রাজবধূ পর্ব ৬২

রাজবধূ পর্ব ৬২
রেহানা পুতুল

বলেই আর এক মুহূর্ত দেরী করল না জুবায়ের। আকাশ,বাতাসকে সাক্ষী রেখে শিখার পেটের মাঝ বরাবর তিন তিনবার ছুরি চালিয়ে দিলো। হাতের বাঁধন খুলে দিলো। মৃত্যুসম যন্ত্রণায় পেট চেপে ধরে শিখা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। জুবায়ের তার মৃত্যু নিশ্চিত করে দৌড়ে পালিয়ে গেলো।
সামনের আরেকটি বাগান পার হতেই পা জড়িয়ে এলো তার। অমনি একটা গাছের গুঁড়ির সাথে হোঁচট খেলো সে। মাথা তুলে দাঁড়াতেই দেখতে পেলো রাজ দাঁড়িয়ে। রাজের চোখে দাউদাউ করে একশো দোজখের আগুন জ্বলছে। রাজ নিজের শার্টের ভিতর হতে একটি ছুরি বের করলো। বরফ গলায় বলল,
“চা* কুটা চিনতে পেরেছিস? বড় ভাবির হাত কেটে ফেলেছি এই চা* কু দিয়ে। এখন তোকে মেরে ফেলব এটা দিয়ে।”
জুবায়ের শ্লেষযুক্ত কণ্ঠে বলল,

“আমিতো সেটাই চাই দোস্ত।”
নিমিষেই জুবায়েরের পেটে ছুরিটি চালিয়ে দিলো রাজ। এবং তার পেট থেকে ছুরিটি টেনে বের করতে করতে বলল,
“তোকে প্রথম দিনেই বলছি, আবেগের বেগ কমিয়ে ফেল। নয়তো মরবি শালা।”
“মারলি তো এখন তুই দোস্ত।”
অসহনীয় যন্ত্রণায় নাক মুখ বিকৃত করে বলল জুবায়ের।
“কে মারলো সেটা বড় কথা নয়। তুই মরেছিস এটাই কথা। সহ্য হয়না নাহ? একটা সময় হয়তো শিখাকে তুই পেয়েই যেতি। এখন হলো টা কি? যেই পৃথিবীতে আমার শিখা নেই। সেই পৃথিবীতে তার খু* নী থাকতে পারে না।”
“তাহলে আমার খু* নীও বাঁচতে পারবে না এই পৃথিবীতে।”
বলেই জুবায়েরও নিজের হাতের ছুরিটি রাজের পেটে প্রবেশ করিয়ে দিলো। রাজ উম্মাদের মতো উচ্চগলায় সারা বাগান কাঁপিয়ে হাসতে লাগলো। বলল,

“শিখা নাই,আমিও নাই। এটাই ত চেয়েছি আমি। একই সময়ে দু’জন বিদায় নিব এই ধরাধাম হতে। একই সময়ে আমাদের দেখা হবে ওইপারে।”
জুবায়ের হেলতে হেলতে মাটিতে পড়ে গেলো কাত হয়ে। রাজও টলতে টলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো উপুড় হয়ে।
জুবায়ের ধড়ফড়িয়ে ঘুম থেকে উঠে গেলো। তার রুহ বেরিয়ে আসার উপক্রম! সে মৃদু আর্তনাদ করে ফোঁপানো অস্পষ্ট স্বরে বলে উঠলো,
নায়ায়া…মা…রাজ…শিখা…হে খোদা রহম করুন।
শেষ রাত্রিতে ছেলের অমন ফোঁপানো গলা শুনতে পেয়ে আমেনার গভীর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। তিনি ধড়মড়িয়ে উঠে বসলেন। বিদুৎ গতিতে তার হার্টবিট উঠানামা করছে। তিনি অবিন্যস্ত শাড়ির আঁচল ঠিক করতে করতে ছেলের রুমে প্রবেশ করলেন। লাইট জ্বালিয়ে দিলেন। দেখলেন জুবায়ের ছোট বাচ্চার মতো বিছানা হাতড়াচ্ছে কিছু খোঁজার মতো করে। আমেনা ছেলেকে ঝাপটে ধরলেন।
বিচলিত চোখে মমতার সুরে বললেন,

