রং পর্ব ৫৬
তন্নী তনু
সারি সারি চেয়ার,সামনের টেবিলগুলোর উপর অসংখ্য স্পিকার,মাইক্রোফোন। সামনে প্রেস,মিডিয়া এক দৃষ্টিতে সকলে তাকিয়ে আছে আইজিপির মুখনিসৃত কথা শোনার অপেক্ষায়। আইজিপি রুস্থান কবির বসেছেন মাঝখানের চেয়ারটিতে, সাথে আছেন আইন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কিছু অংশ, পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন আরোও অনেকেই। একসাথে জড় করা স্পিকারে লাগানো বিভিন্ন টিভির লোগো। আইজিপি রুস্থান কবিরের সামনে ছোট একটি স্ক্রিপট। শুরু হতে যাচ্ছে আজকের “প্রেস ব্রিফিং”। সামনের সকল সাংবাদিক ও আমন্ত্রিত সকল সদশ্যবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে রুস্থান কবির স্ক্রিপ্টের দিকে চোখ রাখেন।
” শুভ অপরাহ্ন! আমন্ত্রিত উপস্থিত এবং অনুপস্থিত সকলেই আমার সালাম নিবেন,” আসসালামু আলাইকুম”।
আমি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আজ সকলের সামনে তুলে ধরতে যাচ্ছি। আমরা শারীরিক অনেক ব্যাধির নাম জানি, অনেক মানষিক রোগেরও নাম জানি। নে!শায় আসক্ত বলতে আমরা সাধারণত যা বুঝি তা হলো মা!দক দ্রব্যের নেশা!এর বাইরে আমরা জানি না!রীর নেশা। তবে নেশার আরেক ভয়ংকর নামের সাথে আমরা সত্যিই অপরিচিত। তা হলো টাকার নে!শা যেটাকে বলা হয় “জুয়া”।অফলাইন এই মরণ ব্যাধিকে অসুস্থ জাতি অনলাইনে আরোও সহজ থেকে সহজতর করতে ব্যস্ত। আগে এই অনলাইন জু!য়া বৈদেশীক কেন্দ্রীক থাকলেও আমাদের দেশের কিছু মুখোশধারী জুগ জুগ ধরে এই অন্ধকার জগতের অ!
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
বৈধ খেলা নিজ কেন্দ্রীক করতে উঠে পড়ে লেগেছেন। কিছু মুখোশধারী, কালো জগতের অধিপতিরা নিজেদের আলিশান বাড়ি, অবৈধ ব্যাংক ব্যালেন্স আর নিজের সন্তানের উজ্জল ভবিষ্যত গড়তে গিয়ে দেশের হাজার সন্তানকে ঠেলে দিচ্ছেন কালো জগতের দিকে। এই সুস্থ মস্তিষ্কধারীদের অসুস্থ পরিকল্পনার ইন্দ্রজালে ফেঁসে তরুণরা হারিয়ে ফেলছে সর্বস্ব। শেষে বেঁছে নিচ্ছে নিজের মৃ!ত্যু অথবা কেড়ে নিচ্ছে অন্যের জীবন। এভাবেই বাড়ছে ক্রাইম। তরুণ সমাজের একাংশ মৃত্যুখেলায় হাবুডুবু খাচ্ছে অপরদিকে এই কালো জগতের অধিপতিরা নিশ্চিন্তে, নির্বিঘ্নে, নিরালায় আয়েশী জীবন যাপন করছে। যুগ যুগ ধরে চলা এমন ই একটি কালো জগতে প্রবেশ করে গোড়া থেকে টেনে বের করা হয়েছে কালো জগতের রাজাকে, ধরা পড়েছে সেই চক্র।
