তোর প্রেমে উন্মাদ আমি পর্ব ১০
Raiha Zubair Ripti
অফ হোয়াইট বেনারসি তে নিজেকে একবার দেখে নিলো আয়নায় আরু। কি অদ্ভুত রকমের সুন্দর লাগছে তাকে। অথচ এই সুন্দর তার মনে লাগছে না। মনের বিরুদ্ধে কাউকে বিয়ে করতে যাচ্ছে সে। তারপর? তারপর কি হবে? অনিশ্চিত হয়ে উঠছে জীবন টা। কনা আসলো মেয়ের রুমে। আরেকবার চোখ ভরে দেখলো মেয়েটাকে। কপালে চুম্বন একে বিরবির করে মাশা-আল্লাহ বলে নিচে নিয়ে গেলো। কাজি সাহেব এসেছেন। আরুর সামনে বসে আরুকে কবুল বলার কথা বললেন। আরুর সামনেই সাদা ড্রেস পড়ে দাঁড়িয়ে থাকা নীরার বুক ফেটে আসলো। অথচ মুখে তার মিথ্যে হাসির রেখা। না পারছে মন খুলে কাঁদতে আর না পারছে এখান থেকে সরে যেতে। আরু এখনও কবুল বলছে না দেখে আরাধ্যর রাগ হচ্ছে। এতো সময় কেনো নিচ্ছে মেয়েটা। চুপিসারে মা কে ডাকলো। সন্ধ্যা এলো ছেলের কাছে।
-“ কোনো সমস্যা?
-“ একটু আরুর পাশে গিয়ে বসো। ভয় পাচ্ছে হয় তো।
সন্ধ্যা আরুর পাশে গিয়ে বসলো। আরুর হাত জোড়া মুঠোয় নিয়ে চোখে ভরসা দিলো। আরু কিছুক্ষণ চুপ থেকে কবুল বলে উঠলো। এবার আরাধ্যর পালা। আরাধ্য কে কবুল বলতে বলায় সে ঝটপট কবুল বলে দেয়। নীরার চোখ বেয়ে গড়ালো নোনা জল। আহারে জীবন..প্রথম ভালোবাসাটা তার অপূর্ণতাতেই থেকে গেলো। যে ভাগ্যে নেই তার প্রতি কেনো মায়া,ভালোবাসা জন্মায়? চারিদিকে খুশির আমেজ অথচ নীরা থমকে আছে। বুকের ভেতর তোলপাড় হচ্ছে। এই অসহ্য যন্ত্রণা থেকে কি মুক্তি পাওয়ার কোনো রাস্তা নেই? লোকটাকে দেখলেই এখন বুক চিঁড়ে না পাওয়ার দীর্ঘ শ্বাস বেরিয়ে আসবে৷ বক্ষপট অমানবিক য’ন্ত্রণায় জ’র্জরিত হবে। কত রাত বোধহয় ঘুমই আসবে না৷ পড়াশোনার প্রতি অনিহা জন্মাবে। খেতে বসলে চোখ তার নোনাজলে ভিজে আসবে। জীবন তুমি সুন্দর হয়ে আসলে না নীরার জীবনে। এক অনিশ্চিত গতিবিধি নিয়ে ধরা দিলে তার কাছে।
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আরাধ্য আর আরু কে এক সাথে বসানো হলো। আরাধ্য তাকালো আরুর দিকে। মেয়েটা এখন তার বউ৷ ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু লোকসমাগম দেখে পিছিয়ে গেলো। আরুর কানে ফিসফিস করে বলল-
-“ এতো দেরি করলি কেনো কবুল বলতে হু?
আরু কোনো উত্তর দিলো না। দূরে চেয়ারে বসে আছে রাত আর আষাঢ়। দৃষ্টি তাদের এই দুটো ছেলে মেয়ের দিকেই। দেখতে দেখতে তাদের ছেলে মেয়ে বড় হলো এখন বিয়েটাও হয়ে গেলো। রাত আষাঢ়ের হাতের উপর হাত রাখলো। আষাঢ় তাকালো।
-“ কিছু বলবি?
