প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ৪৯
Drm Shohag
ইরফান মাইরার কথায় ভ্রু কুঁচকে বলে,
“হোয়াট?”
মাইরা ঢোক গিলে। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,
“আপনি আমাদের গ্রামে আমাদের বাড়ির সামনে গিয়ে শিষ বাজাতেন?”
ইরফান গম্ভীর গলায় বলে, “নো।”
মাইরা রেগে বলে,
“আপনি মিথ্যে বলছেন।”
ইরফান ভ্রু কুঁচকে বলে,
“স্টুপিট গার্ল, আমি কারো বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়াই না।”
মাইরা মাথা নিচু করে। তার আশার আলো নিভলো বোধয়। ইরফানের থেকে দূরে সরতে চাইলে ইরফান দু’হাতে মাইরাকে নিজের সাথে চেপে ধরে। মাইরা ইরফানকে ঠেলে বলে,
“ছাড়ুন আমায়।”
ইরফান গম্ভীর গলায় বলে, “নো।”
মাইরার ভালো লাগছে না। তার মনে একটি কথা আসে, ইরফানের ফুপুর বাসা তো গ্রামে। মানে তৃণা আম্মাজান এর ভাতিজা ইরফান। তাহলে ইরফান নিশ্চয়ই ওই গ্রামে যেত। যেত মানে কী? তার তো নিজেরই বিয়ের আগে একবার এই লোকটার সাথে দেখা হয়েছিল। তাকে রাস্তার মাঝে ফেলে দিয়েছিল। মনে পড়ল মাইরার। অতঃপর ইরফানের দিকে তাকিয়ে বলল,
আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন
“আপনি মিথ্যে বলছেন কেন? আপনি আপনার ফুপুর বাড়ি গিয়ে শিষ বাজাতেন, আমি শুনেছি।”
ইরফান মাইরার দিকে তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে বলে,
“স্টুপিট! যখন আমার ইচ্ছে হয়, তখন এরকম করি। এর জন্য শহর গ্রাম ম্যাটার করে না।”
মাইরা পিটপিট করে চেয়ে থাকে ইরফানের দিকে। ইরফান মাইরার ডান হাত দেখে বলে,
“কাঁদলে কেন? পেইন হচ্ছিল?”
মাইরা অসহায় কণ্ঠে বলে,
“আমার হাতে কিছু হচ্ছে না। আপনি আমার কথার উত্তর দিন প্লিজ!”
ইরফান মাইরার দিকে তাকায়। খেয়াল করল মাইরার চোখ পানিতে টইটুম্বুর। ইরফান আবারও বিচলিত হয়। মাইরাকে কোলে নিয়ে বেডের উপর বসায়। এরপর সে মাইরার পাশে বসে মাইরার মুখ দু’হাতের আঁজলায় নিয়ে মৃদুস্বরে বলে,
“ডোন্ট ক্রাই। কোয়শ্চন কর।”
মাইরার মন পুলকিত হয়। ইরফানের দিকে একটু এগিয়ে গিয়ে বলে,
“আপনি আমাদের বাড়ির সামনে এসে শিষ বাজাতেন?”
ইরফান ভ্রু কুঁচকে তাকালো মাইরার দিকে। মৃদুস্বরে বলে,
“নো।”
মাইরার চোখে জমানো অশ্রু গালে বেয়ে গড়িয়ে পড়ে। ইরফান ভীষণ বিচলিত হয়। মাইরাকে টেনে তার কোলে বসিয়ে বলে,
“আই সে, ডোন্ট ক্রাই। কি প্রবলেম তোমার?”
মাইরা ভেজা চোখে ইরফানের দিকে চেয়ে বলে,
“আমি আপনার শিষ শুনেছি তো। আপনি মিথ্যে বলছেন কেন?”
ইরফান মাইরার মুখাবয়বে দৃষ্টি বুলায়। বা হাত মাইরার চোখের উপর রেখে ডান দিকে ঠোঁট সামান্য প্রসারিত করে সূক্ষ্ম হাসে। মাইরা বিভ্রান্ত হয়। দু’হাতে ইরফানের হাত সরাতে চায় তার চোখের সামনে থেকে। ইরফান হাত সরালো না মাইরার চোখের উপর থেকে। ঠোঁটজোড়ায় দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখে ঠাণ্ডা গলায় বলে,
“You are the girl I don’t like at all.
