প্রেমের সমর পর্ব ২১

প্রেমের সমর পর্ব ২১
অলকানন্দা ঐন্দ্রি

তখন রাত।মৃদু ঠান্ডা হাওয়া বইছে বাইরে। বোধহয় কিছু সময় পর বৃষ্টি নামবে। যার কারণে আকাশে চাঁদটাও আজ অনুপস্থিত!সুহা বেলকনিতে বসে কিছুটা সময় চাঁদবিহীন সে আকাশই দেখল। পরপরই রুমে এল। ভেবেছিল স্বচ্ছ ঘুমিয়ে পড়েছে। ঘুমিয়ে পড়লে তারই ভালো। নয়তো স্বচ্ছর জাগ্রত অবস্থায় ওরই সামনে এক বিছানায় ঘুমাতে গিয়ে আবারো স্বচ্ছর খোঁচা শুনতে হবে। কারণ ওদের বাসায় যখন স্বচ্ছ গিয়েছিল তখন সে স্বচ্ছকে এক বিছানায় ঘুমাতে দেয়নি৷ সুহা হতাশ হয় এদিক দিয়ে। স্বচ্ছকে উদাস ভঙ্গিতে বসে থাকতে দেখে বলল,
“ এমন বানর মুখ করে বসে আছেন কেন? আপনি না অসুস্থ?ঘুমাননি কেন এখনো? ”
“ যে বউ অসুস্থ স্বামীকে বসিয়ে রেখে বেলকনিতে গিয়ে চাঁদ দেখায় মরিয়া হয় সে বউ জেগে থাকার কারণ জানার অধিকার রাখে না। ”

আকস্মিক এই উত্তর পেয়ে সুহার কপালে ভাজ পড়ে। ভ্রু বাঁকিয়ে তাকায় সে। বলে,
” কোন বউ অধিকার রাখে তাহলে? বউই বা কয়টা? বিয়েই বা কয়টা করেছেন আপনি? ”
সুহার সন্দেহ দেখে স্বচ্ছর হাসি আসে যেন। তবুও বলে,
“ একটাই করেছিলাম তাও কি নিষ্ঠুর বউ!ভালোবাসে না। ”
সুহা রাগ নিয়ে শুধায়,
“ নিষ্ঠুর? ”
“ অবশ্যই। হসপিটালে যখন আমার কথা বলার বোধই ছিল না তখন কি ভালোবাসাময় কথা! চুমও দিয়েছিলে। আর যখনই আমি একটু সুস্থ হয়ে আসলাম তখনই ফের তোমার দাদাজানের মতো ভয়ংকর রূপ ধারণ করে ফেললে? গিরগিটি কোথাকার!”
সুহা ফের রাগ নিয়ে বলে,
“ আমি গিরগিটি? ”
“ তা নয়তো আমি? ”
সুহা তখন রাগে ফোঁসফোঁস করতে করতেই উত্তর দেয়,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ আপনি তো ভাই উন্নতমানের গিরগিটি৷ ফুসলিয়ে ফুসলিয়ে আমাকে প্রেমে ফেলে বিয়েটা করে দৌড় মেরেছিলেন। ভুলে গেছি আমি? ”
একই কথা আবারো শুনে স্বচ্ছর ইচ্ছে হয় নিজের কপালে নিজে থাপ্পড় মারতে। কে বলেছিল? কে বলেছিল তখন সে ছেলেমানুষিটা করতে? কে? এখন সারাজীবন তার খোঁচা শুনতে হবে তাকে। স্বচ্ছ হতাশার ন্যায় দৃষ্টি রাখে। বলে,

“ অতীত ওটা। ভুল করেছি। কয়বার বলব আমি? সেবার যেমন চলে গিয়েছিলাম এবার তো তেমন ভালোবাসার টানে থেকেও যাচ্ছি। দেখো না কেন তা? নাকি এখনও শিউর না যে সত্যি সত্যিই ভালোবাসি কিনা?”
কথাটা বলেই সে সুহার দিকে তাকায়।উত্তরের অপেক্ষা করে। সত্যিই কি এখনোও শিউর না সুহা? সত্যিই এখনো তার ভালোবাসাকে বিশ্বাস করে না? উত্তর দিচ্ছে না কেন? স্বচ্ছ আবারও শুধায়,
“ নাকি এবারে সত্যি সত্যি মরে গিয়ে বিশ্বাস করাতে হবে? বলো? কি করলে বিশ্বাস করবে যে ভালোবাসি? ”
সুহার ইচ্ছে হলো এই ছেলেটার গালে একটা থাপ্পড় বসাতে। এখনও সুস্থ হয়নি। কয়েকদিন আগেই মৃত্যুর সাথে লড়ছিল এতগুলো মানুষকে দুঃশ্চিন্তায় রেখে। অথচ এখনও মরার কথা মুখে আনে। খারাপ লোক!সুহা মনে মনে একগুচ্ছ বকাঝকা করেই গম্ভীর কন্ঠে জানায়,
“ বিশ্বাস না করার মতো পথ রাখেননি। সেদিন এক্সিডেন্টটা করেই ফাঁসিয়ে দিয়েছেন আবার। নয়তো আমি জীবনেও বিশ্বাস করতাম না আপনাকে। ”

