রং পর্ব ৬১

রং পর্ব ৬১
তন্নী তনু

-মানে? Where is Rafsan?
–There has been a lot of bleeding. He is currently kept in life support. Is not going to say anything about Rafsan’s physical condition.
বুকের একপাশটা কেমন যেনো ধূ ধূ করে ওঠে ইভার। সবটা শেষ হয়ে যাচ্ছে? শূন‍্য হয়ে যাচ্ছে সব?
ইভার ব‍্যথিত আধারে ডুবে যাওয়া মুখটা ইরফাদে’র স্নেহ’ময় স্থানে থেকে ঠিকই নাড়া দেয়, তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে তার নিগূঢ় গলার স্বরে কেবল কঠোরতা ,
— রাফসানের যাই হোক, সে তোর কেউ না।
শূন‍্যতা থেকে চোখ সরিয়ে ইরফাদের কঠিন চোখের দিকে তাকায় ইভা। ভাঙা হৃদয় খানায় আগুন জ্বলছে,ছলছল চোখে তাকিয়ে ভেজা গলায় বলে,

— কেউ না? হুম আমার কেউ না;কিন্তু আমার বাচ্চার তো বাবা।রাফসান এর কিছু হলে আমার মেয়েটার কষ্ট হবে, মেয়ের ব‍্যথা তো আমার বুকে এসেই লাগবে।
— টুম্পা আর রাফসানের বাবা-মেয়ের সম্পর্ক কখনোই স্মুথ হতো না।তবুও আমার কাছে এক নিষ্পাপ বাচ্চাকে তার বাবার স্পর্শ কেমন এটা দেখানোর সুযোগ ছিলো, আমি সে সুযোগ হাতছাড়া করিনি, কোনো কার্পণ্য করিনি; বরং বেশী’ ই দিয়েছি।তবে সব তো আমার হাতে নেই; তাহলে তোর লাইফটা আমি নিঁখুত ভাবে গড়ে দিতাম। সো,প্রে ফর হিম। এছাড়া হাতে কিছু নেই।
এতোটুকু বলেই ইরফাদ কেবিনের বাইরে চলে যায়। ব‍্যথায় কাতর সিনথিয়া নিভু নিভু চোখে সবটা শুনছে, অনুভব করছে। তার ভাইয়া’র কিছু হয়েছে। তবে চোখ খুলতে পারছে না সে। ইভার আখি পল্লবে ভীর করছে অশ্রুকণা; সময়ে’র সাথে ভারী ফোটায় রূপ নিচ্ছে। একটা কোমল, একটা সুন্দর জীবন রূপ নিয়েছে মৃত‍্যু খেলায়; শুধু মাত্র একটা ভুলে। কে জানতো? ঐ ব‍্যাট হাতে বলের দিকে তাকানো স্নিগ্ধ চোখজোড়া এক সেকেন্ডে হাজার মেয়ের বুকের ভেতর ঝড় তুলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখতো, তোলপাড় করে দিতো;সে চোখ জোড়ার ক্ষমতা কি এইবার ফুরিয়ে এলো? সত‍্যিই ফুরিয়ে এলো?