আরও গল্প পড়তে আমাদের গ্রুপে জয়েন করুন

“কি হইছে বাপ? কি হইছে? নানীরে খোয়াব দেখছোত? এমন ডরাইলি ক্যান বাপ? মাতো তোরে লগের রুমেই আছি।”
জুবায়ের কোন কথাই বলতে পারছে না। থরথর করে কাঁপছে মৃত্যকূপ হতে বেঁচে ফিরে আসার মতো করে। তার সারামুখ ফ্যাক্যাসে বর্ণ ধারণ করেছে। আমেনা বিবি ছেলের মাথায় হাত বুলাতে লাগলেন। সুরা ফাতিহা পড়ে ছেলের মুখের চারপাশে তিনবার ফুঁ দিয়ে দিলেন।
বললেন,

“ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে এই দোয়া পড়তে হয়। মায়ের লগে লগে কইতে থাক,
‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন শাররি হাজিহির রুইয়া।’ (অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে এ ভয়ংকর স্বপ্নের অনিষ্ট থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করতাছি।)”
জুবায়ের অস্ফুট স্বরে মায়ের মুখে মুখে স্বপ্নের দোয়াটি পড়লো ছোট বাচ্চার মতো করে। তার মা বলল,
“উইঠা আয় মায়ের লগে। এই রুমে থাকলে আবার ডরাইবি।”
জুবায়ের মায়ের অনুগত ও বাধ্যগত হয়ে উঠে যায়। আমেনা ছেলেকে ধরিয়ে নিজের পালংকে শুইয়ে দিলেন। তারপর ছেলের পিঠে হাত রেখে স্নেহময়ী কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলেন,
“নানীরে নিয়া কি খোয়াব দেখছোত? না তোর বাপেরে দেখলি? কওতো?”
জুবায়ের মায়ের গলা জড়িয়ে ধরলো। বাষ্পরুদ্ধ গলায় বলল,
“মা আমি খু* ন করেছি দু’জনকে। যেই মেয়েটাকে ভালোবাসতাম, তাকে ও তার জামাইকে মেরে ফেলেছি। আবার তার জামাই আমাকে মেরে ফেলেছে।”

আমেনার কলিজা ধক করে উঠে। তিনি ছেলের মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
“আল্লাহ গো! কি মর্মান্তিক অলুক্ষনে খোয়াব। তুই দিনে মনে হয় সেই মাইয়ারে নিয়া ভাবছত। এর লাইগাই রাইতে খোয়াব দেখছত। বিয়াতি মাইয়া নিয়া এইসব ভাবা ঠিক নয়।”
“হ্যাঁ মা। আমি আজ দিনে বারবার তাকে মেরে ফেলার কথা ভেবেছি। তার একটা বড় কারণও আছে মা। নানী মরে গিয়ে তুমি একলা হয়ে গিয়েছো। আর সেইজন্য আমি মাঝ সমুদ্রে পড়ে গিয়েছি। আমি যে বড় অসহায় মা। বড় অসহায়!”
মনে মনে বলল জুবায়ের।

