তোর প্রেমে উন্মাদ আমি পর্ব ২২
Raiha Zubair Ripti
সূর্যের ঝলমলে রোদ চোখ মুখে পড়তেই আরুর ঘুম ভেঙে যায়। ঝাপসা চোখে তাকালো। নিজেকে আরাধ্যর বাহু ডোরে দেখে আরাধ্যর মুখের দিকে তাকালো। আরাধ্য তার দিকেই তাকিয়ে আছে। আরু তড়িঘড়ি করে উঠে বসলো। তারপর ওয়াশরুমে গিয়ে গোসল সেরে নিলো। ভেজা চুলে টাওয়াল বেঁধে সুতি থ্রিপিস পড়ে বের হলো। আরাধ্য কে এখনও বিছানায় চিৎপটাং হয়ে শুয়ে থাকতে দেখে আরু বলল-
-” ফ্রেশ হয়ে আসেন এমনে চিৎপটাং হয়ে শুয়ে না থেকে।
আরাধ্য উঠে বসলো। শার্ট গায়ে দিয়ে আরুর দিকে এগিয়ে আসলো। আরুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ঘাড়ে মুখ গুঁজে দিয়ে ফিসফিস করে বলল-
-” সদ্য গোসলে ভেজা চুলে তোকে এত্তো সুন্দর লাগে কেনো? ইচ্ছে করে চুমু খাই তোর টসটসে গাল গুলো তে।
আরু আরাধ্যর থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলল-
-” এটা সব পুরুষই বলে। নিউ কিছু বলুন।
-” উমমম কি বলি কি বলি..মনে পড়েছে…”ওহে কন্যা, সদ্য গোসলের পর তুই ঠিক যেন বর্ষার প্রথম ভেজা সকাল! তোর গায়ে লেগে থাকা পানির ফোঁটাগুলো মনে হয় যেন সকালের শিশির, যা আমি হাত বাড়ালেই উবে যাবে… আর তোর ভেজা চুল? উফ! মনে হচ্ছে শরতের কালো মেঘ এখনই বৃষ্টি নামাবে।
আরু বাকা চোখে তাকালো। আরাধ্য হেঁসে মাথা চুলকে বলল-
-” সাহিত্য নিয়ে পড়িনি তো তাই গুছিয়ে বলতে পারি না।
-” হয়েছে যান ওয়াশরুমে ক্ষুধা পেয়েছে আমার।
আরাধ্য আরুর চুল থেকে ভেজা টাওয়াল খুলে নিয়ে চলে গেলো।
কটেজের খাবার টেবিলে বসে আছে সুমি পারভেজ। অপেক্ষা আরু আরাধ্যর। সুমি খাবারের দিকে তাকিয়ে বলছে-
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
-” ওর কি এখনও ঘুমাচ্ছে নাকি? এই টাইমে যে ব্রেকফাস্ট টাইম ভুলে গেছে নাকি। একটা ফোন করো তো পারভেজ।
পারভেজ ফোন করতেই যাচ্ছিলো আরাধ্য চেয়ার টেনে বসে বলল-
-” এসে গেছি আমরা।
সুমি খাবারের হাত দিয়ে বলল-
-” এত দেরি হলো কেনো?
আরাধ্য খেতে খেতে বলল-
-” ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলো।
-” কেনো রাতে কি ঘুমাস নি নাকি?
-” না ঘুমানোর সময় পাই নি।
আরু খাচ্ছিলো। আরাধ্যর উত্তর শুনে বিষম খেলো। আরাধ্য পানির গ্লাস এগিয়ে দিলো।
-” ঘুমাস নি কেনো?
-” আসলে গতকাল রাতে এত গরম পড়েছিল যে কি বলবো।
-” গরম পড়েছিল! রুমে তো এসি ছিলো।
-” আমাদের রুমের এসি তো নষ্ট হয়ে গেছে।
-” সে কি জানাস নি ম্যানেজার কে?
