মধ্য রাতের চাঁদ পর্ব ১২

মধ্য রাতের চাঁদ পর্ব ১২
মুসতারিন মুসাররাত

নীরব ছবিটা হাতে নিয়ে গভীরভাবে তাকিয়ে ছিল। চেনা মুখ, অপ্রত্যাশিতভাবে এখানে দেখে ওর দৃষ্টিতে বিস্ময়ের ঝলক খেলে যায়। পরপর ইচ্ছের কথা মস্তিষ্কে নাড়া দিতেই তীক্ষ্ণ বুদ্ধি সম্পন্ন নীরব মুহূর্তেই আন্দাজ করে কিছুটা। অনুমান করতেই ওর আঙুলের গিঁটগুলো শক্ত হয়ে যায়। হাত মুষ্টি করে কিছুক্ষণ থম মে’রে রইল। মেয়ের কথা শ্রবণ হতেই প্রীতি তাকাল। নীরবের হাতে ছবিটা দেখে নিজ থেকেই বলল,
-” ভাইয়া পছন্দ করেছে ছবির মেয়েটিকে। ছবি দেখে মায়েরও পছন্দ হয়েছে। আর বড় কথা ভাইয়া নিজে যেখানে পছন্দ করেছে সেখানে আমাদের অপছন্দের কারন নেই। দ্রুতই পাকা কথা বলতে হবে মেয়েটির বাড়িতে।”
এরমধ্যে প্রীতির দিকে তাকিয়ে ইচ্ছে পি করবে বোঝাতেই প্রীতি মনাকে ডেকে ওয়াশরুমে নিতে বলে। অনুমানটা এখন দিঘির স্বচ্ছ জলের মতো পরিষ্কার নীরবের কাছে। নীরব একটা জোরালো শ্বাস ফেলল। তারপর চুপচাপ, অদ্ভুত শীতলতা নিয়ে সোফায় গা এলিয়ে পায়ের উপর পা তুলে বসল। চোখদুটি সরাসরি প্রীতির দিকে স্থির করে ঠান্ডা গলায় বলল,

-” তোমার ভাইকে বলবে…”
এক মুহূর্ত থেমে, আঙুলের ফাঁকে ছবিটা ধীরে ধীরে ঘুরাতে ঘুরাতে কণ্ঠটা আরও জমাট করে বলল,
-” তোমার ভাইকে বলবে, অন্যের বউয়ের দিকে তাকানোর আগে আয়নায় নিজের কপালটা দেখে নিতে।”
প্রীতির কপালে ভাঁজ পড়ল। ও কিছুটা রুক্ষ স্বরে বলল,
-” হোয়াট ডু ইউ মিন? ক্লিয়ার করে বলো। আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। অন্যের বউ?…তারপর তাকানো.. মানে? কী বলতে চাইছো তুমি?”
-” ডক্টর সাহেবকে বলবে, সে ভুল জায়গায় নজর দিয়েছে। অন্যের বউকে নিজের করার কথা ভাবছে। আই থিংক, সে জানে না। তাই এমনটা হয়েছে। তাকে ক্লিয়ার করে বলে দিবে..”
বলতে বলতে নীরব এবার সোজা হয়ে বসল। পিঠ টানটান। হাতের ছবিটা সামনে বাড়িয়ে আঙুলের মাথা ছবির উপর রেখে এক গাঢ় অথচ ঠান্ডা স্বরে বলল,

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

-” সী ইজ ইয়ানূর প্রত্যাশা।”
এক মুহূর্ত থেমে চোখদুটো সংকুচিত করে খুব স্পষ্ট গলায় বলল,
-” মিসেস প্রত্যাশা নীরব। মাই মিসেস। মাই ওমেন। ক্লিয়ার?”
মেঘ বিনা বাজ পড়ার মতোই অবাক হলো প্রীতি। সুশ্রী চেহারা বিস্ময়ে ঠাসা হয়। পাতলা আকর্ষণীয় ঠোঁটজোড়া নেড়ে বিস্ময় ঝরল কণ্ঠস্বরে,
-” তুমি বিয়ে করেছো?”
-” প্রশ্নটা ফুলিশের মতো হলো না?”
পাল্টা প্রশ্নে প্রীতি থতমত খায়। হালকা গলা খাঁকারি দিয়ে বলল,
-” না মানে জানতাম না…তাই!”
নীরব উঠে দাঁড়াল। টি-টেবিলের উপর রাখা বাইকের চাবি হাতে তুলল। পরপর আঙুলের ডগায় চাবিটা ঘুরাতে ঘুরাতে সতর্ক করতে সাবধানী বাণী আওড়াল,
-” ডাক্তার সাহেবকে আমার হয়ে বলে দিবে….বলে দিবে তাকে; ফারদার অন্যের বউয়ের দিকে নজর দিলে, তার পরিণতি খুব মিষ্টি হবে না। বিলিভ মি। টেল হিম টু ফিক্স হিজ আইজ… বিফোর হি লুজেস দেম ফরএভার।”
আর একটাও টু শব্দটি না করে নীরব গটগট পা ফেলে চলে যায়। ভাইকে থ্রেট দেওয়ায় প্রীতির রাগ মূহুর্তেই সপ্তম আকাশ ছুঁলো।

