প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৯

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৯
আদ্রিতা নিশি

অরিত্রিকার বাড়ির সামনে এসে থামল আভিজাত্যপূর্ণ গাড়ি দুটো। পেছনের গাড়ি হতে নেমে দাঁড়াল দুজন দেহরক্ষী এবং সতর্কতার সহিত বিশেষ ভঙ্গীতে রাস্তা বরাবর দাঁড়িয়ে গেল। এরপরেই সামনের গাড়ি থেকে নাম সারহান। মুখাবয়বের অভিব্যক্তি কঠোর এবং গম্ভীর। সে দাম্ভিকতা বজায় রেখে বক্ষ টান করে দুই কদম এগিয়ে এসে কিছুটা দূরে দাঁড়াল। গাড়ির পেছনের দরজা খুলে নামল অরিত্রিকা এবং ইশরা। দুজনে বেশ শান্ত এবং নিরব। দুজনে ভদ্র মেয়ের মতো এগিয়ে আসল ধীর পায়ে। সারহানের কাছাকাছি আসার আগে ইশরা অরিত্রিকাকে ইশারা করে করল বাড়ির ভেতর যাবে। অরিত্রিকা কিছু একটা বলার জন্য ডাকবে সেসময় টুকু পেলো না তার আগেই ইশরা হম্বিতম্বি করে ভেতরে চলে গেল। অরিত্রিকার মেজাজ চটে গেল। সে বেজায় বিরক্ত হয়ে সেই স্থানে থম মেরে বাড়ির সদর দরজার দিকে তাকিয়ে রইল।

“ কিছু বলবি? ”
সারহানের গম্ভীর কন্ঠস্বর কর্ণকুহরে প্রবেশ করতেই অরিত্রিকা চমকে উঠল। সদর দরজা হতে চোখ ফিরিয়ে সারহানের দিকে তাকাল তটস্থ ভঙ্গিতে। চঞ্চল, ভীত দিশাহীন চক্ষুদ্বয় স্থির করল শ্যামমানবের মুখাবয়বে। রাতের রাস্তার পাশের ল্যাম্পপোস্টের সোডিয়াম ক্ষীণ আলোয় তীক্ষ্ণ বাদামী বর্ণের চক্ষু, সরু নাক, কালচে এলোমেলো চুল, খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি চোখে পড়ল। চোখ মুখে গাম্ভীর্যভাব ফুটে উঠেছে। এই গম্ভীর মানুষটাকে সে কবে হাসতে দেখেছে মনে নেই। এমন এটিটিউড নিয়ে ঘুরলে যে কোনো মেয়ে দেখলে একদম ফিদা হয়ে যাবে। অরিত্রিকার চোখ কেমন ধাঁধিয়ে যাচ্ছে পুরুষালি তীক্ষ্ণ চাহনিতে। সে একটু অপ্রস্তুত হয়ে যায়। তার চাহনি স্থির হয় না তীক্ষ্ণ দৃষ্টের চক্ষুদ্বয়ে। সে দ্রুত চোখ ফিরিয়ে মাথা নত করে। ধীর কন্ঠে বলে ;

আরও গল্প পড়তে এখানে ক্লিক করুন 

“ উহু কিছু বলব না। ”
সারহান অরিত্রিকার অদ্ভুত আচরণ লক্ষ্য করে। কিছুটা কৌতুহলী হয়। কিন্তু তা দমিয়ে রেখে দুই হাত বুকে গুঁজে ভরাট কন্ঠে বলে ;
“ তোর কিছু বলার না থাকলে আমি তোকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করব তার অ্যান্সার দিবি। ”
অরিত্রিকা কিছুটা ভড়কে যায়। সারহান ভাই তাকে কি এমন প্রশ্ন করবে হঠাৎ? সামনে দন্ডায়মান মানুষটির দিকে পিটপিট করে তাকিয়ে অস্ফুটস্বরে বলে ;
“ কি প্রশ্ন?”
“ রুহানের পুরো ডিটেইলস দে? ”
“ রুহান! কোন রুহান? আমি চিনি কোনো রুহান ফুয়ান কে।”
“ রুহানকে চিনিস না?”
সারহানের দৃঢ় সন্দেহবাতিক স্বর। অরিত্রিকা উসখুস করে ঢোক গিলে বলল;
“ নাহ, চিনি না।”
“ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ পলিটিকাল সায়েন্স পড়াশোনা করে এবং তোর গুনধর বেস্ট ফ্রেন্ড রুহানের কথা বলছি। কিছু মনে পড়েছে? ”

