নিজেকে দিতে পারবে না।মাঝখান থেকে সত‍্যটুকু মনের গহীনে চেপে রাখাও সহজ হলো।”ভালোবেসেছিলাম, ভালোবাসি সারাজীবন বাসবো।কিন্তু আমার করার সাধ‍্য তো আমার নেই। আমি তো যেচে গিয়ে কারো জীবন নষ্ট করতে পারি না। ”

আধুনিক ইন্টিরিয়র সিলিং এ ঝুলানো বড়সড় দোলনাটা পেতে নেয় ইভা। টুম্পার জন‍্য গতবছর ইরফাদ কিনে এনেছিলো। দোলনা তার ও খুব পছন্দ। তাই মা মেয়ের জন‍্য এক বিশাল দোলনা খুঁজে এনেছিলো ইরফাদ। ঘুমন্ত টুম্পাকে দোলনায় দিয়ে বিছানার চাদর পরিবর্তন করছে ইভা। সে সময় দরজায় টোকা দেন ইভার বাবা। বাবার উপস্থিতি টের পেয়েই ইভা বলে,
– বাবা নক করতে হবে না। এসো….
রিদুয়ানুর রহমান রুমে প্রবেশ করতেই ইভা জিজ্ঞেস করে,
–ভাইয়া কবে ফিরব?
— মিশন শেষ হলেই আসবে। এতো টেনশন করিস না।

— তুমি এতো সহজ করে নিচ্ছো? কতোদিন ধরে বাসায় নেই। মেয়েটা আমার মামার জন‍্য কেমন করে। কি দরকার ছিলো ভাইয়াকেও এই প্রফেশনে দেওয়ার?
— দেশ আর মানুষের জন‍্য যদি কিছু করতে না পারে তাহলে কিসের মানুষ? খেয়ে আর ঘুমিয়ে থাকার নাম কি জীবন? আমি আছি তো মা। আল্লাহ্ সুবাহানা তালায়ার পর আমি আছি আমার ছেলের জন‍‍্য।
— তুমি কখন কি করছো বাবা! সারাক্ষণ বাসায় থাকো.. একবার খোঁজও নিচ্ছো না বাবা।
রিদুয়ানুর রহমান হাসেন। তারপর বলেন,

— জানো তো আম্মা!বাবা নামক বটবৃক্ষের ছায়াতলে সন্তান সারাজীবন সুরক্ষিত থাকে। তুমি টেনশন কোরোনা। আমার আব্বা ভালো আছে সুস্থ আছে…. এতো দূর্বল নয় আমার ইরফাদ।
— তোমার সাথে কথা হয়েছে!
— নাহ।
— তাহলে কিভাবে এতো কনফিডেন্স পাচ্ছো?
–ওসব বাদ দাও। তোমাকে যা বলার জন‍্য এসেছিলাম। সাজিদ ওর বাবাকে দিয়ে প্রোপোজাল পাঠিয়েছে। আম্মা তোমার কি সম্মতি আছে? আমাকে বলো তুমি কি চাও?
— ভাইয়া আগে ফিরুক বাবা। এসব পরে ভাবা যাবে..

সারাদিন বুকের মধ‍্যে ভয় গুলো জ্বোনাকি পোকার মতো ধিকিধিকি করে জ্বলেছে তিথির। এই বুঝি মামি পেছন থেকে হুংকার দিয়ে ধমকে উঠলো। এই বুঝি খুন্তির আঘাতে তার মাংস উঠে গেলো। তার মায়ের করা ভুল থেকে হোক বা কঠিন মানুষটির কঠিন রূপ থেকে হোক। মামি তাকে সহ‍্য করতে পারে না-এটা সত‍্য। গোপনে যতো ভালোবাসুক, চারদিকের যতো আঘাত থেকে মামি তাকে দূরে রাখুক। তবে ক্ষোভ থেকে শ্রেষ্ঠ আঘাত তাকে মামীই দিয়েছে। এটা তার ভুল হোক অথবা রাগ, অভিমান। যে আঘাত সে পেয়েছে তা শিশুমনের গহীনে গেঁথে গেছে। তা কি এতো সহজে মুছে যাবে। কথাগুলো ভাবছে আর কুটুসের মাথায় বিনুনি করছে তিথি। রাত বাড়ছে। ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে বিছানায় বালিশ পেতে মাথা ঠেকায় তিথি। ঠিক সে সময় দ্রুত রুমে প্রবেশ করে শিশির। তিথি লাফিয়ে উঠে বসে। অসময়ে বুক ফুলিয়ে আপাতমস্তক বলিষ্ঠ পুরুষের প্রবেশ করার ভঙ্গিতে হৃদস্পন্দন যেনো ঝনঝন করে ওঠে তিথির। লাফিয়ে উঠে বসে সে। অপর প্রান্তের অবুঝ মেয়েটির ক্রিয়াকলাপে শিশির হাতের ইশারায় বলে,

