শেষ থেকে শুরু পর্ব ৩১
Sabihatul sabha
নিরবতায় চারপাশে ছেয়ে আছে। হয়তো মধ্যরাত চলছে বিকট শব্দে বাড়ির সবার ঘুম ভেঙে গেলো। দৌড়ে সবাই বাহিরে আসলো চিৎকারের শব্দ বাড়ছে।
সবাই নজর গিয়ে থমকালো শায়েলা সিদ্দিকীর রুমের দরজার দিকে। শব্দটা ওই ঘর থেকেই আসছে ধীর পায়ে কুলসুম বেগম এগিয়ে গেলো দরজার দিকে।
আয়ান দরজায় কড়া আঘাত মারছে আর মা কে ডাকছে তাতে ভেতরের শব্দের কোনো পরিবর্তন হলো না।
শায়েলা সিদ্দিকী কারো কাছে চিৎকার করে ক্ষমা চাইছে। ভাঙচুর করছে মাঝে মাঝে অদ্ভুত ভাবে বলছে ” আমাকে মেরে ফেলো, মুক্তি দাও! আমি আর পারছি না। ওই ভয়ংকর শব্দ আমাকে মে’রে ফেলছে কেউ বাঁচাও। ”
আয়ানের সাথে কেউ দরজায় হাত বাড়ালো না। আস্তে করে যেভাবে এসে ছিল সেই ভাবেই নিজেদের রুমে চলে গেলো।
আয়ান বার বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলো শায়েলা সিদ্দিকী দরজা খুললেন না।
দরজার সামনে আয়ান চুপ করে বসে পরলো। আস্তে আস্তে ভেতর থেকে শব্দ আশা একদম বন্ধ হয়ে গেলো।
শায়েলা সিদ্দিকী বাড়িতে এসেছে আজ এক সপ্তাহ। এই এক সপ্তাহে সূর্যের আলো দেখেনি, বাহিরটা কেমন তা বলতে পারেন না, কারো সাথে একটা শব্দ ও বলেননি। কেউ বলতেও আসেনি।
কেমন অদ্ভুত দৃষ্টিতে এক দিকে তাকিয়ে থাকে। এক সপ্তাহে কি একদিন ও গোসল করেছেন.? উনি হয়তো মুখেও পানি লাগায়নি এখনো সেখানে গোসল! পনেরো দিন ছিল নিরুপমার সেই গোপন কক্ষে তাতেই শায়লা সিদ্দিকী কে দেখলে যে কেউ বলবে ” পাগল” হ্যা সে পাগলের মতো আচরণ করতে শুরু করেছে। এমন কি করেছে নিরুপমা উনার সাথে.? নিজের মায়ের এমন মৃত্যুর শাস্তি হিসেবে ভয়ংকর শাস্তি দিতে পারতো তাহলে ছেড়ে কেন দিল.?? এর পেছনে কোনো রহস্য নেই ত.??
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
মাঝ রাতে কিছু পরে যাওয়ার শব্দে ঘুম ভেঙে যায় নিরুপমার। পাশে তাকিয়ে দেখে বেলী গভীর ঘুমে।
ঘা টা কেমন ছমছম করে উঠে। আশেপাশে তাকাতেই মনে পরে যায় অভ্রর বলা কথা গুলো। ফুলের বাগানে রাতে জ্বিন পরীরা আসে প্রেম করতে জানো তুমি..?
নিরুপমা কিছু সময় চুপ থেকে জিজ্ঞেস করে ছিল, ” তাহলে কি জ্বিন পরীকে বিয়ে করে ? ”
” হয়তো”
” হয়তো কেন.? প্রেম করতে পারলে বিয়ে কেন করবে না.?”
” আমি ত নিষেধ করিনি। কিন্তু তাদের প্রেমের মাঝে তোমার মতো সুন্দরীদের আগমন ঘটলে সেই প্রেম বিয়ে পর্যন্ত যায় না!”
” কেন.?”
” তখন জ্বিন মানুষ সুন্দরীর প্রেমে পড়ে যায়!”
” আপনি আমার সাথে মজা করছেন.?”