[তুমি সেই মেয়ে, যাকে আমি একদমই পছন্দ করিনা।]
কথাটা বলে মাইরার ঠোঁটজোড়া আঁকড়ে ধরে। মাইরা দু’হাতে ইরফানের শার্ট খামচে ধরে। ইরফানকে বাঁধা তো দিল না। তবে ইরফানের কথায় ভীষণ রাগ হয়। রাগ গিলে নিয়ে সে তার কাঙ্ক্ষিত
উত্তর পেতে ছটফটায়। ইরফান কয়েক সেকেন্ড এর মাঝেই মাইরাকে ছেড়ে দেয়। মাইরা পিটপিট করে ইরফানের দিকে চেয়ে কিছুটা রেগে বলে,
“আপনি আমার কথার উত্তর দিচ্ছেন না কেন? শুধু অ’স’ভ্য’তামি করছেন!”
ইরফান তীক্ষ্ণ চোখে মাইরার পানে চেয়ে ডান হাতে মাইরার ভেজা ঠোঁটজোড়া মুছে দেয়। মাইরা আবারও বলে,
“আপনি শুদ্ধ ভাইদের বাড়িতে কতদিন পর পর যেতেন আমাকে বিয়ের আগে?”
ইরফান গম্ভীর গলায় বলে,
“ডোন্ট নো।”
মাইরা বিরক্ত হয়ে বলে,
“বলবেন আপনি? আচ্ছা আপনি কী দেড় মাস, দুই মাস এরকম সময় গ্যাপ দিয়ে গ্রামে যেতেন?”
ইরফান ভ্রু কুঁচকে বলে,
“Maybe, or maybe not. Not sure.”
মাইরা কেমন করে যেন ইরফানের দিকে চেয়ে থাকে। সে এই সুর জীবনেও ভুলবে না। তার অন্তরে যে গেঁথে আছে। তার চিনতে একটুও ভুল হয়নি এই লেকটাই সেই লোক। সে ঠিকই বলেছিল, লোকটা ভীষণ নিষ্ঠুর। ইরফান মাইরার তার দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে অবাক হয়। মৃদুস্বরে আস্ক করে,
“হোয়াট?”
ইরফান কথাটা বলতে দেরি হলেও মাইরার ইরফানকে জড়িয়ে ধরতে দেরি হয়নি। ইরফানের কোলে বসা অবস্থায় দু’হাতে ইরফানের গলা জড়িয়ে ধরে। ইরফান কেমন স্তম্ভিত হয়ে যায়। মাইরার বিহেভে ভীষণ অবাক হয় ছেলেটা। মাইরাকে তার থেকে ছাড়িয়ে কিছু বলতে চায়, মাইরা ছাড়লোই না। ইরফান বুঝতে পারছে না মাইরার কি হয়েছে। এমন অদ্ভুদ বিহেভ এর মানেটাও সেভাবে বুঝল না। ঘাড়ে ভেজা অনুভব করতেই ইরফান মাইরাকে জোর করে নিজের থেকে ছাড়িয়ে নেয়। বিস্ময় কণ্ঠে বলে,
“কি প্রবলেম? কাঁদছ কেন?”
মাইরা ভেজা চোখে ইরফানের দিকে তাকায়। এরপর হঠাৎ-ই দু’হাতে ইরফানের গলা চেপে ধরে। ইরফান তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে মাইরার পানে দৃষ্টি রেখে গম্ভীর গলায় বলে,
“পুচকি মেয়ে এতো উইক বডি নিয়ে আমাকে মারতে এসেছ? ইন্টারেস্টিং!”
মাইরা এবার ইরফানের গলায় দু’হাতে সমানে খামচি দেয়। ইরফান রেগে তাকায় মাইরার দিকে। ধমকে বলে,
“What’s your problem? থাপ্পড় দিয়ে সব দাঁত ফেলব তোমার।”
মাইরা নাক টেনে ইরফানের কোল থেকে নেমে বেডের অপর পাশে গিয়ে শুতে চায়, তার আগেই ইরফান মাইরাকে টেনে তার জায়গায় শুইয়ে দেয়। এরপর সে মাইরার উপর আধশোয়া হয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকায় মাইরার দিকে। মাইরা দু’হাতে ইরফানকে ঠেলে। সে তো জানতো শিষওয়ালা তাকে চিনতো না, মনেও করতো না। কিন্তুু এখন এটা উপলব্ধি করতে পেরে তার মনে অভিমান জমলো কেন যেন! সে জানে এটা অর্থহীন। যদি তার জন্য কেউ শিষ বাজাতো তবে সে নিয়ম করেই শুনতে পেত। কিন্তুু তার তো কখনো সেই সুরেলা শিষ পুরোটা শোনার সৌভাগ্য-ই হয় নি। কারণ কেউ তার জন্য শিষ বাজাতো না। তাই একটু সময়ের মাঝেই মিলিয়ে যেত সেই সুর। তবুও মাইরার রাগ হলো। তার শিষওয়ালা তাকে চেনে না কেন? মনে মনে বিড়বিড় করে, ‘নিষ্ঠুর শিষওয়ালা।’
অতঃপর ইরফানের দিকে চেয়ে রেগে বলে, “সরুন বলছি। আমি থাকবো না আপনার সাথে।”
ইরফান গম্ভীর গলায় বলে,
“থাকতে হবে।”
মাইরা ইরফানের দিকে তাকায়। নাক টেনে বলে,
“আপনি আসলেই একটা হার্টলেস।”
ইরফান মাইরার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চেয়ে তার বা হাতে মাইরার দু’হাতে একজায়গায় করে চেপে ধরে। এরপর মাইরার গলা থেকে তার ওড়না ডান হাতে ছুঁড়ে ফেলে। মাইরা কিছু বলার আগেই ইরফান মাইরার গলায় মুখ গুঁজে দেয়। মাইরা ঢোক গিলে। ইরফান মাইরা কানের কাছে মুখ নিয়ে ঠাণ্ডা গলায় বলে,
“হার্টলেস এর মিনিং জানো?”