স্বচ্ছর মন বোধহয় গদগদ করে উঠল খুশিতে। তবুও প্রকাশ করল না। টানটান স্বরে বলল,
“ এখন করো? নাকি ভাবো যে এক্সিডেন্টটাও আমার প্ল্যান করা?সব নাটক? ”
সুহা কেমন করে যেন চায়। খাটের এককোণায় বসে ছোট শ্বাস ফেলে। স্বচ্ছ কি কথাটা খোঁচা দিয়ে বলেছে? বলল,
“ আমি আপনার মতো এতোটা গর্দভ নই স্বচ্ছ।গাড়ি ড্রাইভার চালাচ্ছিল। তার নিজের জীবনও ঝুুঁকিতে ছিল। যদিও এখন সুস্থ! তো যদি প্ল্যানের অংশ হয়ও তাহলে আপনি বা উনি নিশ্চয় জীবনের ঝুঁকি জেনেও এই দুর্ঘটনা ঘটাত না তাই না? ”
স্বচ্ছ বিপরীতে বলে,
“ ভাগ্যিস এক্সিডেন্ট টা হলো আমার। নয়তো তোমার মতো নির্দয় রমণীর নিষ্ঠুর মন জীবনেও নরম হতো না। জীবনেও আমার দিকে ফিরে চাইতে না তুমি। ভাগ্যিস! এক্সিডেন্টটা হলো। আরো হোক এমন এক্সিডেন্ট। এটলিস্ট ভালোবাসা জুটবে তোমার। ”

সুহা এবারে স্বচ্ছর দিকে ঝুঁকে আসে।রাগে কটমট স্বরে বলে,
“ এক ঘুষিতে মুখের সব দাঁত ফেলে দিব স্বচ্ছ। একবার দুবার এসব কথা ভালো লাগে না। ”
স্বচ্ছ এই পর্যায়ে হাসে। নিজের চোখের খুব সামনেই সুহাকে রাগ মিশ্রিত চাহনি নিয়ে চেয়ে থাকতে দেখে ফু দিয়ে উড়িয়ে দেয় সুহার কপালে আসা চুল। বাম হাতে সুহার মুখে এনে বুলিয়ে দিয়ে শুধায়,
” বিশ্বাস করো, তোমাকে রাগতে দেখলে বিনা কারণেই চিনচিনে এক অনুভূতির ফিল পাই সুহাসিনী। ইউ নো হোয়াট? তুমি রাগলে আমি শুধু শুধুই প্রেমে পড়ে যাই।হার্টবিট বাড়ে। কোনদিন না জানি অ্যাটাক করে ফেলি।তার আগে আগেই প্রেমটা করবে তো রমণী? ”
স্বচ্ছর এত সুন্দর কথার বিনিময়ে সুহা এক বালতি হতাশা ঢেলে দিয়ে বলে উঠে,
“ শখ নেই আমার। ”
কথাটা বলেই স্বচ্ছর পাশেই কাত হয়ে শুঁয়ে পড়ল সুহা। বলল,
“ ফ্লার্টিং স্কিল ভালো আপনার। কিন্তু এই মুহুর্তে ঘুমান। গুড নাইট। ”