সাঁঝ নামার সাথেসাথে ধরণী অন্ধকারের মোটা চাদরে মুড়িয়ে গিয়েছে। বিশাল রাজকীয় বাড়িটির ড্রয়িংরুমে হঠাৎ করেই ছ্যাঁৎ করে ওঠে কাঁচ ভা’ঙার বি’কট শব্দ। সার্ভেন্টরা আত’ঙ্কে থমকে যায়। ছোট্ট ইচ্ছে টিভির সামনে বসে কার্টুনে মগ্ন ছিল। শব্দের তীব্রতায় ভ’য়ে লাফিয়ে উঠে থরথরিয়ে কাঁপতে থাকে।
সার্থক ততক্ষণে ঘরে ঢুকেছে, মুখে এক ধরনের খসখসে অন্ধকার। চোখ দুটো জ্ব’লছিল রা’গে। বাড়ি থেকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠানোর আগে নিজস্ব লোকের মাধ্যমে প্রত্যাশার বাবার সাথে কথা বলতে পাঠায়। কালকে তাদের মেয়েকে বড় ঘর থেকে দেখতে আসবে। ভদ্রলোক শোনার সাথে সাথে না করে দেন। স্পষ্ট বলেন– এইতো ক’দিন আগেই তাদের মেয়ের আকদ হয়েছে।

এই খবর লোক মারফত শোনার জন্য মোটেই প্রস্তুত ছিলো না সার্থক। প্রচন্ড রা’গ হচ্ছিল। নিজেকে হেল্পলেস লাগছিলো। তারপর বাড়ি ফেরার সাথে সাথে প্রীতি নীরবের দেওয়া থ্রেটসহ সবটা বলে। নীরবের থ্রেট শুনেই মাথায় র’ক্ত চড়ে যায়। রাগে, হতাশায় আর অসম্মানে পু’ড়ে যাচ্ছে ভেতরটা। রাগে-ক্ষোভে কাঁচের টি-টেবিলে পা তুলে শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে লা’থি মা’রে। শব্দ করে উল্টে যায় কাঁচের দামি টেবিলটি। পরপর পাশের ফুলদানি ছুড়ে ফেলতেই–সব চূর্ণবিচূর্ণ। কাঁচের ঝনঝন শব্দ যেন সারা ঘর জুড়ে রাগের বহিঃপ্রকাশ। দূরে হুইলচেয়ারে বসে থাকা তানিয়া খাঁন মনাকে ইশারা করেন। মনা তৎপর হয়ে ইচ্ছেকে কোলে তুলে দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে ওপরে চলে যায়। তানিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললেন,
-” সার্থ বাবা, শান্ত হ। মেয়েটার যখন আকদ হয়ে গিয়েছে। ছেড়ে দে। তোর জন্য আরও সুন্দরী, আরও যোগ্য মেয়ে খুঁজে আনব রে বাবা।”

সার্থক চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইল। ভেতরটা যেন আ’গুনে ঝ’লসে যাচ্ছে। চুলের মুঠো ধরে গভীর শ্বাস নিতে থাকে, নিজের রাগ সামলাতে। প্রীতি দু’পা এগিয়ে এল। আলগোছে সার্থকের কাঁধে হাত রাখল। সার্থক ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই প্রীতি চোখের ইশারায় আশ্বাস দিল। বলল,
-” কুল ব্রো, কুল। হাইপার হোস না। আমি তোর ফিলিংসটা পুরোপুরি বুঝতে পারছি।”
তারপর মায়ের দিকে তাকিয়ে, ঠোঁটের কোণে তাচ্ছিল্যের হাসি এনে বলল,
-” মন থেকে যদি একবার কাউকে ভালো লেগে যায়। মা, তখন আর ‘এর থেকেও সুন্দরী’, ‘এর থেকেও ভালো’। এক কথায় তার থেকেও বেটার কাউকে দিয়ে হয় না। তার মতো কাউকে দিয়েও হয় না। যায় না সেই জায়গটা পূরণ করা। সেই জায়গাটা আজীবন অপূর্ণই থেকে যায়। আই নো ওয়েল।”
তানিয়া হতাশ শ্বাস ফেললেন। ভালো করেই জানেন; এরা কম রাগি আর জিদি নয়। ছোটবেলা থেকেই এদের যা পছন্দ সেটাই চাই। চাই মানে চাইই।