মাইরা কেঁপে ওঠে। ইরফান সূক্ষ্ম হেসে মাইরার কানের লতিতে আলতো কা’ম’ড় বসায়। মাইরা চোখ বুজে নেয়। ইরফান মোহিত গলায় বলে,
“শিষওয়ালা, নাইস নেইম। আই লাইক ইট।”
কথাটা বলে মাইরার উপর শরীরের ভার ছেড়ে দিয়ে চোখ বুজে নেয়। মাইরার গলায় মুখ গুঁজে লম্বা করে একটা শ্বাস টানে। এরপর ঘুম জড়ানোর মতো কণ্ঠে বলে,
“I need sleep.”
মাইরা এলোমেলো দৃষ্টি ফেলে মিনমিন করে বলে,
“সরুন।”
ইরফান বিরক্তি কণ্ঠে বলে,
“ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।”
মাইরা হাসফাস করে। এই ১০০ মণ এর বস্তা তার উপর থাকলে তার কি হবে? গলায় ইরফানের গরম নিঃশ্বাস পড়ছে। আর মাইরার ঠাণ্ডা লাগছে। হাত পায়ের তালু কেমন শিরশির করছে। মাইরা ঢোক গিলে দু’হাতে ইরফানের মাথা ধরে ঠেলে সরাতে চাইলে ইরফান মাইরার গলার ভাঁজে দাঁত বসায়। মাইরা মৃদু আর্তনাদ করে ওঠে। ইরফানকে ছেড়ে দিয়ে ঢোক গিলে। ইরফান মাইরার গলায় বসানো দাঁত ছেড়ে দিল, কিন্তুু কিছু বললো না। মাইরা আবারও মিনমিন করে বলে,
“সরুন, আমি পা….”
শেষ করতে পারলো না। তার আগেই ইরফান মাথা তুলে ধমকে বলে, “সাট আপ, স্টুপিট।”
মাইরা ঝাঁকি দিয়ে ওঠে। হঠাৎ করে এমন রামধমক খেয়ে ভীষণ ভয় পেয়েছে। ইরফান মাইরাকে এভাবে কেঁপে উঠতে দেখে নিজেই থতমত খেয়ে তাকায়। মাইরা অভিমানী চোখে তাকিয়ে আছে ইরফানের পানে। চোখের কোণে জলকণা। ইরফান নজর বুলায় মাইরার মুখাবয়বে। দু’হাতে মাইরার কোমড় জড়িয়ে তাকে টেনে নেয় নিজের দিকে। মাইরার শ্বাস ভারি হয়। ইরফান মাইরার কানের কাছে মুখ নিয়ে ঠোঁট বাঁকিয়ে কিঞ্চিৎ হেসে শীতল কণ্ঠে আওড়ায়,
“This is the first step.”
কথাটা বলে মাইরার উপর থেকে উঠে যায়। এরপর তার ল্যাপটপ এনে বেডের সাথে হেলান দিয়ে বসে, ল্যাপটপ পায়ের উপর রাখে। মাইরা পিটপিট করে ইরফানের দিকে চেয়ে থাকে। ইরফান গম্ভীর মুখে ল্যাপটপে আঙুল চালায়। কিছুক্ষণ পর পর বিরক্তিতে কপাল কুঁচকে নেয়।
মাইরা ইরফানের কথার অর্থ ঠিক বুঝল না। ভ্রু কুঁচকে চিন্তিত গলায় বলে,
“কিসের স্টেপ?”
