এক চিলতে রদ্দুর পর্ব ১৫

এক চিলতে রদ্দুর পর্ব ১৫
Yasira Abisha

সকালটা অন্যসব দিনের মতোই শুরু হয়েছিল, অথচ রুহির মনে এক অজানা অস্থিরতা। যেন বুকের ভেতর কিছু একটা চাপ দিচ্ছে, দম বন্ধ হয়ে আসছে।
কাল থেকে এক অদ্ভুত অনুভূতি ওকে তাড়া করে ফিরছে। প্রায় ৪ দিন হলো ইরাদ দেশের বাইরে গেছে, ইরাদ যাওয়ার পর থেকেই ওর মন যেন শূন্য হয়ে গেছে। ইরাদের অনুপস্থিতি এতটা কষ্ট দেবে, এটা তো কখনো কল্পনাও করেনি!
দুই দিন ধরে ওর মনে শুধু একটাই প্রশ্ন— ইরাদ কি ওকে চায়?
নাকি এই অনুভূতিগুলো একতরফা?
কিন্তু ও আর অপেক্ষা করতে পারছে না। ইরাদ আজ ফিরবে। আজই ও বলবে ওর মনের কথা।

সকালবেলা অফিস যাওয়ার আগে প্রতিদিনের মতো রুহি আনাইকে দেখতে গেল।
দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ছোট্ট মেয়েটা দৌড়ে এসে ওর গলা জড়িয়ে ধরল।
“আম্মু, তুমি আমায় ছেড়ে চলে যাবে না তো?”
রুহির বুকটা মোচড় দিয়ে উঠল। ও আনাইকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
“না মা, কখনো না! আমি তোমার কাছেই থাকব!”
কথাগুলো বলেই ওর গলা আটকে গেল। সত্যিই কি ও আনাইয়ের কাছেই থাকবে?
রুহি অফিসে গেল, কিন্তু সারাদিন কাজের মধ্যে মন বসাতে পারল না।
মনটা শুধু এক জায়গাতেই আটকে আছে— আজ বিকেলে ইরাদ আসবে।
ও ঘড়ির কাঁটার দিকে তাকিয়ে সময় গুনছে। যত সময় এগোচ্ছে, ওর বুকের মধ্যে উত্তেজনা আর ভয় একসঙ্গে দোলা দিচ্ছে।

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

আজ দুপুরের সময় ও বাসায় ফিরল সাথে আনাইকেও নিয়ে এসেছে, নতুন শাড়ি পরে আয়নার সামনে দাঁড়াল। একটা মিষ্টি স্নিগ্ধ লুক— ও চায় আজ ইরাদের চোখে ওর জন্য কিছু হোক।
কিন্তু তখনই দরজার বাইরে ওর মা-বাবার কণ্ঠস্বর ভেসে এল।
“রুহি, কাল তোমার এনগেজমেন্ট।”
গায়ের রক্ত ঠান্ডা হয়ে গেল।
বুকের ভেতর একটা ধাক্কা খেয়ে যেন দম আটকে এল ওর।
“কি?! কার সাথে?”
ওর বাবা শান্ত গলায় বললেন, “আফান।”
বিশ্বাস করতে পারছিল না রুহি। মাথার ভেতর যেন হাজারটা ঢাক বাজতে শুরু করল।
“তোমরা আমার সঙ্গে আলোচনা না করেই সিদ্ধান্ত নিলে?” ওর গলা কাঁপছিল।
ইচ্ছে করছিলো এই কথাটাই বলবে মা বাবাকে।
মা বাবা হেসি দিয়ে কথাটা বলেই চলে গেলো
তখন রুহির ভাই বললো,

“আফান ভালো ছেলে। ও এখনো তোমাকে ভালোবাসে, তোমার জন্য অপেক্ষা করেছে। আমাদের মনে হয়েছে, ও-ই তোমার জন্য পারফেক্ট। যেহেতু আপু তুমি শুরু থেকেই তাকে চাইতে তাই মা বাবা তোমার জন্য আফান ভাইয়াকে মেনে নিয়েছে।”
রুহি অনুভব করল, চারপাশের দেয়ালগুলো যেন ওর দিকে ধেয়ে আসছে।
এসব কিছুই রুহির মাথায় ঢুকছে না
কিভাবে কি হলো?
কেনো আফান আবারো রুহির জীবনে ফিরতে চাইছে
রুহি এখন আর চায় না আফানকে, রুহির জীবনে আনাই ও ইরাদই হলো ভালোবাসার অপর নাম।
কিভাবে কি হলো রুহির ভাই তখন বিস্তারিত বললো,
আফানের ছলনা
রুহি অবাক হয়ে ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে রইল।
“তুমি কী বললে? কিভাবে মা-বাবা রাজি হলো?”
ওর ভাই গম্ভীর গলায় বলল, “তুমি যখন অফিসে ছিলে, তখন আফান এসেছিল। তিন দিন ধরে মা-বাবাকে রাজি করানোর চেষ্টা করেছে।”

