প্রেমের সমর পর্ব ৩৯
অলকানন্দা ঐন্দ্রি
ছুটি প্রায় বেলা বারোটা করেই ঘর ছেড়ে বাইরে বের হলো। আবিরের বাসার প্রত্যেকটা মানুষের সাথে দেখা হতেই খেয়াল করল কেমন করে যেন চেয়ে আছে। ছুটি প্রত্যেকবারই এক একটা বোকা হাসি উপহার দিল তাদের দৃষ্টি দেখে৷ পরমুহুর্তেই কেমন চুপসে গেল। সবাই কি অন্যকিছু ভাবছে? এতোটা সময় যাবৎ রুমে থাকার দরুণ অন্য ভাবনা চিন্তা মাথায় ডুকিয়েছে? ছিঃ ছিঃ! ছুটির এই মুহুর্তে লজ্জা লাগে বিনা কারণেই। মস্তিষ্কে অতরিক্ত ভাবনা চিন্তায় নিজেই যখন বিরক্ত হয়ে রুমে আবার ফেরত যাবে ঠিক দেখা হলো আবিরের দাদীর সাথে। সরু চাহনিতে চেয়ে থেকে মুখ টিপে হাসলেন উনি। ঠোঁট রাঙ্গানে আছে পানের রসে। শুধালেন,
“ ঘুম হলো ঠিকমতো রে? ”
ছুটি ভ্রু উঁচিয়ে তাকাল। কন্ঠটা শুনে মনে হলো খোঁচা মেরে বলল যেন। শুধাল,
“ ওভাবে হাসছো কেন বুড়ি? ঘুম না হওয়ার মতো নিশ্চয় কোন কারণ ছিল না যে তুমি এভাবে হাসছো।”
দাদী ফের মুখ টিপে হাসলেন। পান চিবোতে চিবোতে বলে উঠলেন,
“ একেবারেই ছিল না? তো এত বেলা অব্দি ঘুমাইয়া কি করলি শুনি? গোসলই বা না করে বের হলি কেন শুনি? ”
গোসলের প্রসঙ্গ আসতেই ছুটির মাথায়কিছু একটা ডুকল যেন। বুঝে উঠেই লজ্জ্বা পেল। তবুও শুধাল,
“ হ্ হু? ”
দাদী হাসে। ছুটিকে একটু আধটু লজ্জ্বা পেতে দেখে সন্দেহী স্বরে শুধায়,
“ লজ্জ্বা পাচ্ছিস নাকি? ”
ছুটি মুহুর্তেই অস্বীকার করল। বলল,
“ আজব! লজ্জা কেন পাব? গোসল করা স্বাভাবিক বিষয়। এতে লজ্জ্বা পাওয়ার কি আছে শুনি? ”
দাদী তবুও হাসে। বলে,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“ আচ্ছা? তাহলে যা। জলদি গোসল সেরে আয়। আর হ্যাঁ, আমার দাদুভাইটিকেও একটু কান ধরে টেনে নিয়ে আসিস বাইরে। আমি তো তার মুখটাই দেখতে পেলাম না আজ একটিবার। ”
“ আমি কেন নিয়ে আসব? তোমার নাতি। তুমি গিয়ে দেখে আসতেই পারো৷ ”
দাদী হেসে হেসে উত্তর করল,
” কারণ নাতিটি এখন আপনার দায়িত্বেই আছেই ছুটিসাহেবা!”