ইরফান ঘাড় বাঁকিয়ে মাইরার দিকে একবার তাকায়। বিরক্তি কণ্ঠে বলে, “গাধা।”
এরপর আবারও তার কাজে মন দেয়।
মাইরাও বিরক্ত হলো। তাকে শুধু এইসব বিরক্তকর নামেই এই অ’স’ভ্য লোকটা ডাকে। জীবনে একটা ভালো নামে ডাকলো না। বিড়বিড় করে, ‘অ’স’ভ্য, নি’ষ্ঠু’র।’
এরপর পিটপিট করে শুধু চেয়ে থাকে ইরফানের দিকে। না চাইতেও ঠোঁটের কোণে মৃদু হাসি ফুটে ওঠে।
একদিন দীর্ঘশ্বাস নিয়ে তার মন বলে উঠত,
‘ও অদৃশ্য শিষওয়ালা তুমি কেমন দেখতে?’
আজ সে মন অজান্তেই মনে মনে আওড়ায়,
‘এই যে শিষওয়ালা তুমি এমন দেখতে!’
আজকে হুট করেই মাইরার কাছে ইরফানকে কী ভীষণ সুন্দর লাগছে! মাইরা আগেও খেয়াল করেছে, কিন্তুু আজ কেন যেন চোখে লাগছে তার।
সোজা, তীক্ষ্ণ, খাড়া নাক,, কালচে ঠোঁট। মাইরা বিরক্ত হলো। এই লোক সিগারেট খেয়ে খেয়ে এমন করেছে ঠোঁটের। তবুও তার ভালোই লাগলো।
ইরফান মাইরার চেয়ে এক সেড বেশিই ফর্সা হবে বলে মাইরার মনে হলো। চোখের মণি দুটো বিড়ালের চোখের মতো কেমন বাদামি। চুলগুলো কিচকিচ কালো। মাইরা ভাবলো এই লোকের চুল যদি একটু অন্যরকম হতো তবে এই লোক যে বাংলাদেশি এটার বোঝার চান্স-ই থাকতো না। মাইরার মনে প্রশ্ন জাগে, ইরফানের বংশে কি কেউ বিদেশি ছিল? মাইরা সিদ্ধান্ত নিল, সে এই কোয়শ্চন ইরফানকে করবে।
ভাবনা নিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসল। এরপর ইরফানের দিকে একটু এগিয়ে এসে বসে। বলতে চায়, ‘আপনি আমাকে একটুও চিনতেন না?’
কিন্তুু মনের কথা মনেই রইল। মাইরা কেমন করে যেন ইরফানের দিকে শুধু তাকিয়েই থাকে। সে নিজেই নিজেকে বুঝতে পারছে না। তবে ভীষণরকম ভালো লাগছে। বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে হয়তো আজকেই প্রথম মাইরার মন এতো বেশি পুলকিত হলো।
ইরফান মাইরাকে এভাবে বসে থাকতে দেখে তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে বলে,
“হোয়াট হ্যাপেন্ড? ঘুমাচ্ছো না কেন?”
মাইরা মিনমিন করে বলে,
“ঘুম আসছে না।”
ইরফান কোলের উপর থেকে ল্যাপটপ রেখে মাইরাকে টেনে তার কোলে বসায়। মাইরার পিঠ ইরফানের বুকে ঠেকে। মাইরা থতমত খেয়ে বলে, “কি করছেন?”
ইরফান উত্তর করল না। মাইরার কোলের উপর ল্যাপটপ রেখে মাইরার দু’পাশ দিয়ে হাত বাড়িয়ে ল্যাপটপে আঙুল চালায়। মাইরা পিটপিট করে ইরফানের আঙুলগুলোর দিকে একবার তাকায়। আরেকবার ল্যাপটপের স্ক্রিনে। কি যে করছে কিছু বুঝল না। কিছু একটা মনে পড়ায় ঘাড় বাঁকিয়ে মিনমিন করে বলে,
“শুনুন।”
ইরফানের ল্যাপটপের স্ক্রিনে থাকা দৃষ্টি ঘুরে যায় মাইরার দিকে। আঙুল থেমে যায়। মৃদুস্বরে বলে,
“শুনছি।”
মাইরা জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে বলে,
“আপনাদের মাঝে কি বিদেশি মানুষ আছে?”
ইরফান তার কাজে মনোযোগ দেয়। গম্ভীর গলায় বলে, “নো।”
মাইরা সাথে সাথে ঘাড় ঘুরিয়ে ইরফানের দিকে চেয়ে বলে ওঠে,
“তাহলে আপনি দেখতে বিদেশিদের মতো কেন?”