রুহির বুক ধক করে উঠল।
“কিন্তু মা-বাবা তো প্রথমে রাজি হয়নি, তাই না?”
“হ্যাঁ, প্রথমে মা-বাবা ইমতিহান করেছিল। কারণ আফান তো আমাদের কাজিনকে বিয়ে করেছিল।”
রুহির নিঃশ্বাস ভারী হয়ে এল।
“তাহলে? তারপর?”
ভাইয়ের চোখে এক ধরনের হতাশা ফুটে উঠল।
“আফান বলেছে, রুহিকে আমি ধোঁকা দিয়ে ভুল করেছি। তবুও প্লিজ একটা সুযোগ দিন। রুহি কিন্তু আমাকেই ভালোবাসত। আমাকে ছাড়া ও ভালো থাকতে পারবে না। আর আমিও পারব না। প্লিজ, আমাকে মেনে নিন।’”
রুহির পুরো শরীরটা হিম হয়ে গেল।
“তাহলে মা-বাবা ওর কথা বিশ্বাস করল?”
ভাই দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

“হ্যাঁ। মা-বাবা ভেবে দেখল, হয়তো তুমি সত্যিই ওকে ভালোবাসো। আর আফানও অনেক অনুতপ্ত দেখাল, তাই তারা রাজি হয়ে গেল।”
রুহির গলা শুকিয়ে গেল।
“তাহলে আমার মতামত? আমি কী চাই?”
ভাই শান্ত গলায় বলল, “সেটা তো কেউ জানতে চায়নি আপু।”
রুহি চুপ করে গেল। বুকের মধ্যে এক অজানা কষ্ট দলা পাকিয়ে উঠল। ওর জীবন নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে গেল, অথচ কেউ একবারও ওর কথা ভাবল না।

ঠিক তখনই বাইরের গেটে একটা গাড়ি থামার শব্দ শোনা গেল।
রুহির বুকের ভেতরটা কেঁপে উঠল।
ইরাদ ফিরেছে।
ওর হৃদপিণ্ড যেন কয়েক সেকেন্ডের জন্য থেমে গেল। নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে গেল মুহূর্তেই। ওর মনে হচ্ছিল, যেন পুরো পৃথিবী এক মুহূর্তের জন্য স্থির হয়ে গেছে।
দরজাটা খুলতেই ছোট্ট পায়ের ছুটে আসার শব্দ শোনা গেল।
“বাবা!!”
চিৎকার করে দৌড়ে গেল আনাই।
ইরাদ নেমে এল গাড়ি থেকে।
অন্ধকারের মধ্যেও ওর উপস্থিতি যেন আলো ছড়াল চারপাশে।
হালকা ফিটিং শার্টের হাতা গুটিয়ে রাখা, চোখে ক্লান্তির ছাপ, কিন্তু মুখের চেহারায় চিরচেনা দৃঢ়তা। গাঢ় শ্যামলা ত্বকে আলো পড়ে এক অদ্ভুত মোহনীয় আভা তৈরি করেছে। গভীর কালো চোখের ভেতর যেন একরাশ রহস্য, তীক্ষ্ণ ভ্রুতে চিরাচরিত গাম্ভীর্য।
চিবুকের হালকা শেভবিহীন শ্যাডো ওকে আরও বেশি রাফ অ্যান্ড মাস্কুলিন লাগাচ্ছিল। চওড়া কাঁধের ওপর সফট লেদারের ব্যাগ ঝুলছে, হাঁটার সময় শরীরের প্রতিটি মুভমেন্ট এতটাই পরিপূর্ণ, যেন কোনো নিখুঁত শিল্পকর্ম।
রুহি এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।