অরিত্রিকা চোখ কুঁচকে সারহানের দিকে তাকায়, যেন ধরা পড়া কোনো অপরাধী। মুহূর্তেই মুখ শুকিয়ে চুপসে যায়। আতঙ্কে দুই হাত বারবার কচলাতে থাকে। উদ্বেগে তার পেটের ভেতর অস্বস্তিকর গুঞ্জন ওঠে। এই হাড়কাঁপানো শীতের রাতে সারহান ভাই তার জীবনে দাউদাউ করে আগুন ধরিয়ে দিলেন!এখন সে কোথায় যাবে? কী করবে? কোন দিক দিয়ে পালাবে? এ কোন মহা বিপদে এসে জড়াল! নিশ্চয়ই রুহানের গোটা বংশপরিচয় সারহান ভাই এখন পর্যন্ত খুঁজে বের করে ফেলেছেন আর এবার তার পালা! কেন যে সেদিন রুহানকে ভার্সিটিতে চিরকুট দিতে বলেছিল! এখন এই গলদঘর্ম অবস্থা তার কপালে লেখা ছিল? ভেবেছিল সারহান ভাইকেই একটু শায়েস্তা করবে কিন্তু বিধি বাম! শায়েস্তা করা দূরে থাক বরং নিজেই যেন ভয়ংকর ফাঁদে আটকা পড়ে গেল!? অরিত্রিকা হাসার ভাণ করে আমতা আমতা করে বলল;

“ লম্বু রুহানের কথা বলছেন? আরে ওই রুহান আমার বেস্ট ফ্রেন্ড না এমনি ক্লাসমেট। তো সারহান ভাই রুহানের কথা জিজ্ঞেস করছেন কেন?”
সারহান ভ্রু যুগল কুঁচকে বাঁকা হেসে বলে ;
“ ট্রিট দেওয়ার জন্য।”
“ কীসের ট্রিট? ”
“ আমার বিবিজানকে খুঁজে দিয়েছে। তাই ভাবলাম রুহানকে স্পেশাল ট্রিট দেব আমার পক্ষ থেকে। ”
সারহানের হেঁয়ালিপূর্ণ কথায় অরিত্রিকার চোখ বড় বড় হয়ে গেল। সে হতবিহ্বল হয়ে গেল মুহুর্তে। তার শরীর কেমন ঝিমঝিম করছে। এসব কি শুনছে সে? নিজেকে সামলে আমতা আমতা করে বলল;
“ আপনার না হওয়া বিবিজানের নাম কি? ”
“ পার্সোনাল বিষয় নিয়ে তোর সাথে কথা বলতে ইচ্ছুক নই। ”

অরিত্রিকার কৌতূহলী মুখ মুহূর্তেই গম্ভীর হয়ে উঠল। সারহানের উদাসীন বাক্য তাকে যথেষ্ট বিরক্তির সঞ্চার করল। এই নিরাসক্ত, যন্ত্রমানবসদৃশ ব্যক্তির সঙ্গে বাক্যালাপ করা যেন জীবনকে বৃথাই ক্লান্তির ভারে নত করা। অথচ তিনিই আবার রুহান সম্পর্কে জানতে আগ্রহী! নিশ্চয়ই এখনো মেয়েটির বিষয়ে কিছু জানতে পারেননি। নতুবা আজই এখানে দুর্যোগ নেমে আসত তার ওপর।নিজের মনে সে স্থির করল রুহানকে আজই ফোন করে সাবধান করে দেবে, অন্তত দশ-পনেরো দিন যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌহদ্দিতে পা না রাখে। এতদিন ধরে ভেবেছিল হয়তো সারহান ভাই সব ভুলে গেছেন কিন্তু এখন দেখছে, কাহিনির মোড় একেবারে উল্টো ঘুরে গেছে!
অরিত্রিকা নিজেকে সামলে নাটকীয় ভঙ্গিতে বলল;