ছুটির সাথে আবিরের আর কথা হয়নি।মনে মনে কঠিন প্রতিজ্ঞাও করল মেয়েটা। আবিরের জন্য সে আর পাগলামো করবে না। আর না তো আবিরকে সে অনুভূতি প্রকাশ করবে। আর না তো হ্যাংলামোপনা করবে।ছুটি নিশ্চুপ হয়ে আছে তখন থেকে। বেলকনিতে বসে বসে ভাবছিল তার কি দোষ ছিল? এই যে এতকাল এত অপেক্ষা করল তবুও তো তার এতোটা কষ্ট হলো না। কিন্তু যখনই শুনল আবির ভাই তার অনুভূতিকে নিয়ে খেলেছে, অনুভুতিকে ব্যবহার করেছে তখনই থেকেই আবির ভাইকে তার আর ভালো লাগছে না। তিক্ত লাগছে সব। নিজেকেই বিরক্ত লাগছে তার। ছুটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে যখন বেলকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল ঠিক তখনই পাশে আসল রাহা। কিছুক্ষন ছুটির সাথে কথা বলেই রাহা চলে গেল। ছুটি তারপরও অনেকটা সময় বেলকনিতে কাঁটাল।তার কিছুটা সময় পরই তার ফোন বাঁজে। ছুটি ভ্রু কুঁচকে তাকায় । আবির কল দিয়েছে৷ ছুটি প্রথম দুবার কল না তুললেও শেষের বার কল উঠাল। নিরব স্বরে বলল,

“ এতরাতে কল দিয়েছেন কেন আবির ভাই? কাল তো চলে যাবেন। গোছগাছ করছেন না?”
ছুটি তার প্রশ্নের উত্তর পেল না। তবে সাথে সাথেই আবির রাগ রাগ স্বরে প্রশ্ন ছুড়ে,
“ এতরাতে কার জন্য বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছিস?তোর জাস্টফ্রেন্ড সাদের জন্য? ”
ছুটি অবাক হয়। হঠাৎ আবিরের রাগের কারণ বুঝা গেল না যেন। আবার সাদকে টানার বিষয়টাও বুঝা হলো না। তবে ছুটি চারপাশে একবার চোখ বুলায়। বলে,
“ বেলকনিতে দাঁড়াতেই পারি। সাদের জন্য হলে সাদের জন্য। অসুবিধা কি আপনার?”
আবির দাঁতে দাঁত চেপে শুধায়,
“ তুই জানিস না অসুবিধা কি?”
“ না।”
আবির ফের বলে,

“ জানিস তুই। খুব ভালো করেই জানিস ছুটি!এখন বলবি না যে তুই এই সাদের কারণেই বিয়ের প্রপোজালটা পিঁছিয়ে নিয়েছিস? ”
ছুটি এবারে হাসে৷ যে ছেলেটা তার অনুভূতিকে ব্যবহার করেছে নিজের স্বার্থে তার থেকে এমন প্রশ্ন বোধহয় সত্যিই হাস্যকর! বলে,
“ ইগোতে লেগেছে নাকি আপনার? ”
আবির রেগে শুধায়,
“ মুখে মুখে কথা বলা শিখেছিস? ”
ছুটি চুপ থাকে। তারপর অনেকটা সময় পর বলে,
“ ধরুন আমি সাদকে ভালোবাসি। এতদিন আপনার সাথে নাটক করেছি৷ওর কারণেই বিয়ের প্রোপোজাল পিঁছিয়েছি। তো? কি করবেন? ”
আবির এই পর্যায়ে উত্তর দেয়,

“ এতবছর কেউ নাটক করতে পারে না। সে ছোট থেকে দেখছি আমি তোকে। বোকা,ইমোশনাল ছুটি ছিলি তুই৷ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে থাকতি। ”
ছুটি হাসে। নিজের দুর্বলতার কথা শুনে নিজের প্রতি বিরক্তও হয়। বলে,
“ এইজন্য এখন অনেকে বোকা বানায় আমায়। যায় হোক, এখানে এসেছেন কেন? নিশ্চয় আমার জন্য নয়? ”
আবির রাগের সহিত উত্তর করে,
“ ইয়েস!তোর জন্য নয়।এখানে আরো বিভিন্ন মেয়ে আছে বুঝলি?ওদের দেখার জন্য এসেছি। ’
“ বুঝেছি। ”
আবির বলে,
“ বুঝলে ভালো!”