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

সকাল সকাল রান্নাঘর খাবার বানাচ্ছেন মার্জিয়া বেগম, রুটি বেলার ফাঁকে তিনি নিয়ম করে একজনকে বকাবকিও করেন। আজকেও ব‍্যতিক্রম নয়। রুটি বেলার ফাঁকে হাতের উল্টো পিঠে ভেজা চোখ দুটোও মোছেন তিনি। গলা উঁচিয়ে উঁচিয়ে শিশিরের বাবাকে শুনিয়ে বলেন,
— দিলো তো ফাঁকি। বলেছিলাম বিশ্বাসঘাতকতা যার র’ক্তে মিশে আছে সে সুযোগ ছাড়বে। আমার একমাত্র ছেলেও ঐ মেয়ের কথায় মা’কে ভুলে গেলো। কম দাপট ঐ মেয়ের;নিরবে ঠিক’ই গর্ত খুড়ে বসে আছে। বলি শিশিরে’র বাপ পারলে না তো ঠেকাতে। তোমার ছেলেকে নিয়েই গেলো।
মায়ে’র সাথে ছলনা করলে, মা’কে কাঁদিয়ে চলে গেলে। বুঝবে একদিন। যেদিন ঐ মেয়ে তোমাকে কাঁদিয়ে চলে যাবে।
শিশিরের বাবা সোফায় বসে পেপার পড়ছেন, তার কোনো হেলদোল নেই। রোজ কথা শুনতে শুনতে তার অভ‍্যাস হয়ে গেছে। যে বুঝতে চায় না তাকে বোঝানোর সাধ‍্য তার নেই। মার্জিয়া বেগম কথার উত্তর না পেয়ে আরোও জোড়ে জোড়ে বলেন,

— কি কপাল আমার! একদম সোনায় বাঁধানো। ছেলে কথা শোনেনা,ছেলের বাপ তো আরোও শোনে না। একটারে ছোট থেকে বড় করলাম সেও ফাঁকি দিয়ে গেলো। এই সময় কি শেষ? বাপ ছেলে যখন নাকানি চুবানি খাবে ঐ মেয়ের কাছে তখন আসিস আমার কাছে, গরম খুন্তি আমি তোদের কপালের মধ‍্যেখানে চেপে ধরবো।
শিশিরের বাবা মনে মনে “চ্চ” উচ্চারণ করেন। রোজ রোজ একই কাহিনি শুনতে তার বিরক্তি ধরে গেছে। সে আছে অন‍্য চিন্তায়, ছেলেটা থাকছে ভাড়া বাড়িতে। তারউপর কাজে গেছে চট্টগ্রামে। মেয়েটাকে রেখে গেছে একা। কি একটা অনিরাপদ পরিস্থিতি। সারারাত চিন্তায় চিন্তায় তার ঘুম হয়নি।এদিকে মার্জিয়া বেগমের জন‍্য মেয়েটাকে বাসায় আনার উপায়ও নেই। তার উপর ঘুম না ভাঙতেই গরম গরম কথা একদম গা”য়ে ফোস্কা পড়ে যাচ্ছে।
— কখন যেনো ছেলেটাকে খেয়ে ফেলে।
এই কথাটুকু নিতে পারেননা শিশিরের বাবা। একলাফে নামেন সোফা থেকে, লম্বা লম্বা পা ফেলে রান্নাঘরে যান, রাগে ফোস ফোস করতে থাকেন। এরপরেই তিনি শক্ত হাতে মার্জিয়া বেগমকে টেনে নিয়ে আসেন বসার ঘরে। জোর করে বসান সোফায়। নিজের ফোনটা’তে ভিডিও প্লে করে পাশে বসেন। মার্জিয়া বেগম চেঁচিয়ে বলেন,

–কি এটা?
–দেখো আগে।
মার্জিয়া বেগম ফোনের স্ক্রিনে নিজের ভাইয়ের মুখ দেখেই উতলা হয়ে ওঠেন,
— আমার ভাই। এটা আমার ভাই।
স্ক্রিনে যোগ হয় আরেকটি অস্তিত্ব;যার হাতে রি’ভ’ল’ভা’র। মার্জিয়া বেগম অকস্মাৎ অস্থির হয়ে যান,
— শিশির! মারিস না বাপ। ঔটা তোর মামা। এক ছলনাময়ীর প্রেমে ডুবে তুই মা কে ভুলে গেছিস, এখন মামাকে মারার জন‍্য প্রস্তুতি নিচ্ছিস।
শিশিরের বাবা বিরক্তিতে চোখ, মুখ কুচকে ফেলেন। চরম বিরক্তি নিয়ে বলেন,
–ধুরর! আগে দেখো তো। যততো সব আজাইরা কথা।
মার্জিয়া বেগম স্ক্রিনের দিকেই তাকিয়ে বলেন,
— ও কি আমার ভাইকে মেরে দিয়েছে? ম’রে গেছে আমার ভাই।
শিশিরের বাবা বলেন,
— তোমার মতো আজব বউ কারো না হোক!অসহ‍্য হয়ে যাচ্ছি।
মার্জিয়া বেগম উত্তর দিতে যাবেন এর মধ‍্যেই ফোন থেকে শিশিরের গর্জন শোনা যায়,
–যতোটুকু জিজ্ঞেস করবো ঠিক ততোটুকুর উত্তর আসবে; না হলে সোজা উপরে।
তপন চৌধুরীর কাতর স্বরের গলা,