সবচেয়ে দুঃখের সাথে জানানো যাচ্ছে যে এই চক্রের প্রধান চরিত্র আমাদের পুলিশ ডিপার্টমেন্টের একজন ন্যায়,নিষ্ঠ, ভদ্র মুখোশধারী কর্মকর্তা ডিআইজি প্রভাতরঞ্জন সরকার। তার কার্যক্রমে বোঝার উপায় নেই ভদ্রতার আড়ালে যে রূপ তিনি বয়ে বেড়ান তা কতোটা ভয়ংকর।তার সহকারী হিসেবে ছিলেন তপন চৌধুরী। সাথে আরোও ছিলেন রাফসান এবং সকল এপস তৈরীতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন রায়হান রাফি। সাথে ছিলেন আরোও অনেকেই। সকলকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। এই কেসের আদ্যপ্রান্ত যার নখদর্পনে ছিলো তিনি আমাদের ডিপার্টমেন্টের উজ্জল নক্ষত্র এসপি “ইরফাদ সিনহা জয়।” তার তীক্ষ্ম বুদ্ধিমত্তার দাপটে এই অশুভ উপাখ্যানের কালো অধ্যায় টেনে উপড়ে ফেলা সহজতর হয়েছে। সাথে ছিলে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, এনএসআই এর কর্মকর্তা সহ আরোও অনেকেই। যেহেতু এই ঘটনার আদ্যপ্রান্ত এসপির উপর ন্যাস্ত ছিলো। এই মরণ ব্যাধি সম্পর্কে দেশ ও জাতির উদ্দেশ্য দু”লাইন তার মুখ থেকে শুনতে চাচ্ছি।
এর পরেই কাঠের ডেস্কে দাঁড়িয়ে মাইক্রোফোন হাতে ধরে দাঁড়ায় ইরফাদ। যার তীক্ষ্ণ চোখ দুটো এখন কোমল, গলার স্বর ঠান্ডা ঠান্ঠা আবহ ছড়াচ্ছে।
” আসসালামু আলাইকুম!”
শুভ অপরাহ্ন! উপস্থিতি এবং অনুপস্থিত সকলের প্রতি আমার আন্তরিক ভালোবাসা। ইতিমধ্যে স্যারের বক্তব্যে বিষয়টা ক্লিয়ার “জু!য়া” তরুণ সমাজের উপর কি ধরণের প্রভাব ফেলছে। দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে আমার মেসেজ, ” জু!য়া হলো মায়াজাল। এই সমস্ত জালে মানুষ তখন ই ফেসে যায় যখন সে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে সব সমস্যার সমাধান একবার বা!জি জিতলেই। এই ইন্দ্রজালে অন্ধকার জগতে পা দেয় হাজার হাজার তরুণ। সমস্যার সমাধান তো হয় না বরং এই মায়াজালে ফেঁসে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়। সব হারিয়ে নিঃস্ব ব্যাক্তি তখনও ভাবে আর অল্প কিছু অর্থ ব্যবস্থা হলেও শেষ বারের মতো চেষ্টা করতাম।এই বার বা!জি ধরলে নির্ঘাত জিততাম! এই কথাটুকু কে কেন্দ্র করে নিজের ভাই বোনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ চায়। “জু!য়া এমন ই এক মায়াজাল। এই জালে পা দিয়ে মানুষ সবচেয়ে নিকৃষ্ট হয়ে যায়। ঘর, সংসার, মা-বাবা কারো প্রতি কোনো মায়া থাকে না। টাকার জন্য মা কে খু!ন, পাঁচ বছর স্ট্রাগলের পর বিয়ে, টাকার জন্য সেই ভালোবাসার মানুষকে খু!ন, নিজের বোনকে অপহরণ, ধরা পরার ভয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে খু!ন এমন অহরহ ঘটনা আছে এই জু!য়াকে কেন্দ্র করে। এটি একটি ভয়ানক মানষিক ব্যাধি। মা!দকের মতোই এটি ভয়ানক নেশার নাম।