–কুল কুল….
তিথি হুরমুরিয়ে বিছানা থেকে উঠে আসে। কুটুসও উঠে বসে। তিথি দাঁতের চিপায় কথা পিষে অস্পষ্ট স্বরে বলে,
–আবার আসছো তুমি…. তোমার জ্বালায় সারাদিন ভয়ে ভয়ে কেটেছে। যাও বলছি…
— আরে পাগলি মেয়ে। টেনশন কমাতেই তো এলাম।
— তুমি আসলে আমার টেনশন বাড়ে। যাও প্লিজ….
— মা” কি বলেছে জানিস!
তিথি চোখ গোল গোল করে তাকায়। তারপর বলে,
— তুমি সত‍্যি সব বলেছো?
— কিছুটা। মা বলেছে যাকে ফিল করি তাকেই বিয়ে করা উচিত।
–কিন্তু আমার কথা তো বলোনি। পৃথিবীর সবাইকে মেনে নিলেও আমাকে মেনে নিবে না।
–এতো টেনশনের কিচ্ছু নাই। আমি একটা ট‍্যুরে যাচ্ছি। ব‍্যাক এসেই সবটা জানাবো। ততোদিন রিল‍্যাক্স…টেনশন ফ্রি থাকবি। ওকে??

— কোথায় যাবে তুমি?
— যাবো ফ্রেন্ডদের সাথে বান্দরবান।
তিথির মনটা হঠাৎ করেই শূন‍্যতায় ভোরে ওঠে। মুখটা থমথমে হয়ে যায়। কুটুস পরিস্থিতি বোঝে। নিজে থেকে উঠেই বারান্দায় চলে যায়। শিশির হাতের আজলা ভোরে তুলে নেয় তিথির মুখ। তারপর মৃদু হেসে বলে,
–নেক্সট ট‍্যুর তোর আর আমার কথা দিচ্ছি।
এরপরেই আদুরে বেড়াল বাচ্চার মতো বুকের ওম দিতে তিথিকে বুকের মধ‍্যে আগলে নেয় শিশির। তিথির কপালে আলতো চুমু খেয়ে বলে,
— প্লিজ স্মাইল। এভাবে যেতে আমার ভাললাগবে না।
তিথি যেনো অসহায়ের মতো বলে,
–এখন ই যাবে?
–হুম সোনা….
তিথির উজ্জল মুখটা ঘন কালো মেঘের চাদরে ঢেকে যায়। এতো অসহায় কেনো লাগছে? এতো শূন‍্য কেনো লাগছে। শিশির তিথির মাথায় হাত বুলায়। তারপর বলে,

— একটু কষ্ট করে থাকো। এরপর তোমাকে সাথে নিবো। মন খারাপ থাকলে আমার যেতে ভাললাগবে না।
তিথি নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে হালকা ঠোঁট ছড়ায় । তারপর বলে,
–সাবধানে থেকো।
শিশির তিথিকে পেছনে ফেলে রেখে পিছু ফেরে। কয়েক কদম হেঁটে দরজায় দাঁড়িয়ে তিথির দিক ফিরে বলে,
— সিনথিয়ার বাসার কি অবস্থা?
তিথি থেমে থাকে কিছুক্ষণ। তারপর বলে,
— দুদিন আগে গিয়েছিলাম। আজ ফোনে কথা হয়েছে আন্টির সাথে। তিনি কথায় কথায় কেঁদেকেটে শেষ। আমি কি করে শান্তনা দিবো বুঝিনা। মেয়েটার উপর তো একের পর এক বিপদ আছেই। জানিনা কি অবস্থায় আছে।
— টেনশন কোরোনা। সব ঠিক হয়ে যাবে…
— তুমিও ওর জন‍্য দু”য়া কোরো প্লিজ…
— আল্লাহ্ উইল প্রোটেক্ট সিনথিয়া”স অল অফ ডেনজার এন্ড মাই ওয়াইফ বি হ‍্যাপি ঠু।