— তুই তো আমার ছেলের মতো….
— স্টপ!সম্পর্ক পাতাতে আসিনি আমি। আমার একটা ছোট্ট প্রশ্ন; তিথি’র মা কোথায়?
–তিথি কেমন আছে?
— নাটক কম; যদি এতোই দরদ হতো আপনি এতগুলো বছরে খোঁজ নিতেন মেয়ে কেমন আছে।
— নিয়েছি; নিয়েছিতো ঐ তোমার
–প্লিজ অসহ‍্য লাগছে। বলুন ফুপি কোথায়।
–এটা তো সবার জানা, ও পালিয়ে গেছে।
–সবাই যেটা যানে ঐটা আমি জানতে চাই নি, আমি ওটাই জানতে চাই যেটা কেউ জানে না।
–মানে?
— মানে ট্রি’গার চাপবো?
ভয়ে কাচুমাচু হওয়া তপন চৌধুরী বলেন,
–আমি সত‍্যিই কিচ্ছু জানি না।
–ও’রে গরম পানিয়ে একটু ওয়াস করে আন।
সাথে সাথে দু’জন কালো পোশাকধারী গার্ড তপন চৌধুরীর দিকে যান। তপন চৌধুরী মাথা দু’দিকে নাড়াতে থাকেন। আর মুখে বলতে থাকেন,

— বলছি বলছি!
শিশির হাতের ইশারায় দু’জনকে সরিয়ে দেয়। এরপরেই,
— আমি যে এই পথে আছি তিথির মা এইটি পার্সেন্ট জেনে গেছিলো।ঐ সময়ে ফুকেটে’র জন‍্য কিছু মেয়ের প্রয়োজন হয়।মেয়ে পাচারের বিষয়টাও একটু বুঝে ফেলে। তখন সে চেয়েছিলো সব সবাইকে বলে দিবে। আর বিয়েটা করবে না। আমি খুব কষ্ট করে একটা দিন সময় নেই। বলি সে যা ভাবছে এমন কিছুই না। একদিন! এরপরে যদি ডাউট থাকে তাহলে সে যা চাইবে তাই। সে আমাকে বিশ্বাস করেছিলো। ঐ সুযোগটাই আমি লুফে নিয়েছি। একটা সুন্দর, নিঁখুত পরিকল্পনা। আমি ওকে ওর একটা ফ্রেন্ডকে নিয়ে আসতে বলি। দূরের রাস্তা যাতে প্রবলেম না হয়। এই একটা সুযোগ কাজে লাগিয়ে আমি তিথির মা’কে ফুকেটে পাঠিয়ে দেই। সাথে ছেলেটাকেও। পরের গল্প তোদের জানাই আছে।