“ আজ ভীষণ শীত পড়েছে। ও বাবা গো কী শীত! সারহান ভাই আমি ভেতরে গেলাম।”
সারহান বুঝল অরিত্রিকা নিজেকে বাঁচানোর জন্য নাটক করছে। সে জানে এতো বড় মহৎ কাজে অরিত্রিকা জড়িত রয়েছে। এটাও জানে অরিত্রিকা নিশ্চয়ই চিরকুটে দেওয়া নাম্বারের মালিককে চেনে। সে শুধু চেয়েছিল রুহানের নাম নিয়ে অরিত্রিকা ভড়কে দেওয়া। সেই কাজ কমপ্লিট। এই টুকু মেয়ে হয়ে সারহানের সাথে বেয়াদবি করেছে ভাবতেই ক্রোধে জর্জরিত হয়ে গেল। তবুও নিজেকে দমিয়ে রাখার প্রয়াস চালালো। একজন এমপির কাছে নাম্বারের মালিককে বের করা মোটেও কষ্টের কিছু নয়। নাম্বার ট্রেক করতে দিলে পুরো ডিটেইলস তার হাতে অনায়াসে চলে আসবে একদিনের মধ্যে। তবে যে ঝামেলায় সে পড়েছে সেখান থেকে বেরোনো আপাততঃ জরুরী।অরিত্রিকা হন্তদন্ত হয়ে দ্বিধাগ্রস্থ ভঙ্গিতে দু কদম এগিয়ে গেল।

“ ফাইরুজ! ”
পেছন হতে ভেসে আসে সারহানের রুক্ষ ভরাট কন্ঠ। অরিত্রিকার চঞ্চল পা জোড়া ততক্ষনাৎ থেমে যায়। সে ভ্রুকুটি উঁচিয়ে পেছনে ঘাড় বাঁকিয়ে তাকায়। মুখাবয়বে কিছুটা ভয়ের ছাপ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সারহান হাত দ্বারা ইশারা করে এগিয়ে আসার জন্য। অরিত্রিকা এক বুক সাহস সঞ্চার করে এগিয়ে যায় সেদিকে।
“ ডাকলেন কেন? ”
“ কিছু একটা দেওয়ার ছিল? ”

অরিত্রিকা কপাল কুঁচকে পাংশুটে মুখে তাকিয়ে রইল। এতদিন খোঁজ নেয়নি আজ হঠাৎ কী মনে করে সবার সাথে এসেছে? আবার বলছে কিছু দেওয়ার আছে! নিশ্চয়ই সেদিনের ঘটনার প্রতিদানে কিছু দিতে এসেছে একটা দায়সারা উপহার, যাতে নিজের মহানুভবতা প্রমাণ করা যায়!মুখ বাঁকিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করল সে। তার মনে পড়ে গেল সেই তীক্ষ্ণ অপমানের মুহূর্ত। সারহান সবার সামনে তাকে স্বার্থপর বলেছিল! সেই অপমানের গ্লানি সে ভুলতে পারেনি। এসব নিয়ে কথা বললে আবারও ঝামেলা হবে তাই আপাতত নীরব রইল কিন্তু ভেতরে ভেতরে রাগের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে তার। সারহান নির্বিকার ভঙ্গিতে গাড়ির ভেতর হাত বাড়িয়ে একগুচ্ছ টকটকে লাল গোলাপ বের করে আনল। নিঃশব্দে কিছুক্ষণ অরিত্রিকার দিকে তাকিয়ে রইল। সরু চোখে প্রতিক্রিয়া পরখ করতে লাগল।
সেই দৃষ্টিতে কী ছিল? উদাসীনতা না কি অন্য কিছু? অরিত্রিকা বুঝতে পারল না শুধু অবাক হয়ে তার হাতে ধরা গোলাপগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকল।
অরিত্রিকার সামনে এগিয়ে দিয়ে নিরেট কন্ঠে বলে;