অন্ধকার জগতের দিকে যে চক্রগুলো তরুণ সমাজকে টানে, সকল চক্ররে আইনের মাধ্যমে শাস্তি দেয়া সম্ভব নয়। তবে যে ভুলের সৃষ্টি আপনার শান্তির ঘর থেকে সৃষ্টি হচ্ছে সেদিকে নজর দেয়া প্রয়োজন। রাতের আধারে আপনার বাচ্চা ফোনে কি করে? একটা দামি নতুন ফোন তার কাছে কিভাবে এলো! আপনার বাচ্চা ভালোবেসে আপনাকে সারপ্রাইজ দিচ্ছে- ড্রেস, রিং আরোও অনেক কিছু। এগুলোর টাকা কোথায় থেকে আসছে!! খোঁজ নিজ। জানার চেষ্টা করুন। আপনার সন্তান ভালো একটা প্রতিষ্ঠানে জব করে!! কিন্তু মাস শেষে তার অভাব শেষ হয়না। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজনের কাছে দশ হাজার, পনেরো হাজার ধার নিচ্ছে। একজন মানুষের পার মান্থ বেইসিক নিড কেমন আর তার টাকা ধার নেয়ার পরিমাণ কত হিসাব করুণ। আপনার সন্তান ( wrong রং) কে (rong-রঙ) ভেবে মায়াজালে আটকে জীবন ধ্বংস করছে কি না খেয়াল রাখুন। যদি এই পথে যেয়েই থাকে তাকে ধরে নিবেন সে ধ্বংস না হওয়া অবধি থামবে না। তাই এইসব সিনট্রোম দেখা দিলে অবশ্যেই ডক্টরের শরনাপন্ন হবেন। মনে রাখবেন জু!য়া আর পাঁচটা মা!দ!ক নেশার মতো মরণ ব্যাধি।
আইনব্যবস্থা উন্নত করেও আমরা অনেক ক্রাইমকে গোড়া থেকে উপড়ে ফেলতে পারবো না, আজ একটা এপস বন্ধ হয়েছে কাল হাজার টা খুলবে। চোখের আড়ালে চলবে অন্ধকারাচ্ছন্ন জগতের খেলা। তাই নিজের ভালো নিজেকেই বুঝতে হবে। ( wrong- রং ) আর (rong- রঙ) দুটো শব্দের
প্রোনাউনসিয়েশন সেইম হলেও যখন অতিদ্রুত জীবনকে রঙিন করতে ভুল পথে পা দিবেন ধ্বংস আপনার জন্য অনিবার্য। আত্মসচেতন হবেন। মনে রাখবেন আপনারা নিজেই নিজের শক্তি। আপনি আপনার জায়গায় দাঁড়িয়ে নিরব যুদ্ধ করুন। নিজ নিজ জায়গা থেকে যখন কেউ এই এপস খুলবেননা কি হবে ঐ সকল অন্ধকার জগতের অধাপতির!!! অন্ধকার জগতের অশুভ উপাখ্যান ঝুরঝুরে বালির মতো ঝোড়ে পড়বে।
টিভিতে চলছে লাইভ নিউজ। এমন ই এক প্রেস ব্রিফিং এ পরিচিত মুখ দেখে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়ায় রিমা। চোখের কোণে চিক চিক করে ওঠে হৃদয় ভাঙা নোনা জল। সেদিন এই তীক্ষ্ম মস্তিষ্কধারী এসপি তার সামনে তার বিশ্বাস, ভরসা, ভালোবাসার মানুষটির মুখোশ আলগোছে সরিয়ে তাকে দেখিয়ে দিয়েছিলো। আজ সেই বিষয়ে আরেকবার শুনতে হলো। বুকটা হুহু করছে। খোলা জানালায় অদূরে তাকিয়ে থাকে রিমা। বুকের ভেতর শূন্যতায় ধূ ধূ করে। চোখের উষ্ণ জল গড়িয়ে পড়ে অবলিলায়। তিক্ত ব্যাথায় গলাটা ধরে আসে। আনমনে শূন্য তাকিয়ে অদৃশ্য ভালোবাসা নামক অস্তিত্বকে অজান্তেই বলে, ” জীবনটা সুন্দর হতে পারতো! এই যে রোজ ধূ ধূ করা শূন্যতায় কাঁদি!