ছুটি দাদীর সাথে সেটুকু কথা বলেই লজ্জ্বায় সংকোচে ইতস্থত করে রুমে ফিরে এল ফের। খাটের এককোণায় বসে ভাবল আনমনে। সবাই নিশ্চয় এত দেরিতে ঘুম ছেড়ে উঠাতে ভেবে নিয়েছে ওদের মধ্যে কিছু হয়েছে। এবং গোসল সেরে বের না হওয়াতেই বোধহয় সবাই ওভাবে তাকিয়ছিল এটাই মনে মনে ভাবল ছুটি। সাথে সংকোচ জাগল। মুখটা চুপসে গেল কেমন। এককোণে বসে এসব ভাবতে ভাবতেই ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে এল আবির। চুলগুলো ভেজা তারর।পরণে একটা সাদা তোয়ালের ব্যাতীত কিছুই নেই৷ বিন্দু বিন্দু পানির কণা অবশ্য শরীরময় অবস্থিত। ছুটি বুঝল এই আবির ব্যাটা গোসল করে বেরিয়ছে। তারও এখন গোসল করতে হবে। দাদী বলেছে। বাকিসবও কি না কি ভাবছে তার চাইছে গোসল করে ফেলাটা উত্তম মনে হলো ছুটির। কিন্তু জামাকাপড়? ছুটি তো ব্যাগপত্রর তেমন আনেনি। ছুটি মুখ কুঁচকে বসে থাকে। কিছুই বলে না। আবির তা দেখে এগিয়ে আসে। কিছুটা ঝুঁকে নিজের ভেজা চুলে হাত দিয়ে ঝাড়া দিতেই জল গিয়ে পড়ল ছুটির চোখে মুখে। ছুটি চোখ বুঝে।আবির তখনই বলে উঠল,
“ সমস্যা কি? এমন পেঁচার মতো মুখ করে বসে আছিস কেন? ”
ছুটি তাকায় নিভু নিভু দৃষ্টিতে। সঙ্গে সঙ্গে উত্তর করে,
“ আমি বাসায় যেতে চাচ্ছি আবির ভাই। দিবেন যেতে? ”
আবির উত্তরটা আশা করেনি। তবুও এই কথাটা কেন বলা হলে তা নিয়ে ভাবল সে। শুধাল,
“ কোন বাসা? ”
“ আমার বাসা। ”
আবির তৎক্ষনাৎ দৃঢ় স্বরে বলে,
“ প্রয়োজন নেই। ”
ছুটি করুণ চাহনিতে তাকায়। বলে,
“ দুই মিনিটের পথই তো আবির ভাই। যাব আসব। জামা কাপড় আনব কেবল । ”
আবির গলল না। বরং ছুটির থুতনিতে হাত রেখে গলা দৃঢ় করে বলে উঠে,
“ এক সেকেন্ডের পথ হলেও যাওয়ার দরকার নেই। গুণে গুণে আটদিন থাকব আর। এই আটদিনে এক সেকেন্ডও যদি আমার থেকে দূরে থাকার পরিকল্পনা করিস ফল খারাপ হবে ছুটি। ”
ছুটি তৎক্ষনাৎ প্রশ্ন ছুড়ে,
“ আটদিন কেন? ”
আবির হাসে এবারে। বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে ছুটির থুতনিতে আঙ্গুল বুলাতে বুলাতে ঠোঁট বাঁকিয়ে বলে,
“ তুই চাইলে সম্পূর্ণ জীবনটাই থেকে যেতে পারি তোর সাথে।তোর ইচ্ছায়। ”
ছুটির শরীর শিরশির করে কথাটায়। কন্ঠটা অতিরিক্ত জড়ানো যেন। আবির ভাই তাকে দুর্বল করে ফেলছে আপাদমস্তাক!ভেবেই ছুটি সরে বসে। বলে,
“ আজকাল কি মেয়েদের পটানোর ট্রিকস শিখেছেন কোথাও থেকে?আগে তো দেখতাম কথাও বলতেন না। ”
আবির এবারে ছুটির পাশেই বসে। বলে,
“ আগে বউ ছিলি না, এখন বউ হোস। ”
মুহুর্তেই ছুটি প্রশ্ন ছুড়ল,
“ আগে ভালোবাসতেন না, এখন কি ভালোবাসেন?”