ইরফানের কপালে ভাঁজ পড়ে। আড়চোখে মাইরার দিকে চেয়ে বিড়বিড় করে, “স্টুপিট।”
মাইরা ইরফানকে চুপ দেখে বলে,
“মানে আমি বলছি, আপনার চোখের মণি কেমন বাদামি, ওই বিড়ালদের মতো। দেখুন তো আমাদের চোখের মনি কেমন বাঙালিদের মতো কালো।
ইরফান মাইরার দিকে তীক্ষ্ণ চোখে চেয়ে গম্ভীর গলায় বলে,
“কজ, তোমার হাসবেন্ড এর চোখের আইরিসে মাত্রাতিরিক্ত মেলানিন।”
মাইরা বোকাচোখে তাকায় ইরফানের দিকে। সে তো বোঝাতে চাইছিল, ইরফানের পূর্বপুরুষ কেউ বিদেশি কি-না। মাইরা ঘাড় ঘুরিয়ে ল্যাপটপের দিকে তাকায়। ইরফান আবারও ল্যাপটপে আঙুল চালায়, সাথে প্রশ্ন করে,
“হু ইজ শিষওয়ালা?”
মাইরা মুখ বাঁকিয়ে বলে,
“আমার প্রেমিক।”
ইরফান রহস্যময় হেসে মুখ নামিয়ে মাইরার গলায় নাক ঘষে দু’বার। মৃদুস্বরে বলে,
“আচ্ছা?”
মাইরা দু’হাত জমা করে নিজের অশান্ত মনকে শান্ত করার চেষ্টা করে। এরপর থেমে থেমে বলে,
“আমার প্রেমিক-ই তো। আমি তাকে খুঁজে পেলে তার কাছে চলে যাবো।”
ইরফান মাইরার কাঁধে থুতনি রেখে ল্যাপটপে দৃষ্টি রেখে বলে,
“ok.”
মাইরার রাগ হলো। এই লোকটার কোনো যায়-ই আসে না। মুখ ফুলিয়ে সামনে তাকিয়ে রইল। এক পর্যায়ে মাইরা ঘুমিয়ে যায়। বাম দিকে হেলে পড়তে নিলে ইরফান দ্রুত বা হাতে মাইরাকে আগলে নেয়। সে বেডের সাথে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে মাইরার মাথা তার বুকে ঠেকিয়ে রাখে। বা হাতে মাইরার কপাল, গলা চেক করলে দেখল ঘামছে নাকি ঠাণ্ডা লাগছে। স্বাভাবিক দেখে সে তার কাজে মন দিল।
নাছিম অন্তরাদের বাসার ড্রইংরুমে সোফায় গা এলিয়ে দিয়ে বসে আছে। অন্তরা গাড়ি ড্রাইভ করতে পারবে না মূলত এজন্য সে অন্তরাকে কলেজে রেখে আসবে। অন্তরা কল করেছিল। কিন্তুু বেচারা এ বাড়ি এসে মনে হচ্ছে আপ্যায়ণ পাচ্ছে না। চোখ বুজে আওয়াজ করে বলে,
“বাড়িতে মেহমান এলে তাকে খাবারের মাঝে ডুবিয়ে রাখতে হয়। মেহমানদের এভাবে অবহেলা করলে আল্লাহ পাপ দেয় পাপ। ভালো হয়ে যা অন্তরা। এখনো সময় আছে।”
ছেলে কণ্ঠে ঘর থেকে অন্তরার বাবা বেরিয়ে এসে নাছিমকে দেখে চিনলো না। তবে বুঝল অন্তরার কেউ। আসলেই ছেলেটাকে কোনো নাস্তা দেয়া হয়নি। ভদ্রলোক অসন্তুষ্ট হলেন দুই মেয়ের উপর। মেহমানকে আপ্যায়ণ করল না কেন এই আফসোসে। এগিয়ে গিয়ে নাছিমের উদ্দেশ্যে বলে,
“তোমার নাম কি বাবা?”
এই বাড়িতে এমন ছেলে লোকের ভারী কণ্ঠ পেয়ে নাছিম দ্রুত চোখ খুলে তাকায়। অন্তরার বাবাকে তিনি দেখেছিলেন আগে, তবে সেভাবে পরিচয় নেই। ভদ্রলোককে দেখে নাছিম মুখ লুকাতে চাইলো। হায় হায় এই লোক তো তার কথা শুনে নিয়েছে। তাকে নিশ্চয়ই অভুক্ত ভাবছে। ইশ! এই হতচ্ছাড়ি অন্তরার বাবা এসেছে, ও বলেনি কেন তাকে। বসা থেকে দাঁড়িয়ে আঙ্কেল সম্মোধন করে সালাম দিয়ে তার নাম বলে। অন্তরার বাবা সালাম এর উত্তর নিয়ে বলেন,
“তুমি বসো বাবা। আমি আসছি।”
নাছিম খুব বুঝল তাকে অভুক্ত ভেবে খাবার আনতে যাচ্ছে। ইশ! কি লজ্জা! দ্রুত বলে ওঠে,
“আঙ্কেল আপনার সাথে আমার খুব ইম্পর্ট্যান্ট আলাপ আছে।”
অন্তরার বাবা নাছিমের দিকে তাকালেন। নাছিম গলা ঝেড়ে বলে,
“আঙ্কেল আমি অন্তরার ফ্রেন্ড। অন্তরা বিয়েতে রাজি। আপনি পাত্র দেখুন।”
অন্তরার বাবার চোখ চকচক করে ওঠে। না চাইতেও মুখে হাসি ফুটে ওঠে। আজ প্রায় পাঁচ বছরের বেশি হলো তিনি মেয়ের বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তুু বরাবরই ব্যর্থ। আজ হঠাৎ এমন কথা শুনে বাবা হিসেবে তার আকাশের তারা হাতে পাবার মতোই তার মন উৎফুল্ল হলো। খুশি খুশি মনে বলে,
“তুমি সত্যি বলছ বাবা?”