” মোটেও না জবা, জ্বিন যখন তোমার প্রেমে পড়বে তোমার জন্য গান গাইবে বাগানে বসে রাত বর। তারপর তোমার সকল ইচ্ছে পূরণ করে তোমার মন জয় করে নিবে।”
” এটা ত বেশ ইন্টারেস্টিং ”
” মোটেও না তারপর কি হবে সেটা আগে শুনো!”
নিরুপমা বেশ আগ্রহ চোখে তাকিয়ে রইলো।
” তারপর তোমাকে নিয়ে চলে যাবে তার জ্বিন রাজ্যে. … তারপর পেটে খিদে পেলে তোমার ঘার মটকে রক্ত খেয়ে নদীর তীরে ফেলে রাখবে।তোমার দেহটা দেখতে তখন ঠিক কেমন লাগবে ভাবো!”
নিরুপমা রাগী মুখে কোমরে হাত গুঁজে বললো,’ আপনি এতোক্ষণ মজা করছিলেন আমার সাথে.? আর আমি সিরিয়াস হয়ে গিয়ে ছিলাম। ”
সকালে কথা গুলো ফাজলামো করে বললেও এখন নিরুপমার বেশ ভয় লাগছে। বেলী কে ডাকতে নিয়েও ডাকলো না। হঠাৎ জানালার দিকে তাকাতে মনে হলো একটা ছায়া সরে গেলো। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।
নিরুপমা চোখ বন্ধ করে লম্বা লম্বা শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে চোখ খুলে আবার জানালার দিকে তাকালো। মনে হলো বাহিরে দুইজন নৃত্য করছে। কি অদ্ভুত ফুলের তালে তালে নৃত্য কিভাবে সম্ভব..? রাত এখন কয়টা..?
কাঁপা কাঁপা হাতে নিরুপমা মোবাইল তুলে নিলো রাত একটা।
নিরুপমা বেলীকে ভয়ে ভয়ে ধাক্কা দিতেই বেলী চোখ কচলে তাকালো। অন্ধকারে নিরুপমা কে বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞেস করলো,’ কি হয়েছে আপু.? তুমি বসে কেন আছো.?”
নিরুপমা ভয়ে কান্না করে দিবে এমন অবস্থা।
বেলী ব্যস্ত কন্ঠে বললো,’ কি হয়েছে বলবে ত!’
নিরুপমা আঙ্গুল দিয়ে বাহিরে ইশারা করলো৷ বেলী উঠে লাইট অন করতে চাইলে নিরুপমা ওর হাত চেপে ধরে বলে লাইট জ্বেলো না।
” কেন.?’
‘ বাহিরে তাকাও! লাইট জ্বালিয়ে তাদের বিরক্ত করলে আমাদের নিয়ে যাবে”
নিরুপমার এমন অদ্ভুত কথা শুনে বেলী এইবার সিরিয়াস হয়ে বাহিরে তাকালো।
জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে বাহিরে দুইজন খুব সুন্দর করে নৃত্য করছে। একজন খুব সুন্দর সাদা গ্রাউন পড়ে ছেলেটার আঙ্গুলে ধরে ঘুরে ঘুরে নৃত্য করছে ফুলের সাথে।
বেলী স্বাভাবিক কন্ঠে বললো,’ এরা কারা.?’
নিরুপমা ভীতু কন্ঠে বললো,’ ছেলেটা জ্বিন আর মেয়েটা পরী’
এই কথা শুনতেই বেলী ভয়ে চিৎকার দিতে চাইলে নিরুপমা ওর মুখ চেপে ধরে বললো,’ হুশশশ একদম চুপ’
ভয়ে কাঁপছে বেলীও।
একটু পর টুংটাং গিটারের শব্দ শুনা যায়। ছেলেটা সুর তুলে আর মেয়েটা সুরের তালে তালে নাচে।
“ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
আমার আপন হারা প্রাণ, আমার বাঁধন ছেড়া প্রাণ
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
তোমার অশোকে কিংশুখে
তোমার অশোকে কিংশুকে
অলক্ষ্য রঙ লাগল আমার অকারণের সুখে
তোমার ঝাউয়ের দোলে
মর্মরিয়া উঠে আমার দুঃখ রাতের গান
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
পূর্ণিমা সন্ধ্যায় তোমার রজনীগন্ধায়
রূপসাগরের পাড়ের পানে উদাসী মন ধায়
তোমার প্রজাতির পাখা
তোমার প্রজাতির পাখা
আমার আকাশ চাওয়া মুগ্ধ চোখে রঙিন স্বপন মাখা
তোমার চাঁদের আলোয়
মিলায় আমার দুঃখ সুখের সকল অবসান!
তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান
সকাল হতেই শরীর কাঁপিয়ে জ্বর এসেছে বেলীর। ভয়ে সারারাত একজনও ঘুমাতে পারেনি।
নিরুপমা বেলীর মাথায় পানি ঢেলে মেডিসিন খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে পাশে বসে আছে।
অভ্র এসে নিরুপমা আর বেলীর অবস্থা দেখে অবাক হয়ে বললো,” তোমাদের কি হয়েছে.? জ্বর কিভাবে আসলো.? আর তোমাকে দেখতে এমন অদ্ভুত কেন লাগছে.?”
নিরুপমা কিছু বলার আগেই এখানে এসে উপস্থিত অনিক।
অনিক ব্যস্ত কন্ঠে বললো,’ বেলীর কি হয়েছে.? চলো এখনি হসপিটাল নিয়ে যাই.’
নিরুপমা রাগী চোখে অনিকের দিকে তাকিয়ে বললো,’ তোকে বলেছি আমি.? চুপচাপ দরজায় দাঁড়িয়ে থাক। আসছে অন্যের বউকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে ওর জামাই আসতেছে।’
অনিক বেলীর মুখের দিকে তাকিয়ে বললো,’ জানি ওটা কেমন জামাই। বাধ্য হয়ে বিয়ে করলেই জামাই হয়ে যায় না নিরু। ‘
‘ তাহলে তুই জামাই.? আজব কোথাকার, তোকে কে বলছে আসতে.? ‘
অনিক ইশারা করে অভ্র কে দেখালো।
অভ্র অবাক হয়ে বললো,’ আমি কখন বললাম.?’
নিরুপমা ওদের দিকে তাকিয়ে আবার বেলীর দিকে তাকালো।
” সকালের নাস্তা করেছো.?”
নিরুপমা কে কিছু বলতে না দেখে অভ্র আবার বললো,’ কি হয়েছে.? ‘
নিরুপমা কাল রাতের সবকিছু বললো।
বেলী বিরবির করে বললো,’ ফাগুনের গান গাইছিল, আর মেয়েটা হেলেদুলে নৃত্য করছিল!’
অভ্র ওদের মুখের অবস্থা দেখে মুখ টিপে কপালে হাত দিয়ে নিজেকে আড়াল করে হাসলো। অনিক নিজেও অন্য দিকে ফিরে হাসছে। এরা হাসছে কেন.? এদের হাসির রহস্য কি.? এমন নয় ত রাতের সবটা এদের কারসাজি ছিল.?
আজ তিনদিন হলো নিরুপমা ছোট মামার বাসায় চলে এসেছে। ওই রাতের পর সেখানে থাকার মতো সাহস আর নিরুপমার হয়নি।
অনিক অকারণে নিরুপমার ঘরের সামনে ঘুরঘুর করছে।
নিরুপমা কিছুটা রেগে অনিক কে ডেকে বললো,’ তোর কি আবার টাকা লাগবে.? দেখ অনিক যথেষ্ট বড় হয়েছিস আমার থেকে দুই বছরের বড় তুই একটু ত লজ্জা কর এখন নিজের ছোট বোনের থেকে টাকা নিতে। ‘
অনিক বিরক্তিকর দৃষ্টিতে নিরুপমার দিকে তাকিয়ে বললো,’ দেখ নিরু আমি জানি আবার বাপ মা আমার থেকেও বেশি তকে ভালোবাসে। তুই আশার পর এই তিন দিন দেখ আমাকে ভুলেই গেছে। ‘
‘ এতে আমি কি করতে পারি.?’