যেনো ইরফাদ নিরাপদ জায়গা। ঐখানেই সমস্ত কিছুর সমাধান। বণ‍্য হরিণের মতো দৌড়ে যায় সিনথিয়া, পাখির ডানার মতো হাত ছড়িয়ে ঝাপটে ধরে ইরফাদকে। দুহাতে খামছে ধরে ইরফাদের পিঠের শার্ট। তারপর ভাঙা গলায় বলে,
— ওরা আমাকে বাঁচতে দিচ্ছে না। আমি আর পারছি না….
খুলে যায় সিনথিয়ার মাথাভর্তী চুলের হাতখোপা। গড়িয়ে পড়ে চুল পিঠ জুরে। সিনথিয়ার হঠাৎ করে ছুটে এসে আকরে ধরায় ইরফাদ নিজেও নিশ্চল, নিস্তব্ধ, নিরব পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে। যেনো লোহকঠিন হৃদয়ের আড়ালের মোড়কে বাঁধা জরাজীর্ণ রক্তিম বিষণ্নতা আর একাকিত্বকে ছুঁয়ে দিলো একটি শুভ্র ফুল।শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতবিক্ষত হৃদয় জুরে এখন সিনথিয়ার এলোকেশী মাথা।
আস্ত পাথর চাপা দেয়া হৃদয়টা কি আজ কম্পিত হচ্ছে!!সচল হওয়ার আভাস দিচ্ছে কি? ইরফাদ শ্বাস টানে। শীতল গলায় বলে,

— কুল কুল… ডোন্ট ক্রাইং…
সে কি হিমশীতল গলা। সিনথিয়ার হৃদয়ে যেনো বরফ ঠান্ডা অনুভূতি হয়। পরম শান্তিতে বন্ধ হয়ে আসে আখিযুগল। প্রশান্তি ছড়িয়ে যায় শ্বাসে।সিনথিয়া জরানো গলায় বলে,
— ভাইয়া আমার বিপক্ষে চলে গেছে। এতো গুলো মানুষের সাথে আমি টিকতে পারছি না….
— ওরা যেমনটা চায় তেমন হতে দাও।
–মানে?
— বিয়ের ব‍্যবস্থা করতে বলো।
সিনথিয়া ইরফাদের বুকের মধ‍্যে সমানে মাথা নাড়ায়। এলোকেশী মাথার পেছনে ভরসার হাত রাখে ইরফাদ। সিনথিয়া তবুও বলতে থাকে,
–না না না!সিচুয়েশন খুব ক্রিটিক‍্যাল। আমি সত‍্যিই সাহস পাচ্ছি না। ভাইয়া আমার অপজিটে….
— অপজিটে না। তোমার ভাইয়াও এটাই চাচ্ছে। তুমিও রাফিকে কুল রাখবে। বাকিটা আমি দেখবো….
— রাফি উম্মাদ হয়ে গেছে। ভাইয়া মত পাল্টালে আমি শেষ….
— আমি আছি না!!পাগলি মেয়ে। অলওয়েজ বি স্ট্রং ওকে?
— যদি আপনাকে আটকে রাখে?
–ছিলাম বলেই রাখতে পেরেছে। এখন কি রাখতে পেরেছে? ডেভিলদের প্ল‍্যান যেখানে শেষ আমাদের প্ল‍্যান ঐখানেই শুরু।

— কিন্তু…
— আমি আছিতো সিনথি!!
এমতাবস্থায় বাইরে থেকে ফিসফিসিয়ে শোনা যায় জাবিরের গলা,
— স‍্যার! কেউ আসবে মনে হয়।
ভেসে আসা ফিসফিসানো গলায় পটলচেরা আখিপল্লব খুলে যায় সিনথিয়ার। ভ্রু কুচকে উপর পানে তাকায় সিনথিয়া। চোখজোড়া আটকায় স্বল্প দিনের পরিচিত তীক্ষ্ম চাহুনির আড়ালের কোমল চাহুনিতে, বলিষ্ঠ বুকের কোমল খোলসের স্পর্শে নিজেকে দেখেই সর্বাঙ্গে তরঙ্গ খেলে যায় তার। হিসহিসিয়ে ওঠে পায়ের তলা। এক..দুই…তিন… এভাবেই বাড়ে ছন্দ তুলে হৃদয়ের স্পন্দন, হৃদয়ের কম্পনের গতিতে ভারী হয় শ্বাস। সুবিশাল আকাশে সোনালি রোদে ইচ্ছে মতো উড়তে থাকা ইচ্ছে নামক ঘুড়ির লাটাই পেছন ঘুড়িয়ে টেনে হিচড়ে নিজেকে সরিয়ে নেয় সিনথিয়া। তারপর ধীর গলায় বলে,