— তাহলে ফুপি এখন কোথায়?
–নেই?
— নেই মানে?
— সে খুব জেদি ছিলো, চিল্লাচিল্লি করতো। ড্রাগস দিয়ে ঘুম পাড়াতে পাড়াতে একদিন…
— একদিন?
— আর ঘুম থেকে ওঠেনি।
শিশিরের ভেতরে তীব্র ধাক্কা, গলার স্বরে চিৎকার,
— এই জানোয়ার!
এরপরেই স্তব্ধ মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ রাখা মার্জিয়া বেগম। তর হাত দু’টো থরথর করে কাঁপছে। নির্বাক, নিস্তব্ধ। শিশিরের বাবার গলার স্বরে নিরবতা,
— এর পরেও যে তোমার ছেলে তোমার অত‍্যাচার সয়ে যায় ঐটা তোমার কপাল। আর মেয়েটা’কে সারাজীবন যতো দুঃখ দিয়েছো পারবে তো? পারবে তো নিজেকে ক্ষমা করতে। অসহায় মেয়েটা’কে আমাদের আড়ালে কি যন্ত্রণাটাই দিয়েছো। ভাগ‍্যিস ছেলেটা আমার কাজের কাজ করেছে। না হলে অনুতাপে আমি নিঃশেষ হয়ে যেতাম। আমার ওকে নিয়ে গর্ব হয়। ছেলেটা আমার অন্তত অমানুষ হয়নি

নিস্তব্ধ, নিরব মার্জিয়া ধীর গলায় বলেন,
— তিথি আমাকে কি ক্ষমা করবে? ও কোথায়? আমি এখনি ও’কে দেখতে চাই।

কেবিনের বিছানায় ব‍্যথায় কাতর সিনথিয়া,নিরব চোখে তাকিয়ে দেখে নিস্তব্ধ ইভাকে; কেমন বুকে জ ড়িয়ে মেয়েকে বুঝিয়ে যাচ্ছে। সিনথিয়ার বেডে’র পাশে চেয়ার পেতে নিরবে বসে আছে ইরফাদ। আরেকটা কেবিনে তাদের বাবা। ইরফাদ দুটো কক্ষে একটু পরপর সময় দিচ্ছে। কোলের উপর ফোনটা মৃদু কাঁপে। একপলক স্ক্রিনে তাকিয়ে ফোন’টা উল্টো করে রাখে ইরফাদ। পরপর দু’টো কল। সিনথিয়া অস্পষ্ট গলায় বলে,
–কে কল দিচ্ছে? আমার বাবা নয় তো?
— বাবা মা’কে বলিনি। টেনশন করবে। একটু বেটার ফিল করো তখন জানাবো।
–তাহলে কে কল দিচ্ছে?
–সুভা।
— ধরছেন না কেনো? মেয়েটা তো বিপদে থাকে। ওনার তো কেউ নেই। একটা মেয়ের মাথার উপর ছায়া না থাকলে তখন মেয়েটা অসহায় হয়ে যায়। ওনা’র উপায় থাকলে কি আপনাকে কল দিত?
— নিজেই বিধ্বস্ত আমি, অস্থির লাগছে সিনথি!!!

কঠিন হৃদয়ের মানুষটা’কে অক্লান্ত পরিশ্রম করে কখনো অস্থির হতে দেখা যায় না, গুরুগম্ভীর মুখখানার আড়ালে তিনি যে কখনো কখনো ভেঙে পড়েন এটাও বোঝার উপায় নেই। প্রকাশভঙ্গীতে ফোঁটে না একফোঁটা অস্থিরতা, দেখা যায় না ভেঙে পড়া। নিরালায়, নিভৃতে তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করে যান। আজ সে মুখ ফুটে বলেই বসলো। সে বিধ্বস্ত ; আচ্ছা!তার কি খুব কষ্ট হচ্ছে…..! বিছানার উপরে রাখা লৌহকঠিন হাতটার উপর কোমল হাতটা রাখে সিনথিয়া, ভাঙা গলায় বলে,
— সব ঠিক হ য়ে যাবে; এভরিথিং উইল বি ফাইন।
ফোনটা তুলুন প্লিজ।
কয়েক সেকেন্ড পরে ফোনটা তোলে ইরফাদ, সুভা বলে ওঠে,
— ইরফাদ, একাউন্টে টাকা পাঠিয়েছি।
— টাকা কোথায় পেয়েছিস?এখন দিতে হবে কেনো? আমি তো তাড়া দেইনি।
— নাহ, সব ই তো নিলাম। এইটা রাখতে পারছি না। লোনের এপ্লাই করেছিলাম হয়ে গেছে। লাস্ট যতটাকা দিয়েছিলে এখন দিলাম। বাকিটুকুও দিয়ে দিবো।
ইরফাদ কোনো কথা বলে না। লম্বা একটা শ্বাস টানে সুভা। এরপরে বলে,