-“ হু।
-“ বল।
-“ জানো তো প্রথম বাচ্চা হবার সময় আমি কত খুশি ছিলাম। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ খুশি ছিলো আরু কে প্রথম কোলে নেওয়ার সময়। মেয়েটাকে সব খুশি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কষ্ট পেতো দিও না কোনো দিন মেয়েটাকে।
আষাঢ় মুচকি হাসলো। ভাইয়ের কাঁধে হাত রেখে বলল-
-“ আমি আছি সন্ধ্যা আছে কোনো অযত্ন আরুর হবে না।
-“ জানি তবুও বাবা তো। ভয় হয়।
-“ ভয় কে জয় করতে শেখ। সব ভালো হবে।
বিদায় বেলায় আরু কেঁদে দিলো মা কে জড়িয়ে। আরাধ্য চেয়ে দেখলো সেটা। আয়ুশ কি বুঝলো জানা নেই সেও বোন কে জড়িয়ে কাঁদলো।
-“ তোকে মিস করবো আপু। তোর রুম এখন আমার। স্কুলে যাওয়ার পথে মাঝেমধ্যে দেখা করতে যাব। দেখে আসবো তোকে চিন্তা করিস না।
না চাইতেও হেঁসে ফেললো আরু আয়ুশের কথা শুনে।
-“ ঠিক মতো পড়াশোনা করবি।
-“ হু। টেন মিনিটস স্কুলে ভর্তি হয়েছি না। এখন টেন মিনিটে সব শিখে ফেলবো।
সন্ধ্যা আরু কে গাড়িতে বসিয়ে দিলো। পাশে আরাধ্যও বসলো। আরশি ছিলো ঠিক আয়ুশের পাশেই দাঁড়িয়ে। সন্ধ্যার পেছন আরশি যেতে নিলে আয়ুশ বলে উঠে-
-“ এই আরশি শোনো।
আরশি দাঁড়িয়ে যায়।
-“ তুমি কিন্তু আপুর মতো কাঁদবে না। তুমি হাসতে হাসতে আমার বাড়ি আসবে ওক্কে?
আরশি কিছু বললো না। চলে আসলো।
গাড়ি চলছে তার নিজ গতিতে। পেছনের গাড়িতে আরাধ্য আরু আর ড্রাইভার। নাক টানার আওয়াজ আসছে একটু পরপর। আরাধ্য পকেট থেকে ট্যিসুর প্যাকেট বের করে আরুর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল-
-“ নে ট্যিসু দিয়ে নাক মোছ। এতো কাঁদছিস কেনো? তোকে কি আয়না ঘরে নিয়ে যাচ্ছি আমরা?
আরু থাবা দিয়ে ট্যিসু নিয়ে নাক চোখ মুছে বলল-
-“ আয়না ঘরের থেকে কম কিছুও না।
-“ কিহ্ তুই আমার বাড়ি কে আয়না ঘরের থেকেও নিকৃষ্ট বললি!
-” হ্যাঁ বললাম।
-“ কাল পরশু কিন্তু তোর সারজিসের বাসর হয়ে গেছে।
-“ তো?
-“ আজ কিন্তু তোর বাসর।
আরু রেগে তাকালো ত্বরিতে।
-“ কি মিন করতে চাইছেন?
-“ আরে হাইপার হচ্ছিস কেনো? আগে বাড়ি পৌঁছাই। তোকে আমার রুমে নেওয়া হোক। তারপর না হয় আমি মিন করবো।
আরু কালেমা পড়া শুরু করলো। বাড়ি এসে গাড়ি থামতেই আরাধ্য নেমে পড়ে। আরু কে নামতে না দেখে কোমরে দু হাত গুঁজে বলল-
-“ ম্যাডাম আপনি কি দয়া করে গাড়ি থেকে নেমে আমার গৃহে আপনার পায়ে ধুলো দিবেন?
আরু আরাধ্যর দিকে তাকিয়ে বলল-
-“ না নামলে হয় না?