-” হ্যাঁ জানিয়েছি তো। ওখান থেকে যাওয়ার পর বাকি রাত আমি আরু গরমে ঘুমাতেই পারি নি। পরে সকালের দিকে চোখ লেগে যাওয়ায় উঠতে দেরি হলো এই আর কি।
-” ওহ্ আচ্ছা।
সকালের ব্রেকফাস্ট করে তার কটেজের আশেপাশে ঘুরে দুপুরে লাঞ্চ করে বের হলো ঘুরার জন্য। কটেজ থেকে দূরে একটা সুন্দর জায়গা আছে। আরু রা সেখানেই আসলো। রোদের ঝিলিমিলি আলোয় উদ্যান টা অসাধারণ লাগলো। আরু আরুর ফোনটা আরাধ্যর হাতে দিয়ে বলল-
-” আমার কয়েক টা ছবি তুলে দিন তো।
আরাধ্য পকেট থেকে নিজের ফোন বের করে বলল-
-” নো নিড। আমার ফোনের ছবি তোর ফোনের থেকে সুন্দর হয় আফটাঅল আমার ফোন…
-” আইফোন জানি তো।
আরু পোস দিলো আরাধ্য তুলে দিলো ছবি। আরু যেতে যেতে মাঠের কিনারে গিয়ে দাঁড়ালো। আরাধ্য ধমক দিয়ে বলল-
-” মরার জন্য কিনারে যাচ্ছিস কেনো? এদিকে আয়।
আরু সামনের দিকে আগাতেই ইটে উষ্টা খেয়ে পড়ে যেতে নিলে দুই হাত আরুকে ধরে ফেলে। আরু ভেবে বসে এটা আরাধ্য। ঐ সিনেমা নাটকের মতন আরাধ্য দৌড়ে এসে পড়া থেকে বাঁচিয়ে নিয়েছে। সেজন্য আরু মৃদু হেঁসে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে থ্যাংকস বলার জন্য মুখ খুলতেই ওপর পাশ থেকে অচেনা পুরুষালি গলায় ভেসে আসে—
-” আর ইউ ওকে মিস?
আরু মুখের দিকে তাকায়। অচেনা এক পুরুষ। আরাধ্য এগিয়ে আসে। লোকটার দিকে তাকিয়ে দাঁত চেপে বলে-
-” ধন্যবাদ আমার স্ত্রী কে বাঁচানোর জন্য কিন্তু এভাবে বহু ধরে থাকাটা একদমই শোভা পাচ্ছে না। তাই হাত ছাড়ুন।
আরাধ্য আরু কে নিয়ে চলে আসলো। আরুর মাথায় চাটি মেরে বলল-
-” মুখ থুবড়ে পড়লে কেমন লাগতো? সব মানুষ তোর দিকে তাকিয়ে থাকতো। ভালো লাগতো?
আরু মাথা ডলতে ডলতে বলে-
-” আশ্চর্য মানুষ কি পড়ে না?
-” এমন দামড়ি মার্কা মেয়ে রা পড়ে না।
সন্ধ্যা হতেই আরাধ্যরা কটেজে চলে আসলো। আরু ফ্রেশ হয়ে কটেজের করিডর দিয়ে হাঁটছে। আরাধ্য রুমে কাজ করছে৷ আরু রেলিঙ ঘেঁষে দাঁড়ালো করিডরের। নিচে আলোকিত সবাই বসে আছে চেয়ারে৷ পাশে এসে কেউ দাঁড়ালো। আরু ঘাড় ফিরিয়ে তাকালো। সেই লোকটা দাঁড়িয়ে আছে। আরাধ্য সবেই এদিক টায় আসছিলো। আরু কে সেই ছেলের সাথে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকালো। এগিয়ে এসে বলল-
-” আপনি এখানে!
লোকটা আরুর দিকে তাকিয়ে বলল-
-” হ্যাঁ এই কটেজেই উঠেছি।
-” উঠেছেন ভালো কথা। আমার বউয়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন কেনো?
-” কেনো মিস্টার এটা কি আপনার ব্যক্তিগত কটেজ নাকি যে দাঁড়ানো যাবে না?
-” কটেজ টা আমার ব্যক্তিগত না হলেও যার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন সে আমার ব্যক্তিগত। তাই ডিস্টেন্স মেইনটেইন করুন। এতেই আপনার মঙ্গল।
-” বউকে ভালোবাসেন বুঝি অনেক?