একটা মানুষ এত সুন্দর হতে পারে? এত নিখুঁত?
ইরাদ দ্রুত নিচু হয়ে আনাইকে কোলে তুলে নিল। মেয়েটা বাবার গলায় হাত পেঁচিয়ে ধরে অনর্গল বলে চলল,
“তুমি কতদিন পর এলে, বাবা! জানো, আমি তোমাকে অনেক মিস করেছি! তুমি কোথায় ছিলে? আমাকে ফোনও করলে না ঠিকমতো!”
ইরাদ মেয়ের কপালে চুমু খেয়ে বলল, “সরি সোনা, ট্রেনিংয়ে খুব ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু এবার অনেকদিন তোমার সাথে থাকব, ঠিক আছে?”
আনাই খুশিতে বাবার গালে চুমু খেল, “প্রমিস?”
“প্রমিস।”
তারপর ইরাদ ধীরে ধীরে দৃষ্টি সরিয়ে আনল রুহির দিকে।
রুহি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল দরজার কাছে। ওর মুখ ফ্যাকাশে, ঠোঁট শুকিয়ে এসেছে।
ইরাদের চোখ গভীর হয়ে উঠল, যেন কিছু খুঁজছিল রুহির মুখে।
কিন্তু রুহি পারল না সেই চোখের দিকে তাকাতে। এক অজানা ভয় আর যন্ত্রণা ওর পুরো অস্তিত্ব জড়িয়ে ধরেছে। ইরাদ জানে না, সে কত বড় একটা সত্যি মিস করেছে।
হয়তো আর কখনোই জানতে পারবে না…
রুহি মুহূর্তেই চোখ নামিয়ে নিল,

কিন্তু এতক্ষণে ইরাদের চোখে ধরা পড়ে গেছে—
সেই পুরোনো অনুভূতির ঝলক।
সেই আবেগ, সেই আকুলতা, যেটা লুকিয়ে রাখতে চেয়েও পারছে না রুহি।
কিন্তু ও কিছু বলল না, শুধু দাঁড়িয়ে থাকল চুপচাপ।
ইরাদ বসে আছে ড্রয়িং রুমে আনাইকে কোলে নিয়ে।
চারপাশে উৎসবের আমেজ, বাড়ির সবাই খুশি, ব্যস্ত। নরম আলোয় ঘরটা সজীব দেখাচ্ছে, দেয়ালে ঝুলে থাকা লাইটের ঝলকানিতে যেন উষ্ণতা ছড়াচ্ছে। কিন্তু ইরাদের চোখে সেই আলো এসে ঠেকলেও, ওর ভেতরটা ক্রমশ নিভে যাচ্ছে।
রুহির মা-বাবা অত্যন্ত আনন্দিত স্বরে বললেন,
“ডাক্তার সাহেব, কাল কিন্তু আপনাকে আসতেই হবে! রুহির এনগেজমেন্ট!”
একটা মুহূর্তেই…..
পুরো ঘরটা নিস্তব্ধ হয়ে গেল যেন।
ইরাদ স্থির হয়ে বসে রইল, একদম অচঞ্চল।

ওর হাতের মুঠো হালকা শক্ত হয়ে গেল, আঙুলের নিচে সোফার কাপড় টান টান হয়ে উঠল। অথচ মুখের এক্সপ্রেশন একটুও বদলাল না। খুব সাধারণভাবে একপাশে মাথা কাত করে বলল,
“ওহ… তাই নাকি?”
কিন্তু ওর চোখের গভীরে যে ঝড় বইছে, সেটা রুহির চোখ এড়ায়নি।
রুহি এক মুহূর্তের জন্য নিঃশ্বাস নিতে ভুলে গেল।
ইরাদকে চেনা যায়, ওকে বোঝা যায়— অন্তত রুহির পক্ষে এটা অসম্ভব কিছু না।
ও জানে, ওর ভেতরটা এখন কেমন ছিন্নভিন্ন হয়ে যাচ্ছে।
এই মানুষটা, যে এতদিন ওকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে রেখেছিল, বন্ধুত্বের সীমারেখা আঁকতে চেয়েছিল— সেই মানুষটাই আজ বুঝতে পারছে, ওর জায়গাটা কি সত্যিই সেখানে ছিল?
ইরাদ ধীরগতিতে হাসল, খুবই মৃদু, যেন ঠোঁটের কোনে কষ্টের ছায়া।
চারপাশে অনেকে কথা বলছে, কেউ খেয়ালও করল না ওর এভাবে বসে থাকা, ওর শ্বাস নেয়ার গভীরতা, ওর এক মুহূর্তের স্তব্ধতা।
কিন্তু রুহি করল।
ও দেখল, কেমন করে ইরাদের চোখের মায়া ফিকে হয়ে আসছে, কেমন করে ওর গলার স্বর থেকে উষ্ণতা হারিয়ে যাচ্ছে।
কেউ জানল না, কিন্তু ইরাদ জানল—
এই মুহূর্তে রুহিকে হারিয়ে ফেলছে ও।
চিরতরে।