আবির দীর্ঘশ্বাস টানে। এখন ভালোবাসি বললেও যে মেয়েটা বিশ্বাস করবে না তা ভালো করেই জানে সে। বলে,
“ ভালোবাসি বললেও তুই যে বিশ্বাস করবি তার নিশ্চায়তা নেই। আর আবিরের ভালোবাসাটা ফেলনা নয় যে বারবার বলেকয়ে তোর তাচ্ছিল্যের কারণ বানিয় এটাকে মূল্যহীন করব। ”
ছুটি হাসে। তাচ্ছিল্যের হাসি। আবিরের চোখের দিকে সরাসরি চেয়ে থেকে বলে,
“ যদি ভালোবাসতেন তাহলে সেটা অবশ্যই আমার কাছে পৃথিবীর সবচাইতে মূল্যবান বস্তু হতো আবির ভাই। ”
আবির চুপ থাকে। ছোটশ্বাস টেনে মনে মনে বলে উঠে,
” অথচ তুই জানিসই না সে মূল্যবান অনুভূতিটা তুই কবেই জয় করে নিয়েছিস ছুটি। ”
কথাটা মনে মনে আওড়ালেও বাইরে শুধায় না। বরং প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলে,
“ গুড! তো হঠাৎ জামাকাপড়ের প্রয়োজন পড়ল কেন? ”
“ গোসল করতে হবে,আপনি তো গোসল করে নিয়েছেন সাধু পুরুষের মতো। আর এইদিকে মানুষ ভাবছে আমি গোসল করিনি। ”
আবির ভ্রু উঁচাল। বলল,
“ গোসল না করাটা তো চরম অপরাধ বলে মনে হচ্ছে না। ”
ছুটি দাঁতে দাঁত চেপে তাকাল। এমন সাধু সাঁজছে যেন কিছুই জানে না। ছুটি ফোঁস করে শ্বাস টেনে বলে,
“জানি না, দাদী বলেছে গোসল করতে। ”
আবির কারণ বুঝে উঠে হাসে তবে আড়ালে। হেঁটে গিয়ে নিজের টাউজার এবং টিশার্টটা নিতে নিতে গম্ভীর স্বরে বলে,
“ বলে দিতি, গোসল করার মতো কিছু হয়ে উঠে নি আমাদের। ”
ছুটি ফের ফোঁস করে শ্বাস টেনে বলে,
” এটা তো আমিই জানি কেবল যে গোসল করার মতো কিছু হয়নি আমাদের মাঝে। ”
আবির ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায়।ভ্রু উঁচু করে বলে,
“ গোসল করার মতো কিছু ঘটে গেলে কি খুশি হতি তুই? মনে মনে চাস যে কিছু হোক?”
ছুটি এই পর্যায় হেসে উত্তর করল,
” আপনার আমার মাঝে কোনদিন কিছু হবে না যে এইটুকু আমি শিওর আবির ভাই। অন্তত আপনি মানুষটা তেমন নন। হয়তো কোন কারণে বিয়েটা করেছেন, একটু আধটু বিভ্রান্ত করার জন্য মাঝেমাঝে চুমু দিচ্ছেন তবে এতোটাও বিবেকভ্রষ্ট আপনি হবেন না যে একটা মেয়ের সাথে হাবিজাবি কিছু করে ফেলবেন শুধুমাত্র স্বার্থের জেরে বা নিজস্ব কোন কারণে।”
এতগুলো কথা এক টানে শুনলেও মানতে পারল না আবির। মুহুর্তেই বলল,
“ নিজস্ব কারণেই হাবিজাবি করব, তাও তোর সাথেই! একপ্রকার স্বার্থপূরণ ভাবলেও এটাতে কিছু করার নেই। তবে তুই এতোটা নিশ্চিত কি করে যে কিছুই হবে না? পুরুষত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছিস নাকি আমার? ”
ছুটি মুখ চোখ কুঁচকে বলে উঠে,
“ ছিঃ!”
আবির বিরক্ত হয়। ফের ছুটির সামনে এসে ঝুুকে গিয়ে বলল,
“ ছিঃ এর কি হলো? বিয়ে করে বউ এনেছি ঘরে। বউ হোস এখন, অন্য মেয়ে না। একদিন ছেড়ে দিয়েছি মানে প্রতিদিনই ছেড়ে দিব ভাবাটা বোকামো। অবশ্য কাল রাতেও কিছু না হওয়ার পেছনেও দোষীটাই তুই-ই কেবল ছুটি!”
ছুটি বুঝে উঠে না যেন।বলে,
“ আমি দোষী? কি করেছি?”