সিটি কেয়ার ক্লিনিকের কনফারেন্স রুমে মালিক ডা. রশীদ। যিনি একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক। সাথে ক্লিনিকের কয়েকজন ডিউটিরত ডক্টর, স্টাফসহ বেশ কয়েকজন উপস্থিত। নীরবের দুই পাশে সেদিনের দুইজন অফিসার। এএসআই তানভীর নীরবের হাতে কিছু কাগজ দিলো। পুরোরুম জুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নীরব টেবিলের উপর কিছু কাগজ রাখল। বলল,
-” এই রিপোর্টগুলোতে যে ইনফেকশনের কথা বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তে তা পাওয়া যায়নি। ভূয়া রিপোর্ট বানানো হয়েছে। ভুল চিকিৎসায় রোগী প্রাণ হারিয়েছে। এটা কার কাজ?”
ডা. রশীদ মুখ শক্ত করে বললেন,
-” অফিসার আপনি পু’লিশ। আইনি ক্ষমতা আছে আপনার। তাই বলে হাসপাতালের ভেতরের ব্যাপারে এত বাড়াবাড়ি করা আপনার কাজ নয়। ভুল তো মানুষেরই হয়। ভুল হয়…”
নীরব থামিয়ে দিল,

-” ভুল যদি একটা জীবন কেড়ে নেয়, সেটা ভুল না, সেটা অপরাধ। আমি জানতে চাই, এই রিপোর্টে কার স্বাক্ষর?”
ড. রশীদ দম্ভ নিয়ে বললেন,
-” পুলিশ হয়ে ডাক্তারদের রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা শোভন নয়। ভুল তো মানুষেরই হতে পারে। রিপোর্ট দেখে কি আপনি চিকিৎসা বুঝবেন?”
-” ভুল যদি রোগীর জীবন নিয়ে খেলে, সেটা বোঝার জন্য চিকিৎসক হতে হয় না। পু’লিশ হিসেবে দায়িত্ব আমার। এখন জানতে চাই, কার স্বাক্ষরে এই রিপোর্ট ছাড় হচ্ছে?”
ড. রশীদের কণ্ঠ এবার কিছুটা থিতু হয়ে এল,
-” দেখুন, বেসরকারি ক্লিনিকে অনেক সময় দ্রুত রোগী সামলাতে রিপোর্টে সামান্য হেরফের হয়ে থাকে। রোগীকে সন্তুষ্ট রাখতে কিংবা হাসপাতালে রাখতে হয়, বুঝতেই পারছেন..”
নীরব চাহনি কঠিন করে বলল,

-” সন্তুষ্ট রাখতে রোগীকে মে”রে ফেলার লাইসেন্স দেয়নি কেউ। এসব রিপোর্টের নামে যেটা চলছে, সেটা চিকিৎসা নয়, ব্যবসা। আর সেই ব্যবসার খেসারত দিচ্ছে সাধারণ মানুষ।”
কিছুক্ষণ চুপ থেকে ডা. রশীদ বললেন,
-” আপনাদের এই তদন্ত ক্লিনিকের সুনাম ন”ষ্ট করছে। রোগীরা আ”তঙ্কিত হচ্ছে। সাধারন একটা মিস্টেক নিয়ে আপনারা বাড়াবাড়ি করছেন।”
নীরব হেসে বলল,
-” সুনাম তো তখনই থাকবে, যখন এখানে মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরবে। ম’র্গে নয়। ক্লিনিকের সুনাম যদি ভু’য়া রিপোর্ট আর কমিশনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে, সেটা ভাঙা দরকার।”
তারপর চোখমুখ কঠিন করে প্রগাঢ় রুক্ষ স্বরে বলল,
-” গত এক মাসে ৫ জন রোগী ভু’য়া রিপোর্টের ভিত্তিতে ভুল চিকিৎসায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছে। একজন মৃ°ত্যু মুখেও পতিত হয়েছে। এরপরও আপনার বলতে লজ্জা করছে না, সাধারণ একটা মিস্টেক।‌ আমাদের কাছে আরো প্রমাণ আছে, কিছু ডাক্তারের সাথে কমিশনের চুক্তি আছে। রিপোর্টে ইনফেকশন লিখে অতিরিক্ত টেস্ট করানো হয়।”
নীরব উঠে দাঁড়াল। বলল,