-“ গাড়ির ভেতরই সব করতে চাচ্ছিস তাহলে? একটু কষ্ট হবে তবে ম্যাটার না। তুই কম্ফোর্ট হলে আমি করতে পারবো।
আরুর মুখের রং পরিবর্তন হলো। ছি বিয়েটা হবার পর থেকেই এই ছেলে কি সব কথাবার্তা বলছে। আরু গাড়ি থেকে নামলো। বাড়ির দরজায় আসতেই সন্ধ্যা যাবতীয় সব আচার-আচরণ পালন করলো। তারপর আরাধ্যর রুমে নিয়ে বসিয়ে আসলো। আরু চারপাশে চোখ বুলালো রুমের। বেলি আর রজনীগন্ধা ফুলের সুবাসে মৌ-মৌ করছে রুম টা। কিসের কচুর বাসর রাত হবে হুম? সে আরাধ্য কে তার কাছে ঘেঁষতেই দিবে না। সেজন্য আরু ল্যাগেজ থেকে সেলোয়ার-কামিজ বের করে শাড়ি পাল্টে বিছানায় চাদর মুড়ি দেয়।
এদিকে আরাধ্য সিটি বাজাতে বাজাতে রুমের দরজা খুলে বিছানায় তাকিয়ে আরুকে দেখতে না পেয়ে ভ্রু কুঁচকে ফেলে। কিছুক্ষণ মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থেকে রুমে ঢুকে। বিছানায় পাশে এসে বিছানা টাকে পর্যবেক্ষণ করে বলল-
-“ কিরে ঘুমায় পড়ছস?
আরু উত্তর দিলো না। সেজন্য আরাধ্য চাদর টেনে দেখলো আরু সেলোয়ার-কামিজ পড়েছে শাড়ি পাল্টে। মাথা হ্যাং হয়ে গেলো। কত ইচ্ছে ছিলো তার বউ ঘোমটা মুড়ি দিয়ে বিছানায় বসে থাকবে। আরাধ্য এসে ঘোমটা সরিয়ে বউয়ের মুখ দেখবে। তারপর বুকে হাত দিয়ে অভিনয় করবে। আহারে বেয়া’দব মেয়েটা সব ভেস্তে দিলো। রাগে আরাধ্য আরু হাত টেনে শোয়া থেকে উঠিয়ে বসালো। আরাধ্য মাথার পাগড়ি ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বলল-
-” ঐ কালিতারা তুই তর বিয়ের সাজ পাল্টে ফেলছিস কেনো।
আরুর মুখে রাগের আভাস মিললো।
-“ বউকে সম্মান দিয়ে কথা বলুন। আমি কালো জেনেই বিয়ে করছেন। তাহলে কালিতারা বলেন কেনো ধলাতারা।
-“ যা বিয়েতে যেমন ছিলি তেমন ভাবে সেজে আয়।
-“ পারবো না। আমার অস্বস্তি হচ্ছিলো সেজন্য পাল্টে ফেলছি।
-“ একটু অপেক্ষা করতি আমার জন্য।
-“ পারি নাই।
-“ আচ্ছা সে না পারলি। কিন্তু জানিস তো আজ আমাদের কি?
কথাটা বলতে বলতে আরাধ্য আরুর দিকে এগিয়ে আসলো। আরু ভয়ে ঢোক গিললো। আমতাআমতা করে বলল-
-” ক…কি..
-” আরে তখন তো বললাম গাড়িতে। ব আকার বা স তারপর র মিলে বাসর।
-” ন…না আমি ব..বাসর করবো না।
-” কিন্তু আমি তো করবো বাসর।
আরাধ্য এগিয়ে এগলো আরুর কাছে। আরু দু হাত দিয়ে ঠেলে বলল-
-” না প্লিজ এমন টা করবেন না। আমার ই’জ্জত নষ্ট করবেন না।
আরাধ্যর চোখ ছোট হয়ে আসলো। দাঁত চেপে বলল-
-” আমাকে কি তুই ইনিয়ে বিনিয়ে ধ’র্ষকের খেতাব দিতে চাইছিস আরু?
আরু মাথা ঝাকিয়ে হু বলল। পরক্ষণেই দু দিকে মাথা নেরে বলল-” না না। আপনি প্লিজ আমার কাছে আসবেন না।
-” দূরে থাকার জন্য আমি তোকে বিয়ে করছি?
-” শরীর পাওয়ার লোভে বিয়ে করছেন তাহলে?
-” যদি ভাবিস এটা তাহলে এটাই। তাছাড়া কথা বলে কেনো সময় নষ্ট করছিস বলতো। শুভ কাজে না না করতে নেই সোনা।
সোনা! ছি ছি কি বলে ডাকছে তাকে আরাধ্য ভাই।
-” এই আপনি এসব উল্টাপাল্টা নামে কেনো ডাকছেন। দূরে থাকুন আমার থেকে। তা না হলে কিন্তু আমি চিৎকার করবো।
-” এতে তোর লাভ কি? তুই লোকজন কে জানাতে চাস তোর জামাই তোকে আদর করছে আর তুই সেটাকে উপভোগ করে লোকদের জানাচ্ছিস। ভালো হবে?