আবির হাসে ঠোঁট কাঁমড়ে। বিছানায় ঝুঁকে গিয়ে দুই হাত রাখল ছুটির হাতের দুই পাশে। নজর রাখে একদমই ছুটির নজরে। যা এতোটাই দৃঢ় এবং প্রখর যে ছুটি দৃষ্টি রাখতে পারল না। আবির মুখ গম্ভীর করে সেভাবে থেকেই দৃঢ় স্বরে বললো,
“ তুই যদি দোষী না হতিস তোকে কালকের রাতটা অবশ্যই ভিন্ন কাঁটাতে হতো ছুটি। ছেড়ে দিতাম না নিশ্চয়? কারণ আমার অনুভূতি বহুদিনের,বহু গাঢ়!অনুভূতিরা এতকাল প্রকাশ হওয়ার অপেক্ষায় ছিল! তুই যদি নির্দোষ হতিস আমার এতকালের অনুভূতির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতাম তোকে ছুটি। এবং আমি শিওর যে তোকে হিমশিম খেতে হতো আমার অনুভূতি সামলাতে গিয়ে। ”
রাত তখন অনেক। হুট করেই মাঝরাতে একটা সুন্দর স্বপ্ন দেখেই সুহার ঘুমটা ভাঙ্গল। স্বপ্নটা এমন যেখানে সুহার আর স্বচ্ছর বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছে। সুহা সে স্বপ্ন মস্তিষ্ক ধারণ করেই ঘুম ছেড়ে উঠে বসে। কিছুটা সময় ঘুমন্ত স্বচ্ছকে অবলোকন করে উঠে আসে বেলকনিতে। তারপর দীর্ঘ চারবছরের প্রত্যেকটা ঘটনা একের পর এক সে ভাবতে থাকে। কত অপেক্ষা, কত প্রতীক্ষা! অবশেষে এ মানুষটাকে সে পেল। সুহাে কান্না পায় এই মুহুর্তে। চোখ টলমল করে। অথচ বাইরে আজ পূর্ণচাঁদ। হালকা হলদে দেখাচ্ছে চাঁদটিকে। সুহা আনমনেই অনেকটা সময় যাবৎ সেভাবে আকাশে তাকিয়েই থাকতেই হুট করে টের পেল পেছনে থেকে কেউ তার কাঁধে মাথা রেখেছে। দুই হাত দিয়ে জড়িয়ে নিয়েছে আদুরে পুতুলের ন্যায়৷ কি সু্ন্দর নরম গলায় জিজ্ঞেস করল,
“ মন খারাপ? ”
সুহা চোখ টলমল করছিল এতক্ষন। এখন যেন তা আহ্লাদ পেয়ে আরো গতিশীল হলো। গড়িয়ে পড়ল গাল বেয়ে। সুহা বলে,
“মন খারাপ হওয়ার তো কারণে নেই স্বচ্ছ। আমার সুখ সুখ লাগছে। এই যে এতাল যার জন্য অপেক্ষা করলাম সে মানুষটা আমার হয়ে গেছে ভাবতেই চোখ টলমল করছে আমার।”
স্বচ্ছ বউ কান্না করছে এটা টের পেয়েই নিজের দিকে ঘুরায়। মুখটা দুই হাতে আগলে নিয়ে চোখের পানি মুঁছে। পরক্ষণেই বুকে জড়িয়ে নিয়ে বলে,
“ ভেবেছিলাম আমার বউটা সাহসী, দুরন্ত,শক্ত! এখন দেখি সে অল্পতেই কেঁদে ফেলে। কারণটা কি আমিই সুহাসিনী?”