কথাটা বলেই কল রাখে সে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে সে। দৃষ্টি ছুটিদের বেলকনিটায়। যেখানে ছুটির ছায়া স্পষ্ট৷ আবির ছুটিকে খুব ভালোভাবে চেনে, খুব ভালোভাবে জানে। যার দরুণ ছায়াটা দেখে বুঝেও নেয় এটা ছুটি। কিন্তু বিরক্তির বিষয় হলো আবির যখন এখানে এসে দাঁড়াল ঠিক তখনই এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল আরও একজনকেও। ছেলেটা সাদ। দৃষ্টি ছুটিদের বেলকনিতেই। আর বেলকনিতে তখন ছুটিই দাঁড়ানো। যা আবিরকে রাগিয়ে দিতে যথেষ্ট৷ আবির দুইজনের দিকেই পরপর কয়েকবার চাওয়াচাওয়ি করে সাদের কলার টেনে ধরে। কাহিনী সুবিধার ঠেকে না তার। পরমুহুর্তেই কল লাগায় ছুটিকে। অতঃপর সাদের সামনেই ছুটির সাথে কথা বলে। বোচারা সাদ এর আগে একবার মার খেয়েছে। আক্কেল হয়ে গেছে তার। তাই কল রাখার সাথে সাথেই বলে উঠল,
“ কসম ভাই! আমি ছুটির জন্য দাঁড়িয়ে নেই। আমি তো এমনিই এই পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম। ভাবলাম রাহাকে দেখতে পাব কিনা। ”

আবিরের জন্য বিশ্বাস হয়না। বলে,
“ শিওর? রাহাই? ”
সাদ সঙ্গে সঙ্গে মাথা নাড়ায়। শুধায়,
“ হ্যাঁ, হ্যাঁ। শিওর! রাহাই। ”
“ প্রমাণ? ”
সাদ কি প্রমাণ দিবে বুঝে উঠে না। তবে অনেকটা সময় পর ফোনে কথা বলার বিষয়টা মাথায় এল তার। কারণ সরাসরি তো সে কখনোই রাহাকে বলেনি নিজের দুর্বলতার কথা। সাদ শুকনো ঢোক গিলে। ফোন নিয়ে কল দিতে গিয়েই বুঝতে পারে যে তার ব্যালেন্স নেই৷ সাদ নিরস চাহনিতে তাকায় আবিরের দিকে। আবির তা দেখে বলে,
“ কি হইছে? ”
সাদ বোকা বোকা স্বরে বলে,
” ব্যালেন্স নেই।আমার ফোনটা দিবেন ভাই?”
আবিরও নির্দ্বিধায় ফোনটা দিল। সাদও এগিয়ে নিয়ে রাহার নাম্বারে কল দিল। রিসিভড হতেই চুপ থাকে সে। ওপাশ থেকে রাহা কর্কশ স্বরে বলে,

“এটা নিশ্চয় আপনিই? প্রতিদিন রাতে কল করে চুপ করে থাকের যে সেই তাই তো? পান কি এসব করে? ”
সাদ কন্ঠটা লাউড স্পিকারে দিয়েই শুনাল। পরমুহুর্তেই কল রেখে দিতে গিয়েও বলে,
“ আপনাকে দেখতে এসেছিলাম। রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি।বেলকনিতে আসবেন একটু?”
কথাটা বলেই সাদ কল রাখে। আবিরকে বলে,
“ দেখলেন তো ভাই? এটা ছুটির কন্ঠ না। বিশ্বাস হলো তো? তাও বিশ্বাস না হলে বেলকনিতে তাকান। রাহা হয়তো আসবে কৌতুহল থেকে। ”
কথাটা বলার একটু পরই বেলকনিতে আরো একটা ছায়ামূর্তি দেখা গেল যা রাহার। বেলকনিতে এসেই চারপাশে চোখ বুলিয়ে কিছু খুুজছিল যেন সে৷ ছুটি তা পরখ করেই বলে উঠল,

“ কি হলো? কি খুঁজছিস তুই?”
রাহা খুঁজতে খুঁজতেই বলে,
“একজন কল দিল মাত্র। ”
ছুটি কৌতুহল নিয়ে বলে,
“ কে কল দিল?”
“যে কয়েকদিন পরপর অচেনা নাম্বার থেকে কল করে চুপ করে বসে থাকে,ভালোবাসার কথা বলে সেই লোকটা।”
ছুটি হাসে এবারে। বলে,
“ ভালো তো। তো কে সে বেচারা? ”
রাহা ফোন এগিয়ে ধরল। নাম্বারটা দেখিয়ে বলে,
“ জানি না তো। এই নাম্বার থেকে কল এল আজ। ”
ছুটি প্রথমে খেয়ালই করল না। পরমুহুর্তেই নাম্বারটা খেয়াল করে চোখ গোলগোল করে তাকায়। এই নাম্বারটাই? এটা তো আবির ভাইয়ের নাম্বার। তার মুখস্থ আছে।ছুটি তবুও নাম্বারটা মিলাল মনোযোগ দিয়ে। দ্বিধান্বিত স্বরে বলে,