-” উত্তর টা দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না আপনায়।
আরাধ্য আরু কে নিয়ে চলে আসলো রুমে। পরের দিন সকালে আরু রা ব্রেকফাস্ট করে সব গুছিয়ে নিলো। দুপুরের দিকে ঢাকায় ব্যাক করবে। সেজন্য কটেজের বাহিরে দাঁড়িয়ে আরাধ্য ম্যানেজারের সাথে কথা বলছে। আরু সুমির সাথে দাঁড়িয়ে দূরে।
আরাধ্য ঘাড় ফেরাতেই কালকের সেই লোকটাকে দেখে বিরক্ত হলো। কেমন আরুর দিকে তাকিয়ে আছে! সমস্যা কি এই লোকের? সেজন্য আরাধ্য এগিয়ে গেলো।
-“ হেই হোয়াটস ইয়োর প্রবলেম? বারবার
কেনো আরুর আশেপাশে ঘুরঘুর করছেন? কি চাই? ওর দিকে ওভাবে অদ্ভুত দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছেন কেনো?
আরাধ্যর কথায় সামনে থাকা লোকটা বাঁকা
চোখে তাকালো। স্ট্রেট ফরওয়ার্ড ভাবে দূরে
দাঁড়িয়ে থাকা আরুর দিকে তাকিয়ে বলল-
-” আই লাইক ইউর ওয়াইফ মিস্টার আরাধ্য
আহমেদ। এন্ড আই নিড ইউর ওয়াইফ।
কথাটা আরাধ্যর কান অব্দি আসতেই আরাধ্যর
পায়ের রক্ত মাথায় উঠে আসলো। তেড়ে
গিয়ে লোকটার গলা চেপে বলল-
-” আই উইল রিপ ইয়োর টাং আউট! রাস্কেল,
হাউ ডেয়ার ইউ! ইউ আর সেয়িং রাইট ইন
ফ্রন্ট অব মি দ্যাট ইউ লাইক আরু? আই
উইল টেয়ার ইয়োর হার্ট আউট!”
লোকটা মুচকি হাসলো। আরাধ্যর থেকে
নিজেকে ছাড়িয়ে বলল-
-” হোয়াই আর ইউ গেটিং সো হাইপার, মিস্টার?
আই জাস্ট সেড আই লাইক হার। এন্ড
আই নিড হার। তুলে তো আর নিয়ে যাই নি।
ছুঁয়েও তো দেখি…
আর বলতে পারলো না। আরাধ্য নাক বরাবর
ঘুষি বসিয়ে দিলো। লোকটা মৃদু শব্দ করলো
ব্যথায়। শব্দ শুনে আরু পাশ ফিরতেই
দূরে আরাধ্য কে সেদিনের বিকেলে দেখা
লোকটার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে
কপাল কুঁচকালো। আরু এগিয়ে আসলো
আরাধ্যর কাছে। আরাধ্য লোকটার দিকে এগিয়ে
মাথার চুল টেনে ধরে বলল-
-” নিড হার? নিড হার তর পা’ছা দিয়ে ভরে দিব
কু’ত্তার বাচ্চা । আরু আমার, তোর মতো
একটা ডেগা লোকের সাহস হয় কি করে
এসব বলার! তর ঐ মুখই আমি ভেঙে দিব।
তুই আরেকবার সামনে আসবি তোর ঐ থোবড়া
টা নিয়ে, কসম তোর শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ
ঠিক থাকবে না! তোর কপাল ভালো এটা
সাজেক দেখে বেঁচে গেলি। ঢাকা হলে
তোরে রাস্তায় নিয়ে কু’ত্তার মতন পেটাতাম আমার
কলিজার দিকে কুনজর দেওয়ার অপরাধে।
ম্যানেজার দৌড়ে আসলো। আরাধ্যর থেকে ঐ লোক কে ছাড়িয়ে বলল-
-” কি করছেন কি স্যার ছাড়ুন। উনি আমাদের কটেজের একজন গেস্ট। তার সাথে এমন করতে পারেন না।
আরাধ্য ঝাড়া দিয়ে সরিয়ে দিলো ম্যানেজার কে। রাগে কিড়মিড় করতে করতে বলল-
-” আপনার কটেজের গেস্ট মাই ফুট। ওর জিহ্বা আমি টেনে খুলে রাখবো। আর একমুহূর্ত যদি ওকে আমি আমার সামনে দেখি তো। ওর কতবড় সাহস ও আমার বউকে নিয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা বলে। আপনার কটেজ আমি বন্ধ করে দিব বলে রাখলাম।
-” উত্তেজিত হবেন না। আপনারা তো চলেই যাচ্ছেন আজ।
আরাধ্য ঐ লোকের দিকে তাকিয়ে বলল-
-” ঢাকায় একবার তোর দেখা পাই। সেদিন বুঝিয়ে দিব।
কটেজের রুমে ফিরে রাগে ফুঁসতে থাকলো আরাধ্য। আরু পানির গ্লাস এগিয়ে দিয়ে বলল-
-” পানি খেয়ে নিন।
-” তোর পানি তুই খা। আর সামনে থেকে সর তো। তোরে দেখলে আমার আরো রাগ বাড়তেছে।
-” আশ্চর্য আমি কি করলাম?