এই যে অপূর্ণতায় বাঁচি, এই যে দীর্ঘশ্বাসের সাথে প্রতিনিয়ত হাহাকার মিলিয়ে যায় বাতাসে, হৃদয়ের তাজা তক্ত চোখ বেয়ে টুপ টুপ করে বের হয়। এসব সুখ হয়ে ধরা দিতো যদি তুমি অন্ধকার খেলায় মেতে না উঠতে। একটা চড়ুঁই সংসার হতে পারতো।ভোরে উঠে তোমার জন্য নাস্তা বানাতাম! সারাদিন তোমার অপেক্ষায় কাটিয়ে দিতাম রাতে তুমি ঠিক ফিরতে। কিন্তু এখন সব কেবল ধূ ধূ অন্ধকার, শূন্যতা, অপূর্ণতা আর হাহাকার। তুমি চাইলে আমার সন্তান তার বাবা পেতো! ছোট্ট ছোট্ট হাত দিয়ে তোমাকে স্পর্শ করতো, তোমার আঙুল ধরতো, তুমি সব কিছু থেকে বঞ্চিত করলে। তোমার মরণ খেলায় আমার ভালোবাসা, আমার জীবনের সমস্ত শান্তি, আমার সন্তানের পরিচয় ডুবিয়ে দিলে,ভাসিয়ে দিলে শুভ্র, তুমি সব ভাসিয়ে দিলে।
শিশির নিজের ফোন থেকে প্রেস ব্রিফিং এর ভিডিও নিজের মায়ের ফোনে পাঠায়। সাথে আরেকটা ছোট ভিডিও। ঐপাশ থেকে কুটুস ফোনটা মার্জিয়া বেগমের সামনে ধরে। প্রেস ব্রিফিং সহ তপন চৌধুরীর শর্ট ভিডিও দেখে চোখ কপালে উঠে যায় মার্জিয়া বেগমের। তড়িৎ গতিতে শিশিরকে কল দেন মার্জিয়া বেগম,
— কি এইসব!!
— দেখতেই তো পারছো!!
— মানে কি?
— ভেঙে ভেঙে বুঝাতে হবে? বুঝতে পারোনা।
— ভনিতা করিস না।
— তোমার ভাই!! দেশের বাইরে কি কি করে নিজ চোখে দেখো। এই ভাইয়ের জন্য ছোট ঐ মেয়েটাকে কি কি শাস্তি তুমি দিয়েছো। কতো কষ্ট দিয়েছো। ভেবেছো তোমার ভাই ধোঁয়া তুলসি পাতা। দেখো কি কি করে বসে আছে। চাইলে যে রাতে বেড়িয়ে এসেছিলাম সেদিন তোমাকে বলতে পারতাম। প্রথমত অফিসিয়াল পারমিশন নেই দ্বিতীয়ত তুমি কয়েক লাইন বেশী বোঝ তোমাকে বোঝানোর সাধ্য আমার নেই!
— তুই ঠান্ডা মাথায় আমাকে অপমান করছিস!!
আর হতেও পারে আমার ভাইকে ফাঁসানো হয়েছে। আচ্ছা তুই তো ফাঁসাসনি?
— উইমেন!!
তোমাদের কি বলবো। তোমাকে বোঝানোর সাধ্য আমার নেই মা। তবে যদি কখনো সত্যিই বুঝতে পারো তিথির সাথে কি কি করেছো তুমি নিজেও কূল পাবে না। যে কষ্ট তুমি ওকে বিনা কারণে দিয়েছো তুমি যখন নিজের ভুল বুঝবে তখন নিজে থেকে ওকে খুঁজবে!!
— তুই কি আমার অন্যায়ের কারণে ওকে বিয়ে করেছিস!!
— না মা!! অনেক আগে থেকেই ওর প্রতি দূর্বলতা ছিলো। তবে বলতে পারিনি। নিজেকে স্টেইবল করে ওকে বলতে চেয়েছি। আমি করেছিও তাই। ভালোবেসেই বিয়ে করেছি।
— ওর বাবা মা ও ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলো। জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে।
— হয়নি মা! তোমার ভাই আমার ফুপির জীবন ধ্বংস করেছে। কোনো একদিন আমি প্রুফ করেই ছাড়বো। আপাদত তোমার ভাইয়ের জন্য কাঁদো। তার কিন্তু মুক্তি নেই।
অপরাধির লিস্টে রাফসানের নাম। নিজের ফোনের স্ক্রিনে কোমল চোখে তাকায় ইভা। কোলের মধ্য টুম্পা বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। নিজের ফোনে একই নিউজ বার বার দেখছে ইভা। হাতের আঙ্গুলে টেনে টেনে বার বার একই জায়গা দেখছে। অপরাধির লিস্টে রাফসান! রাফসান! রাফসান! রাফসান!!