— সরি!
এই ক্ষুদ্র শব্দটুকু যেনো সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে বলিষ্ঠ হাত সিনথিয়ার মাথায় রাখে ইরফাদ। সম্পূর্ণ আশ্বাস দিয়ে বলে,
— আই”ল কাম টু ইউ ওকে?
কি আছে ঐ হীম শীতল গলায় সিনথিয়া চোখ মেলে তাকিয়ে থাকে আধারে আলোকদ‍্যুতির মতো জ্বলতে থাকা উজ্জল মুখটির দিকে। যে মানুষটির উপস্থিতি পুরো ভষ্ম করা জ্বলন্ত অন্তরকে হীমশীতল করে দেয়। কি আছে ঐ চাহুনিতে! কি আছে ঐ গলার স্বরে! ঐ স্বরে এতো কিসের শক্তি!
কথাটুকু বলেই লম্বা পা ফেলে নিমিষেই কপূর্রের মতো চোখের পলক ফেলার আগেই নাই হয়ে যায় ইরফাদ। সিনথিয়া এক…দুই… তিন পা এভাবেই পিছিয়ে যায়। বিছানায় বসে। ঘন আধারে ডুবে যাওয়া চাঁদের মতো শূন‍্যতায় তলিয়ে যায় তিথি। ক‍্যাচ করে শব্দ হয় দরজায় সাথে ভেসে আসে রাফসানের গলা,
— লাইট অফ কেনো রে??
বলেই সুইচ অন করে রাফসান। সিনথিয়ার হালকা ফোলা ভেজা ভেজা চোখে তাকিয়ে রাফসান এগিয়ে আসে। কিছুটা সময় থেমে বোঝার চেষ্টা করে। তারপর বলে,
–কাঁদছিস কেনো!

সিনথিয়া নিশ্চুপ, নিস্তব্ধ।রাফসান খাবারটুকু বিছানায় রেখে নিজেও সিনথিয়ার মুখোমুখি বসে। তারপর হালকা হেসে বলে,
— আমি তোকে রাফির হাতে তুলে দিবো এটা বিশ্বাস করিস?..
সিনথিয়া চুপচাপ বসে আছে। রাফসান ডাকে,
— কি হলো? বিলিভ হয়?
সিনথিয়া রাফসানের দিকে তাকায়। তারপর বলে,
— বিয়ে তো দিবে না। তবে এরেঞ্জমেনট তো করতেই পারো। তাইনা…..
— কেনো করবো?
–শান্ত রাখো রাফিকে। সিনক্রিয়েট করা বন্ধ হয়ে যাবে….
— ওসব বাদ…তোকে আমি সকালেই অন‍্যকোথাও পাঠিয়ে দেবো। এখন খেয়ে নে…..
— খাবোনা আমি।
–আচ্ছা ছোট পাখি! আমি খাইয়ে দিলে খাবি?
কি ছিলো এই কথাটার মধ‍্যে? ভালোবাসা, স্নেহ-মায়া নাকি ছোটবেলায় ফেলে আসা অপূর্ণ ইচ্ছে সম্পূর্ণ করার প্রয়াস। ফেলে আসা জীবনের অপূর্ণ ইচ্ছে কখনো পূরণ হয়।সিনথিয়ার কঠিন মন হাওয়াই মিঠাইয়ের মতো গলে, পৃথিবীর সমস্ত হিসেব নিকেশ ভুলে সে বলে,