“ এগুলো রাখ। ”
অরিত্রিকা মুহূর্তেই স্তম্ভিত হয়ে গেল। তার চোখ বিস্ময়ে বড় হয়ে গেল লাল গোলাপের দিকে তাকিয়ে। কয়েক সেকেন্ড বোঝার চেষ্টা করল এটা সত্যিই তার জন্য কিনা!অরিত্রিকার ক্রোধ কর্পূরের ন্যায় উড়ে গেল। আচমকাই উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলে উঠল,
“এগুলো কখন কিনলেন? ওয়াও, কী সুন্দর! কার জন্য কিনেছেন?”
অরিত্রিকার চোখে খেলা করল চঞ্চল উন্মেষ এতক্ষণকার অভিমান, বিরক্তি, ক্ষোভ সব মিলিয়ে হাওয়ায় উড়ে গেল। অথচ সারহান এখনো একইরকম নিরাসক্ত। তার চোখ-মুখে কোনো পরিবর্তন নেই।ঠোঁটের কোণে সামান্যতম হাসিও নেই।অরিত্রিকা গোলাপের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হলেও সারহানের ভাবলেশহীন দৃষ্টি দেখে যেন একটু থমকাল।
সারহান বিরক্ত মুখে, খিঁচে আসা মেজাজে ঠান্ডা কণ্ঠে বলে উঠল,

“চাচা-চাচির জন্য কিনেছি গোলাপগুলো। উনাদের সংবর্ধনা দিতাম, তোদের মতো একটা মাথামোটাকে জন্ম দেওয়ার জন্য?”
সারহানের কণ্ঠে ব্যঙ্গ চোখেমুখে চিরচেনা কঠোরতা। অরিত্রিকা কিছুক্ষণ হতবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। তার উচ্ছ্বাস এক মুহূর্তে কর্পূরের মতো উড়ে গেল।
“ আমি মোটেও মাথামোটা নই। ”
“ একদম সঠিক বলেছিস। তুই মাথামোটা নস ইউ আর অ্যা ষ্টুপিড। ”
সারহানের অপমানসূচক কথায় অরিত্রিকার মন মেজাজ বিগড়ে গেল। সে রাগে ফুঁসতে লাগল। ক্ষোভে, অপমানে ছলছল করে উঠল চক্ষুদ্বয়। সারহান সেসবের পরোয়া করে না। সারহান অবশ্য এসবের কিছুরই তোয়াক্কা করল না। নির্বিকার ভঙ্গিতে সে অরিত্রিকার দুহাতে একগুচ্ছ লাল গোলাপ গুঁজে দিল। তারপর ঠান্ডা ভঙ্গিতে প্যান্টের পকেটে হাত গুঁজে নিয়ে স্বাভাবিক সুরে বলল;

“ যে লাল গোলাপের জন্য আমাকে ইন্ডাইরেক্টলি কিড ন্যাপারের তকমা লাগিয়ে দিলি সেই লাল গোলাপ না কিনে চলে আসলি। তাই আমি ভাবলাম আমার জান বাঁচানোর জন্য তোকে আমার অ- পছন্দের গোলাপ উপহার দেই। ”
“ আপনার গোলাপ আমি নেবো না। আপনি কিনেছেন আপনি রাখুন। ”
“ একবার যে জিনিস আমি কাউকে দিয়ে দেই সেটা পুনরায় ছুঁয়ে দেখি না। ”
অরিত্রিকা নেত্র ভেজা আঁখি দ্বয় এলিয়ে তাকায় সামনে দন্ডায়মান মানুষটির দিকে। সে আজ বাকরুদ্ধ, স্তম্ভিত এবং হতবাক। তার মস্তিষ্ক যেন অচল হয়ে গেছে। সামনে গম্ভীরমুখে দাঁড়িয়ে থাকা শ্যামমানবটি মোটেও স্বাভাবিক নয়। এ যেন এক আস্ত গোলকধাঁধা। যে গোলকধাঁধা আজও অরিত্রিকার কাছে সমাধান করা ভীষণ কঠিন।
অরিত্রিকা এক হাতে অশ্রু বিন্দু মুছে নেয়। মলিন মুখে হেসে বলে ;
“ আপনার জীবনের মূল্য মাত্র এই কয়েকটা লাল গোলাপ?”