হৃদযন্ত্রের কাঁপন বাড়ছে, চোখ বেয়ে পড়ছে ফোটায় ফোটায় নোনা জল,টুপ! টুপ!টুপ!।ফোনের স্ক্রিন জুড়ে বিন্দু বিন্দু জল। গলায় তিক্ততা, রুদ্ধ হয়ে আসা কন্ঠনালী। হৃদয় থেকে একটা কথা হাহাকার হয়ে বেড়িয়ে আসে,” তোমাকে এক পলক দেখার তৃষ্ণায় হৃদয় আমার তীব্র গরমে খড়ার মতো ফেটে চৌচির হয়ে গেছে কতোবার, তুমি কখনো বৃষ্টি হয়ে নামোনি। আমি কখনো তীব্র খড়ায় পুড়েছি, কখনো শৈত্যপ্রবাহে জমে গেছি। তুমি না হলে বৃষ্টি, না হলে একটু উষ্ণ কাপড়। আমি শুধু তোমার অভাবে দীর্ঘ একটা সময় নিজেকে শূন্য করে রাখলাম, তৃষ্ণার্ত রয়ে গেলাম।
হাহাকার নিয়ে তীব্র শ্বাস ফেলতেই সিনথিয়া ঘরে প্রবেশ করে। অকস্মাৎ ফোন সরায় ইভা। কোমল হাতে চোখের জল মুছে নেয়। সিনথিয়া সবটা দেখেও চোখ সরিয়ে নেয়। ধীর গলায় বলে,
–ড্রয়িং রুমে একজন এসেছেন। হাসপাতালেও এসেছিলেন উনি। তোমাকে ডেকে দিতে বলেছে। টুম্পাকে আমার কোলে দাও।
— কে সাজিদ ভাই?
— হুম!!
— এখন কেনো?
— আমি জানিনা আপু! যাও তুমি।
সুসজ্জিত ড্রয়িং রুম, লেদারের সোফায় বসে আছে সাজিদ। মাথায় কাপড় টেনে সাজিদের সামনে দাঁড়িয়ে সালাম দেয় ইভা। অতঃপর,
— টুম্পা কোথায় ইভা?
–ঘুমাচ্ছে!!
— একটু আনবে ওকে!! প্লিজ। একটু কোলে নিতে দাও।
–ঘুমাচ্ছে তো।
–ইভা কেনো আমার থেকে দূরত্ব বাড়াচ্ছো?? ওর সাথে কথা বলতে চাওয়া কি আমার অপরাধ? বলো!! বাচ্চাটাকে কেনো দূরে রাখছো আমার থেকে?
— কিছু কিছু সময় আসে তখন পৃথিবীর কিছুই ভালো লাগে না। সব অসহ্য লাগে। আমি ইন ডিসিশনে ভুগছি। সো আই নিড টাইম
— এর মধ্যে টুম্পাকে কেনো টানছো? ওকে আমার থেকে দূরে সরাচ্ছো কেনো?? আমাকে কেনো কষ্ট দিচ্ছো তুমি??
কথার মাঝেই ইভার ফোনটা বেজে ওঠে। ফোনের স্ক্রিনে ভেসেওঠে,” কলিং ভাইয়া।”
ফোন রিসিভ করে ইভা,
— ভাইয়া বলো!
— টুম্পা কোথায়?
— ঘুমায়।
— উঠলে রেডি করাবে। নিজেও রেডি হবে। দ্যান কল দিবে আমাকে। আমি নিয়ে আসবো।
— কোথায় ভাইয়া?
— টুম্পাকে মিট করাবো।
রং পর্ব ৫৫
শেষের কথাটায় আকস্মিক ধুক করে ওঠে ইভার হৃদয়। রাফসানের সাথে এতোগুলো বছর পর দেখা হবে!!!শ্বাস বন্ধ হয় ন্যানো সেকেন্ড। তারপর হৃদযন্ত্র দূর্বার গতিতে ছুটতে শুরু করে। একবার সাজিদের চোখের দিকে তাকায় ইভা। চরম দোটানায় ভুগতে থাকা ইভার হৃদয়ে বলে ওঠে,” কি হবে এরপর!!!”