–তুমি দিবে?
রাফসান যেনো বাচ্চার মতো তুমুল উচ্ছাসে নড়েচড়ে ওঠে,বিস্মিত গলায় ফুটে ওঠে চোখের সামনে বাস্তব দৃশ‍্য অবিশ্বাস্য মনে হওয়ার পুরো দৃশ‍্য, যেনো সবটা ভ্রম….
–তুই খাবি?
উড়ন্ত প্রজাপ্রতি যেনো হাতের মুঠো থেকে উড়ে পালিয়ে যাচ্ছে,তড়িঘড়ি বক্স থেকে খাবার নামিয়ে দুই যুগের বেশি সময় ধরে অপেক্ষারত স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে যত্ন করে ভাত মাখিয়ে তুলে ধরে সিনথিয়ার মুখের সামনে। সিনথিয়ার ভেজা চোখ জোড়া অজান্তেই আরেকটাবার ভেজে।সিনথিয়া ছোট্ট বাচ্চার মতো রাফসানের হাতের মাখানো ভাত মুখে পুড়ে নেয়। রাফসান ভাত মাখানো হাত মুঠ পাকিয়ে একবাহু ডোরে টেনে নেয় বোন নামক তেইশ বছর আগের দিবালোকে দেখা অপূর্ণ স্বপ্নকে, জমিয়ে রাখা এক একটা আধূলির মতো আদরের মধ‍্যে থেকে ছোট্ট একটা হামি দেয় ঘন চুলভর্তী মাথায় । তারপর বলে,

— পরিবার পাইনি, পাইনি কিছুই। সকল শূন‍্যতার অপর নাম রাফসান নিলয়। অবহেলা কষ্ট-যন্ত্রণা ছাড়া কিছুই পাইনি। তবে তুই সমস্ত ভালোবাসা পাবি।পৃথিবীর সকল আদর-স্নেহ আমি একাই দিবো ছোটপাখি। তুই আমার কাছে থাকবি। আমি তোর জন‍্য রূপকথার রাজকুমার খুঁজে আনবো দেখিস…..
— আমার তো রাজকুমার দরকার নেই আমিতো…..
মনের অস্ফুট কথাটি ফুল হয়ে প্রস্ফূটিত হওয়ার আগেই রাফসান বলে,
— কত বড় ধোকা খেয়ে যাচ্ছিলি জানিস?এসপির একটা বাচ্চাও আছে।
— তুমি কি করে জানলে?
রাফসান ফোন অন করে। তারপর বলে,
— এই দেখ!
ফোনের স্ক্রিন জুড়ে প‍দ্মফুলের মতো যেনো প্রস্ফুটিত হয়ে আছে ফুটফুটে বাচ্চা। সিনথিয়া হাত বাড়িয়ে ফোনটা নেয় ফোনের স্ক্রিনে টুপ করে চুমু খায়।এহেম কান্ডে রাফসান ভ্রু কুচকে ফেলে। তারপর হাত থেকে ছোঁ মেরে ফোনটা নেয়।

— সব জেনেও এসপি”র মোহে পড়েছিস? বাচ্চা আছে জেনেও…..
— এটা এসপি”র ফোন না??
–হুম
— এইটা এসপির বাচ্চা না। বাচ্চা”টা তোমার…..
–হোয়াট??
— ইয়েস। এটা ইভা আপুর বেইবি ওর নাম “টুম্পা”। তাহলে বাচ্চাটা তো তোমার….
মনের অজান্তেই ফোনের স্ক্রিন নিজের দিকে ঘুরায় রাফসান। চাঁদের আলো যেনো নিজের মুখের উপর চুইয়ে পড়ে। অজানা চুম্বকীয় টানে ভেতরে খেলে যায় সুখকর এক ঢেউ।যেনো ছোট্ট বাচ্চাটা তার দিকে দুহাত ছড়িয়ে ছুটে আসছে। স্ক্রিন থেকে চোখ সরায় রাফসান……

রাত বাড়ছে রাফসান সব কিছু স্বচোক্ষে একবার পর্যবেক্ষণ করে। ইরফাদের রুমে সর্বশেষ পাঠানো ছেলেটিকে আর দেখা যায় নি। কথা ছিলো খাবার খাইয়ে অবশ‍্যেই রাফসানের সাথে দেখা করবে। কিন্তু ঘন্টা পেরিয়ে গেছে এখনো ফেরেনি। রাফসান নিজে একবার চেক করে। দরজার নব ঘুড়াতেই খুলে যায় দরজা। এমন ঘটনায় চোখ কপালে উঠে যায়, তড়িঘড়ি করে ভেতরে যায় রাফসান। সাইড টেবিলে খাবারের শূন‍্য প্লেট। পানি শূন‍্য গ্লাস,বোতল। দু”জন বলিষ্ঠ পুরুষ গত সময়ের মতো খাবার খেয়ে চেয়ারেই বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। সব ঠিকঠাক। তাহলে ছেলেটা গেলো কোথায়? আজকাল নে*শায় বেশী মত্ত্ব হয়ে গেছে সব।