সুহা সেভাবেই বুকে লেপ্টে থাকে। ফিসফিস স্বরে বলে,
“ আমার ভয় হয় স্বচ্ছ। আপনি তো আবারও চলে যাবেন। ভুলে যাবেন না তো আমায়? এত প্রেম ভালোবাসা সব যদি আবার ও ঠুনকো হয়? ”
স্বচ্ছ হাসে।সুহার মাথায় চুমু দিয়ে বলে,,
“তুমি চাইলে যাব না আর। যা যোগ্যতা আছে এখানে ভালো মানের জব পেয়ে যাব ম্যাম। ”
সুহা নাকোচ করল মুহুর্তেই।বলে,
“যাবেন। ”
স্বচ্ছ আবারও হাসে। বলে,
“ কিন্তু তোমাকে ছাড়া থাকতে কষ্ট হবে সুহাসিনী। মেবি আমায় জাদুটাদু করে ফেলেছো । তুমি ছাড়া থাকতে হবে ভাবলেই অস্থির অস্থির লাগে আজকাল। ”
সুহা মাথা তুলে তাকায় এবারে। বলে,
“ জাদু করতে পারলে আপনাকে চার বছর আগেই যাদু করে টেনে আনতাম বুঝলেন? কষ্ট সইতাম না এভাবে৷”
স্বচ্ছ ছোটশ্বাস টানে৷ বলে,
“ দোষটা তোমারই। কি হতো চারবছর আগে যাদু করে টেনে আনলে? আজকে তাহলে চারবছরের একটা সংসার হতো আমার। তুমি ভাবতে পারছো সুহাসিনী? বউকে ভালোবাসার দিক দিয়ে আমি চারবছর পিছিয়ে গিয়েছি! চারটা বছর! জীবন আর কতটুকুই আমার। এই এইটুকু জীবনে আমি বউয়ের সাথে চারটা বছর কাঁটাতে পারলাম না। ও মাই গড!চার চারটা বছর সুহাসিনী। কতগুলো দিন হারিয়ে গেল আমার। ”
সুহা তাকায়। স্বচ্ছর কথা শুনে ভ্রু উঁচিয়ে বলে,
“ তো? এমন অস্থির হচ্ছেন কেন?”
স্বচ্ছ চুপ থাকে। হুট করেই এই মাঝরাতে পকেট হাতড়ে কল লাগাল তার বাপকে। জানাল বিয়েটা দুইতিনদের মধ্যেই আয়োজন করতে। শাহরিয়ার সাহেব বোধহয় এতে প্রচুরই বিরক্ত হলেন।একই বাসায় থেকেও এই মাঝরাতে এই ছেলেকে কল করে এভাবে এসব বলতে হবে? অনুষ্ঠানটা তো কয়দিন পর হচ্ছেই।তবুও ধৈর্য্য নেই? অবশ্য ধৈর্য্য কতটুকুই বা আছে? যে ছেলে কথাটক কাল সকালে বলা যাবে জেনেও এই মাঝরাতেই বাপকে কল করে জানায় তার ধৈর্য্য আর কতটুকুই বা হবে?শাহরিয়ারর সাহেব এতে প্রচন্ডই বিরক্ত বুঝা গেল। কোন রকমে ছেলেকে দুইতিনদিনের মধ্যে অনুষ্ঠান করবেন বলে কল রাখলেন৷ স্বচ্ছ অবশ্য উনার বিরক্তিতে গুরুত্ব দিল না। বরং সুহাকে অতি গম্ভীর গলায় বলে,
“ আমি এত সময় পিছাতে চাইছি না। জলদি জলদি বিয়ে করে বউকে ভালোবেসে বাচ্চাকাচ্চার বাবা হয়ে যেতে চাই সুহাসিনী। বয়স তো হচ্ছে বলো!
সুহা পুরোটা কাহিনী ফ্যালফ্যাল করে দেখল। কি দরকার ছিল এখন কল করে এসব বলার? কি ভাবছেন স্বচ্ছর বাবা?সুহা উত্তরে কিছুই বলল না। স্বচ্ছ আবারও ফের বলে,
“সুহাসিনী? বিয়েটা গুণে গুণে আরো তিনদিন এগিয়ে নিব।তোমার দাদাজান নিশ্চয় মেন নিবেন। ”
সুহা ছোটশ্বাস টেনে শুধায়,
প্রেমের সমর পর্ব ৩৮
“ দাদা কষ্ট পেয়েছেন যেতে দেন নি বলে। ”
স্বচ্ছ গুরুত্ব দেয় না। বলে,
“ পেলে পাক। ভিলেইনরা কষ্ট পেলে দুঃখ করতে নেই। ”
সুহা নাক ফুলিয়ে বলল এবারে,
“ কথায় কথায় দাদাকে খারাপ কথা বলাটা বন্ধ করবেন স্বচ্ছ। ”
স্বচ্ছ তখনই দাঁতে দাঁতে চেপে বলে,
“ এটা খারাপ কথা ? তোমার ঐ ভিলেইন দাদাজানকে কখনো আমি ভুলব বলো? আমার বউ নিয়ে অন্য কোথাও বিয়ে দিয় দিতে চাইছিল। কত বড় হা’রামি তোমার দাদাজান । ”