-” অভিযোগ আর প্রমাণের উপর ভিত্তি করে আপনাকে অ্যারেস্ট করা হলো। তানভির অ্যারেস্ট হিম।”
তানভির ত্রস্ত উঠে দাঁড়িয়ে,
-” জ্বী, স্যার।”
বলে মালিকের হাতে হ্যান্ডকাফ পড়াল।

হঠাৎ পাকা আমের ঘ্রাণে মাছিরা যেমন ভনভনিয়ে আসে, ঠিক তেমনি কই থেকে কয়েকজন টিভি চ্যানেলের সাংবাদিক ছুটে এল। নীরব তখন পু’লিশ সুপারের কার্যালয়ের গেট দিয়ে প্রবেশ করছিল। ওকে ঘিরে ধরে ক্যামেরা, মাইক, ফ্ল্যাশ ঝ’লসে উঠল। একজন সাংবাদিক তাড়াতাড়ি মাইক এগিয়ে বলল,
-” স্যার, সিটি কেয়ার ক্লিনিকের বিরুদ্ধে এত বড় দুর্নীতির প্রমাণ কীভাবে সংগ্রহ করলেন?”
নীরব ভারিক্কি গলায় সংক্ষেপে বলল,
-” দুর্নীতির গন্ধ ছড়িয়ে গেলে, তার সূত্র ধরে পৌঁছানো কঠিন নয়।”
আরেকজন সাংবাদিক গলা উঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল,
-” আমরা কি খুব শিগগিরই দো’ষীদের শাস্তি দেখতে পাব?”
নীরব থামল না, এগিয়ে যেতে যেতে বলল,
-” আইন নিজের পথে হাঁটছে। অপেক্ষা করুন।”
এক মহিলা রিপোর্টার কৌতূহল নিয়ে বলল,

-” স্যার, আগেও সিটি কেয়ার ক্লিনিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। ভূয়া রিপোর্ট, ভুল চিকিৎসার। তখন তো ধামাচাপা পড়ে গিয়েছিল! এবারও কি সেই পরিণতি?”
নীরব থমকে দাঁড়াল। চোখ দুটো কঠিন হল, গলা ভারী,
-” এবার যারা চাপা দিতে আসবে, তাদেরও জবাবদিহি করতে হবে।”
আগেরজন হঠাৎ প্রশংসার সুরে বলল,
-” স্যার, আপনি সত্যিই অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিলেন! যেখানে আগেও অভিযোগ আসলেও, টাকার কাছে সত্য চাপা পরে যায়। সেখানে আপনি একজন সৎ অফিসার হিসেবে নিজেকে প্রুভ করলেন।”
নীরব একঝলক তাকিয়ে হালকা মাথা নেড়ে মৃদু গলায় বলল,
-” এটা আমার দায়িত্ব। দায়িত্ব পালন করেছি। ধন্যবাদ।”
তারপর আর কোনো দিকে না তাকিয়ে দৃঢ় কদমে ভেতরের দিকে এগিয়ে গেল নীরব। পেছনে ভাসতে থাকল ক্যামেরার ঝলকানি আর চাপা প্রশংসার গুঞ্জন।

মাথার নিচে দু’টো কুশন রেখে সোফায় শুয়ে প্রত্যাশা। পা দু’টো সোফার উপর দিয়ে দেওয়ালে ঠেকিয়েছে। একহাতে টিভির রিমোট অন্যহাতে পপকর্ন তুলে মুখে পুড়ছে। বিকেলটা অলস কা’টছে। একবার কার্টুন দেখছে, তো আবার চ্যানেল পাল্টাচ্ছে। এমন সময়***টিভিতে গিয়ে চোখ দু’টো বিস্ময়ে কোটর ছাড়ার জোগাড়। তড়িঘড়ি করে শোয়া থেকে উঠে বসল। দুই হাতে চোখ ডললো। নাহ ঠিকই দেখছে; ওইতো স্পষ্ট এএসপি সাহেবকে দেখা যাচ্ছে। ঝট করে হেডলাইন পড়ল। নীরবের শেষের কথাগুলো শুনল। রিপোর্টারদের লাইভ থেকে পুরো বিষয়টটা বুঝে নিল প্রত্যাশা। মিস্টার আনপ্রেডিক্টেবলকে টিভিতে দেখাচ্ছে তড়িৎ আব্বু-আম্মুকে ডেকে বলল। উনারা সেকি প্রশংসা শুরু করল! প্রত্যাশা ঠোঁট উল্টে পপকর্ন হাতে নিয়ে রুমে চলে গেল।
কাল সকালে আব্বুর সাথে বাড়ি ফিরে এসেছে প্রত্যাশা। আসার পর আর কোনো কথা হয়নি। হঠাৎ প্রত্যাশার মনে হলো, এএসপি সাহেবকে ফোন দিবো..কী বলব? উমম..একটা থ্যাংকস জানানোর উসিলায় আজকে তো ফোন দেওয়াই যায়। এইভেবে প্রত্যাশা দ্রুত আব্বুর ফোনটা এনে নম্বর তুলতে থাকল। অদ্ভুত ব্যাপার… নম্বর তুলতে গিয়ে লক্ষ্য করল। এই নম্বর থেকে তো কাল রাতে কল এসেছিলো। ডিনার করে রুমে এসে দেখে দুইবার মিসড কল উঠে আছে। আন্নাউন নম্বর দেখে প্রত্যাশা ভ্রু কুঁচকে ভাবে–যার দরকার সে আবার দিবে। দুইবার কেনো দুইশো বারও দিবে।