নেশার ঘোরে দরজায় লক দিতে ভুলে গেছে। ঐ জন‍্য নিজের কাজ নিজে করে রাফসান। দরজা ভেজিয়ে নব”এ লক দেয় রাফসান। তারপর লম্বা পা ফেলে নিজের রুমে আসে। বিছানায় বালিস ফেলে আয়েশ করে শোয় সে। ইরফাদের ফোন সহ সমস্ত জিনিসপত্র জমা নেয়া হয়েছিলো সেদিন রাতেই। হাতের ফোনটা”র লক খোলা হয়েছে অভিজ্ঞ লোক দিয়ে ফোনে গুরুত্বপূর্ণ তথ‍্য আছে কি না ঘেটে দেখা দরকার।তবে ফোনে গুটিকয়েক ছবি ছাড়া তেমন কিছু নেই। ড্রিম লাইটের মৃদু আলোয় ফোনটা আবার তুলে ধরে চোখের সামনে। অজানা আগ্রহ চুম্বকের মতো তাকে টানে গ‍্যালারির দিকে। গ‍্যালারি জুরে ফুটফুটে একটা ফুল। আছে অসংখ‍্য ভিডিও। ভিডিও অপশনে ক্লিক করে রাফসান। একটা খোলা ছাদ। ছাদের রেলিঙ ঘেঁষে ছোট ছোট টব। ফুটে আছে হরেক রকম ফুল। সেই ফুলগুলোর মধ‍্য গুটি গুটি পায়ে হেলেদুলে হেঁটে চলেছে ছোট্ট এক জীবন্ত ফুল। বাচ্চাটা খানিকটা হেঁটে থামে। তারপর পিছু ফেরে। সদ‍্য ওঠা মুক্তো দানার মতো দাঁত বের করে হাসে। হাত বাড়িয়ে কাউকে ডাকছে সে। পেছন থেকে এগিয়ে যাচ্ছে কেউ। ক‍্যামেরায় ধরা পড়ে দীর্ঘদেহী বলিষ্ঠ পুরুষ। তার কোমল গলায় ফুটে উঠেছে একটি শব্দ,

— এদিকে আসো বাবা!
এরপরেই বাচ্চাটি অবিকল শব্দটি কপি করে,
— বা……বা…..
বাবা শব্দটি বুলেটের চেয়েও গতি নিয়ে হৃদয় এফোড়ওফোড় করে ক্ষণকালের জন‍্য থামিয়ে দেয় হৃদস্পন্দনের গতি,ফুরফুরে আকাশে মেঘপুঞ্জরা তেড়ে বেড়ায় আলোঝলমলে তারাদের, শুরু হয় গর্জন,একটা শান্ত পরিবেশ নিমিষেই লন্ডভন্ড,অশান্ত হয়ে হয়ে যায়। কেনো এতো অস্থির লাগছে!! ঐ শব্দের এতো ক্ষমতা! ঐ শব্দের এতো জোর। নির্দয়,পাষান বুক আজ কাঁপছে…..সত‍্যিই কাঁপছে……

নিজের রুমের দরজা ভেজিয়ে শুয়ে আছে রাফি। চোখে শুধু রঙবেরঙের স্বপ্ন। ফোনের মৃদু কাঁপুনিতে সম্বিত ফেরে রাফি।
— স‍্যার বলুন…
— রাফসান তার বোনের প্রতি খুব দূর্বল। যেকোনো মূহুর্তে সে তার ডিসিশন চেঞ্জ করতে পারে। তুমি অলওয়েজ কেয়ারফুল থাকবে। প্রয়োজনে তার বোনকে নিজের আয়ত্বে রেখে। ওকে?
— ওকে স‍্যার। সিনথিয়া আমার হাতের নাগালেই থাকবে। প্রয়োজনে বিয়ের ডেইট আগাবে…..
_________একদিন পর________