নাছিম হেসে বলে,
“জ্বি আঙ্কেল। আপনি ছেলে দেখুন।”
অন্তরার বাবা নাছিমের উদ্দেশ্য হেসে বলে,
“তুমি বসো বাবা। আমি দুই মিনিটে আসছি। আসলে আমার মেয়ে দু’টো খুব অবুঝ।”
নাছিম দ্রুত বলে,
“না না আঙ্কেল। আপনি ব্যস্ত হবেন না..”
তখনই অন্তরা ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে। অন্তরার বাবা অন্তরাকে দেখে এগিয়ে গিয়ে অন্তরার মাথায় হাত দিয়ে বলে,
“আমি যে কি খুশি হয়েছি মা! তুই খুব ভালো থাকবি মা। আমার দোয়া তোর সাথে সবসময় আছে।”
অন্তরা বাবার কথায় বোকা চোখে তাকিয়ে রইল। সব তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। নাছিম দ্রুত অন্তরার হাত টেনে বলে,
“আয় লেট হচ্ছে।”
অন্তরার বাবা নাছিমের উদ্দেশ্যে বলে,
“বাবা কিছু খেয়ে যাও।”
!
আরেকদিন আঙ্কেল। আজ একদম টাইম নেই।
!
অবশ্যই আসবে কিন্তুু।
!
জ্বি আঙ্কেল।
অন্তরা গাড়িতে উঠে বসে। নাছিম গাড়ি ড্রাইভ করছে। অন্তরা চিন্তিত কণ্ঠে বলে,
“বাবার কি হয়েছে? ওভাবে কথা বললো কেন?”
!
তুই বিয়েতে রাজি হয়েছিস তাই।
!
কিইইইই!
নাছিম বা হাতের এক আঙুল কানের ভেতর ঘুরিয়ে বলে,
“আমি ছেলে পছন্দ করে দিব। নো টেনশন। পেট মোটা, টাকলা দু’টোই লাগবে? নাকি একটা হলেই চলবে?”
অন্তরা কটমট দৃষ্টিতে নাছিম এর দিকে চেয়ে বলে,
“শ’য়’তা’ন। বাবা সত্যি সত্যি ছেলে দেখবে।”
নাছিম মিটিমিটি হেসে বলে,
“ইরফানের বিয়ের তো খেতে পারলাম না। শুদ্ধ যে কবে করবে। শুধু ফাইজের বিয়ে খেয়ে পেট ভরেনি। এবার তুই বিয়ে করে আমাদের পেট ভরা।”
অন্তরা তার পা থেকে চটি খুলে বা হাতে নাছিমের বাহুতে দু’টো লাগিয়ে চিল্লিয়ে বলে,
“বাবা যে ছেলে ঠিক করবে, ওর সাথে আমি তোর বিয়ে দিব দাঁড়া। বে’য়া’দ’ব।”
নাছিম ডান হাতে তার বাম বাহুতে দু’বার হাত বুলিয়ে বলে,
“আসতাগফিরুল্লাহ! আমি পিওর ছেলে! ইরফানের কথা ভাবতে ভাবতে তুই তো পাবনার বাসিন্দা হয়ে গেলি রে!”