— সব ঠিক আছে ইরফাদ!
— হুম।
— একটা কথা না বলে পারছি না। বাবা আর নেই!!!
–হোয়াট?
— গত রাতের ঘটনা ; তোমাকে কল দিয়েছিলাম ফোন অফ ছিলো।
— কয়টা বাজে এখন?
— হাইপার হয়ো না; এখন আর আসতে হবে না। বাবার দাফন হয়ে গেছে। কষ্ট লাগছে না আমার একবিন্দুও। যার এমন আস্ত অমানুষ একটা ছেলে আছে, আবার মাঝবয়সী মেয়েও আছে ঘাড়ের উপর তার ভেতরে কি কম যন্ত্রণা ছিলো। কখনো কখনো মানুষ মরে গিয়ে বেঁচে যায়। তিনি ভালো থাকুক; বেঁচে থাকলে আরোও পুড়তে হতো।
— কেনো পাগলামী করে আস্ত একটা জীবন শেষ করে দিলি!! এটাও আমার জন‍্য।
–গিলটি ফিল কোরোনা। তুমি যা দিয়েছো তা কেউ দিতো না, আমি তোমার কাছে কৃতজ্ঞ। আমি জানি তুমি যদি পারতে আমাকে দূরে ঠেলে দিতে না।ভালোবাসা হলো হৃদয়ের অনুভূতি, এখানে তো কারো হাত নেই। ভালোবাসা আসে আত্মা থেকে; এটার সাথে পাওয়া না পাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। বরং ভালোবাসা ভালো থাকুক সে যার কাছেই থাকুক শান্তিতে, স্বস্তিতে বাঁচুক। ভালোবাসলে পেতেই হবে,আমার হতেই হবে এমন কোনো কথা নেই।
— তাহলে কেনো বিয়ে করবি না? আমার রিকুয়েস্ট কেনো রাখলি না?
— ভালোবাসা এমন এক অনুভূতি, একবার কারো জন‍্য অনুভব হলে সেখানে আর কাউকে বসানো যায় না। রাখছি আজ। পরে কথা হবে।
এরপর এক প্রগাঢ় নিরবতা!!!!!

রং পর্ব ৬০

এক নিরব কক্ষ! রাফসানের চোখজোড়া বন্ধ, যেনো গভীর ঘুমে তলিয়ে গেছে। মেয়ের একনাগাড়ে বলা একই শব্দ আর অসুস্থতায় বাধ‍্য হয়ে রাফসানের কাছে নিয়ে আসে ইভা। ইরফাদ দাঁড়িয়ে কেবিনের বাইরে। ছোট্ট টুম্পা মায়ের কোলে, জ্বর উত্তাপে ইভার কাঁধ পুড়ে যাচ্ছে। মেয়ের কানে ফিসফিসিয়ে বলে ইভা,
— পাপা ঘুমাচ্ছে সোনা। তুমি শুধু পাপাকে দেখবে। ওকে?
ফিরে তাকায় টুম্পা, বিছানার পাশে চেয়ারে বসানো হয় তাকে। টুম্পা জোরে শব্দ করে না, বাবাকে বিরক্ত করে না,শুধু ফিসফিসিয়ে ডাকে,
— পাপা ও পাপা ; পাপা।
নিরব রাফসান আজ আর কোনো কথা বলে না, শুধু নিরবে ঘুমায়। টুম্পা ফিসফিসিয়ে বলে,
— আমার জল হয়েচে, তুমি কোতায় ব‍্যতা পেয়েচো পাপা। আদোল, আদোল, আদোল।

রং পর্ব ৬২