”এটাই?শিউর এটাই নাম্বার?”
“ হ্যাঁ! একটু আগেই তো কল দিল। সে নাকি আমায় দেখতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে আপু।”
রাহা যেন এবারে দুয়ে দুয়ে চার মিলাতে পারল। আবির তাহলে এই কারণেই এদিকে এসেছে? এইকারণেই? আবির ভাই তো তাকে ভালোবাসে না। ওটা তো একটা খেলা খেলল কেবল। যদি রাহাকে ভালো বাসেও ক্ষতি কি? ছুটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে। চোখ টলমল করে তার। এই প্রথম তার মনে হলে তার জীবনের কোন ভ্যালু নেই। কেন অর্থ নেই।সে এক গুরুত্বহীন মানুষ এই পৃথিবীতে যাকে কেউ কখনো ভালোবাসেনি। যার ভালোবাসার গুরুত্ব কেউ কখনে দেয়নি।

সকালের আলো ফুটেছে। স্বচ্ছর ঘুম ভেঙ্গেছে বহু আগেই৷ এতোটা সময় ধরে সে এক দৃষ্টিতে মনোযোগ দিয়ে দেখে যাচ্ছে তারই সুহাসিনীকে। ঘুমন্ত মুখটা বড্ড মায়াবী লাগে যেন।বড্ড আকৃষ্ট হয় সে। স্বচ্ছ বাম হাত বুলিয়ে সুহার মুখে আঙ্গুল চালায়।পরমুহুর্তেই হতাশ শ্বাস ফেলে। বড্ড আদর আদর লাগছে মুখটা। একটা চুমু খেলে কি অপরাধ হবে তার? ঘুমন্ত অবস্থায়?তারই তো বউ! স্বচ্ছ নিজেকে সামলাল। কিন্তু পরমুহুর্তেই চোখ যায় সুহার গলায়।ফর্সা গলাটায় কিছু চুল এলোমেলো হয়ে আছে। স্বচ্ছ হাত বাড়ায় এবারে। সুহার চুল গুলো গলা থেকে সরিয়ে দিতেই দৃশ্যমান হলো ফর্সা গলাটা।তর্জনী আঙ্গুল ছুঁইয়ে গলায় আঙ্গুল বুলাল সে। যা স্থির হয় গলার তিলটায়। সুহা ঘুমন্ত অবস্থাতেই পুরুষালি হাতের মৃদু স্পর্শে কেঁপে উঠে। ঘুম ছেড়ে কেমন করে স্বচ্ছর দিকে চাওয়ার আগেই স্বচ্ছ ঝুঁকে গেল। শুকনো ঢোক গিলে বার কয়েক। পরপরই নিজের ঠোঁটজোড়া নিঃশব্দে সুহার গলায় ছোঁয়ায়। সদ্য ঘুম ভাঙ্গা সুহা পুরুষালি পুরু ওষ্ঠের স্পর্শ বুঝতেই শিহরিত হয়৷ শিরশিরে এক অনুভূতি হয় শরীরময়। হৃদস্পন্দনও বেড়ে এল এই একটা ছোঁয়াতেই। সুহা বুঝে উঠতেই মুহুর্তেই লাফ মেরে দূরে সরে। চোখজোড়া তখনো ঘুমোঘুমো।কিয়ৎক্ষন চুপ থেকে থম মেরে থাকে সে। পরমুহুর্তেই গলায় হাত রাখে। বলে উঠে ঝাঝালো স্বরে,

প্রেমের সমর পর্ব ২০

“ কিসব করছেন? খুব ছুুঁইছুঁই স্বভাব না আপনার ? যেই মেয়ে দেখলেন সেই ছোঁয়াছোঁয়ি করছেন এখন? সুযোগ নিচ্ছেন স্বচ্ছ? ”
স্বচ্ছ হাসে ঠোঁট বাঁকিয়ে। বলে,
“ চুমুর শোধবোধ করছিলাম। তবুও যদি আমার ছোঁয়া পেয়ে তোমার মনে হয় যে সুযোগ নিচ্ছি ওকে ফাইন! পরবর্তীতে সুযোগই নিব। ”

প্রেমের সমর পর্ব ২২