এইভেবে রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিল। এটা যে নীরবের নম্বর জানা ছিলো না। যাক এএসপি সাহেব নিজ থেকে কল দিয়েছিলো। খোঁজ নিতে..এটাদেখে প্রত্যাশার ভালোই লাগল। ঠোঁটে হাসি টেনে প্রত্যাশা বিছানার হেডে গা এলিয়ে কল দিল।
নীরব একটা ফাইল দেখছিলো। টেবিলের উপর থাকা ফোনে ‘Prottasha’ নামটা ভেসে উঠতেই রিসিভ করল। কয়েক সেকেন্ড পার হলেও ওপাশ থেকে কোনো শব্দ এলো না। ফাইলটা বন্ধ করে চেয়ারে গা এলিয়ে বসল নীরব। বলল,
-” প্রত্যাশা?”
এবার ওপাশ থেকে গমগমে স্বর আসলো,
-” যাক এটা যে আমি…আপনি জেনেশুনেই কল দিয়েছিলেন দেখছি। ভুল করে নয়। আমি ভাবলাম ভুল করেও কাল রাতে কল আসতে পারে।”
নীরব প্রসঙ্গ পাল্টাতে বলল,

-” কেমন আছো তুমি?”
-” ভালো। আচ্ছা বলুন তো আমায়…আমার নম্বর কীভাবে পেলেন? কার কাছ থেকে নিয়েছেন?”
এই মেয়ে বাড়তি কথা বলে নীরব তা এ কদিনে বুঝে নিয়েছে। বি’রক্তির শ্বাস ফেলে বলল,
-” নম্বর জোগাড় করা, এটা কঠিন কিছু নাকি?”
পাল্টা প্রশ্নে প্রত্যাশা মুখ বাঁকাল। সোজা কথা এই লোক বলতে জানে না। কিছুটা ত্যাড়া জবাব থাকবেই। প্রত্যাশা ঠোঁটে ঠোঁট চেপে বলল,
-” কঠিন নয়। তবুও তো..কারো না কারো কাছ থেকে নিতে হয়েছে।”
রাতের কথা মনে পড়ল নীরবের। প্রত্যাশার সাথে আগে কখনো ফোনে কথা হয়নি। তারপর বাড়িতে থাকাকালীন ফোন নম্বর নেওয়াও হয়নি। কাল রাতে নিভানের কাছে প্রত্যাশার নম্বর চাইতেই; নিভান মজার ছলে বলে– বউ তোর, আর তোর বউয়ের নম্বর কি-না আমার কাছে চাইছিস!
জবাবে নীরব বলে–আমার বউয়ের নম্বর চাইছি না, তোমার সিস্টার ইন ল এর নম্বর চাইছি। থাকলে ঝটপট দাও তো।

নিভান হেসে বলেছিল–কেনো আমার শালির সাথে প্রেম করবি নাকি?
নীরব চোয়াল শক্ত করে দাঁতে দাঁত চেপে–শুধু প্রেম নয়। পটিয়ে আরেকবার বিয়ে করব। হয়েছে?
নিভান হো হো করে হাসতে হাসতে নম্বর দিয়েছিল। কিন্তু ম্যাডাম তো রাতে কল তুললেন না। নীরব উত্তরে বলল,
-” ভাইয়ার কাছ থেকে।”
-” ওও।”
কয়েক মূহুর্ত থেমে প্রত্যাশা জিজ্ঞেস করল,
-” লাঞ্চ করেছেন?”
-” নাহ। দুপুরে ব্যস্ত ছিলাম। বাসায় যেতে পারিনি। হাতের কাজ শেষ করে একটু পরই বেরুবো।”
ব্যস্ত শব্দটা শুনেই তখনকার কথা মনে উঠল। এতক্ষণ তো ভুলে বসেছিল। প্রত্যাশা উচ্ছ্বসিত স্বরে বলল,
-” অভিনন্দন অফিসার।”
নীরব নিঃশব্দে হাসল। ঠান্ডা গলায় বলল,
-” থ্যাংকস।”