সারহান নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে বলল ;
“ ভুল বললি। আমার জীবনের মূল্য গুটি কয়েক গোলাপে সীমাবদ্ধ নয়। আমার অপছন্দের গোলাপগুলো জাস্ট আমার অপছন্দের মানুষকে দিলাম। এর থেকে বেশী কিছু ভাবার দরকার নেই। ”
অরিত্রিকা তাচ্ছিল্যের সুরে হাসে;
“ অপছন্দের মানুষ আমি কিন্তু অপছন্দের গোলাপ? কিন্তু কিছুক্ষণ আগে কি যেন বলছিলেন! মনে পড়ছে। আই লাভ রেড রোজ।”
সারহানের মুখাবয়ব গম্ভীর হয়ে ওঠে। প্রতিত্তোর করে;
“ অনেক রাত হয়েছে ভেতরে যা। ”
অরিত্রিকার ভাবভঙ্গি পরিবর্তন হয়। কটমট করে তাকিয়ে বলে ;
“ আপনার এই ফুল আমি বাড়িতে তুলব না। এই নিন আপনার অপছন্দের ফুল রাখুন। ”
“ আর একটা কথা বললে ঠাটিয়ে থাপ্পড় মা’রব। দ্রুত ভেতরে যা। ”
অরিত্রিকা রাগে গমগম করতে থাকে। মুখ ভেংচি দিয়ে ধপাধপ পা ফেলে সদর দরজার সামনে দাঁড়ায়। সারহানকে উদ্দেশ্য করে উচ্চস্বরে বলে উঠে;

“ সারহান ভাই আপনার দ্বারা প্রেম হবে না। একটা মেয়েকে কীভাবে গোলাপফুল দিতে হয়, সুন্দর করে প্রশংসা করতে হয় সেসব আপনার মতো গোমড়ামুখো কাঠখোট্টা মানুষ একদম জানেন না? আমার কি মনে হয় জানেন, বড় মা নিশ্চয়ই আপনার জন্মের পর মধুর বদলে নিম পাতার রস দিয়েছিল তাই আপনার জবাব এতো তেঁতো। ”
সারহান বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে রইল। এই মেয়ে কিছুক্ষণ আগেও নাক টেনে টেনে কাঁদছিল আর এখন একের পর এক যা ইচ্ছে তাই বকে চলেছে। কষ্ট বা অপমান বলে জীবনে কিছুই নেই! ষ্টুপিড মেয়ে একটা!সে বিরক্তির সঙ্গে শব্দ করে গাড়ির দরজা খুলল এবং উঠে বসে পড়ল।এক মুহূর্তের জন্যও আর দাঁড়িয়ে থাকার ইচ্ছে হলো না।

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ৮

অরিত্রিকা হু-হা করে হেসে উঠল।স্বস্তির হাসি, বিজয়ের হাসি! বজ্জাত মানুষটাকে ঠিকঠাক কথাই শুনিয়েছে! এমপি হয়েও গার্ডদের সামনেই অপমানিত হয়েছে সে। আহ! কী শান্তি লাগছে এখন!গার্ডগুলো নিশ্চয়ই মনে মনে হাসছে এত বড় রাজনৈতিক নেতা অথচ একটা মেয়ের কাছে এমনভাবে হেরে গেল!অরিত্রিকা এবার ফুরফুরে মেজাজে ফুলের গন্ধ নিতে নিতে বাড়ির ভেতরে ঢুকে যায়। তার ঠোঁটে খেলা করে দুষ্টু হাসি দিয়ে গুনগুন করে গাইতে থাকে;
“সারহান ভাই, আপনি একটা পল্টিবাজ!”
তার গলার সুর হাওয়ায় মিশে যায় কিন্তু গাড়ির ভেতরে বসে থাকা সারহানের কানে ঠিকই পৌঁছে যায়। সে চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। এই মেয়ের সাথে পারা যায় না!

প্রণয়ের সন্ধিক্ষণে সিজন ২ পর্ব ১০