-” এতো ভালো মন্দ আমি বুঝি না। আপনি আমার কাছে আসবেন না বলে রাখলাম।
-“ কাছে তো অলরেডি এসে গেছি জান। এবার আমাদের একে ওপরের সাথে ইয়ে করার পালা।
কথাটা বলেই আরাধ্য আরুর কে দু হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরতে নিলে আরু পাশ থেকে চাদর টেনে নিজেকে ঢেকে ভয়ে চিৎকার করে বলে-
-” না আমি ইয়ে টিয়ে করবো না আপনার সাথে৷ প্লিজ ছেড়ে দিন।
আরাধ্যর পেট ফেটে হাসি আসলো। অনেকক্ষণ ধরে চেপে রেখেছিলো এই হাসি৷ এবার আর পারলো না। ঘর কাঁপিয়ে হেঁসে উঠলো। আরুর চাদর ফাঁক করে আরাধ্য কে হাসতে দেখে বলল-
-” হাসছেন কেনো?
-” তাহলে কি আমায় বাসর করতে না দেওয়ার জন্য কাঁদবো? তোর জন্য একটা গিফট এসেছে দেখবি?
-“ না না।
-“ আরে দেখ। ওঠ।
-“ না।
-“ আচ্ছা শুয়েই দেখ। আমি খুলি।
আরাধ্য খাটের নিচ থেকে একটা বক্স বের করলো। বেশ বড়সড় সেই বক্স। আরুর কৌতূহল জাগলো। আরাধ্য বিছানায় উঠিয়ে খুলতে লাগলো। আরু কৌতূহল লাগা চোখে তাকিয়ে দেখলো। হুট করে আরাধ্য বক্সের ভেতর থেকে একটা নাইটি বের করলো। আরুর চোখ বড়বড় হয়ে গেলো। চাদর টেনে বলল-
-“ আপনি কি ভালো হবেন না অসভ্য কোথাকার। এটা গিফট ছি ছি ছি।
আরু নাইটি টা বিছানায় রেখে বলল-
-“ ছি ছি ছি করছিস কেনো হু?
-“ ওসব কি এনেছেন হু।
-“ আমার বউয়ের জন্য গিফট। পছন্দ হয় নি?
-“ একদমই পছন্দ না।
-“ কোনো ব্যপার না। হাত টা দে তো।
-“ না দিব না।
-“ আহা দে না। জোর করে নিলে কিন্তু ব্যথা পাবি।
আরু ডান হাত বের করে দিলো।
-” ডান হাত না। বা হাত দে।
আরু বা হাত দিলো। আরাধ্য সযত্নে আরুর অনামিকা আঙুলে একটা আংটি পড়িয়ে দিয়ে বলল-
-“ বাহ্ খাপে খাপে লেগে গেছে।
আরু তাকালো হাতের দিকে৷ ডায়মন্ডের একটা আংটি।
-“ কার আংটি এটা?
আরাধ্য দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলল-
-“ আমার গার্লফ্রেন্ডের ছিলো। তো আমার বিয়েরকথা শুনে আমার দেওয়া সব ফেরত দিয়ে গেছে আজ।
-“ আপনার গার্লফ্রেন্ড কে এসব নাইটি আংটি দিতেন?
-“ হু।
-“ আর সেসব ইউজ করা জিনিস আমাকে দিচ্ছেন?
-“ হু। তো কি ফেলে দিব নাকি?
আরু হাত থেকে আংটি টা খুলতে খুলতে বলল-
-“ ইউজ করা জিনিস আমি নেই না। ধরুন আপনার আংটি।
আরাধ্য বাঁধা দেয় খুলতে।
-” আরে খুলিস না। এমনি মজা করছি। আমি গতকাল কিনিছি এসব। একদম ফ্রেশ।
-“ সত্যি?
-“ হু।
-“ তাহলে আংটি টা হাতেই থাকুক। গুড নাইট।
-“ গুড নাইট মানে? আমার বাসর হবে না?