-” তোকে নিয়ে ঐ কু’ত্তার বাচ্চা এসব কথা কেনো বলবে?
-” সেটা আমি কি করে জানবো?
-” কথা বলিস না এখন। একা থাকতে দে। উল্টাপাল্টা কিছু বলে ফেলবো তোকে।
দুপুরের দিকে বেরিয়ে পড়লো সবাই ঢাকার উদ্দেশ্যে। সারা রাস্তা আরাধ্য তেমন একটা কথা বলে নি আরুর সাথে।বাসায় ফিরেও আরাধ্য চুপচাপ গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
আরু ইচ্ছে করছে ঐ বেয়াদব বেডার মাথা ফা’টাতে। বেয়াদব বেডার জন্য আরাধ্য রেগে আছে৷
আয়ুশ বোন আর ব্রো এর ফেরার কথা শুনে পরেরদিন বিকালে এ বাড়ি আসে। আরাধ্য সবে মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফিরেছে। সোফায় আয়ুশ কে দেখে বলল-
-” খবর পেতেই এসে হাজির?
-” ইয়েস। ঘুরতে গিয়ে তো আমাকে ভুলেই গিয়েছিলে। তাই এসে মনে করিয়ে দিলাম আয়ুশ নামেও কেউ আছে তোমাদের।
-” তুই যেই চিজ তোকে সারাজীবন ই মনে থাকবে।বল কোন কাজে এসেছিস? উদ্দেশ্য ছাড়া তো আমায় তুই মনে করিস না।আরশির কোনো বিষয়?
-” না। আমি কি সব সময় শুধু আরশি কে নিয়েই কথা বলি নাকি হু?
-” না তুমি আরশি কে নিয়ে কথা বলো না।
-” চলো আমাকে নিয়ে খাওয়াতে।
-” কেনো তোকে বাসায় খেতে দেয় না?
-” দেয় তো কিসব আধা সিদ্ধ শাকসবজি। আম্মু ভিডিওতে দেখছে এসব খেলে নাকি ব্রেন ভালো হয় বাচ্চাদের। আমি কি বিদেশি পুলাপান নাকি যে আধা সিদ্ধ খাবার খাব? আমি তো মাছে ভাতে বাঙালি। আমি খাবো ঝাল ঝাল কষা কষা খাবার। চলো আজ খেতে যাওয়া যাক।
-” বাসায় রান্না করা খাবার আছে সেগুলো খা।
-” আরে টেনশন করো না। বিল আমি দিব।
-” টাকা কই তোর কাছে?
আয়ুশ পকেট থেকে টাকা বের করে বলল-
-” এই যে টাকা।
আরাধ্য দেখলো ১ হাজার টাকার দুটো নোট আয়ুশের কাছে।
-” এত টাকা কিসের? চুরি করেছিস? নাকি টিউশনের বা এক্সামের ফী বলে টাকা মেরে দিয়েছিস?
-” ছি ব্রো তোমার কি আমাকে ডিজঅনেস্ট মনে হয়? আমি ভীষণ অনেস্ট, লয়াল ওক্কে?
-” টাকা কোথায় পেলি তাহলে?
-” বাবা দিয়েছে।
-” কোন খুশিতে?
-” এবার আমি এক সাবজেক্ট বাদে সব গুলোতে পাশ করেছি সেজন্য।
-” এক সাবজেক্টে ফেল মেরেছিস আয়ুশ। আর তারজন্য তোকে টাকা দিলো খুশি হয়ে?
-” হ্যাঁ।
-” কত মার্ক পেয়ে পাশ করেছিস?