রিসোর্টের সামনের দিকের কেবিনরুমের কাচের দেয়ালের সামনে ইজি চেয়ারে আয়েশ করে বসে আছে রাফি। কাচের দরজার দেয়াল ভেদ করে স্বচ্ছ পানির মতো চুইয়ে পড়ছে দূর থেকে আসা সোনালী আলোর তীর্যক আভা। আধারকে দূরে ঠেলে বিছানার চাদরে পড়েছে যেনো স্বর্ণালঙ্কার। রাফি চোখ বন্ধ করে ইজি চেয়ারে শরীর হেলিয়ে মনের ছন্দের তালে তালে দূলছে। শক্ত হাতের মুঠোয় কাচের দন্ডের উপর দাঁড়ানো ইউ আকৃতির সচ্ছ গ্লাসে অর্ধপূর্ণ রেড ওয়াইন। অস্থির মনকে কল্পনায় রাজ‍্যে অবগাহন করাচ্ছে আর ফাঁকে ফাঁকে স্বচ্ছ গ্লাসে নিঃশব্দে চুমুক দিচ্ছে রাফি। আর একটু পরেই সিনথিয়া নামক জীবন্ত পুতুলটি চিরকালের জন‍্য তার হয়ে যাবে এই স্বপ্নের ঘোরে তীব্র উচ্ছাসে হৃদয় যেনো বুকের খোলস থেকে বেরিয়ে আসবে এখন…। আলোয় উদ্ভাসিত বিছানায় আধখোলা পোশাকে মোহনীয় নারীর নেশাক্ত চোখে চোখ রেখে ভেজা কোমল ওষ্ঠাধরে নিজের ওষ্ঠের গাঢ় চুম্বনে ডুবিয়ে ভাসিয়ে নেয়ার তীব্র উন্মাদনায় মত্ব হয়ে রেড ওয়াইনের গ্লাসে চুমুক দেয় রাফি। আর ঠোঁটের কোণে পিচাষিক হাসি রেখে,” আর একটু অপেক্ষা জান………”

ঝুরঝুরে সাদা বালুর সৈকত, গাঢ় সবুজ রঙের পাহাড়, উজ্জল নীল রঙের সমুদ্র যেখানে অস্তমিত দিবাকর তার সমস্ত দুঃখ নিয়ে ডুব দেয়, স্নান শেষে উদয় হয় নতুন রূপ নিয়ে এমনি অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের স্বপ্নময় ভূমি থাইল‍্যান্ডের টুরিস্ট প্রধান শহর ফুকেট। এখানে রাত মানেই নতুন জগত। এই শহরে রাত জেগে ওঠে সোনালী রূপালী আলোয় মাতোয়ারা হয়ে।এই শহরে রঙবেরঙের আলোর ঝলকানিতে বার,ক‍্যাফে, নাইটক্লাব ডিস্কোতে নারী-পুরুষ মৃদু গুঞ্জনের তালে তালে রাতকে রূপান্তরিত করে এক অন‍্য রাজ‍্যে। সেরকম একটা পাঁচতলা বিশিষ্ট রিসোর্টের কেবিনে বসে স্বপ্নের জাল বুনছে রাফি।

ফুকেট থাইল‍্যান্ডের টুরিস্ট প্রধান শহর। এখানে নির্জনতা, নিস্তব্ধতা আর স্নিগ্ধতার ভাজে ভাজে শুরু হয় জাঁকজমকপূর্ণ নাইটঅফার। ফুকেটের পর্যটন শিল্প খুবই উন্নত একে কেন্দ্র করে অভিজাত হোটেল আর রিসোর্ট গুলোতে রাতে বসে নাইটক্লাব, ক‍্যাফে, ডিস্কো। এর পেছনে চলে ক‍্যাসিনোর রমরমা অবৈধ ব‍্যবসা। বছরের পর বছর ধরে এই অবৈধ ব‍্যবসা গুটিকয়েক নামধারী শিল্পপতি, বৈদেশীক কালোহাতের সহযোগিতা ও নিজের ধারালো মস্তিষ্কে নিরবে,নিভৃতে চালিয়েছে সম্রাট শাহজাহান। তার হাতে গড়ে উঠেছিলো এই পাঁচতলা বিশিষ্ট সাম্রাজ্য — রিসোর্ট।কপালে মানবতার ফেরিওয়ালার সিলমোহর এঁকে দেশে ঘুরে বেড়ানো এসব মুখোশধারীদের মুখোশ টেনে হিচড়ে খুলেও এই পাপের সাম্রাজ্যের দোড়গোড়ায় পৌঁছাতে পারেনি সে সময় কর্ণেল রিদুয়ানুর রহমান। উল্টো হারিয়েছেন নিজের পদমর্যাদা। সেদিন সৎ শক্তি হেরে গিয়েছিলো কালো জগতের কাছে। কালক্রমে সম্রাট শাহজাহানের পাপের পদচিহ্ন দমানো গেলেও মুছে যায়নি তার সৃষ্টি। দেশের মাটি থেকে অশুভ এই কালো টাকার ভান্ডারকে ভৌগোলিক দূরত্বে অবস্থান করেও বাঁচিয়ে রেখেছে আরেকজন মুখোশধারী মানবতার ফেরিওয়ালা।