-“ কিসের বাসর হু? কোনো বাসর টাসর হবে না। জোর করে বিয়ে কেনো করছেন।
-“ একদম মিথ্যে অ্যালিগেশন দিবি না আমার নামে আরু। বাড়ি আমার রুমও আমার তোর কথায় কোনো কিছুই হবে না। আমি জোর করেই আদায় করবো।
-“ ভালো হবে না কিন্তু। দেহ টাই পাবেন৷ মন আর কোনোদিন পাবেন না।
-“ তোর মন ধুয়ে কি আমি পানি খাবো৷ নাকি মন পেলে আম্বানি তার সব সম্পত্তি আমার নামে লিখে দিবে কোনটা?
-” দেহ পেলে আপনাকে কোন বড়লোক তার সম্পত্তি দিবে শুনি?
-” দেহ পেলে মনের শান্তি পাবো সিস্টার।
-” এই যে সিস্টার বলছেন। তার সাথে আবার এমন অমানবিক জুলুম কেনো করতে চাইছেন?
-” আমি সিস্টার বলেছি?
-“ হু বলেছেনই তো।
-” কই আমি তো জান সোনা কলিজা বলেছি।
-“ মিথ্যা বলবেন না একদম।
-” এতো কথা কেনো বলছিস৷ আমি তো সেটাই বুঝতেছি না। এক ঘন্টা চুপ থাক। তার ভেতর আমি জিনিস হাসিল করে নিবো ট্রাস্ট মি।
-” আরাধ্য ভাই প্লিজ ভাই। আমায় সময় দিন।
আরাধ্য ভ্রু কুঁচকে ভেবে বলল-
-“ তারপর নিজেকে সমর্পণ করবি?
আরু মাথা নিচু করে ছোট্ট করে বলল-
-“ হু।
-“ আচ্ছা যা সময় দিলাম যখন এত কর বলছিসই। তবে বেশি সময় নিলে কিন্তু আমি হাত পা বেঁধেই করা শুরু করবো হু। এখন ঘুমা যা।
আরু সাথে সাথে চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লো। আরাধ্য মুচকি হেঁসে বেলকনিতে আসলো। তার বাসর ঘর আজ ব আকার স আকার র হয়ে বাসার হয়ে গেছে।
পরের দিন সকালে আরু ঘুম থেকে উঠতেই জানতে পারলো আরাধ্য মেডিকেল কলেজে চলে গেছে। সন্ধ্যা তো রেগে আ’গুন। আজ বৌ ভাত অথচ ছেলে তাহার ক্লাস করতে গেছে। একদিন মিস দিলে কি এমন ক্ষতি হয়ে যেত শুনি?
দুপুর ১ টার দিকে আরাধ্য বাড়ি ফিরে রিসিপশনের জন্য তৈরি হলো। আরুকে পেঁয়াজ কালারের শাড়িতে দেখে ভ্রু কুঁচকে বলল-
-“ বিধবার শাড়ি নেই আর?
-“ না নেই।
-“ বলতি আসার সময় নিয়ে আসতাম।
-“ এটায় কি সমস্যা?
-“ কি আবার সমস্যা হবে। এতো সেজেছিস কেনো?
-“ সাজাতেও আপনার আপত্তি?
-“ কাল যখন সাজতে বললাম তখন তো সাজিস নি।
-“ আর কত কথা শুনাবেন?
-“ সারাজীবন ই শুনবি খোঁটা।
-” সেটাই তো দেখতেছি।
-“ আচ্ছা বকবক না করে চল।
আরু মুখ ভেঙালো। বকবক তো সে নিজেই করে।
তোর প্রেমে উন্মাদ আমি পর্ব ৯
নীরা আজ আর আসলো না রিসিপশনে। সহ্য করতে পারবে না। কেঁদেই ফেলবে সবার সামনে। সেজন্য মাথা ব্যথা বলে বাবা মা কে না করে দিয়েছে। নিখিলও আর জোর করে নি। মা বাবা,চাচা চাচি আর বউ নিয়ে আসলো। রিসিপশনের অনুষ্ঠান ভালোই চলছিলো কিন্তু হঠাৎ এক নারীর আগমনে তা কালো মেঘের ন্যায় থমথমে হয়ে গেলো। এই শুভ মূহুর্তে তাকে কেউই আশা করে নি এখানে। কয়েকটি মানুষের মুখ শক্ত হয়ে আসলো তাকে দেখে। কালো কাউয়া ময়ূর সেজে হাজির হলো তার ঝলক দেখাতে।