-” আপনাকে টিভিতে যখন দেখাল আমার কীযে ভালো লাগলো না! তারপর আপনার নামের পাশে একজন সৎ, সাহসী অফিসার ট্যাগ দেখলাম….. উফ্! আমার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না!”
মেয়েটা খুব সহজ-সরল আর ভালো মনের। প্রত্যাশার সুন্দর মনের অভিব্যক্তি দেখে নীরবের খুব ভালো লাগলো। নীরব বলল,
-” ওটা আমার ডিউটি প্রত্যাশা। এমন কিছুও নয়।”
হঠাৎ কিছু ভেবে প্রত্যাশা জিজ্ঞেস করে উঠল,
-” আচ্ছা সত্যি করে বলুন তো; কাল রাতে যে ফোন দিয়েছিলেন। সেটাও কী শুধুই দায়িত্ব থেকেই? না মানে আপনি তো আবার খুব দায়িত্ববান…তাই বলছি আরকি।”
-” পৃথিবীতে তো আরো হাজারো মেয়ে আছে…কই তাদের কাছে তো ফোন দিলাম না। ফোন দেওয়া তো দূর, দেওয়ার কথা ভুলেও মনে হয়নি কখনো।”
-” সেটাই তো বলছি…এত ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে না বলে সরাসরিই বলুন না।”
-” কিছু কথার উত্তর সরাসরি দেওয়ার থেকে, অপর পক্ষের বুঝে নেওয়াতে আলাদা একটা ফিলিংস থাকে।”
প্রত্যাশা বুঝল এই লোক সরাসরি বলবে না। প্রত্যাশা হাল ছেড়ে দিলো। তবে আর কথা খুঁজে না পেয়ে বলল,
-” আচ্ছা, তাড়াতাড়ি কাজ সেরে বাসায় গিয়ে খেয়ে নিয়েন। আল্লাহ হাফেজ।”
-” হুম। টেক কেয়ার। আল্লাহ হাফেজ।”

দু’দিন পর…
থানার ভেতর যেন এক অস্থির সমাবেশ বসেছে। এককথায় মাছের হাট বললে ভুল কিছু হবে না। একপাশে ছেলে আর মেয়েপক্ষ উত্তপ্ত তর্কে লিপ্ত, অন্যপাশে প্রত্যাশা আর বন্ধুরা ক্ষোভে ফুঁসছে। মস্ত কালো বোরখা ও হিজাবে মোড়ানো প্রত্যাশার একমাত্র দৃশ্যমান অংশ ওর গভীর, কালো চোখের মণি। সদর থানার বয়স্ক কনস্টেবল বারবার উত্তেজিত দুইপক্ষকে থামতে বলছেন। হাত জোড় করে অনুরোধও করছেন–পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে কোনো একটা কেসের তদন্তের জন্য অফিসার এসেছে। দাড়োগা বাবুর সাথে কথা বলছে। একটু চুপচাপ থাকুন। দারোগাবাবু এসে দেখবেন। ভেতরে হইচই এর শব্দ যাচ্ছে। স্যারেরা রেগে যাবেন কিন্তু। ভেতরে গুরুত্বপূর্ণ কথা চলছে। একটু অপেক্ষা…
নাহ হাজারো অনুনয়, বিনয়ের সুরে অনুরোধ করেও লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না। দুইপক্ষ শুধু হাতাহাতি বাকি রেখেছে। মুখ দিয়ে যেন পারো মানবিক বোমা ব্লাস্ট করছে।

বাবা কোয়েলের বিয়ে ঠিক করেছিলো। এইজন্য কোয়েল কেঁদেকেটে একশা। ফ্রেন্ডরা পাশে আছি বলে সাহস দিলো। প্রেমিক রোহানও সাহস দেখিয়ে বলেছিল–বিয়ে সমস্যার সমাধান বিয়ে দিয়েই করতে হবে। চল বিয়ে করে, সব ঝামেলা চুকে ফেলি। একবার বিয়ে হলে আংকেল একসময় না একসময় মেনে নিবে। আর জোর করে তো তোকে বিয়ে দিতে চাইবে না। কারন এক গ”রুর কয়বার গলা কা’টে।
বন্ধুরা সবাই উৎসাহ দিলো। লুকিয়ে কাজি অফিসে গিয়েছিলো ওদের গ্রুপ। প্রত্যাশার গায়ে ইয়া বড় বোরখা বয়স্ক খালাম্মা টাইপের একজন সাক্ষী হতে। কিন্তু সমস্যা বাঁধল। কই থেকে কোয়েলের বাবা খবর পেয়ে ঠিক সময় মতো কাজি অফিসে হাজির। ওদিকে রোহানের পরিবারও হাজির। ওখানে এক দফা ঝগড়া হলো। কোয়েলের বাবা কেস করবেন বলেন। ওনার অবুঝ মেয়েকে ফুঁসলিয়ে বিয়ের জন্য ইন্সপায়ার্ড করায়। সব কটার নামে মামলা করবেন। এই বাদড় বন্ধুগুলাকেও আজ দেখে ছাড়বেন। এদের জন্যই মেয়ের ডানা গজিয়েছে। পালিয়ে বিয়ে করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। আজ উনিও এদের সব কটাকে দেখে ছাড়বেন।