‘ কিছুই করতে হবে না ছাঁদ থেকে আমার কাপড় গুলো এনে দে’
‘ আমার অফিসে যেতে হবে’
‘ পাঁচ মিনিটেই ত লাগবে। ‘
নিরুপমা কথা না বাড়িয়ে ছাঁদের দিকে গেলো।
ছাঁদে এসে কাপড়ে হাত দিতেই বুঝলো ছাদের দরজা কেউ লাগিয়ে দিয়েছে।
নিরুপমা পেছন ফিরে দেখে অভ্র দাঁড়িয়ে আছে।
‘ তুমি এখানে.? ‘
‘ অভ্র দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে রইলো নিরুপমার দিকে। জেনো কতো বছর ধরে দেখে না সামনের রমনীকে। তৃষ্ণার্ত কাকের মতো তাকিয়ে থাকতে দেখে নিরুপমা বলে উঠলো, ‘ তোমার ভয় বলতে কিছু নেই.? কেউ দেখে ফেললে.?’
‘ কেউ দেখবে না, এতো কথা কেন বলো.?’
নিরুপমা চুপ হয়ে দাঁড়ালো।
‘ তোমাকে বলে ছিলাম আমাদের বাড়িতে আসতে ওখানে থাকলে এমন কি হতো.?’
নিরুপমা অভ্রর কথা শুনে ছাঁদে দোলনায় বসে বললো,’ ওই বাড়িতে আমার কেউ নেই অভ্র তাহলে আমি কেন যেতাম.? ‘
‘ আচ্ছা ‘
কিছু সময় নিরবতা চললো। অভ্র হুট করে বললো,’ রাতে আম্মুকে বলতে শুনেছি আজ তোমাকে দেখতে এখানে আসবে সাথে আরেকটা সারপ্রাইজ আছে তোমার জন্য। ‘
‘ কিসের সারপ্রাইজ.? ‘
‘ আসলেই দেখতে পাবে’
নিরুপমা হাল্কা হেঁসে দূর আকাশের দিকে তাকালো।
‘ প্লিজ এভাবে হেঁসো না খু’ন হয়ে যাব’
অভ্রর বলার ভঙ্গি দেখে নিরুপমা শব্দ করে হেঁসে উঠলো,’ তোমাকে ডক্টর হতে কে বলেছে.? তোমার প্রয়োজন ছিল চাপাবাজ, প্লার্টবাজ হওয়া। ‘
‘ আমি চাপাবাজ কেন হবো.? আমি ডাক্তার হলেও রোমান্টিক ডাক্তার বুঝলে ‘
‘ আমার জানা মতে ডাক্তার হয় কসাই টাইপের ‘
‘ আমাকে দেখে তোমার এমনটা মনে হয়.?’
নিরুপমা পাশে তাকিয়ে থমকে গেলো। অভ্র নিরুপমার পাশে দাঁড়িয়ে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
” আমার যেতে হবে”
” শুনো!”
নিরুপমা তাকাতেই অভ্র বললো,’ সেই প্রথম দিনের মতো শাড়ি পড়বে আজ!”
নিরুপমা ভ্রু কুঁচকে বললো,’ আমাকে কোন দিক দিয়ে বিধবা মনে হচ্ছে.? আমার স্বামীর সাথে এখনো দেখাও হয়নি আপনি আমাকে বিধবা সাজতে বলছেন!”
অভ্র দুই পা এগিয়ে এসে নিরুপমার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো,’ তোমার স্বামীর সাথে তোমার বহু আগেই দেখা হয়ে গেছে জবারাণী সামনে তাকিয়ে দেখো’
অভ্র প্রথম যখন দেশে আসে জবার সাথে তার দেখাটা ছিল বিধবা শাড়িতে।
নিরুপমা একটা শাড়ি হাতে নিয়ে কিছু সময় তাকিয়ে রইলো। আজ যখন অভ্র ওর কাছে এসে ছিল সেই অনুভূতিটা মনে হতেই লজ্জায় ফর্সা গাল গুলো লাল হয়ে গেলো।
অভ্র দেখলে নিশ্চয়ই বলতো, ‘ গাল গুলো এমন টমেটোর মতো কেন.?’