রুহি ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে পারছে না।
ও কিছু বলার চেষ্টা করল, কিন্তু কথাগুলো যেন গলায় আটকে গেল।
ইরাদ ধীরে ধীরে আনাইকে কোলে করে সরে দাঁড়াল।
একবারও চোখ সরাল না রুহির ওপর থেকে।
কিন্তু সেই দৃষ্টি আগের মতো উষ্ণ ছিল না।
সেই দৃষ্টি খালি হয়ে গেছে। অনুভূতিহীন।
তারপর…
কিছু না বলেই ইরাদ পেছন ফিরে হাঁটতে শুরু করল।
রুহি চিৎকার করে ওকে ডাকতে চাইল।
“ইরাদ…!”
কিন্তু শব্দ বেরোল না।
ওর পা যেন মাটিতে আটকে গেছে। বুকের ভেতরটা ফেটে যাচ্ছে, কিন্তু ও কিছু করতে পারছে না।
ওর ভালোবাসা ওর হাত থেকে চিরদিনের জন্য ফসকে গেল।
রুহি অসাড় হয়ে দাঁড়িয়ে রইল, আর ইরাদ আনাইকে নিয়ে ধীরে ধীরে দূরে সরে যেতে লাগল—
একের পর এক পদক্ষেপ…
প্রতিটি পদক্ষেপ মানে রুহির জীবনে আরেকটা ধ্বংসের ঘন্টা বেজে চলছে……

ইরাদ ব্যালকনির চেয়ারে গা এলিয়ে দিল। রাত গভীর, আকাশে জ্বলজ্বল করা তারাগুলো যেন খুব দূরের কেউ, একেবারে ছোঁয়ার বাইরে।
হাতের কফির কাপটা ঠাণ্ডা হয়ে গেছে, কিন্তু ওর খেয়াল নেই। খেয়াল নেই রাতের বাতাসে, নেই শহরের নিস্তব্ধতাতেও।
মনের ভেতর কেবল একটাই কথা ঘুরপাক খাচ্ছে—
রুহির বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে।
একটা দীর্ঘ শ্বাস নিল ইরাদ, কিন্তু বুকের ভেতরের অস্বস্তিটা কমল না। বরং আরও গভীর হয়ে গেল।
কেন এত অদ্ভুত লাগছে ওর?
এই অনুভূতিটা কেন এত চেনা?
ওহনা…
ওহনার মৃত্যুর পর, ওর ভেতর যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, সেটার অস্তিত্ব ও এতদিনেও অস্বীকার করতে পারেনি। কিন্তু এখন, এই মুহূর্তে, সেই শূন্যতা যেন নতুন করে অন্য কোনো কারণে দগদগে হয়ে উঠেছে।
তবে কি ও রুহির জন্য…?

নীরবতা।
এতদিন ও নিজেকে বোঝাতো, রুহি শুধুই আনাইয়ের ভালোবাসার জায়গাটা পূরণ করেছে, শুধুই একজন বন্ধু। ওহনার জায়গায় কাউকে ভাবার কথা ও কখনো কল্পনাও করেনি।
কিন্তু আজ?
আজ কেন মনে হচ্ছে, ওহনার জন্য যেমন বুকটা ভারী হয়ে আসতো, ঠিক তেমনভাবেই এখন রুহির জন্যও হচ্ছে?
কেন মনে হচ্ছে, ও যদি সত্যিই চলে যায়, তাহলে এই শহরটা ওর কাছে শূন্য লাগবে?
ও কি সত্যিই রুহিকে ভালোবেসে ফেলেছে?
হাতের আঙুলগুলো নিজের অজান্তেই শক্ত হয়ে গেছে।
ও রুহিকে ভালোবাসে…

এক চিলতে রদ্দুর পর্ব ১৪

এই স্বীকারোক্তিটা এতদিন ওর মনে কোথাও ছিল, শুধু ও চেপে রেখেছিল।
আনাইয়ের জন্য ওর মায়া, রুহির স্নেহ, বন্ধুত্ব— সবকিছু মিলিয়েই হয়তো একসময় ওর মনে হয়েছিল, ওর জায়গাটা ঠিক এখানেই, কিন্তু কখন যে সেই বন্ধুত্ব ভালোবাসায় বদলে গেছে, ও নিজেই জানে না।
কিন্তু আজ, এই মুহূর্তে, যখন জেনেছে যে রুহি অন্য কারও হতে চলেছে—
তখন কেন মনে হচ্ছে, ও নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে?
বুকের ভেতরটায় একটা শূন্যতা জেগে উঠল।
ও যে রুহিকে ভালোবাসে, সেটা ও কেবল বুঝতে পারছে… ঠিক তখনই, যখন ওর হাতে আর কিছুই নেই ধরে রাখার মতো।

এক চিলতে রদ্দুর পর্ব ১৬