অনবরত মায়ের কোমল হাতের যাদুমাখা ছোঁয়ার জুবায়ের অশান্ত হৃদয় কিছুটা শান্ত হলো। তবুও ভুলতে পারছে না কিছুক্ষণ আগে দেখা নিষ্ঠুরতম স্বপ্নের সেই ঘটনাবলী। ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব থেমে গেলেও যেমন প্রকৃতি ও চারপাশ জুড়ে পড়ে রয় তার ধ্বংসলীলার অজস্র চিহ্ন! তদরূপ ঘুম ভেঙ্গে বাস্তবে ফিরে এলেও জুবায়েরের চোখের সামনে সব জীবন্ত হয়ে ধরা দিচ্ছে প্রতিটি মুহূর্তে। আস্তে আস্তে তার দু’চোখ বুঁজে আসলো নিবু নিবু প্রদীপের ন্যায়। আমেনা ছেলের শিয়রের কাছ থেকে উঠে গেলেন ঘুম নিশ্চিত করে। অযু করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করলেন। মোনাজাতে মহান রবের কাছে ফরিয়াদ করলেন একমাত্র ছেলের সুস্থতা ও দীর্ঘায়ুর জন্য।

সকালে ঘুম থেকে উঠে জুবায়ের শিখাকে একটু দেখার জন্য অনেক আঁকুপাঁকু করলো। কিন্তু দেখতে পারল না। পরে বিকেলে দোকান থেকে বাইকে করে শিখার কলেজের সামনে চলে গেলো। রাস্তার উপরে অবস্থিত কলেজের মূল ফটক থেকে খানিক দূরে দেয়াল ঘেঁষে বাইক থামালো। হেলমেট দিয়ে মুখ ঢেকে বসে রইলো বাইকের উপর। শিখা মাঠ পেরিয়ে গেটে আসলো। রিকশা দরদাম করে একটি রিকশায় উঠে চলে গেলো। জুবায়ের হেলমেটের ভিতর দিয়ে পাথর চোখে শিখাকে দেখলো। মন ভরল না তার। খুব সাধ জাগলো শিখাকে তার বাইকে চড়িয়ে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার। কিন্তু মনে সাধ জাগলেও বিবেকে বাধা দিলো। শিখাকে নিয়ে এমন অজস্র টুকরো সাধের ব্যর্থতার গ্লানি জুবায়েরের হৃদয়টা ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে অহর্নিশ!

তারপর হতে জুবায়ের শিখার দৃষ্টির আড়াল হয়ে থাকে যথাসম্ভব! শিখাও নিজের পড়াশোনা নিয়ে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। তার পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটবে বলে রাজ বাড়িতে আসছে না। শিখাই তাকে অনুরোধ করে বলেছে যেন সে না বলা ছাড়া বাড়িতে আর না আসে। তাছাড়া রাজ নিজেই আছে বাড়তি ঝামেলায়। একটা মেয়ে তাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে বিয়ে করার জন্য ফোর্স করছে। মাঝে মাঝে ব্ল্যাকমেল করার বৃথা চেষ্টা চালাচ্ছে। আলটিমেটাম দিয়ে কথা বলছে।
সেদিন সরকারি ছুটির জন্য কলেজ বন্ধ ছিলো। শিখা সকালে নিরিবিলি পরিবেশে স্বশুরের রুমে গেলো। মার্জিতভাবে বেতের চেয়ারখানি টেনে বসলো।
“ছোড় বউ আসো। বসো। মনে হয় কিছু কইবা?”
শিখা আলুলায়িত কণ্ঠে বলল,

“বাবা রা*গ না হলে একটা বিষয় জানার ছিলো আপনার থেকে।”
” আদুরীর মতন তুমিও আমার আরেকটা মেয়ে। রা* গ করুম ক্যান? কও?”
“বাবা বাড়ির বাইরে উত্তর পাশে ধানের জমিটাতো আমাদের নাহ?”
তালুকদার নড়ে চড়ে বসলেন। বললেন,
“হ। কি হইছে?”
“ওটা কার নামে বাবা?”
“ওটা কিনছে খায়রুল। তোমার চাচাশ্বশুর। কিন্তু ইজ্জত কইরা দলিল করছে আমার নামে। কি হইছে বৌমা?”
“বাবা আমি যদি বলি, আপনি তাদেরকে জমিটা দলিল করে দিয়ে দেন। দিবেন?”
“বুঝলাম না। তারা বেচলো। আমার ভাই কিনলো। দিমু ক্যান?”
“তারা বেচেনাই। আজগর দাদার থেকে জোর করে টিপসই দিয়ে নামমাত্র কিছু টাকা দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন উনি।”
“এইসবের প্রমাণ কি?”
অবাক কণ্ঠে বলল তালুকদার।