-” উমম দাঁড়াও মনে করি। বাংলায় ৪০,ইংরেজি তে ৩৩,সমাজে ৩৫, ইসলামে ৩৯ আর গনিতে ২৮।
-” এগুলো কোনো মার্ক হলো ছি!
-” কেনো খুশি হও নি? বাবা তো খুশি হয়েছে পাশ করেছি বলে। নেক্সট টাইম সব গুলোতে পাশ করলে আরো বেশি টাকা দিবে। বলছে যা চাইবো তাই দিবে।
-” চল তাহলে খেতে।
-” আমি আর তুমিই শুধু?
-” তাহলে আর কে যাবে সাথে?
-” তোমার বোন আর আমার বোনকেও নিয়ে চলো। আমি তুমি খাবো ওরা খাবে না?
আরাধ্য আরু, আরশি কে রেডি হতে বলল। তারপর চার জন বের হলো। বাসা থেকে পাঁচ মিনিটের দূরত্ব এক রুফটফে আসলো তারা। আয়ুশ নিজের পছন্দের মতন খাবার অর্ডার দিয়েছে। তার ভেতর আরশির পছন্দের খাবার এড ছিলো। খাবার আসলো সবাই খেলো।
আয়ুশ আরশি কে জিজ্ঞেস করলো-
-” খাবার টা অনেক ডেলিশিয়াস তাই না?
-” হুম।
খাওয়া শেষ করে আয়ুশ বিলের কাগজে দেখে বিল এসেছে ২৫০০ টাকা। অথচ আয়ুশের কাছে আছে ২০০০ টাকা।আয়ুশ আরাধ্যর দিকে তাকিয়ে বলল-
-” ব্রো টাকা তো শর্ট। ৫০০ টা তুমি ভরে দিয়ে দাও। নেক্সট বার পাশ করলে টাকা দিলে শোধ করে দিব পাক্কা। আরাধ্য ৫০০ ভরে বিল পে করে রেস্টুরেন্টের বাহিরে আসলো। আয়ুশ পকেটে হাত দিয়ে ভাব নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। রাস্তার ওপাশে চোখ যেতেই আরশির খালা শ্রেয়া কে এক লোকের সাথে দেখো বলল-
-” ব্রো তোমার কাউয়া খালা।
আরাধ্য ভ্রু কুঁচকালো।
-” কাউয়া খালা মানে?
-” আরে তোমার খালামনির কথা বলেছি। আচ্ছা উনি কি পকরিয়া করে?
-” পকরিয়া কি আবার?
-” আরে ঐ যে বিয়ে হয়ে গেছে তারপর ও অন্য ছেলের সাথে ঘুরাঘুরি করে।
-” ওটা পকরিয়া না।
-” কি তাহলে?
-” প’রকিয়া। তা উনাকে কোথায় দেখলি?
-” ঐ তো রাস্তায় ওপাশে ঐ যে হা হা করে হাসছে এক লোকের সাথে দাঁড়িয়ে।
আরাধ্য রাস্তার ওপাশে দাঁড়ালো। শ্রেয়ার পাশে কটেজের ঐ লোকটা কে দেখে গতকাল কের রাগ টা আবার তাজা হয়ে গেলো। শনির দষার মতন এই লোক দেখি তাদের সাথে জড়িয়ে গেছে। টানা কয়েক দিন ধরে শুধু সামনা-সামনিই ঘুরছে। আরাধ্য এগিয়ে যেতে চাইলে আরু বাঁধা দেয়। আয়ুশ ভাবুক হয়ে বলে-
-” তোমার খালা মনি বুড়ি বয়সে ইয়াং ছেলের সাথে ঘুরছে! ছিঃ তোমার খালামনির স্বামী না হসপিটালে? তোমার খালা মনি পঁচে গেছে ব্রো।
তোর প্রেমে উন্মাদ আমি পর্ব ২১
আরাধ্য তাকিয়ে রইলো ঐ লোকের দিকে। শ্রেয়া খালার সাথে ঐ লোকের কি সম্পর্ক? সত্যি কি তেমন কিছু আছে ওদের মাঝে? তাহলে কেনো বলল সে আরুকে পছন্দ করে? কে এই লোক? পরিচয় কি তার? খুঁজে বের করতে হবে।