কাজী অফিস থেকে ঝগড়া এখন থানায় এসে পৌঁছেছে। ঝাঁকড়া চুলে আঙুল চালিয়ে একরাশ হতাশা নিয়ে নাহিদ দীর্ঘশ্বাস ফেলল। গলার স্বর ভরে উঠল আক্ষেপে,
-” ধূর ছাই! তোদের কথায় কান দিয়ে কী এক মাইনকার চিপায় ফাইসা গেলাম! কত স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে বিসিএস ক্যাডার হবো। মুখ উজ্জ্বল করব। এখন যদি একটা মামলা ঠুকে দেয়, তাহলে…!”
নাহিদের কথা শুনে প্রত্যাশা বাঁকা চোখে চাইল। কথার মাঝেই দুই হাত এক করে বলল,
-” ভাই, এবার একটু চুপ কর তুই। আল্লাহর ওয়াস্তে মুখটা বন্ধ রাখ। এমনিতেই মেজাজ তিরিক্ষি হয়ে আছে, তার ওপর তোর এই বেহুদা কথাবার্তা মাথার ভেতর আ”গু”ন ধরিয়ে দিচ্ছে। মুখ উজ্জ্বল করার এতই শখ হলে বল, তোকে ভালো একটা নাইট ক্রিম সাজেস্ট করি। দেখবি, একেবারে ফকফকা হয়ে যাবি!”
হ্যাপি ঠোঁট চেপে হাসতে গিয়েও শেষ পর্যন্ত শব্দ করে হেসে ফেলল। নাহিদের কটমট দৃষ্টি পড়তেই মেয়েটা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে তর্জনী তুলে নীরব ক্ষমা চেয়ে নিল। লাল টকটকে বেনারসীতে মোড়ানো কোয়েল, পাশে সাদা পাঞ্জাবিতে রোহান–দু’জনের মুখেই স্পষ্ট উদ্বেগের ছাপ। নাহিদ ওদের দিকে তাকিয়ে অসন্তুষ্ট স্বরে বিড়বিড় করল,
-” শালা প্রেম-প্রীতির গুষ্টি কিলাই!”
প্রত্যাশার চোখ পড়তেই নাহিদের মুখ কাঁচুমাচু হয়ে গেল। কোয়েল দু’কদম এগিয়ে এসে প্রত্যাশার হাত মুঠোয় নিল, কণ্ঠে অনুনয়ের সুর,

-” দোস্ত, কিছু একটা কর। আব্বু যা শুরু করেছে, তাতে আমি হেব্বি ভ’য় পাচ্ছি। যদি সত্যি সত্যি রোহানসহ তোদের নামে কেস ঠুকে দেয়, তাহলে?”
নাহিদ ক্ষেপাটে সুরে বলল,
-” ঠিক মামলা করে দিবে তোর স্বৈরাচারী বাপ। বাল্যবিবাহে সাহায্য করতে গিয়ে আগামীর একজন ভবিষ্যৎ বিসিএস ক্যাডারের স্বপ্ন ভেঙ্গে হবে চুরমার। একবার নামের সাথে মামলা-ফামলা ঢুকলে আর সরকারি চাকরি হবে না ইহজন্মে।”
কোয়েল মাথা নাড়িয়ে বলল,
-” আরে আব্বু মিথ্যে বলছে তো। আমার আসল বয়স আঠারো বছর সাত মাস চলছে। জন্মনিবন্ধনে দু’বছর কম দেওয়া আছে। জানিসই তো পড়াশোনায় কেমন আমি, তাই আব্বু নিজেই বয়স কমিয়ে দিয়েছিল।”
শেষ কথাটা মিনমিনে স্বরে বলে কোয়েল। প্রত্যাশা জিজ্ঞেস করল,
-” অফিসারের সামনে এটা বলতে পারবি তো? নাকি আঙ্কেলের ধ’ম’ক শুনে___”
কথার মাঝেই নাহিদ বলল,