যে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।ক্ষুদ্র থেকে বৃহত্তর রূপে রূপান্তরিত করেছে এই ব‍্যবসা। সাথে নিজের হাতে রোবটের মতো বানিয়ে নিয়েছে রাফসানকে। শুধু বিদেশেই নয় দেশের তরুণ সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ক্রি*কিট বে*টিং মিশিয়ে দিতে তিনি সর্বদাই তৎপর। সেখানের একমাত্র বাঁধা ইরফাদ এবং তার মতো সৎ পুলিশ অফিসারস। একসময় এই সাম্রাজ্য ফুলেফেঁপে ওঠার আগেই বাধা পড়েছিলো রিদুয়ানুর রহমান নামক বেরিগেটে। তাই এবারের পরিকল্পনা পরিপূর্ণ হওয়ার আগেই ইরফাদ নামক তীক্ষ্ম মস্তিষ্কের গুটিটাকে আগেই সরিয়ে রাখা হয়েছে। সাথে পুরো পুলিশ টিমের লক্ষ্যভ্রস্ট করে আয়েশ করে রাত্রি যাপন করছে মুখোধারী লোক।

দেশে রাতের আধারে আধারে মেতে চলে মৃত‍্যু খেলা,এই জাল বিছিয়ে অশুভশক্তি কেড়ে নিচ্ছে কারো ভিটে মাটি অথবা শেষ সম্বল। এই আয়েশী, নিশ্চিন্তে, নির্বিঘ্নের কাজ সম্পন্ন করতে ইরফাদকে ধরা ছোঁয়ার নাটকের সূত্রপাত শুরু রাফির কিডন‍্যাপ থেকেই। এটাই জানে রাফসান। সেখান থেকেই গল্পের শুরু। অজ্ঞাত মুখোশধারীর ডানহাত হিসেবে চলা রাফসান কখনো কি ভুল করেও জানবে,” এ গল্প শুরু হয়েছে কিডন‍্যাপিং আরও একদিন আগেই।” কি কি শর্তে রাফি এই খেলায় নেমেছে কেউ কি জানে? কখনো জানবে?কিডন‍্যাপিং এর ঠিক একদিন আগেই তার কাছে এই গল্পের স্ক্রিপ্ট চলে গিয়েছিলো,শর্তঃ মোটা অংকের টাকা আর বিলাশবহুল জীবন। সাথে তো সে চেয়ে নিয়েছিলো সিনথিয়াকে।

টাকার যাতাকলে পড়ে একদিন সে ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলেছিলো। একটা নাটকের ক‍্যারেক্টারে অভিনয় করে সব সুদে আসলে ফেরত পাওয়া যায় তাহলে মন্দ কি!! সহসা হো হো করে হাসে রাফি। ওয়াইনের গ্লাসে চুমুক দিয়ে স্বপ্নের রাজ‍্যে হারিয়ে যায়। আর মাত্র একটা ঘন্টা।জমে উঠবে ক‍্যাসিনো আসর আর রাতের আধারে শহর জুড়ে নামবে অশুভ খেলা। ঘুমের অতলে ডুবে যাবে রাফসান। রাফি ঠোঁটে ভাসছে পৈশাচিক হাসির তৃপ্তি, বিড়বিড়িয়ে বলছে কিছু একটা,

রং পর্ব ৪০

— ঘুম ভেঙ্গে যখন নিজেকে বাঁধা অবস্থায় দেখবেন তখনও কি বিয়ে দিবেন না ভাইজান। না দিলে নাই। বিয়ে আমি আর সিনথিয়াই করে নিবো ওকে?

রং পর্ব ৪২