“বাবা,আমি সব প্রমাণ দিব। আমি চাইলে আইনের আশ্রয় নিতে পারি উনাদের হয়ে। কিন্তু ভাবলাম এমনিতে মিটমাট করতে পারলে অযথা সেদিকে যাবো কেন?”
“ঠিক আছে। যদি সত্যিই এমন কিছু হইয়া থাকে,তাহলে ফেরত দিয়া দিমু।”
শিখার কচি মুখখানা খুশীতে ঝলমল করে উঠলো বিশ্বজয়ের আনন্দের মতো। কৃতজ্ঞতার চোখে স্বশুরের রুম হতে প্রস্থান নিলো শিখা।
বাদশা ও ফুল তাদের কাপড়চোপড় নিয়ে তালুকদার বাড়িতে চলে এলো। কেউ তাদের কিছু বলল না। কারণ শিখা তালুকদারের মাধ্যমে সবার কাছে তাদের স্বামী স্ত্রীর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
শীতের প্রকোপ বাড়বে। বাগানে যাওয়া যাবে না। তাই এখন হালকা শীত থাকতেই কবরের বিষয়টা স্পষ্ট হতে হবে। এমন ভাবনা থেকেই ব্যস্ততার ফাঁকেও এক বিকেলে শিখা বাদশাকে ডেকে নিলো নিরালায়। কেউ দেখলেও এখন আর সমস্যা নেই। তালুকদার পরিবারে শিখার কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে।
শিখা বাদশাকে আস্তে গলায় বলল,

“বাদশা ভাই আমি আপনাকে বিশ্বাস করি। সুতরাং কাউকে বলা যাবে না। কাজ হবে না মনে করে, আপনি ছাড়া কাউকেই বলিনি। আচ্ছা বাদশা ভাই,আপনিতো এই বাড়িতে আছেন বহু বছর ধরে। এবং বাড়ির যত আনাচ-কানাচ,অলি-গলি, সব কিন্তু আপনি দেখাশোনা করতেন বরকতকে সাথে নিয়ে। তাই আপনার কাছে কোন সদুত্তর পাবো বলে আশা রাখি। এই বাড়ির কবরস্থানের বাইরে কি কোন কবর আছে? আপনি জানেন?”
“মনে করতে পারতেছি না ভাবি। বাগান,জংলা,ডোবা, পুকুর,বিল,কতগুলাই ত আছে এই বাড়িতে। কোনদিকে যদি দেখাইতে পারতেন। তাইলে সুবিধা হইতো।”
“আচ্ছা দাঁড়ান তাহলে। আমার কার্ডিগানটা গায়ে দিয়ে আসি। নইলে সেদিকে হিমবাতাসে দাঁড়ানোই মুশকিল হয়ে যাবে।”