-” আরে ওরটা না হয় হলো। কিন্তু ওই ভাদাইম্যার কী হবে? ভাদাইম্যার বয়স আঠারো থেকে কীভাবে টেনে একুশে আনবো। শালার চুল-দাঁড়ি গজায় নাই , অথচ বিয়ে করার শখ জাগছে।”
রোহান বি’র’ক্ত চোখে তাকিয়ে সাফাই গাইতে বলল,
-” আরে আমাকে এভাবে বলছিস ক্যান। আঙ্কেল পায়েলের অন্যত্র বিয়ে ঠিক করতে যাচ্ছিল বিধায়ই তো এরকম একটা ডিসিশন নিলাম। এখন যে পরিস্থিতিটা এমন হবে! কে জানত?”
ওপাশের ঝগড়া ঝাটি, হম্বিতম্বি যেন ক্রমশ বাড়ছিলোই। মূহূর্তেই জলদগম্ভীর স্বরে পুরো থানা নিস্তব্ধ হয়ে যায়।
-” স্টপ! দিস ইজ আ পুলিস স্টেশন, নট আ ফিশ মার্কেট।”
কণ্ঠ শুনে ঘাড় ফিরাতেই প্রত্যাশার চক্ষু চড়কগাছ। শুকনো ঢোক গিলে মনেমনে আওড়াল,
-” ইয়া আল্লাহ! ইয়া মাবুদ! এ এখানে কী করছে? যেখানে বা’ঘের ভ’য় সেখানেই সন্ধ্যে হয়। কথাটা একেবারে খাপেখাপ দেখছি। এর আবার আজকেই এখানে আসার ছিলো। ধূর! টাইমিংটা…. ওহ্, শিট! শিট! শিট!”
কয়েক সেকেন্ড পরে, সামনের অফিসারের দৃষ্টি এক সেকেন্ডের জন্য প্রত্যাশার দৃষ্টিতে মেলে। প্রত্যাশা তড়িৎ দৃষ্টি সরিয়ে নেয়। হ্যাপির দিকে চেয়ে ফিসফিসিয়ে বলে,

-” অ্যাই দ্যাখ, দ্যাখ তো। আন্টির আলখেল্লার মত ইয়া বড় বোরখা আর হিজাব গায়ে আমাকে চেনা যাচ্ছে কী না? বুঝা যাচ্ছে কী? শুধু তো চোখদুটো ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। তারপরও কী___”
হ্যাপি চোখ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে প্রত্যাশার আপাদমস্তকে নজর বুলায়। হঠাৎ আঁতকে ওঠে হায় হায় করে বলে উঠল,
-” ইয়া আল্লাহ! আম্মুর নতুন বোরখা ছিল এটা। একদিনও আম্মু পড়েনি। ছিঁ’ড়ল কী করে? কোথায় বাঁধিয়ে ছিঁড়ে ফেললি। আম্মু দেখলে তো আমার পিঠে তাল পড়বে। নিজে পড়ার কথা বলে আজকের জন্য নিয়েছিলাম।”
প্রত্যাশা অতিষ্ঠ চোখে চাইল। দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
-” আরে আন্টির মা’রের চিন্তা পরে করিস। এখন এখান থেকে সহিসালামতে কীভাবে বেরোবি তাই ভাব। পুলিশের ডা’ন্ডার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কথা আগে ভাব।”

পুলিশের ডান্ডার কথা শুনে হ্যাপির মুখটা ভ’য়ে এইটুকুন হয়ে আসে। আপাতত মায়ের ব’কুনির কথা মাথার একপাশে সরিয়ে রাখে। ভ’য়ে হ্যাপির আত্মা শুকিয়ে আসছে। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে মিনমিন করে বলল,
-” প্রত্যাশা রে, অ্যাই প্রত্যাশা সত্যি সত্যিই জেলে চালান টালান করে দিবে না তো। বাল্যবিবাহে উৎসাহিত করে, দেন সাহায্য করার জন্য মামলা দিয়ে দিবে না তো। অফিসারকে দেখে তো আমার খুব কড়া মনে হচ্ছে।”
প্রত্যাশা আড়চোখে অফিসারের দিকে চাইল। ঠোঁট নেড়ে বলল,

মধ্য রাতের চাঁদ পর্ব ১১

-” ব্যাটা বেশি হম্বিতম্বি করলে খবর আছে। ব্যাটা নিজে বাল্যবিবাহ করেছে। আমাদের নামে কেস দিলে, উল্টো ওনার নামে মামলা দিয়ে দিবো। শেষে নিজের চাকরি নিয়ে টানাটানি শুরু হবে, হু।”
হ্যাপি বিস্ময় নিয়ে শুধাল,
-” তুই চিনিস ওনাকে?”

মধ্য রাতের চাঁদ পর্ব ১৩