অন্তরা রাগে ফোঁসফোঁস করছে। নাছিম অসহায় মুখ করে বলে,
“আজ আমি ভালো বলে! নয়তো আমার পায়ে আরও শক্ত জুতো আছে।”
অন্তরা মুখ ফিরিয়ে বাইরে তাকালো। চোখের কোণে পানির কণা। সিটে মাথা এলিয়ে ভারী গলায় বলে,
“মানুষ শুধু কথা শোনাতে আর মজা নিতেই জানে।”
নাছিম এর মুখ মলিন হয়। তবে কিছু বলে না। সে যা করছে ভুল নয়, হেসে হেসে করলেও এটা প্রয়োজন। নয়তো অন্তরা মানসিক রোগী হয়ে যাবে।
দেখতে দেখতে প্রায় ১৫ দিন পেরিয়েছে। ইরফান মাইরাকে বেসরকারি একটি কলেজে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে। মাইরাও মেনে নিয়েছে। মাইরার মনে প্রশ্ন জাগে, ইরফান বলেছিল অন্তরা ইরফানের ফ্রেন্ড। হিসেব মতে ইরফানের উচিৎ ছিল, যেখানে ইরফানের ফ্রেন্ড, সেখানেই তাকে ভর্তি করানো। উল্টে তাকে অনয় কলেজে ভর্তি করিয়েছে। আর সবচেয়ে বড় কথা প্রথম দিন তার প্রতি অন্তরার এতো অমায়িক ব্যবহার, তার পরের দিনই তাকে অকারণে এভাবে শাস্তি দেয়ার হিসাব মাইরা মেলাতে পারে না। ইরফানকে বললে তাকে ধমকে চুপ করিয়ে দেয়।
মাইরা রেডি হয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। ইরফান গাড়িতে ওয়েট করছে। মাইরা কোনো কথা না বলেই দ্রুত গাড়িতে উঠে বসে। ইরফান একবার তাকালো মাইরার দিকে। মাইরাও সেসময় তাকানোয় দু’জনের চোখাচোখি হয়ে যায়। মাইরা মৃদু হাসে। ইরফান তার গাম্ভীর্যের বাইরে বেরলো না। নিরবে চোখ সরিয়ে গাড়ি স্টার্ট দেয়।
মাইরা মুখ বাঁকায়। এই লোকটা একটা অদ্ভুদ প্রাণী। হাসলে কি না জানি হবে। ইরফানের দিকে তাকিয়ে বলে,
“বলছি, হাসলে কি আপনার মুখ ব্য’থা করে? ডেইলি একটা করে ব্য’থার ওষুধ খেলেই তো হয়।”
ইরফান ধমকে বলে, “সাট আপ।”
মাইরা ঝাঁকি দিয়ে ওঠে। ভেঙচি কেটে জানালার দিকে তাকায়। এই লোক কিভাবে শিষ বাজায়! এমন পেঁচামুখোর মাঝে আল্লাহ ওই বৈশিষ্ট্য কেন দিয়েছে! মাইরার আফসোস হলো। এসব বৈশিষ্ট্য থাকবে রসাত্মক মানুষের মাঝে। আর এই লোক তো হাসতে জানে না, কথা বলতে জানে না। মাইরার বিরক্ত লাগে। ভাবনার মাঝেই ইরফান তার কলেজ গেইটের সামনে গাড়ি দাঁড় করালে মাইরা দ্রুত গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ায়। ইরফান গাড়ি থেকে নেমে মাইরার পাশে এসে দাঁড়ায়। মাইরা ইরফানকে পাশ কাটিয়ে যেতে নিলে ইরফান মাইরার হাত টেনে বলে,
“আমার লেট হলে কলেজ থেকে বেরোবে না।”
মাইরা মুখস্থ লাইনটা শুনে অলস ভঙ্গিতে মাথা নাড়ায়। এরপর সে কলেজ গেইটে প্রবেশ করে। বাইরে থেকে ভেতরে দেখা যায়। ইরফান দু’হাত প্যান্টের পকেটে গুঁজে মাইরার দিকে তাকিয়ে রইল।
মাইরা কলেজ গেইটের ভেতর প্রবেশ করলে দেখল একটি ছেলে তার দিকে দু’হাত বাড়িয়ে দিয়ে দৌড়ে আসছে। মাইরা চোখ বড় বড় করে তাকায়। এই ছেলের সাথে তিনদিন হলো তার পরিচয় হয়েছে। মূলত তার নতুন বান্ধবী মিলাই পরিচয় করিয়েছে। ভীষণ গায়ে পড়া টাইপ। মাইরা একবার পিছন দিকে তাকালে ইরফানকে দেখল। আবার সামনে তাকালে দেখল ছেলেটা আর তার মাঝে বেশি দূরত্ব নেই। মাইরা দ্রুত বাম দিকে এক প্রকার দৌড়ে সরে দাঁড়ায়। ছেলেটা মাইরাকে না পেয়ে মাঠের মাঝে উপুড় হয়ে ঠাস করে পড়ে যায়। মাইরা শব্দ করে হেসে ওঠে।
গেইটের দিকে নজর করলে ইরফানকে এগিয়ে আসতে দেখে মাইরা তার ক্লাসরুমের দিকে দৌড় দেয়। এখানে থাকলেই বিপদ।