আবার নিজ ভাবনায় হেঁসে উঠলো নিরুপমা।
বিকেলের দিকে নিরুপমার ছোট মামার বাসায় এসে হাজির হলো। কুলসুম বেগম, শার্লিন বেগম, আসিফ, অভ্র আর বেলী।
বেলী কে দেখেই অনিকের চোখ চিকচিক করে উঠলো খুশিতে।
নিরুপমার ছোট মামি যথেষ্ট চেষ্টা করলেন মেহমান আপ্যায়ন করার।
নিরুপমা আজ অভ্রর কথা মতো একটা শুভ্র রঙের শাড়ি পড়ে ছিল।
ফর্সা শরীরে জেনো শাড়িটা বেশ মানিয়েছে। মনে হচ্ছে এই শাড়ি বুঝি নিরুপমার জন্যই তৈরি। চুলগুলো বিনুনি করা, চোখে হাল্কা কাজল, ঠোঁট এমনিতেই গোলাপি।
নিরুপমা কে দেখে চোখ সরছে না কারো।
শার্লিন বেগম বললেন,’ আমি মেয়ে হয়ে তোমার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হই জবা। তোমাকে আমি জবা বলেই চিনেছি জবাই বলবো।’
নিরুপমা হেঁসে বললো, ‘ আপনার ইচ্ছে আন্টি’
‘ আমার একটা ছেলে থাকলে তোমাকে মেয়ে বানিয়ে নিয়ে যেতাম ‘
শার্লিন বেগমের কথা শুনে কুলসুম বেগম বললো,’ আমার ছেলে কি তোদের ছেলে না.? আমার ছেলের বউ তোদের মেয়ে না.?’
শার্লিন বেগমের বুঝতে বাকি নেই কুলসুম বেগম কি বলতে চাচ্ছেন।
নিরুপমা নিজেও বুঝেছে লজ্জায় মাথা নিচু করে নিলো। দুইদিন আগে যেই ছেলেকে চরিত্রহীন বলেছে আজ তার বউ হওয়ার কথা উঠতেই এতো লজ্জা ঘিরে ধরেছে নিরুপমা কে!!
কুলসুম বেগম নিরুপমার ছোট মামাকে বললেন, ‘ নিরুপমার বর্তমান অভিভাবক আপনারা আমি আমার ছেলের হাতে আপনাদের মেয়ের হাত চাচ্ছি।’
অভ্র আঁড়চোখে নিরুপমার দিকে তাকালো। চোখাচোখি হতেই নিরুপমা চোখ সরিয়ে নিলো।
বেলী খুশিতে নিরুপমা কে জড়িয়ে ধরে বললো। ফাইনালি তুমি আমার ভাবি হচ্ছ!
পেছন থেকে বেলীর কানে ফিসফিস করে অনিক বললো,’ আর আপনি আমার বেয়াইন”
বেলী ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে হেঁসে বললো,’ জ্বি বেয়াই’
নিরুপমা মামা খুশি হয়ে বললেন,’ আপনাদের সম্পর্কে আমি জানি। আমাদের মেয়ের সম্মতি থাকলে কথা আগানো যায় ‘
নিরুপমা লাজুক হেঁসে অভ্রর দিকে তাকাবে তখনি ওর কান গরম হয়ে গেলো। মনে হচ্ছে মাথা নয় পুরো দুনিয়া ঘুরছে কুলসুম বেগমের কথা শুনে।
~ নিরুপমা মা আমার তুই আমার আসিফের বউ হয়ে প্রথম আমার বাড়িতে পা রেখেছিস আমি চাই জীবনের শেষ পা টাও আমার আসিফের নামে আমার বাড়িতে রাখ। তুই আমার আসিফের বউ হয়ে আমার বাড়িতে আসবি না.? আমার মেয়ে করে রাখবো।
শেষ থেকে শুরু পর্ব ৩০
নিরুপমা কোনো রকম উঠে দাঁড়িয়ে বললো,’ আ..আমি আসছি!’
পেছন ফিরে একবার তাকালে হয়তো দেখতে পেত অভ্রর মুখটা রাগে রক্তবর্ণ হয়ে গেছে। সারপ্রাইজ দিতে চেয়ে ছিল তবে এভাবে নয়! আসিফের জায়গায় অভ্র থাকার কথা ছিল।