বাদশা দাঁড়িয়ে থাকে। শিখা চঞ্চল পায়ে ঘরে ঢোকে। নিজের রুমে গিয়ে আলনায় ঝুলানো কার্ডিগান সোয়েটারটা কামিজের উপর দিয়ে পরে নেয়। ওড়না পেঁচিয়ে মাথা, কান ঢেকে নেয়। বের হয়ে হাঁটতে থাকে। বাদশাও শিখার পাশাপাশি হাঁটতে থাকে। সুপারি বাগান,নারকেল বাগান,অন্যান্য গাছগাছালীর বাগানসহ মোট তিনটা বড় বাগান অতিক্রম করলো তারা।
তারপর একদম বাড়ির সীমানার শেষ প্রান্তের একটা আগাছাজাতীয় বাগানে প্রবেশ করলো শিখা। বিচক্ষণ বাদশা এতক্ষণে বুঝে গিয়েছে যা বোঝার। সে থমকে দাঁড়ালো। বলল,
“ভাবি আপনার ঠান্ডা লাগবো। আর যাওয়ার কাজ নাই।”
শিখা দাঁড়ালো স্থির ভঙ্গিতে। হাত লম্বা করে সামনের দিকে দেখিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
” কবে থেকে এই কবর? মূল কবরস্থান থেকে এই কবর আলাদা কেন? কে শায়িত আছেন এই কবরের ভিতর? এই বাড়ির কে কে জানে এই কবরের কথা? মনে করতে পারছেন? নাকি এই বয়সেই স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছে আপনার?”
শিখা ইচ্ছে করেই কুঠারাঘাত করে কথাগুলো বলল বাদশাকে। যেন বাদশা বলতে বাধ্য হয়।
বাদশার মুখ মেঘের মতো ঘনকালো হয়ে গেলো। সে শুকনো ঢোক গিললো কয়েকবার। কবরটার দিকে পলকহীন চোখে চেয়ে রইলো।
“বাদশা ভাই কি ভাবছেন অত? নাকি দুঃসহনীয় কোন সময়ের করাতলে ডুবে গেলেন? আমার প্রতিটি প্রস্নের জবাব দেন বলছি। আপনার কোন ক্ষতি হবে না।”

“এই কবর আলাদা, কারণ এই কবরে এই বংশের কেউ শায়িত নাই। এই কবরের বয়স প্রায় চাইরবছর। এই কবরে কোন মৃত মানুষরে কবর দেওয়া হয়নাই। জিন্দা কথা বলা একজন পুরুষ মানুষরে রাইতের আঁধারে কবর দেওয়া হইছে। যারা দিছে তারা ছাড়া এই বাড়ির কেউই জানেনা এই কবরের গোপন ইতিহাস। আর আমি হইলাম সেই কাল রাইতের একমাত্র পাহারাদার ও রাজ সাক্ষী। এই কবরে শায়িত মানুষটার নাম আজগর আলী।”
শিখার মাথা ঘোরাচ্ছে। কষ্টে, ঘৃণায় বুকটা পুড়ে যাচ্ছে তার। এই কোন বর্বরদের কাছে সে আসলো। আইয়ামে জাহেলিয়া যুগের কাহিনীর পুনরাবৃত্তি নব্বই শতকে এসেও হচ্ছে?
“এই নৃশংস কাজ নিশ্চয়ই ছোট তালুকদারের? তাইনা বাদশা ভাই?”
“নাহ ভাবি। এটার সাথে উনি জড়িত নাই। এই বাড়ির অন্য কেউ জড়িত।”
শিখা নির্বাক! বিস্ময়ে বিমূঢ়! নির্লিপ্ত সুরে জানতে চাইলো,

“কী? অন্যকেউ? তারমানে এই পরিবারে উনার চেয়েও নিকৃষ্ট মানুষ আছে?”
“আছে ভাবি। আছে। আমি যাই। আপনিও চইলা যান। চারদিক অন্ধকার হইয়া যাইতাছে। পরে আপনারে খুঁজবো। না পাইলে বদনাম রটাইবো।”
শিখা নিজের সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়। দাঁতে দাঁত পিষে উচ্চারণ করে,

রাজবধূ পর্ব ৬১

” ওই খোদার নামে কসম খেয়ে বলছি এই পরিবারের যেই হোক না কেন,তার শাস্তি অবধারিত। নিরপরাধ জীবন্ত মানুষকে পুঁতে ফেলার গুরুতর অপরাধের জন্য, নির্মম শাস্তি আমি তাদের নিজ দায়িত্বে দিবো। নিজ দায়িত্বে!”

রাজবধূ পর্ব ৬৩