শুদ্ধ তার লাস্ট ক্লাস নিয়ে মাঠে এসে দাঁড়ায়। আশেপাশে একবার চোখ বুলায়। ফারাহ কে খুঁজছে মূলত। খুব বেশি কষ্ট করতে হলো না। কিছুটা দূরেই ফারাহ তার ফ্রেন্ডদের সহ পেয়ে যায়। খুব স্বাভাবিক ভাবেই সেদিকে এগিয়ে যায়।
মাঝপথে এসে শুদ্ধর পা থেমে যায়। চোখমুখ শক্ত হয়ে যায়। ডান পায়ের গোলাড়ির দিকটা মাটিতে ঠেকিয়ে রেখে আগার দিকটা দু’বার ডানদিকে আর বামদিকে নাড়ায়। দু’হাতের কনুই পর্যন্ত গুটানো শার্টের হাতা কনুই এর উপরে তুলল। ডান হাত মুষ্টিবদ্ধ করে হাতটা একবার ঝাড়া দেয়। এরপর গটগট পায়ে এগিয়ে গিয়ে সবার মাঝ থেকে ফারাহ’র হাত ধরে জোরে টান দেয়। শাহেদ হেলে পড়তে পড়তে বেঁচে যায়, বেচারা ফারাহ’র কাঁধে মাথা রেখেছিল একটু।
এদিকে ফারাহ পড়ে যেতে নেয়, তবে শুদ্ধ বা হাতে ফারাহ কে ঠেলে সোজা করে দাঁড় করিয়ে দেয়। এরপর শাহেদের কলার ধরে রাগান্বিত স্বরে বলে,
“তোর ক্লাস তো আমি পরে নিব, ওয়েট।”
কথাটা বলে শাহেদকে ধাক্কা দেয়।
এরপর আর কোনো কথা না বলে ফারাহ কে টেনে নিয়ে যেতে থাকে। সবার চোখেমুখে ভীতি।
ফারাহ ঢোক গিলে বলে,
“শুদ্ধ ভাই আমি…
শুদ্ধ তার গাড়ির দরজা খুলে ফারাহকে ধাক্কা দেয়। ফারাহ হাতে ব্য’থা পায়। শুদ্ধ ড্রাইভিং সিটে এসে বসে। ফারাহ ঢোক গিলে বলে,
“শুদ্ধ ভাই শাহেদ..”
শুদ্ধ স্টিয়ারিং এর উপর দু’হাত রেখে মাথা নিচু করে নিজেকে দমাতে চাইছিল। কিন্তুু শাহেদের কথাটা শুনে ঝড়ের বেগে ফারাহ’র ডান গালে থাপ্পড় মেরে দেয়। ফারাহ অবাক হয়ে শুদ্ধর দিকে তাকায়। শুদ্ধ এক সেকেন্ডও সময় নষ্ট না করে ফারাহ’র গলা চেপে ধরে ডান হাতে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
“বলেছিলাম, সব ত্যাড়ামি মানবো। শুধু কোনো ছেলেকে জড়াবি না। বল বলেছিলাম কি-না? তবুও অবাধ্যপনা করবি কেন?”
ফারাহ চোখ বড় বড় করে তাকায়। দু’হাতে শুদ্ধর হাত তার গলা থেকে সরাতে চায়। শুদ্ধ ছাড়লো না। বরং হাতের বেগ বৃদ্ধি করল। ফারাহ’র চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ে। শুদ্ধর দয়া হয় না। আগের চেয়েও শক্ত গলায় বলে,
“এইসব ছেলে রিলেটেড কিছু করলে, বলেছিলাম তোর অস্তিত্ব রাখবো না। বল বলেছিলাম কি-না! আমি হিহি করে বলে আমার সব কথা সব উঠিয়ে দিবি? এই তোর মাথায় মগজ নেই? তোর কাঁধে আরেকজনকে জায়গা দিস! তোর তো বেঁচে থাকার অধিকার নাই। মরে যা তুই। কবরে গিয়ে দোয়া করে আসবো। বেঁচে থেকে আরেকজনকে কাঁধে জায়গা দিবি আর আমি তোকে বাঁচিয়ে রাখবো?”
ফারাহ’র চোখমুখ লাল হয়ে যায়। শুদ্ধর একটুও দয়া হলো না, যেন ফারাহ কে মেরে তবেই সে দম নিবে।
প্রণয়ের অমল কাব্য পর্ব ৪৮
মাইরা কলেজ শেষে কলেজ মাঠে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে ইরফানের জন্য। হঠাৎ-ই তার সামনে কেউ একজন তাকে সালাম দেয় মাইরা সম্মোধন করে। মাইরা বাম দিকে ঘাড় ফিরিয়ে কিছু দেখছিল। তার নাম ধরে কেউ সালাম দেয়ায় মেয়েটা ভ্রু কুঁচকে তার সামনে তাকায়। সালামের উত্তর নিতে চায়,
“আসসালা…
থেমে যায় মাইরা। সালামের উত্তর সম্পন্ন করতে পারলো না।
বিস্ময় দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সামনে দাঁড়ানো ভদ্র মেয়েটির দিকে।